বৃষ্টি নামার পরে পর্ব-১৯

0
3727

#বৃষ্টি_নামার_পরে❤
#লেখিকা-ইশরাত জাহান ফারিয়া
#পর্ব-১৯

৩৩.
“এতসব চিন্তাভাবনার মাঝে গুঞ্জন হারিয়ে গিয়েছিলো।কিছুক্ষণ পর,ডাক্তার এসে ওকে দেখলেন।সিটিস্ক্যান,এম আর আই করা হলো,রিপোর্ট পরদিন পাওয়া যাবে। মৃন্ময় বুঝতে পারছে না ওরা এসব পরীক্ষা কেন করবে!অবশ্য ডাক্তার ওকে আশ্বাস দিয়েছেন গুঞ্জনের খারাপ কিছু হবে না।তাও ওনারা জাস্ট পরীক্ষা করে দেখবেন।বিকেলে গুঞ্জনকে ওদের বাসায় নিয়ে আসা হলো।সাথে মৃন্ময়ের পরিবারের সবাই।রুহি আর সিফাতের এনগেজমেন্ট উপলক্ষ্যে।রাতের বেলা এনগেজমেন্ট ও শেষ হলো,খুব ধুমধাম করেই।গুঞ্জন এসব দেখে প্রচন্ড অবাক হলো।রুহির সাথে সিফাত?কিভাবে কি?”

“এদিকে গুঞ্জন হসপিটাল থেকে ফেরার পর মৃন্ময়কে এড়িয়ে চলছে,কথাবার্তাও ঠিকঠাক বলছে না।মৃন্ময় রাগছিলো গুঞ্জন এভয়েড করার কারণে,কিছু একটা বলতে যাবে তখনই মায়া চৌধুরী প্লেট হাতে করে খাবার নিয়ে এলেন গুঞ্জনের রুমে।গুঞ্জন মাকে খাবার নিয়ে আসতে দেখে খুব অবাক হলেন।শোয়া থেকে উঠে বসতে বসতে বললো,আম্মু তুমি?”

“মায়া আহমেদ কিছু বললেন না।গুঞ্জনের পাশে গিয়ে বসলেন।বললো, তোমার খাবার নিয়ে এসেছি,আর কিছু জানাতে এসেছি!”

“মৃন্ময় একথা শুনে ভাবলো, মা-মেয়ের কথা তাঁর না শোনাই ভালো।তাই ও বাইরে যাবার উদ্দেশ্যেই উঠতেই মায়া আহমেদ বলে উঠলো, তুমি যেও না বাবা,তোমাকেও তো শুনতে হবে কথাগুলো।”

“মৃন্ময় অবাক হয়ে বললো,কি এমন কথা যা আমাকেও শুনতে হবে?”

-“আমি গুঞ্জনকে খাইয়ে দিই আগে,তারপর বলি!”

“মৃন্ময় বসলো।গুঞ্জনকে ওর মা খাইয়ে দিচ্ছে।এভাবে খেয়ে অভ্যস্ত নয় বলেই হয়তো গুঞ্জন কমফোর্টেবল ফিল করতে পারছে না।কিন্তু বুঝ হবার পর থেকে এই আদরটা ও কখনোই পায়নি,তাই হয়তো গুঞ্জনের ভালো লাগছে।ও নিঃশব্দে কাঁদছে। যেটা কেউ দেখতে পাচ্ছে না।”

“খাওয়া শেষ করার পরপরই গুঞ্জনের হঠাৎ খুব বমি পেলো।দৌড়ে মুখ চেপে ধরে ওয়াশরুমে ঢুকলো।মৃন্ময় কিছু বুঝে উঠতে পারলো না,মায়া আহমেদ চিন্তিত চোখে তাকিয়ে রইলো।এই প্রথম গুঞ্জনের জন্য ওনাকে চিন্তিত হতে দেখা গেলো,যদিও হসপিটালেও উনাকে প্রচন্ড চিন্তিত লাগছিলো।মৃন্ময় সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে ওয়াশরুমের দরজায় ধাক্কিয়ে বললো,কি হয়েছে গুঞ্জন?দরজা খুলো বলছি!মায়া আহমেদ বললেন, তুমি ওকে দেখো,হুম?আর গুঞ্জন অসুস্থ, তাই কথাগুলো কাল বলবো,আমি আসি।তিনি মৃন্ময়কে রেখে বাইরে চলে গেলেন।ভাবছেন, ছেলেটা সত্যিই ভালো।কত খেয়াল রাখছে মেয়েটার!”

“এভাবে কিছুক্ষণ ধাক্কাধাক্কির পর গুঞ্জন ওয়াশরুমের দরজা খুললো।মৃন্ময় রেগে বললো, এতক্ষণ ধরে ডাকছি কথা কানে যায় না?”

-“না যায় না।”

“মৃন্ময় বাঁকা কথা শুনে চিল্লিয়ে বললো, বেয়াদবি করছো আমার সঙ্গে?তুমি কি ভাবো সবসময় তোমার ফানগুলো আমি টলারেট করে নিবো?”

-“টলারেট করতে না চাইলে আমি তো জোর করিনি।আমার থেকে দূরে থাকবেন অলওয়েজ!”

-“তুমি কিন্তু ভুলে যাচ্ছো আমি তোমার হাজব্যান্ড।আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমার পাশে থাকার,সাথে থাকার রাইট আছে আমার!আমি কখনোই তোমার থেকে দূরে যেতে পারবো না,আমি মরে যাবো গুঞ্জন!”

“গুঞ্জন রাগী গলায় বললো,আমার সাথে থাকার কোনো রাইটই নেই আপনার।কজ আপনি নিজে বিয়ের দিন রাতে আমার থেকে মুক্তি চেয়েছিলেন।আমাকে লোভী, ভালোবাসার যোগ্য নই বলে অনেক কথা শুনিয়েছিলেন।আমি তো কিছু বলিনি আপনাকে,কখনো হার্টও করিনি।আমি আপনার বাসা থেকে চলে আসতেও চেয়েছিলাম,কিন্তু আপনি নানা বাহানায় আমাকে আসতে দেননি।এখন বোধহয় আমার ফ্যামিলির আমার উপর উদাসীনতা দেখে ক্ষণিকের জন্য আপনার মায়া লাগছে তাই আবেগের বশে আমাকে এসব বলছেন।কিন্তু আমি তো আর আবেগী নই,তাই আমি ঠিক করেছি আমি আর আপনার বাসায় ফিরবো না!”

-“হোয়াটটট???”

-“জ্বি!ইট’স ফাইনাল ডিসিশন!”

-“তুমি পাগল হয়ে গিয়েছো গুঞ্জন?কিসব বলছো তুমি?বাসায় না ফিরলে তুমি কোথায় যাবে?”

-“আমার ব্যবস্থা আমি নিজেই করে নিতে পারবো!”

-“গুঞ্জন আমি তোমাকে ভালোবাসি!”

-“শুনেছি আমি একবার!”

-“আমি তোমার উত্তর জানতে চাই,তুমি কি আমাকে ভালোবাসো না?”

“গুঞ্জন অবাক হলো।তারপর মৃদু হেসে বললো,আমার উত্তর জানা,না-জানায় কিছু আসবে যাবে না।আমি যা বলেছি তাই হবে।”

“মৃন্ময় রেগে ওকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বললো, তুমি কি আমার সাথে মজা করছো?লিসেন গুঞ্জন, তোমার এসব কথাবার্তা বন্ধ করো,আর আমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ভাবলে আমি আগে তোমাকে খুন করবো,দ্যান পরে নিজে মরবো!গট ইট????”

“গুঞ্জন মৃন্ময়কে বললো,হঠাৎ করে এতো ভালোবাসা আপনি কেন দেখাচ্ছেন আমি বুঝতে পারছি না।আমাকে ছাড়তে চাইছেন না কেন?”

-“বললাম তো,আমি তোমাকে ভালোবাসি!”

-“ভালোবাসা?হাহ,আপনি জানেন না গুঞ্জন কারো ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না?আর আমার প্রতি এটা আপনার ভালোবাসা না,এটা দয়া,মোহ।এ মোহ কিছুদিন পর কেটে যাবে,তখন আর আমাকে ভালো লাগবে না।আর আপনি তো কোনোদিনই আমাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নেননি,মুক্তি চেয়েছিলেন দ্যাটস ইনাফ,আমি দিয়ে দিবো।আমি আর এ সম্পর্ক বয়ে নিয়ে যেতে চাই না এবং আজ, এক্ষুনি আমি এ বাসা ছেড়ে চলে যাচ্ছি বলে যেই না পা বাড়াতে গেলো অমনি,,,!”

“মৃন্ময় প্রচন্ড রেগে গুঞ্জনের গালে একটা ঠাস করে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।গাল চেপে ধরে হুংকার দিয়ে বললো, অনেক শুনেছি আর না,আমি আর কিছু শুনতে চাই না।আমার থেকে পালিয়ে যেতে চাও?কখনোই মৃন্ময় তা হতে দেবে না।দরকার হলে পাগল হয়ে যাবো,তাও মৃত্যু ছাড়া তোমাকে আমার কাছ থেকে কেউ আলাদা করতে পারবে না।”

“মৃন্ময় জোর করে গুঞ্জনকে রুমের ভেতর নিয়ে আসলো।প্রচন্ড জোরে গুঞ্জনের হাতে চেপে ধরেছে,যার ফলে হাত লাল হয়ে গিয়েছে।গুঞ্জন ছুটোছুটি করছে রুম থেকে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য, কিন্তু মৃন্ময় আজ বড্ড রেগে গিয়েছে, তাই দরজাটা ভালো করে লাগিয়ে দিয়ে এসেছে।গুঞ্জন যতবারই দরজার কাছাকাছি যাচ্ছে মৃন্ময় ততবারই ওকে সেখান থেকে নিয়ে আসছে,গুঞ্জনের উদ্দেশ্য সফল হতে দিচ্ছে না। এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে গুঞ্জনের গালে আরও একটা চড় মেরে বসলো মৃন্ময়।ফলে গুঞ্জন গালে হাত দিয়ে কেঁদে উঠলো।গুঞ্জনের হাত নিজের সাথে বেঁধে নিয়েছে গুঞ্জনের ওড়না দিয়ে।পাগলের মতো কর্মকাণ্ড দেখে গুঞ্জন কেঁদে উঠলো আরও হোরে!”

“মৃন্ময় চিৎকার করে বললো, আমার থেকে দূরে যাওয়া কখনোই হবে না তোমার,তুমি কেন বুঝতে চাইছো না আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি।তারপর গুঞ্জনের চোখের দিকে চেয়ে বললো,তুমি কি আমাকে একটুও ভালোবাসো না গুঞ্জন?এরকম কিরছো কেন?আচ্ছা,স্যরি।আমি এতদিন তোমার সাথে যা যা রুড বিহেভ করেছি তার জন্য এক্সট্রেমলি স্যরি।তুমি জানো?তোমার সাথে একসাথে থাকতে থাকতে আমি কতটা গভীরভাবে তোমার প্রতিটা নতুন নতুন রুপের প্রেমে পড়েছি?গুঞ্জন নামক ভালোবাসাহীন মানবীটিকে কিভাবে মৃন্ময় ভালোবেসে ফেলেছো জানো তুমি?তবে কেন পালাতে চাইছো?”

“গুঞ্জন হাতের বাঁধন খুলতে চেষ্টা করছে মরিয়া হয়ে, কিন্তু পারছে না।গুঞ্জন বললো, আর আপনি আমার সাথে শুধু শুধু এরকম করছেন কেন?আমি তো বলছিই চলে যাবো এবং যাবো,সেটা সুযোগ পেলে দেখবেন।গুঞ্জনের কারোর দরকার নেই,বুঝেছেন??”

“মৃন্ময় রেগে চিৎকার বললো,আমার তো তোমাকে প্রয়োজন,তাই না?আর আমিতো চলে যেতে দেবো না,,,আর..আর তুমি কি আমাকে ভালোবাসো না?নিশ্চয়ই বাসো!”

“হঠাৎ গুঞ্জন ভয় পেয়ে যায়,এই লোক আবেগের বশে গুঞ্জনকে ভালোবাসে বলছে,ক’দিন পরে আবেগ শেষ সাথে ভালোবাসাটাও শেষ হয়ে যাবে।কিন্তু তখন গুঞ্জন এই আঘাতটা নিতে আর নিতে পারবে না,এমনিতেই আশেপাশের নিজের লোকেদের এসব দেখে গুঞ্জনের শুধু এসবই মনে হয়। ওর সাথে তো এতকাল তাই হয়েছে।তাই এটা ভাবাটা স্বাভাবিক।থাকুক না,নিজের ভালোবাসাটা প্রকাশ না করে,গুঞ্জন তো এই মৃন্ময়কে ভালোবাসে,তাই না?পরে আঘাত পেয়ে এই ভালোবাসাটা না আবার ঘৃণায় পরিণত হয়।কিন্তু এমনও তো হতে পারে যে,সত্যিই মৃন্ময় গুঞ্জনকে ভালোবাসে!হতে পারে নয় কি?ধুর,,,আর ভাবতে পারছে না ও!”

“গুঞ্জনের উত্তর না পেয়ে রেগে গিয়ে মৃন্ময় গুঞ্জনের ঠোঁটে চুমু দিয়ে বসলো।ধীরে ধীরে গুঞ্জনের গলায়,হাতে ঠোঁট ছুঁয়াতে লাগলো মৃন্ময়।হতভম্ব গুঞ্জন হাত পা ছুঁড়ছে কিন্তু তাতে মৃন্ময় থামলো না।জোর করে নিজের ভালোবাসা,নিজের অধিকারটা আদায় করে নিলো!”

_________________

৩৪.
“সকাল হয়েছে বেশ অনেকক্ষণ।দরজায় কারো কড়া নাড়ার আওয়াজে কাঁচা ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো গুঞ্জনের।গুঞ্জনের নড়াচড়া টের পেয়ে মৃন্ময়ও উঠে পড়লো।মায়া আহমদ ওদেরকে ডাইনিংয়ে ব্রেকফাস্টের জন্য ডাকছেন।গুঞ্জন ওর দিকে না তাকিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে দরজা খুলে বাইরে চলে গেলো!”

“মৃন্ময় কিছুক্ষণ রাগীদৃষ্টিতে গুঞ্জনের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো।কেমন মেয়েরে বাবা…এতকিছুর পরেও ইগো দেখাচ্ছে?পাত্তাই দিলো না ওকে?রিডিকিউলাস!যাইহোক, তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে ওকে হসপিটালে যেতে হবে।আজ তো ওর রিপোর্ট দেওয়ার কথা!ভীষণ চিন্তা হচ্ছে ওর!”

“কিছুক্ষণ পর মৃন্ময় ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং য়ে গিয়ে দেখলো দাদীমার পাশের চেয়ারে গুঞ্জন বসে আছে,পাশের চেয়ার ফাঁকা। টুপ করে ওটাতে গিয়ে বসে পড়লো ও,গুঞ্জন রাগী দৃষ্টিতে তাকাতেই মৃন্ময় ওর দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসলো।”

“পাউরুটিতে জ্যাম লাগাতে লাগাতে মৃন্ময় ভাবলো, ওর ফ্যামিলির লোকেরা আছে বলেই কি গুঞ্জনের আব্বু-আম্মু ওকে টেবিলে বসিয়ে খেতে এনেছে?নাকি নিজেদের ইচ্ছেয়?কে জানে??”

“নাস্তা শেষ করে গুঞ্জন তাড়াহুড়ো করে নিজের রুমে চলে গেলো, মৃন্ময় সুযোগ খুঁজতে থাকলো ওকে একলা পাওয়ার।তারপর দাদীমার সাথে কথা বলে যেই না রুমে গেলো অমনি গুঞ্জনের পেছন পেছন রুমে ঢুকে ঠাস করে দরজা আটকে দিলো। পেছনে ফিরে মৃন্ময়কে দেখতে পেয়ে গুঞ্জনের মুখটা রাগে লাল হয়ে গেলো।”

“মৃন্ময় বাঁকা হেসে বললো,গুড মর্নিং গুঞ্জু সোনা!”

“গুঞ্জন রেগে বললো, আপনি কি ফাজলামি করতে এসেছেন আমার সাথে?”

-“হুম গুঞ্জু সোনা। বউয়ের সাথে ফাজলামো না করলে আর কার সাথে করবো,বলো তো?তুমি তো জানোই আমি জন্মগত সিঙ্গেল, অবশ্য কাল রাতে মিঙ্গেল হয়ে গিয়েছিলাম!শুনবে কিভাবে?”

“গুঞ্জন কানে হাত চেপে ধরে বললো, প্লিজ চুপ করুন, আমি আপনার মিঙ্গেল হওয়ার কথাবার্তা এখন শুনতে চাচ্ছি না।”

-“বলবো না,তবে এক শর্তে!”

-“কি?”

-“আমার সাথে বাইরে যেতে হবে!”

“গুঞ্জন সন্দেহী চোখে তাকিয়ে বললো,কেন?ওয়েট….ওয়েট….আপনি কি আমাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে মেরে নদীতে ফেলে দিবেন?”

-“এত কথা বলছো কেন?আমি কি বলেছি তুমি শুনতে পাওনি?নাকি মিঙ্গেল হওয়ার গল্পটা শুরু করবো?”

-“না না।আমি রেডি হচ্ছি!”

“বলেই তাড়াতাড়ি করে রেডি হতে চলে গেলো গুঞ্জন।মৃন্ময় সাথে করে গুঞ্জনকে হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছে,এই ভয়ে যে,ওর অনুপস্থিতিতে যদি গুঞ্জন ওর বাসা থেকে পালিয়ে যায়,তাহলে?সাথে নিয়ে গেলে নিশ্চিত থাকা যাবে,এ মেয়ের আবার
বিশ্বাস নেই,তাই চোখে চোখে রাখা!”

“যাইহোক,গুঞ্জন রেডি হয়ে এসে দেখলো মৃন্ময় হিরো সেজে বসে আছে।অবশ্য এ ছেলেকে অলওয়েজ হিরো লাগে।মৃন্ময় বললো,কেমন লাগছে আমায়? নিশ্চয়ই হট এন্ড জোস???”

“গুঞ্জন মুখ ভেঙচিয়ে বললো,হাহ,,আপনাকে হট এন্ড জোস লাগবে?হা হা হা হাসালেন আমায়।আপনাকে মোড়ের শামসু চোরের মতো লাগছে।ও সবসময় চুরি করে মানুষের সামনে ভং ধরে বলে,ও নাকি হিরো।না না,আবার মেয়ে দেখলেই বলে,জানু আমায় হট এন্ড হ্যান্ডসাম লাগছে,তাই না!সো মিস্টার মৃন্ময় চৌধুরী আপনাকে এখন জাস্ট চোরা শামসুর মতো লাগছে।”

“মৃন্ময় রেগে বললো, আমি চোর?লাইক সিরিয়াসলি গুঞ্জন?আমাকে দেখে তোমার চোর বলে মনে হচ্ছে? তাও আবার তোমার এলাকার বখাটে ছেলে শামসু চোরের সাথে আমাকে তুলনা করছো??”

-“যাকে যার সাথে মানায় তার সাথে তার তুলনা করবোই,আমি গুঞ্জন কাউকে ভয় পাই না!”

“মৃন্ময় বাঁকা হেসে চোখ টিপে বললো, জানো তো বুদ্ধিমতী গুঞ্জন তোমাকে না ভীষণ চুমু খেতে ইচ্ছে করছে,একেবারে শামসু চোরের মতো।আসো,কাছে আসো চুমু খাই…!”

“গুঞ্জন একথা শুনে আর এক মুহূর্তও দাঁড়ালো না।দৌড়ে পালালো।এদিকে গুঞ্জনকে এভাবে পালাতে দেখে হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে। গুঞ্জনকে এভাবেই ভয় দেখাতে ওর মজাই লাগে।”

__________

“হসপিটালে গিয়ে অনেকক্ষণ ওয়েট করার পর নার্স ওদের দুজনকে ডেকে নিলো।ওদের ওয়েট করতে বললো, ডাক্তার ল্যাব থেকে মিনিট পাঁচেক পরে ফিরবেন।ডাক্তারের চেম্বারে নরম গদিওয়ালা
চেয়ারে বসে মৃন্ময় গুঞ্জনকে রাগাচ্ছিলো।দুজনের খুনসুটির মাঝখানে ডাক্তার তার রুমে ঢুকলো।এসে বসলো তার চেয়ারে।রিপোর্ট এগিয়ে দিলো ওদের সামনে। গুঞ্জন চিন্তিতমুখে রিপোর্ট হাতে নিলো, পড়লো, মুচকি হাসলো কিন্তু কিছু বললো না।মৃন্ময় গুঞ্জনের কাছ থেকে রিপোর্টটা নিলো।ভালো করে লক্ষ্য করে দেখলো সেখানে অবিশ্বাস্য কিছু লেখা আছে!”

নেক্সট, নাইস না বলে অন্য কিছু মন্তব্য শোনার আশা করি!

চলবে…ইনশাআল্লাহ!