বেষ্ট_ফ্রেন্ড_নাকি_স্বামী পর্ব-০৮

0
2353

#বেষ্ট_ফ্রেন্ড_নাকি_স্বামী?
#Part_8
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona

রিধী রাফিকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে খুব শক্ত করে। রাফি রিধীকে বলল
-রিধী কোথাও যাব না আমি। আর আজ থেকে সারাটা জীবন এভাবেই থাকব তোমার সাথে।
-হুম।
-এখন ব্রেকফাস্ট করব চল।

এরপর রিধী রাফিকে খাইয়ে দেয় আর রাফি রিধীকে খাইয়ে দেয়। খাবার খাওয়ার পর দুইজন বেডরুমে গিয়ে বসে। রিধী শুয়ে পরে আর রাফি রিধীর কপালে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করে

-খারাপ লাগছে তোমার?
-না এমনি ঘুম ঘুম পাচ্ছে।
-কেন রাতে ঘুমাওনি?
-কেন দেখোনি ঘুমিয়েছিলাম নাকি? (ভ্রু কুঁচকে তাঁকিয়ে)
-আচ্ছা এখন ঘুমাও একটু তাহলে। আজকে তো আপুরা আসবে আমি বাইরে থেকে লাঞ্চ অর্ডার করে দিচ্ছি।
-না। আমিই রান্না করব।
-একদমই না। Take rest. (ধমকের সুরে)
-আচ্ছা।

রিধী ঘুমিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষন পরেই কাশফি আর আয়মান রাফসানকে নিয়ে চলে আসল। ওরা এসে দেখে রিধী ঘুমাচ্ছে।

-কি ব্যাপার রাফি এতটাই অত্যাচার করেছো আমার শালিকার উপর বেচারি এখন ঘুমাচ্ছে। (আয়মান দুষ্টুমি করে বলল)
-ভাইয়া তুমিও না। (একটু লজ্জা পেয়ে)
-রিধী কখন ঘুমিয়েছে রাফি? (কাশফি)
-কিছুক্ষন আগেই। (রাফসানকে কোলে নিয়ে)
-রান্না তো হয়নি। তুমি রাফসানকে দেখো আমি রান্না করছি।
-না আপু। আমি খাবার অর্ডার করে দিয়েছি। জাস্ট টাইমে এসে দিয়ে যাবে। আর তোমাদের পছন্দের খাবার গুলোই অর্ডার করেছি।
-বউকে কষ্ট দিতে চায় না। (কাশফি)
-একটামাত্র বউ কি করব বল?

ওরা অনেকক্ষন গল্প করল। রিধী তখন ও ঘুমাচ্ছে। রাফি দুপুরের দিকে রিধীকে ডাকল। রিধী ঘুম থেকে উঠে দেখে ওরা সবাই এসে গেছে। রাফিকে রিধী কতক্ষন বকাঝকা করলো ওরা এসেছে তাও কেন রাফি রিধীকে ডাকেনি। রিধী ফ্রেশ হয়ে খাবার সার্ভ করল। খাবার খেয়ে দেয়ে আয়মান ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করল। বিকেলে সবাই এক সাথে বের হলো। মাঝরাস্তায় রিধী আইসস্ক্রিম খাবে এই কারণে রাফি গাড়ি থামালো আর আইসস্ক্রিম আনতে গেল। রাফসান কাশফির কোলে ছিল আর সবাই রাফসানের সাথে খেলা করছে। ১০ মিনিট পার হওয়ার পরেও যখন রাফি এলো না তখন আয়মান গাড়ি থেকে নেমে রাফিকে খুঁজতে গেল। কিন্তু রাফি কোথাও নেই। আয়মান রাফিকে বারবার ফোনে ট্রাই করছে কিন্তু ফোন সুইচ অফ। আয়মান অনেক টেনশনে পরে যায়। সামনে এগিয়ে যায় আয়মান। গিয়ে দেখে রাফির ফোন রাস্তায় পরে আছে। আয়মান ফোনটা হাতে নেয়। কাউকে যে কিছু জিজ্ঞেস করবে তার উপায় নেই কারণ রাস্তাটা একেবারেই ফাঁকা। আয়মান দৌঁড়ে গাড়ির সামনে যায়। কাশফি আর রিধীকে সব খুলে বলে। রিধী রাফি বলে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আয়মান তারাতারি গাড়ি ড্রাইভ করে থানায় যায়। আর রিধীর জ্ঞান ফেরায় কাশফি। আয়মান আর কাশফি দুজনেই ভেঙ্গে পরেছে। রিধী তো বারবার নিজেকে দোষ দিচ্ছে কেন ও আইস্ক্রিম খেতে চাইল? রিধী বাসায় এসে সমানে রাফি রাফি বলে কাঁদছে। আয়মান বারবার থানায় ফোন দিচ্ছে কিন্তু তারা কোনো নিউজ দিতে পারছেনা। রিধী পুরো পাগল হয়ে গেছে কি করবে সে?? আয়মান ওর নিজস্ব ডিটেকটিভ কে কাজে লাগায়। আয়মান আর কাশফি মিলে রিধীকে সামলাচ্ছে। রাফসানকে ওর নানুভাই দেখছে। রিধী নিজেকে অপয়া আরো অনেক কিছু বলছে।

প্রায় ৮ ঘন্টা হয়ে গেছে রাফির কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। রিধীকে কাশফি ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়ে দিয়েছে। কাশিফ আর আয়মান সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করছে। কিছুক্ষন পরেই মনে হলো রাফির কাছে সিক্রেট ক্যামেরা রয়েছে যাতে ওর বিজনেস পার্টনার রা ওকে সহজেই খুঁজে পায়। আয়মান তারাহুড়ো করে রাফির ল্যাপটপ নিল। রাফির ল্যাপটপ এর পাসওয়ার্ড ছিল RiDhI আর তা আয়মান খুব ভাল করে জানত। আয়মান রাফির সিক্রেট জোনে যায় আর রাফিকে Identify করার চেষ্টা করছে। ২ ঘন্টা ধরে আয়মান ট্রাই করছে কিন্তু পারছেনা। আয়মান হাল ছাড়েনি। কিছু ক্ষন পর আয়মান রাফিকে কানেক্ট করতে পারল। রাফির সারা শরীরে রক্ত,,রাফি অজ্ঞান হয়ে পরে আছে একটা অন্ধকার ঘরে। হাত পা রশি দিয়ে বাধা। আয়মান কাশফিকে ডেকে এনে দেখায়। কাশফি চিৎকার করে উঠে। আয়মান কাশফিকে বলল
-কাশফি প্লিজ শান্ত হও। যা করার আমাদেরই করতে হবে। রাফি খুব খারাপ সিচুয়েশন এ আছে। আর যে বা
যারা এই কাজটা করেছে তাদের একেকটার কি হাল করি দেখো তুমি! (আয়মান ক্ষিপ্ত হয়ে বলল)

চলবে