বেষ্ট_ফ্রেন্ড_নাকি_স্বামী পর্ব-০৯

0
1963

#বেষ্ট_ফ্রেন্ড_নাকি_স্বামী?
#Part_9
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona

কাশফি আর আয়মান রাফির বন্দী হয়ে থাকা জায়গার সব ডিটেইলস বের করল। প্রায় ১৫ ঘন্টা পার হয়ে গেছে অলরেডি। রিধীর ইঞ্জেকশন এর দীর্ঘস্থায়িততা কমে আসছে। কাশফি তার মা কে রিধীকে সামলাতে বলে বেরিয়ে পরে আয়মানের সাথে। আয়মান তার স্পাই আবির কে সব ডিটেইলস দিয়ে দেয় আর আবির সেই জায়গা খুঁজে বের করে। আয়মান আর কাশফি খুব দ্রুত সেখানে যাচ্ছে পুলিশ নিয়ে। রাফির অবস্থা দেখছে কাশফি। কি হাল করেছে ওরা রাফির!!! শরীরের এমন কোনো অংশ বাদ নেই যেখানে ওরা রাফিকে আঘাত করেনি। ১ ঘন্টা পর আয়মান আর কাশফি পুলিশ নিয়ে সেখানে যায়। আর এইদিকে রিধীর মা ফোন দিয়ে বলছে রিধীকে সামলানো যাচ্ছে না। ও অনেক কাঁদছে। কাশফি কিছু না বলেই ফোন কেটে দেয়। আয়মান আর কাশফি আস্তে আস্তে ভিতরে ঢুকছে আর লিখনের গলার আওয়াজ পেয়ে দুইজনেই থমকে যায়। কাজটা তাহলে লিখন করছে!! আয়মান রেগে যায় খুব। আর লিখন রাফিকে বলছিল

-একটু পর তোর আদরের বউ কে তুলে নিয়ে আসব আর আমার ছেলেকে আমি নিয়ে যাব। তারপর দেখতি তোর সামনে তোর বউয়ের কি হাল করতাম আমি!
-রাফি কোনো কথা বলতে পারছেনা। এমন সময় আয়মান এসে বলল

-সেই সময়টা আর তুই পাবিনা জানোয়ার। ইন্সপেক্টর প্লিজ ওকে নিয়ে যান।

পুলিশ এসে লিখনকে এরেস্ট করে নিয়ে গেল আর আয়মান রাফিকে খুব দ্রুত হসপিটালে এডমিট করায়। রাফিকে ICU তে ভর্তি করানো হয়েছে। রিধীকেও নিয়ে আসে কাশফি হাসপাতালে। রাফসানকে তার নানুর কাছে রেখে আসে। রিধী রাফিকে এইভাবে পরে থাকতে দেখে আবারো চিৎকার করে কান্না শুরু করে। আয়মান বলে

-রিধী প্লিজ তুমি শান্ত হও। তুমি ভেঙ্গে পরলে রাফি কিভাবে সুস্থ হয়ে উঠবে। প্লিজ রিধী একটু শান্ত হও।
-ভাইয়া ওর এই অবস্থা কে করেছে?
-লিখন।
-কিইই? ওই জানোয়ার আমার রাফির এই অবস্থা করেছে? ভাইয়া ওই জানোয়ারটা কই এখন? ওকে আমি নিজের হাতে শেষ করে দিব।
-রিধী ও এখন পুলিশ কাস্টডিতে আছে।

প্রায় দেড় ঘন্টা পর ডক্টর বলল
-বিপদের কোনো আশঙ্কা নেই তবে ২ ব্যাগ রক্ত লাগবে এখনি। আমি পুশ করে দিয়েছি। আর ওনার প্রপার ট্রিটমেন্ট এর প্রয়োজন।
-ডক্টর আপনি ওর ট্রিটমেন্ট নিয়ে ভাববেন না। ওর সাথে কি এখন কথা বলতে পারব?(আয়মান)
-না। রাত ছাড়া পারবেন না। ওনার এখন কম্পলিট রেস্ট দরকার।
-আচ্ছা ডাক্তার ধন্যবাদ আপনাকে।

রিধী কান্না থাামিয়েছে। রিধী আয়মানকে বলল
-ভাইয়া তোমরা বাসায় যাও। রাফসান আর মা একা আছে।
-না আমি আছি বরং তুমি আর কাশফি বাসায় যাও। রাফসানের তোমাকে প্রয়োজন আমাদের না।
-কিন্তু ভাইয়া আমি তো ওকে (রাফি) দেখব।
-রাফির জ্ঞান ফিরলে ড্রাইভারকে ফোন দিয়ে বলে দিব তোমায় নিয়ে আসতে। এখন তুমি বাসায় যাও আমি ড্রাইভারকে বলে দিচ্ছি।
-ভাইয়া আমায় জানাবা কিন্তু।
-হ্যাঁ জানাবো বোন এখন তুই বাসায় যা। চল আমি তোকে এগিয়ে দিয়ে আসি। (কাশফি)

রিধীকে আয়মান আর কাশফি বাসায় পাঠিয়ে দিল। রাত ৮টায় ডক্টর রাফির সাথে দেখা করার জন্য এলাউ করলো। কাশফি তখন রিধীকে আসতে বলে। রিধী রাফসানকে নিয়ে রওনা দেয়। কিছুক্ষনের মধ্যেই রিধী রাফসানকে নিয়ে হাসপাতালে চলে আসে। রিধী আসলে আয়মান আর কাশফি কেবিন থেকে বেরিয়ে যায় রাফসানকে নিয়ে।

-এখন কেমন আছো তুমি? (কান্না চোখে রিধী রাফিকে জিজ্ঞেস করল)
-ভাল আছি। তোমার চোখ মুখের এই অবস্থা কেন?(রিধীর গালে হাত রেখে)
-কিছু না।
-এইটা কি আমার প্রশ্নের উত্তর হলো?
-তুমি কি জানো না তোমার প্রশ্নের উত্তর?
-হুম জানি।

পরেরদিন সকাল পর্যন্ত ওদের হাসপাতালে থাকতে হল। রাফিকে সকালে ডিসচার্জ করে দিয়েছে। রাফিকে বাসায় এনে আয়মান আর রিধী ধরে বিছানায় শুয়ে দিল। এরপর রিধী রাফিকে ওষুধ খাইয়ে দিল। আয়মান আর কাশফি নিজেদের রুমে চলে গেল। রাফি এখন অনেকটাই সুস্থ। রিধী যখন রাফিকে চেঞ্জ করাতে গেল তখন রাফি বলল
-জানো কত টা কষ্ট হয়েছে আমার যখন লিখন বলেছিল আমার সামনে ও তোমাকে ….. (আর কিছু না বলেই রাফি রিধীকে জড়িয়ে ধরলো)
-পারবেনা ও আমার আর কোনো ক্ষতি করতে। আমার রক্ষাকর্তা যে এখন আমার সাথে আছে। (রাফিকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে)

এরপর রিধী রাফিকে চেঞ্জ করে দিয়ে নিজে ফ্রেশ হয়ে আসে। ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে রাফি ঘুমাচ্ছে কারন ওকে ঘুমের মেডিসিন দেওয়া হয়েছে। সেইদিন রাতে রাফি রিধীকে শক্ত করে নিজের বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে ঘুমায়।

৭ দিন পর রাফি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়। রাফসান ও এখন একটু বেশি দুস্টুমি করে।

চলবে