ভালোবাসা_কেবল_শুরু পর্ব -২+৩+৪

0
1906

ভালোবাসা_কেবল_শুরু
পর্ব -২+৩+৪
.
সেদিনের পর থেকে রুহি আর কখনো আদি কে ফোন দেয় নি। জেদি মেয়ে টা বাসায় এসে দরজা বন্ধ করে শুধু কেঁদেছিলো। ঠিক কতক্ষন কেঁদে ঘুমিয়ে গেলো তার হিসেব নেই। কিন্তু আদির কথা গুলো যে মনে দাগ কেটেছিল সেটাই এখন আদিকে আর না ফোন দেয়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । আদি খুব একটা পাত্তা দেয় নি। বরং মনে মনে ভাবলো বেশ হয়েছে একটু হলেও যদি মানুষ হয়। এক বার তো ভেবেই ছিলো হয়ত বিয়ে ভেংগে দিবে। কিন্তু রুহি সে পথই মারায়নি।

দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলেই আসলো। আদির জেদের কারণে ধুমধাম করে বিয়ে হলো না। কিন্তু হলো তো! মনে মনে দুস্ট রুহির মাথায় ঘুরতে লাগলো এবার তোমার খেলা শেষ আদি বাবু।

দেড় ঘন্টা যাবৎ রুহি বাসর ঘরে অপেক্ষা করছে। আদির কোন খোঁজ ও নাই। রুহি বিছানা থেকে নেমেই হন হন করে হাঁটা শুরু করলো। সিঁড়ি বেয়ে নেমে একেবারে সোজা ড্রয়িং রুমে উপস্থিত।

আদি তার ফ্রেন্ডদের সাথে গল্প করছে তো করছেই, পিছনে রুহি এসে দাড়ালো একদম টের পায়নি। দু একজন ওকে ইশারা করার সাথে সাথে ও পিছনে তাকাতেই রুহি বলো “ঘরে চলেন”। আদি পাত্তা না দিয়ে আবার গল্পে মাতার চেস্টা করতেই রুহি হাত হ্যাচকা টেনে হাঁটা শুরু করলো। সবাই রুহির কান্ড দেখে কিছু বলার সাহস ই পেলো না ।দু একজন মিটি মিটি হাসছে দু একজন চুপসে গেছে। আর আদি ভাবছে সবার সামনে আজ রি এক্ট করা যাবে না। তাই আদিও পিছু পিছু ছুটলো।

রুমে ঢুকেই আদি হাত টা ছাড়িয়ে নিলো।এ কেমন অসভ্যতা শুনি?

-আর আপনি খুব সভ্য? বাসর ঘরে বউ কে রেখে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মেতে ছিলেন। এখন জলদি সরি বলে ফেলেন বলতে বলতেই রুহি ঘোমটা টেনে বিছানায় বসে পড়লো।

-আমি সরি বলার মতো কিছু করিনি যে তোমার কাছে সরি বলবো। ঘুমিয়ে পড়তে আমার জন্য ওয়েট করার প্রয়োজন নেই।

-অবশ্যই প্রয়োজন আছে। এখনো অনেক নিয়ম কানুন বাকি। সেগুলো পূরন করবেন তারপর যেখানে ইচ্ছা যাবেন।

-কিসের নিয়ম? আমি তো তোমাকেই মানিনা আবার নিয়ম কি?

-আপনি যত কথাই বলুন না কেন আমি আপনাকে স্বামী মানি এবং ভালো চান তো নিয়ম পালন করুন। সরি বলুন আর ঘোমটা তুলে বলবেন ইস আমার বউ টা কি সুন্দর! তারপর আমি আপনার পায়ে ধরে সালাম করবো আর আপনি আমাকে গিফট দিবেন। জানেন তো বিয়ের রাতে বউ কে গিফট দিতে হয়।

-অসম্ভব! আমি এমন কিছুই করছি না।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
-করবেন করবেন। কান টানলেই মাথা আসবে।

-এই শোনো মেয়ে, বলে তর্জনী রুহির দিকে তাক করাতেই,,,

-আমি কি আম্মু কে ডাকবো? তখন আপনার বন্ধুদের সামনে কিন্তু এমন করতে হবে! ডাকবো?

বলতে দেরি হলো গট গট করে আদি বসেই ঘোমটা তুলে দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললো, ” আল্লাহ তোমাকে হেদায়েত দিন।”

বলেই আদি রুম ত্যাগ করলো। যাওয়ার আগে আবার পিছনে ফিরে বলল জোর করে বিয়ে করেছো বলেই আমার মন পাবে তা ভাববে না। জোর করে আর যাই হোক মন পাওয়া যায় না।

রুহি চুপচাপ এমন করেই বসে রইলো বাকি রাত। এক ধরনের বিষাদ মন ছেঁয়ে গেলো। আর মনে মনে বলতে লাগলো আপনার মন পেতে আমার কতদিন লাগবে! আমার যে আপনাকে পেতেই হবে।

চলবে,,,,,,
#নীলকন্ঠী।
#ভালোবাসা কেবল শুরু
#পর্ব -০৩

রুহির অত্যাচার দিন দিন বেরেই চললো। খেতে বসবে বলে মাছ বেছে দাও, সপ্তাহে ৩ দিন বেলা করে ফুচকা খেতে নিয়ে যাওয়া, কলেজে নিয়ে যাওয়া সব ই আদি কে করতে হয়। আর সবচেয়ে বিরক্তিকর ব্যাপার হচ্ছে মেয়ে টা ভীষণ উলটা পালটা ড্রেস পরে। এ পর্যন্ত আদির ৫ টা টি শার্ট দখল করেছে। মাঝে মাঝে আদির মনে হয় এটা কি আদির বাসা! নিজের বাড়িতেই রোহিঙ্গা হয়ে ঘুরে বেরায়। এত কিছুর মাঝে ও আদি রুহি কে পড়াশোনায় হেল্প করার ট্রাই করে। এই একটা দিক দিয়ে রুহি কে আদি কথা শোনাতে ভুল করে না।

দেখতে দেখতে ৩ মাস হয়ে গেলো আদির উপর প্রচুর প্রেশার যাচ্ছে। ৩য় বর্ষের ফাইনাল শুরু হতে আর কয়েকটা দিন। এর মাঝে এসাইনমেন্ট প্রেজেন্টেশন ও রেডি করতে হবে। সব কিছু একসাথে সামলাতে হিম শিম খাচ্ছে। তার উপর মেয়েটা যদি একটু বাদঁরামি কম করতো কিছু টা হলেও স্বস্তি পেতো।

সারা রাত ল্যাপটপে কাজ করে ভোর বেলা নামাজ পড়ে ঘুমালো। একেবারে উঠলো দুপুরে। একটু ভার্সিটি যেতে হবে বলে খেয়েই দৌড় দিলো আদি। আসতে আসতে রাত ৯.৩০ বাজলো। আগামী কাল ই প্রেসেন্টেশন আর সেটার উপর এনসাইন মেন্ট ও জমা দিতে হবে। তারা হুরা করে ল্যাপটপ টা নিয়ে বসলো। কিছু জিনিস যোগ করতে হবে কিছু এডিট করতে হবে। এসব ভাবতে ভাবতেই ল্যাপটপ ওপেন করলো।

আদির এসাইনমেন্ট আর প্রেজেন্টেশনের কোন ফোল্ডার ই নেই। নেই মানে একদম ই গায়েব। টেনশনে আদির কপাল ঘামতে শুরু করলো। ভীষণ রকমের খোঁজা খুঁজি করেও নেই। এবার মাথা নস্ট হওয়ার জোগার। কিন্তু এই মুহুর্তে মাথা ঠান্ডা রাখা জরুরী না হলে আবার কাজ করা কস্টকর হয়ে দাঁড়াবে। তার আগে মায়ের ঘরে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতে হবে তার ল্যাপটপ কেউ ধরেছে কিনা।

যেই কথা সেই কাজ। মায়ের ঘরে গিয়ে দেখলো রুহি মহারাণী মায়ের কোলে শুয়ে আছে আর মা তার মাথায় হাত বুলাচ্ছে। দেখেই মেজাজ চড়ে গেলো। এই মেয়েটা আদির জীবন টা ত্যানা ত্যানা বানিয়ে দিয়েছে। আদির সব কিছু দিন দিন দখল করেই চলছে। সব কিছুতেই বেশি অধিকার জমাচ্ছে। ইদানীং মা ও রুহি কে ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না। হুট করে আদি চিৎকার করে বলল,

-মা আমার ল্যাপটপ কে ধরেছিলো?

ওদিকে দু জনের এক জনের ও খবর নেই। তারা তাদের মতো গল্পে মেতেই আছে। এবার আদি তাদের সামনে গিয়ে ‘ মা ‘বলে চিল্লায়ে ডাকলে তারা মুখ চাওয়া চাওয়ি করে হুর মুর করে উঠে বসে পরে।

-কি বলছি তোমাদের কানে যায় নি? আমার ল্যাপটপে হাত দিয়েছে কে? লাল লাল করে চোখ পাঁকিয়ে আদি জিজ্ঞাসা করলো।

রুহি উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলল ও এই কথা? আর কে? আমি ছাড়া তোমার জিনিসে আর কে হাত দিবে?

কথা টা বলা মাত্রই আদি কষিয়ে একটা চড় বসালো রুহির গালে। গালে হাত দিয়ে রুহি অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে। টপ টপ করে চোখের পানি পড়ছে। ঘটনার আকস্মিকতায় আদির মা ছেলের দিকে তাকিয়ে আছে। উনার বুঝতে সময় লাগছে আদি কেন এমন করল। কিছু বলার আগেই আদি বলা শুরু করলো,

-মানা করেছি আমার জিনিসে হাত দিতে। করেছি না? কি মজা পাও আমাকে জ্বালিয়ে। কাল আমার প্রেসেন্টেশন আমার কোন ফাইল ফোল্ডার পাচ্ছি না। কত টা পরিশ্রম করতে হয়েছে আমার একাজ গুলো গুছাতে। আমার লাইফ টা হেল বানিয়ে রেখেছো। মনে যা ইচ্ছা তাই করো। তোমার মতো এমন মেয়ের থেকে কখনোই ভালো কিছু আশা করা যায় না । আর কখনো আমার সামনে আসবে না।

আদি আর এক মুহুর্ত ও দাঁড়ালো না। মাথায় আগুন জ্বলছে। আর রুহি ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। ওর দোষ টা কোথায় তাই বুঝতে পারছে না একটু না হয় ধরলো ল্যাপটপ। কি এমন হয়েছে! তবে হ্যা এত টুকু বুঝতে পারছে আদির মনে রুহির জন্য কখনো ভালবাসা জন্মে নি আর হয়ত জন্মাবে ও না। রুহির( মনে হলো আর এখানে থাকা ঠিক হবে না। বির বির করে বলল, “আম্মু আমি বাসায় যাবো। ”

চলবে
#নীলকন্ঠী

#ভালোবাসা কেবল শুরু
#পর্ব -০৪

সেদিনের পর অনেক দিন কেটে গেলো। প্রায় দেড় মাস, আদি তার এক্সাম নিয়ে ভীষণ বিজি ছিলো। আর রুহি ও একটা বার আদিকে ফোন করেনি। হ্যা আসমা বেগম কে ফোন করেছে খোঁজ নিয়েছে কিন্তু কখনো আদির কথা ভুলেও জিজ্ঞাসা করেনি। এ কটা দিন রুহি নিজেকে নিয়েই ভীষণ ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করেছে।

পড়াশোনা কোচিং সব মিলে রুহির সময় কেটেছে। চটপটে রুহি টা ভিতরে ভিতরে কস্ট পেয়ে চুপসে গেছে। সত্যি ই তো এত পাগলামি না করলেও হতো। এই বয়সে বিয়ে টা না করলেও হতো। কিন্তু আদির লাইফে এরই মাঝে যদি অন্য কেউ চলে আসে!!! এই ভয়েই তো বিয়ে টা করা।

কথা ছিলো এমন যে রুহির এইচ এস সি এক্সামের পর পর ই তুলে আনা হবে । ততদিনে আদিও গ্র্যাজুয়েশন কম্পলিট করে ফেলবে।

আদির পরীক্ষার মাঝে আদির মা ও কখনো কিছু জানতে চায় নি রুহির সাথে তার আদৌ কথা হয় নাকি। কিছু দিন পর ই রুহির আম্মু ফোন দিলো। তারা দুজনেই ভাবলো এখন পর্যন্ত যেহেতু ছেলে মেয়ে দু জনেই যে যার মতো আছে তাই একটা ফ্যামিলি ট্যুর হয়ে যাক। তাতে সবার একসাথে সময় ভালো কাটবে, ওদের একা ছারতে দুই পক্ষই নারাজ। আদি যেই রগচটা কখন কি বলে বসে আর কি। তাই একসাথে সবাই টাইম স্পেন্ড করার কথা ভাবলো। সামনের সপ্তাহের জুম্মাবারেই যাবে ভাবলো।

কোথায় যাবে কোথায় যাবে ভেবে রুহি তার আম্মু কে বলল চলো সোনার গাঁও যাই। রুহির আম্মু তার দিকে তাকাতেই হেসে বলে ফেললো

-“আম্মু তুমি না বললে আমায় সাদা জামদানি কিনে দিবে ওই দিকে তো জামদানি পাওয়া যায় ভালো। চলো না! ”
শেষ পর্যন্ত সোনার গাঁও ঠিক হলো। আদি কে আগে থেকেই তার আম্মু ফ্রি থাকতে বলেছে।

রুহি কলেজ থেকে এসেই সরাসরি রুমে ঢুকে গেলো। রুমে ঢুকে রীতিমতো ভুত দেখার মতো চমকে উঠলো।
চিল্লায়ে সোফার কুশন টা হাতে নিয়েই এলোপাথারি মারতে থাকলো রাফান কে।

রাফান, রুহির বড় খালামনির এক মাত্র ছেলে। রুহির চেয়ে ৩ বছরের বড় কিন্তু সম্পর্ক টা একদম বন্ধুর মতো দেশের বাইরে থাকে দেড় বছর যাবত। রাফান ও বিছানা থেকে বালিশ নিয়ে রুহি কে আটকানোর ট্রাই করলো।

-অসভ্য জংলী আমাকে না জানিয়ে এসে আবার আমার বিছানায় শুয়ে ঘুমাচ্ছে।

-এই মুখ সামলা। তোর ৩ বছরের বড় আমি। আর তুই জানিস না এই বাসায় তোর চেয়ে আমার অধিকার বেশি। সো আমার যেই রুম ভালো লাগবে আমি সেখানেই ঘুমাবো।

দুই জনই বালিশ যুদ্ধ শেষে হাঁপাচ্ছে। এবার ঘর কাঁপিয়ে হেসে চলছে।

-তুমি এমন ক্যানো রাফান ভাইয়া। একটা ফোন ও দাও নি।

-হুম আর তুই! খুব দিয়েছিস?

-আমি তো ভীষণ বিজি। হুহ। কখন আসলা তুমি? আর আমার জন্য কি কি এনেছো শুনি।

-এই তো ঘন্টা খানেক হলো। আমি এখনো খাইনি। তুই ফ্রেশ হয়ে আয়, খালা মনি কে ডাকছি। সবাই একসাথে খাবো। আর হ্যা রাতে তুই তোর গিফট পেয়ে যাবি।

রুহির রুম থেকে বের হয়ে করিডোর ধরে হেটে খালামনির রুমে গেলো রাফান। খালা মনি আসবো?

রাহেলা বেগম নীরবে চেয়ে কাছে ইশারা করলেন। রাফান এসেই রাহেলা বেগমের পায়ের কাছে বসে পড়লো।

-“খালামনি খেতে চলো।”

-বাবা তুই কেমন আছিস? তখন রান্না বান্নার ঝামেলায় কথায় হলো না।

-আগে খাবো তারপর আড্ডা হবে, কথা হবে। এখন চলো তো বলেই উঠতে গেলেই রাহেলা বেগম রাফানের হাত টেনে ধরে বলল

-রাফান, রুহির বিয়ে হয়ে গেছে।

রাফান কতক্ষন ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে বলল, “মজা করছো আমার সাথে?”

রাহেলা বেগম আচলের কোনা শক্ত করে ধরে বলল, -“রাফান, রুহির আদির সাথে বিয়ে হয়েছে, রুহির ইচ্ছাতেই হয়েছে। ওর জেদের কাছে আমরা হার মেনেছি। তাই বিয়েটা দিতে হয়েছে।”

রাফান চুপচাপ তার খালা মনির পায়ের কাছে আবার ও বসে পড়লো। চোখ থেকে জল পড়ছে আর সে রাহেলা বেগমের পা জড়িয়ে বলতে লাগলো আমার আপন কেউ রইলো না খালামনি। তুমি তো বুঝতে, এমন টা কিভাবে করলে? আম্মু মারা যাওয়ার পর তোমরাই তো সব। কেনো লুকালে আমার কাছে। আমাকে পর করে দিলে। রুহি কে আমি ভালবাসি খালামনি। আমার রুহি কে চাই ই চাই। ” বাচ্চাদের মতো রাফান কেঁদেই চলছে।

রাহেলা বেগম ডান হাত রাফানের মাথায় রেখে কেঁদে চলছে। হ্যা সে জগতের সব চেয়ে নিষ্ঠুর মায়ের পরিচয় দিয়েছে, রাফান কে তো সেই মানুষ করেছে । রাফানের ব্যাপার টা কেনো এক মুহূর্তের জন্যে মনে এলো না? এতিম ছেলে টার কাছ থেকে তার ভালবাসা কে কেড়ে নিয়ে আবারো তাকে এতিম করে দিলো রাহেলা বেগম।

চলবে …….
#নীলকন্ঠী