গল্প ::::::ভালোবাসি তোমাকে ?❤️
পর্ব :৭
Writer ::Sajna Akther
-আপনি ছাদে আর আমি সারা বাড়ি খুঁজে বেড়াচ্ছি আপনাকে
-আমাকে চোখে হারাচ্ছো বুঝি ?
-অবশ্যই না ? এই প্রথম আপনি আমার বাসায় এসেছেন জামাই হিসেবে আপনার খেয়াল রাখার দায়িত্ব অবশ্যই আমার এতে চোখে হারানোর কি আছে
-আমাকে তুমি চোখে হারাও না তাই না (আমার দিকে এগুতে এগুতে)
-এভাবে এগুচ্ছেন কেনো
-ওমা স্বামীর খেয়াল রাখবে না তাই তো কাছে আসছি,, কাছে না আসলে খেয়াল রাখবে কি করে
-আমি আপনার খেয়াল দূর থেকেই রাখতে পারবো কাছে আসার কোনো প্রয়োজন নেই
-আহ বউ এতো ভয় পাচ্ছো কেনো আমিতো তোমারই একটা মাত্র জামাই,
-দেদেখুন… (আর কিছু বলতে পারলাম না ওনার ঠোঁটের সাথে আমার ঠোঁট মিলিয়ে নেন,, পরম আবেশে ঠোঁটে চুমু দিতে থাকেন আমিও আর ওনাকে আটকাই না দিনে একবার হলেও এটুকু ভালোবাসা পাবার জন্য আমিও ছটফট করি যতই হোক অবশ্যই একমাত্র স্বামী আমার ?
.
.
.
আজ কলেজে এসেছি বাবার সাথে আর বাসায় যাবো ওনার সাথে তাই ছুটি হওয়ার সাথে সাথে রিতা,, সুইটি,, রবিনকে ক্লাসে ফেলে চলে আসি আমি গেটে এসে দেখি ওনি গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন আমাকে দেখার সাথে সাথে একটু এগিয়ে আসলেন আমিও এগুতে লাগলাম আমাদের ঠিক মাঝখানে
এসে দাঁড়ান রায়হান ভাইয়া,, ওনাকে এভাবে আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কেমন অপ্রস্তুত হয়ে উঠি,,, ভাইয়ার পেছনে ওনি দাঁড়িয়ে আছেন
.
আমি :::::ভাইয়া আপনি এখানে, কিছু বলবেন
.
রায়হান :::::আয় তোকে বাসায় ড্রপ করে দিয়ে আসি,, ওইদিকেই যাচ্ছিলাম তাই ভাবলাম তোকেও সাথে করে নিয়ে যাই
.
আমি :::::thank you ভাইয়া আসলে আমি ওনার সাথে চলে যাবো ওহ আপনাকে তো পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়নি,,, ইনি হচ্ছেন আমার স্বামী রোশান আহমেদ (রোশানের কাছে এসে)
.
নিশাত এর মুখে স্বামী শব্দ শুনে রায়হানের বুকে চিনচিন বেথা শুরু হলো
রায়হান :::::কি বলছে এসব নিশাত ওর স্বামী মানে কি,,, না না এটা হতে পারে না নিশাত শুধু আমার অন্য কারো না,,, হয়তো নিশাত আমার সাথে ফাজলামি করছে কিন্তু ও তো এমন মজা আমার সাথে করে না,,,(মনে মনে)
নিশাত এর মুখে মিষ্টি হাসি দেখে রায়হান তার হাত বাড়িয়ে দিলো রোশান এর দিকে
রায়হান :::::হায় মিস্টার রোশান আমি রায়হান চৌধুরী
রোশান হ্যান্ডশেক করে বলে
.
রোশান :::::হ্যালো
.
রায়হান ::::::তা নিশাত বিয়ে কবে করলি (বুকে পাথর চেপে,,, হয়তো এক্ষুনি চোখের জল টোপ করে গড়িয়ে পড়বে)
.
আমি :::::জি ভাইয়া পনেরো দিন হলো নয় তারিখে বিয়ে হয়েছে (মাথা নিচু করে)
.
রায়হান ::::::ও আসলে আমি জানতাম না এতদিন দেশের বাইরে ছিলাম তো তাই,, আচ্ছা বাই ভালো থাকিস একদিন নাহয় রোশানকে নিয়ে আমাদের বাসায় আসিস (বলেই চলে গেলেন)
..
.
আমি ::::::আআআপনার ককি হয়েছে এভাবে রেগে আছেন কেনো (ভয়ে ডোক গিলে)
.
রোশান ::::::ছেলেটার সাথে তোমার সম্পর্ক কি ছিলো ?
.
আমি :::::মানে ?
.
রোশান :::::যা বলছি তার সঠিক উত্তর দাও ?
.
আমি ::::::ওনারা আমাদের প্রতিবেশী ছিলেন আমাদের বাসার পাশেই রায়হান ভাইয়ার বাসা ছিলো তারপর তাদের কিছু একটা হয়েছিল ওখান থেকে চলে যান আর তিন বছর পর ভাইয়া দেশে এসেছেন,, আমাকে দেখলেই ভাইয়া ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করেন আর কিছু না (এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলে ফেলি)
.
রোশান :::::ঠিক আছে গাড়িতে বসো
.
.
এদিকে…..
.
রায়হান তার বাড়িতে ঢুকেই ভাঙচুর শুরু করে একটার পর একটা জিনিস ভেঙেই চলেছে
রায়হান ::::::মা তুমি আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছো তোমার কথা তুমি রাখোনি মা,, আজ আমার চোখের সামনে নিশাত অন্য কারো,,, মা তুমি ভাবতে পারছো আমার নিশাত অন্য কারো হয়ে গেছে,,, (কান্না করে)
.
রায়হানের মা ::::::শান্ত হো বাবা,,, এমন করিস না আর,, আমার একটা ভূলের জন্য তুই তোর ফুলের মতো জীবন নষ্ট করিস না,, দেখবি নিশাত এর চেয়ে সুন্দর মেয়ে তোর জীবনে আসবে (ছেলের কান্না দেখে মা ও কেঁদে উঠলেন)
.
রায়হান ::::::আমার সুন্দর কোনো মেয়ে চাই না মা আমার শুধু নিশাতকে চাই তুমি প্লিজ আমার নিশাতকে এনে দাও ?
.
রায়হানের মা ::::::এটা যে আর সম্ভব নারে বাবা নিশাতের স্বামী আছে ওর একটা সংসার আছে ও কখনো আসবে না
.
(রায়হান আর কোনো কথা না বলে ওর রুমে চলে যায় দরজা আটকে দেয়,, এদিকে রায়হানের মা দরজায় ধাক্কা দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে চলে গেলেন)
.
.
রায়হান ::::::চলেই যদি যাবে
তবে কেন এসেছিলে,
আমার সাজানো জীবনে,
ভালই তো ছিলাম একা
একা একাই পথ চলতে
শিখেছিলাম, চলছিলামও বেশ ভালই,
হটাৎ করেই জীবনে
এলে তুমি, স্বপ্নের রাজ্যে
ভাসিয়ে দিয়ে চলেও গেলে দূরে,
মাঝখানে এলোমেলো
করে দিয়ে আমার
সাজানো পৃথিবীটাকে।
অবশ্য এখানে তোমার কোনো দোষ নেই পারিনি বলতে তোমায় কতটা ভালোবাসি আমি
আমার এই মন জুড়ে শুধুই তুমি ছিলে
পারিনি তোমায় আগলে
রাখতে i love you নিশাত,, ভালোবাসি তোমাকে ভালোবেসে যাবো ??
.
.
.
.
রোশান ::::::হায় সুইট হার্ট কেমন আছো তুমি কতদিন দেখা হয় না বলো তো (মুচকি হেসে)
………………………
হোয়াট? চেয়ে দেখি ওনি কারো সাথে ফোনে কথা বলছেন
……………………
.
রোশান :::::ওহ বেবি তুমিও না কি যে বলো,, তোমাকে দেখবো বলে আমারো মন কেমন আকুল হয়ে উঠেছে
.
……………………..
.
রোশান :::::::ওকে কাল ই আসবে আমার আর তর সইচে না কখন তোমায় দেখবো
.
………………………..
.
রোশান :::::::আচ্ছা বাই ভালো থেকো
.
কি হলো এটা ? ওনি কার সাথে এভাবে কথা বললেন তাও বেবি বলে,, ওহ মাই গড ওনার কি গার্লফ্রেন্ড আছে,, আমাকে কি ধোকা দিচ্ছেন ওনি কিন্তু এ কেমন ধোকা বউয়ের সামনেই গার্লফ্রেন্ড এর সাথে ফোনে কথা,, ডালমে কুচ কালা হে,
কাল পর্যন্ত ওয়েট করি,, যদি
কোনো তেরিবেরি দেখি তাহলে ওনার একদিন কি আমার একদিন ?
.
.
.
সকাল থেকে ওনি কেমন সাজগুজ নিয়ে পরে আছেন মনে হচ্ছে আজকে কেউ ওনাকে দেখতে আসছে যেমন কোনো পাত্র পক্ষ পাত্রী কে দেখতে আসছে মেয়েদের মতো কেমন আয়নার সামনে সাজতে বেস্ত,, কোনো ছেলে এমন হয় আমার জানা ছিলো না,, আমি কাজের ফাঁকে ফাঁকে ওনার দিকে তাকাই আজ কলেজ ছুটি ওনার ও অফিস বন্ধ শুধু বাবা বাসায় নেই একটা কাজে বেরিয়েছেন আজ নাও আসতে পারেন
.
রোশান ::::::শুনো পাশের রুমটা একটু দেখো পরিষ্কার আছে কি না ও এখানে এসে আজ থাকবে
.
আমি ::::::ওওওও টা কে (ব্রু কুঁচকে)
.
রোশান ::::::একটু পর আসলেই দেখতে পাবে (লজ্জা মাখা হাসি দিয়ে)
.
কেমন রহস্য রহস্য হাসি দেখতে পাচ্ছি কি করতে যাচ্ছেন ওনি,, নিশ্চয়ই এমন কিছু করবেন যা আমার জন্য একদম ভালো হবে না, কি সেটা ?
.
.
কলিং বেল বাজতেই সবাইকে নিষেধ করে দিলেন কেউ যেনো দরজা না খুলে এবং আমাকেও নিষেধ করলেন তার একটাই কারণ ওনি নিজের হাতে দরজা খুলবেন
চুলের স্টাইল করতে করতে দরজা খুলতে যাচ্ছেন…
.
.
.
চলবে…..