ভালোবেসে ফেলেছি পর্ব-০৫

0
2449

#ভালোবেসে_ফেলেছি
part : 5
writer : Mohona

.

আরফান : আই অলসো থিংক সো … মামনি… একদম কান্না করবেনা… তুমি না আমার ভালো মা…
বিষয় : বহ্নিরে , একারনেই তোক বলি একটু সাহসী হ… প্রতিবাদী হ… কিন্তু তুই… দেখেছিস তোর নরম হওয়ার জন্য আজকে তোর সাথে কি হলো?
আরফান : আহ বিষয়… এখন এই কথা গুলো না বললেই কি নয়?
বিষয় : বাবা … আমি সব সময়ই ওকে বলি… কিন্তু ও … ফরগেট ইট…
অর্নব : বাবাই আসি…
আরফান : আরে অর্নব আসো…
বিষয় : ছোটভাই … হাতে এটা কি?
অর্নব : ফুচ ফুচ ফুচকা… ডিমের ভীতুর প্রিয় লাগে খেতে…
আরফান : ওরে বাবা… আমাদের ছোটসাহেব তো কানাডা গিয়ে বুদ্ধিমান হয়ে গিয়েছে।
অর্নব : ওহ থ্যাংক ইউ বাবাই । আই নো আই অ্যাম দ্যা বেস্ট । বাই দ্যা ওয়ে এই বেস্ট মানুষের কাছে আরো ১টা বেস্ট আইডিয়া আছে।
বিষয় : কি আইডিয়া ছোটভাই…?
অর্নব : বড়ভাই… ডিমের ভীতুর মনটা ভালো করার জন্য চলো কালকে সবাই পিকনিকে যাই।
বিষয় : গুড আইডিয়া ছোটভাই…
আরফান : বিষয় তুমি বোধহয় ভুলে যাচ্ছো যে তুমি ১জন পুলিশ অফিসার…
বিষয় : না মানে বাবা … আমার ঘুরতে কতো ভালো লাগে …
আরফান : কিভাবে যে তুমি পুলিশ ট্রেনিং এ পাশ করলে…

পরদিন সবাই মিলে পিকনিকে গেলো ।

.

পরদিন…
বহ্নি ক্লাসে ঢুকলো।
সবাই : গুড আফটারনুন আপু…
বহ্নি : গুড আফটারনুন… সবাই কেমন আছো?
সবাই : ভালো টিচার…
বহ্নি : কিন্তু মনিকে দেখে তো মনে হচ্ছে যে ওর মনটা ভালো নেই… কি হয়েছে হামমম ?
তাসু : জানিনা আপু আজকে ও অফ অফ কেন?
বহ্নি : কি হয়েছে মনি?
মনি : কিছুনা আপু…
ইমা : আপু আজকে তোমার হাতে এতো বেলুন কেন আপু?
বহ্নি : তোমাদের সবার জন্য।
পিউ : কিন্তু কেন?
বহ্নি : কারন আজকে থেকে অন্যরকম ভাবে ক্লাস শুরু করলাম তো … তাই…
বহ্নি সবার হাতে হাতে ১টা ১টা করে বেলুন দিয়ে দিলো। এরপর ক্লাস শুরু করলো।

.

ক্লাসশেষে…
সবাই বেরিয়ে গেলো কেবল মনি রয়ে গেলো।
বহ্নি : মনি… তুমি কি কিছু বলবে?
মনি ছুটে গিয়ে বহ্নিকে ধরে কাদতে লাগলো। বহ্নি অবাক হলো। সেই সাথে ঘাবরেও গেলো ।
বহ্নি : কি হয়েছে মনি? আর ইউ ওকে ? বলো তো আপুকে …
মনি কেদেই যাচ্ছে।
বহ্নি : দেখি কান্না থামাও তো… থামাও কান্না… না হলে কিন্ত মাইর দিবো…
বহ্নি কোনো রকমে মনিকে ঠান্ডা করলো।
বহ্নি : নাও পানি খাও।
মনি খেলো।
বহ্নি : এখন বলো তো আপুমনি কি হয়েছে?
মনি : আপু মনি এতোগুলো সরি…
বহ্নি : সরি? কিন্ত কেন? হঠাৎ সরি বলছো কেন? কি হয়েছে…?
মনি সবটা বলল। আর সবটা শুনে বহ্নির যথেষ্ট রাগ উঠলো। না মনির ওপর না। দহনের ওপর। কারন এমন কিছুর সাথে এই প্রথম বহ্নি মুখোমুখি হয়েছে…
মনি : আপু সব দোষ আমার। ভাইয়ার কোনো দোষ নেই। আসলে ভাইয়া আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে । তাই আমার চোখের পানি ভাইয়া সহ্য করতে পারেনা… আর আমি যা করতে বলি ভাইয়া সেটা ফেলতে পারেনা। প্লিজ ফরগিভ মি…
বহ্নি মিষ্টি ১টা হাসি দিয়ে মনির কপালে চুমু একে দিলো ।
বহ্নি : ডোন্ট বি গিল্টি আমার আপুইটা। যাও বাসায় যাও।

.

রাতে…
বহ্নির ঘুম আসছেনা। কেবল এপাশ-ওপাশ করছে… উঠে বসলো। পানি খেলো। বসে বসে ভাবতে লাগলো যে ওর নানু সবসময় ১টাই কথা বলতো যে ‘অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে ২জনই সমান অপরাধী।’ বইয়েও এই কথাটা পড়েছে অনেকবার। আর বিষয় , আরফান , বিনা , দিনা , অর্নব… সবাই ওকে বলে সাহসী হতে। প্রতিবাদী হতে।
বহ্নি : কি করবো? প্রতিবাদ করবো? কিন্তু প্রতিবাদ কিভাবে করবো? প্রতিবাদ করলে যদি মনির ভাই যদি আরো ভয়ংকর কিছু করে? যদি বাবার-ভাইয়ার সম্মানহানী হয়? যদি ওরা অপমানিত হয়? তাহলে?

.

পরদিন …
আরফান : কিছু বলবে মা?
বহ্নি মাথা নেরে হ্যা বলল।
আরফান : ভেতরে আসো মা।
বহ্নি ভেতরে ঢুকলো।
আরফান : কি বলবে মা?
বহ্নি : বাবা… প্রতিবাদ করলে কি শত্রুতা বারে?
আরফান : হয়তো হ্যা হয়তো না?
বহ্নি : মানে?
আরফান : হামম। প্রতিবাদে শত্রুতা বারবে না কমবে সেটা নির্ভর করে প্রতিবাদীর ওপর… প্রতিবাদীর প্রতিবাদের ধরনের ওপর… তবে শুরুতে ওয়ার্ন করা ভালো। মানে কথার মাধ্যমে প্রতিবাদ করা উচিত ।যদি তাতেও কাজ না হয় তবে কঠোরভাবে প্রতিবাদ করার উচিত । শুরুতেই যদি মেরে ফেলবো কেটে ফেলবো দিয়ে শুরু করো তবে তো সেটা বাজেই দেখা যায়। সেক্ষেত্রে শত্রুতা হতে পারে। আবার কিছু মানুষই থাকে ত্যারা। বুঝেছো?
বহ্নি : হামম। থ্যাংক ইউ বাবা।
আরফান : ওয়েলকাম মামনিটা। কিন্তু কি হয়েছে? কোনো সমস্যা ?
বহ্নি : না বাবা। তেমন কিছুনা।
আরফান : সমস্যা হলে কিন্তু দেরি না করে দ্রুত বাবাকে বলবে। কেমন ?
বহ্নি : আচ্ছা বাবা। আসি।

.

পরদিন…
ক্লাস শেষে…
বহ্নি : মনি…
মনি : হ্যা আপু…
বহ্নি : তুমি তোমার ভাইয়াকে একটু দেখা করতে বলবে প্লিজ?
মনি : ককেন আপু?
বহ্নি : ভয় পাচ্ছো কেন?
মনি : তুমি আমার ভাইয়াকে বকবে আপু… 😢…
বহ্নি : নারে বোকা মেয়ে। জাস্ট কথা বলবো।
মনি : ওহ । কবে কথা বলবো?
বহ্নি : যদি তোমার ভাইয়া পারে তবে কালকেই।
মনি : ওকে পারবে।
বহ্নি : ভাইয়াকে জিজ্ঞেস তো করে নাও।
মনি : আমি বললে ভাইয়া সব করতে পারে। কখন কোথায় আসতে হবে বলে দাও।
বহ্নি : কালকে সকাল ১১টায়। ডিক্যাফে তে।
মনি : ওকে আপু…

.

পরদিন…
১১টায়…
বহ্নি এসে বসে আছে। সময়ের ৫মিনিট আগেই এসেছে। সময়ের কাজ সময়ে করতেই বহ্নির ভালো লাগে। দহনের কোনো খবর নেই।
মনি : ভাইয়া…. দেখো অলরেডি ১১টা বেজে গিয়েছে । তুমি এখন জাস্ট রেডি হচ্ছো?
দহন : জাস্ট ৫মিনিট নয়ন মনি। আম অলমোস্ট ডান।
মনি : যাবে কখন?
দহন : এই তো রেডি হয়েই বের হবো। মোটেও দেরি করবো না।
মনি : তুমি অলরেডি লেট ভাইয়া… ১১টায় যাওয়ার কথা… অথচ ১১টা ৫বাজে বাট তুমি এখনও রেডিই হওনি… আবার বলছো দেরি করবোনা…
দহন : ওফফো মনি… তুমি না মেয়েদের আই মিন তোমার থেকে বড় মেয়ে মানে তোমার আপুদের না রেডি হতে ৩-৪ঘন্টা লাগে। তাই তাদের কাছে ১১টা মানে মিনিমাম ১২টা। যার জ্বলজন্ত প্রমান তোমার কাকন আপু। ওকে যদি বলি যে বিকাল ৫টাতেই বের হবো। তাহলে ও সন্ধ্যা ৭টা তে গিয়ে রেডি হয়ে নিচে নামে। আবার গাড়িতে বসেও টাচআপ তো আছেই…
মনি : আচ্ছা ভাইয়া এটা কি জরুরি যে সবাই কাকন আপুর মতো হবে?
দহন : কেবল কাকন আপুনা। সব আপুই এমন।
মনি : আমার মনে হয়না বহ্নি আপু এমন।
দহন : গড নোস বেটার মে বি সে এমন নয়। আর এমন না হওয়ার কারনটা হয়তো আমি জানি।
মনি : কি?
দহন : এটাই যে তোমার বহ্নি আপুর বাবা-ভাইয়া ২জনই পুলিশ।
মনি : তো?
দহন : আরে বুদ্ধু… পুলিশরা পাংচ্যুয়াল হয়তো তাই।
মনি : তাই হুয়াট?
দহন : আরে বোকা তারা তাদের পরিবারেও পাংচ্যুয়ালিটি বজায় রাখে । তাই তাদের ফ্যামিলিও বোরিং পাংচ্যুয়াল হয়। বুঝেছো?
মনি : হামম।
দহন : ওহ নো ১১টা ২০বেজে গেলো। বাই…
দহন হনহন করে বেরিয়ে গেলো। বহ্নির জন্য সাদা অর্কিড , ক্যালেন্ডুলা , মল্লিকা মিক্সড ফুলের তোরা নিয়ে গেলো। ১টা অচেনা অন্য মেয়েকে গোলাপ দেয়ার নূন্যতম ইচ্ছা দহনের নেই।

.

১১:৫৫…
বহ্নি : মনে হয় মনির ভাইয়া আসবেনা… চলেই যাই। ১কাজ করি ১২টা পর্যন্ত দেখি…
তখন দেখলো দরজা দিয়ে দহন ঢুকলো। বহ্নি তো জানেনা যে দহনই মনির ভাই। দহন ঢুকতেই ১টা ওয়েটারের সাথে ধাক্কা লাগলো। বেচারার হাত থেকে জিনিসপত্র পরে যেতে নিলো। যদিও প্রথমে ক্ষেপে গিয়ে ‘হুয়াট দ্যা’ বলল… তার পর পলকেই ১হাত দিয়ে কান ধরে সরি বলল।
বহ্নি : দোষ করলো নিজে। আর চোখ রাঙানি দেয় অন্যজনকে। আরে এটা তো সেই টয়শপে টাকাওয়ালা ব্যাক্তিটা। যার টাকার অহংকার অনেক বেশি… তবে এ লোকটাতো আমাকে ওই বিড়ালের হাত থেকে বাচিয়েছিলো…

বহ্নি বিরক্তিকর দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে দহনের দিকে। দহন তো বহ্নিকে দেখেই চিনতে পারলো। ওর টেবিলের দিকে এগিয়ে গেলো । গিয়ে হাত বারিয়ে
বলল : হাই… আমি দহন আহমেদ। মনি আহমেদের ভাই।
বহ্নি মনে মনে : ওহ… ইনিই তবে মনির ভাই? আমার আগেই বোঝা উচিত ছিলো।
বহ্নি হাত না মিলিয়ে কেবল মুখে হ্যালো বলল । দহন বসলো।
দহন : আসলে আমিই আসতাম তোমার সাথে দেখা করতে। সরি বলতে। কিন্তু ১টা কাজের জন্য আসতে পারিনি। একারনে ডাবল সরি…
বহ্নি মনে মনে : এখন কি বলবো? কিভাবে বলবো?
দহন : আসলে ১টা ভুল বোঝাবুঝির জন্য সব হয়েছে । আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
বহ্নি : আপনি সরি বললেই কি সব ঠিক হয়ে যাবে? মনি ছোটমানুষ । কিন্তু আপনি তো ছোট নন। তাই এতোবড় স্টেপ নেয়ার আগে আপনার সবটা জেনে নেয়ার দরকার ছিলোনা?
দহন : হ্যা তা তো ছিলো। কিন্তু এখন তারথেকেও বেশি জরুরি কিছু খাবার অর্ডার করা । কারন আমার ভীষন ক্ষুধা লেগেছে। ব্রেকফাস্ট করিনি তো তাই । আসলে আজকে অফিস ডে ছিলোনা তো তাই… তাই আগে খেয়েনি প্লিজ। না খেলে শুধুশুধু এখন রেগে আগুন হয়ে যাবো। কেন রাগ করবো নিজেই বুঝবো না। ওয়েটার….
দহন এত্তোগুলো খাবার নিজের জন্য অর্ডার করে বহ্নিকে জিজ্ঞেস করলো যে তুমি কি খাবে? বহ্নি আরও অবাক হলো ।
বহ্নি : না আমি কিছু খাবোমা । আমি ব্রেকফাস্ট করেই বের হয়েছি। আর এখানে এসে কফিও খেয়েছি।আর কিছু খাবোনা।
দহন : বার্গার আর কফি…?
বহ্নি : নো থ্যাংকস।
দহন : এতোটুকু খাওয়াই যায়।।।। শুনুন ম্যামের জন্য বার্গার আর কফি…
বহ্নি : আরে আমি কি…
দহন : বললাম না এতোটুকু খাওয়াই যায়। আচ্ছা বলো কি বলবে? তুমি আমার থেকে ছোট। তাই তুমি করেই বললাম। আমিও কিন্তু চন্দনা ম্যামের কাছে পিয়ানো শিখেছি। আচ্ছা বলো কি বলবে?
বহ্নি : দেখুন আপনি যে কাজটা করেছেন সেটা মোটেও ঠিকনা। কারও সাথেই এমন আচরণ করা ঠিকনা। কেউ যদি আপনার সাথে এমন করতো তখন আপনি কি করতেন?
দহন : আমার সাথে কেউ এতোকিছু করার সুযোগই পাবেনা। সাহসই পাবেনা।স্পটেই জানে মেরে ফেলবোনা তাকে বা তাদেরকে।
তখন খাবার এলে দহন গরুর মতো খাওয়া শুরু করলো। ওর খাওয়া দেখে বহ্নি নিজের খাওয়ার কথার ভুলে গেলো ।

দহন : আমি জানি আমি ভুল করেছি। বাট আই ওয়াস হেল্পলেস। আমার নয়নমনির খুশির জন্য আমি সব করতে পারি। জান দিতেও পারি জান নিতেও পারি।
বহ্নি : 😒। এমন ভাবে কথা বলছেন যেন আপনি একাই কারো ভাইয়া। সারা পৃথিবীতে আপনার একারই বোন আছে । আমারও তো ভাইয়া আছে। আমার সাথে এতোকিছু হওয়াতে তারও তো খারাপ লেগেছে।
দহন : লাগবেই তো। বোনদের কষ্ট দেখলে সব ভাইয়াদেরই কষ্ট হয়। এখন তুমি গিয়ে তোমার ভাইয়াকে আমার কথা বলো তোমার ওসি ভাইয়া আমাকে অ্যারেস্ট করে নিয়ে থার্ড ডিগ্রি দিবে। সাধারন অপরাধীদের যে মাইর দেয় তার থেকে ৪গুন বেশি মাইর দিবে। কারন আমি তার বোনকে কষ্ট দিয়েছি।
বহ্নি : শুনুন আমার ভাইয়া ১জন অনেস্ট পুলিশ অফিসার । আপনাকে অ্যারেস্ট করে নিয়ে গেলেও আর ৫টা ক্রিমিনালের মতোই আপনাকে ট্রিট করবে।
দহন : ইশ বললেই লাগে আমি বিশ্বাস করবো।
বহ্নি : সেটা আপনার ব্যাপার। কিন্তু আমার ভাইয়াকে আমি ভালোমতোই চিনি।
দহন : তাহলে তো তোমার ভাইয়া তোমাকে ভালোইবাসেনা।
বহ্নি : একদম উল্টাপাল্টা কথা বলবেন না। আমার ভাইয়া আমাকে ভীষন ভালোবাসে।
দহন : মোটেও না। পুলিশ তো পুলিশই। ওরা কাউকেই ভালোবাসতে পারেনা ।
বহ্নি : একদম বাজে বলবেন না।
দহন : হাজারবার বলবো। যা ইচ্ছা তাই বলবো। কারন আমি দহন আহমেদ।
বহ্নি : আপনি যদি আমার ভাইয়ার সম্পর্কে আর ১টা বাজে কথা বলেন তবে আমি ভাইয়াকে আসতে বলবো। তখন বুঝবেন মজা।
দহন : কি হবে আমাকে জেলে নিয়ে যাবে? সো হুয়াট? আমার জল্লাদ বাপ আমাকে বের করাবেনা জানি। সে আমাকে বের না করালে কি হবে আমার মামা তো আছে। স্বরাষ্ট্র সচিব।
বহ্নি : 😒।
দহন : জল্লাদ বাপের কথায় মনে পরলো যে আমার জল্লাদ বাপ বিজনেম্যান হয়ে এমন জল্লাদ। আর তোমার বাবা তো পুলিশ কমিশনার। সে তো মহাজল্লাদ হবে।
এবার বহ্নি আরও ক্ষেপে গেলো। তাই আঙ্গুল তুলেই বলে
ফেলল : একদম আমার বাবার নামে বাজে কথা বলবেননা।
আর আঙ্গুল তুলে কথা দহন পছন্দ করেনা । এতোক্ষন মজা করলেও এবার ও ক্ষেপে গেলো।
দহন : ১০০বার বলবো। আমি দহন আহমেদ। আই ক্যান ডু এ্যানি থিং… ভুল করেছি বলে সরিও বলেছি । তানা হলে দহন আহমেদ কখনও কাউকে সরি বলেনা। গট ইট…
দহনের ধমকে বহ্নি কেপে উঠলো।
কথাগুলো বলেই দহন বিল পে করে হনহন করে বেরিয়ে গেলো। বহ্নি ভয়ের চোটে ঢকঢক করে পানি খেয়ে নিলো। ওর হাত পা এখনও কাপছে দহনের ঝারি খেয়ে। ও ধপ করে বসে পরলো।

.

৫মিনিট পর…
দহন : হ্যালো লেডি…
বহ্নি মাথা তুলে দেখে দহন। মাত্র কাপাকাপিটা বন্ধ হলো আবার দহনকে দেখে কাপাকাপি শুরু হলো।।
দহন : রিল্যাক্স। ডোন্ট বি স্কেয়ার্ড।
বহ্নি : …
দহন : আসলে তোমাকে সরি বলার জন্য এই ফুলের তোরা এনেছিলাম। তবে ভুলে এটাকে গাড়ি থেকে বেরই করিনি। ধরো ইটস ফর ইউ। এন্ড আম সো সরি। আসলে আমি যে কখন কোন মুডে থাকি , কখন কোন কারনে রেগে যাই তা নিজেই জানিনা। প্লিজ এক্সেপ্ট দিস।
বহ্নি ঢোক গিলল।
দহন : আরে এখন ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ধরো।
বহ্নি : …
দহন ঝারি মেরে
বলল : ধরতে বলেছি না…
বহ্নি কেপে উঠলো। কাপা কাপা হাতে ফুলের তোরাটা নিলো।
দহন : তুমি অনেক ভীতু। আমি শুনেছি তুমি খুব নরম স্বভাবের । জীবনে প্রথম মনে হয় তুমি কারো সাথে ঝগড়া করলে। তাও আমারই সাথে। ইউ শুড থ্যাংক মি। কারন আমার জন্যই তুমি ঝগড়া শিখলে।
বহ্নি : …
দহন : তবে এরপর থেকে কিছু করার আগে ঘটনা আগে জেনে নিবো। এন্ড থ্যাংকস টু ইউ…
বহ্নি : …
দহন : ওকে বাই মিস কিউটি… আবার দেখা হবে।
বলেই দহন চলে গেলো। বহ্নি আবার ধপ করে বসে পরলো।
বহ্নি : আপনার মতো ভয়ংকর মানুষের সাথে যেন আর কখনো দেখা না হয়…

.

চলবে…