ভালোবেসে ফেলেছি পর্ব-২৪+২৫

0
2530

#ভালোবেসে_ফেলেছি
part : 24
writer : Mohona

.

রনক-রবি : হ্যা…
বহ্নি মনে মনে : ওহ নো… দৌড় দিবো? বহ্নি বি স্ট্রং। এখন তো ওকে ভয় পাওয়ার দরকার নেই। কে ও হ্যা কে ও?
দহন এগিয়ে আসছে। বহ্নি বেশ বুঝতে পারছে যে দহন সামনে আসছে।
বহ্নি : ওকে ভাইয়ারা আসছি। বাই…
দহন খপ করে হাত ধরলো। বহ্নি হাত ছারানোর চেষ্টা করতে লাগলো। দহন বহ্নির হাত টান দিলো। বহ্নি ধিরিম করে দহনের বুকে বারি খেলো।
দহন দাঁতে দাঁত চেপে
বলল : আমি ডাকাত? আমি দানব ? হামম? অ্যান্সার মি…
বহ্নি হাত ছারিয়ে নিলো।
বহ্নি : বাধ্য নই আমি অচেনা অজানা কারো কথার জবাব দিতে…
বলেই বহ্নি হনহন করে চলে গেলো।
দহন : আমি অচেনা অজানা… আমি… 👿…
রবি : দহন দহন দহন… ঠান্ডা হ প্লিজ ঠান্ডা হ…
দহন : আমি ঠান্ডা হবো? ওর এতো সাহস আমাকে অচেনা অজানা বলে… আমাকে?
রনক : দেখ ভাবি এখন রেগে আছে তাই…
দহন : সো হুয়াট… বলবে কেন এই কথা?
রবি : রাগলে তো মানুষ কতো কিছুই বলে বল… 😅..
দহন : জাস্ট শাট আপ।
বলেই দহন হনহন করে চলে গেলো।
রনক : ভাবির মতো ১টা মেয়ে এর মতো ১টা বদমেজীজর সাথে কিভাবে সংসার করেরে? ভাবির নামই কেবল বহ্নি… স্বভাব তো পানির মতো।
রবি : হামমম।

.

রিকশা না পেয়ে বহ্নি হাটতে লাগলো। দহন গাড়িতে বসে দেখে বহ্নি হেটে হেটে যাচ্ছে।
দহন : এতো সাহস? আমার বউ হয়ে রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছে ? স্টুপিড কোথাকার…
দহন গাড়ি নিয়ে বহ্নির সামনে থামলো। নামলো। বহ্নির সামনে দারালো।
দহন : গাড়িতে ওঠো বাসায় চলো।
বহ্নি : আমি আপনার বাসায় কেন যাবো মিস্টার আহমেদ?
দহন : দেখো প্লিজ রাস্তায় দারিয়ে সিন ক্রিয়েট কোরোনা।
বহ্নি : আমি সিন ক্রিয়েট করছি? আমি আপনাকে ডাক দিয়েছি?
দহন : ওকে ফাইন গাড়িতে না উঠলে রিকশা নাও। না পেলে ট্যাক্সি নাও।
বহ্নি : ট্যাক্সি নিয়ে বারতি খরচ করার ইচ্ছা আমার নেই। আমার বাবা অঢেল সম্পত্তি রেখে যায়নি।
দহন : অনেক বাকা কথা বলতে শিখে গিয়েছো।
বহ্নি : থ্যাংকস টু ইউ।
দহন : তো তোমার হেটে হেটে যাওয়ার কারন জানতে পারি?
বহ্নি : মানুষকে নিজের রূপ আর শরীর দেখানো…
দহন : বহ্নি…
দহন বহ্নিকে থাপ্পর দিতে গিয়েও থেমে গেলো।
বহ্নি : থামলেন কেন? মারুন… এখনও অধিকার আছে আপনার আমাকে থাপ্পর মারার। বাট ট্রাস্ট মি খুব শীঘ্রই আর থাকবেনা।
বলেই বহ্নি কয়েক কদম গিয়ে আবার ফিরে এলো।
বহ্নি : আচ্ছা বুকে হাত দিয়ে ১টা কথা বলুন তো আমাদের বিয়ের ২মাসের মধ্যে আপনি আমার সাথে যা যা আচরন করেছেন তার ১অংশও কি কাকনের সাথে করেছেন? তাও এতো বছরের সম্পর্কে… কাকনকে থাপ্পর তো দূরের কথা… কখনো ফুলের টোকাও কি দিয়েছেন? দেন নি… তাইতো?
বহ্নি ঠিকই বলেছেন । কাকনের সাথেও এর ছিটে ফোটাও করেনি। একটু উচ্চস্বরে কথা বললেই কাকন সুইসাইড করতে যেতো । দহন চুপ করে রইলো।
বহ্নি : আমি জানতাম আমিই ঠিক। গুড বাই মিস্টার দহন আহমেদ…
বলেই বহ্নি চলে গেলো। দহন পেছন থেকে ডাক দিলো।
দহন : বহ্নি…
বহ্নি দারালো…
দহন : আমি তোমাকে…
বহ্নি : ….
বহ্নি দহনের দিকে ঘুরলো।
দহন : আমি তোমাকে…
বহ্নি : …
তখন দহন দেখলো ১টা বাইকওয়ালা যাওয়ার সময় বহ্নির দিকে তাকিয়ে ছিলো।
দহন : আমি তোমাকে এক্ষনি বাসায় নিয়ে যেতে চাই…😤।
বহ্নির ইচ্ছা করছে ইট তুলে দহনের মাথা ফাটিয়ে দিতে। ভাগ্যক্রমে ১টা রিকশা যাচ্ছিলো বহ্নি সেটাতে চরে চলে গেলো। দহন গাড়িতে ১টা লাথি মারলো।

রবি : গাড়িকে লাথি মেরে কি লাভ?
রনক : আর রাগ করেই বা কি লাভ?
রবি : এতো সাহসী হয়েই বা কি লাভ যদি বউকেই ভালোবাসি বলার সাহসই না হয়… 😁…
দহন : শাট আপ জাস্ট শাট আপ।
দহন চলে গেলো। ওরা ২জন তো হাসতে হাসতে শেষ ।

.

রাতে…
রুমে ঢুকতেই ওর কাছে নিজের রুমটাই অচেনা লাগছে । বেশ ফাকা ফাকা লাগছে। কেবল ২টা মাস ধরেই তো বহ্নি এখানে ছিলো। তবুও মনে হচ্ছে যে বহ্নি ছারা এই ঘরটা কিছুইনা। অনুজ্জল।
দহন বহ্নির ছবিটা হাতে নিলো।
দহন : আই নিড ইউ। এন্ড আই লাভ ইউ।
দহন কিছু না ভেবে বহ্নিদের বাসায় চলে গেলো। দিনা দরজা খুলে দিলো।
দিনা : আরে দহন এসো এসো।
দহন ভেতরে ঢুকলো।
দিনা : আরেকটু আগে এলেই তো সবাই একসাথে ডিনারটা করতে পারতাম।
দহন : ভাবি জাস্ট ডিনার করেই এলাম। বাচ্চারা কোথায়?
দিনা : আর আবার কোথায়? ফুপ্পির কাছে বহ্নি ঘুম পারাচ্ছে বাচ্চাদের। আমি বহ্নিকে ডেকে দিচ্ছি ।
দহন : না না ভাবি ডাকতে হবেনা। ভাবি তোমার মুখ টা যেন কেমন লাগছে… অসুস্থ?
দিনা : তেমন কিছুনা। একটু মাথা ব্যাথা… তুমি বসো আমি আসছি…
দহন : ভাবি ভাবি ভাবি… একদম না একদম না। তুমি এখন গিয়ে ঘুমাবে। আর আমি বললাম না যে জাস্ট ডিনার করেই এলাম।
দিনা : কিন্তু ত…
দহন : ভাবি… আমি কিন্তু চলে যাবো। যাও গিয়ে আরাম করো।
বাধ্য হয়ে দিনা গেলো। দহন গেলো বহ্নির রুমে। বহ্নি তো জানেই না যে দহন এসেছে । রিদি আর ভোরকে ঘুম পারাতে গিয়ে ওরও চোখটা লেগে গিয়েছিলো। দিনা গিয়ে পাশে শুয়ে পরাতে বহ্নির ঘুম ভেঙে গেলো। ও উঠে এলো ।

.

বহ্নি নিজের রুমে গেলো। লাইট নেভানো। তবে এই আধারে বুঝতে পারলো কেউ আছে । স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। বহ্নি ভয় পেয়ে গেলো।
বহ্নি : কককে কককে ওখানে? কককথা বলছেন না কককেন? আআআমি কিন্তু পপপুলিশ ডাকবো।

দহন আর কিছু না বলে বহ্নির হাত ধরে টেনে কাছে নিয়ে বহ্নির ঠোট জোরা দখল করে নিলো। বহ্নিরও বুঝতে বাকী রইলো না যে এটা কে?

দহন ১হাত দিয়ে বহ্নির কোমড় জরিয়ে ধরে অন্য হাত দিয়ে বহ্নির গালে হাত রাখলো।
দহন : প্লিজ বাসায় চলো। রাগ করে থাকো। তবুও বাসায় চলো। ওখানে গিয়ে রাগ দেখিও… প্লিজ চলো…
বহ্নি : আবার অপমানিত হতে যাবো…? অকারনে বকাঝকা খেতে যাবো।
দহন : দেখো আমি অকারনে তোমাকে বকিনি ইয়ার। ১টা ছেলে তোমাকে এতোক্ষন ফলো করলো। তোমার এতোগুলো ছবি তুলল … অথচ তুমি টেরও পেলেনা… মানলাম সেদিন রনক ছিলো। অন্যদিন অন্য কেউ হলে। তারমধ্যে তোমার শাড়িও ঠিক ভাবে ছিলোনা। ভুল করোনি বলো…
বহ্নি : তাই? আমার ভুল ছিলো?
দহন : সরি টু সে। বাট ইয়েস।
বহ্নি : আচ্ছা কাকনতো ওয়েষ্টার্ন ড্রেস পরতো।
দহন : হ্যা পরতো। না করতাম তবুও পরতো।
বহ্নি : তাহলে কাকনকে কেন বোরকা পরাও নি? কেন ঘরে বসিয়ে রাখেননি?
দহন : তুমি আমার বিয়ে করা বউ। আর কাকন ছিলো প্রেমিকা। তুমি আহমেদ বাড়ির বউ। আর কাকন ছিলো আমার ভালোবাসা…
বহ্নি যদিও সবটা জানে তবুও দহনের মুখে ‘আমার ভালোবাসা’ কথা ওর বুকে গিয়ে বিধলো।
বহ্নি : ওহ … আমি বউ বলে আমার সাথে যা তা আচরন করা যায় … সবার সামনে অপমান করা যায়। ইনডিরেক্টলি চরিত্রহীনা বলা যায়…
দহন : এটা কখন বললাম আমি…?
বহ্নি : তুমি রূপ দেখানো আর শরীর দেখানোর কথা বলোনি…
দহন : এই কথার সাথে চরিত্রহীনার কি সম্পর্ক? আর জাস্ট এই সামান্য কথাতে অপমানিত হওয়ার কি আছে?
বহ্নি : তোমার মতো উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলের কাছে কথাটা সামান্য হতে পারে। কিন্তু আমার মতো মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ের কাছে এই কথাটা অনেক কিছু।
দহন : আচ্ছা তবে জাস্ট ওই কথার জন্য সরি। অন্যকিছুর জন্য না। কারন তোমার ভুল ছিলো। প্রতিটা মেয়েরই উচিত চারদিকে দৃষ্টি রাখা। আর রাখেও। কেবল তুমিই রাখোনা।
বহ্নি : …
দহন : এখন বাসায় চলো। মানে সকালে…
বহ্নি : আমি যাবোনা…
দহন : এবার কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে।
বহ্নি : তাই? হলে হবে। আমি যাবোনা তোমার সাথে।
দহন : দেখো তুমি কিন্তু আমার ইগো হার্ট করছো।
বহ্নি : ইগো কেবল তোমাদেরই আছে আমাদের থাকতে নেই? দেখো মধ্যবিত্তদের কাছে আর কিছু থাকুক না থাকুক আত্মসম্মানবোধটা আছে ।
দহন : তুমি যাবেনা?
বহ্নি : না।
দহন : যদি তুমি না যাও তবে কিন্তু আজীবন তোমাকে এখানেই থাকতে হবে। আর ফিরিয়ে নিবোনা ।
বহ্নি : আমি যাবোও না ।
দহন : ওকে থাকো। তবে ভেবোনা যে আমি ডিভোর্স দিবো। আমি তোমার হাত ধরবোও না আর ছারবোও না।
বলেই দহন চলে গেলো।

.

দহন বারে গেলো ড্রিংকস করতে। সেখানে গিয়ে দেখলো ১জন মাতলামো করছে। দহন মাতালকে ইগনোর করলো। আসলে মাতাল লোকটা হলো কাকনের প্রাক্তন স্বামী রকি। রকি তো ফুল মাতাল। ও তো দহনকে দেখেই চিনতে পারলো। রেগে তেরে এলো ওর কাছে। আর এসেই দহনের কলার ধরলো।
রকি : এই তো… এই সেই মেয়েবাজ… বউ চোর। আজকে তোকে হাতে পেয়েছি। ছারবোনা। তোর জন্য আমার বউ আমাদের বাচ্চাকে মেরে আমাকে ফেলে চলে গিয়েছে তোর কাছে… তোকে ছারবোনা।…

দহনতো এমনিতেই রেগে ছিলো। তারওপর রকি ওর কলার ধরেছে। তারওপর ওকে বাজে বাজে কথা বলছে। যেগুলো নিজের জানামতে ও করেনি…

দহন দাত কটমট করতে করতে
বলল : আমার কলার ছারুন…
রকি : আমি তোকে জানে মেরে দিবো…
দহন : ছারুন আমাকে।
রকি : না।
দহন রকিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে জোরে চেচিয়ে
বলল : আই সিড লিভ…
বলেই দহন রকি কে মারলো ১টা ঘুষি।
রকি নিচে পরে গেলো। ভ্যা ভ্যা করে কাদতে লাগলো। ১জন এসে ওকে তুলল।
দহন : ব্লাডি মাতাল…
দহন রেগে মেগে চলে যাচ্ছে… তখন শুনতে পেলো।
রকি : আমি সত্যি বলছি… ওই লোকটা বউ চোর। ও আমার বউ কাকনকে চুরি করেছে । ওর জন্য আমার কাকন আমাকে ছেরে চলে গিয়েছে… 😭…
কাকনে নামটা শুনে দহন থেমে গেলো। রকির কাছে গেলো।
দহন : তুমি তোমার বউর নাম কি বললা? হ্যা…
রকি : কাকন…
দহন : কি বাজে কথা বলছো? কাকন তোমার বউ হবে কেন? কাকনের তো বিয়েই হয়নি…
রকি : হয়েছিলো । এই আমার সাথে। কিন্তু এই তোমার জন্য ও আমাকে ছেরে চলে গিয়েছে। এমনকি আমাদের সন্তানকেও মেরে দিয়েছে… মেরে দিয়েছে।। মের…
রকি বেহুশ হয়ে গেলো।
দহন : এই যে হ্যালো গেট আপ… গেট আপ… ড্যাম ইট…
দহন ওখান থেকে বেরিয়ে এলো।
দহন : কি বলছিলো লোকটা? কাকন ম্যারিড ছিলো? বেবিও ছিলো। এতো বড় ধোকা? না ১টা মাতালের কথায় কান দিলে লাভ হবেনা। সত্যটা জানতে হবে… কালই সব খবর নিবো… যদি সত্যি কাকন এমনটা করে থাকে তবে আমার হাত থেকে ওকে কেউ বাচাতে পারবেনা… কেউ না।

.

পরদিন …
বহ্নি ভার্সিটিতে যাচ্ছে । প্রচন্ড রোদ। আর দহনের সাথে অমন আচরন করে বহ্নি নিজেই খুব কষ্ট পেয়েছে। আবার দহনের কথা শুনেও কষ্ট পেয়েছে। সারারাত কেদেছে। তাই জন্য মাথা অসম্ভব ব্যাথা করছে। মাথা ঝিমঝিমও করছে। সবকিছু কেমন যেন ঘোলাটে দেখছে । সেই সাথে কোনো রিকশাও পাচ্ছেনা। যাও ১টা পেয়েছিলো মাঝ পথে সমস্যা দেখা দেয়। তাই বহ্নি হেটেই যাচ্ছে। যেই পথ দিয়ে বহ্নি ভার্সিটিতে যায় ওখান দিয়ে দহন অফিসে যায়। আজকেও যাচ্ছে। তবে দহন আজকে ঝড়ের বেগে ড্রাইভ করছে। কারন অফিসে মিটিংটা কোনো রকমে সেরেই কাকনের সত্য উদ্ধারে যাবে।
যেতে যেতে বহ্নিকে ক্রস করে চলে গেলো। আবার ব্যাক করলো। এই করা রোদে বহ্নিকে হেটে যেতে দেখে আবারও বহ্নির ওপর রাগ উঠলো। গাড়ি থেকে নামলো।
দহন : এই মেয়ে… এই রোদের মধ্যে হেটে হেটে কেন যাচ্ছো শুনি? রিকশা নাওনি কেন? ওঠো ড্রপ করে দিচ্ছি…
বহ্নি পিছে না ঘুরেই
বলল : আমি নিজেকে সামলাতে পারি…
দহন : গো টু হেল…
দহন গাড়ির দিকে গেলো। বসবে তখন পেছন থেকে হৈচৈ শুনতে পেলো। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে বহ্নি পরে আছে।
দহন : বহ্নি…
ছুটে গেলো বহ্নির কাছে।
দহন : বহ্নি এই বহ্নি .. বহ্নি…
দহন ওকে কোলে তুলে গাড়িতে করে হসপিটালে নিয়ে গেলো। ডক্টরের কাছে গেলো। ডক্টর চেক আপ করতে লাগলো। দহনকে বের হতে বললে ও বের হলোনা। বহ্নির হাত ধরেই বসে রইলো। বহ্নির মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখ-মুখ কেমন যেন ফুলে আছে। নাক লাল হয়ে আছে। কেন যেন মনে হচ্ছে যে বহ্নি অনেক কেদেছে ।

ডক্টর চেক আপ করে বলল যে সানস্ট্রোক করেছে। সেই সাথে অনেকক্ষন কান্না করার ফলে এমনটা হয়েছে।
দহন : ডক্টর ও ঠিক হয়ে যাবে তো?
ডক্টর : হ্যা হ্যা অবশ্যই…
দহন : ওর জ্ঞান কখন ফিরবে ?
ডক্টর : ২-৩ ঘন্টার মধ্যে।
দহন : ওকে বাসায় নিয়ে যেতে পারি প্লিজ?
ডক্টর : ওকে। বাট জ্ঞান ফিরুক।
দহন : না না। এখনই নিয়ে যাবো।
ডক্টর : ওকে।
দহন : থ্যাংক ইউ।
দহন বহ্নিকে বাসায় নিয়ে গেলো।

.

৩ঘন্টাপর…
বহ্নির জ্ঞান ফিরলো। মাথায় এখনো হালকা হালকা ব্যাথা। চোখ মেলে দেখে দহনের রুম। বহ্নি হরবর করে উঠতে নিলে মাথা চক্কর দিলো।
বহ্নি : আহ…
বহ্নি শুয়ে পরলো।
দহন : এখন কেউ শুয়ে পরলো কেন শুনি? এখন বীরপুরুষ সরি বীরনারীর মতো উঠে ধেইধেই করে বেরিয়ে যাকনা পারলে রুম থেকে বাসা থেকে…
বহ্নি তাকিয়ে দেখে দহন হাতে হাত বেধে দারিয়ে আছে। বাকা চোখে তাকিয়ে আছে।
বহ্নি : আমি এ…
দহন : আমি নিয়ে এসেছি। সমস্যা ?
বহ্নি : থ্যাংক ইউ…
বলেই বহ্নি ধীরে ধীরে উঠে বের হতে নিলো রুম থেকে। দহন দারিয়ে দারিয়ে কেবল দেখলো।

দহন : আল্লাহ যেন মাথা ঘুরে ধপাস করে এখনই পরে যায়…
বহ্নি কপাল কুচকে দহনের দিকে ১নজর তাকিয়ে সামনে পা বারালো। সত্যি মাথা ঘুরে পরে বসে পরলো।
দহন : একদম উচিত হয়েছে…
বহ্নি মাথায় হাত দিয়ে বসে রইলো। দহন বহ্নিকে কোলে তুলে বেডে শুইয়ে দিলো।
দহন : ১পা নেমে দেখো বেড থেকে এবার। কসম আল্লাহর একেবারে পা ভেঙে ঘরে বসিয়ে রাখবো…
বহ্নি : …
দহন : ঘুমাও চুপচাপ। আমি ভাবিকে ইনফর্ম করেছি। ঘুমাও। চোখ ব…
তখন দহনের ফোনটা বেজে উঠলো।

দহন : হ্যালো…
☆ : হ্যালো স্যার। আপনি যে এখনও এলেন না।
দহন : আমি আজকে আসতে পারবোনা। কালকে আসবো। আমি মেয়েটার নাম আর ওর ১৪গুষ্ঠির ডিটেইলস ই-মেইল করছি। সব ইনফর্মেশন আমার ঠিকঠাক চাই।
☆: স্যার আপনি এলে ভালো হতো। এতো জরুরী ১টা কাজ…
দহন : আমি সকল জরুরী কাজের থেকেও উর্ধ্বের কারো কাছে আছি…
☆ : স্যার যেটা আপনি পারবেন সেটা তো আর আমি পারবোনা।
দহন : ওকে দেন কালকে-পরশু করবো।
☆: স্যার আপনিতো বলেছিলেন যে এটা অনেক জরুরী । তাই তারাতারি সব তথ্য চান। তাই বললাম।
দহন : এগুলোর সকল বিষয়ের উর্ধ্বে আমার বউ। গট ইট। সি ইউ টুমরো…
বলেই দহন ফোন রেখে দিলো।
বহ্নি : কার ফোন ছিলো?
দহন : তোমাকে কেন বলবো? তুমি নাহয় আমার বউ। কিন্তু আমি কে তোমার ?

.

চলবে…

#ভালোবেসে_ফেলেছি
part : 25
writer : Mohona

.

দহন : কিন্তু আমি তোমার কে?
বহ্নি বোকার মতো তাকিয়ে রইলো দহনের দিকে। মাঝেমাঝে দহনের কথার মানে বহ্নি হাজার চেষ্টা করলেও বোঝেনা।
নিশা দরজায় নক করলো।
দহন : আসো মামনি….
নিশা দহনকে পাশ কাটিয়ে বহ্নির কাছে গেলো। বহ্নি চলে যাওয়ার পর থেকে নিশা আর ছেলের সাথে কথা বলেনি।
নিশা : এখন কেমন লাগছে রে মা? ভালো?
বহ্নি : হ্যা মামনি…
নিশা : ঘরের লক্ষি ঘরে ছিলোনা সবকিছু ফাকা ফাকা লাগছিলো।

দীপন : টাডা…
সবাই তাকিয়ে দেখে দীপন দারিয়ে আছে । হাতে ট্রে , মাথায় শেফ হ্যাট , গায়ে এপ্রোন। দীপনের সাথে মনিও আছে।
দীপন : বলো তো বলো তো মামনি… তোমার বাপীর হাতে কি?
নিশা : মেয়েটা কিভাবে বলবে?
দীপন : দেখে বলবে…
বলেই দীপন ট্রে টা রাখলো। বহ্নি দেখলো ফালুদা , লাচ্ছি , পুডিং …
মনি : ভাবি জানো এগুলো সব বাপী রান্না করেছে… তোমার জন্য ।
দীপন : 😎।
বহ্নি মিষ্টি ১টা হাসি দিয়ে
বলল : থ্যাংক ইউ বাপী…
দীপন : এই তো মামনির হাসির দেখা পাওয়া গিয়েছে। এখন সবকিছু শুভ হবে।
বহ্নি আবারও হেসে দিলো। ওরা ৪জন কথা বলছে আনন্দ করছে। আর দহন এতিম শিশুর মতো দূরে দারিয়ে আছে।

.

একটুপর…
রুমে কেবল বহ্নি আর মনি বসে আছে ।
মনি : জানো ভাবি আমি না তোমাকে এতো এতো এতো এতো এতততততো মিস করেছি…
বহ্নি : আমিও তোমাকে অনেক মিস করেছি নয়নমনি…
মনি : তুমি আর যাবেনা তো ভাবি…
বহ্নি : …
মনি : তুমি চলে গেলে যে এখনও ভাইয়ার সাথে আমার কথা বলা হবেনা।
বহ্নি : মানে?
মনি : মানে তুমি যাবার পর থেকে না আমরা কেউ ভাইয়ার সাথে কথা বলিনা।
বহ্নি : ওহ…
মনি : জানো ভাবি ভাইয়া না তুমি যাবার পর ১দিনও ঠিক মতো খায়নি। মামনি রেগে আছে। তাই ভাইয়াকে খেতেও বলেনি তেমন। আর ভাইয়া ঠিকমতো খেতোনা বলে আমি আর মামনিও ঠিক মতো খাইনি । আর আমরা কেউ খাইনি বলে বাপীও ঠিকমতো খায়নি…
বহ্নির খুব খারাপ লাগলো কথা গুলো শুনে। তখনই দহন রুমে ঢুকলো। দহনকে ঢুকতে দেখে মনি বেরিয়ে গেলো।
বহ্নি : বেড থেকে নামতে পারি?
দহন : কেন নামবে কেন?
বহ্নি : ওয়াশরুমে যাবো।
দহন : ওহ।
দহন বহ্নিকে কোলে নিতে গেলে
বহ্নি বলল : হাত-পা অকেজো হয়ে যায়নি আমার… নিজেই যেতে পারবো।
বলেই বহ্নি ওয়াশরুমে গেলো। বহ্নি বের হবার পর দহন হাতমুখ ধুতে গেলো। বেরিয়ে এসে দেখে বহ্নি নেই । দহন অস্থির হয়ে গেলো। বহ্নিকে ডাকতে ডাকতে নিচে নামলো।
দহন : ব…
দেখলো যে বহ্নি কিচেনে বসে আছে আর নিশা রান্না করছে।
দহন মনে মনে : যদি দেখতাম বাসায় নেই। কপালে দুঃখই ছিলো এর।
রাতে সবাই পেট ভরে খাবার খেলো। সত্যি বলতে বহ্নি নিজেও আজ কদিন পর তৃপ্তির সাথে খেলো। সবাইকে বড্ড মিস করেছে। সবথেকে বেশি ওর ডাকাতটাকে….

.

দহন রুমে ঢুকে দেখে বহ্নি সোফার কুশন গুলো সাইড করছে। দহন মনে করলো যে বহ্নি সোফায় ঘুমাবে।
দহন : যদি নিজেকে হিন্দি সিরিয়ালের নায়িকা ভেবে সোফায় ঘুমানোর ধান্দা করো তো থাপ্পর ১টাও নিচে পরবেনা। কুশনগুলো জায়গামতো রাখো।
বহ্নি প্রথমে না বুঝলেও পরে বুঝলো। বিরক্তও লাগলো আর হাসিও পেলো। আসলে ওর আংটিটা এখানটাত কুশনের পিছে পরেছে । তাই সেটা নেয়ার জন্যই ও কুশনটা সরাচ্ছিলো।
দহন : কিছু বলেছি তো…
বহ্নি : ….
দহন : এই মেয়ে…
বহ্নি : মানুষ এতো চেচায় কেন আল্লাহই জানে।
বহ্নি আংটিটা পেয়ে গেলো। দহনকে দেখিয়ে হাতে পরতে পরতে
বলল : কিছু মানুষ অশান্তি প্রিয় কি করে হয় বুঝিনা। নিজেকে কোনো গল্পের হিরো ভাবে। কিন্তু আসলে ১নাম্বার ডাকাত ।

বলেই বহ্নি কুশন জায়গা মতো রেখে দিলো।

দহন : এই এই এই আমি ডাকাত ?
বহ্নি : হামমম…
বলেই বহ্নি শুয়ে পরলো।

দহন মনে মনে : খুব সাহস বেরেছেনা তোমার… দারাও দেখাচ্ছি মজা।

দহন লাইট নিভিয়ে দিলো।

বহ্নি মনে মনে : ডাকাতটা কোনো রিয়্যাক্ট করলোনা কেন? যাক ভালোই হয়েছে।

দহন মনির রুম থেকে ১টা রাবারের তেলাপোকা আর ১টা রাবারের টিকটিকি নিয়ে এলো। নিয়ে এসে চুপচাপ শুয়ে পরলো। ২মিনিটের মাথায় দহন চুপ করে বহ্নির মাথার ওপর নকল টিকটিকি আর তেলাপোকা দিয়ে ঘুমের ভান ধরলো।

বহ্নি : মাথায় কি পরলো?
বহ্নি মাথায় হাত দিয়ে টিকটিকি আর তেলাপোকা পেলো সামনে আনলো। আর দেখেই ভয়ের চোটে লাফিয়ে উঠলো। দিলো চিৎকার…
দহন : কি হয়েছে কি হয়েছে ডাকাত পরেছে ডাকাত পরেছে…. 😁।।
বহ্নি কিছু না ভেবে দহনের বুকে ঝাপিয়ে পরলো।
দহন : 😇।
বহ্নি থরথর করে কাপছে। হার্টবিট অনেক বেরে গিয়েছে।
দহন : কি হয়েছে?
বহ্নির মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছেনা ।
দহন : রিল্যাক্স … আমি আছি তো ।
দহন ধীরে ধীরে বহ্নির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। বহ্নির কাপাকাপিও কমতে লাগলো।

বাট হার্টবিট তো কমছেনা। উল্টা দহনের হার্টবিট বেরে গেলো।

অন্যদিকে বহ্নির চিৎকারে বাকীদের ঘুমও ভেঙে গিয়েছে। কি হয়েছে কি হয়েছে ভেবে ৩জনই ওদের রুমে চলে এলো। নক করার কথাও ভাবেনি। বাট দহনের বুকে বহ্নিকে দেখতে পেয়ে ৩জনই বেরিয়ে গেলো। লজ্জাও পেলো।

দহন-বহ্নির তো খবরই নেই যে কেউ রুমে এসেছিলো…😒।

বহ্নি সরে আসতে চাইলেও পারলোনা। দহন ওকে ধরে রাখলো। আবেগে দহনের চোখে পানি চলে এলো। ও আজকে সম্পু্র্নভাবে বুঝতে পারলো যে প্রেমিকা প্রেমিকাই। আর স্ত্রী স্ত্রীই হয়। স্ত্রী অতুলনীয়। প্রেমিকা তো সহজেই হতে পারে। বাট বউ … বউ তো সেই হয় যাকে আল্লাহ তারজন্য সৃষ্টি করেছে।
বহ্নিও বেশ বুঝতে পারলো যে দহন কাদছে।

.

বহ্নি : দহন…
দহন : কোনো কথা বলোনা প্লিজ… কোনো প্রশ্ন কোরোনা… কেবল শোনো…
বহ্নি : ….
দহন : আম সরি… সেদিনের ব্যাবহারের জন্য আমি অনেক অনেক দুঃখিত। আমি জানি তুমি অন্যদের মতো নও… কিন্তু আমি মেনে নিতে পারিনি যে কেউ আমার বহ্নির সৌন্দর্য দেখেছে। আমি মানতে পারিনি , পারিও না আর পারবোও না এটা যে কেউ আমার বহ্নির দিকে তাকিয়েছে । ওকে দেখে কেউ মুগ্ধ হয়েছে… কেউ ওর প্রেমে পরেছে… কেউ ওকে ভালোবেসেছে…. কারন বহ্নি কেবল আর কেবল দহনের। বহ্নির সবকিছুর ওপর শুধুমাত্র দহনের অধিকার। আর কারো না… বহ্নির সৌন্দর্যে কেবল দহনের অধিকার। বহ্নির রূপে কেবল দহনের অধিকার। বহ্নির শরীরেও দহনের অধিকার। বহ্নির রূপে মুগ্ধ হওয়াও দহনের অধিকার। বহ্নির দিকে তাকানোও দহনের অধিকার। বহ্নির প্রেমে পরাও কেবল দহনের অধিকার। বহ্নিকে ভালােবাসাও কেবল দহনের অধিকার। আর কারো না… তুমি প্রশ্ন করেছিলেনা যে কেন কাকনের বেলায় আমি এমন করিনি…
বহ্নি : ….
দহন বহ্নিকে বুক থেকে তুলে ওর কপালে চুমু দিলো। এরপর বহ্নির ২গালে হাত রাখলো।

দহন : দহন কাকনের সাথে এমন করেনি কাকন বহ্নি ছিলোনা। কাকন দহনের প্রেমিকা ছিলো , বউনা। কাকনকে আল্লাহ তা’আলা দহনের বাম পাজরের হাড় দিয়ে বানায় নি…

দহনের কথাগুলোতে বহ্নির চোখে পানি চলে এলো।

দহন : আমাকে ছেরে আর কখনো যেওনা প্লিজ… মরে যাবো আমি…
বহ্নি দহনের মুখ ধরলো।
বহ্নি : অমন করে বলতে নেই…
দহন : তাহলে যাবেনা বলো …
বহ্নি : যাবোনা… তুমি বললেও যাবোনা…
বলেই বহ্নি দহনের বুকে মাথা রাখলো।

দহন : ইউ নো হুয়াট … আই অ্যাম টু মাচ লাকি…
বহ্নি : মি টু….
দহন : ঘুমিয়ে পরো… তুমি অসুস্থ…
বহ্নি : …
দহন : এভাবেই আমার বুকেই ঘুমাওনা প্লিজ …
বহ্নি : হামমম।

.

সকালে…
বহ্নির ঘুম ভাঙলো । উঠে পরলো। দহন ঘুমিয়ে আছে। বহ্নি মুচকি হাসি দিলো। এই প্রথম ঘুমন্ত দহনের মুখে এমন প্রশান্তি দেখলো ।
বহ্নি : রাগি কিন্তু খুব ভালো ডাকাতটা আমার। ঠিকই বলেছিলো সেদিন মনি… ডাকাতটা সত্যিই আমার মন চু… ডাকাতি করেছে। পাগলটা।

বহ্নি ফ্রেশ হয়ে কিচেনে গেলো।
নিশা : কিরে তুই কিচেনে কেন?
বহ্নি : এখন তুমিও তোমার ছেলের মতো আমাকে রোগী বলোনা প্লিজ। আম ফাইন নাউ।
নিশা : ওকে না বললাম…

বহ্নি : থ্যাংকস। আমি চা টা বানিয়ে ফেলি তাহলে।
নিশা : আচ্ছা ।

বহ্নি চা বসিয়ে দিলো।
নিশা : আচ্ছা শোন ১টা কথা বলতো …
বহ্নি : কি কথা?
নিশা : আমি দীদা কবে হবো রে?
বহ্নি অবাক চোখে নিশার দিকে তাকালো।
নিশা : এতো অবাক হচ্ছিস কেনরে? ভুল কি বললাম… আমার মনে হয় সময় এসে পরেছে। আমার ছেলেটা তোকে ভালোবেসে ফেলেছে …

বহ্নি মাথা নিচু করে হাসি দিলো।
নিশা : হয়েছে আর লজ্জা পেতে হবেনা।

.

ব্রেকফাস্টের পর…
দহন : বহ্নি আজকে ক্লাস আছে তোমার?
বহ্নি : হ্যা ১টা ক্লাস আছে।
দহন : এখনই যাবে?
বহ্নি : হ্যা।
দহন: তাহলে চলো।
বহ্নি : ৫মিনিট দারাও আমি আসছি।
বহ্নি ছুটে ওপরে গেলো। আর বোরকা পরে , হাত মোজা পা মোজা পরে এলো , সেই সাথে মুখও ঢাকা।
নিশা : হায়হায় আমার পরির মতো ছেলের বউটা কোথায় গেলো? 😥😱😭।
দীপন : নিশা…

বহ্নি : চলো …
দহন মুচকি ১টা হাসি দিয়ে বহ্নির হাত ধরে রুমে নিয়ে গেলো।
বহ্নি : কি হলো…
দহন বহ্নির বোরকা , হাত মোজা , পা মোজা সব খুলে দিলো।
বহ্নি : কি হয়েছে?
দহন : এগুলোর দরকার নেই। তুমি যখনই বের হবে আমি তোমার ছায়া হয়ে থাকবো। তাই এর আর প্রয়োজন নেই…
বহ্নি : আমি কিন্তু মন থেকেই পরেছি।
দহন : আর আমিও মন থেকেই না করেছি।।। চলো।
দহন বহ্নিকে ড্রপ করে কিছুক্ষনের জন্য অফিসে গেলো। এরপর আবার বহ্নিকে পিক করে বাসায় পৌছে দিয়ে কাকনের সত্যি জানতে ছুটলো।

.

☆: স্যার এই যে সব ইনফর্মেশন।
দহন সব দেখলো। আর বুঝতে পারলো যে রকি যা বলেছে ঠিকই বলেছে। আর সব জেনে দহনের নিজের ওপর রাগ উঠছে যে কাকনের মতো কাউকে ভালোবেসেছিলো।

☆: স্যার এই মেয়ে জাতিটাই এমন। ধোকাবাজ…
দহন : সবাইকে ১পাল্লায় মাপা ঠিকনা। আসছি।
দহন বেরিয়ে এলো।
দহন : এবার ওই মিথ্যাবাদী আসুক সামনে… মাসুম বাচ্চাটাকে ছিঃ … মেয়েতে মেয়েতে কতো পার্থক্য ।
দহন বাসায় গেলো।
দহন : বহ্নি… বহ্নি।
বহ্নি : হ্যা বলো …
দহন : কালকে শপিং এ যাবো।
বহ্নি : হঠাৎ ?
দহন : রবির বিয়েনা সামনে।
বহ্নি : কিন্তু তুমি যে বলেছিলে যাবেনা…
দহন বহ্নিকে কোলে বসিয়ে
বলল : অন্যকারো জন্য আমি আমার বেস্টফ্রেন্ডের বিয়ে কেন মিস করবো?
বহ্নি : রাইট ডিসিশন। ১টা কথা বলি?
দহন : বলো।
বহ্নি : তুমি আমার ছবি তোলা নিয়ে রনক ভাইয়ার ওপর রেগে আছো?
দহন বহ্নির পিঠে নাক ঘষে
বলল : একদম না। আমি জানি রনক কেমন।
বহ্নি : আচ্ছা এবার ফ্রেশ হয়ে নাও।
দহন ; কিছু বলার ছিলো। কাকনকে নিয়ে…
বহ্নি : বলো।
দহন সবটা বলল।
বহ্নি : আমি জানতাম।
দহন : মানে? কি করে?
বহ্নি : বহ্নি বলেছিলো…
এবার বহ্নিও সবটা বলল।
দহন : ছিঃ… এতো খারাপ মানুষ হয়?
বহ্নি : হয়তো হয়। যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও। পরদিন ওরা শপিং এ গেলো। খুব শপিং করলো।

.

৭দিনপর…
রাত ১১টা বেজে ৩৩মিনিট।
বহ্নি :আমরা কোথায় যাচ্ছি দহন?।
দহন :গেলেই দেখতে পাবে।
বহ্নি : তুমি না খুব ডেঞ্জারাস।
দহন : সেটা তো আমি জানি…

কথা বলতে বলতে ওরা পৌছালো।
দহন : চলে এসেছি…
বহ্নি তাকিয়ে দেখলো খুব সুন্দর ১টা স্পট।
বহ্নি : ওয়াও…
দহন গাড়ি থেকে নামলো। বহ্নিও নামলো। আর তাকিয়ে দেখে ওর পায়ের নিচে ফুলের পাপড়ি… আর ফুলের পাপড়ি দিয়ে ১টা পথ বানানো।
দহন বহ্নির কানের কাছে গিয়ে
বলল : চলো…
বলেই দহন হাত বারিয়ে দিলো। বহ্নিও ধরলো। এরপর পায়ের জুতু খুলে ফেলল। এতো সুন্দর পাপড়িগুলোর ওপর দিয়ে জুতু পরে হাটতে ইচ্ছা করলোনা।

কয়েক কদম হেটে ওরা ভেতরে ঢুকলো। রুমটা বেশ সুন্দর করে সাজানো।
দহন বহ্নির কপালে চুমু দিয়ে
বলল : হ্যাপী বার্থ ডে মাই ডিয়ার বহ্নি।
বহ্নির খুশি দেখে কে….
এবার দহন বহ্নির হাত ধরলো।
দহন : বহ্নি ভনিতা করে সময় নষ্ট করতে চাইনা। তাই বলে দিচ্ছি… বহ্নি আমি তোমাকে #ভালোবেসে_ফেলেছি … খুব বেশি। আই লাভ ইউ….
বহ্নি তো নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছেনা। কি বলছে কি দহন….
দহন : আমি তোমাকে খুব খুব খুব ভালোবাসি… আ…
তখন দহনের ফোনটা বেজে উঠলো। স্ক্রিনে ভেসে উঠলো বাপি শব্দটা।
দহন : হ্যালো বাপি …

.

চলবে…