#গল্পঃ_ ভিলেন
লেখিকাঃ আদিবা ইসলাম আঁখি
পর্বঃ ১৯
———————★★———————–
সিনহা: আদিবা কিডনিতে ছোট একটা টিউমার হয়েছিলো যার কারনে বার বার সেন্সলেন্স হয়ে যেতো সেইদিন যখন আমার কাছে টেস্ট করতে আসছিলো সেইদিন ব্যাপারটা বুঝেছিলাম বাট ওরে দেখে মনে হয়েছিলো ওর মনমানসিকতা ঠিক ভালো নেই তাই জানায় নি ভেবে ছিলাম তোমাদের সবাই কে এই বিষয়টা বলে একটা অপরের্শন করাবো বাট হঠাৎ এসব কি হয়ে গেলে আর গুলিটা লাগার পড় প্রচন্ড ব্লড বের হয়ে গেছে এতো আদিবার বাচ্চা উপর অভাব পড়ছে!!.. আদিবার লাইফ রিক্স আছে। কিছু পেপার সাইন করতে হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আদিবার অর্পরেশন শুরু করতে হবে,,,,
শুভ: ওয়াটটট….
আব্বু: কিহহহ বলো
আম্মু: সিনহা এসব কি বলছিস মা…!
শুভ: আর আমাদের বেবি…?
সিনহা: আই এম সরি..! কাকিমা তুমি শান্ত হও,,, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি বাট আদিবার যে অবস্থা ছিলো তাতে বেবি বাঁচানো অসম্ভব ছিলো..
মা: বেবি মানে..! বউমা পেগনেন্ট কি করে সম্ভব ( মনে মনে)
আম্মু: হে আল্লাহ বার বার কেনো এমনটা হয় আমার মেয়ের সাথে..! এবার যে আমার মেয়েটা সম্পূর্ন ভাবে ভেঙ্গে পড়বে,,,,( কেঁদে)
আব্বু: তুমি নিজেকে শান্ত করো না হলে তোমার শরীর খারাপ করবে,,,
বাবা: হ্যাঁ ভাবি নিজেকে সামলাম আর আমরা তো আছি বউমাকে ঠিক বুঝিয়ে নিবো,,,
আম্মু: আপনারা বুঝছেন না আমি আমার মেয়েকে চিনি কি করে এই বিষয়টা মেনে নিবে,,,,
আব্বু: ঠিক মেনে নিবে দেখো,,,,
মা: ভাবি আমাদের আদিবা স্টং ঠিক বুঝবে টেনশন করেন না,,,
আম্মু: হুমমম,,,,
সিনহা : কাকু পেপার গুলো সাইন করলে আদিবা অপর্রেশন টা শুরু করবো ফাস্ট আমাদের হাতে অত সময় নেই,,,,
আব্বু: আমি এক্ষনি সব পেপার সাইন করে দিচ্ছি…
সিনহা: ওকে কাকু,,,,
আম্মু: সিনহা দোয়া করে আমার মেয়েটাকে সুস্থ করে দে ( সিনহার হাত ধরে)
সিনহা: কাকিমা আমি সম্পূর্ন চেষ্টা করবো বাকিটা আল্লাহ হাতে তুমি নিজেকে সামলাও আর প্রার্থনা করো
আম্মু: হুমমমম
____ হঠাৎ শুভ মাথা ঘুরে পড়ে যেতেই বাবা ধরে ফেললো সাথে সাথে পাশে চেয়ারে বসিয়ে দিলো…!
বাবা: শুভ কি হয়ছে বাবা
মা: শুভ বলনা কি হয়ছে শরীর খারাপ নাকি,,,,
সিনহা পানি এনে শুভকে খাইয়ে দিলো,,,,,,
সিনহা: পাশে আমার কেবিন চলুন একটু রেস্ট নিলে সব ঠিক হয়ে যাবে,,,,,,,,
মা: হ্যাঁ বাবা চল,,,,
___ তখনি হঠাৎ শুভ মাকে জোরিয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো,,,,
শুভ: আম্মু আজ আমার ভুলের মাশুল হিসেবে আল্লাহ আমার থেকে আমাদের ভালোবাসার চিহৃ কে কেঁড়ে নিলো….! কেনো এমন শাস্তি দিলো আমায় অন্য ভাবে দিতো এই ভাবে এতো বড় শাস্তি আম্মু আদিবার যদি কিছু হয়ে যায় আমি নিজেকে কোন দিন ক্ষমা করতে পারবো না ,,,,( কেঁদে কেঁদে)
ওখানে থাকা সবাই শুভর কথা শুনে শুভর দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে,,,,,
মা: শুভ এভাবে বলিস না বাবা,,,,,
আম্মু: বাবা তুমি তো জেনে বুঝে এমনটা করো নি নিজেকে এভাবে দোষি বানিয় না
মা: একদম কেনো এমন ভাবছিস বউমা সুস্থ হয়ে যাবে,,,,,
শুভ: আম্মু অনেক কষ্ট নিজেকে সামলিয়ে ওর সাথে খারাপ ব্যবহার করতাম বড্ড ভালোবাসতাম ওরে কিন্তুু ওর কোন ক্ষতি হক আমি কখন চাইতাম না,,,,কিন্তুু আজ আমার জন্য ওর এত বড় ক্ষতি হয়ে গেলো। কেনো বুঝিনি তুষারের এমন বাঁজে একটা রুপ আছে কোনো কেনো,,,( কাঁদতে কাঁদতে)
মা: শুভ তুই একটু শান্ত হ তুই যদি এভাবে ভেঙ্গে পড়িস তাহলে কে আদিবাকে সামলাবে তোকেই তো সামলাতে হবে,,,
বাবা: একদম ঠিক বাবা তুই শান্ত হ হুম
শুভ: হুমমম পাপা
আব্বু: কেনো এমন ভাবছো,,,, শুধু দোয়া করো আমার মেয়েটা যেনো সুস্থ হয় বাকি টা সবাই মিলে সামলাবো ..
শুভ: হুমমম আংকেল আমি চাই আদিবা সুস্থ হক। কথা দিচ্ছি এবার এমন ভাবে আগলে রাখবো কষ্ট ছুয়তে পারবে না,,,
আব্বু: আমি জানি তুমি পারবে,,,,,
শুভ: হুমমমম,,,,
★★ এভাবে দু দিন কেঁটে গেলো…। এই দুদিনে শুভ আমায় অনেক যত্ন করেছে হসপিটালে সবাই প্রশংসা পঞ্চমূখ শুভ এমন কেয়ার দেখে…!
রাত ৯:০০ টার দিকে হঠাৎ সেন্স ফিরলো চোখ মেলে দেখি পাশে সবাই দাড়িয়ে আছে,,,,,
সিনহা: আদিবা আর ইউ ওকে…!
আমি: হুম ( মাথা নাড়িয়ে)
মা: বউমা এখন কেমন লাগছে
আমি: হ্যাঁ মা ভালো
আম্মু: আল্লাহ দরবারে অনেক অনেক শুকরিয়া আমার মেয়েটাকে সুস্থ করে দিয়েছে ,,,
বাবা: বউমা টেনশন করো না একবার বাসায় চলো দেখো সবাই মিলে এমন যত্ন করবো একদম সুস্থ হয়ে যাবে
আমি: ঠিক আছে বাবা ( মুচকি হেসে) …….! মা তুষার?
মা: ওরে তো পুলিশ নিয়ে গেছে শুনলাম সেখানে নাকি পাগলামি করে,,,
আমি: ওহহ,,,,,,,,উফ উঠতে পারছি না কেনো মা আমার পেটে এতো ব্যাথা কেনো….!মা আমার বেবি ঠিক আছে তো,,,,( উওেজিত হয়ে)
আমার কথা শুনে সবার মুখ কালো হয়ে গেলো,,,,,,
সিনহা: আদিবা তুই আগে সুস্থ হ সব বলবো কেমন।
আমি: কি বলবি বলনা আমার বেবি ঠিক আছে তো,,,,
সিনহা: আদিবা আসলে তোর একটা টিউমর ছিলো + গুলিটা এমন করে লেগেছিলো বেবিটা বাঁচাতে পারিনি,,,( মাথা নিচু করে)
___ সিনহার কথা শুনে যেনো আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়লো,,,,
আমি: কিহহ… আমার বেবি ( পেটে হাত দিয়ে)
মা: বউমা দেখো যা হবার হয়ে গেছে।
আমি: মা আমার বেবি ( চোখ বয়ে টপ টপ করে পানি পড়তে লাগলো)
তখনি শুভ কেবিনে ডুকলো,,,,,
সিনহা: ভাইয়া আপনি একটু ওরে সামলান,,,,
শুভ: হুম দেখছি….! আদিবা কেমন আছো এখন
আমি: নিশ্চপ,,,,( শুভর দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালাম)
শুভ: দেখো যা হবার হয়ে গেছে,,,,তুমি যে ঠিক আছো এটাই অনেক।
___শুভ আমার গালে হাত রাখতেই হাতটা ধরে ছিটকে ছড়িয়ে দিতেই শুভ বলে উঠলো…
শুভ: মানছি আমার ভুল হয়ে গেছে..!
আমি: হ্যাঁ মানতে তো তোকেই হবে এসব তোর জন্য… আজ যা কিছু হয়ছে শুধু তোর জন্য। আরে তুই কেমনে কষ্ট বুঝবি যে সন্তান জন্ম হওয়ার আগেই অশিকার করে বাঁজে কথা বলিস নিজের সন্তানকে নিয়ে.. হা হা তোকে কি বলি বেবিটা তো তোর ছিলো না যে তুই কষ্ট ফিল করতে পারবি
মা: বউমমমা….
আমি: মা আপনি আজ আমায় কিছু বলবেন না,,,,,
শুভ: আদিবা আই এম রিয়েলি সরি ।
আমি: হা হা সরি আরে তুই তো স্বামী নামের কলঙ্ক না পারেছিস ভালো স্বামী হতে না পেরেছিস ভালো বাবা বেশ হয়েছে খুদা তোর থেকে বাবা ডাক ডেকে নিছে…তুই বাবা হওয়ার যোগ্য নসসসস। তুহহ তুইই এখনি আমার সামনে চলে যাবি তোর মতো মানুষের মুখ দেখতে চাই না যে আমার নবজাত শিশুর মৃত্যুর জন্য দায়ি…. (চিল্লিয়ে)
শুভ: আদিবববা
আমি:বের তুই কেবিন থেকে আব্বু তৃমি ওরে চলে যেতে বলো ওর মুখ দেখতে চাই নাহহ
____ হঠাৎ বুক চাপ দিয়ে নিশ্বাস ঘন হয়ে আসলো তখনি সেন্সলেন্স হয়ে গেলাম,,,,,
সিনহা: ভাইয়া প্লিজ আপনি একটু ওর থেকে দুরে থাকেন কারন আপনাকে দেখলে ও বার বার উওেজিত হয়ে পড়বে এতো ক্ষতি বাড়বে প্লিজ
মা: হুমম বাবা আসিস না ওর সামনে প্লিজজ,,,,
আব্বু: প্লিজজ বাবা এসো না ( অসহায় ভাবে তাকিয়ে)
___ শুভ ওখান থেকে তাড়াহুরু করে হসপিটাল থেকে বের হয়ে রাস্তায় এসে ল্যাম্পপোস্টের নিচে এসে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো…..!
শুভ: আদিবা ঠিক বলেছে সব দোষ আমার কেনো সবটা আগে খুঁটে দেখিনি কেনো। আজ একটু ভুলের জন্য দুটো জিনিস হারিয়ে ফেললাম….. হে আল্লাহ তুমি আমায় শাস্তি দাও…..
শুভ রাস্তায় বসে হাউ মাউ করে কাঁদতে লাগলো… তখনি নদী এসে কাঁধে হাত রাখলো,,,,
শুভ: তুই এখানে
নদী: কেনো ভেঙ্গে পড়ছিস এভাবে,,
শুভ: কি করবো বল তুই তো সবটা জানিস…..আজ আদিবা আমায় ভুল বুঝলো
নদী: ভুল বুঝাটা কি স্বাভাবিক নয় তুই যা করেছিস ওর সাথে,,,
শুভ: হুমমম আজ অনুতপ্ত আগুনে পুড়ছি। বন্ধুর ভালোবাসা ফিরে দিতে গিয়ে নিজের ভালোবাসার আজ বিশাল বড় ক্ষতি করে ফেললাম….!
তবে বিশ্বাস কর যদি একবার জানতাম সেই দিনে এক হওয়ায় আমাদের ভালোবাসা চিহৃ হিসেবে বেবি বেড়ে উঠছে
ট্রাস মি কখন এমনটা হতে দিতাম না। ( কেঁদে কেঁদে)
নদী: উঠ,,,, বস এখানে….!
দেখ যা হবার হয়ে গেছে এসব ভেবে তো লাভ নেই এখন অপেক্ষা কর আদিবা সুস্থ হওয়ার আমি কথা বলবো ওর সাথে
শুভ: হুমমম তুই পারিস আমায় হেল্প করতে,,,,
নদী: হুমমম তোর সাথে আগেও ছিলাম এখনো আছি আর ভবিষ্যতে থাকবো আজ তোকে কথা দিচ্ছি আদিবাকে তোর কাছে ফিরে দিবো
শুভ: কিন্তুু আদিবা প্রচন্ড জেদি আর এমন অবস্থা যে জোরও করতে পারবো
নদী: হুম বুঝতে পারছি তো এভাবে একের পর এক আঘাত পেয়ে মেয়েটার মনের অবস্থা কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে তবে তুই এভাবে ভেঙ্গে পড়িস না ……!
শুভ: হুমমমম নিজেকে শক্ত করতে হবে…..!
নদী: এই তো লক্ষী ছেলের মতো কথা,,,,
শুভ: হুমমমম…
( চলবে)