#মেঘকন্যা☁️
#Part_23
#Writer_NOVA
ঘুমের ঘোরে টের পেলাম কারো ঘনঘন নিশ্বাস আমার কানে বারি খাচ্ছে। কিছুটা নড়েচড়ে উঠলাম।কিন্তু ঘুম ভাঙলো না।মিনিট খানিক পর কানে কারো ঠোঁটের আলতো ছোঁয়া পেলাম।ধরফরিয়ে উঠে বসলাম।সামনে তাকাতেই দেখলাম ওয়াহাব শয়তানি হাসি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।তার মানে এই রকম লুচু মার্কা কাজ এই শয়তানটাই করেছে।মাথার মধ্যে চিনচিন রাগ উঠছে। যেকোন সময় এই ব্যাটাকে আমি মেরে ফেলতে পারি।
ওয়াহাবঃ কি ব্যাপার মেঘকন্যা,উঠে পরলে যে?আমি কি বিরক্ত করে ফেললাম?আসলে তোমার ঘুমন্ত মুখটা দেখে আমি কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলাম।এমনিতেও আজকে তুমি আমার হবে।
আমিঃ কি ধরনের বেয়াদবি এটা ময়ূর রাজ? আপনি আমার কানে ঠোঁট ছোঁয়ালেন কেন?এটাও যে একটা অভদ্রতা সেটা কি জানেন আপনি?
ওয়াহাবঃ ভয় পেয়ে গেছি মেঘরাজ্যের রাজপুত্র আবরার আওসাফ আয়িশের বিবি। আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম আমি কার সাথে অভদ্রতা করছি।দুঃখীত জনাবা।মাফ করে দিবেন।
(ভয় পাওয়ার অভিনয় করে)
আমিঃ মামামমমমানে কি যা তা বলছেন?(তুতলিয়ে)
ওয়াহাবঃ কেন কিছু ভুল বললাম নাকি?কি ভেবেছিলে তুমি? তুমি তোমার পরিচয় লুকিয়ে আমার থেকে ইশালের মৃত্যু ছোড়া নিয়ে ভাগবে।তাতো আমি কিছুতেই হতে দিবো না।আমার এত সামনে এসে আমাকে ধোঁকা দিয়ে চলে যাবে।আমি বেঁচে থাকতে তা সম্ভব নয়। তোমাকে আমি আজ রাতে বিবাহ করবো।তৈরি থেকো,নয়তো তোমার ক্ষতি।তুমি সানন্দে বিবাহ করলে আমি তোমায় সানন্দে ছোড়া দিয়ে দিবো।
আমিঃ মরে যাবো তাও আপনাকে বিয়ে করবো না। আমি শুধু আয়িশের।আয়িশ ছাড়া কাউকে আমি স্বামী হিসেবে গ্রহণ করতে পারবো না।
ওয়াহাবঃ তুমি হয়তো জানো না মেঘকন্যা,তোমার মেঘরাজ্যের মানুষ খুব ঘোর বিপদে আছে। তাছাড়া তোমার স্বামী,শ্বশুর, শাশুড়ী এখন ইশালের হাতে বন্দী।তাদেরকে বাঁচাতে হলে তো তোমার ইশালের মৃত্যু ছোড়া লাগবে।আর মৃত্যু ছোড়া লাগলে আমাকে বিবাহ করতে হবে।
ওয়াহাবের কথা শুনে আমি হন্তদন্ত হয়ে আমার হাতে থাকা সাদা ডায়মন্ড পাথরের আংটির দিকে তাকালাম।পুরো পাথর গাঢ় সবুজ হয়ে গেছে। তার মানে আমার আয়িশের ঘোর বিপদ। হে খোদা,আমি এতটা মনভুলো হলাম কি করে? গতকাল বিকেল থেকে একবারও আমি এটার দিকে তাকাইনি।আমার হাত-পা কাঁপতে লাগলো।খুব নার্ভাস লাগছে।শরীর ঘামের ওপর ঘাম দিচ্ছে।
আমিঃ দয়া করে আমাকে যেতে দিন।তাদের খুব বিপদ।আমি না গেলে ইশাল তাদের মেরে ফেলবে।আমাকে মৃত্যু ছোড়াটা দিয়ে দিন।(কাকুতি মিনতি করে)
ওয়াহাবঃ নিশ্চয়ই যেতে দিবো।তবে আজ রাতে তোমার ও আমার বিবাহের পরে। আমিও তোমার সাথে যাবো তাদের উদ্ধার করতে।তাদের কথা শুনে কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেল?খবরদার এখান থেকে পালানোর চেষ্টা করবে না।তাহলে হীতের বিপরীত হয়ে যাবে। তোমার আপন মানুষদের বাঁচানোর অস্ত্র কিন্তু আমার কাছে।সুতরাং সাবধান।তাদের বাঁচাতে চাইলে চুপচাপ আমাকে বিবাহ করে নেও।
কথাগুলো বলে ওয়াহাব রুম থেকে চলে গেল। আমি ফ্লোরে বসে নিরবে কাঁদছি। হঠাৎ তাদের কি হলো?আর এই ওয়াহাব জানলোই বা কি করে যে আমি মেঘকন্যা?আমার নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে।
🌨️🌨️🌨️
যত দূর চোখ যায় চারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ।।হ্যাঁ,এটা সেই উত্তরের জঙ্গল।পৃথীবির ঘন অরণ্যের মাঝে একটা প্রকান্ড গুহা।বেশ বড় ও গভীর।সেখানেই আটকে রাখা হয়েছে মেঘরাজ্যের রাজা,রাণী,রাজপুত্র, মন্ত্রী, সেনাপতিকে।তাদেরকে ঘিরে রয়েছে অসংখ্য, অগণিত কালো সাপ।পায়ের নিচে হালকা করে জ্বলন্ত কয়লা।তাছাড়া ইশালের সৈন্যতো আছেই। হঠাৎ করে ইশাল সেখানে এসে রাগে ফুঁসতে লাগলো।
ইশালঃ ময়ূর রাজ মুশতাক আবসার ওয়াহাব। তোকে এর মাশুল খুব বাজেভাবে দিতে হবে।আমাকে ভয় দেখাস।আমি চাইলে তোর রাজ্য পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে পারতাম।কিন্তু তোর কাছে আমার মারণাস্ত্র থাকায় আমি কিছু করতে পারলাম না।আমাকে হুমকি দিস আমি তোর রাজ্য আক্রমণ করলে তুই মেঘকন্যাকে আমার মৃত্যু ছোড়া দিয়ে দিবি।তোকে শুধু পারিনি কাঁচা গিলে খেতে। তুই অপেক্ষা কর,আমি শক্তিশালী হলে সবার আগে তোর ব্যবস্থা করবো।
ইশাল খোঁজ পেয়েছে যে মেঘা ময়ূর রাজ্যে আছে।তাই ওকে আনতে ভোর সকালে সেখানে গিয়েছিল।কিন্তু ওর এবং ওয়াহাবের মাঝে দ্বন্দ্ব বেঁধে যায়।যাতে বেশ কিছু সময় ওদের দুজনের মধ্যে তলোয়ার যুদ্ধ চলে।আর ইশালের সাপের সাথে ওয়াহাবের সাদা ময়ূরের আক্রমণ। ইশালের থেকে ওয়াহাব জানতে পারে সে যাকে মেঘপরী বলে সেই মেঘকন্যা।বেশ কিছু সময় লড়াইয়ের পর ইশাল হেরে যায়।কিন্তু ইশাল সেখান থেকে মেঘাকে না নিয়ে ফিরতে চায় না। তখন ওয়াহাব ওকে হুমকি দেয় ইশাল যদি এখান থেকে এই মুহুর্তে না যায় এবং পরবর্তীতে এই রাজ্য আক্রমণ না করে। যদি করে তাহলে মেঘকন্যাকে ওয়াহাব ওর মৃত্যু ছোড়া দিয়ে দিবে।রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে সেখান থেকে চলে আসে।
রাজাঃ কি ইশাল আমাদের কন্যা কোথায়?তাকে তো তোমার সাথে দেখছি না।তুমি নাকি কন্যাকে না নিয়ে কিছুতেই ফিরবে না।তা এখন খালি হাতে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চলে এলে কেন?
রাকিনঃ তুই না বললি মেঘকন্যাকে না নিয়ে ফিরবি না।তাহলে এখন চলে এলি কেন?আসলে তোর দ্বারা এসব কিছুতেই সম্ভব না।তুই শুধু বড় বড় কথাই বলতে পারিস।
আয়িশঃ ওর মতো একটা পুঁচকে শয়তান পারবে এই অসাধ্য সাধন করতে?কি যে বলিস না রাকিন?গতকাল যদি আমাদের কে কালো জাদু দিয়ে ঘেরা না করতো, তাহলে আমাদের কিছুতেই এখানে এনে বন্দী করে রাখতে পারতো না। কিন্তু কাপুরুষটা তো পারেই পেছন থেকে হামলা করতে।
মন্ত্রীঃ ওর মরণ ঘনিয়ে আসছে।তাই তো ও এতো লাফাচ্ছে।ওর মৃত্যুর সাথে সাথে পুরো অঙ্গরাজ্য ধ্বংস হয়ে যাবে।শুধু নিজের নয় পুরো রাজ্যের মরণ ডেকে এনেছে ইশাল।খুব শীঘ্রই আমাদের কন্যা আসছে।একবার শুধু মৃত্যু ছোড়াটা দিয়ে ওর বুকে রিহিসকে সহ ছোড়া বসিয়ে দিবে। তারপর ওর কাম তামাম হয়ে যাবে।
রাণীঃ আমাদের কন্যা এখনো আসছে না কেন?আমাদের বিপদের খবর কি ও পায়নি।আমারো বিশ্বাস আছে, আমাদের কন্যা ঠিক আমাদের খুঁজে বের করবে।সাথে এই শয়তানের বিনাশ করবে।
ইশাল ওদের কথা শুনে খুব রেগে গেলে। চোখ দিয়ে আগুন ছুঁড়ে তাদের পায়ের নিচে জলন্ত কয়লায় আগুন ধরিয়ে দিলো।খালি পায়ে থাকায় প্রত্যেকের পা জ্বলে যাচ্ছে। তাদের কষ্ট অনুভব করতে দেখে এখন একটু ইশালের শান্তি লাগছে।
🌨️🌨️🌨️
রাজ বারান্দায় দাঁড়িয়ে এক ধ্যানে বাইরের প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখছি।যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ।উঁচু উঁচু পাহাড়,দূরে বিশাল এক ঝরনা।সেখান থেকে পানি আছড়ে পরার শব্দ কানে আসছে।পাহাড়ের ওপর প্রাসাদ।চারিদিকে সাদা আর সাদা।এখানকার সবকিছুর রং সাদা।বাগান ভর্তি নাম না জানা বিভিন্ন সাদা ফুলের গাছ।যেদিকে চোখ যায় সেদিকে সাদা ময়ূরের দেখা পাই।ওয়াহাবের শক্তি নাকি এই ময়ূরের মাঝে। আমি এটা গোপনে জানতে পেরেছি।আমি প্রথমে ভেবেছি ওয়াহাব বোধহয় নাগিন সিরিয়ালের মতো মানুষ থেকে ময়ূর হতে পারে।কিন্তু আমার ধারণাটা সঠিক নয়।সে ময়ূরদেরকে বশ করতে পারে।সারা রাজ্যে মানুষের চেয়ে বেশি সাদা ময়ূর।আমি প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা কক্ষের বাইরে যাই না।বেরুলেই সবাই ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকে।নিজেকে তখন আজব চিড়িয়া মনে হয়।
তাছাড়া এখন তো আরো বের হতে পারবো না। আমার কক্ষের সামনে ৭/৮ টা সাদা ময়ূর পাহারায় রেখেছে ওয়াহাব।তাজিনকেও আমার কক্ষে ঘেঁষতে দিচ্ছে না। কারণ তাজিন এই বিয়ের ঘোর বিরোধে।অন্যের বউকে সে কিছুতেই তার ভাইকে বিয়ে করতে দিবে না।এটাতো অনেক বড় অন্যায়।যার কারণে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। সারা রাজ্যে খুশির জোয়ার।তাদের রাজা আজ রাতে মেঘপরীকে বিয়ে করবে।পুরো রাজ্যকে খুব সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে। চারিদিকে হৈচৈ কলরব। আমি এখন বসে বসে অশ্রু বিসর্জন করছি।
কুহুকলিঃ অনেক বড় বিপদ হয়ে গেছে মেঘকন্যা।রাজা মশাই,রাণী মা,আমার বন্ধু আয়িশ,সেনাপতি রাকিন,মন্ত্রী মশাইকে শয়তান ইশাল ধরে নিয়ে গেছে। তোমাকে খুব শীঘ্রই এখান থেকে মৃত্যু ছোড়া নিয়ে পালাতে হবে। নয়তো অনেক বড় সর্বনাশ হয়ে যাবে।
মিষ্টি একটা স্বর শুনে আমার ধ্যান ভাঙ্গে।আশেপাশে তাকিয়ে খুঁজতে থাকি কোথা থেকে আসছে।তখনি দেখি জানলায় বসা এক নাম না জানা পাখি।আমার পরনে আজ হালকা ফিরোজা রঙের বিশাল বড় ড্রেস।
সবসময় সাদা পরে থাকতে ভালো লাগে না।নিজেকে বিধবা,বিধবা মনে হয়। আমার আয়িশ কি মারা গেছে নাকি যে আমি সবসময় সাদা ড্রেস পরবো।ভালো করে খেয়াল করে দেখলাম,পাখির পালকের রংটাও আমার ড্রেসের রং।দেখতে অনেকটা টিয়া পাখির মতো।
আমিঃ কে তুমি? আর তুমি আমাকে চিনলে কি করে?তুমি কথা বলছো কিভাবে?
কুহুকলিঃ আমি কুহুকলি মেঘকন্যা।তুমি কি সত্যি আমাকে চিনোনি।আমি তোমার সাহায্য করতে এসেছি। তোমায় এখান থেকে দ্রুত পালাতে হবে।
আমিঃ কুহুকলি তুমি!!!আমি সত্যি তোমায় চিনতে পারিনি।কি হয়েছে আমায় সব খুলে বলো তো।আমার আয়িশের বিপদ হয়েছে তাই না?দেখো আমার হাতে থাকা আংটিটা সবুজে পরিণত হয়েছে।
কুহুকলি আমায় সব খুলে বললো।যা শুনে ইশালের প্রতি আমার রাগটা আরো বেড়ে গেলো।ইচ্ছে করছে ব্যাটাকে জ্যন্ত কবর দেই।
আমিঃ ওদের কোথায় আটকে রেখেছে কুহুকলি?
কুহুকলিঃ উত্তরের ঘন জঙ্গলের ভেতরে ভয়ংকর এক গুহায়।আমি তোমাকে সেখানে নিয়ে যাবো।আমি গতকাল তোমার কাছে আসতে চেয়ে ছিলাম।কিন্তু তারপর ভেবে দেখলাম তখন আমার লুকিয়ে ইশালকে লক্ষ্য করা উচিত।যাতে আমি পরবর্তীতে তোমাকে সেখানে নিয়ে যেতে পারি।তুমি এবার পালানোর পথ খুঁজো মেঘকন্যা।
আমিঃ আমিও কি কম বড় বিপদে পরেছি ভেবেছো?ও ব্যাটা ময়ূর রাজ ওয়াহাব আমাকে আজ রাতের মধ্যে বিয়ে করবে বলেছে।যদি তাকে বিয়ে না করি তাহলে আমাকে সেই মৃত্যু ছোড়া দিবে না।আর এত কষ্ট করে এখানে এসে ঐ মৃত্যু ছোড়া না নিয়ে কি করে যাই বলো?সেটা নিত্যাতন্ত বোকামি ছাড়া কিছু নয়।
কুহুকলিঃ তুমি ওর আশায় কেন বসে আছো মেঘকন্যা?ঐ ওয়াহাব তোমাকে জীবনেও মৃত্যু ছোড়া দিবে না।তোমাকে মিথ্যে বলেছে।যাতে তুমি ওকে বিবাহ করতে রাজী হও।তুমি যদি ওকে বিবাহ করো তাহলে সারাজীবনের জন্য তোমাকে ওর দাসী বানিয়ে রাখবে। তুমি অন্য পন্থা অবলম্বন করো।আমি তোমাকে সাহায্য করবো।
আমিঃ এই কক্ষ থেকে বের হওয়া আমার জন্য মুশকিল। চারিদিকে সাদা ময়ূরের কড়া নজরদারি। আমি এখন থেকে এক চুলও নাড়তে পারবো না। তুমি কিছু করো। আমার অনেক ভয় করছে। আমি কি সবাইকে রক্ষা করতে পারবো?
কুহুকলিঃ তুমি চিন্তা করো না। আমি ঠিক রাস্তা বের করে নিবো। তুমি অবশ্যই সবাইকে রক্ষা করতে পারবে।তোমাকে যে পারতেই হবে।আমার কাছে একটা বুদ্ধি আছে।তুমি সেটা কাজে লাগাতে পারো।তাছাড়া তুমি ময়ূর রাজ্যের রাজকন্যা তাজিনের সাহায্য নিতে পারো।মেয়েটা খুব ভালো। ও তোমাকে নিশ্চয়ই সাহায্য করবে।
🌨️🌨️🌨️
কুহুকলির কথা শুনে আমি একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লাম।তারপর বিষন্ন মনে বললাম।
আমিঃ ওকে আমার কক্ষে আসতে দিচ্ছে না। তাজিনও জেনে গেছে আমি মেঘকন্যা। তবে আমি বিবাহ অনুষ্ঠানে কোন ফাঁকে ওর কাছে সাহায্য চাইতে পারি।আর তোমার বুদ্ধিটা বলো।
কুহুকলিঃ শোনো তাহলে…………………বুঝতে পেরেছো আমি কি বলছি?এবার আমাকে কিছু জঙ্গলের গাছ-গাছালি ও পাতা সংগ্রহ করতে যেতে হবে।নয়তো এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
আমিঃ হ্যাঁ তুমি ঠিক বলেছো।এবার কেউ দেখে ফেলার আগে এখান থেকে পালাও।
কুহুকলিঃ আচ্ছা, আমি আসি।তুমি সাবধানে থেকো।ভয় পেয়ো না,আমি তোমার আশেপাশেই আছি।মাথা ঠান্ডা করে কাজ করো।
আমিঃ তুমিও সাবধানে যেয়ো।অদৃশ্য জঙ্গলে কিন্তু পদে পদে বিপদ।তোমার ক্ষতি হতে পারে।কোন কিছু ভুলে যেও না।
ওয়াহাবঃ কি ভুলে যাবে না? আর কেই বা ভুলে যাবে না? তুমি কার সাথে কথা বলছো মেঘপরী?(রেগে)
ওয়াহাবের গলার আওয়াজ পেয়ে আমার গলা শুকিয়ে গেলো।ব্যাটা বিটকেল আবার সব শুনে নেয়নি তো।তাহলে তো আমার ঘোর বিপদ।ভয়ে এদিক সেদিক তাকাতে লাগলাম।মনে হয় কুহুকলিকে দেখেনি।নয়তো ওর নাম অবশ্যই নিতো। আমি অনেক ভয় পাচ্ছি। মনে হচ্ছে ওয়াহাব অনেক রেগে আছে।এবার কি হবে?
আমিঃ কেউ না।কে আছে এখানে যে তার সাথে কথা বলবো?আপনি তো আমাকে কারো সাথে মিশতেই দিচ্ছেন না।তাই আপন মনে নিজের সাথে কথা বলছি। নিজে নিজে আয়িশকে বলছিলাম, সে যেনো আমাকে কখনো ভুলে না যায়।
নিজেকে যথেষ্ট শান্ত ও স্বাভাবিক রেখে কথার উত্তর দিলাম আমি।আল্লাহ মাফ করো।নিজেকে ও কুহুকলিকে বাঁচাতে আমার মিথ্যে কথা বলতে হলো।ওয়াহাবের মনে হয় আমার কথাটা বিশ্বাস হলো। তাই রাগটাকে দমিয়ে শান্ত কন্ঠে বললো।
ওয়াহাবঃ ওহ্ আচ্ছা। বিকেল গড়িয়ে যাচ্ছে। রাতে আমাদের বিবাহ অনুষ্ঠান। আমি সব ব্যবস্থা করে ফেলেছি।এবার তুমি নিজেকে তৈরি করে নেও।আমি দাসীদের পাঠিয়ে দিচ্ছি তোমাকে সাজিয়ে দেয়ার জন্য। যত তাড়াতাড়ি আমকে বিবাহ করবে তাতে তোমার রাজ্যের লোক ও তোমার আয়িশের জন্য ভালো।কথাটা মনে রেখো।
ওয়াহাব চলে যেতেই আমি স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম।আর কয়েক সেকেন্ড থাকলে কুহুকলি ও আমি বিপদে পরতাম।আল্লাহ সাথে ছিলো বলে রক্ষা।
#চলবে