#রূপসীর_আচল
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_২
আল্লাহ কাম সারছে,আমি শিউর যে একটু পর বাড়ি ওয়ালা এসে বলবে ঘর ছেড়ে দিতে,ধুর যা হবার হবে এখন এত কিছু ভেবে লাব নাই..!
মেয়েটাকে নিয়ে বাসায় ঢুকলাম দরজা খুলে,এই যে মেয়ে তুমি একটু বসো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি,ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসলাম মাত্রই পকেটের ফোনটা বেজে উঠলো,…!
ফোন বের করে দেখি আম্মুর ফোন,হা আম্মু বলো..?
আম্মু,বাবা তুই আসছিস তো..?
নাহ আম্মু,অাসা হবে না তোমরা সবাই যাও বিয়েতে,আমার অফিসে খুব জরুরী কাজ পড়ে গেছে,আম্মুকে মিথ্যা বললাম কি করবো আর মিথ্যা বলা ছাড়া,আজ মামাতো বোনের বিয়ে ছিলো,আমি যাবোনা দেখে আম্মু মন খারাপ করে ফেললো..!
আম্মু,আচ্ছা বাবা সাবধানে থাকিস…!
এই যে মেয়ে তুমি কি ফ্রেশ হবা..?
মেয়েটা,হা কিন্তু আমার তো কোন কাপড় চোপড় নেই..?
আচ্ছা ওয়েট আলমারি থেকে একটা শাড়ী বের করে দিলাম,যাও ফ্রেশ হয়ে এটা পরে আসো,মেয়েটা শাড়িটা আমার হাত থেকে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো..!
পাঠক
ভাইরা ভাতেছেন হয়তো আমার আলমারিতে শাড়ী কি ভাবে আসলো,ভাই শাড়ী কেন আমার আলমারিতে আরো অনেক কিছু আছে মেয়েদের,কারন আমি কখনো কোথায় গেলে যদি কোন কিছু ভালো লাগে সেগুলো কিনে নিয়ে আসি,আমার ভবিষ্যত বউয়ের জন্য,আর ব্যাচেলরদের মনে কত রকম লাড্ডু ফুটে সেটা তো কম বেশ সবাই জানেন এই…!
যাক মেয়েটা আসুক তার থেকে রহস্য জানতে হবে,কে ঐ ছেলেগুলা আর কেনই বা তার পিছনে তারা করছিলো,
খাটের উপরে বসে আছি,একটু পর মেয়েটা আমার দেওয়া নীল কালারের শাড়ীটা পড়ে বের হলো,আমি হা করে তাকিয়ে আছি মেয়েটার দিকে,আমার মনে হচ্ছে কোন পরী ভুল করে আমার রুমে ঢুকে পড়েছে,এত অপরূপ লাগছিলো মেয়েটাকে…!
ঘাড়ের একপাশ করে চুল গুলো ছেড়ে দিয়েছে আর তার থেকে টুপ টুপ করে পানি ঝড়ে পড়ছে,ইচ্ছে করছে কাছে টেনে এনে ঘাড়ের মধ্যে কয়েকটা চুমু বসিয়ে দেই..?
এই এই কি ভাবছি আমি এই সব..!
মেয়েটা,এই যে আপনি এভাবে কি দেখেন হা…??
পরী দেখি পরী..!?
মেয়েটা,মানে..?পরী কোথা থেকো এলো আবার..?
আরে ধুর ধুর কি বলি মানে কিছুনা,আচ্ছা কে ছিলো ঐ ছেলেগুলা আর কেনই বা তোমার পিছু নিচ্ছে…?
মেয়েটা,তাহলে সমস্ত ঘটনা বলতে হবে আপনাকে শুরু থেকে
শুনবেন…?
হা শুনবো…!
মেয়েটা,প্রথমে নাম দিয়েই শুরু করি,আমার নাম হিয়া আমি এ বছর অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে উঠেছি সবে মাত্র,আর আমার বাবা হচ্ছে বিজনেসম্যান,মা গৃহিণী,আমাদের মা-বাবা আর আমি মিলে সুখী পরিবার, আমাদের দিনকাল ভালোই যাচ্ছিলো,কিন্তু হটাৎ একটা কালসাপের নজর পড়ে আমার উপরে,আমি কলেজ থেকে আসার সময় লক্ষ্য করতাম একটা গাড়ি রোজ আমার পিছু নিতো,কিন্তু কে বা কি তার পরিচয় জানতাম না,হটাৎ একদিন কলেজ শেষ করে বাসায় গিয়ে দেখি অনেক লোক এসেছে বাসায়,কিন্তু লোক গুলো স্বাভাবিক মানুষের মত না দেখতেই বুঝা যাচ্ছিলো মাস্তান টাইপের লোক ওরা,ভিতরে ঢুকতেই দেখতে পেলাম আব্বুর সাথে একটা লোক কথা বলছে বিয়ের ব্যাপারে সে নাকি আমাকে বিয়ে করতে চায়,আমাকে প্রথম দেখাতেই তার ভালো লেগে গেছে,লোকটার গালে একটা ক্ষত দেখা যাচ্ছিলো,সম্ভবত ছুড়ি দিয়ে কেউ আঘাত করেছে লোকটার গালে,
আব্বু লোকটাকে সরাসরি না করে দেয় যে মেয়ে এখন বিয়ে দিবে না,
কিন্তু লোকটা নাছোড়বান্দা ওর আমাকেই চাই,আব্বুও স্ট্রেট নাহ বলে দিয়েছে যে আমার বিয়ে দিবে না,লোকটা হটাৎ পিছন থেকে একটা পিস্তল বের করে আব্বুর গলায় ধরে আর বলে তুই দিবি না তোর ঘাড়ে দিবে,
সময় মাত্র তিনদিন নিজ ইচ্ছায় মেয়েকে আমার হাতে তুলে দিবি না হয় তিনদিন পর এসে মেয়েকে জোড়া করে তুলে নিয়ে যাবো,তারপর লোক গুলা চলে যায়…!
আব্বুর ও পাওয়ার কম না, আব্বুর ও পরিচিত অনেক মানুষ আছে, আব্বু লোকাল থানায় ফোন করে ওসিকে সব খুলে বলে, কিন্তু ওসি সরাসরি না করে দেয় এই কেস নিতে পারবে না সে,কারন যার বিরুদ্ধে কেস করবো সে নাকি এই সহরের নাম করা মাস্তান, সবাই তার হুকুমেই চলে..!
আব্বুও হার মেনে নেয় নাই,তার এক বন্ধু আছে তাকে খুলে বলে সে ডিসি,সেও বলে আমার কিছু করার নাই রে, কারন সে নাকি অনেক বড় মাফিয়া, তাই ওর সাথে পাঙ্গা নেওয়া মানে নিজের মৃত্যু ডেকে আনা,তবে আসাদুজ্জামান তুই যেহেতু আমার বন্ধু তোকে একটা সাজেশন দেই,আসাদুজ্জামান হচ্ছে আমার আব্বুর নাম,তুই তোর মেয়েকে অন্য কোথাও পাঠিয়ে দে,কারন ওর সাথে পাঙ্গা নিয়ে পেরে উঠবি না,বরং নিজের মেয়েটাকে হারাবি,তাই আব্বু আমাকে গ্রামে খালার কাছে পাঠিয়ে দিবে ভাবে, রাতের মধ্যেই সব ব্যাবস্থা করে খালার বাড়ির উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেয়,কিন্তু কি ভাবে জানি জানোয়ার গুলা খবর পেয়ে যায় আর আমার পিছু নেয়,তাই আমি মাঝ রাস্তায় বাস থেকে নেমে পালিয়ে যাই,আর এখানে চলে আসি,জানোয়ার গুলা এটাও খবর পেয়ে গেছে হয়তো আমি স্টেশনে আছি,তাই তারা সেখানে খোজ করতে এসেছিলো…!
আমি,অবুক এত ঘটনা ঘটে গেছে?
হিয়া, হা…!?
আচ্ছা সমস্যা নেই তোমার যত সময় দরকার এখানে থাকতে পারো,আর তুমি এখানে একদম নিশ্চিন্তে থাকো,কেউ তোমার চুল পরিমান ক্ষতিও করতে পারবে না..!
মেয়েটা,আচ্ছা আপনার নাম টা কি…?
আমার নাম,আমার নাম হচ্ছে আকাশ..!
আকাশ,আচ্ছা তুমি থাকো আমি বাজার করে নিয়ে আসছি রান্না করতে হবে…!
হিয়া,না না আমি একা থাকতে পারবো না আমার খুব ভয় করে একা থাকতে…?
আকাশ,এই মেয়ে ভয়ের কি আছে, আমি দুই মিনিটে যাবো আর দুই মিনিটেই চলে আসবো,তুমি দরজা লাগিয়ে বসে থাকো,আার না হয় টিভি আছে টিভি দেখো,…!
হিয়া,আচ্ছা তাড়াতাড়ি আসবেন কিন্তু,দেড়ি হলে কিন্তু কান্না করে দিবো?
আকাশ,আচ্ছা তাড়াতাড়ি আসবো,তারপর হিয়া ভিতর থেকে দরজা আটকে দিলো,আমি বাজারে চলে গেলাম,কারন বাজার না করলে দুই জনের এই না খেয়ে থাকতে হবে,আর ভেবেই অবাক লাগে এত বড় একটা মেয়ে কিন্তু কথাবাত্রা এবং চাল চলেনের মধ্যে একটা বাচ্চামি ভাব…!
৩০ মিনিটের মধ্যে বাজার করে বাসায় গেলাম,বাসায় গিয়ে ডাক দিতেই দরজা খুলে দিলো,হয়তো এত সময় আমার এই অপেক্ষা করছিলো মেয়েটা,তারপর বাজার গুলো গুছিয়ে রান্না করতে চলে গেলাম,একটু পর দেখি মেয়েটা রান্না ঘরের দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে,কি কিছু বলবে…?
হিয়া,নাহ এমনিতেই রান্না দেখছিলাম?
আকাশ,ওহ..!
রান্না করে খেতে বসলাম, কিন্তু ময়েটার একটা রোগ আছে সেটা তো আপনারা জানেন এই,নিজের হাতে খেতে পারে না,তাই খাইয়ে দিতে হলো…!
এভাবে সারাটাদিন কেটে গেলো,মেয়েটা আমার সাথে আগের থেকে একটু ফ্রি হয়ে গিয়েছে,মেয়েরা যথেষ্ট পরিমাণে মিশুক একদিনেই বুঝে গেলাম, রাতের বেলায় ঘুমাতে যাবো তখন বাধলো বিপত্তি,কি করবো খাট একটা থাকবো কোথায়,কারন একটা মেয়ের সাথে এভাবে খাট শেয়ার করে থাকা যাবে না,তাই বালিশ নিয়ে সোফায় চলে গেলাম,..!
হিয়া,এই এই কি করছেন কোথায় জান…?
আকাশ,সোফায়…!
হিয়া,সোফায় কেন খাট কি হয়েছে..?
আকাশ,কই কিছু হয় নি তো…!
হিয়া,তাহলে খাটে না ঘুমিয়ে সোফায় ঘুমাবেন কেন..?
আকাশ,কারন আমি খাটে ঘুমালে আপনি ঘুমাবেন কোথায়..?
হিয়া,কেন খাটে..?
আকাশ,মানে?
হিয়া,খাটে মানে খাটে,মধ্যে একটা বর্ডায় দিয়ে দুইজন দুইপাশে ঘুমাবো..!
আকাশ,তাহলে ঠিক আছে,….!
দুজনেই শুয়ে পড়লাম,মেয়েটা হয়তো ঘুমিয়ে গেছে,কিন্তু আমার ঘুম আসছে না,শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলাম,কিরে বিবিসি জানালা গুলা কি এখন পর্যন্ত বাড়ির মালিকের কানে দেয় নাই,আমি একটা মেয়েকে নিয়ে ঘরে উঠেছি,আজ এতো ভালো হয়ে গেলো বাহ মহিলা গুলো,ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম,সকাল বেলা ঘুম ভাংলো চিল্লাচিল্লির শব্দে,ধুর এত সকালে কে আবার চিল্লাচ্ছে,উঠে গিয়ে দরজা খুলতে যাবো কিন্তু উঠতে পারছি না,লক্ষ্য করে দেখি হিয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে,….!
আর অন্যদিকে দরজা কে জানি অনবরত বাড়ি দিচ্ছে,হিয়াকে ছাড়িয়ে উঠে গিয়ে দরজা খুললাম,দরজা খুলে যা দেখলাম….!
চলবে…?
ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন….!