#লাভ_গেম
#ফাবিহা_নওশীন
২৬.
আদ্রিশ রুশার সামনে এসে রকিকে একবার দেখে প্রশ্ন করল,
“কি করছো তোমরা এখানে?”
রুশা আদ্রিশকে এত সহজ আর শান্তভাবে কথা বলতে দেখে অবাক হলো। আদ্রিশ দূর থেকে ওদের কথোপকথন কিছুই শুনেনি।
রকি রুশার উত্তর দেওয়ার আগেই উত্তর দিল,
“আমি রুশাকে নিতে এসেছি।”
আদ্রিশ রুশার দিকে চেয়ে তাচ্ছিল্য হেসে বলল,
“তোমার প্রেমিক তোমাকে নিতে এসেছে। আমার অগোচরে আমার বাড়িতে এতকিছু হচ্ছে। বাহ! আমার প্রতারক স্ত্রীর প্রেমিক আসে, তাদের প্রেমালাপ চলে। পালিয়ে যাওয়ার প্লানও হয় আমার বাড়িতে। আর আমি কিছুই টের পাই না।”
রুশা ওর কথা শুনে উত্তর দিল,
“আদ্রিশ তুমি যা ভাবছো ঠিক তা নয়। রকি এর আগে কখনও এ বাড়িতে আসেনি। আজই প্রথম বার এসেছে। আর ও আমার প্রেমিক নয়।”
“ও তোমার প্রেমিক না কি সব জানি। দুশ্চরিত্রা মেয়ে, আমার বাড়িতে প্রেমিক নিয়ে এসেছিস৷ কি ভেবেছিস ওর সাথে পালিয়ে যাবি? একদম মেরে দেব দুটোকে। আমার বাচ্চা না দিয়ে এক পা নড়তে পারবি না।”
রুশা দাঁত খিচিয়ে বলল,
“আদ্রিশ! একদম আজেবাজে কথা বলবে না। মুখে যা আসছে তাই বলছো। আমি কিন্তু সহ্য করব না।”
“কি করবে তুমি হ্যা? ওর সাথে পালিয়ে যাবে?”
আদ্রিশ ওর এক গার্ডকে ডাকল। রুশা ভয় পেয়ে রকিকে বলল,
“রকি, প্লিজ চলে যাও। তাড়াতাড়ি চলে যাও এখান থেকে।”
রকি চলে যেতে যেতে বলল,
“শীঘ্রই তোমাকে মুক্ত করে নিয়ে যাব।”
রকি দেয়াল টপকে বের হয়ে গেল। আদ্রিশের ইচ্ছে নেই রকির সাথে লড়াই করার। ওকে ইচ্ছে করেই ছেড়ে দিয়েছে। আদ্রিশ রুশার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে ওর হাত চেপে ধরে ঘরে নিয়ে গেল।
ঘরে গিয়ে বলল,
“তোমাদের এই নোংরামি কত দিন চলবে? আমার বাড়িতে ডেকে নিয়ে এসেছো। আমি জাস্ট বিশ্বাস করতে পারছি না। কি করে যে তোমাকে সহ্য করছি।”
রুশা ওর কথায় জবাব দিচ্ছে না। দেওয়ার ইচ্ছে নেই। আদ্রিশ নিজের কথা বলেই যাবে। ওর কাছে নিজেকে সৎ প্রমাণ করার দায় পড়েনি। যা খুশি ভাবুক।
রুশার কাছে উত্তর না পেয়ে আদ্রিশের আরো রাগ হচ্ছে। রুশার নীরবতা ওর রাগ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
“কথা বলছো না কেন? ডেম ইট!”
“কি বলব? কি শুনতে চাইছো? রকির সাথে আমার সম্পর্ক আছে? তুমি তো বলেই যাচ্ছো রকির সাথে আমার সম্পর্ক আছে তাহলে কেন জিজ্ঞেস করছো? আর কি জানতে চাও? হ্যাঁ, রকির সাথে আমার সম্পর্ক আছে। খুশি?”
আদ্রিশ চাইছিল রুশা বলুক ওর সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু রুশা স্বীকার করে নিচ্ছে।
আদ্রিশ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,
“বাচ্চাটা আমার তো?”
রুশা ওর কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেল। আদ্রিশ একটা একটা কথা কি করে বলল। রুশা ওর কথা শুনে বসে পড়ল। কোনো জবাব দিচ্ছে না। ওর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। মুখ চেপে ধরে রেখেছে। আদ্রিশ রুশাকে ভেঙে পড়তে দেখে ঘর থেকে বের হয়ে গেল।
রকি ঘর জুড়ে পাইচারি করছে আর ভাবছে রুশাকে নিজের লাইফে কি করে ব্যাক করা যায়। আদ্রিশ রুশাকে কিছুতেই ছাড়বে না। একবার আদ্রিশ যদি রুশাকে ছেড়ে দেয় তবেই রুশা ওর লাইফে ব্যাক করবে। বাধ্য হবে। কিন্তু আদ্রিশ কেন ছাড়বে ওকে এটা ভেবেই মাথা খেয়ে ফেলছে। কিছুক্ষণ ভেবে মুচকি হাসল। আদ্রিশ ওকে রুশার প্রেমিক ভাবে আর এই ভাবনাকে পুঁজি করেই রুশার লাইফে ইন করবে।
কিছুদিন পরের কথা। আদ্রিশ আর রুশার সম্পর্ক আরো খারাপ হচ্ছে। কথা বললেই ঝগড়া হয়৷ একে অপরকে নানান বিষয়ের জন্য দোষারোপ করে। আদ্রিশ অফিসে বসে কাজ করছিল। হঠাৎ একটা খাম দিয়ে যায় পিয়ন। আদ্রিশের নামে খাম এসেছে। আদ্রিশ খাম খুলে একটা কাগজ পেল। দেখে মনে হচ্ছে কোনো টেস্টের রিপোর্ট। আদ্রিশ রিপোর্ট পড়ে স্তব্ধ হয়ে গেল। ওর চোখ মুখ বিষাদে ঢেকে গেল। ওর পুরো পৃথিবী দুলছে।
অনুভূতি শূন্য হয়ে আছে। ভেতরে ভাঙচুর হচ্ছে। আদ্রিশ দুই হাতে মুখ চেপে ধরল। ছলছলে চোখগুলো লাল হয়ে গেছে। কাগজটা হাতের মুঠোয় দুমড়ে মুচড়ে ফেলল।
রুশা বারান্দায় ব্যায়াম করছিল। কানে হেডফোন। আদ্রিশ ঘরে এসে ওকে হেঁচকা টানে ঘরে নিয়ে এল। রুশা কান থেকে হেডফোন খুলে ওর দিকে ঘাবড়ে গিয়ে চেয়ে রইল। মনে হচ্ছে আদ্রিশ কোনো কারণে বিধ্বস্ত।
“কেন এমন করলে রুশা? এর চেয়ে আমাকে মেরে ফেলতে। রোজ রোজ কেন মারছো আমাকে? এক বারে মেরে ফেলো প্লিজ। আমি আর বাঁচতে পারছি না।”
রুশা বুঝতে না পেরে বলল,
“আমি কিছু বুঝতে পারছি না। কি করেছি আমি?”
আদ্রিশ চোয়াল শক্ত করে ওর ডান বাহু চেপে ধরে বলল,
“বুঝতে পারছো না? অন্যের বাচ্চাকে আমার বাচ্চা বলছো যাতে আমার কাছে থেকে আমাকে আরো কষ্ট দিতে পারো, মন মতো প্রতিশোধ নিতে পারো।”
“অন্যের বাচ্চা!”
“আর নাটক করো না। আমি জেনে গেছি এই বাচ্চা তোমার আর রকির। এইজন্য রকি আসতো তোমার কাছে তাই না? তোমাকে নিয়ে যেতে চাইতো।”
রুশা ওর কথা শুনে কাঁদোকাঁদো হয়ে বলল,
“কি বলছো আদ্রিশ? কে বলেছে তোমাকে এসব?”
“আমি নিজের চোখে সব পেপার দেখেছি। তোমার এই বাচ্চা রকির। সব প্রমাণ দেকগে এসেছি। নিজের চোখ দুটো অন্ধ করে দিতে ইচ্ছে করছে। কেন আমাকে এভাবে মারছো? খুব মজা পাচ্ছো তুমি? শান্তি হয়েছে তোমার? বাচ্চাটা শেষ ভরসা ছিল আমার তাও নাকি আমার না।”
আদ্রিশ বিছানায় ধপ করে বসে পড়ল।
“তোমাকে এসব যে বলেছে মিথ্যা বলেছে। কেউ ষড়যন্ত্র করছে। তোমার সাথে আমার ঘৃণার সম্পর্ক। আমরা একে অপরের শত্রু কিন্তু এটা সত্যি যে এই বাচ্চা তোমার আর আমার। বিশ্বাস করো আদ্রিশ। আমি মিথ্যা বলছি না। রকি আমার শুধুমাত্র ফ্রেন্ড। ওর সাথে আমার….
“শাট আপ! শাট আপ এন্ড গেট আউট।”
আদ্রিশ উঠে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলল। হঠাৎ আদ্রিশকে এভাবে রিয়েক্ট করতে দেখে রুশা কেঁপে উঠে।
“গেট আউট। নয়তো তোমাকে তোমার বাচ্চাসহ শেষ করে দেব। চলে যাও। আমি নিষ্পাপ এক বাচ্চাকে তোমার পাপের শাস্তি দিতে চাই না।”
“ঠিক আছে চলে যাব কিন্তু এই বাচ্চা তোমার আদ্রিশ। এটা অস্বীকার করো না।”
“না, এই বাচ্চা তোমার আর রকির। ওর সাথে আমার নাম জড়াবে না।”
“মিথ্যা অপবাদ নিয়ে আমি যাব না।”
রুশা শক্ত কন্ঠে বলল।
আদ্রিশ ওর দিকে লাল চোখে তাকাল।
“ভালোবেসে মাথায় তুলে ফেলেছিলাম তাই সহজেই আঘাত দিতে পেরেছো। সে সুযোগ আর পাবে না তুমি। এতদিন শুধু নিজের বাচ্চার জন্য তোমার ক্ষতি করতে পারিনি। এখন কিন্তু হাত কাপবে না রুশা।”
“শুধু বাচ্চার জন্য?”
রুশা আদ্রিশের দিকে চেয়ে আছে আকুলতা নিয়ে। আদ্রিশ রুশার চোখ থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে বলল,
“এতকিছুর পরেও কিছুক্ষণ আগ পর্যন্ত তোমাকে ভালোবাসতাম কিন্তু এখন আমি তোমাকে ঘৃণা করি। ঘৃণা হচ্ছে তোমাকে দেখে। চোখের সামনে দেখতে পারছি না। মনে হচ্ছে চোখগুলো অপবিত্র হয়ে যাচ্ছে।”
আদ্রিশ ওকে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে। রুশা আকুতি মিনতি করছে কিন্তু আদ্রিশ শুনছে না।
আদ্রিশ ওকে গেটের বাইরে রেখে বলল,
“আর কোনো দিন আমার চোখের সামনে আসবে না।”
আদ্রিশ গেট বন্ধ করে দিল। রুশা কাঁদতে কাঁদতে গেট ধাক্কাচ্ছে। বারবার বলছে আমাকে ভুল বুঝছো। কিন্তু ওর কথা শোনার জন্য কেউ নেই। আদ্রিশ নিজের ঘরে গিয়ে সব ভেঙেচুরে ফেলছে। পাগলের মতো আচরণ করছে। রুশার বড় পোর্টেটটা ভেঙে ফেলল হকি স্টিক দিয়ে। আদ্রিশ মেঝেতে বসে পড়ল। ধ্বংসস্তুপের মাঝে বসে কাঁদছে। বাচ্চাদের মতো কাঁদছে আর বলছে তোমাকে মাফ করে দিতাম রুশা। কিন্তু তুমি আমার পুরোটাই কেড়ে নিয়েছো। পারব না ক্ষমা করতে তোমাকে।
রুশা যাওয়ার জায়গা হিসেবে আশ্রমকেই ঠিক মনে করল। রকি কিছু একটা করেছে বলে সন্দেহ হচ্ছে। কিন্তু এটা আদ্রিশের কাছে কি করে প্রমাণ করবে। যে করেই হোক প্রমাণ ওকে করতেই হবে। রুশা আপাতত আশ্রমে যাবে।
আশ্রমে যাওয়ার পর রকি অনেকবার রুশাকে নেওয়ার জন্য এসেছে প্রতিবারই ওর ঝাঁঝালো কন্ঠ শুনে ফেরত যেতে হয়েছে। কিন্তু হাল ছাড়েনি। রুশাকে অনেক ভাবে বুঝিয়েছে। বাচ্চার দায়িত্ব নিতে চেয়েছে কিন্তু লাভ হয়নি। রুশা টুকটাক আশ্রমের কাজ করে। কথার সাথে বসে আশ্রমের কাজ করছে তখন রকি এসে হাজির। রকিকে দেখে রুশা ক্ষেপে যায়।
রকি কোনো কিছু না বলে রুশার মুখে রুমাল চেপে ধরে বলল,
“সরি!”
রকি বেহুশ রুশাকে কথার চোখের সামনে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ও কি করবে বুঝতে পারছে না। কথা বাঁধা দিতে যায় রকি ওকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। কথা জানে ওদের সাথে পেরে উঠবে না তার চেয়ে সেজানকে কল করা বেটার।
রুশার জ্ঞান ফিরলে নিজেকে হাসপাতালে আবিষ্কার করল। পুরো রুমে কেউ নেই। হঠাৎ রকি এসে হাসি মুখে বলল,
“বাচ্চা নিয়ে সমস্যা তো? ওকেই সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।”
রুশা ভয়ার্ত দৃষ্টিতে চেয়ে বলল, “মানে?”
“ওকে মেরে ফেলব৷ তারপর তুমি আমি এক সাথে। ছোট্ট একটা অপারেশন হবে।”
“পাগল হয়েছো তুমি? মাথা ঠিক আছে? আমি তোমাকে কেটে কুটিকুটি করব আমার বাচ্চার কোনো ক্ষতি হলে। আর আমি বাঁচব? এই মুহুর্তে অপারেশন করলে আমিও মরে যাব।”
“তোমার কিছু হবে না নিশ্চিত থাকো।”
রকি চলে গেল রুম থেকে। রুশার মাথা কাজ করছে না। কি করবে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। রকি যে পাগল হয়ে গেছে তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। কিন্তু নিজের সন্তানকে বাঁচাতে হবে। ডাক্তার রকিকে বারবার বলছে ওরা এমন কাজ করতে পারবে না। একটা ছয়মাসের বাচ্চাকে মারতে পারবে না। এতে মায়ের ক্ষতিও হবে। রকি ওদের কথা শুনছে না উল্টো ডাক্তারকে থ্রেট করছে।
রুশা পকেট থেকে মোবাইল বের করে আদ্রিশের নাম্বারে অনেকবার কল করল কিন্তু কল রিসিভ করছে না উল্টো মোবাইল অফ করে দিল। রুশা তারপর সেজানের নাম্বারে কল করল। সেজান কল রিসিভ করতেই রুশা বলল,
“আদ্রিশ কোথায়?”
“ভাই একটা মিটিংয়ে।”
“সেজান ভাই, প্লিজ হেল্প মি। রকি আমাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। আমার বাচ্চাকে মেরে ফেলবে। ওকে বাঁচাও প্লিজ।”
“নিজের বাচ্চা নিজে কেন মারবে?”
“সেজান ভাই, আদ্রিশের মতো কথা বলবেন না প্লিজ। এসব রকির কারসাজি। এই বাচ্চা ওর হলে আমাকে জোর করে হাসপাতালে নিয়ে আসতো না। বাচ্চাকে ওর পথের বাঁধা মনে করত না। প্লিজ আমার বাচ্চাটাকে বাঁচান৷”
রুশা হাসপাতালের ঠিকানা দিল।
“আদ্রিশ ভাইয়ের অনুমতি ছাড়া আমি কিছু করতে পারব না। সরি।”
সেজান কল কেটে দিল। রুশা অসহায় মুখ করে বসে আছে। জানালা দিয়ে নিচের দিকে তাকাল। অনেক উঁচু তলায় আছে ও। এত ভারী শরীর নিয়ে নামা রিক্স। ততক্ষণে দুজন নার্স এসে ওকে চেপে ধরল। রুশা ধস্তাধস্তি শুরু করে দিয়েছে ওদের সাথে। এক পর্যায়ে হেরে গেল। চোখ দুটো বন্ধ হয়ে গেল হাতে লাগা ইঞ্জেকশনের প্রভাবে।
চলবে……
#লাভ_গেম
#ফাবিহা_নওশীন
২৭.
ঘুটঘুটে অন্ধকারে এলোমেলো কালো চুলগুলো উড়ছে। চুলগুলো ভীষণ অবাধ্য হয়ে মুখের উপর খেলা করছে। গালের উপর সুরসুরি লাগায় আধো আধো করে চোখ মেলে রুশা। মুখের উপর থেকে চুল সরিয়ে আবারও চোখ বন্ধ করল। বন্ধ চোখদুটো খুব দ্রুত খুলল। তারপর মাথা ঘুরিয়ে আশেপাশে দেখছে। এটা তো ওর আর আদ্রিশের ঘর। কিন্তু ও তো হাসপাতালে ছিল। তারপর মনে পড়ল বাচ্চার কথা। রুশার নিজেকে হালকা নয় বরং আগের চেয়েও ভারী মনে হচ্ছে। অজান্তেই হাত চলে গেল পেটের উপর। রুশা ধীরে ধীরে উঠে বসে। পেটে হাত দিয়ে চাপা শব্দে কাঁদছে। বিরবির করে বলছে,
“আর কত আঁচড় আসবে আমার বেবির উপর। পুরো দুনিয়া কেন ওর পেছনে পড়ে আছে? বেবি ভয় পেও না। তোমার মা আছে। কিছু হতে দেবে না তোমার।”
রুশা ডান হাতে গাল মুছল।
আদ্রিশ দরজা ফাঁক করে দাঁড়িয়ে ছিল। রুশার কথা শুনে আর ওকে ঠিক দেখে চলে গেল। রুশা দরজার দিকে তাকাল। মনে হচ্ছে কেউ ছিল ওখানে। রুশার মনে বারবার প্রশ্ন
জাগছে এখানে কে নিয়ে এল? আদ্রিশ নিয়ে এসেছে?
রুশা ধীরে ধীরে বিছানা থেকে নামতেই কথা ঘরে এলো। মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল,
“কেমন আছো আপু?”
“ভালো। আমি এখানে কি করে এলাম জানো কিছু?”
“হ্যা, আদ্রিশ ভাই আর সেজান ভাই নিয়ে এসেছেন।”
রুশার মনে প্রশ্ন জাগছে যদি বাঁচাবেই তাহলে এত ভাব দেখালো কেন।
কয়েক ঘন্টা আগের কথা। সেজান আদ্রিশের ডেক্সে যায় হন্তদন্ত হয়ে। ওকে অস্থির দেখে আদ্রিশ কাজ রেখে বিচলিত হয়ে জিজ্ঞেস করে,
“সেজান, কী হয়েছে? তোমাকে এমন অস্থির দেখাচ্ছে কেন?”
“ভাই, ভাবী কল করেছিল। এর আগে কথা কল করে বলেছিল ভাবী বিপদে আছেন। রকি ওকে জোর করে তুলে নিয়ে গেছে। আর কিছুক্ষণ আগে ভাবী কল করে সাহায্য চাইছিলেন।”
“সেজান, তোমাকে কতবার বলেছি ওর কথা আমাকে বলবে না।”
“ভাই, আমার পুরো কথা শুনুন। ভাবিকে রকি হাসপাতালে নিয়ে গেছে বাচ্চা মেরে ফেলার জন্য। নিজের বাচ্চা কেউ কী করে মারতে পারে?”
“হতে পারে এটা রুশা আর রকির নতুন কোনো চাল।”
“কী চাল হবে? নিজের বাচ্চা মেরে ফেলবে? নিজের বাচ্চা কেউ মেরে ফেলতে পারে? ভাবিকে রকি অজ্ঞান করে তুলে নিয়ে গেছে। হতে পারে ভাবি সত্যি বলছে। হয়তো বাচ্চাটা আপনার।”
আদ্রিশ সেজানের কথা শুনে চমকে চেয়ে রইল। সেজান মোবাইল বের করে রুশাকে কল করল। কল বেজে যাচ্ছে রিসিভ হচ্ছে না। তারপর দরজার দিকে এগিয়ে গেল।
“কোথায় যাচ্ছ সেজান?”
“হাসপাতালে। কল রিসিভ হচ্ছে না। মনে হচ্ছে ভাবি বিপদে আছে। আমি এভাবে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে পারব না। যদি পরে জানতে পারি বাচ্চাটা আপনার ছিল, আমার ভাতিজি অথবা ভাতিজা ছিল নিজেকে মাফ করতে পারব না।”
“সেজান, এভাবে যেও না। হতে পারে ওরা কোন জাল সাজিয়েছে।”
“তাই তো একা যাচ্ছি। ওদের জাল সাজানোর হলে আপনার জন্য সাজাবে, আমার জন্য না। তাই আপনাকে রেখে যাচ্ছি। আমি গিয়ে দেখি ঘটনা কি।”
“তোমাকে আমি একা যেতে দেব না সেজান। আমিও যাব।”
“না ভাই, আপনি থাকুন। আমি যাচ্ছি। রকি যদি সত্যিই এমন কিছু করে তবে ওকে আপনার সামনে নিয়ে আসব৷ আর ভাবির কোনো ক্ষতি হতে দেব না কথা দিচ্ছি।”
আদ্রিশ যখন প্রথম শুনে রুশা বিপদে আছে তখন থেকেই ভেতরে ভেতরে অস্থির হয়ে পড়ছিল। কিন্তু অভিমান এসে ভর করে কিন্তু এখন আর নিজেকে সামলে রাখতে পারছে না।
“সেজান, আমি বলেছি যাব ব্যস যাব।”
আদ্রিশ আর সেজান দুজনেই হাসপাতালে যায়। ওরা রুশার বলা ঠিকানায় পৌঁছে গিয়েও রুশাকে পায়নি। তারপর ওখানকার একজনকে জোর করার পর জানতে পারে ওকে অপারেশন থ্রিয়েটারে নিয়ে গেছে।
অপারেশন রুমের দরজার সামনে গিয়ে রুশাকে বেহুশ পায়। আর একজন ডাক্তার আরেকজন ডাক্তারের সাথে তর্ক করছে।
“এমন পাপ করতে পারব না। আমি ডাক্তার খুনি নই।”
অন্যজন বলছে,
“কাজটা না করলে আপনার সাথে সাথে আমিও মরব। একটা বাচ্চাই তো। কত বাচ্চা মরে যায়। কিছু হবে না স্যার।”
আদ্রিশের আর সহ্য হলো না। ভেতরে ঢুকে ওই ডাক্তারের নাক বরাবর ঘুষি মেরে বলল,
“আমার বাচ্চাকে মারবি? আদ্রিশ আফসানের বাচ্চাকে?”
ডাক্তারের নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে আর পাশের ডাক্তার ভয়ার্ত দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। আদ্রিশ তাকে প্রশ্ন করল,
“আমার স্ত্রী ঠিক আছে?”
“জি স্যার। উনি একদম ঠিক আছে। আমি অপারেশন হতে দেইনি।”
“এর এনাম পাবেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। রকি কোথায় বলতে পারেন?”
“জি, উনি ওয়েটিং রুমে বসে আছেন।”
আদ্রিশ সেজানকে ইশারা করল।
রকি আদ্রিশের সামনে হাঁটু গেড়ে হাসপাতালের ছাদে বসে আছে। আদ্রিশ ওর চারপাশে ঘুরে বলল,
“নিজের বাচ্চাকে মেরে ফেলছিস কেন?”
“আমার বাচ্চা, আমি মেরে ফেলব যা খুশি করব কাউকে কৈফিয়ত দেব না।”
আদ্রিশ সেজানের দিকে তাকাল। সেজান পেছনে থেকে সজোরে লাথি মেরে বলল,
“সত্যি করে বল নয়তো ভাই আজ তোকে ছাদ থেকে ফেলে আত্মহত্যা কেস সাজিয়ে দেবে।”
“বললাম তো! আর কী বলব?”
আদ্রিশ রিভলবার বের করে ওর মাথায় ঠেকিয়ে বলল,
“তুই ভালো কথার মানুষ না। সত্যি করে বল আমার বাচ্চাকে মারতে চেয়েছিলি কেন?”
রকি রাগে গর্জে উঠে বলল,
“বেশ করেছি। রুশাকে পাওয়ার জন্য আমি সব করতে পারি। এই বাচ্চার জন্য আমাকে এত অবহেলা করে তাই বাচ্চাটাকেই সরিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। তারপর আর কোনো বাঁধা থাকত না। রুশা আমার কাছে চলে আসত।”
“রুশা তো তোকে ভালোবাসে, তাহলে কেন যাবে না তোর কাছে? আর তুই তো রুশাকে ভালোবাসিস তবে কেন ওর বাচ্চা আপন করতে পারিস নি?”
“ভালো তো আমি বেসেছি বোকার মতো। রুশা আমাকে কখনো ভালোই বাসেনি। ওর জন্য কত কী করেছি, কত ভাবে সাহায্য করেছি কিন্তু ও তোকে ভালোবেসে ফেলল। তোর বাচ্চার মা হয়ে গেল। ও না চাইলে তুই ওর ছায়াও স্পর্শ করতে পারতি না। মুখে যাই বলুক, আমি সব জানি ও তোকে এখনো ভালোবাসে। তোকে ভালোবাসে, তোর বাচ্চা ওর পেটে তাহলে আমার কী হবে? তাই নিজেরটা নিজেই বুঝে নিতে চেয়েছি।”
আদ্রিশ ওকে আরেকটা লাথি মেরে উল্টো ঘুরে সিড়ি দিয়ে নেমে চলে গেল। ও রুশার কাছে যাচ্ছে আর ভাবছে,
“রুশাকে এতদিন ভুল বুঝে এসেছি? রুশার সাথে রকির কোনো সম্পর্ক নেই। রুশা শুধু আমাকে ভালোবেসেছে। ও আমার বাচ্চার মা।”
রুশা কথার কাছ থেকে সব ঘটনা শুনে সেজানের প্রতি কৃতজ্ঞতা বেড়ে যায়। চোখ ভরে আসে পানিতে।
মাঝরাতে ঘরে হালকা আলো জ্বলছে। রুশার ঘুম আসছে না। বালিশে মাথা রেখে চুপ করে শুয়ে আছে। ওই ঘটনাটা মনে পড়লেই অস্থিরতা শুরু হয়ে যায়৷ বুক ধুকপুক করতে থাকে। একজন মা যতই সাহসী, শক্তিশালী হোক না কেন, তার সন্তানের জন্য সে সবচেয়ে দূর্বল মানুষ। দরজা খোলার শব্দে রুশা রুশা চোখ মেলে। কান দুটো খাড়া করে রাখল। চোখদুটো ছোট ছোট করে বন্ধ করে রাখল। চেনা পারফিউমের ঘ্রাণ আর অববয় দেখে মনে হচ্ছে এটা আদ্রিশ। রুশা যত অন্ধকারেই হোক আদ্রিশকে চিনতে ভুল করবে না। রুশা চোখ বন্ধ করে ঘুমের ভান করে থাকল। আদ্রিশ ধীরে ধীরে ওর পাশে গিয়ে বসে কপালে ঠোঁট ছুয়ালো। হাত দিয়ে ওর গালে স্লাইড করছে। রুশার সারা শরীরে শিহরণ বয়ে যাচ্ছে। এতদিন পরে এই মানুষটার ছোয়ায় বারবার চমকে উঠছে। রুশা খপ করে আদ্রিশের হাত ধরে ফেলল। আদ্রিশ চমকালো না, হতবিহ্বলও হলো না। ও জানে রুশার ঘুম পাতলা। এতক্ষণ ধরে গালে হাত দিয়ে স্লাইড করছে জেগে যাওয়ারই কথা। রুশার মায়াবী মুখটা অন্ধকারে আরো মায়াবী লাগছে। হঠাৎ লোভ জেগে উঠে। আদ্রিশ ওর পাশে আধশোয়া হয়ে ওর গলায় ঘাড়ে ভালোবাসার স্পর্শ দিচ্ছে৷ রুশা অভিমানে ওকে ঠেলে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু আদ্রিশ মানতে নারাজ। ও রুশার ঠোঁটে ঠোঁট ডোবাল। রুশা প্রথমে ধাক্কালেও পরে আর ওকে অগ্রাহ্য করতে পারল না। আদ্রিশ ওর ঠোঁট ছেড়ে পেটে ঠোঁট ছুয়ালো। এতগুলো দিন পরে এই প্রথম বাচ্চাকে ছুতে পারল বলে অনুভূতি হলো। আদ্রিশ পেটের কাছ থেকে সরে এসে বলল,
“সরি। সরি ফর কিস।”
রুশা ওর কথা শুনে অবাক হলো। ভেবেছিল ওকে ভুল বোঝার জন্য সরি বলছে। কিন্তু না কিস করার জন্য সরি বলছে। রাগে, ক্ষোভে রুশা আদ্রিশকে ধাক্কা মেরে বিছানা থেকে নিচে ফেলে দিল।
তারপর দাঁত খিচিয়ে বলল, “অমানুষ!”
আদ্রিশ মেঝেতে বসে বিছানায় হাত রেখে বলল,
“আমি অমানুষ! আজকে ওই রকির হাত থেকে কে তোমাকে বাঁচালো?”
“আমাকে বাঁচিয়েছো? বাঁচিয়েছো নিজের সন্তানকে। তোমার লজ্জা নেই? কোন মুখে এতকিছুর পরে আমার সামনে এসেছো? আমাদের স্পর্শ করছো? ওহ, আমি তো ভুলে গেছি তুমি তো জেন্টেলম্যান নও। অসভ্য লোক। নিজের বাচ্চাকে অস্বীকার করে স্ত্রীকে তাড়িয়ে দেয়। একবার ভাবে না মেয়েটা কোথাও যাবে এই অবস্থায়। কতবার বলেছি রকির সাথে জাস্ট বিয়ের কথা হয়েছিল আর কিছু নেই ওর সাথে। তবুও অবিশ্বাস করলে। এখান থেকে চলে যাও নয়তো খারাপ কিছু হয়ে যাবে।”
রুশা ছোট টেবিল ঘড়িটা আদ্রিশকে ছুড়ে মারল।
আদ্রিশ ঘড়িটা হাতে নিয়ে বলল,
“আর ইউ ক্রেজি?”
“হ্যা, আমি পাগল হয়ে গেছি। আমার মাথায় খুন চেপে আছে। চলে যাও নয়তো খুন করে ফেলব।”
রুশা টেবিলের উপরে থেকে ফ্রেম হাতে নিল। আদ্রিশ বুঝতে পারছে রুশা ভীষণ ক্ষেপে গেছে। এসবের চক্করে না নিজের ক্ষতি করে ফেলে তাই চলে যাওয়াই বেটার। আদ্রিশ চলে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াল। তারপর আবারও রুশার দিকে তাকাল। রুশা রাগে ফোঁসফোঁস করছে। আদ্রিশ ওকে আর না রাগিয়ে ঘর থেকে চলে গেল।
সকাল বেলায় রুশা ফ্রেশ হয়ে নিচে গেল। কথা টেবিলে খাবার দিচ্ছে। রুশা সোফায় বসে কথাকে ডাকল। কথা ওর সামনে এসে হাসি মুখে বলল,
“জি আপু, নাস্তা দেব।”
“উহু, এখানে এসে বস।”
রুশা নিজের পাশের খালি জায়গায় হাত রেখে ওর দিকে তাকাল। কথা গিয়ে বসে পড়ল।
“কথা, এসব কাজের জন্য এখানে অনেক লোক আছে। তুমি এসব কাজ করছো দেখতে আমার ভালো লাগছে না। তুমি মেহমান আমাদের। আমার সাথে থাকবে, গল্প করবে সেটাই যথেষ্ট।”
কথা হেসে বলল,
“আমার এসব কাজ করতে ভালো লাগে।”
“বেশ! সেজান ভাইকে দেখেছো?”
“হ্যা, উনার ঘরে কফি দিয়ে এসেছি। উনি তখন গোসল করে বের হয়েছে। বলল রেডি হয়ে আসছে। নাস্তা যেন রেডি থাকে। কি এক মিটিং আছে। তাই নাস্তা রেডি করছি।”
কথার মাঝে কেমন অদ্ভুত কিছু দেখতে পাচ্ছে রুশা। লজ্জা মাখানো , মিষ্টি হাসির এই মুখটা যেন কিছু বলছে।
“ভালোবাসো সেজান ভাইকে?”
রুশার আচমকা প্রশ্নে কথা হতবাক। রুশার চোখে চোখ মেলাতে পারছে না। বুক দুরুদুরু করছে। কেমন লজ্জা পাচ্ছে।
“বলো।”
কথা লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে মাথা নিচু করে নিচুস্বরে বলল, “হ্যা।”
“আর সেজান ভাইয়া?”
কথা আবারও নিচুস্বরে বলল,
“একবার বলেছিল ভালোবাসার কথা। তারপর আর তেমন ভাবে উনার সাথে কথা হয়নি।”
রুশা মুচকি হাসল। কথাকে ওর খুব পছন্দ। শান্ত শিষ্ট মেয়েটার আচরণ ওকে বরাবরই মুগ্ধ করত। ওকে নিজের ছোট বোন মনে করে এসেছে। আর সেজানও ভালো ছেলে। দুজনে ভালো থাকবে বলে রুশার বিশ্বাস।
রুশা সেজানকে তরি ঘটি করে সিড়ি দিয়ে নামতে দেখল। রুশা ওকে দেখে বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেল। রুশা আগের চেয়ে মুটিয়ে গেছে। চেহারায় অন্যরকম একটা আভা ফুটে উঠেছে। সেজানের সামনে গিয়ে বলল,
“সেজান ভাই!”
সেজান ওকে দেখে দাঁড়িয়ে গেল।
“জি ভাবি কিছু বলবেন?”
রুশা মাথা নিচু করে হাতজোড় করে চোখের পানি ছেয়ে দিয়ে বলল,
“আপনার জন্য আমার বাচ্চাটা বেঁচে গেল। আমি আজীবন আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। কি ভেবে কেন করেছেন সেটা জানার প্রয়োজন নেই আমার। আমি শুধু এটুকুই জানি আল্লাহ আপনাকে আমার সন্তানের জন্য ফেরেস্তার মতো পাঠিয়েছে।”
সেজান রুশার হাতজোড় করা হাতগুলো খুলে বলল,
“ভাবি কি করছেন? এটা আমার দায়িত্ব ছিল। আমি আপনাকে ভাবি বলে ডাকলেও প্রথম থেকেই বোন ভেবে এসেছি। বোনকে কি করে বিপদে একা ছেড়ে দেই? আমি আমার কর্তব্য পালন করেছি।”
রুশা অবাক হয়ে সেজানের দিকে তাকাল। সেজান যেন ওর সাজ্জাদ ভাইয়ের কপি। সাজ্জাদ যেভাবে ওকে আগলে রাখত সেভাবেই আগলে রাখছে। ওর চোখ আবারও জলে ভরে এল।
পরিস্থিতি পাল্টানোর জন্য বলল,
“রকির কি খবর?”
সেজান রুশার দিকে চেয়ে ওর ভাব বোঝার চেষ্টা করে বলল,
“আমাদের কাছেই আছে।”
আদ্রিশ টাই টানতে টানতে নিচে নামছে। সিড়ি থেকেই বলল,
“সেজান তাড়াতাড়ি নাস্তা করে নেও।”
সেজান নাস্তা করার জন্য চলে গেল। রুশা একবার আদ্রিশের দিকে তাকাল। আদ্রিশ ওর দিকে চেয়ে ছিল। চোখে চোখ পড়তেই মুখ ফিরিয়ে নিল। তারপর ডাইনিং টেবিলের কাছে গেল। রুশা গিয়ে সোফায় আগের জায়গায় বসে পড়ল। তারপর কথাকে বলল,
“আমার নাস্তা এখানে দিতে বলে তুমি নাস্তা করে নেও।”
“আমি নিয়ে আসছি আপু।”
কথা নাস্তা আনার বাহানায় সেজানকে বারবার দেখছে৷
চলবে…..!