সম্পর্কের মায়াজাল পর্ব-২১

0
3155

#সম্পর্কের_মায়াজাল
#ফারজানা_আফরোজ
#পর্ব_২১

—” আজ থেকে তোমার ক্লাস শুরু মিসেস শুভ্রতা। আমার পিছনে লাগা বের করছি তোমার হাহাহা। বাচ্চা মেয়ে একটা।”

অন্যদিকে শুভ্রতা মনে মনে ভাবছে….

—” ফাজি লোক একটা।অসভ্য ছেলে,কান কাটা হনুমান,মিচকা শয়তান, কিপ্টুস, বিলাতি ইদুর সব সময় আমার পিছনে লেগে থাকে। আমাকে শায়েস্তা করার সাথে বিরক্ত করে কি মজা পায় এই লোক? ওকে দাঁড়াও আমিও বুঝা-বো এই শুভ্রতা কি জিনিষ! তুমি চলো ডালে ডালে আমি চলি পাতায় পাতায়।”

স্পন্দন শুভ্রতার চোখের দিকে তাকিয়ে শুভ্রতা-কে চোখ টিপ দিলো। স্পন্দনের এই চোখ টিপের রহস্য বুঝতে না পেরে শুভ্রতা বলেই ফেললো…..

—” চোখ টিপ দিচ্ছেন কেন?”

—” বউয়ের সাথে রোমান্স করছি চোখ টিপ দিয়ে।”

—” চোখ টিপ দিয়ে বুঝি রোমান্স করে মানুষ?”

—” তাহলে কিভাবে রোমান্স করে?”

—” জানি না।”

—” আচ্ছা।”

স্পন্দনের কোনো রিয়েক্ট না দেখে শুভ্রতা রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে রুম থেকে বের হয়ে যায়। স্পন্দন শুভ্রতার যাওয়ার পর অনেক্ষণ হাসতে থাকে। শুভ্রতার কথার জালে শুভ্রতা-কে আটকিয়ে দিয়ে বেশ মজা ফেলো স্পন্দন।

চলে যায় এইভাবে তিনটি দিন। শুভ্রতা তার বাবার বাড়িতে থাকায় স্পন্দনও এইখানে থেকে গিয়েছে। শুভ্রতা স্পন্দনের থাকা নিয়ে অনেক লজ্জা পাচ্ছিল তার কারণ, পাশের বাসার এক আন্টি ও তার বড় মেয়ে শুভ্রতা-দের বাড়িতে আসে। উনারা স্পন্দনকে দেখে শুভ্রতার মাকে বলেছে…..

—” ভাবী, জামাই দেখি শুভ্রতার জন্য খুব পাগল। শুনলাম শুভ্রতা যেদিন থেকে এসেছে জামাইও না-কি সেদিন থেকে এইখানে? আমি তো বিয়ের পর খুব ভয়ে ছিলাম এই নিয়ে যে, সাধনার কু-কর্মের ফল শুভ্রতা-কে না দিতে হয় এখন দেখি পানি অন্য দিকে যাচ্ছে। জামাইয়ের হাব ভাব কিছু তো বুঝি না ভাবী।শুনেছি সাধনাকে ভালোবাসতো তাহলে এখন দেখি শুভ্রতার জন্য পাগল।কোনো রহস্য আছে কি ভাবী?”

প্রতিবেশী আন্টির কথার ধাঁচে অপমানজনক কথা শুভ্রতা আর ওর মা মিসেস রেহেনা বেগম বুঝতে পারেন। উনি যে স্পন্দনের চরিত্র নিয়ে কথাটা বলেছে খুব ভালোই বুঝা যাচ্ছে। শুভ্রতা তখন উঁচু গলায় বলল…….

—-” আমি সুখে আছি এইটা অনেক না আন্টি? আমার বোন যা করেছে আমার স্বামী আর ওর পরিবারের সাথে তার জন্য তো উনারা আমাদের পরিবারের নামে মানহানি মামলা করতে পারতো কিন্তু কিছু করেনি উনারা। আমার আব্বু যখন স্পন্দনের সাথে আমার বিয়ের কথা বলে তখনও কিন্তু উনারা কিছু বলেনি বরং খুশি মনে মেনে নিয়েছে। এমন একটি পরিবারের বউ হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি আমি। তাছাড়া আমার স্বামী অনেক ভালো তাকে আমি প্রায় দুই বছর হতে চললো চিনি জানি। উনি কেমন তা অবশ্যই আপনার কাছ থেকে আমার শিখতে হবে না?”

—” না মা তুই ভুল ভাবছিস। তোর ভালোই জন্যই বলেছি। আচ্ছা শোন, ভালো পরামর্শ দিচ্ছি। তোর বয়স তো কম না যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটা বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে নে। বাচ্চা থাকলে স্বামীর সংসারে আলাদা একটা ক্ষমতা, জোর থাকে। তখন স্বামীকে নাকে দড়ি বেঁধে ঘুরানো যায়। আমার মেয়ের জামাইকে দেখিস নাই কিছুদিন আগে মা বাবা ভাই বোন বলতে অজ্ঞান ছিলো কিন্তু এখন আমার মেয়ের ছেলে হ‌ওয়ার পর থেকে মেয়ের জামাইও বদলে গেল। স্বামীকে টাইড দেওয়ার বড় হাতিয়ার সন্তান। আর সেই সন্তান যদি ছেলে হয় তাহলে সোনায় সোহাগা।”

বিরক্তি সহকারে কথাগুলো হজম করতে লাগলো শুভ্রতা আর ওর মা। শুভ্রতা কিছু একটা অজুহাতে চলে আসে। পরে কি কি বলে ওই পাশের বাসার আন্টি শুভ্রতা কিছু জানে না।

শুভ্রতা তার শশুর বাড়িতে চলে আসে। স্পন্দনও চলে আসে শুভ্রতার পিছু পিছু। স্পন্দন রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খাটে শুয়ে পড়লো। শুভ্রতা ফ্রেশ হয়ে জামা কাপড় গুলো ঠিক করছিলো তখন সন্ধ্যা হনহন করে রুমে প্রবেশ করলো…..

—-” ভাইয়া তুই বউকে পেয়ে আমাকে ভুলে গেলি? বউয়ের পিছু পিছু শশুর বাড়ি চলে গেলি। এখন আমরা তোর পর হয়ে গেছি তাই না? পর তো এখন হবই সৎ বোনরা তো এমনিতেই পরেই থাকে। ”

সন্ধ্যার মুখ থেকে এমন কিছু শুনবে স্পন্দন কোনোদিন কল্পনা করেনি। সন্ধ্যা নিজ থেকে এমন কিছু বলতে পারে স্পন্দন ও শুভ্রতার কাছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিল ব্যাপারটা। স্পন্দন তখন সন্ধ্যার কাছে গিয়ে ভালোবেসে আদুরে গলায় বলল….

—“আমার বোনকে আমি খুব ভালোবাসি। আর সৎ কি রে? এইসব বাজে কথা একদম বলবি না। তুই জানিস না তুই আমার কাছে কি? তুই হলি আমার কলিজা। তোকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো বল?”

—” পারবে না বলেই তো আমার বার্থ ডে উইশ করো নাই কোনো গিফট দেও নি এমনকি আমার সাথে তো এখন কথা বলার সময়ও পাচ্ছো না। এত বিজি কবে থেকে হলে ভাইয়া?”

সন্ধ্যা স্পন্দনকে ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করছে। সন্ধ্যা রাগ বা অভিমান করলে স্পন্দনকে তুমি বলে সম্বোধন করে। স্পন্দন ছোট বোনের সামনে অপরাধীর মতো দাঁড়িয়ে রইলো। কেননা, সত্যিই সে এতটাই কাজে ব্যস্ত ছিল বোনের সাথে ঠিক মত কথা বলতে পারে নাই। সন্ধ্যার বার্থ ডে গিফট অবশ্য সে কিনে রেখেছিলো কিন্তু এই মুহূর্তে বলতে চাচ্ছে না। স্পন্দন সন্ধ্যার জন্য অন্য কিছু ভেবে রেখেছে।

সন্ধ্যা স্পন্দনের নিরব দাঁড়িয়ে থাকা দেখে অভিমানী সুরে বলল…..

—-” আমি কি সত্যিই তোমার পর হয়ে গেছি ভাইয়া? আমাকে কি তুমি একটুও ভালোবাসো না আর?”

শুভ্রতা এতক্ষণ দাঁড়িয়ে ভাইবোনের রাগ অভিমানের কথাগুলো শুনছিল। কিন্তু এখন সন্ধ্যার কথা শুনে সন্ধ্যার কাছে গিয়ে বলল…..

—-” সন্ধ্যা তুমি এইসব কি বলছো? তুমি তো জানোই তোমার ভাইয়া তোমাকে কত ভালোবাসে। উনি এখন খুব বিজি তাই হয়তো তোমাকে সময় দিতে পারছে না কিন্তু দেখবে কাজ কমলেই তোমার ভাই আগের মত হয়ে যাবে।”

—” তুমি কথা বলবে না। তোমার জন্যই ভাইয়া এখন আমাকে ভালোবাসে না। তুমি আসার পর থেকে ভাইয়া আমাকে দেখতে পারে না। ভাইয়া যদি বিজি থাকতো তাহলে তোমাদের বাসায় কিভাবে এতদিন থেকেছে? তুমি যেখানেই যাও ভাইয়াকে সাথে করে নিয়ে যাও।”

শুভ্রতা কিছু বলতে যাবে তার আগেই স্পন্দন শুভ্রতা-কে থামিয়ে দিয়ে বললো……

—” সন্ধ্যা তোকে আমি ভালোবাসি কিন্তু এই নয় যে তুই অন্যদের সম্মান করবি । তোকে আমি ছোট থেকেই শিখিয়ে এসেছি ছোট বড় সবাইকে সম্মান দিয়ে কথা বলবি। কিন্তু তুই আজ আমার শিখানো পথে না চলে তোর ভাবীকে কষ্ট দিয়ে কথা বলছিস? তোর থেকে এইটা আসা করি নাই আমি।”

—” ভাইয়া এখন তুমি আমাকে বক-ছো? তুমি তো কোনোদিন এইভাবে আমার সাথে কথা বলো নাই তাহলে আজ এইভাবে কথা বললে? তোমার সাথে আর কোনোদিন কথা বলবো না। আমি তো এখন আর কেউ না তোমার। তোমার বউ-ই তোমার সব।”

সন্ধ্যা কান্না করতে করতে চলে গেলো। সন্ধ্যার যাওয়ার পর শুভ্রতা স্পন্দনের দিকে তাকিয়ে বলল…..

—” আপনারা বলেছেন সন্ধ্যা সব কিছু কম বুঝে তাহলে আজ ও এইভাবে কথা কিভাবে বলল?”

—” আমিও তাই ভাবছি।”

সন্ধ্যা নিজের রুমে এসে দরজা লক করে কান থেকে ব্লুটুথ খুলে কাঁদতে লাগলো। তাজরীন বার বার ফোন দিচ্ছে কিন্তু সন্ধ্যা রিসিভ করছে না। এতক্ষণ সন্ধ্যার কানে ব্লুটুথ ছিলো। তাজরীন ফোন দিয়ে বলেছে কানে ব্লুটুথ লাগাতে তাহলে ওইপাশ থেকে তাজরীন সব শুনতে পারবে আর কোনো সমস্যা হলে বলেও দিতে পারবে। সন্ধ্যার চুল কানের কাছে এনে ছেড়ে রেখেছিলো তাই শুভ্রতা আর স্পন্দন দেখতে পাইনি।

—” যেমন ভাবে চাচ্ছি ঠিক তেমন ভাবেই হচ্ছে। ভাগ্যিস এই পাগল মেয়েটার কানে ব্লুটুথ অন করে দিয়েছিলাম তাই তো সব কথা শুনতে পেলাম। আর সব শিখিয়েও দিতে পারলাম।”

নিজের ফাজি বুদ্ধিকে বাহ বাহ দিতে লাগলো তাজরীন।
।।

।।

।।।

সমুদ্র ছাদের মেঝেতে বসে বসে লুকিয়ে আচার খাচ্ছে। অর্ধেক আচার তার পেটেই যাচ্ছে।

—-” সারাদিন ভাত না খেয়ে থাকা যাবে যদি এমন আচার সারা বেলা খাওয়া যায়। যত খাচ্ছি ততই মন চাচ্ছে। বিয়ে করলে করবো যাদের আম,আমলকী,জলপাই, তেঁতুল, আমড়া, বড়ই গাছ আছে সেই বাড়ির মেয়েকে। নামগুলো বলতে গিয়েও মুখে পানি চলে আসছে আহা কি আনন্দ।”

সমুদ্র আশে পাশে না তাকিয়ে আচার খেয়েই যাচ্ছে কোথা থেকে যেনো নাদিয়া এসে সমুদ্রকে ভয় দেখিয়ে বলল…..

—-” ভাইয়া আম্মু আসছে পালা তাড়াতাড়ি।”

নাদিয়ার চিৎকার শুনে সমুদ্র ছাদের দরজার দিকে না তাকিয়েই দৌড়াতে লাগলো। ছাদের কোনায় এসেই পিছনে তাকিয়ে নাদিয়ার হাসি দেখে দরজার দিকে তাকালো। দরজার ধারে কেউ না থাকায় রাগী দৃষ্টিতে তাকালো নাদিয়ার উপর…..

—” মিথ্যাবাদী কোথাকার।”

—” চোর কোথাকার।”

—” কে চোর?”

—-” তুই চোর। চুরি করে আচার খাচ্ছে আবার বলে কে চোর? একেই বলে চোরের মায়ের বড় গলা।”

—-” নিজের বাসা থেকে খাচ্ছি এইখানে চোর কিভাবে হলাম?”

—” তাহলে যখন আম্মুর কথা বললাম এইভাবে দৌড় দিলি কেন?”

সমুদ্র কি বলবে বুঝতে না পেরে অন্য প্রশ্ন করলো নাদিয়াকে…….

—” শুভ্রু-কে আচার দিয়ে এসেছিস?”

নাদিয়া সমুদ্রের কথা শুনে চোখ দুটি ছোট ছোট করে বললো….

—-” এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলি? শুভ্রতা না বলেছে ওর শশুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য। তুইও তো বলেছিস ওর শশুর বাড়ি যাবি আচার নিয়ে তাহলে এই আজাইরা প্রশ্ন কেন করলি?”

—-” তুই একদম বেশি কথা বলিস। এখন বল তুইও কি আচার খেতে এসেছিস? না-কি অন্য কোনো মতলব আছে?”

সমুদ্রের কথা শুনে ছাদের মেঝেতে মাদুর বসানো জায়গায় ‘ধ’ মেরে বসে পরলো নাদিয়া। সমুদ্র নাদিয়ার দিকে সন্দেহ নজরে তাকিয়ে ভ্রু জোড়া কুচকে জিজ্ঞাসা করলো…..

—-” কি হয়েছে তোর?”

—” ভাইয়া আমি আবারও প্রেমে পড়েছি।”

—” ওহ্ আচ্ছা এই কথা। আমি আরো ভাবলাম কি না কি!”

ভাবলেশহীন ভাবে সমুদ্র নাদিয়ার কথা শুনে আবারো আচার খাওয়াতে মগ্ন হলো। নাদিয়া বিরক্তি নিয়ে সমুদ্রকে জিজ্ঞাসা করলো……

—” বোন প্রেমে পড়েছে আর তুই এত ভাবলেশহীন ভাবে বসে আছিস? তুই কেমন ভাই রে আমার।”

—” কেন এখন কি আমি মুভির ভিলেনদের মতো তোর ওই প্রেমিককে মারতে যাবো গুন্ডা নিয়ে।”

—” আজব তো! তুই জিজ্ঞাসা করবি না ছেলেটা কে? কি করে? কোথায় দেখা? কিভাবে প্রেমে পড়েছিস?”

—-” এই নিয়ে কতগুলো প্রেমে পড়লি বলতো আমায়?”

—” এই প্রেম নিয়ে সিরিয়াস আমি সত্যি।”

—-” আগের গুলোও তো একই কথা বলেছিস।”

—-” ধ্যাত! তোকে যে কেন শুধু শুধু এইসব কথা বলি। আমি শুভ্রতা-কে ফোন দিয়ে সব কিছু বলছি। থাক তুই তোর আচার নিয়ে। জীবনেও তো প্রেম ভালোবাসা করিস নি তাই বুঝবি না।”

নাদিয়া রাগ দেখিয়ে চলে গেলো। সমুদ্র এমন ভাব দেখাচ্ছে যেন সে নাদিয়ার কোনো কথাই শুনেনি। সে তার মতো আবারো আচার খেতে মনোযোগী হলো।

।।

।।

।।

সাধনা মুগ্ধকে কিছু না বলে বাড়ির বাহিরে বের হলো। সাধনা জানতো বাড়িটা জঙ্গলে কিন্তু এতটা গভীর জঙ্গলে ভাবতে পারেনি। আশে পাশে কোনো ঘর বাড়ি আছে বলে মনে হচ্ছে না। কিছুটা পথ হেঁটে হেঁটে যাচ্ছে সে। মনে মনে ভয়ও পাচ্ছে……

—-” মুগ্ধকে যে কেন না বলে এসেছি। এখন তো নিজেরই ভয় হচ্ছে। মানুষ ঠিকই বলে বড়দের কথা শুনতে হয় তা-নাহলে বিপদে পড়বে।”

—” আমাকে না বলে কোথায় যাচ্ছো?”

সাধনা পিছনে তাকিয়ে দেখলো মুগ্ধ দাঁড়িয়ে আছে। ভয়ে ভয়ে ঢোক গিলল সাধনা। এখন যদি মুগ্ধ ভাবে সে পালানোর চেষ্টা করছে কিন্তু সাধনা তো একটু হাঁটতে বেরিয়েছে। কি যে হবে?

—” সরি, তোমাকে না বলে চলে এসেছি। বিশ্বাস করো আমি পালানোর জন্য বের হয় নি।”

—-” আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলতো তুমি কি আমায় ভয় পাচ্ছো?”

—” হুম একটু একটু পাচ্ছি।”

—” মাত্র একটু ভয় পাচ্ছো বেশি না?”

—” হুম খুব বেশি।”

সাধনার কথা শুনে মুগ্ধ জোরে জোরে হাসা শুরু করলো। সাধনা মুগ্ধের দিকে তাকিয়ে রইলো। মুগ্ধ হাসি থামিয়ে বলল….

—” আমি বাঘ ভাল্লুক না যে এত ভয় পাবে। আচ্ছা যেহেতু বাহিরে বেড়িয়েছ তাহলে চলো রোদ জায়গা দেখে বসি। এমনি শীত কাল তার উপর জঙ্গল।”

সাধনাকে নিয়ে রোদ পরে এমন জায়গায় বসলো মুগ্ধ। সাধনার পা মুগ্ধ তার কোলে নিয়ে নুপুর পড়াতে লাগলো।

—” এই তুমি পা ধরছ কেন?”

—” চুপ একদম চুপ। তোমার জন্য দুইটা জিনিস বানিয়ে এনেছি। আর দেখো আসার পথেই তোমার সাথে দেখা।”

—” আর কি?”

মুগ্ধ সাধনার একদম কাছে গিয়ে পকেট থেকে কোমরের বিছা বের করে সাধনার কোমরে বেঁধে দিয়ে শাড়ির উপরে কিস করলো।

—-” কোমরের বিছা দেওয়ার কারণ হলো, আমি এখন বুঝতে পারবো আমার বাবুটা তোমার ছোট্ট পেটের কতটুকু জায়গা জুড়ে আছে। বাবুটা যখন দিন দিন বড় হবে আর বিছার মাপও বড় হতে থাকবো। আমার লক্ষী সোনার জন্য তার বাবা কত কিছু যে প্ল্যান করে রেখেছে জানো না তুমি।”

সাধনা মুগ্ধের কথা শুনে কোমরের দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলো। খুব সুন্দর বিছাটা দেখেই মনে হচ্ছে খুব সুন্দর ও সৌখিন মানুষ তার নিখুঁত চোখ দিয়ে ডিজাইন বলেছে বা বানিয়েছে।

সাধনা মুগ্ধের কোলে মাথা রেখে আকাশ পানে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে এত সুখ কি তার কপালে সইবে………

চলবে…….