#সাইকো বস
#নাহিদা ইসলাম
পর্ব ২০( অন্তিম পর্ব)
—হাসতেছে আর বলতেছে। আমাকে এতোদিন বড্ড জ্বালিয়েছো অহনা। তুমি আমার না তো কারো ই না।
কথাগুলো ফোনে কাকে জানি বলতেছিলো, শুভ্র পেছনে থেকে সব শোনতে পায়, রনি ঘুরে দাড়িয়ে দেখে শুভ্রকে, রনি শুভ্রকে এভাবে দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলো না ভয় পেয়ে যায় অনেক।
শুভ্র রেগে গিয়ে রনিকে মারতে শুরু করে, রনিকে এভাবে মারতে দেখে সবাই অবাক হয়ে গেছে। শুভ্র মা গিয়ে শুভ্রকে থামানো চেষ্টা করে।
—মা তুমি আমাকে বাঁধা দিয়ো না, রনি জানে অহনা কোথায়। ওরে বলতে বলো অহনা কোথায়। নয়তো ওর জীবন আজকে ই শেষ।
—কী বলিস তুই এগুলো রনি কোথায় অহনা বল।
রনি কোনো উওর দিচ্ছে না সকলের কথা শোনতোছে।
এটা দেখে শুভ্র রাগ চরম পরিমানের হয় আবার মারতে শুরু করে এক পর্যায়ে মার খেয়ে রনি সব বলে দেয়,
রনি বলতে শুরু করে আমাকে আর মারবেন মা আমি সব বলতেছি
—প্রথম যেদিন শোনতে পারি অহনার বিয়ে হয়ে গেছে তখন খুব কষ্ট পাই আমি এতোদিম ঠিক ছিলাম ভাবছিলাম যা হয়েছে সব আমার ভাগ্যের দোষ কিন্তু নাবিলা মেয়েটি আমার মনে বিষ ডেলেছে।
—এসব না বলে বল অহনা এখন কোথায়।তোদের আমি পরে দেখে নিচ্ছি।
— আপনার বাগান বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে যে জঙ্গলটা আছে ঐখানে অহনাকে নিয়ে গেছে। অহনাকে ঐখান থেকে মেরে পাশের নদীতে ফেলে দিতে পারে।
—তুই তো অহনাকে ভালোবাসিস তাহলে মরাতে বললি কেন।
—এটা নাবিলা বলেছে,আমাকে বুঝিয়েছে আমি ওর থেকে ভালো মেয়ে পাবো।
মা তুমি এই ছেলেকে পুলিশ এর হাতে দেও, আমি আসছি।
শুভ্র গাড়ি বের করে দ্রুত ড্রাইভ করতে লাগলো।
এদিকে
অহনার আম্মু পায়ে এসে পড়ে রনি।
—কাকিমা আমাকে বাচান আমার ভুল হয়ে গেছে।
—তুই আমাকে কখনো ডাকবি না। আমি তোর মতো ছেলেরক সাথে আমার কোনো সম্পর্ক থাকবে না। আমার মেয়েকে তুই মেরে ফেলতে বললি।
—কাকিমা আমি ইচ্ছে করে করিনি এই নাবিলা আমাকে করতে বলেছে। আমার মাথাটা ঘুরিয়ে দিয়েছে মেয়েটা।
মেঝেতে বেধে ফেলে রেখেছে। কয়েকটি ছেলে আছে সাথে নাবিলা।
নাবিলা শয়তানি হাসি দিয়ে বলতে শুরু করলো,
খুব ইচ্ছে ছিলোরে অহনা শুভ্রর বউ হওয়ার। আজ থেকে শেষ তোর সব ইচ্ছা। মরে উপরে গিয়ে দেখিস আমাকে আর শুভ্রকে। অনেক সুখে থাকবো আমরা।
নাবিলা অহনাকে মেঝে থেকে উঠিয়ে লাথি মারে এতে অহনা ছিটকে গিয়ে টেবিলের সাথে বাড়ি খায়। মাথায় অনেক টুকু কেটে যায়। রক্ত পরছে অহনার অবস্থা খুব ই খারাপ হয়েছে। অহনা রক্ত এভাবে ঝরছে দেখে অজ্ঞান হয়ে যায়।
—বাকি টাকাটা দিয়ে দিন, মেয়েটাকে মরে কাজ শেষ করে চলে যাই।
— এই নে। কেউ যেনো অস্তিত্ব ও খুজে না পায়।
দেখ অহনা শুভ্রকে ভালোবাসে তোর মরতে হলো।
হঠাৎ ই বিকট শব্দ হলো, দরজা ভেঙ্গে অনেকগুলো লোক রুমে ডুকলো, শুভ্রর হাতে একটা পিস্তল ছিলো সাথে নাবিলার পায়ে গুলি করে দেয়।
অহনাকে দেখে মেঝেতে পরে আছে, কপাল থেকে রক্ত পরতেছে এখনো,
এটা দেখে শুভ্র আরো কতক্ষন নাবিলাকে মারলো।
হঠাৎ মনে হলো রাগের বশে সব ভুলে গেলে চলবে না।
অহনা তো খারাপ অবস্থা হাসপাতালে নিতে হবে। অহনার এ অবস্থা দেখে শুভ্র মনে হচ্ছে দুনিয়ায়টা মনে হয় এখানে ই থমকে যাবে, বাধন খুলে কোলে তোলে নিলো।
শুভ্র পাথর মতো হয়ে গেছে, হঠাৎ রাসেল বললো,
—বস আমি দেখছি এদিকে, আপনি ভাবিকে নিয়ে হাসপাতালে যান। আমি বাসার সবাইকে বলে দিচ্ছি।
অহনাকে কোলে নিয়ে ই গাড়ি ড্রাইভ করে হাসপাতে আসলো। অহনাকে ইমারজেন্সিতে নেওয়া হয়েছে।
বাসার সবাই হাসপাতে চলে এসেছে। অহনার আম্মু তো কারো কথা ই শোনছে না। উনার কান্না কেউ ই থামাতে পারছে না।
বেশ কিছুক্ষন পর,
ডাক্তার বের হয়েছে দেখে দ্রুত শুভ্র এগিয়ে,
— অহনা কেমন আছে ডক্টর।
— টেনশনের কোনো কারন নাই উনি ভয় পেয়েছে এইজন্য অজ্ঞান হয়ে গেছে। মাথা কেটে গেছে তেমন মারাত্মক ক্ষতি হয়নি। ঔষুধ লিখে দিচ্ছি। পেশেন্টকে নিয়ে যেতে পারেন।
সবার মুখে হাসি ফুটলো অনেক্ক্ষণ পর,
সবাই কেবিনে ডুকলো, অহনা জোরে কেঁদে উঠলো। সবাই অহনাকে অভয় দিতে ব্যস্ত শুভ্র কেবিনের এক কোন দাড়িয়ে আছে এটা দেখে অহনা চোখের ইশারায় ডাকলো।
কিছুদিন পর,
অহনাকে বাসায় আনা হয়েছে। পনেরো দিন হয়ে গেছে। অহনা এখন পুরোপুরি সুস্থ। আজকে অনেক দিন পর শুভ্র অফিসে যাবে কিন্তু ঘুম থেকে উঠার নাম গন্ধ ও নেই।
তাই অহনা শুভ্র উপর এক গ্লাস পানি ডেলে দেয়। সাথে সাথে শুভ্র উঠে বসে পড়ে।
—কী করলে এটা।
—বেশ করেছি, এতো ডাকার পর ও উঠেন না কেনো।
—আমি ও এখন বেশ ই করবো।
এই বলে অহনাকে হ্যাচকা টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো কোনো কথা বলার আগে ই ঠোঁট দুটো আঁকড়ে ধরলো।
শুভ্র রেডি হচ্ছে অফিসে যাওয়ার জন্য, অহনা এসে পিছনে থেকে জরিয়ে ধরলো।
—কী হলো এতো রোমান্টিক ভাব কেনো জানেমান।
—আমাকে অফিসে নিয়ে যান, দেখবো আমি কোন মেয়ের সাথে কী করেন।
—সবাই জানে তোমার মতো পেতনী বউ আছে।
— কী আমি পেতনী।
—আচ্ছা রাগ করতে হবে না রেডি হয়ে নেও।
দুজনে ই রেডি হয়ে অফিসে গেলো।
শুভ্র কেবিনে ডুকে ই বললো আমি কিন্তু এখন তোমার বর না বস।
—আচ্ছা স্যার।
এটা বলে অহনা চলে যেতে লাগলো, অনেক দিন হলো অফিসের কারো সাথে কথা হয়নি আজকে কথা বলে আসি।
–এই দাড়াও। অহনা
— হে বলেন।
—এভাবে কথা বলছো কেনো ভুলে যাবে না আমি তোমার বস।
অহনা রেগে আগুন হয়ে বলে
—জ্বী স্যার বলুন।
শুভ্র টেনে কাছে এনে বলে।
—আজকে আমি তোমাকে ভালোবাসি শুভ্র বলো। আমার কাছে বাংলায় ভালোবাসি শব্দটি শোনতে অনেক ভালো লাগে।
— নাহ্ বলবো না, ছাড়ুন কেউ আসতে পারে।
— না বললে সবার সামনে লিপ কিস করবো। এতে আমার কোন সমস্যা হবে না।
—বলবো না।
–আচ্ছা তাহলে সবাইকে ডাকি।
— এই না না। কিছু টা লজ্জা পেয়ে বললো
আমি তোমাকে ভালোবাসি সাইকো আমার সাইকো বস।
—হুম তোমার জন্য আমি সাইকো বস। আর সবার জন্য ভালো। এই বলে বুকে জরিয়ে নিলাম।
এভাবে বুকে আগলে রাখবে সারাজীবন। ভালোবাসি অনেক শুভ্র।
সমাপ্ত।
[আসসালামু আলাইকুম। সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য। কমেন্ট করে জানিয়েন পুরো গল্প টা কেমন ছিলো। ভুল গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]