সৎ বাবা পর্ব-০২ এবং শেষ পর্ব

0
916

#সৎ_বাবা (দ্বিতীয় পর্ব)।

মা খালেক চাচাকেই বিয়ে করতে যাচ্ছেন, এটা নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই আমার মন ভীষণ খারাপ ছিলো। তবে মনে তখনো ক্ষীণ আশা, মা হয়তো আমার কথা চিন্তা করে হলেও শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্তটা থেকে ফিরে আসবেন।

মাকে আমার খুব বলতে ইচ্ছা করে “আর কিছুদিন কষ্ট করো মা, আরেকটু বড় হলেই আমি তোমাকে দেখে রাখব মা। তুমি আর আমি, সাথে বাবার সাথে কাটানো সুখ মুহূর্তগুলো, দেখ মা এই নিয়ে আমাদের সামনের জীবনটা খুব ভালো কেটে যাবে। তোমার কাছে জোর অনুরোধ মা, তুমি ঐ লোকটাকে বিয়ে করো না। তোমার সাথে ঐ লোকটাকে আমি কিছুতেই মানতে পারছি না, পারবোও না। আর বাবা হিসেবে মানাতো প্রশ্নই আসেনা । ভীষণ কষ্ট পাচ্ছি মা, ভীষণ রকমের।”

কিন্তু কোন এক অজানা কারণে মায়ের সাথে এই বিষয়ে আমার কথা বলতে ইচ্ছে করে না। সত‍্য বলতে কি, চাইলেও কথাগুলো বলতে পারিনি। আমি চৌদ্দ বছরের ক্লাস এইটে পড়ুয়া মেয়ে হলেও, আমার চব্বিশ বছরের পরিনত এই মন ঠিকই বুঝতে পারে আমার মা নতুন করে সংসার শুরু করার স্বপ্নে বিভোর।

আমার নানার বাড়ির লোকেরা আসন্ন এই বিয়েটাতে যেন আকাশে ভাসছে। মামারা হয়তো এখন থেকেই তাদের ভাবি দুলাভাইকে ভেঙ্গে খাবার পরিকল্পনায় বিভোর। উচ্চ পদস্হ সরকারি কর্মকর্তা খালেক সাহেবের হাত যে অনেক লম্বা সেটা আমরা এর আগে থানা পুলিশের সমস্যাটায় বুঝেছিলাম। থানার ওসি সাহেব তখন সারাক্ষণ খালেক সাহেবকে “স‍্যার” “স‍্যার” সম্বোধন করেছিল আর বাড়িওলার ঐ ছেলেটাকে দু ঘন্টার মধ‍্য হাজতে ঢুকানোর ব‍্যবস্হা করেছিলেন এই খালেক সাহেবই। তাইতো সবমিলিয়ে মামাদের পরিবার ভীষণ পরিবর্তিত, এমনকি ওরা সবাই এখন আমাকেও সমঝে চলে।

এক শুক্রবার সন্ধ্যায় খানিকটা অনাড়ম্বরভাবে কাজিপাড়ার নানির বাড়িতেই মায়ের সাথে খালেক সাহেবের বিয়ের আয়োজন করা হল। হয়তো পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া, বিয়ের বিষয়ে সবাই আমার সাথে যথাসম্ভব গোপনীয়তা বজায় রাখবে। সবাই তাই ই করলো। আমি অবশ‍্য সবকিছু বুঝেও স্বাভাবিক থাকার চেষ্টায়। চৌদ্দ বছরের বালিকার পরিনত মন কিন্তু সবই বুঝে যায়। আর তাইতো বাথরুম বা ছাদে একা একা শুধু মৃত বাবাকেই দোষারোপ করে যাই, অকালে হঠাৎ করে আমার বাবা চলে না গেলে আমাদের জীবনেতো এসব আসতো না।

মায়ের বিয়ের সন্ধ্যায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল আমার এক মামী আমাকে নিয়ে তার বাবার বাড়ি চলে যাবেন। সেই মামীর বাসা আমার নানীর বাসার কাছাকাছি, মিরপুর দশে। কিন্তু আমার মা এতে শক্ত বাধা দিলেন, তার কথা অর্ষাকে অবশ‍্যই অনুষ্ঠানে থাকতে হবে, খালেক চাচারও নাকি একই অভিমত।

মা বাসাতেই আজ বিয়ের কনে সাজবেন, আমাদের কাছের কিছু আত্মীয় স্বজন এই সাজ সজ্জা আর বিয়ের জামা কাপড় নিয়ে শেষ মুহূর্তের ভীষণ ব‍্যস্ততায়। মা বিকেলের দিকে আমাকে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে নীচু স্বরে বললেন “মা, বড় হলে বুঝবে আমাদের মেয়েদের জীবন কতোটা চ‍্যালেঞ্জিং। প্রতি পদে পদে আমাদের শুধুই বাধা আর বিপদ। দেখো আমার নিজের আপন ভাইদের সাথেই আমি পেরে উঠতে পারিনা আর সেখানে বাইরে হাজারো পুরুষরূপী হায়েনা। আমি বুঝতে পারি, খালেককে তোমার পছন্দ নয় অর্ষা। কিন্তু বিশ্বাস করো মা, বাইরে থেকে লোকটা দেখতে যতোটাই কদাকর, সে আসলে ততোটাই ভালো। অন্ততপক্ষে তোমার আমার জন‍্য সে সত‍্যই আশির্বাদ। আর আজকের এই বিশেষ দিনে তোমার কাছে আমার একটাই অনুরোধ, খালেককে বাবা হিসেবে মেনে নাও। জীবনকে অহেতুক জটিল করার কোন মানে নেই, অর্ষা। বাস্তবতাকে মেনেই আমাদের চলতে হবে। যদিও তোমার বাবাকে শেষ কয়েকদিন ধরে আমার খুব মনে পড়ছে। আমরা সত‍্যই দূর্ভাগা।” শেষ কথাটা বলে মা আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না, আমিও মায়ের সাথে অঝোর কান্নায়। কাকতালীয়ভাবে বাইরে তখন মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলো। প্রকৃতিও যেন আমাদের কান্নার সাথে আজ মিলেমিশে একাকার। পুরো পরিবেশে নিজেকে অনেক হালকা বলেই মনে হল। মাকে সে বিকেলে কথা দিয়েছিলাম, খালেক চাচাই আজ থেকে আমার বাবা।

মা সে সন্ধ্যায় বিয়ের কনের সাজ নিলেন। আমার বাবা বিয়েতে মাকে যেভাবে সাজানোর ব‍্যবস্হা করলেন, ঠিক একই ভাবে আমার জন‍্যও সেই ব‍্যবস্হা। সত‍্য বলতে কি, সেদিন থেকেই আমার জোর উপলব্ধি। বাবা কখনোই আমার কাছ থেকে জোর করে ভালোবাসা আদায় করার চেষ্টা করেননি। আজো পযর্ন্ত বাবা আমাকে কাজ আর দ্বায়িত্ব পালনের মাধ‍্যমেই ভালোবাসা প্রকাশ করে যাচ্ছেন। বাবার প্রতি প্রথম থেকেই থাকা আমার খারাপ ধারণাগুলো যে কল্পনাপ্রসূত আর অমূলক, তা বুঝতে আমার খুব বেশি সময় লাগেনি। মায়ের সাথে বাবার আজিমপুর কলোনির বাসাটাতে মায়ের সেই বিয়ের রাতেই আমরা এসেছিলাম। আজ থেকে প্রায় পনের বছর আগের সে রাতের কথা আজো স্পষ্ট মনে আছে। এতো বছরে আমাদের পরিবারে অনেক পরিবর্তন এলেও, মায়ের সাথে বাবার বাসায় আসার সে স্মৃতিটা এখনো জ্বলজ্বলে।

আমার মায়ের শাশুড়ি মানে বাবার মা, ভদ্রমহিলার বয়স তখন ষাটের আশেপাশে। বেশ শক্ত সামর্থ্যের এই মহিলা আমাকে প্রথম দিনেই আপন করে নিলেন। বাসায় আসতেই সদ‍্য বিয়ে করা ছেলের বউয়ের সাথে বউয়ের কন‍্যাকেও সাদরে বরন করার কথা এখনো মনে আছে “আয় বোন আয়, তোর কথা খালেকের কাছে অনেক শুনেছি। আমিতো তোরে দেখার জন‍্যই অপেক্ষায়। আমার একজন সঙ্গী পেলাম, আজ থেকে তুই আমার সই।”

আপনাদের হলফ করে বলছি, আমার বাবা আর দাদী এই দুজনের আন্তরিকতা আর ভালোবাসায় অল্পদিনের মধ‍্যেই আমি আমার দ্বিতীয় জীবন পেলাম। দাদী এখন আমার সার্বক্ষণিক সঙ্গী, এক সাথে ঘুমাই। আমার জমে থাকা হাজারো গল্প শুনেন রাত জেগে, আর আমিও তার সব কাহিনীর মনোযোগী শ্রোতা। বাবা আমার সাথে সবসময়ই ভদ্রতার সম্পর্কে, আর ভীষণ দ্বায়িত্ববান। কখনো অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেননি।আমার শুধু এটুকুই মনে পড়ে খুব কম সময়ই আমার বাবার কাছে চাইতে হয়েছে। নিজে থেকেই আমার সবকিছুর দেখভাল করে গেছেন, হয়তো মায়ের প্রতি বাবার থাকা ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই তার এসব করা।

এরপরের গল্পটা খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। বাবা মায়ের সুখের সংসারে আমার আবারো নিজেকে রাজকন‍্যা হিসেবে আবিষ্কার করা। বাবা মায়ের ভালোবাসার বন্ধনকে দৃঢ় করতে পরের বছর আমার একমাত্র ভাই “রোহান” এর জন্ম, পুরো পরিবারকে সুখের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে। সত‍্য বলতে কি, মায়ের প্রেগন‍্যান্সির পুরো সময়টাতে আমি মা কে দেখভালের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। নবজাতকের জন্মে সবচাইতে খুশি হয়েছিলাম সম্ভবত আমি নিজেই। আমার জীবনে একজন আপনজন আসছে, আমার ভাই। যে কোন ভালো গল্পকার “অতঃপর তাহারা সুখে শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিলো বলিয়া” এই গল্পটি এখানেই শেষ করে দিতে পারতো, পাঠকও একটা সুখের অনুভূতির রেশ নিয়ে যে যার কাজে মনোযোগ দিতে পারতো।

কিন্তু বাস্তবে আমার জীবনটা আসলেই খুব জটিল, আমি নিজেকে একই সাথে ভীষণ সৌভাগ্যবান ও দূর্ভাগা বলেই মনে করি।

আমার ভাই “রোহান”। ওর নামটা কিন্তু আমার নিজের দেওয়া। আমার স্কুল কলেজের পড়াশোনার পাশাপাশি রোহানই যেন আমার সবকিছু। চাকুরী জীবি মা রোহানকে আমার আর দাদীর কাছে দিয়ে নির্ভার। আর দাদী নিজেও দুই নাতি নাতনীকে নিয়ে ভীষণ ব‍্যস্ততায়। বাবা, মা, রোহান আর দাদী এদেরকে নিয়ে আমার জীবনের সবচাইতে সুন্দর সময় কাটতে লাগলো, একেবারে নাটক সিনেমার মতো।

বরাবরই আমার খুব ইচ্ছে, মেডিক্যাল পড়বো। ডাক্তার হবো। কিন্তু দূর্ভাগ‍্যক্রমে শত চেষ্টা সত্বেও সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোর একটাতেও ভর্তি হতে পারলাম না। ভীষণ মন খারাপ করা এই আমাকে বাবা বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করালেন, সম্পূর্ণ নিজের উদ‍্যোগে। মা কিন্তু চায়নি এতো টাকা খরচ করে আমি প্রাইভেট মেডিক্যালে পড়ি। পরের বছর আবারো মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা দেই, এটাই মায়ের চাওয়া ছিলো। কিন্তু বাবার একটাই কথা সময় ও মানুষের ইচ্ছা দুটোই টাকার চাইতে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর কলেজটি মানসম্পন্ন বলেই বাবা আমাকে ঢাকার বাইরে পাঠালেন। সব মিলিয়ে বাবার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।

মাত্রই মেডিক্যাল কলেজের ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি, রোহানের বয়স মাত্র চার। ঠিক এ সময়ে আমাদের পরিবারে আরেকটা বড় ঝড় এলো। পাঠকদের অনেকেই হয়তো কথাটা শুনে হোচট খাবেন, আমি আর রোহান হঠাৎ করেই একদিন “মা” হারা হয়ে গেলাম। মায়ের অপ্রত‍্যাশিত হার্ট এটাক মাকে আর দ্বিতীয় সুযোগ দেয়নি। একটা সুন্দর সুখী পরিবারে আবারো বড় ধরনের ছন্দপতন হলো। নিজের বাবাকে অল্প বয়সে হারিয়ে মায়ের মাধ‍্যমে পাওয়া আরেকজন ততোদিনে আমার বাবা। ছোট্ট পুতুলের মতো একটা ভাই, নির্ভরতার দাদী আর পছন্দের পরিবেশে মেডিক্যাল পড়ার সুযোগ, সবমিলিয়ে পৃথিবীর সবচাইতে সুখী মেয়েদের একজন এই আমি, আবারো দুঃখের অথৈ সাগরে।

মাকে আমার বাবা যে কি পরিমাণ ভালোবাসতো তার চাক্ষুস স্বাক্ষী এই আমি। মায়ের অকস্মাৎ এই মৃত্যুটাতে বাবা যেন পাথর বনে গেলেন। তবে আমাদের পরিবারের বট বৃক্ষ, আমার দাদী ছোট্ট রোহানকে এ সময় যক্ষের ধনের মতো আকড়ে ধরে রাখলেন। সার্বক্ষণিক কাজের লোকের সহায়তায়, দাদী রোহানের দেখভাল করে গেলেন। আমার প্রতি বাবার কড়া নির্দেশ, পড়াশোনায় যেন কোন অবস্হাতেই অমনোযোগী না হই। জীবনের যে কোন মুহূর্তে কঠিন পরিস্থিতি আসতে পারে, আর তা সঠিকভাবে মোকাবেলা করার শিক্ষাটা আমি সে সময় বাবার কাছ থেকেই পেয়েছিলাম। মেডিক্যালের কঠিন পড়াশোনার সময় সবসময় অপেক্ষা করতাম, কখন ছুটি হবে। পরিবারের সাথে সময় কাটাবো, বিশেষ করে রোহানের জন‍্য প্রায়ই আমার অস্হিরতা। সহপাঠীদের সবার জানা।

জীবনে এতো কিছু ঘটে যাওয়ার পরও একেবারে সময় মতো ডাক্তারি পাশ করলাম। আর এ জন‍্য সৃষ্টি কর্তার পাশাপাশি বাবার কাছে আমি সবসময় কৃতজ্ঞ। পুরো মেডিক্যালের পড়াশোনার সময়টুকুতে বাবা আমাকে সব ধরনের সাপোর্ট দিয়ে গেছেন, পড়াশোনা ছাড়া অন‍্য কোন বিষয়ে আমাকে কখনো চিন্তা করতে হয়নি।

মা মারা যাওয়ার পর থেকে বাবাকে কতো মানুষ যে আবারো বিয়ে করার ইন্ধন দিয়েছে, তার হিসাব নেই। বিশেষ করে ছোট্ট রোহানকে দেখভালের ছুতো দেখিয়ে, চাপ দেওয়া। বাবা অবশ‍্য কখনোই এসবকে প্রশ্রয় দেননি। বরঞ্চ দাদির কাছ থেকে শোনা, বাবা ঐ সব লোকদেরকে বলতেন আর কয়েকদিন পরেতো আমি নিজের মেয়েকেই বিয়ে দিবো, এখন আমার আবার বিয়ে কি?

বাবা তার দেওয়া কথা রাখলেন, আমার ইন্টার্নী শুরুর আগে আগে ঘটা করে আমার মেডিক্যাল কলেজের। রিডিং পার্টনার, আমার পাঁচ বছরের ভালোবাসার। মানুষ জামিলের সাথে ঘটা করে বিয়ে দিলেন। এরপর থেকে আমাদেরকে নিয়েই বাবার ব‍্যস্ত জীবন।

আচ্ছা কেউ কি বলবেন সৎ (ভালো) যে বাবা – এটার এক কথায় প্রকাশ কি “সৎবাবা”। যদি এটা সত‍্যি না ও হয় আমার জীবনে কিন্তু কথাটা সর্বৈব সত‍্য। আগাগোড়া বাবা আমার জীবনে পুরোপুরি সৎ একজন। আমাকে ডাক্তার বানিয়েই বাবা ক্ষ‍্যান্ত দেননি। বিয়ের পর আমার আর জামিলের পোস্ট গ্র‍্যাজুয়েট ট্রেনিং, আলাদা সংসার করার যাবতীয় সহায়তা করেছেন। রোহান অবশ‍্য মা মারা যাওয়ার পর দাদীই ওর কাছে সব। গত বছর মারা যাওয়ার আগ পযর্ন্ত দাদীই রোহানের সবকিছু দেখে গেছেন। ক্লাস টেন পড়ুয়া রোহান অবশ‍্য বয়সের চাইতে অনেক পরিনত একজন। নিজেকে নিজের দেখভাল শিখে গেছে আরো অনেক বছর আগ থেকেই। সুযোগ পেলে আমাকেও নানান বিষয়ে উপদেশ দেয়।

মা মারা যাওয়ার দশ বছর পরে এসে মাঝে মধ‍্যে নিজেকে ভীষণ স্বার্থপর বলেই মনে হয়। বাবা রিটায়ারমেন্টে গিয়েছেন বছর দুয়েক হতে চললো, তার সময় কাটে মূলত রোহানকে নিয়েই। আমি এখন নিজের সংসার আর ডাক্তারি পেশা নিয়েই ব‍্যস্ত। সবচাইতে বড় কথা তিন বছরের কন‍্যা আরিশাকে নিয়েই হিমশিম খাওয়ার মত অবস্থা। বাবা আর রোহান প্রায়ই আমার বাসায় আসলেও আমি ব‍্যস্ততার জন‍্য ওদের খুব একটা খোঁজ নিতে পারি না। আমি নিশ্চিত এতে আমার ভাই বা বাবার মনে কোন কষ্ট নেই। কারণ ওরা জানে ওদের প্রতি থাকা আমার ভালোবাসার মাত্রাটা কতো। ওরা দুজনেই আমাকে সবসময় ভীষণ সুখী দেখতে চায়, মা মৃত্যুর আগে শেষ মুহূর্তে বাবার কাছে নাকি এটাই চেয়ে গিয়েছিলেন। আমার ভাই রোহানেরও কথাটা জানা।

(শেষ।)