হঠাৎ তুমি এলে পর্ব-১১

0
587

#হঠাৎ_তুমি_এলে
#পর্ব_১১
#Sorna_Talukder(বৃন্দা)

প্রমা ভেংচি কাটলো।এদিকে উৎস এসব কিছুই বুঝতে পারছে না।তাই প্রমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,
— “আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।সবাই বুঝিয়ে বলো কুইক!”
প্রমা যথাসম্ভব নিজের হাসি চেপে রেখে বলতে থাকে,
— “যার সঙ্গে ঘটনাটা ঘটেছে তাকেই নাহয় জিজ্ঞেস কর।”
উৎস খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে প্রমা কার কথা বলছে,তাই উৎস সোজা সামনে বসে থাকা শিহাবের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো।এতে অনেকটা হকচকিয়ে যায় শিহাব।ঢোক গিলে বলা শুরু করে,
— “ওভাবে তাকাইস না ভাই!এখানে গিয়ে লাগে।”
নিজের বুকের বাম পাশে হাত রেখে কথাটি বলে উঠে।প্রমা আর আরিফের বর্তমান অবস্থা হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি খাওয়ার মতো।উৎস জোড়ে জোড়ে শ্বাস ফেলে রাগ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে।উৎস হাতের আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে প্রমা আর আরিফকে যাতে ওরা হাসি থামায়।এবার প্রমা আর আরিফ হাসি থামিয়ে সিরিয়াস হয়ে যায়। শিহাব মুখ কাচুমাচু করে বলতে শুরু করে,
— “আমি মজা করছি বুঝছোস?তাইলে এখন বলতাছি শোন!”
শিহাব শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব বললো।উৎস ক্ষানিকটা গলা খাঁকারি দিয়ে শিহাবকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,
— “ভালোই হয়েছে!তোর মতো ইডিয়েটের জন্য অন্তত কেউ এলো।”
শিহাব বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টিয়ে বলতে লাগলো,
— “সব তোর বইনের জন্য হয়েছে।তোর বইন এর জন্যই মনে হয় ঐ গুন্ডি মাইয়া এই ভার্সিটিতে এসেছে।যেমন তোর বইন তেমন তার বান্ধবী!”
উৎস দুই আঙ্গুল কপালে স্লাইড করে বলতে থাকে,
— “তোকে আর কতবার বলবো যে সামু আমার বোন নয়!”
শিহাব ভয়ে ঢোক গিলে বলতে থাকে,
— “সরি মামা ভুল হইয়া গেছে।আর কমু না।”
উৎস শিহাবকে কিছু বলার আগেই শিহাব দৌড়ে চলে যায়।
_________________________
— “ওফ মাগো আবার কে ধাক্কা দিল? কোমড়টা বোধহয় ভেঙ্গেই গেল।”
কোমড়ে হাত দিয়ে মাটিতে বসে আছে মিহু।রুহি গিয়ে মিহুকে দাড় করায়।শিহাব হা করে তাকিয়ে আছে মিহুর দিকে।মিহু কিছু একটা ভেবে শয়তানি হাসি দিল।তারপর ব্যাগ থেকে মরিচের গুঁড়া এনে সোজা শিহাবের মুখে ঢুকিয়ে দিল।
____________________________
— “কী হলো ব্যাপারটা?আপনি আমাকে এখানে মানে এই হলরুমে কেন নিয়ে এলেন?”
এতক্ষন যাবত এই প্রশ্নটাই করছে সামু।সামু রুহি আর মিহুর সাথেই হাঁটছিল তখন হঠাৎ করেই উৎস কোথা থেকে এসে ওর হাত ধরে ওকে টেনে নিয়ে আসে এখানে।উৎস হলরুমে এসে সামুকে এক যায়গায় দাড় করিয়ে বাকি স্টুডেন্টদের ইশারা করে হলরুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য। স্টুডেন্টরা উৎসর ইশারা মোতাবেক চলে যায় হলরুম থেকে।
উৎস সামুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলতে থাকে,
— “কালকে গানে আমার সাথে পারফর্ম করবে তুমি।সো বি রেডি!”
সামু অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।উৎস ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে উঠে,
— “এভাবে তাকিয়ে কি দেখছো?”
সামু কিছু না বলে উৎসর দিকে ধীর পায়ে এগিয়ে আসছে।এসব দেখে উৎস আমতা আমতা করে বলে উঠে,
— “এই মেয়ে এভাবে এগিয়ে আসছো কেন?”
সামু মুচকি হেসে ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে উৎসর দিকে।সামু বলতে লাগে,
— “একটা কথা বলার ছিল!”
উৎস সামুর দিকে রাগী দৃষ্টিতে নিক্ষেপ করে বলে উঠে,
— “কথা বলবার থাকলে বলে দাও।এভাবে এগিয়ে আসার কি আছে?”
সামু কিছু না বলে উৎসর দিকে তাকিয়ে একটা শয়তানি হাসি দিল।এই হাসির পেছনের কারণটা কিছুতেই বের করতে পারলো না উৎস।সামু একেবারে উৎসর কাছাকাছি চলে এসেছে।সামু উৎসর কানের কাছে মুখ এনে বলতে লাগলো,
— “হুম বলবো তো।এখন আমি যে কথাটা বলবো সেটা হলো……”
উৎস উৎসক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সামুর দিকে।সামুর বলা কথাটা শোনার জন্য অপেক্ষা করছে।তখনি সামু চিৎকার করে বলে উঠে,
— “আপনার সঙ্গে গান গাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসছে না।”
সামু দূরে সরে দাঁড়ালো উৎসর থেকে।উৎস কানে হাত চেপে ধরেছে।উৎসর রাগী ফেস দেখে অনেক হাসি পাচ্ছে সামুর।উৎস রাগী চোখে সামুর দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,
— “ইউ ফুল!আমার কানের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছো তুমি।”
সামু পিছাতে পিছাতে বলে উঠে,
— “বেশ করেছি! আপনার সঙ্গে গান গাইবো আমি?জীবনেও না!বাই বাই।”
সামু উৎসর হাত থেকে বাঁচার জন্য একপ্রকার দৌড়ে চলে গেল।উৎস নিজেই নিজেকে বলতে থাকে,
— “তোমাকে তো আমি বাড়িতে গিয়ে দেখে নেবো।বাট সামু যখন আমার কাছে ছিল তখন হার্টবিট এতো বেড়ে গেছিল কেন? আশ্চর্য!”
________________________
— “আহ!এখন একটু শান্তি লাগতাছে।তোকে অনেক ধন্যবাদ রে প্রমা।”
প্রমা নিজের চশমাটা ঠিক করে গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠে,
— “মিহু কোথায়?”
শিহাব কোলড্রিংক্স খেতে খেতে বলে উঠে,
— “তখন তো দৌড়ে পালিয়েছিল।এখন জানিনা কোথায় আছে!”
প্রমা চেয়ার থেকে উঠে ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে যাবে এমন সময় উৎস আসে।উৎস এসে দেখে শিহাবের চোখ-মুখ লাল হয়ে আছে‌।উৎস একটা চেয়ার টেনে বসে পড়ে। তারপর শিহাবকে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকে,
— “তোর চোখ মুখের এমন অবস্থা কেন?কি হয়েছে সত্যি করে বল!”
চলবে……..