অবেলায় ভালোবাসি পর্ব-০৯

0
418

#অবেলায়_ভালোবাসি
#লেখনিতে_সাবরিন_জাহান
#পর্ব_০৯

পরের দিন ঠিক দ্বিতীয় ক্লাস শুরুর পর এসে উপস্থিত হলো আয়ুশী,সীমা আর ইভা।রাতে দেরি করে ঘুমানোর কারণে, ক্লান্ত থাকার কারণে সকালে উঠতে পারেনি বিধায় একটা ক্লাস মিস গেলো ওদের।ওদের দেখে আয়ান ভ্রু কুঁচকালো।আজকে ওরা আসবে এক্সপেক্ট করেনি।তাও কিছু না বলে আসতে দিলো।ক্লাস ওরা মনোযোগ দিয়েই করলো।এমনিতে ওরা যে রকমই হোক,স্টুডেন্ট হিসেবে যথেষ্ট ভালো।
ক্লাসের ব্রেক টাইমে ক্যান্টিনে বসে ছিল ওরা।আয়ুশী এখন আগের থেকে বেশ সুস্থ!নিজেদের মাঝে টুকটাক কথা বলছিল তখনই আয়ান এসে ওদের সাথে বসলো।ব্যাপারটায় বেশ ভরকে গেলো ওরা।আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দেখলো প্রায় অনেকেই তাকিয়ে আছে।যদিও এটা স্বাভাবিক,এভাবে কোনো স্যার স্টুডেন্টদের সাথে বসলো কৌতূহল তো জাগবেই!

“আজকে আসলে কেনো তোমরা?”

“স্যার,ক্লাস করতে!”(সীমা)

“এমনিতে তো সব ক্লাস করো না,আর কালকে এত দৌড় ঝাপের পর আসা উচিত হয় নি!”

সীমা বির বির করে বললো,”বললেই হয় আয়ুশীকে আনা উচিত হয়নি!আমরা বুঝি না নাকি!”

কথাটা আয়ান শুনতে না পেলেও আয়ুশী শুনেছে।সাথে সাথেই পা দিয়ে মৃদু ধাক্কা মারলো ওর পায়ে!

“কিছু বললে?”

সীমা মেকি হেসে বললো,”ওই তো,আসলে….ইয়ে মানে স্যার আপনিও তো এসেছেন!আপনি আমাদের থেকেও বেশি কষ্ট করেছেন।আপনি আসতে পারলে আমরা কেন পারবো না?”

আয়ান আর কিছু না বলে আয়ুশীকে উদ্দেশ্য করে বললো,”কালকে স্টোর রুমে কি করছিলে?”

সীমা ,ইভা এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতে ভুলেই গিয়েছিল।তাই ওরাও জিজ্ঞাসাশুচক দৃষ্টিতে তাকালো।আয়ুশী একবার ওদের দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করলো।

গতকালকে….

সকল অপ্রয়োজনীয় জিনিস স্টোর রুমে রাখার দায়িত্ব পড়লো আয়ুশীর।ওর এখন আফসোস হচ্ছে,কেন যে সেধে অনুষ্ঠানে সহকারী হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব নিলো,এই ভেবে।
স্টোর রুমে কোনো জানালা নেই।একমাত্র দরজা দিয়ে আলো প্রবেশ করে।জিনিস পত্র ওখানে রাখতে যাবে ,কিন্তু নিজের পায়ে পা বেজে নিজেই পড়ে গেলো।ফলাফল হিসেবে সব জিনিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে গেলো।

“আরে ভাই,এমনি শান্তি নাই!তার উপর এত কাজ!উফ!”

বলেই বিরক্ত নিয়ে সব উঠাতে লাগলো।এদিকে তখন ভার্সিটির এক কর্মচারী স্টোর রুমের দরজা খোলা দেখে জলদি এসে আটকে দিলো।নাহলে বকা খাবে ওর!অন্যদিকে হুট করে চারপাশ অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় আয়ুশীর খেয়াল হলো।বন্ধ দরজার দিকে তাকিয়ে হেসে বললো,”কুল আয়ু,তোর কাছে ফোন আছে!ভয় পাওয়ার কিছু নেই!”

তাই আর দরজা ধাক্কাতে গেলো না।সব গুছিয়ে দরজার কাছে একটু ধাক্কা দিলো,কিন্তু না বাইরে থেকে বন্ধ!বিরক্ত হয়ে ব্যাগ থেকে ফোন বের করলো সাইড ব্যাগ হওয়ায় বাড়তি ঝামেলা নেই।খুলে রাখাও লাগে না।সীমার নাম্বারে কল দিবে ,নাম্বার বের করে ডায়াল লিস্টে ডায়াল করতেই ফোন অন্ধকার হয়ে গেলো,সাথে আয়ুশীর মুখও।
“ওহ শীট!ফোনের কি হলো?”

বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও ফোন অন করতে পারলো না।একবার ফোন তো একবার দরজা দেখছে।কুল কিনারা না পেয়ে দৌড়ে গিয়ে দরজা ধাক্কাতে লাগলো।চিৎকার করে ডাকতে লাগলো।কিন্তু কেউ আসলো না ।আয়ুশীর এখন নিজের উপর ভীষণ রাগ লাগছে।তখন ফোন আছে বলে ওভাবে বসে না থাকলে এখন এই অবস্থা হতো না।তাও হাল ছাড়লো না। জোরে জোরে ধাক্কাতে লাগলো।ততক্ষণে অনেকে চলেও গিয়েছে।আর স্টোর রুম কর্ণারে৯ হওয়ায় কেউ সহজে আসে না।এক সময় ক্লান্ত হয়ে গেলো।খোলা জানালা না থাকায় ঘরে আলোর ছিটে ফোঁটাও নেই।আয়ুশীর দম বন্ধ লাগছে।ই’দু’রের আওয়াজ , আ’র’শো’লা ,অন্ধকার সব মিলিয়ে ওর আরও অবস্থা খারাপ।এক কোণায় গিয়ে হাঁটুতে মুখ গুজে বসে রইলো।ভয় হচ্ছে ওর,চোখ বন্ধ হয়ে আসছে।মাথা ঘুরছে।তারপর আর কিছু মনে নেই ওর!”

__________________________________

সীমা আড়চোখে তাকিয়ে আছে।ভয়ে ঢোক গিললো। আয়ান বেশ ধমকে বললো,”তুমি এতটা কেয়ারলেস কি করে হতে পারো?ফোন আছে বলে তুমি সাথে সাথে ডাকাডাকি করবে না?তখন করলে এত কিছু হতো না?আর ফোনে চার্জ নেই এইটাও কি জানতে না নাকি?”

“ফোনে তো ফুল চার্জ ছিল,বাট..শেষ কিভাবে হলো!”

ভাবতে ভাবতেই ওর মনে পড়লো অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ফোন সীমার কাছে ছিল।ভিডিও থেকে শুরু করে ছবি তোলা,চ্যাটিং করা,ফেসবুকিং সব সীমা করেছে।আর যখন ফোন দিয়েছে চার্জ শেষ হওয়ার জন্যই দিয়েছে।সব ক্লিয়ার হতেই সীমার দিকে তাকালো,সীমা মেকি হাসি দিল।

“তোকে আমি…”

আয়ান বুঝতে পেরে বললো,”ব্যাস, যাই হোক নিজের খেয়াল রাখবে এখন!কালকে মেডিসিন নিয়েছো?”

আয়ুশী উপর নিচে মাথা নাড়ল। আয়ান কিছু না বলে উঠে গেলো।ওরা ওর যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো।তখনই ইভা বলে উঠলো,”প্রেমে পড়েছে স্যার প্রেমে পড়েছে!”

আয়ুশী ভ্রু কুঁচকে বললো,”কার প্রেমে ?উনার গার্লফ্রেন্ড হয়ে গেছে?”

সীমা ওর মাথায় টোকা দিয়ে বললো,”আরে ও বুঝাতে চাইছে,স্যার ইজ ইন লাভ উইথ ইউ!”

“ধুর! ফা’ল’তু কথা!”

“মোটেই না!তুই তো ছিলি না!আমরা দেখেছি স্যার তোর জন্য কতটা ডেসপারেট হয়ে ছিল!”(ইভা)

“যখন স্যার কে বললাম তোকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না,তখন উনি আমাদের থেকেও চিন্তিত হয়ে গিয়েছিলেন!”(সীমা)

“একজন টিচারের দায়িত্ব শুধু ভার্সিটি অব্দি!কিন্তু এর বাইরেও অনেক কিছু করেছেন!”(ইভা)

“তোর জ্ঞান না ফিরা অব্দি তোর হাত ছাড়েনি!এমনকি তুই যখন অজ্ঞান ছিলি উনার চোখে মুখে কেমন অস্থিরতা দেখেছি!আচ্ছা আমার কথা ছাড়,ইভা..ইভা তো কখনো এসব বলে না!ওর কথাও বিশ্বাস হচ্ছে না তোর?”(সীমা

আয়ুশী নিরুত্তর!

“আচ্ছা,তুই নিজেই ভাব!তারপর বলিস!”

আয়ুশী ভাবলো,রিকশায় ওকে আগলে রাখা… কোলে করে বাসা অব্দি দেয়া সবটা…মনে একরাশ ভালো লাগা ছেয়ে গেল।মুচকি হাসি ফুটলো ওর! তা দেখে সীমা, ইভাও হাসলো!

__________________________________
মুখে পানির ছিটা দিয়েই আয়নার দিকে তাকালো আয়ান!ওর মস্তিষ্কে জুড়ে এখন আয়ুশী বিরাজমান!চুল খামচে ধরলো ও!ওর সাথে কি হচ্ছে ও বুঝছে না।গতকাল যখন শুনেছে আয়ুশীকে পাওয়া যাচ্ছে না,তখন ওর অস্থিরতা ও টের পেয়েছে।আয়ুশীকে যখন অজ্ঞান দেখেছিল,তখন কিছু একটা হারিয়ে ফেলার ভয় হয়েছে ওর। ও এখনও বুঝতে পারছে না,মাত্র কয়েকদিনের আলাপে কারো সাথে এতটা জড়িয়ে পড়া যায়?না,এটা শুধু ওর দায়িত্ব!এই ভেবে ভাবনা সব দূরে ঠেলে দিলো!ভার্সিটি থেকে এসেছে একটু আগে!ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় গেলো। রেলিংয়ের কাছে দাঁড়িয়ে ফোন দিল একজনকে।বেশ কিছুক্ষণ পর রিসিভ হলো!

“হ্যাল্লো?”(ওই পাশের ব্যাক্তি!)

“কেমন আছো ইহরা!”

“এইতো ভালো,তুমি?”

“ভালো নেই ,আমি একদম ভালো নেই!”,কথাগুলো বলতে চেয়েও বললো না। ও চায় না ইইরাকে এসব বলে ওকে টেনশন দিতে!

“ভালো!দেশে কবে ফিরছো?”

ওপাশে থেকে উত্তর এলো না।বেশ কিছুক্ষণ পর দীর্ঘশ্বাস ভেসে আসলো!

“পরশু!”

আয়ান চমকে উঠলো!

“এত জলদি?”

“মানে?”

“আই মিন,তুমি তো কখনো বলো নি!”

“ভেবেছিলাম সারপ্রাইজ দিবো,কিন্তু পরে ভাবলাম একজনকে অন্তত জানিয়ে রাখা যাক।সারপ্রাইজটা খালামণিকেই দিবো!তুমি আপাতত আউট প্ল্যান থেকে!”

আয়ান মৃদু হাসলো!

“জো হুকুম রানী সাহেবা!”

ওপাশ থেকে উত্তর এলো না!

“ইহরা?”

“হুমম!”

“কি ব্যাপার এর চুপচাপ?”

ইহরা চট জলদি বলে উঠলো,”আমার কিছু কাজ আছে , পরে ফোন দিবো!”,বলেই কেঁ’টে দিলো।

আয়ান দীর্ঘশ্বাস নিলো। ও জানে পরে কোনো ফোন আসবে না।যদিও এতে ওর কখনো খারাপ লাগেনি!আয়ানের নিজেকে সব চেয়ে অসহায় লাগছে। ও আসলে চাইছে কি?

__________________________________

এরপর বেশ কিছুদিন কেঁ’টে গেলো।আজ ভার্সিটি অফ!আয়ুশী শাড়ি পরেছে আজ!হালকা বেগুনি শাড়ি তার সাথে ম্যাচিং জুয়েলারিস!কোনো অনুষ্ঠান উপলক্ষে নয়! আয়ানকে মনের কথা জানাতে এই উদ্বেগ!যদিও ওর ভীষণ লজ্জা করছে।কিন্তু সীমা তার মহামূল্যবান ভাষণ দিয়ে ওকে রাজি করিয়েছে।দুপুর টাইম!ভার্সিটির এক ফাঁকা ক্লাসে এখনওরা। এখানে ওরা ছাড়া কেউ নেই!

“সব রেডি তো করলাম!কিন্তু উনি এখানে আসবে কেমনে?”

“তুই ফোন কর!”(সীমা)

“হ্যাঁ,আমি বললেই তো এসে পড়বে!”

“আরে তুই কল দিয়ে বল স্যার হেল্প!”(সীমা)

“তারপর!”

“তুই আগে এত টুকু বল!”(সীমা!)

আয়ুশী বেশ ভয়ে ভয়ে কল দিল।প্রথম রিং এ ধরলো না কেউ!আবার দিতেই ধরলো।ভয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না ওর।ওই পাশে আয়ান হ্যাল্লো হ্যাল্লো করছে।অনেক কষ্টেই বললো,”স্যার হেল্প!”

বলার সাথে সাথেই সীমা ফোন নিয়ে কেঁ’টে দিলো!

“আরে এটা কি করলি?”

“এত টুকুই যথেষ্ট !এবার দেখিস স্যার ছুটে আসবে তোর জন্য!”

“অ্যাড্রেস না জানলে আসবে কিভাবে?”

“আগের বার যেভাবে পেয়েছে!”

“আমার মনে হচ্ছে,এগুলো ঠিক হচ্ছে না সীমা!”

তখনই ওর ফোন বেজে উঠলো।সীমা ফোন বন্ধ করে দিল।

“কি করছিস টা কি?”

“চুপ থাক!”

কিছুক্ষণ বাদে ইভার ফোন বেজে উঠলো!

“আয়ু তোর মা!”(ইভা)

“হ্যাঁ মা বল!”

“তোর ফোন আমি আছার মে’রে ভাঙবো আজ!”

আয়ুশী ভরকে গেল। লাউডে দিলো ফোন!

“ফোন কি বন্ধ করে রাখতে কিনে দিছি তোকে?”

পাশ থেকে বাবা বললো,”আহ,এমন করছো কেনো?”

“তো কেমন করবো?”

আয়ুশী বলে উঠলো,”সরি,চার্জ নেই!”

“যাকগে!কই তোরা?আমরা বাসায় ফিরছি এখন!”

“এইতো ভার্সিটিতে!”

“তোকে নিয়ে আসবো?”

“না তোমরা বাসায় যাও!আমি একাই আসবো!কতক্ষণ লাগবে?”

“এই আর ঘন্টা খানেক!বেশি দেরি করিস না রাখছি!”

ফোন রাখতেই ইভা বললো,”কই গিয়েছে ওরা?”

“জানি না,বললো কাজ আছে।সকালেই চলে গিয়েছিল।এখন আসছে!”

তার বেশ কিছুক্ষণ বাদেই আয়ান হন্তদন্ত হয়ে ঢুকলো।চারপাশ খুঁজে আয়ুশীকে দেখতে পেয়ে সোজা ওর দিকে চলে গেলো।

“আয়ুশী,কি হয়েছে?”

আয়ুশী এখন কি বলবে ভেবে পেলো না।সীমা ,ইভা একটু সরে দাড়ালো।আয়ুশী মেকি হাসি দিয়ে বললো,”কই কিছু না তো!”

“তাহলে ফোনে বললে যে ?”

আয়ুশী আবারও হাসতে চেষ্টা করে বললো,”ওই একটু মজা নিলাম আরকি!”..

বলতে না বলতেই সজোরে চ’র পড়লো ওর গালে। আয়ান দিয়েছে চ’রটা !ওর বাহু চেপে ধরলো।

“তোমার ধারণা আছে কতটা ভয় পেয়েছিলাম আমি?আর তুমি বলছো মজা? আর ইউ ক্রেজি?”

বাহু এত জোড়ে চেপে ধরায় বেশ ব্যাথা পাচ্ছে ও।তাও সামলে বললো,”আপনাকে আমার কিছু বলার ছিল তাই!”

“মানে?”

“আমি আপনাকে কিছু বলতে চাই আয়ান!”

এই প্রথম আয়ুশী ওকে নাম ধরে ডাকলো।এবার খেয়াল করলো আয়ুশী আজ সেজেছে।আয়ুশীর কি কথা বলবে সেটা আচ করতে পেরে চোখ মুখ শক্ত করে ফেললো ও।

“আমি কিছু শুনতে ইচ্ছুক নই!বাসায় যাও!”

“কিন্তু আমি…”

আয়ান বেশ ধমকে বললো,”আয়ুশী বাসায় যাও!”

এবার আয়ুশীর মাথায় জেদ চাপলো। যাই হয়ে যাক ও আজ বলবেই!

“আয়ান আমি আপনাকে ভালো…”

আর কিছু বলার আগেই আরেকবার চ’র পড়লো ওর গালে! ছল ছল চোখে তাকালো আয়ুশী।

“আই এম ইউর টিচার!ভুলে যেও না!”

“আয়…”

“স্যার বলো!”

“কিন্তু…”

“জাস্ট শাট আপ স্টু’পি’ড!তোমার ফা’ল’তু ড্রামার জন্য আমি আমার এত ইম্পর্ট্যান্ট কাজ ছেড়ে আসছি!”

“কেনো এসেছেন?”

“হোয়াট?”

আয়ুশী চোখ মুখ শক্ত করে বললো,”আপনার এত চিন্তা কেনো আমার জন্য ?আমি বিপদে পড়লাম কি পড়লাম না সেটা না ভেবেই জাস্ট আমার একটা ফোন কলে আপনি চলে আসলেন?”

আয়ান ধমকে বললো,”আয়ুশী!”
“আমি উত্তর চাই!”

আয়ান কিছু না বলে চলে যেতে নিলেই আয়ুশী বলে উঠলো ,”পালাচ্ছেন কেনো স্যার?উত্তর দেয়ার সাহস নেই বুঝি?”

আয়ান ওর বাহু আরো শক্ত করে চেপে ধরে বলল,”উত্তর চাও তুমি?তাহলে শুনো,এটা আমার দায়িত্ব!মানবিকতা!এটাকে তোমার প্রতি ফিলিংস ভেবে দ্বিতীয়বার ভুল করো না!

আয়ুশী অবাক হয়ে বললো,”দায়িত্ব?আমাকে যেদিন পাওয়া যাচ্ছিল সেদিন আপনি আমাকে হন্য হয়ে খুঁজলেন!আমাকে কেয়ার করা,এমনকি আজ আমার বলা একটা ওয়ার্ডের জন্য এখানে চলে আসলেন!এগুলো শুধু দায়িত্ব?মানবিকতা?”

“হ্যাঁ দায়িত্ব।একজন মানুষ হিসেবে মানবিকতা আর বাবার বন্ধুর মেয়ে হিসেবে তোমার প্রতি আমার দায়িত্ব!এগুলোকে তোমার সো কল্ড ভালোবাসার উপাধি দিবে না! গট ইট?”

আয়ুশী হাসার চেষ্টা করে বললো,”সত্যি শুধু দায়িত্ব?”

“তোমার জায়গায় সীমা বা ইভা তাহলেও আমি একই কাজ গুলো করতাম!প্লিজ…এসব ফা’ল’তু চিন্তা বাদ দেও!”

বলেই বেরিয়ে গেলো ও।আয়ুশী ফ্লোরে বসে পড়লো।ওর কানে একটা কথাই বাজছে।”সব দায়িত্ব!”চোখ দিয়ে অবাধ্য নোনা জল গড়িয়ে পড়লো। সীমা আর ইভা ওর কাছে এলো।ওরা ভাবেও নি এমন কিছু হবে।কিন্তু ওদের মনেও একটা প্রশ্ন থেকে যায়!সত্যি কি সব দায়িত্ব?ওর জন্য অস্থির হওয়া দায়িত্ব?ওর কেয়ার করা দায়িত্ব?ওকে আগলে রাখা দায়িত্ব?অন্য কেউ হলেও সত্যি কি এমন করতো আয়ান?

#চলবে