ছায়া হয়ে থাকবো পাশে ২ পর্ব-১৪ এবং শেষ পর্ব

0
6572

#ছায়া_হয়ে_থাকবো_পাশে_2
#Last_Part
#Ariyana_Nur

বাড়িতে আসার পর নীল আর নুহার বকা খেয়ে আশু সেই যে রুমে ঢুকেছে এখন অব্দি বের হয়নি।নুহা হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে আশুর রুমে গিয়ে লাইট অন করল।আশু বেডে গুটিয়ে শুয়ে রয়েছে।নুহা খাবারের প্লেট সাইডে রেখে আশুর মাথায় হাত রেখে কয়েক বার ডাক দিল।কিন্তু আশু চোখ খুললো না।নুহা আশুর নাক টেনে দিয়ে বলল….

—ঢং না করে তাড়াতাড়ি উঠে পর।আমি জানি তুই ঘুমোসনি।

আশু চুপচাপ ঘুমের ভান করে শুয়েই রয়েছে।কোন কথা বলছে না।নুহা আশুর দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল…..

—দোষ করলিও তুই আবার রাগও করছিস তুই।বাহ্ বেশ ভালো তো…..

—…….

—কিরে কথা বলবি না??

—………

—থাক কথা বলতে হবে না এখন।আগে খেয়ে নে।তারপর না হয় তোর কথা বলার মেশিন চালু করিস।তখন এনার্জি বেশি পাবি।এবার উঠরে ভাই।

—……….

নুহা কিছুক্ষন বসে থাকার পর অভিমান করে বলল….

—ঠিক আছে থাক তুই।আমি বরং চলে যাই।খাবার রেখে গেলাম মন চাইলে খেয়ে নিস।আমি এতটুকু বকাতেই যখন তোর এতো রাগ এতো অভিমান। তুই তোর রাগ নিয়েই থাক।

নুহা বসা থেকে উঠে দাড়াতেই আশু নুহার হাত খপ করে ধরে নুহাকে টেনে বসিয়ে নুহার কোলে মাথা রেখে ফুপিয়ে কান্না করতে লাগল।নুহা আশুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল….

—আজ যতই কান্না করো আমি কিন্তু সরি বলছিনা।কারন দোষ আজ তোমার।আমি মানা করেছিলাম না একা রুনার সাথে যেতে।দরকার পরলে নীল ভাইয়াকে সাথে নিয়ে যেতে।তুমি শুনেছো আমার কথা।এখন কান্না করছো কেন?

আশু কান্না থামিয়ে মুখ গোমরা করে বলল…..
—সরি….

—কেন এমন করিস তুই।জানিস কতো টেনশনে পরে গিয়েছিলাম।

আশু কোন কথা না বলে ফুপিয়ে কান্না করতে লাগলো।

নুহা আশুর চোখের জল মুছে দিয়ে আদূরে গলায় বলল….

—হয়েছে আর কান্না করতে হবে না খেয়ে নে এবার।

নুহা আশুকে খাইয়ে দেবার সাথে সাথে নিজেও খেয়ে নিল।নুহা হাত ধুয়ে এসে আশুকে মন মরা হয়ে বসে থাকতে দেখে বলল…..

—কি হয়েছে?আপি বকেছে তার জন‍্য মন খারাপ ?

আশু গম্ভীর হয়ে বলল….

—না।তুমি আমাকে বকতেই পারো।কিন্তু ঐ ড্রাকুলা আমাকে কেন বকলো? তা আবার সবার সামনে।রুনাপু অনেক কষ্ট পেয়েছে।

নুহা মুচকি হেসে আশুর চুল এলোমেলো করে দিয়ে বলল….

—ভাইয়া প্রথমে তোর স্কুলে গিয়েছিল।সেখানে গিয়ে শুনে তুই নাকি আগেই ছুটি নিয়ে বাড়িতে চলে এসেছিস।তা আবার অসুস্থর বাহানা দিয়ে।এটা শুনেই ভাইয়া অস্থির হয়ে বাসায় আসে।বাসায় আসার পর তোকে দেখতে না পেয়ে সে আরো হাইপার হয়ে যায়।তোর কোন বিপদ হলো কিনা মনে করে পাগলের মত করতে থাকে।ওদিকে তোর ভাইয়াও ফোন ধরছিলো না।আমি ভাইয়ার কান্ড দেখে নিজেই বোকার মত তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম।মা ঘুমিয়ে ছিল।ভাইয়ার চিৎকার চেচামেচি শুনে রুম থেকে বেড়িয়ে আসে।পরে মা তোর কথা বলতেই ভাইয়া আরো রেগে যায়।ভাইয়া তো সেখানে যেতেই চেয়েছিল।যাবার আগেই তোর ভাইয়া ফোন করলো।তোর ভাইয়াকে সব বলতেই সে বলল,চিন্তা না করতে।তোরা বাড়ির কাছে পৌছে গেছিস।আর রুনার কথা ভাবিস না।আমি ওকে সব বুঝিয়ে বলেছি।ও কিছু মনে করে নি।

আশু নুহার কথা শুনে অবাক হয়ে বলল….

—ইয়া আল্লাহ্!এতোটুক একটু সময়ে এতো কান্ড ঘটে গেছে।কিন্তু একটা কথা আমি বুঝতে পারছিলা ঐ ড্রাকুলা আমার জন‍্য কেন এতো হাইপার হলো?

নুহা আশুর দিকে কপাল ভাজ করে তাকিয়ে বলল….

—তুই কি সত‍্যিই বুঝতে পারছিস না।ভাইয়া কেন এতো হাইপার হয়েছিলো তোর জন‍্য।

আশু মাথা নাড়িয়ে না বলে মুখ টিপে হাসতে লাগলো।

নুহা আশুর মাথায় গাট্টা মেরে বলল….
—ঢং না করে গিয়ে ভাইয়ার মান ভাঙা।

____________________

সাইফ বিছানায় হেলান দিয়ে বসে আছে।নুহাকে রুমে ঢুকে মিটমিট করে হাসতে দেখে সাইফ ওর দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলল…..
—কি ব‍্যপার এতো খুশি কেন?

—খুশি থাকলে কি আপনার সমস‍্যা?

—হুম।

—কিহহহ….
আমি খুশি থাকলে আপনার সমস‍্যা হয়?(কপাল ভাজ করে)

—তুমি খুশি থাকলে আমার কোন সম‍্যসা নেই।আমি প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে দোয়া করি তুমি হাসিখুশি থাকো।আমার সমস‍্যা তো তোমার ঐ আপনি তে।

—তাহলে হুম বললেন কেন?

—আবার আপনি?(বিরক্ত হয়ে)

নুহা মুচকি হেসে সাইফ এর পাশে বসে ওর কাধে মাথা রেখে হাত জরিয়ে ধরে বলল….
—রাগ করেছো?

—না।

—তাহলে অভিমান করেছো?

—এই তো এখন কত ভালো লাগছে তোমার মুখে তুমি শুনতে।কেন এমন আপনি আপনি কর?

—তোমাকে আমি তুমি,আপনি যা খুশি তাই বলবো তাতে তুমি বাধা দেবার কে?

—ভালো লাগেনা আপনি শুনতে।আমার মায়াবী পরির মুখে তুমি ডাকটাই মানায়।

—হয়েছে তুমি করেই বলবো এতো পাম মারতে হবে না।

—কি???(চোখ বড় বড় করে)

—কি কি করতে হবে না।চলো না আমরা গার্ডেনে গিয়ে চন্দ্রবিলাস করি।আমার অনেক দিনের ইচ্ছে সবুজ ঘাসের উপর বসে তোমার কাধে মাথা রেখে চন্দ্র বিলাস করবো।

—আমার মায়াবী পরির ইচ্ছা কি আমি অসম্পূর্ণ রাখতে পারি।চলো।

নুহা খুশি হয়ে বলল….
—tnx মিঃচৌধুরী।আমার লাইফে আসার জন‍্য।তোমার লাইফে আমাকে জায়গা দেবার জন‍্য।

__________________

আশু অনেকক্ষন ধরে নীলের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে।কিন্তু পারছেনা।নীল রুমের মধ‍্যে একটার পর একটা করেই যাচ্ছে।আশু যে ওর পিছে ঘুরঘুর করছে সে দিকে নীল পাত্তাই দিচ্ছে না।আশু এবার কাদো কাদো হয়ে বলল….
—সরি আর এমন হবে না।

নীল তার পরেও আশুর দিকে না তাকিয়ে নিজের কাজ করেই যাচ্ছে।

আশু মনে মনে নীলের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করে নীলের সামনে গিয়ে ওর কলার চেপে ধরে বলল….

—ঐ সমস‍্যা কি আপনার?এতোক্ষন ধরে আপনার পিছনে ঘুরঘুর করছি আমাকে কি আপনার চোখে পরছেনা?আমি কি ভেন‍িস হয়ে গেছি?

নীল বিরক্ত হয়ে বলল….
—কলার ছাড়ো।

—না ছাড়বো না।যতক্ষন পযর্ন্ত আপনি আমার সরি একসেপ্ট না করবেন ততক্ষন পযর্ন্ত এভাবে ধরেই রাখবো।

— জোরজবরদস্তির….

—আবার জিগায়….

নীল আশুর কথা শুনে ওর দিকে দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে রয়েছে।আশু এবার মুখটা কাদো কাদো করে বলল….

—সরি আর এমন হবে না সত‍্যি বলছি।প্লিজ আর রাগ করে থাকবেন না।

—আমি রাগ করে থাকলে তোমার সমস‍্যা কোথায়?

আশু নীলের কলার ছেড়ে দিয়ে বলল….
—আমার ভালো লাগে না।

—কেন??

—এতো কেন কেন করছেন কেন?বলছি সরি একসেপ্ট করতে তো করবেন।তা না হলে….

—তা না হলে কি?

—আমি সবার সামনে চেচিয়ে বলল….

—তুমি সবার সামনে কি চেচিয়ে বলল….

আশু দরজার দিকে একবার তাকিয়ে বলল….

—নীলের বাচ্চা চার কোনাইচ্চা দেখতে হাতি শিয়ালের নাতি।নীলের ডিব্বা আমার সরি একসেপ্ট করে নাই।
কথাটা বলেই আশু দিল ভৌ দৌড়।

নীল আশুর যাবার দিকে হা করে তাকিয়ে রইল।নীলের মাথায় ঢুকছে না আশু ওকে সরি বলতে এসেছিল নাকি অন‍্য কিছু করতে?

________________________

“ব্রেকিং নিউজ, সন্ত্রাসী দলের সদস‍্য সান্ত রহমানকে তার নিজ বাড়িতে কুপিয়ে হত‍্যা করা হয়েছে।”
মুহূর্তের মধ‍্যে খবরটা পুরো শহর ছড়িয়ে পড়ল।সান্ত লাশ দেখে সবার শরীরেই কাটা দিয়ে উঠে।দেখতেই মনে হচ্ছে খুব অমানুষিক ভাবে তাকে হত‍্যা করা হয়েছে।

কি ভাবছেন কে মারতে পারে সান্তকে?নিউজটা শুনে প্রথমে কার কথা মনে এসেছে?আপনারা মাথা খাটাতে থাকুন আমি আস্তে আস্তে সব বলতে থাকি।

সান্ত রহমান। সন্ত্রাসী দলের সদস‍্য।নুহাকে একদিন রাস্তায় দেখে পছন্দ করে।নুহার ব‍্যপারে সব খোজ খবর নিয়ে প্রথমে আসলামকে হাত করে বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠালে আসফিয়া মানা করে দেয়।কেননা ও কিভাবে যেন সান্তর সম্পর্কে সব জানতে পেরেছিল।সান্ত রাগ করে নুহাকে তুলে আনতে চাইলে আসলাম বাধা দেয়।আসলাম সান্তকে ওয়াদা করে সে নুহাকে তার হাতে তুলে দিবে।আসলে এতে আসলামেরি লাভ ছিলো।কেননা সে নুহার কথা বলে সান্তর থেকে ইনিয়ে বিনিয়ে টাকা নিতে পারতো।
সান্ত নিজের কাজে বিডির বাহিরে যাবার পর আসলাম নুহাকে পাচার করার চিন্তে করে।তার পরের কাহিনী তো সবাই জানি।

দেশে ফেরার পর সান্ত যখন নুহার ব‍্যপারে খোজ নিয়ে সব জানতে পারে তখন কারাগারে গিয়ে আসলাম এর সাথে ওমন ব‍্যবহার করে।তার পর আসফিয়ার নাম করে আশুকে আঘাত করে।এতে অবস‍্য ভালোই হয়েছিলো।একটু ভুল বুঝাবুঝিতেই নুহা সাইফের সম্পর্কটা তাড়াতাড়ি ঠিক হয়েছে।সাইফ এর সাথে সান্তর কোন শএুতা নেই।সে তো নুহাকে ফোন করে ভয় দেখানোর জন‍্য কথাগুলো বলেছিল।

সেদিন রেস্টুরেন্টে গিয়ে যখন সাইফ দেখলো নিলয় একা বসে আছে সাথে আশু নেই তাতেই তার রাগ উঠে যায়।ভরা রেস্টুরেন্টের মানুষের সামনে নিলয়কে থাপ্পড় মারে।সাথে তো গালাগালি ফ্রি।নিলয় সেদিন অপমানে মুখ নিচু করে রাখে।নিজের ভিতর প্রতিশোধের অগুন জ্বলতে থাকে।নিলয় তিন দিনের মাথায় সুযোগ বুঝে সান্ত যখন মাতাল হয়ে পরে ছিল তখন তাকে কুপিয়ে হত‍্যা করে।

আর হ‍্যা আসলাম কিন্তু এখনো জেলেই আছে।সাইফ তার যোগ‍্য শাস্তির ব‍্যবস্থা করেছে।

__________________________

দেখতে দেখতে কেটে গেলো অনেক দিন।হাসি মজাতে সবার জীবন ভালোই কাটছে।মিঃখান মাঝে মাঝে আসফিয়ার কথা মনে করে কাদে।মেয়েদের কেও জানিয়ে দিয়েছে যে, আসফিয়া নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে।আসফিয়ার চলে যাবার কথা আশু নুহা অনেকটা ভেঙে পেরেছিল।যতই হোক মা তো।কিন্তু মিসেস খান ওদের নিজের মমতার চাদরে জরিয়ে ওদের আস্তে আস্তে সাভাবিক করে তুলেছে।

নুহা আয়নার সামনে বসে রেডি হচ্ছে।সাইফ এসে পিছন থেকে ওকে একটা হাড় পরিয়ে দিয়ে বলল….
—হ‍্যাপি সিক্স এনিভ‍্যারসেরি

নুহা মুচকি হেসে বলল….
—তোমাকেও।

—কি তোমাকেও।মিস ইউ বলেও বলো তোমাকেও।কেন পুরোটা বলা যায় না।

—না যায় না।

—কেন?

—কেন বলবো বিয়ের ছ’মাস হয়ে গেছে একবারের জন‍্য যেটা শুনতে চাই সেটা বলেছো?একবারোও কি প্রপোজ করেছো?

সাইফ মুচকি হেসে বলল….
—ও তাই আমার মিসেসের রাগ হচ্ছে।

নুহা কিছু না বলে পাশ ফিরে গাল ফুলিয়ে বসে রইল।

সাইফ মুচকি হেসে নুহার সামনে হাটু গেড়ে বসে নুহার হাতে একটি রিং পরিয়ে দিয়ে বলল….

—থ্রি ম‍্যাজিকেল ওয়াড বলে তো সবাই প্রপোজ করে।আমি যেহেতু একটু অন‍্য রকম তাই অন‍্য রকম করেই বলতে চাই।জীবনে চলার পথে বাকিটা পথ আমি তোমার হাত ধরে থাকতে চাই।আমি সব সময় তোমার ছায়ার মত আগলে রাখতে চাই।দেবেতো আমায় তোমার পাশে ছায়ার মত থাকতে?

নুহা চোখে জল মুখে হাসি নিয়ে মাথা নাড়িয়ে হ‍্যা বলে সাইফকে জরিয়ে ধরল।

সাইফ মুচকি হেসে নুহাকে জরিয়ে ধরে বলল….
—আমি কিন্তু আমার উওর পাই নি।

নুহা মুচকি হেসে বলল….
—আমিও #ছায়া_হয়ে_থাকবো_পাশে।

—যাক বাবা…তোমাকেও থেকে আমিও তে এসেছে।

কথাটা শুনে নুহা ফিক করে হেসে দিল।সাইফ ও নুহার সাথে তাল মিলিয়ে হাসতে লাগলো।

______________________

আশু অনেকক্ষন ধরে নীলের সামনে চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে রয়েছে।কিন্তু নীলকে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে বিরক্ত হয়ে বলল…..
—ছাতার মাথা আর কতক্ষন চোখ বন্ধ করে থাকবো।

নীল এতোক্ষন আশুকে চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে রেখে আশুকে দেখছিলো।চোখ খোলা থাকলে তো আর মন ভরে দেখতে পারে না তাই সারপ্রাইজ এর কথা বলে আশুকে চোখ বন্ধ করে দাড় করিয়ে রেখেছিল।আশুকে বিরক্ত হতে দেখে নীল আশুর হাতে একটি ঘড়ি পরিয়ে দিয়ে বলল….
—হ‍্যাপি সিক্স এনিভ‍্যাসিরি পিচ্ছি বউ।

আশু চোখ খুলে নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে সুন্দর একটা ঘড়ি দেখে খুশি হয়ে বলল….
—ওয়াও এতো সুন্দর ঘড়িটা আমার?

—আরো আছে।

—সত‍্যি😍

—হুম।

—tnx এত্তোগুলো(দু হাত দু দিকে ছড়িয়ে )

—এবার আমার গিফ্ট দাও।

আশু মুখটা একটুক্ষানি করে বলল….

—আমি গিফ্ট পাবো কোথায়।আমি তো কোন গিফ্ট আনিনি আপনার জন‍্য।

নীল মুখ টিপে হেসে বলল….

—আমি কিছু জানিনা আমার গিফ্ট এখনি আমাকে দিতে হবে।

আশু কিছু একটা ভেবে বলল….

—আমার কাছে তো গিফ্ট নেই।আমি বরং আপনাকে একটা গাল শুনাই চলবে?

—ঠিক আছে।আপাতত দুধের সাধ ঘোলেই মিঠাই।

আশু গলা পরিষ্কার করে বলল…..

—“তুমি এতো মোটা এতো মোটা……
দুই হাতে বের পাইনা……
তুমি এতোও মোটা…..
আল্লাহ্……

নীল আশুকে থামিয়ে দিয়ে বলল….
—এটা গান ছিল?

আশু ভেঙচি কেটে বলল….

—হুহ এই আশু কাউকে গান শুনায় না।আপনার ভাগ‍্য ভালো ছিল তাই আশুর গান শুনতে পেরেছেন।আবার বলছেন এটা গান ছিল?আপনাকে আমার গান শুনানোই ভুল হয়েছে।
কথাগুলো বলে আশু ধুপধাপ পা ফেলে চলে গেল।
নীল মাথায় হাত দিয়ে ভাবতে লাগলো তার এই পিচ্ছি বউ কবে বড় হবে।কবে তাকে বুঝবে।কিন্তু আশুর গানের কথা মনে পরতেই নীল হু হা করে হাসতে লাগলো।

__________________

আশু,নীল,নুহা,সাইফ চারজন মিলে একসাথে কেক কেটে তাদের সিক্স মান্থ এন‍িভ‍্যারসেরি পালক করছে।একে অপরকে কেক খাইয়ে দিয়ে কাপল ডান্স করল।

ডান্স শেষ করে সাইফ আর নুহা এক পাশে দাড়িয়ে কথা বলছিলো।পিছন থেকে নীল এসে সাইফ এর মাথায় একটা টুপি পরিয়ে দিল।আর আশু এসে সাইফ এর গালে কেকের ক্রীম লাগিয়ে দিয়।ওদের কাহিনী দেখে নুহা হাসতে লাগলো।নুহার সাথে তাল মিলিয়ে ওরাও হাসতে লাগলো।আর সাইফ বোকার মত নুহার দিকে তাকিয়ে রইল।

এভাবেই হাসি মজায় চলতে থাকুক ওদের জীবন।জীবনের শেষ মুহূর্ত পযর্ন্ত যেন একে অপরের পাশে ছায়ার মত থাকতে থাকুক।এই কামনাই রইল।

~~~~~~সমাপ্ত~~~~~~