ডিভোর্স পর্বঃ ১৭

0
1666

#ডিভোর্স
পর্বঃ ১৭
লেখকঃ আবু সাঈদ
সরকার

হঠাৎ যা শুনলাম তা শুনে
নিজের কানকেই
বিশ্বাস করতে
পারছিলাম না কেনো
না গলার স্বর টা খুব
পরিচিত….

সাঈদঃ বাহ্হ মানুষকে
হয়তো অধিক বিশ্বাস
করলেই এমনটা হয়…

( এখন কয়েকজন
ভাবছেন এটা নিশ্চিয়ই
স্নেহা তাই তো তাহলে
আপনারা ভুল ভাবছেন
গল্পটা শেষ পযন্ত পড়লে
সব বুঝতে পারবেন )


সাঈদঃ কাল তাহলে
আবার আসবে আসুক
এবার রেহায় পাবে
না…

নিচ থেকে উপরে রুমে
চলে আসলাম উপরে
আসতেই…

বড় সড় একটা শক খেলাম
স্নেহা তো ঘুমায়ছিলো
কিন্তু ও তো বিছানায়
বসে আছে…

স্নেহাঃ তুমি কয়েক
দিন ধরে দেখছি আমি
ঘুমায় গেলে তার পর রুম
থেকে বেড় হয় কোথায়
চলে যাও…

সাঈদঃ কী বলবো কিছুই
বুঝতে পারছি না সত্যি
টা বলবো নাকি মিথ্যা
কথা বলবো না এই
মুহূর্তে সত্যি কথাটা
বলা যাবে না এমনিতে
ওর শরীর টা খারাপ…


স্নেহাঃ কিছু বলছো না
কেনো…

সাঈদঃ না মানে ইয়ে
মানে তুমি ঘুমায়
যাওয়ার পর আমার ঘুম
আসতে চায় না তাই
নিচে গিয়ে এক কাপ
কফি বানিয়ে খেয়ে
আবার চলে আসি রুমে ..

স্নেহাঃ এই কথাটা
আমার কাছ থেকে
লুকোনোর কী ছিলো…

সাঈদঃ লুকালাম আবার
কখন…

স্নেহাঃ কখন আবার
আমাকে বললে কী আমি
তোমাক এক কাপ কফি
করে দিতাম না..

সাঈদঃ হুম দিতা কিন্তু
তোমার শরীর খারাপ
এখন তার উপর এত টুকু
একটা কাজ আমিই করে
নিতে পারি..

স্নেহাঃ যদি কফি
বানানোর সময় গরম
পানি লেগে আঙুল পুরে
যেতো তখন কী হতো..

সাঈদঃ গরম পানি
লেগে তো আর পুরে যায়
নি তাহলে এ বিষয়
নিয়ে কথা বলে লাভ
কী আচ্ছা বাবা আজ
থেকে তুমিই বানিয়ে
দিও…

স্নেহাঃ হুম আর যেনো
রান্না ঘরে যেতে না
দেখি

সাঈদঃ ওকে ( আমার
বয়েই গেছে যে রান্না
ঘরে যেতে হবে মনে
মনে )

স্নেহাঃ ওকে বলে কিছু
হবে এই ভুলের শাস্তি
তো পেতেই হবে…

সাঈদঃ কীহ

স্নেহাঃ শাস্তি এখন
আমাক কোলে করে
ছাদে নিয়ে যেতে
হবে…

সাঈদঃ এত রাতে তুৃমি
ঘুমাবা না…

স্নেহাঃ না ঘুম আসছে
না…

সাঈদঃ কিন্তু আমার
তো প্রচুর ঘুম
আসতেছে…

স্নেহাঃ তুমি তো এখনি
কফি খাইলা তাহলে ঘুৃম
কোথা থেকে আসতেছে
শুনি সব না নিয়ে
যাওয়ার বাহানা তাই
না…


সাঈদঃ আরে আমি তো
ভুলে গেছিলাম কফি
খেলে ঘুম আসে না…

সাঈদঃ না একটু মজা
করলাম তার পর আর কী
শাস্তি তো ভোগ করতেই
হলো কোলে নিয়ে
ছাদে নিয়ে আসলাম…

স্নেহাঃ দেখছো
আকাশে কত সুন্দর চাদ
উঠছে…

সাঈদঃ হুম তা নয় তো
সূর্য উঠবে
!
স্নেহাঃ ওই যে বড়
তারাটা দেখতে পাচ্ছো
ওইটা আমার তারা …

সাঈদঃ
কীহ…

স্নেহাঃ বললাম
তারাটা আমার

সাঈদঃ কীভাবে
তোমার হলো সেটাই তো
বুঝলাম না…

স্নেহাঃ ছোট থেকেই
এই তারাটা আমার পিছু
পিছু সব জায়গায় যায়
তখন থেকেই আমার..

সাঈদঃ ও আমার পিছু
পিছু তো সূর্য টা যায়
তাহলে ওটা আমার

স্নেহাঃ
শখ
কতো

সাঈদঃ এখানে আবার
শখের কী হলো

স্নেহাঃ কিছু না তুমি
বুঝবে না..

সাঈদঃ এটা কোনো
কথা হলো..

তার পর স্নেহার সঙ্গে
গল্প করতে করতে হঠাৎ
দেখলাম স্নেহা আমার
কোলেই ঘুমিয়ে গেছে
মেয়েটাকে আর যাই
হোক ঘুমের মধ্যে এতটাই
সুন্দর লাগে যেটা বলে
বুঝাতে পারবো না…


তার পর স্নেহাকে
কোলে করে নিয়ে এসে
বিছানায় শুয়েই দিলাম
পাশে আমিও শুয়ে
পড়লাম…

বিছানায় শুতেই ঘুম চলে
আসছে কখন যে ঘুমায়
গেছি মনে নেই যখন
ঘুমটা ভাঙ্গলো তখন
নিজের শরীর টাকে
ভারি ভারি লাগতেছে
মনে হচ্ছে আমার হাত
পা গুলো সব বাধা
চাইলেও নড়তে পারছি
না…

আমার সঙ্গে হচ্ছে টা
কী চোখ খুলতেই
অবাক…

আমাকে একটা চেয়ার
এর সাথে বেধে রাখা
হয়েছে হাত পা গুলো সব
বাধা সঙ্গে মুখটাও
বেধে দিয়েছে মুখ
থেকে কোনো প্রকার
আওয়াজে বেড়
হচ্ছে না

সব কিছু কেমন স্বপ্নের
মতো লাগছিলো কিন্তু
এটা কোনো স্বপ্ন না
বাস্তবে হচ্ছে…



স্নেহাঃ সকাল বেলা
যখন ঘুম ভাঙ্গলো তখন
নিজেকে রুমে দেখতে
পেলাম কিন্তু ওনি
কোথায় বিছানা থেকে
উঠে ফ্রেশ হয়ে পুরো
বাসা টায় খুঁজে
দেখলাম কিন্তু ওনাকে
কোথাও খুজে পেলাম
না কোথায় চলে গেলেন
ওনি একা একা এত
সকাল বেলা আমাকে
না বলে তো কোথায়
যান না ওনি তাহলে
আজ কোনো চলে
গেলেন নিশ্চয়ই কোনো
গুরুত্বপূর্ণ কাজ এ
গেছেন না হলে নিশ্চয়ই
আমাক বলে যেতো
সকাল থেকে রাত পযন্ত
অপেক্ষা করলাম কিন্তু
ওনার কোনো বাসায়
আসার নাম গন্ধেই নেই
এবার ওনার জন্য প্রচুর
টেনশন হতে শুরু করছে ..

সকাল থেকে মনে হয় এক
হাজার বার ওনার
ফোনে কল করছি কিন্তু
বার বার এক কথায়
বলতেছে ফোন টা
বন্ধ…




সাঈদঃ সকাল থেকে এই
এক ভাবেই বসে আসছি
চাইলেও এক ফোটা
নড়তে পারছি না সারা
শরীরটা ব্যথায় ছিড়ে
যাচ্ছে তার উপর সকাল
থেকে রাত পযন্ত না
খেয়ে আছি মাথাটা
ঘুরছে একদিকে প্রচুর
বাথরুমের চাপ আসছে
জানি না কী হবে…



কে আমাকে এখানে
এভাবে নিয়ে আসছে
কিছুই মাথায় আসছে
না…

আমি তো রুমে
ঘুমোচ্ছিলাম তাহলে
এখানে কীভাবে
আসলাম…



স্নেহাঃ ওনার টেশনে
আমার শরীরটা ভয়ে
কাপতে শুরু করছে ওনার
কিছু হয়ে যাই নি তো…

রাত পেরিয়ে দিনের
আলো ফুটছে কিন্তু
ওনার কোনো খোজ খবর
কিছু পাচ্ছি না…


আর কোনো উপায় না
পেয়ে…



স্নেহার বাবাঃ সকাল
বেলা হঠাৎ ফোনের
আওয়াজে ঘুমটা ভেঙ্গে
গেলো একটা unknown
number থেকে কল
আসছে প্রথম বার ধরলাম
না যখন তিনবার দিলো
তখন ভাবলাম নিশ্চয়ই
কেউ খুব দরকারে কল
করছে তাই কলটা
ধরতেই…


স্নেহাঃ কাদতে
কাদতে হ্যালো বাবা…

স্নেহার বাবাঃ হঠাৎ
স্নেহার কান্না শুনে
বুকের ভিতরটা কেমন
যানি করে উঠলো
মেয়েটা খুব কাদতেছে
নিশ্চয়ই কিছু খারাপ
হয়েছে ওর সাথে না
হলে কেনো আমাকে
ফোন করলো এত দিন পর
( আচ্ছা এমনটা হয় নি
তো যে ছেলেটা ওকে
ছেড়ে পালিয়ে গেছে
অন্য কারো সঙ্গে
মাথায় হাজার টা প্রশ্ন
ঘুর পাক খাচ্ছে )


স্নেহাঃ বাবা আমি
জানি তুমি এখনো রাগ
করে আছো আমার কিন্তু
বাবা আমি যে তোমাক
ফোন না করে থাকতে
পারলাম না ওনি কী
তোমাদের কাছে
গিয়েছেন ( কাদতে
কাদতে)

স্নেহারবাবাঃ
আমাদের এখানে কেনো
আসতে যাবে…

স্নেহাঃ কাল রাতে
আমি বলছিলাম যে
তোমাদের খুব দেখতে
ইচ্ছে করছে কিন্তু ওনি
তার পরের দিন সকাল
থেকে বাসায় আসেন নি
দেখতে দেখতে একটা
রাত কেটে গেলো ওনি
এখনো ফিরে আসেন নি
তাই ভাবলাম ওনি হয়তো
তোমাদের কাছে
গিয়েছে কথা টা বলতে
না বলতেই আরেকটা
unknown number থেকে
কল আসলো…


স্নেহাঃ হ্যালো…


আপনার স্বীমী
আমাদের কাছে…

স্নেহাঃ কে আপনি…

আমি যাই হই না কেনো
নিজের স্বীমীকে
বাচাতে চাইলে ১৫
কোটি টাকা রেডি
রাখেন….

স্নেহাঃ আমি ওত টাকা
কোথায় পাবো..

সেটা আমাকে বলে
লাভ নাই নিজেকে
স্বীমীকে সুস্থ শরীরে
ফিরে পেতে চাইলে
রাত দশটার মধ্যে ১৫
কোটি টাকা রেডি
রাখবেন ..


স্নেহাঃ হ্যালো
হ্যালো ফোনটা কেটে
গেলো বার বার ট্রাই
করলাম কিন্তু ফোনটা
বন্ধ…

এত গুলো টাকা কই
পাবো আমি নিজের
চোখে কোন দিন ১৫
কোটি টাকা দেখি
নি…

তাহলে কীভাবে আমি
১৫ কোটি টাকা দিবো
যদি ১৫ কোটি টাকা না
দিতে পারি তাহলে
ওনারা যদি ওর কিছু
করে দেয় ভাবতেই
শরীরটা কেপে
উঠতেছে…

কী করবো কিছুই মাথায়
আসতেছে না পুরো
আলমারিতে খুজে
দেখলাম এক টা টাকাও
নেই…

এটা কীভাবে হতে
পারে…

পুরো বাসা টা খুজে
দেখলাম এক টা টাকাও
নেই…


এটা দেখার পর
নিজেকে কন্ট্রোল করা
অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে…

তখন কোনো উপায় না
পেয়ে আবার বাবাকেই
ফোন করলাম ফোনটা
ধরতেই..


চলবে…