ডিভোর্স পর্বঃ ৪

0
3810

#ডিভোর্স
পর্বঃ ৪
লেখকঃ আবু সাঈদ
সরকার

সাঈদঃ ভাত গুলো মুখে
দিতেই…

মেয়েটাঃ কী হলো..

সাঈদঃ ওয়াও ডালটা
অনেক সুন্দর রান্না
হয়েছে আচ্ছা রান্নাটা
কে করেছে..

মেয়েটাঃ কে আবার
আমি

সাঈদঃ ও এত সুন্দর
রান্না করতে পারো
সেটা আগে তো
জানতাম না.

মেয়েটাঃ জানবি কী
ভাবে আগে কখনো তো
এখানে আসিস নি..

সাঈদঃ সেটাও তো..

মেয়েটাঃ তুই কত দিন
এখানে থাকবি..

সাঈদঃ আর ২৮ দিন..

মেয়েটাঃ ও আচ্ছা এই
২৮ দিন আমি তোকে
রোজ এসে খাবার দিয়ে
যাবো তোর কাছে তো
আবার টাকা নেই..

সাঈদঃ সত্যি কিন্তু এই
ঝ্রণ আমি তখন কীভাবে
পরিশোধ করবো হুম..

মেয়েটাঃ ২৮ দিন পর
আমি তোর কাছ থেকে
একটা জিনিস চাইবো
সেটা তুই আমাকে
দিবি..

সাঈদঃ কী আবার
চাইবে শাড়ি নাহলে
আলাদা কিছু আচ্ছা যাই
চাইবে তাই কিনে
দিবো…

মেয়েটাঃ এখন আমি
আসি তাহলে কাল
সকালে আবার আসবো..

সাঈদঃ আচ্ছা..

মেয়েটার কন্ঠ টা কিন্তু
খুব সুন্দর কিন্তু কথা
গুলো একটু গুছিয়ে বলতে
পারে না কখন তুই কখনো
তোর আসলে গ্রামের
মানুষের ভাষা এমনি হয়
সব কিছু মিক্স..


লাইট টা অফ করে শুয়ে
পড়লাম..


সকাল বেলা পাখির
কোলাহলে ঘুম
ভাঙ্গলো…

বিছানা থেকে উঠে
যেই বেড়িয়ে আসলাম
তখনি প্রকৃতির অপরুপ
সৌন্দর্য দেখতে পেলাম
এরকম দৃশ্য শহরে মোটেও
দেখা মিলে না…


ঠিক তখনি মেয়েটা..

মেয়েটাঃ কী করছিস
হ্যা এখানে দাড়িয়ে..

সাঈদঃ প্রকৃতির রুপ
দেখছিলাম..

মেয়েটাঃ ও তোর জন্য
খাবার নিয়ে আসছি
পান্তা আর মরিচের
ভতা..


সাঈদঃ কী এগুলো মানুষ
খায়..

মেয়েটাঃ তো কে খায়
এগুলাই গ্রামের মানুষের
সকাল বেলার খাবার..

সাঈদঃ আমি খেতে
পারবো না

মেয়েটাঃ না খেলে
সারা দিন না খেয়ে
থাকতে হবে

সাঈদঃ খেতে তো মন
চাইছিলোই না কিন্তু
মেয়েটা জোর করে
খাইয়ে দিলো…


দেখতে দেখতে ১০ দিন
চলে গেলো মেয়েটার
সঙ্গে সম্পর্কটা
অনেকটা খোলা মেলা
হয়ে গেছে…

মেয়েটাঃ কী রে
এভাবে শুয়ে আছিস
কেনো ..

সাঈদঃ মাথা ব্যথা
করছে..

মেয়েটাঃ কই দেখি..

সাঈদঃ কথাটা বলতে
না বলতেই মাথা চাপতে
শুরু করে দিলো..

আরে এটা তুমি কী
করছো..

মেয়েটাঃ চুপচাপ শুয়ে
থাক একটাও কথা বলবি
না..

সাঈদঃ কেনো যে এই
মেয়েটার উপর একটাও
কথা বলতে পারি না
আল্লাহই জানে এক
প্রকার করা শাসনে
রেখেছে আমাকে..



দেখতে দেখতে আরো
১৭ টা দিন কেটে
গেলো..


সাঈদঃ বারান্দায় বসে
ভাবতেছিলাম আজ
মেয়েটাকে মনে কথা
বলবো কেনো না এই
কয়েক দিনে
মেয়েটাকে এতটাই
ভালোবেসে ফেলেছি
যেটা বলে বুঝাতে
পারবো না..


ঠিক তখনি মেয়েটা
আসলো..

সাঈদঃ আরে তোমার
মুখটা এমন দেখাচ্ছে
কেনো…

মেয়েটাঃ কাল আমার
বিয়ে

সাঈদঃ মেয়েটা কথাটা
বলতে না বলতেই কেদে
ফেলো..

হঠাৎ..

মেয়েটাঃ হুম বাবা
আমাকে কিছু না বলেই
সব কিছু করে ফেলেছে
আজকের পর আর দেখা
হবে না রে…

সাঈদঃ কিছু বলতে
যাবো তার আগেই
মেয়েটা কাদতে কাদতে
দৌড়ে চলে গেলো..


সাঈদঃ মেয়েটার কথা
শুনে এতটাই কষ্ট
লেগেছে যেটা
তানিশাকে ডিভোর্স
দিয়েও লাগে নি ..


কেনো যাকে
ভালোবাসি সেয়
হারিয়ে যায় আমার
কাছ থেকে কেনো কাল
আমাকে চলে যেতে আর
কাল এ মেয়েটার বিয়ে
নিজের মধ্যেই নিজের
ফিলিংস গুলো মাটি
চাপা দিয়ে রাখতে
হচ্ছে..



স্নেহাঃ বাবা আমি
বিয়েটা করবো না..

স্নেহার বাবাঃ
কেনো..

স্নেহাঃ আমি অন্য
একজনকে ভালোবাসি
তাকে ছাড়া আলাদা
কারো কথা ভাবতে
পারছি না..

স্নেহার বাবাঃ ছেলে
কী করে..

স্নেহাঃ কিছু না শহরে
চাকরি জন্য গেছিলো
কিন্তু হয় নি..

স্নেহার বাবাঃ একটা
বেকার ছেলের সঙ্গে
তোর বিয়ে আমি কোন
মতেই দিবো না বিয়ের
পর তোকে কী খাওয়াবে
সে হ্যা এই জন্য তোকে
পড়াশোনা করিয়েছি..

স্নেহাঃ বাবা একটা
বার আমার কথা ভাবো
না আমি এই ছেলের
সঙ্গে খুশি থাকতে
পারবো না ..

স্নেহার বাবাঃ সেটা
তোর ইচ্ছে এই সব
বাচ্চামি বাদ দিয়ে
চুপচাপ ঘরে গিয়ে রেডি
হয়ে নেয় এখনি তারা
হলুদ দিতে আসবে…



সাঈদঃ ভাবছিলাম কাল
যাবো কিন্তু কাল
স্নেহার বিয়ে এটা
আমি নিজের চোখে
দেখতে পারবো না তাই
আজ এখনি চলে যাচ্ছি
গ্রাম ছেড়ে শহরে..


কাপড় চুপড় পেক করে
যেই বেড় হবো ঠিক
তখনি পিছন থেকে কেউ
শক্ত করে জরিয়ে
ধরলো..


মেয়েটাঃ আমাকে তুই
নিয়ে যায় তোর সঙ্গে
আমি এই বিয়েটা করতে
পারবো না কারণ আমি
তোকে অনেক বেশি
ভালোবেসে ফেলেছি..


সাঈদঃ কথাটা শুনে
নিজের কানকে বিশ্বাস
করতে পারছি না তবুও
একটা জিনিস মাথায়
কাজ করছিলো সত্যি
কী মেয়েটা আমাক
ভালোবাসে..
সেটা প্রমান করতেই..


আমি তো বেকার আমার
সঙ্গে গেলে কী
খাওয়াবো তোমাক..


মেয়েটাঃ না খেয়ে
মারা যাবো তবুও
তোমার সাথে নিয়ে
যাও এখানে থাকলে
ওরা আমাকে জোর করে
বিয়ে দিয়ে দিবে..

সাঈদঃ সত্যি এতটা
ভালোবাসো আমাক .

মেয়েটাঃ হুম..

আচ্ছা আমি একটা
জিনিস চাইবো
বলেছিলাম না আজ
সেটাই চাইছি দিবেন
সেটা আমাক..

সাঈদঃ বলো আমার
পক্ষে সম্ভব হলে অবশ্য
দিবো

মেয়েটাঃ বিয়ে করতে
চাই আপনাকে..

সাঈদঃ না মানে ইয়ে
মানে..

মেয়েটাঃ একটাই
জিনিস চাইছি সেটা
দিবেন না…

সাঈদঃ কিন্তু তোমার
ফ্যামালি আমাক তো
মেনে নিবে না..

মেয়েটাঃ তার মানলো
কী মানলো না তাতে
আমার কিছু যায় আসে
না..

চল আজ রাতেই আমার
গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে
যাই…


চলবে..