#ডিভোর্স
পর্বঃ ৯
লেখকঃ আবু সাঈদ
সরকার
।
স্নেহার বাবাঃ
ছেলেটা তো আমাদের
দিকেই এগিয়ে
আসতেছে…
।
স্নেহার মাঃ হ্যা…
।
সাঈদঃ আসসালামু
আলাইকুম আঙ্কেল
আন্টি…
।
স্নেহার বাবাঃ
ওয়ালাইকুম সালাম…
।
সাঈদঃ আপনারা কেমন
আছেন..
।
আপনারা হয়তো আমাকে
ঠিক চিনতে পারেন
নি…
।
আরে তুমি পিছনে
লুকিয়ে আছো কেনো
( স্নেহাকে উদ্দেশ্য
করে) ….
।
স্নেহা তো সামনে
আসতেই চাইছিলো না
তাও হাতটা ধরে জোর
করে সামনে নিয়ে
আসলাম…
।
স্নেহাঃ একদিকে ভয়ে
আমার হাত পা
কাপতেছে আর ওনি
আব্বু আম্মুর সামনে দাড়
করিয়ে দিলেন…
।
সাঈদঃ এবার তো
নিশ্চয়ই চিনতে
পারছেন..
।
স্নেহার বাবাঃ হ্যা…
।
সাঈদঃ আসলে ভুলটা
আমারি ছিলো…
।
এভাবে বিয়ের আগের
দিন নিয়ে আসাটা
হয়তো উচিত হয় নি
কিন্তু কী করবো বলেন
পরিস্থিতি মানুষকে
বাধ্য করে দেয়…
।
আপনাদের সঙ্গে
এভাবে দেখা হবে
কল্পনাও করি নি infact
আমি আপনাদের
চিনতাম ও না এই মাএ
স্নেহা বললো আপনারা
ওর বাবা মা তাই
আপনাদের সঙ্গে কথা
বলতে চলে আসলাম…
।
স্নেহার বাবাঃ
স্নেহার জন্য গ্রামে
আমার মানসম্মান সব
মিটে তে মিশে গেছে..
।
ওকে আমি কখনো ক্ষমা
করতে পারবো না..
।
সাঈদঃ প্লিজ এভাবে
বলবেন না স্নেহা
আপনাদের খুব
ভালোবাসে সেটা কেউ
বুঝতে না পারলেও আমি
বুঝতে পারি কারণ সে
সারাটা দিন আমার
সাথেই থাকে আর তাকে
বাইরে থেকে যতটা খুশি
দেখতে পাচ্ছেন একবার
যদি তার মনের ভিতরটা
দেখতে পারতেন তাহলে
আপনাদের প্রতি ওর
ভালোবাসা টা দেখতে
পেতেন…
।
ভুল কে না করে …
।
স্নেহার বাবাঃ সব
ভুলের ক্ষমা হয় না…
।
সাঈদঃ আপনি ওর বাবা
হয়ে এই কথাটা কীভাবে
বলতে পারছেন…
।
স্নেহার বাবাঃ ওর যদি
আমাদের প্রতি এতটুকু
ভালোবাসা থাকতো
তাহলে এভাবে পালিয়ে
আসতো না আর যে
ছেলের সঙ্গে পালিয়ে
ছিলো সে কোথায়…
।
সাঈদঃ আমিই সেই
ছেলে আপনি একটু আগে
বললেন না ওর
আপনাদের প্রতি একটুও
ভালোবাসা নেই একবার
লক্ষ্য করে দেখছেন
স্নেহা মাথাটা উচু করে
আপনার চোখের দিকে
তাকাতে পারছে না..
।
কেনো পারছে না সেটা
জানেন কারণ respect
করে ও আপনাদের…
।
স্নেহার মাঃ দেখো
বাবা আমাদের দুটো
মেয়ে ছিলো কিন্তু এখন
আর দুটো মেয়ে নেই
আমাদের একটাই মেয়ে
মায়া…
।
সাঈদঃ ও তার মানে
ক্ষমা করবেন না..
।
স্নেহার বাবাঃ না
কোন দিনিও না…
।
সাঈদঃ আচ্ছা
আপনাদের যা ভালো
মনে হয় তাই করেন
কিন্তু একটা কথা
বলতেছি খারাপ
লাগলেও এটা বাস্তব
যে স্নেহা আপনাদের
মেয়ে ছিলো আর মৃত্যুর
আগে পযন্ত থাকবে…
।
চলো এখান থেকে
হাতটা ধরে বাইরে
নিয়ে আসলাম…
।
।
স্নেহাঃ মায়াকে কত
দিন পর দেখলাম খুব
ইচ্ছে করছিলো একবার
জরিয়ে ধরতে কিন্তু
তারা আমাকে এতটা
ঘৃণা করে কথাটা
ভাবতেই চোখ দিয়ে
পানি পড়তে শুরু
করলো…
।
সাঈদঃ তুমি কাদতেছো
কেনো হুম আমি তো
আছি নাকি ( চোখের
পানি মুছে দিয়ে )
।
স্নেহাঃ
।
সাঈদঃ পাগল মেয়ে
একটা এভাবে কাদলে
মানুষ কী ভাবে….
।
স্নেহাঃ যা ইচ্ছে
ভাবুক…
।
সাঈদঃ বাসায় চলো
এখানে থাকলে তুমি
আরো seen create
করবা…
।
।
।
।
মায়াঃ তোমারা
আমাকে মিথ্যা কথা
কেনো বলছো যে
স্নেহা আপুর শরীর
খারাপ…
।
স্নেহার মাঃ তোমাকে
আমার এই কথাটা
জানতে দিতে চাই নি..
।
মায়াঃ জানতে দিতে
চাওনি এখন তো জেনে
গেলাম নাকি… আর মা
সত্যি কখনো চাপা
থাকে না আর আপুর
ভুলটা কী ছিলো যে
তোমরা তাকে এভাবে
আপমান করলে..
।
হয়তো আবেগের বসে
ভুল করে ফেলেছে
কিন্তু দেখলে তো ওর
হাসব্যান্ড কতভাবে
বুঝানোর চেষ্টা করলো
তোমরাও তাও বুঝলে
না…
।
নিজের জীবন সাথী
নিজের মনের মতো
চাওয়া কী ভুল…
।
স্নেহার বাবাঃ দেখো
তোমার এই মেয়েও
স্নেহার মতো হয়ে
গেছে.
।
মায়াঃ বাবা কিন্তু
যেটা সত্যি সেটাই
বলতেছি…
।
ছেলেটার মাঝে কী
এমন খারাপ দেখলে যে
তাকে ক্ষমা করতে
পারলে না দেখতে কত
হ্যাডসাম.. কোন প্রকার
নেশা করে না তার উপর
ব্যাংক এর সিনিয়ার
অফিসার আর কী
লাগে….
।
স্নেহার মাঃ সে কথা
আমাদের সে
বলছিলো…
।
মায়াঃ হয়তো সে এসব
জানতোই না তার প্রতি
দুর্বল ছিলো…
।
স্নেহার বাবাঃ হায় রে
ভালোবাসা বিয়ের
আগে বললো ছেলেটা
বেকার কোন বাবা
চাইবে বেকার ছেলের
সঙ্গে নিজের মেয়ের
বিয়ে দিতে…
।
মায়াঃ এই যে বাবা
তুমি যে বললে ছেলেটা
বেকার আসলে কিছু
মানুষ টাকার অহংকার
করে না যে আমি এত বড়
লোক..
।
আর স্নেহা আপু কিন্তু
ওই বেকার রুপকেই
ভালোবেসেছিলো সেও
জানতো না ছেলেটা এত
বড় লোক..
।
।
তো এখন তোমাদের
কাছে আমার একটাই
রিকুয়েষ্ট তোমরা
আপুকে মাফ করে দাও…
।
।
।
।
।
সাঈদঃ বাসায় এসে…
।
আয়নায় একবার মুখটা
দেখো কান্না করে
করে চোখ গুলো ফুলায়
দিচ্ছো।
।
এরকম করলে আর
কোথাও নিয়ে যাবো
না…
।
স্নেহাঃ
।
সাঈদঃ যাও রুমে গিয়ে
শুয়ে পড়ো ঘুমালে কষ্ট
গুলো নিজে থেকে মুছে
যাবে.
।
স্নেহাঃ একা ঘুম ধরবে
না আপনিও আসেন…
।
সাঈদঃ আচ্ছা আমি
যাচ্ছি তুমি গিয়ে চেনজ
করে শুয়ে পড়ো আমি
ফ্রেশ হয়ে যাইতেছি..
।
স্নেহা আচ্ছা…
।
সাঈদঃ ফ্রেশ হয়ে
কাপড় গুলো চেনজ করে
নিলাম..
।
তার পর রুমে আসলাম..
।
তুমি এখনো শুয়ো নি..
।
স্নেহাঃ আপনি আসলেন
এখন শুবো…
।
সাঈদঃ তুমি পারো
বটে..
।
তার পর আমি গিয়ে
বিছানায় শুয়ে পড়লাম
আর পাশে এসে স্নেহাও
শুয়ে পড়লো..
।
।
স্নেহাঃ একটা কথা
বলবো..
।
সাঈদঃ হুম বলো..
।
স্নেহাঃ আচ্ছা
পৃথিবীতে তো আরো
সুন্দর মেয়ে আছে
তাদের আপনাকে ভালো
লাগে না…
।
সাঈদঃ না আমার
একমাত্র তোমাকেই
সুন্দর লাগে…
।
স্নেহাঃ কেনো..
।
সাঈদঃ কেনো না কেউ
সুন্দর হয় না তুমি যাকে
যতটা বেশি
ভালোবাসবে তাকে তো
সুন্দর মনে হবে..
।
স্নেহাঃ এই কথাটা
আমিও বিশ্বাস করি..
।
সাঈদঃ হুম এখন কথা না
বলে ঘুমাও স্নেহাকে
জরিয়ে ধরে…
।
।
স্নেহাঃ এভাবেই
ভালোবাসবেন তো
আমায়..
।
সাঈদঃ হুম সারাটা
জীবন …
।
।
তার পর স্নেহাকে
জরিয়ে ধরে কখন যে
ঘুমিয়ে পড়লাম নিজেও
জানি না…
।
যখন ঘুমটা ভাঙ্গলো তখন
দেখলাম স্নেহা আমার
বুকের উপর শুয়ে আছে…
।
মানুষ বলে বুকের উপর
কিছু রাখলে ভারি
লাগে কিন্তু কই স্নেহা
তো আমার উপর সম্পুর্ন
টাই শুয়ে আছে আমাক
তো একটু ভারি
লাগতেছে না…
।
।
ঠিক তখনি কেউ কলিং
বেলটা কেউ বার বার
বাজিয়ে যাচ্ছে
স্নেহাকে বিছানায়
শুয়েই দিয়ে নিচে
দেখতে আসলাম কে
আসছে…
।
।
দরজাটা খুলতেই
দেখলাম একটা মেয়ে
বাইরে দাড়িয়ে আছে…
।
মেয়েটাঃ জ্বী আমি
স্নেহা আপুর ছোট বোন
মায়া..
।
সাঈদঃ ওহ ভিতরে
আসো…
।
।
ভিতের এসে বসো
বাইরে থেকে আসছো
অনেক ক্লান্ত তাই না
রহিমা আন্টি ফ্রিজ
থেকে জুস টা এনে দিন
তো…
।
।
মায়াঃ থাক লাগবে না
আমি আপুর সাথে একটু
কথা বলতে চাই…
।
সাঈদঃ ও তো এখন
ঘুমাচ্ছে কিছু খন আগেই
ঘুমালো…
।
মায়াঃ ও তাহলে কী
কথা বলতে পারবো না..
।
সাঈদঃ কেনো পারবা
না তুমি কী এখনি চলে
যাবা নাকি…
।
মায়াঃ হ্যা..
।
সাঈদঃ ওই কথা বললে
তো হবে না তুমি
আমাদের বাসায় প্রথম
আসলে আর আজি চলে
যাবে এটা কখনো হয়…
।
আজ রাতটা এখানে
থেকে কাল যাবা…
।
মায়াঃ না বাবা মা
তখন রাগ করবে আমি
বিকেল চলে যাবো বলে
আসছি…
।
সাঈদঃ ও কিছু হবে আজ
তো থাকতেই হবে
তোমাকে…
।
মায়াঃ এত করে যখন
বলছেন তখন না হয়
থেকেই যাবো…
।
সাঈদঃ ওপরে আসো..
।
উপর এসে…
।
স্নেহা স্নেহা উঠো..
।
।
স্নেহাঃ উম্ম কী
হয়েছে…
।
সাঈদঃ তোমার বোন
আসছে…
।
স্নেহাঃ ও এখানে
আসতে যাবে কেনো ও
আমাদের বাসা চিনে
নাকি …
।
সাঈদঃ উঠে দেখো
আসছে কী না…
।
স্নেহাঃ বিছানা থেকে
উঠতেই দেখলাম মায়া
বাইরে দাড়িয়ে আছে…
।
সাঈদঃ বিশ্বাস হলো
এইবার তোমারা কথা
বলো আমি নিচে
আছি…
।
।
স্নেহাঃ মায়া তুই
জরিয়ে ধরে..
।
মায়াঃ হুম তোকে খুব
মিস করতেছিলাম রে..
।
স্নেহাঃ এখানে কখন
আসলি আর বাবা মা কী
জানে তুই এখানে
আসছিস…
।
মায়াঃ হুম আর আজকে
আমি তোর সঙ্গেই
থাকবো…
।
স্নেহাঃ সত্যি…
।
মায়াঃ হুম…
।
স্নেহাঃ বিছানায় বস…
।
বিছানায় বসে…
।
মায়াঃ দুলাভাইকে
তোকে অনেক
ভালোবাসে না…
।
স্নেহাঃ হুম নিজের
থেকেও…
।
মায়াঃ সেটা দেখলেই
বুঝা যায়..
।
স্নেহাঃ তুই তো অনেক
বড় হয়ে গেছিস…
।
মায়াঃ আপু তুই ও না…
।
স্নেহাঃ বল কী খাবি ..
।
মায়াঃ কিছু না চুপ করে
বস এখানে..
।
স্নেহাঃ বা রে তুই
আমার বাসায় এসে
কিন্তু খাবি না..
।
মায়াঃ পরে খাবো এখন
একটু গল্প করি…
।
।
।
সাঈদঃ নিচে বসে
পেপার পড়ছিলাম তখনি
একটু জরুরি কাজ মনে
পড়ে গেলো..
।
।
স্নেহা….
।
স্নেহাঃ আমাকে
ডাকতেছে দাড়া শুনে
আসি..
।
কী বলেন…
।
সাঈদঃ আমি বাইরে
যাচ্ছি কিছু খন পর চলে
আসবো…
।
স্নেহাঃ আচ্ছা ঠিক
মতো যাবেন আর আপনি
না খেয়ে যাবেন…
।
সাঈদঃ বাইরে খেয়ে
নিবো বলেই চলে
আসলাম…
।
।
মায়াঃ হ্যা রে তুই তোর
বরকে আপনি করে
বলতেছিস কেনো..
।
।
স্নেহাঃ আপনি বলবো
না তো কী বলবো…
।
মায়াঃ তুমি করে
বলবা…
।
স্নেহাঃ আচ্ছা ..
।
মায়াঃ একটা কথা
জিজ্ঞেস করবো সত্যি
করে বলবি এটা সত্যি
কী না…
।
স্নেহাঃ বল…
।
তার পর মায়া যেটা
বললো সেটা শুনে
নিজের কানকে বিশ্বাস
করতে পারছি না..
।
।
চলবে…
।
।