তুই হবি আমার বোনাস পার্ট

0
1867

#তুই_হবি_আমার??
#DîYã_MôÑî
#বোনাস_পার্ট

সাদিয়ার গানের এবলাম বেরিয়েছে আজ। অথচ কোথাও সাদিয়ার নাম নেই,, সিঙ্গারের পাশে বড় বড় করে লোগো করা #SR। সাদিয়ার প্রতিটা গানই অনেক হিট হয়েছে কিন্তু সাদিয়ার মন তবুও খচখচ করছে কারন কাল ওদের ফ্লাইট। দীর্ঘ ৭মাস পর দেশে ফিরছে ও। সুমি সবকিছু প্যাক করে নিচ্ছে।

সুমি : ওই তোর কি হয়েছে রে.? গানের এলব্যাম বের হলো,, সবার মুখে মুখে তোর গান। কতো ফ্যানস তোর এইসবেও কি একটু আনন্দ লাগছে না.? সারাদিন বাংলাদেশ বাংলাদেশ করে মরছিস। ওরা কি বুঝবে তোর যন্ত্রনা..? কখনো কি বুঝেছে.?

সাদিয়া : আপিলার কথা মনে পড়ছে। জানি না কেমন আছে কি করছে.? আমার মৃত্যুর সংবাদটা শুনে কার কেমন লেগেছে।

সুমি : দেশে তো ফিরছিস। দেখে নিস্ সব। আরীবকে বলে পুরো দেশে চক্কর দিবো আমি। ওখানে অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে শুনলাম।

সাদিয়া : হুম। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান। এই তিন টা জায়গা আমার অনেক পছন্দের। তোমাকেও নিয়ে যাবো। কিন্তু ভয় করছে ওদের সামনে যেতে। অনেকগুলো পুরোনো আবেগ,, ভালোবাসা,, আহ্লাদ,, হাসি আনন্দ। যদি বিভ্রান্তি তে পড়ি।

সুমি : তাহলে নিজের পরিচয় দেওয়ার দরকার নাই। যেমন আছিস সেভাবেই চল। ইজি থাকবি।

সাদিয়া : আর ইজি। এখন তো কথায় কথায় রাগ হয়। মেজাজ খারাপ হয়। হাত চলে বেশি। আল্লাহই জানে ওদেশে কয়টা ভাগ্যবান আমার হাতে মিষ্টি খাওয়ার জন্য ওয়েট করছে।

সুমি : নে তোর কি কি লাগবে বল গুছিয়ে দিচ্ছি। ২০দিনের জন্য যাচ্ছি তো.? আসলে আমি ১৫টা ড্রেস নিসি।

সুমির ড্রেসের কথা শুনে সাদিয়া চোখ ছোট ছোট করে ওর দিকে তাকায়।

সাদিয়া : আমার তিনটা ড্রেস নাও। ওখানে গিয়ে শপিং করবো। এতো ড্রেস বয়ে নিয়ে যাবো পাগল নাকি। তুমিও ৩-৪টা নাও।

সুমি : আচ্ছা ঠিক আছে।

???
মেঘ আর আরীব বসে মেহমানদের লিস্ট করছে। মেঘের চোখমুখ শুকিয়ে গেছে। আর আরীবও অদ্ভুদভাবে মেঘকে দেখছে।

আরীব : মেঘ আর ইউ অকে.?
মেঘ : হহহহহ্যা ভভভভাইয়া।

আরীব : রোজকে নিয়ে ভাবছো তাইনা.? তুমি কেন বুঝতে চাচ্ছো না রোজ আর নেই। সেদিন এক্সিডেন্টে মারা গেছে রোজ। এবার অন্ততো নিজের কথা ভাবো।

মেঘ : তুমি তো সব জানো ভাইয়া,, আমার প্রতিটা সেকেন্ড কাটে রোজের কথা ভেবে,, ওর হাসি,, ওর কান্না,, ওর প্রতিবাদি চেহারা। কি করে ভুলবো ওকে.? আচ্ছা তোমরা কিভাবে সিউর হচ্ছো যে ও নেই.? আমার তো কখনো একবারের জন্যও মনে আসেনি যে রোজ নেই। আমি জানি রোজ আছে। রোজ ফিরবে।

আরীব : তোমার রোজকে একনজর দেখার খুব ইচ্ছা আমার। কিন্তু না আমার ভালোবাসা আছে। তোমার রোজকে দেখে যদি প্রেমে পড়ে যাই তখন একুলওকুল দুকুলই যাবে।

মেঘ : শুনলাম তুমি যাকে ভালোবাসো সে কাল আসবে। রিসিভ করতে যাবে কে.? তুমি.?

আরীব : হুম। আমার কলিজা আসতেছে আমি কি বাড়ি থাকতে পারবো.? মনটা আনচান আনচান করছে।

মেঘ : ভালোবাসো তো তাই।
আরীব : ভালো হয়তো বাসি কিন্তু তোমার মতো করে ভালোবাসতে পারবে না কেউ। যদি সুযোগ পেতাম তাহলে আমি নিজে তোমার আর রোজের মিল করাতাম। এই কয়েকটা মাস তোমাকে কাছ থেকে দেখে বুঝেছি তুমি রোজকে কতটা ভালোবাসো। এভাবে নিজেকে উজাড় করে ভালোবাসতে কয়জন পারে.?

মেঘ : ভালোবেসেছি ঠিক কিন্তু ধরে রাখতে পারলাম কই.? ঠিকই একা ফেলে রেখে দিয়ে চলে গেলো। যাক তোমার নতুন জীবন সরি তোমাদের নতুন জীবনের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা রইলো ভাইয়া।

আরীব : তোমার মতো প্রেমীকের শুভেচ্ছা পেয়ে ধন্য হয়ে গেলাম। ইনশাহ্ আল্লাহ বিয়ে কনফার্ম।

মেঘ : সেলেব্রিটি মানুষ সব। আমাকে ভুলে যেও না আবার,, তোমার উড বি সাদিয়া নাকি সিঙ্গার.? কই সাদিয়া নামে তো কাউকে চিনিনা। নামও শুনিনি।

আরীব : #sR কে চেনো.?
মেঘ : ওই মেয়েটাকে কে না চেনে। টিভির প্রতিটা গানের চ্যানেলে ওর গান। কয়েকটা শর্টফিল্ম আর ট্রাকিং সং ও করেছে গত একমাসে। যাই বলো মেয়েটা কিন্তু অনেক সুন্দর গান গায় আমিও শুনছিলাম সকালে ( গানগুলো যে আমাকে বড্ড টানে ভাইয়া সেটা কিভাবে বলি তোমায়। রোজকে ছাড়া কারোর প্রতি কোনো কিছুর প্রতি আগ্রহ ছিলো না আমার কিন্তু এই এস আর এর গানগুলো এক অদ্ভুদ মায়ায় বেঁধে ফেলেছে আমাকে। )

আরীব : ওই নামটাই সাদিয়া ইউজ করে। জানি না নামের মানে কি কারন ওর নাম সাদিয়া খাঁন এই R আসলো কোথা থেকে.? বুঝলে মেয়েটা অনেক চাপা প্রয়োজন ছাড়া তেমন কথাও বলেনা।

মেঘ : আমার রোজও এমন ছিলো।
আরীব : তাই.? বাহ বেশ তো আমাদের দুজনের ভালোবাসার মানুষের অনেক মিল তো।

মেঘ : আচ্ছা এই কার্ডগুলো আমি নিয়ে যাচ্ছি। যেতে যেতে দিয়ে দিবো। কাল কলেজে যেতে হবে। তাই আর থাকতে পারলাম না।

আরীব : সাদিয়াকে দেখবে না.?
মেঘ : কলেজে এসো। সবাই দেখবে সুপাস্টার আরীব মাহমুদ আর তার সিঙ্গার ফিয়ান্সি সাদিয়া খাঁনকে।

আরীব : খুব একটা মন্দ বলোনি। ঠিক আছে কাল নিয়ে যাবো ওকে। বাই।

???
এয়ারপোর্টে দাড়িয়ে আরীবের জন্য অপেক্ষা করছে সাদিয়া আর সুমি। ওদিকে জ্যামে আধাঘন্টা বসে সবে গাড়ি নিয়ে আসলো আরীব।

আরীব : সরি আসলে জ্যামে আটকে গেছিলাম। এবার চলো। ল্যাগেজ দাও ড্রাইভার ডিকিতে উঠিয়ে দিচ্ছে।

সুমি : ঠিক আছে।

আরীব : সাদিয়া আজ যদি আমরা আমার বোনের কলেজ হয়ে যাই কোনো অসুবিধা হবে.? আসলে কলেজের অনেকেই তোমাকে দেখতে চেয়েছে। ওরা সবাই কলেজেই আছে।

সাদিয়া : কলেজে.?
সুমি : আমি যাবো। আমার ঘুরতে ভালো লাগে। কিন্তু আগে একটু ফ্রেস হয়ে নিলে ভালো হতো। শাড়ি পড়বো আমি।

আরীব : শাড়ি পড়বে.? যদি সম্রাটের বউ কিডন্যাপ হয়ে যায়.?
সুমি : সাদিয়াও পড়বে। কিডন্যাপ হলে দুজন একসাথে হবো। তুমি নিশ্চই ওকে কিডন্যাপ হতে দিবে না।।। ব্যাস। আমিও বেঁচে গেলাম।

আরীব : সামনে একটা হোটেল আছে ওখান থেকে চেন্জ করে নিও। কোয়েলদের কলেজটা কিন্তু অনেক সুন্দর। প্রাইভেট কলেজ তো।

সাদিয়া উঠে ড্রাইভারের পাশের সিটে বসলো। আরীবও নিরুপায় হয়ে সুমির পাশে বসলো। ওরা ড্রেস চেন্জ করে আবার গাড়িতে উঠলো। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যেই সাদিয়া মুখ মলিন হয়ে যায়। গাড়িয়া #MR কলেজের দিকে যাচ্ছে।

সাদিয়া : এই কলেজ..? এই কলেজ কেন.?
আরীব :এই কলেজেই তো আমার বোন কুহু পড়ে। এটা মেঘদের কলেজ। আমার বোনের বন্ধু মেঘ।

সাদিয়া : কুহু.? আপনি তো বলেছিলেন আপনার আপনার বোনের নাম কোয়েল মাহমুদ

আরীব : হ্যা কোয়েল মাহমুদ। ডাকনাম কুহু।

সাদিয়া : ( ডেস্টিনি আবার আমাকে তোমাদের সামনে নিয়ে আসলো। জানিনা কি হবে। কিন্তু এটা জানি যে এবার কষ্টটা আমার বদলে তোমরা পাবে। হয়তো তোমাদের চেয়ে বেশি কষ্ট আমি পাবো কিন্তু সহ্য করার ক্ষমতা এখন সাদিয়া আছে যা রোজের ছিলো না।) ওহ।

সাদিয়া গাড়ি থেকে নেমে প্রাণখুলে শ্বাস নিলো। তারপর নিচু হয়ে কুচি ঠিক করতে লাগলো। ততক্ষনে সেখানে ভীর জমে গেছে। আরীব এসেছে বলে কথা।

কলেজ ক্যাম্পাসে তখন পাঞ্জা লড়াই খেলছিলো আয়াশ,, নীলাদ্র খান আয়াশ। আরাভের ছোট ভাই,, তবে সেম ক্লাসে পড়ে। কলেজে আরাভ আর মেঘের অনুপস্থিতিতে আয়াশই সবার ওপর লিডারশীপ করছে। দেখতে মাশাআল্লাহ ভালোই তবে ইগো বেশি। গেটের কাছে ভীর দেখে ও সবাইকে সরে দাড়াতে বললো। সাদিয়া সামনের দিকে হেটে আসছে। ঠিক কলেজের প্রথমদিনের মতো নীল শাড়ি,, নীল চুড়ি,, নীল টিপ। চুলগুলো ছেড়ে দেওয়া। গোলাপী ঠোট নাড়িয়ে আনমনে কথা কথা।

কলেজের বেশিরভাগ স্টুডেন্ট সাদিয়াকে দেখে শক্ড। শুধু আয়াশই কলেজে ছিলো না বলে সাদিয়াকে চিনতে পারেনি।

আয়াশ : মেয়েটাকে আমার কাছে নিয়ে আয়।
দুজন গিয়ে সাদিয়াকে ডেকে আনলো। সাদিয়া ভ্রু কুচকে ওদের দিকে তাকালো। এখন তো Ragging এর রুলস নেই তাহলে কেন ডাকছে.? আয়াশের সামনে আসতেই আয়াশ বললো,,

আয়াশ : বিউটিফুল।। তোমার নাম কি.?
সাদিয়া : সাদিয়া, সাদিয়া খাঁন।

আয়াশ : কলেজে নতুন..?
সাদিয়া : পুরোনো হলে নিশ্চই জানতেন। দেখে তো মনে হচ্ছে কলেজের সেরা বখাটে।

সাদিয়ার কথায় সবাই ভয়ার্ত চোখে তাকালো। সাদিয়া ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে পেছনে ঘুরতেই আয়াশ রেগে বললো,,

আয়াশ : তোমার সাহস হলো কিভাবে আমাকে একথা বলার.?
সাদিয়া : কথা বলার জন্য সাহসের না মুখের প্রয়োজন। যা আমার একার না সবার আছে। সো এমন ফালতু কুয়েশ্চন না করে ভালো কিছু আস্ক করুন।

আয়াশ : তোমাদের মতো মেয়েরা শুধু মুখেই বড় বড় লেকচার দিতে পারে,, কাজে কর্মে অকর্মার ঢেকি…

সাদিয়া : মেয়েদের এমন সিলি ব্যাপারে বেশ অভিজ্ঞতা আছে দেখছি। যদি চান তো হাতে কলমে দেখাতে পারি যে আমার মতো মেয়েরা ঠিক কি কি পারে।

আয়াশ: আচ্ছা.? অকে দেন আমাকে পাঞ্জাতে হারাও। এই পর্যন্ত কলেজের কেউ আমাকে হারাতে পারেনি। যদি হারাতে পারো তাহলে যা চাইবে তাই পাবে।

সাদিয়া : ভেবে বলছেন তো.?
আয়াশ : 100পার্সেন্ট।

সাদিয়া চেয়ার টেনে বসতেই উপস্থিত সকলে হেসে উঠলো। আয়াশকে হারাবে এমন কেউ এখনো জন্মায়নি এটাই সকলের ধারনা। আর কো থেকে একটা মেয়ে এসে আয়াশের চ্যালেঞ্জ এক্সেপ্ট করলো… আয়াশ হেসে চেয়ার নিয়ে বসে সাদিয়ার হাতে হাত রাখলো। আয়াশ সাদিয়াকে প্রথমে খেলার ছলে নিলেও এখন পরিস্থিতি অন্যদিকে এগোচ্ছে। আয়াশ নিজের হাতে ব্যাথা অনুভব করছে। সবাই মজা নিয়েই ওদের লড়াই দেখছে। একমুহূর্তে আয়াশের হাত টেবিলের সাথে ঠেকলো
আর সবার মুখ কালো হয়ে গেলো। সাদিয়া উঠে তাদের দিকে তাকালো যারা ওকে দেখে হেসেছিলো।

সাদিয়া : কাউকে বিদ্রুপ করার আগে তার সাথে নিজের যোগ্যতা মিলিয়ে যাচাই করবে। কারন যার ওপর হাসবে দিন শেষে হয়তো তারই হাসির খোরাক হবে।

আয়াশ : কাজটা তুমি ঠিক করলে না।
সাদিয়া : বেঠিক কি করলাম..? আর একটা কথা নেক্সট টাইম থেকে পাঞ্জা লড়ার সময় হাত ধরার টেকনিক আর টুইস শিখে নিবেন তাহলে হয়তো সম্মান নিয়ে বাড়ির ছেলে বাড়ি ফিরতে পারবেন।

আয়াশ : তোমাকে তো।

আয়াশ রেগে সাদিয়ার হাত ধরতেই,, সাদিয়া প্যাচ দিয়ে আয়াশের হাত শক্ত করে চেপে ধরে,,

সাদিয়া : আমাকে অন্য মেয়েদের মতো ভেবে ভুল করবেন না। আমাকে টাচ করার অপরাধে, চাইলেই আপনার হাতসহ আপনাকে এখানে কুচিকুচি করে কিমা বানিয়ে দিতে পারি। কিন্তু না দেশে প্রথমদিন এসে ঝামেলায় জড়াতে চাইনা। তাই এবারের মতো ছেড়ে দিলাম নেক্সট টাইম ছাড় পাবেন না।

ঠিক তখন আরীব আর সুমি আসলো। সুমি সাদিয়ার হাত ছাড়িয়ে একটু দুরে সরে দাড়ালো। আয়াশ রেগে সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। আরীব আয়াশের কাধে হাত রেখে বললো,,,

আরীব : ডোন্ট মাইন্ড আয়াশ। ও ওইরকমই। তুমি ওর সাথে ঝামেলা না করলেও পারতে।

আয়াশ : তুমি ওর হয়ে সাফাই গাইছো.? আমাকে অপমান করেছে ও,,, কে ও.? যে তুমি এসে আমাকে বুঝাচ্ছো.? ওকে গিয়ে বোঝাও। আমি তো মজা করছিলাম বাট ও এসে যা নয় তা বলছে।

আরীব : কুল ডাউন আয়াশ। ও তোমার উড বি সিস্টার ইন ল। বাংলাদেশে এই প্রথম এসেছে। তাই তোমার মজা বুঝতে পারেনি। বাদ দাও,,,আর আরাভ মেঘ কুহু ওরা কোথায়.?

আয়াশ : এখুনি নিচে আসবে। ওদের ক্লাস মেবি শেষ। আর তোমার সাদিয়াকে বলো যেন ও আমাকে সরি বলে।

সাদিয়া : সাদিয়া যাকে তাকে সরি বলে না মিস্টার আয়াশ। আর আপনাকে তো বলবোই না। সো ওই আশা ভুলে যান।

আরীব : ওই তো মেঘ।

মেঘের নাম শুনে পেছন ঘুরে তাকালো সাদিয়া। মেঘ আরাভের সাথে কথা বলতে বলতে আসছে। মুখের সেই উজ্জ্বলতা আর নেই,, গাল ভর্তি দাড়ি। চোখ ফোলা,, উসকো খুসকো চুল। ওদের পেছনে গিটার নিয়ে আসছে কুহু। ওদের দেখেই সাদিয়া পেছন ঘুরে যায়। হাত পা কাঁপছে ওর,, ৭মাস পর ভালোবাসার মানুষটাকে এভাবে দেখবে আশা করেনি ও। হয়তো সবটাই নাটক। লোক দেখানো।

আরীব : মেঘ,,,, কুহু,,, মেঘ কাম ফাস্ট ইয়ার।

মেঘ হাসি মুখে ওদের সামনে এসে দাড়ালো,, মেঘের হার্ট ফাস্ট বিট করছে,, চোখের পলক বারবার পড়ছে,, হঠাৎ ওর চোখ সবার পেছনে থাকা নীল শাড়ি পড়া মেয়েটার ওপর গিয়ে আটকালো। অস্থির লাগছে ওর।

আরীব : এই হলো সুমি। সম্রাট খাঁনের একমাত্র বউ। ওর একমাত্র কাজ + শখ ফোটোগ্রাফি আর বিউটিকুইন সাজা।

মেঘ : আর তোমার সে.?
কুহু : ভাবি কোথায় সেটা বলো ভাইয়া। ওই পেছনে নীল শাড়ি পড়া ওটা তাইনা..? দাড়াও আমি দেখছি। পিচ্চি ভাবি মনে হয় লজ্জা পাচ্ছে।

সাদিয়া : নাহ আপু।
সাদিয়া পেছন ঘুরে তাকালো,, মেঘ সাদিয়ার দিকে তাকাতেই কেঁপে উঠলো,, কুহুরাও এক দৃষ্টিতে সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।

আরীব : তুমি পেছনে কি করছো..?? আরে সামনে আসো। সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই। এটা আমার বোন কুহু,, ও আরাভ আর এটা হলো মেঘ। আমাদের সবার সবচেয়ে কাছের বন্ধু।

সাদিয়া : হ্যালো অল।
কেউ কোনো উত্তর দিলো না।

সাদিয়া : কি হয়েছে..? এভাবে কি দেখছেন আপনারা..? আমি কি খুব বাজে দেখতে..?

আরীব কুহুর কাধে হাত রাখতেই কুহু মেঘের দিকে তাকায়। মেঘের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে,, ঠোট চেপে কাঁদছে।

কুহু : রোজ তুমি..?
আরীব : রোজ কে..?? ও তো সাদিয়া।

মেঘ : ও সাদিয়াই তবে সাদিয়া খাঁন না সাদিয়া চৌধুরি রোজ। আমার রোজ। রোজ তুমি আমার সাথে কথা বলছো না কেন.?

সাদিয়া : কে আপনি.? আর আমাকে এসব কি বলছেন.?
মেঘ : রোজ আমি,, তোমার মেঘরোদ্দুর। এমন করছো কেন..? আমি জানি তুমি আমাকে চিনতে পেরেছো। তুমি আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য এসব বলছো তাইনা..?

সাদিয়া : আরে এ কোন পাগল। আরীব আপনার বন্ধুদের মাথার তার ছেড়া নাকি.?

আরীব : মেঘ ও রোজ না সাদিয়া ।

মেঘ সামনে এসে সাদিয়াকে জরিয়ে ধরে কেঁদে দিলো। সাদিয়া মেঘকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিলো।

সাদিয়া : হাউ ডেয়ার ইউ টু টাচ মি। আরীব আপনি চুপ করে আছেন..? ডেকে এনে এভাবে হোস্ট করছেন। বাহহহ

আরীব কিছু বলার আগেই মেঘ হাটু গেড়ে বসে সাদিয়ার হাতদুটো শক্ত করে চেপে কপালের সাথে ঠেকিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলো।

মেঘ : ক্ষমা করে দাও রোজ। প্লিজজ আমি ভুল করেছি। হ্যা ভুল করেছি। তার জন্য যা শাস্তি দেওয়ার দাও তবুও আমাকে এভাবে বলো না। দেখো আমি তোমাকে তুমি করে বলছি। তোমার সব কথা শুনছি। তবুও কেন করছো এমন।

সাদিয়া : হাত ছাড়ুন।
মেঘ : মাফ করে দাও প্লিজ।
সাদিয়া : লাস্ট বারের জন্য বলছি হাত ছাড়ুন।

আরাভ : মেঘ ছেড়ে দে। এমন করিস না।ও তোর রোজ না। রোজ কখনো ওর মেঘরোদ্দুরকে অপমান করতো না কষ্ট দেওয়া তো অনেক দূরে। আর এই মেয়েটা তোর ফিলিংস বোঝার বদলে তোকে পাগল বলছে। এটা কি আদৌ রোজ হতে পারে..?

মেঘ : এটা আমার রোজ। শুধু আমার।আর এটা আমি প্রমাণ করে দিবো।

মেঘ উঠে চোখ মুছে, সাদিয়ার কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে সামনের দিকে হাটা শুরু করলো। সাদিয়াও আয়াশের হাত থেকে পানির বোতল নিয়ে মুখ ধুয়ে গাড়ির দিকে হাটতে আরম্ভ করলো। সবাই অবাক হয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।

সুমি : তাহলে এটাই মেঘরোদ্দুর। ওয়াও আরীবের চেয়েও মারাত্মক প্রেমিক। ইশশ কেন যে ওমন একটা ভুল করলো,, কি দরকার ছিলো মেয়েটার সাথে,,,, সাদিয়া কি রেগে আছে.? নাকি কষ্ট পেয়েছো। বুঝতেই পারছি না। ধুুররর। মেঘকে দেখে তো খারাপ ছেলে মনে হচ্ছে না। তাহলে ঠিক কোনটা.? আমাকে জানতেই হবে। তোকে আর কষ্ট পেতে দিবো না রে বোন। তুই জানিস না তোর দাভাই আমাকে এখানে কেন পাঠিয়েছে। ইনশাহ্ আল্লাহ আমি আমার কাজে সফল হবোই।

চলবে,