তোর উঠানে বিকাল ছায়া পর্ব-২২

0
795

#তোর_উঠানে_বিকাল_ছায়া🥀
২২তম খন্ড
#লেখিকা -লামিয়া রহমান মেঘলা

–আবির!
আবির অফিস থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে খাবারের জন্য নিচে যাচ্ছিল হটাৎ ভাই এর ডাকে ফেরত আসে,
–জি ভাই বলো।
–তোর সাথে আমার দরকার আছে।
–হ্যাঁ ভাই বলো।
–আয় এদিকে আয়।
নির্ঝর আবির কে নিয়ে একটা রুমে যায়।
–আমি যা বলব তা করতে পারবি ত।
— হ্যাঁ ভাই একবার বলে দেখ।
–রুহি কে কিছু দিন দুরে রেখে কষ্ট দিতে হবে।
নির্ঝর এর মুখে এমন কথা শুনে আবিরের হাসি মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেল।
–আমি জানি আবির এটা কষ্টের রুহিও ভিশন কষ্ট পাবে কিন্তু এই মুহুর্তে এর থেকে ভালো কোন উপায় নেই আমাকে বিশ্বাস কর আমার কথা মত চল।
–কি করতে হবে ভাই।
–হুম শোন,
…….
।।।।।
–সব ত বুঝলাম ভাই কিন্তু একটা কথা ত তুমি বললে না।
–কি কথা?
–তোমার জীবন রক্ষ্যা কে করেছে?
–তমা।
নির্ঝর এর মুখে তমার নাম শুনে আবির আকাশ থেকে পরলো যেন।
–কি বলছো ভাই।
–হ্যাঁ।
সেদিন বাড়িতে,
অতিত,
নির্ঝর ছায়ার জন্য খাবার নিতে নামছিল ছায়াকে ঘুম দেখে।
মেয়েটাকে ডেকে ঘুম নষ্ট করতে চায় নি।
শিড়ি দিয়ে নামার সময় নির্ঝর এর ঘাড়ে হটাৎ তিব্র যন্ত্রণা অনুভব করে নির্ঝর।
পিছন ফিরে কিছু করার আগে তমা নির্ঝর কে ধরে নিয়ে যায় বারান্দার অন্য একটা রুমে।
নির্ঝর এর সেন্স ছিল সে বুঝতে পারছিল তার সাথে কি হচ্ছে কিন্তু সে কোন প্রতিক্রিয়া করতে পারছিল না।
ভিশন ভাবে তার হাত পা অবশ হয়ে গেছিল।
নির্ঝর তাকিয়ে দেখতে পায় একটা ছেলেকে ওর মতো দেখতে ওর মতো পোশাক পরা রক্তে মাখামাখি করছে ছেলেটা।
ছেলেটাকে ভুট করে শুইয়ে দেয়।
তার কিছু সময়ের মধ্যে আদনান আসে,
আদনান কে দেখে তমা আদনানের কাছে যায়,
–শেষ তোমার রাস্তার কাটাকে সরিয়ে দিলাম আদনান এবার ছায়া তোমার।
–ধন্যবাদ তমা তুমি আমার অনেক হেল্প করলে তোমার টাকা তোমার বাবার একাউন্ট এ পৌঁছে গেছে নির্ঝর এর মৃত্যুর খবর যেন লিক না হয়।
–অবশ্যই আমার বাবার চাকরির প্রোমোশন তোমার দায়িত্বে ছিল কথাটা ভুলো না।
–বাসায় যাও তমা দেখো তোমার বাবার চাকরির প্রোমোশন হয়ে গেছে।
তমা একটা সয়তানি হাসি দেয়
নির্ঝর এর বুঝতে বাকি রয় না এর পেছনে আসলে কে।
এর পেছনে তমার বাবা এসআই আজিজ রহমান।
নির্ঝর সব বুঝেও কিছু করতে পারছিল না।
নির্ঝর এর সামনে দিয়ে আদনান ছায়াকে নিয়ে যাচ্ছিল টানতে টানতে ছায়ার এক একটা চিৎকার নির্ঝর কে ক্ষত বিক্ষত করেছে হাজার বার।
কিন্তু নির্ঝর পারে নি কিছু করতে শুধু চোখ দিয়ে চেয়ে দেখেছে।
কিছুই যে তার হাতে ছিল না।
আদনান যাবার পর
–নির্ঝর নির্ঝর নির্ঝর তুমি শুধু আমার।
এবার তোমায় শুধু আমার করে রাখবো।
তমাকে থাটিয়ে থাপ্পড় দিতে ইচ্ছে হচ্ছে নির্ঝর এর কিন্তু তার এখন কোন উপায় নেই।
নির্ঝর কে তমার সাথে যেতে হলো।
নির্ঝর ৫ ঘন্টা পর কিছুটা সেন্স এর আসতে তমার ফোন নিয়ে সোজা তার বিশ্বস্ত গার্ড কে ফোন করে
ছায়াকে বাঁচানোর জন্য।
নির্ঝর এর কথা মতো ছায়াকে বাঁচিয়ে আনে নির্ঝর এর গার্ড।
বর্তমান।
–কিন্তু ভাইয়া আপনি ছিলেন কই এতো দিন।
–সেটা পরে বলব আবির। এখন সয়ম না।
–ঠিক আছে ভাই চলুন।
–তুই যা আমি ছায়াকে নিয়ে আসছি।
–আচ্ছা।
,,,,
,,,,,
,,,,,
নির্ঝর ছায়াকে পাজকোলে করে নিচে নিয়ে এলো।
–বাহ আমার বান্ধবির নিচে নেমে সবার সাথে খাবার ইচ্ছে টা তাহলে পূরন হলো কি তাই ত।
ছায়া কিছুটা লজ্জা পেল রুহির কথায়।
রুহি বুঝতে পেরে বলল,
–থাক আর লজ্জা পেয়ে কাজ নেই।
ভাইয়া আজ ওকে এই সব খাওয়াবেন।
বড্ড জ্বালিয়েছে আমায় এই কয় দিন।
–এই বেটি এই।
আমিও দেখব তোমার সময়।
–মেরি জান তোর আই মিন আমাগো শাশুড়ী আম্মা কিন্তু পিছনে।
–ভাগ্যিস শ্বশুর বাড়ি আর তোর সামনে তোর বড়ো ভাসুর আছে।
–কি বলতে চাস তুই।
–তোমরা মানছো কি আমি সামনে আছি (নির্ঝর)
নির্ঝর এর কথায় দু’জন চুপ হয়ে যায়।
দুটোরই বিয়ে হয়েছে এক জন ত মা হবে তাও বাচ্চামি ১০০ তে ১০০।
অটুট থাকুক ওদের বন্ধুত্ব।
নির্ঝর মৃদু হেসে বসে পরে ছায়ার পাশে।
ছায়াকে খাইয়ে নিজে খেয়ে নেয়।
নয়লা বেগম তার হাসিখুশি পরিবার দেখে ভিশন খুশি।
আবার সেই শুখের পরিবার তার।।
খাবার শেষে যে যার রুমে চলে যায়।
ছায়ার চুল বাঁধছিল নির্ঝর।
ছায়ার মাথায় তেল দিয়ে চুলে বিলি কেটে দিয়ে তার পর চুল বেঁধে দিচ্ছে।
–আপনার হাত বুলিয়ে দেওয়া ভালো লাগে।
–ছায়া কয় দিন পর আমার বাবুর মা হবা আর এখনো তুমি আমায় আপনি বলো কেন?
–আপনি ভালো লাগে তাই।
–না তুমি বলো।
–আপনি ত বাচ্চা দের মতো করছেন নির্ঝর।
–হ্যাঁ করছি তুমি তুমি করে বলবা।
–আচ্ছা ঠিক আছে।।
এদিকে বিলি কেটে দেও আমার পিচ্চি বর টা।
নির্ঝর হেঁসে দিলো।
ছায়াকে চুমু দেয়।
–আমি ঘুমাবো।
–আচ্ছা এসো।
নির্ঝর ছায়াকে শুইয়ে দেয়।
ছায়া নির্ঝর এর বুকের মাঝে মাথা দিয়ে
ঘুমিয়ে যায়।
ছায়াকে এতো কাছে পেয়ে ভিশন ভালো লাগে নির্ঝর এর।
যতো কাছে থাকে ছায়া নির্ঝর এর তত ভালোবাসা বাড়ে তাদের মধ্যে।
নির্ঝর চোখ বন্ধ করে নেয়।
,
,
,
–রুহি।
–হুম জি।
–তুমি জি জি করো কেন।
–আমার ভালো লাগে তাই সমস্যা।। —
–ও মা আমাকে ডাকবা আমার সমস্যা হবে না।
–আমার বর কে আমি যা ইচ্ছে তাই বলব আপনার সমস্যা হলে বাইরে জান।।
–আচ্ছা চলে যাবো কিন্তু।
–আরে আরে আমার বর কে রেখে জান।
রুহির কথায় আবির এতো সুন্দর করে তাকায়।
রুহি খিল-খিল করে হেসে দেয়।।
রুহির হাসি দেখে আবির মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে রয়।
–তবে রে দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা।
–এই না না।
আবির রুহিকে কাতুকুতু দিচ্ছে।
–ইয়া আল্লাহ আবির থামুন।
কি করছেন।
আমার পেট ব্যাথা হচ্ছে।
–কেমন লাগে এখন।
–আল্লাহ প্লিজ।
আবির থেমে যায়।
–উফ আপনিও একটা অসহ্য চলে যাবো কিন্তু।
রুহির চলে যাবার কথা শুনে আবির রুহির মুখে হাত দিয়ে দেয়,
–এমন বলবে না কখনো ভয় হয় আমার।
হটাৎ আবির সিরিয়াস হয়ে যায়।।
রুহি বুঝতে পারে না কি এমন বলল সে যে আবির সিরিয়াস হয়ে গেল।
আবির রুহিকে চদরের ন্যায় জড়িয়ে নেয়।
,
ভালোবাসা,
তা শুধু মুখে বললে হয় না ভালোবাসি।
ভালোবাসার জন্য প্রতিটা পদক্ষেপ বুঝতে হয়।
ভালোবাসার মানুষ টার চলাচলতি দেখলে বুঝা যায় সে তোমায় কতোটা ভালোবাসে।
এভাবে পূর্ণতা পাক না ভালোবাসা গুলো।
,
,
তমা পুরো রুম অগোছালো করে রেখেছে।
রাগে তার রুমের সব তচনচ করে রেখেছে।
কিছুই ভালো লাগছে না তমার।
–নির্ঝর এমন কেন করলে নির্ঝর।
–মা এখন ঘুমা সকালে সব হবে।
বাবা কথায় তমা বেডে শুয়ে পরে।
চোখ বন্ধ করে নেয়।
চলবে,
(কিছু গঠন মূলক মন্তব্য করবেম প্লিজ)