ব্ল্যাকমেইলার চাচাতো বোন যখন বউ পর্ব:অন্তিম পর্ব

0
2620

গল্প: ব্ল্যাকমেইলার চাচাতো বোন যখন বউ

লেখক: মেহেদি ইমরান

পর্ব:অন্তিম পর্ব

আমি আবার বলা শুরু করলাম।নাকি আপনার বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া হয়েছে যার কারনে আপনি খাবার খাচ্ছেন না।এটা বলে মনে হয় ভুনল করছি নিধি বসা থেকে উঠে সোজা আমার কলার ধরছে।আমিতো ভয়ে শেষ নিধি এখন আমাকে কি করবে।..

আমি: নিধি আমার কলার ছাড় নাহলে কিন্ত ভালো হবে না

নিধি: খারাপ‌কি হবে শুনি আমাকে আপনি ডাকা আমার বয়ফ্রেন্ড আছে বলা আমাকে ইগনোর করা এর থেকে আর কি খারাপ কি আছে শুনি

কথা বলতে বলতে দেয়ালের সাথে‌ আটকে দিয়েছে এবং দুই হাতের মাঝখানে আমাকে আটকিয়ে রাখছে

কি করবো বল আব্ব বলছে তুই চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত একসাথে থাকতে দিবে না।আমার আবার তোকে ছাড়া ভালো লাগে না তাই তোর সাথে এমন‌ করছি যাতে তুই চাকরি জোগাড় করিস।

আমি: তাই বলে আমকে ভালোবাসা থেকে বন্চিত করবি।

নিধি:দেখ তোকে বললেও তুই গুরুত্ব দেস না তাই তো ভালোবাসা থেকে বন্চিত করছি যাতে তাড়াতাড়ি করিস ।

আমি: আচ্ছা যা বাদ দে এখন আমাকে যেতে দে

নিধি:যা তোকে কে ধরে রাখছে

এখনো আমার দুই সাইডে হাত দিয়ে ধরে রেখেছে

আমি: তুই হাত সরা আমি চলে যাই

নিধি: আমার হাত আমি এভাবে দেয়ালের সাথে কিন্ত সরাবো না

আমি: তাই তুই সরাবি না

নিধি:তুই যা ইচ্ছা কর কিন্ত আমি সরাবো ‌না

আমার হাত দুইটা নিধির কোমড়ে ধরে হালকা টান দিতেই নিধির শরীর আমার সাথে লেগে গেছে আর নিধি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।

আমার একটা হাত কোমড় থেকে সরিয়ে পিঠে স্লাইড করেছি আর নিধি কেপে উঠছে তারপর পিঠ থেকে হাত টা স্লাইড করতে করতে মাথায় হাত টা নিয়ে চুলের উপর দিয়ে মাথাটা চাপ দিয়ে বুকে চেপে ধরছি।এখন নিধি দেয়ালের সাথে লেগে গেছে আর আমি নিধির জায়গায়।

তারপর নিধির হাত দুইটা দেয়ালের সাথে চেপে ধরে মুখটা নিধির সামনে নিতেই নিধি চোখ গুলো বন্ধ করে ফেলছে।হয়তো প্রিয়জনের স্পর্শ অনুভব করার জন্য কিন্ত আমি এই সুযোগে নিধিকে ছাড়িয়ে দরজার সামনে এসে ,তোকে যাতে সবার আগে খাবার টেবিলে দেখি না হলে কিন্ত ভালো
হবে না এমনিতেই তোর উপর আমি রেগে আছি বলেই চলে আসলাম।

নিধি রাগি দৃষ্টি তে তাকিয়ে রইছে আমার দিকে।

জানি এর প্রতিশোধ রাতে ঘুমানোর সময় নিবে।আমি ফ্রেশ হতে হতে খাবারের সময় চলে এসেছে
আমি খাবার টেবিলে যেয়ে দেখি সবাই আসছে কিন্ত নিধি আসে নাই মেজাজ টা‌ পুরাই গরম হয়ে গেলো,তখনি আম্মু আমার হাতে খাবারের বাটি‌‌ দিয়ে বললো

আম্মু:নিধি বলছে তোকে দিয়ে খাবার পাঠাতে তাহলে নাকি খাবে।

আমি : আচ্ছা নিয়ে যাবো কিন্ত আমার খাবার কই

আম্মু: আচ্ছা এই‌নে

দুইটা প্লেট খাবার নিয়ে চলে গেলাম নিধির রুমে যেয়ে দেখি নিধি উল্টো হয়ে শুয়ে রইছে…টেবিলে খাবার গুলো রেখে নিধির কাছে গেলাম যেই নিধির হাতটা ধরতে যাবো তখনি লাফ দিয়ে শুয়া থেকে উঠে আমাকে বিছানায় ফেলে দিয়ে আমার বুকের উপর উঠে গেছে।

ঘটনা এতো দ্রুত ঘটে গেছে আমি কিছুই বুঝতে পারি নি..চেয়ে দেখি নিধি আমার বুকের উপর নিধি এগুলা কি শুরু করছিস নাম বলছি আমার উপর থেকে।

নিধি: না আমি নামবো না সে সময়ের কথা ভুলে‌ গেছিস আমার সাথে ধোকাবাজি..

আমি:দেখ নিধি মন কিন্ত এখন ভালো নেই কিছু করিস না।

নিধি:তোর মন ভালো করার দায়িত্ব শুধু আমার তুই চুপ থাক

আমি:নিধি ঘুমানোর সময় যা ইচ্ছা করিস এখন খাবার গুলো খেয়ে নে প্লিজ..

নিধি:আচ্ছা পরে বাধা দিবি‌ নাতো..

আমি: আচ্ছা দিবো না ।এখন খাবার গুলো খেয়ে নে সারাদিন কিছুই খাসনি

নিধি: তুই আমারে খাওয়াইয়া দিবি..

আমি:তাহলে আমি খাবো কি করে..

নিধি:কেন আমার হাতে খাবি

আমি: আচ্ছা ।তারপর‌ নিধি উপর থেকে উঠে খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে আমার কোলে এসে বসলো..

নিধি: নে এই‌ প্লেট থেকে আমাকে খাওয়াই দে পরের প্লেট থেকে আমি তোকে খাওয়াবো..

আমি: নিধি হাত ধুয়ে নেই পরে খাবি নিধি কোল থেকে নেমে গিয়ে একটা বাটি‌ ও একটা জগ ও গ্লাস নিয়ে হাত ধুয়ে দিয়ে আবার কোলে উঠছে।আসলেই‌ তুই একটা পাগলি..

নিধি: হুম তোর পাগলি তাইতো তোকে জ্বালাই..

আমি: আর আমি পাগল তাইতো কিছু মনে করি না ।তারপর নিধি খাবার খেয়ে আমাকে খাইয়ে দেই..খাবার খেয়ে আমরা বসে কথা বলতাছি..

নিধি: ইমরান আমাকে একটা গল্প শোনা

আমি: শুনবি তুই..

নিধি:হুম

নিধির আম্মু: নিধি ইমরান কে নিয়ে নিচে আয় তোর বড় তোকে ডাকছে

আচ্ছা নিধি নিচে যাই ‌দেখি কি বলে আর রাতে তোকে গল্প বলবো।হুম বলেই ‌আমার সাথে নিচে চলে গেলো।নিধি যেয়ে নিধির বড় আব্বুর কাছে বসলো ‌আর আমি ছোট আম্মুর কাছে…

আব্বয়: ইমরান তোর মা বললো‌ তুই নাকি চাকরি পেয়ে ছিস

আমি: হুম পেয়েছি গতকাল

আব্বু:আচ্ছা ভালো খবর এখন থেকে তোরা দুজন একসাথে থাকবি..

কোনদিন আবার আলাদা ছিলাম বিড়বিড় করে বললাম।পাশ থেকে ছোট আম্মু ধাক্কা দিয়ে বলতাছে..

ছোট আম্মু:ভাবিস না আমরা জানি না আমরা সবাই‌ জানি তোরা প্রথম‌ থেকেই একসাথে থাকিস

ছোট আম্মু কানে কানে বললো।আমি অবাক হয়ে প্রশ্ন সূচক দৃষ্টিতে ছোট আম্মুর দিকে তাকাইলাম‌ আর তিনি মাথা নেড়ে বুঝিয়ে দিলোএ হ্যা হঠাৎ বলে উঠলো আমরা নাতি নাতনীর মুখ কবে দেখবো নিধি।

নিধি:আমরা তো‌এখন এমন কিছুই করলাম না কিরে ইমরান বলিস না কেন

আমার দিকে তাকিয়ে বললো নিধি এমন নির্লজ্জ মার্কা কথা শুনে আমার ফ্লোর ভেঙে নিচে ডুকে যেতে মন চাইছে।আমি যেন লজ্জার কিছু বলতেও‌ পারছি না আবার সেখান থেকে যেতেও পারছি না..

আমার এমন অবস্থা দেখে ছোট আম্মু সবাইকে ইশারা করলো‌ আর সবাই চলে গেলি এখন শুধু আমি আর নিধি আছি।কিরে তোর আক্কেল ‌কবে হবে কোথায় কি বলতে হবে জানোস না

নিধি:আরে ধুর‌ আপন মানুষের কাছে বলতে লজ্জা কিসের।আগে বল তুই চাকরি পেয়েছিস কিন্ত আমাকে বলিস নি কেন

আমি:বলার সময় পাইলাম কই

নিধি: হুম আজকে রাতে খবর আছে তোর

আমি আর কিছু না বলে নিধিকে পাজকোল‌ করে ছাদে যাবার জন্য সিড়িঁ বেয়ে উঠতে লাগলাম‌ আর নিধি প্রশ্ন সৃচক দৃষ্টিতে তাকাইয়া রইছে কিছু বলছে না অনেক খানি অবাক হইছে…

ছাদে যেয়ে নামিয়ে দিলাম আর দুজনেই ‌বসে রইলাম।নিধি তুই না গল্প শুনবি

নিধি:হুম শুনবো তো বল..

একটা ছেলে একটা পরিবারে জন্মগ্রহন করছে‌ তার খেলার সাথী হিসেবে তার তিন বছরের ছোট চাচাতো বোন একমাত্র সঙ্গী।দুজন একসাথে বেড়ে উঠেছে কিন্ত ছেলেটা প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর থেকে মেয়েটিকে ভালোবাসতে শুরু করে কিন্ত কখনো বলে নাই….

একদিন মেয়েটা বলে সে ছেলেটাকে ভালোবাসে।সেদিন ছেলেটা‌এতো খুশি হয়েছিল যে বলার বাহিরে গল্পটা কেমন হয়েছে নিধি…

নিধি :তুই তো আমার আর তোর কাহিনী বলতেছিস ।তবে আমি জানি না তুই‌ আমাকে এতো আগে থেকে ভালোবাসতেছিস…

আমি:হুম এটা আমাদের কাহিনী কিন্ত গল্প না সত্যি..

নিধি: আমাকে সারাজীবন ভালোবাসতে হবে কিন্ত

আমিঃ হুম.??

নিধি:আচ্ছা ইমরান তোকে যখন এটা ওটার ভয় দেখিয়ে কাজ করাতাম তখন কিছু বলতিস না কেন

আমি:কারন তোকে এ জন্যই ভালোবাসতাম।তোর ব্ল্যাকমেইলের পিছনে যে দুস্টুমি রয়েছে না আমি ওইটারি প্রেমে পড়ছিলাম।সেজন্য কতো সুযোগ হাতে পেয়েও তোর ব্ল্যাকমেইল বন্ধ করি নাই।

নিধি: আর তুই আমার পাগলামি সহ্য করিস বলেই‌ তোর‌প্রেমে পড়ছি…

আমি: আচ্ছা এখন ঘুমাবো‌ চল‌ নিচে যাই চল

নিধি: না আমাকে কোলে করে নিতে হবে

কি আর করবো কোলে তো নিতেই হবে নাহলে আবার কি করে কে জানে কোলে করে বিছানায় নামিয়ে দিলাম..

নিধি: কিরে বালিশ দুইটা কেন

আমি:মনে হয় আম্মু দিয়ে গেছে

নিধি:বালিশ একটা থাকবো বুঝলি।আমি তোর বুকে মাথা রেখে ঘুমাবো..

এটা আমি জানি ।তোরে বুকে না নিলে আমারো ঘুম হয়না।নিধি একটা বালিশ নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।আর আমি শুয়ে রইলাম।কিছুক্ষন পর নিধি এসে আমার উপর শুয়ে রইলো। নিধি এখন আমরা তুমি করে বলি

নিধি:না আমি তোকে তুই করেই বলবো

দেখ আমরা যদি তুই ‌করে বলি লোকে কি বলবে আমাদের সন্তান কি শিখবে নিধি সন্তানের কথা শুনেই আমার শাটের কলার চেপে‌ ধরে বুকে সাথে মাথা চেপে ধরছে মনে হয় লজ্ঞা পাইছে নিধি আমার দিকে তাকা

নিধি : না তাকাবো না আমার লজ্জা করে

আমি:আব্বু আম্মুর সামনে যেটি‌ বললি তখন লজ্জা করে নাই

নিধি:না করে না

আমি:নিধি চল আমরা তুমি করে বলা প্রেকট্টিজ শুরু করি এখন থেকে..

নিধি: আচ্ছা

আমি: প্রথমে তুই আমাকে ভালোবাসি বল

নিধি:আমি তোমাকে ভালোবাসি

আমি:পাগলি লজ্জা পেতে হবে না তবে তোমার শাস্তি আছে

.নিধি: কি শাস্তি

আমি: আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য আজকে সারারাত আদর করতে হবে তোমার..

তবেরে শয়তান বলেই জরিয়ে ধরা অবস্থায় চুমু দিয়ে ধরছে ওদের একা ছেড়ে দেন। পরবতীতে ওদের সন্তান কোনো গল্প তৈরি করবে…..

সমাপ্ত……