#ভালোবাসি
#পর্বঃ১২
#Tanisha Sultana (Writer)
মায়ার পাশে মুরা টেনে বসে আছে সায়ান। মায়া অন্য দিকে মুখ করে তাকিয়ে আছে
“মায়া কি হয়েছে? কেনো এমন করেছো?
” আমি বাঁচতে চায় না সায়ান। আমার আর কেউ রইলো
মায়া কেঁদে ওঠে
“মায়া কান্না করো না প্লিজ। তোমার বাবা মা কোথায়?
” ওরা হারিয়ে গেছে
“আমাকে বলো আমি খুঁজে এনে দেবো
” ওরা আর ফিরবে না
মায়া জোরে কান্না শুধু করে। সায়ান মায়ার মাথায় হাত বুলায়।
সায়ান চলে যাওয়ার দুইদিন কেটে গেছে। এই দুইদিনে সায়ান অনেক বার তুলির সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে কিন্তু পারে নি। আজ তুলি আর তুলির মা নানুবাড়ি থেকে নিজেদের বাড়িতে চলে আসছে। তুলির হাতে ব্যান্ডেস দেখে তুলির কাকিমা দাদু কাকায় সবাই তুলির মাকে অনেক বকা দিয়েছে। অন্য সময় হলে তুলি কিছু বলতো। কিন্তু আজ কিছু না বলে রুমে চলে যায়।
জানালার কাছে বসে আছে তুলি হঠাৎ করে বাইরে নজর যায়। কয়েকজন ছেলেরা ফুটবল খেলছে। তুলি রুমে এসে থ্রিকোয়াটার আর টির্শাট আর পরে বাইরে চলে যায়।
পোলাপানের সাথে ফুটবল খেলছে।
খেলতে খেলতে সন্ধা হয়ে আসে। ঘেমে নেয়ে তুলি বাসার দিকে পা বাড়ায়। দরজার কাছে আসতেই সায়ানের গাড়ি আসে। সায়ান আর মায়াকে দেখে তুলি তাকিয়ে থাকে। দরজায় কলিং বেল বাজায় তুলির মা দরজা খুলে দেয়। তুলি বাসায় পা দিতেই সায়ান ডাকে। তুলি কথা না বলে ভেতরে ঢুকে। সায়ান আর মায়াও ঢোকে।
দাদু সায়ানের মা বাবা সবাই চলে আসে।
“সায়ান তুমি একে নিয়ে এসেছো কেনো?
দাদু রেগে বলে
সায়ান জবাব না দিয়ে তুলির কাছে এগিয়ে যায়। একবার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নেয়। তারপর দাঁতে দাঁত চেপে বলে
” ফোন বন্ধ কেনো তোর? পবলেম কি
তুলি কিছু বলে না
“কি হলো চুপ করে আছিস কেনো?
ধমক দিয়ে বলে সায়ান। তুলি কেঁপে ওঠে
” থামো তুমি। তোমার সাহস হয় কি করে তুলিকে ধমক দেওয়ার।
“বাবা তুমি এভাবে বলছো
” তুমি এই মেয়েকে নিয়ে এখুনি চলে যাও (দাদু)
“দাদু আমার কথাটা শুনো
” কিচ্ছু শুনতে চায় না। আমি আমার নিজের ছেলেকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি। আর তুমি কোন ছাড়।। তুমি চলে যাও। আমি আমার তুলিকে অনেক ভালো ছেলের সাথে বিয়ে দেবো। যো তোমার মতো চরিত্রহীন হবে না
“দাদু
” চুপ করো
“দাদু ওনারা এখানেই থাকবে
তুলি মাথা নিচু করে বলে
” কি বলছো তুমি তুলি?
“এই প্রথম তোমার কাছে কিছু চাইলাম আশা করি তুমি আমাকে ফেরাবে না।
তুলি রুমে চলে আসে। তুলির পেছনে সায়ানের মা আসে
” তুলি
“হিম বলো
” তুই এভাবে জিনের অধিকার ছাড়বি না। সায়ান তোর স্বামী ওকে নিজের করে রাখা তোর কর্তব্য। ওই মায়াকে তাড়ানোর দায়িত্ব তোর। বুঝলি
কথা গুলো বলে চলে যায় সায়ানের মা। তুলি বিছানায় বসে পরে।
“কি করবো আমি? লড়াই করবো নাকি অধিকার ছেড়ে দেবো। নাহহ আমি অধিকার ছাড়বো না। সায়ান আমার ও আমার স্বামী।
হঠাৎ সায়ান তুলির রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দেয়। তুলি দাঁড়িয়ে পরে। সায়ান তুলির গলা চেপে ধরে
” খুব সাহস তোর তাই না। আমাকে ইগনোর করোস। ফোন বন্ধ করে রাখোস
তুলির চোখ লাল হয়ে যায়। সায়ান ছেড়ে দেয়। তুলি গলা ধরে কাশত থাকে। তুলি ফ্লোরে বসে পরে। সায়ানও বসে পরে। চোখ বন্ধ করে রাগ কমানোর চেষ্টা করে সায়ান। তুলির কাশি থেমে যায়।
তুলি বিছানায় বসে। সায়ানও তুলির পাশে বসে।
সায়ান তুলিকে জড়িয়ে ধরে।
“তুই জানিস কতোটা কষ্ট হয়েছে। কেনো ফোন বন্ধ রেখেছিলি। কেনো বল
“আপনি আমাকে ভালোবাসেন?
সায়ান তুলিকে ছেড়ে দেয়
” কি হলো ভালোবাসেন না তাইতো।
সায়ান কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না৷ তুলি আর কোলে বসে পরে। সায়ানের মুখটা ধরে বলে
“ভালোবাসো আর নাইবা বাসো শুধু আমায় ভালো বাসতে দিও
তুলির গান শুনে সায়ানের কাশি উঠে যায়।
” আমার গানটা আপনার গলায় আটকে গেলো না কি?
“না মানে
” কোনো মানে টানে নাই। আমি আপনার কে হই?
তুলির প্রশ্নে সায়ান ভেবাচেকা খেয়ে যায়।
“তুই আমার কে?
” হুম কে আমি
“তুই আমার বো
তুলি সায়ানের চুল টেনে বলে
” কি
“বউ
তুলি সায়ানকে জড়িয়ে ধরে বলে
” আমার সোনা বরটা
সায়ান তো তুলির বেবহারে অবাক
“তুলি তুই ঠিক আছিস
” হুম আমি তো একদম ফিট আছি।
মায়া তুলির রুমে নক করে
“কেে
তুলি বলে
” আমি মায়া সায়ান এসেছে এখানে
“হুম কেনো?
” ও কে একটু আসতে বলো
“ও এখন রোমান্স করছে। যেতে পারবে না
সায়ান তো অবাক।
” আমি তো
তুলি সায়ানের মুখ টিপে ধরে। মায়া রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চলে যায়।
“তুই মিথ্যা কেনো বললি
” তো কি আপনাকে ওই অশান্তির কাছে যাইতে দিমু
“ওর মেবি কোনো দরকার ছিলো
তুলি সায়ানের কোল থেকে নামে
” যান
তুলি মুখ গোমড়া করে বলে। উঠে চলে যায়।
মায়া মায়াকে যে রুমে থাকতে দেওয়া হয়েছে সেই রুমে পায়চারি করছে। তখন সায়ান নক করে। মায়া দরজা খুলে সায়ানকে জড়িয়ে ধরে
“মায়া এসব কি হচ্ছে
মায়া সায়ানকে ছেড়ে দেয়
” সরি
“কেনো ডেকেছিলে
” ডিস্টার্ব করলাম না কি
“তেমন কিছু না
” আমার ঔষুধ গুলো খুঁজে পাচ্ছি না
সায়ান মায়ার ঔষুধ গুলো দেয়।
“এবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরো
” সায়ান তুমি আমার সাথে থাকো না
“হোয়াট
” না মানে আমার একা ভয় করছে
“ঠিক আছে তুমি শুয়ে পড়ো। আমি এসে তোমায় দেখে যাবো।
সায়ান চলে যায়। তুলি ড্রেস চেঞ্জ না করেই ঘুমিয়ে পরে।
” এই মেয়েটাও না এভাবেই ঘুমিয়ে পড়েছে।
সায়ানও তুলির পাশে শুয়ে পরে।
সকাল বেলা মায়ার চেচামেচিতে তুলি সায়ানসহ বাড়ির সবার ঘুম ভেঙে যায়। সবাই মায়ার রুমে যায়। মায়া না কি কিছু একটা দেখে ভয় পেয়েছে। মায়া কাচুমাচু হয়ে বসে আছে। সায়ান মায়াকে বোঝাচ্ছে
“আচ্ছা মায়া আপু তুমি তো তোমার বাড়িতে একাই থাকতে তাই না
” হুম
“তখন ভয় পেতে না
” তখন তো বাড়িটা চেনা ছিলো।
“ওহহ। আচ্ছা কাল থেকে তোমার সাথে রুহি থাকবে
” না মানে রুহিও তো ছোট
“তো তুমি কি সায়ানের সাথে থাকতে চাও না কি
” তুলি কি সব বলছিস (সায়ান)
“নাটক বন্ধ হলে আমরা যেতে পারি (দাদু)
” হুম দাদু চলো। মায়া আপুর সায়ান হলেই চলবে
সবাই চলে যায়। সায়ান আর মায়া বসে আছে
“মায়া এসব কি
” সত্যি ভয় পেয়ে গেছিলাম
“এরকম করলে তোমাকে আমি এই বাড়িতে রাখতে পারবো না
মায়া সায়ানের হাত ধরে বলে
” আমি আর এমন করবো না। প্লিজ আমাকে থাকতে দাও
সায়ান কিছু না বলে চলে যায়। তুলি আজ ফ্রেশ হয়ে লাল থ্রিপিস পরে। সায়ান দরজার সামনে দাঁড়িয়ে তুলিকে দেখে
চলবে