মিস্টার ভিলেন পর্ব-৫+৬

0
1830

পর্ব ৫+৬
#মিস্টার ভিলেন
পর্বঃ৫
?সামিরা পপি?
______________________________
______________________________

সামিরা, রুপালি ও আরশি কলেজ ক্যান্টিনে বসে নাস্তা খাচ্ছে আর আড্ডা দিচ্ছে।সামিরা সকালে ঘরে তেমন নাস্তা খায় না।আসলে খাওয়ার ইচ্ছে থাকেনা। আর কিছু না খেলেও চা’টা অবশ্যই খাবে।চা খাওয়াটা সামিরার জন্য এক প্রকার রোগ হয়ে দাঁড়িয়ে আবার এক প্রকার রোগের ওষুধও।ছোট বেলা থেকে চা খেলেও তবে এত বেশি প্রভাব পড়েনি।যতটা এখন প্রভাব পড়েছে।এই চা না খেলেই মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যাই।তখন মনে হয় মাথায় কেউ হাতুড়ি দিয়ে বারি দিচ্ছে।যতক্ষন চা খাওয়া হবে না ততক্ষন মাথা ব্যাথাও যাবেনা।তবে চা’য়ে অবশ্যই কড়া লিকার,তিন চামচ চিনি ও বেশি করে দুধ দিতে হবে তবেই হবে পার্ফেক্ট চা।

সকালে ঘর থেকে শুধু খালি চা’টুকু খেয়ে এসেছে ফলে এখন খিদে পেয়েছে।তাই আরশি ও রুপালিকে টেনে হিচড়ে নিয়ে এসেছে ক্যান্টিনে।তিনজনের জন্যই চা দিতে বলেছে তবে সামিরার জন্য বেশি করে চিনি ও দুধ দিয়ে বানাতে হবেই।সামিরার চা’য়ে তিন চামচ চিনির কথা শুনে আরশি বলল,

–“সামু তুই যে পরিমানের মিষ্টি খাস দেখবি অল্প বয়সে তোর ডায়াবেটিস হয়ে যাবে।এত মিষ্টি খাস না।পড়ে এর জন্য অনেক প্রব্লেম হবে।”

সামিরা মুখ বাঁকিয়ে জবাব দিল,

–“ওই বুড়ি চুপ থাক।বুড়িদের মত জ্ঞান দিতে আসবি না একদম।আর হ্যাঁ আমার চা’য়ের দিকে তো নজর মোটেও দিবিনা।তুই তো জানিস আমি বিরিয়ানির ভাগ সবাইকে দিলেও চা’য়ের ভাগ কেউকে দেয় না।”

রুপালি ও আরশি একে অপরের দিকে চাওয়া চাওয়ি করছে।আরশি কি বলবে বুঝতে পারছে না।আর রুপালি সামিরার কথা শুনে হু হা করে হেসে দিল।এই রুপালি মেয়েটা এমন যে একবার হাসা শুরু করলে সহজে থামতেই চাই না।দেখে মনে হবে কেউ তার মুখে লাফিং গ্যাস মেরে দিয়েছে।তবে সামিরাও কম না।সে’তো যেকোন সিরিয়াস মোমেন্টেও হেসে দেয়।আর এই জন্য মায়ের কাছে কত শত বকাও খেয়েছে হিসেব ছাড়া।

রুপালি হাসতে হাসতে এই বুঝি দম বন্ধ হয়ে যাবে।কিন্তু সেদিকে খেয়াল নেই তার।সে হেসেই চলেছে পেট ধরে।সবাই রুপালির দিকে তাকিয়ে আছে।রুপালির হাসি দেখে সামিরা বিরক্ত হয়ে দিল এক ধমক।সাথে সাথেই রুপালির হাসি গায়েব।,

–“এই চুপ।একদম চুপ কর।যেভাবে ভ্যাটকানো শুরু করেছিস দেখে সবাই এখন তোকে পাগল ভাবা শুরু করে দিয়েছে।আর এইখানে কি আমি কোন জোক্স বলেছি?যে এইভাবে হাসতে হবে?যত্তসব ফাউল।”

রুপালির হাসির মাঝখানেই কখন যে চা আর সিঙ্গারা দিয়ে গেছে সে খেয়ালি করেনি।সামিরা আপন মনে খাচ্ছে।আর রুপালির দিকে তাকিয়ে দেখে রুপালি খাচ্ছেনা।তাই বলল,

–“কি ব্যাপার?খাচ্ছিস না কেন?তোর চা তো ঠান্ডা শরবত হয়ে গেছে।এইদিকে দে তুই না খেলে আমি খায়।”

সামিরার কথায় রুপালি তাকিয়ে দেখে তার সামনে চা আর সিঙ্গারা।তাই বলল,

–“এই না না আমারও খিদে পেয়েছে।আমি খাবো তবুও তুই খাস না।”

আরশি ভ্রু নাছিয়ে বলল,

–“কি ব্যাপার রুপালি?তুইও দেখছি সামিরার মত বিহেভ করছিস!তাও আবার চা’য়ের জন্য!”

———

নাবিল,রাজ আর আহান মাত্রই ক্লাস থেকে বেড়িয়েছে।তিনজনেই পাশাপাশি হাঁটছে।আর জনির ব্যাপারে কথা বলছে কিভাবে জনিকে শায়েস্তা করা যাই।এদিকে আবার হস্পিটালেও যেতে হবে ছেলে গুলোকে দেখতে।তার আগে কিছু খাওয়া দরকার তাই রাজ বলল,

–“নাবিল,আহান চল ভাই আগে খেয়ে আসি কিছু।আমার তো খুব খিদে লেগেছে।আর তাছাড়া হস্পিটালে যাব বাড়ি যেতেও লেট হবে।ততক্ষন তো আর না খেয়ে থাকা সম্ভব না।তাই চল আগে ক্যান্টিনের থেকে কিছু খেয়ে আসি।”

নাবিল আর আহানও আর কিছু বলল না।প্রায় দুপুর হয়ে গেছে বেশ পরিমানের খিদেও পেয়েছে।নাবিলরা ক্যানিটিনে গিয়ে এক পাশে চেয়ারে বসে পড়ল।কিছুক্ষন পর একটা ছেলেকে ডেকে বলল তাদের নাস্তা দিতে।কিন্তু এর ভেতর ওরা কেউ খেয়াল করেনি সামিরাকে।সামিরারাও খেয়াল করেনি।নাস্তা দিয়ে গেলে খেতে লাগল আর টুকটাক কথা বলতে লাগল তারা।এর ভিতর সামিরাদের খাওয়াও শেষ।রুপালি গিয়ে বিল মিটিয়ে যেই সামিরাদের দিকে আসতে লাগল তখনি দেখল রাজরা বসে আছে।রুপালির ঠোঁটে হাসির রেখা দেখা গেল তখন।দ্রুত পায়ে সামিরার সামনে এসে বলল,

–“দোস্ত ওই দেখ নাবিল।”

সামিরা আর আরশিও তাকাল।নাবিলকে দেখে সামিরার চোখ দু’টো চকচক করে উঠল।সাথে সাথে উঠে নাবিলের দিকে গেল।এইদিকে রুপালি বলল,

–“বস আরশি।এখন আমরা মজা নিব।আচ্ছা তুই বস আমি গিয়ে তোর আর আমার জন্য চিপস নিয়ে আসি।খেতে খেতে দেখব।”

——

সামিরা নাবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়াল।নাবিলরা সামিরার দিকে তাকাল।মুহুর্তেই নাবিলের মুখে বিরক্তির ছাপ দেখা দিল।আর সামিরা দিল সুন্দর একটা মুচকি হাসি।রাজ আহান সামিরাকে দেখে উঠে দাঁড়াল।নাবিল ভ্রু কুচঁকে বলল,

–“কি ব্যাপার দাঁড়ালি কেন?বস।”
আহান বলল,

–“হুম বসব।আমরা ওইদিকে গিয়ে বসি।”

বলেই নাবিলকে কিছু বলতে না দিতে তারা অন্য টেবিলে বসল।আর সামিরা নাবিলের সামনে বরাবর বসল।আর বলল,

–“মিস্টার ভিলেন কেমন আছেন?ওহ ওয়াও আপনাকে নেভি ব্লু কালার শার্টে খুব সুন্দর লাগছে।ইশ সকালে আমি খেয়ালও করিনি।”

নাবিল বিরক্তি মাখা কন্ঠে বলল,

–“আমি এইটাই বুঝতে পারছিনা আসলে তোমার সমস্যা কোথায়?এত কথা বলার পরেও,এত অপমান করার পরেও,পাত্তা দিচ্ছি না দেখার পরেও কেন আমার পিছে পড়ে আছো?”

সামিরার শান্ত দৃষ্টি নাবিলের দিকে রেখে বলল,

–“কারন আমি আপনাকে ভালবাসি তাই।আপনি কি সত্যিই আমার ভালবাসাকে বুঝতে পারছেন না?”

–“না বুঝতে পারছি না।ইনফেক্ট বুঝতে চাইছি না।আমি যেমন তেমন মেয়ের সাথে রিলেশনে জড়াতে চাইনা।আমি যার সাথে রিলেশনে জড়াব বা যাকে বিয়ে করে লাইফ পার্টনার করব সে আমার মনের মত হতে হবে।আমার কথা মত চলতে হবে।কোন উশৃঙখল ভাবে চলা ফেরা করা যাবে না।নিজের মধ্যে লজ্জাবোধ রাখতে হবে।আমার এত এত চাহিদার মধ্যে একটা চাহিদাও আমি তোমার কাছে দেখিনা।তুমি তোমার ইচ্ছে মত চলাফেরা কর।এইসব শার্ট,জিন্স পড়ে চলা ফেরা কর।নূন্যতম লজ্জাবোধ ত নেই।যেখানে তুমি স্বাধীনতা খোঁজো সেখানে তুমি আমার এই সকল কিছু মানতে পারবেনা।তাই আমি তোমাকে পাত্তা দিতেও চাই না।সো প্লিজ লিভ মি।আমার পিছু ছেড়ে দাও।”

সামিরা এতক্ষন নাবিলের সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনল।একটা মুচকি হাসি দিয়ে নাবিলের দিকে তাকিয়ে বলল,

–“ওহ এই ব্যাপার।আচ্ছা আমি যদি আপনার মনের মত হই তাহলে তো কোন প্রব্লেম থাকবে না তাই না?আপনি তো তখন আমাকে মেনে নিবেন।”

নাবিল সামিরার দিকে তাকিয়ে বলল,

–“মানে?”

–“মানে এইটা যে,আমি আপনার সব কথা মেনে চলার চেষ্টা করব।এইসব শার্ট জিন্স পড়া বাদ দিব।সম্পূর্ন আপনার মনের মত হয়ে যাব।তখন ত আপনি মানবেন।”

নাবিল চুপ থেকে বলল,

–“দেখা যাক। আগে আমার মনের মত হয়ে দেখাও তখন না হয় ভেবে দেখব।”

বলেই নাবিল উঠে চলে গেল।পিছে পিছে রাজ আর আহানও ছুটল।সামিরা সকালের মত এখনও চেঁচিয়ে বলল,

–“মিস্টার ভিলেন পরে কিন্তু কথার খেলাফ করবেন না।নয়তো প্যারা এখনের তুলনায় বাড়িয়ে দিব।”

নাবিলও প্রত্যেক বারের মত মুচকি হাসল আর সামিরাও।

পর্বঃ৬
?সামিরা পপি?
__________________________
__________________________

সকালে নাস্তা ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল গুলোকে উঁচু করে হাত খোপা করে নিল সামিরা।একটা নেভি ব্লুক ও সাদা কালারের কম্বিনেশনের থ্রি-পিচ পড়েছে।চোখে কাজল,ঠোঁটে হাল্কা লাল লিপস্টিক। হাতে ডান হাতে কয়েকটা সিলভার কালারের চুড়ি। মাথায় হিজাব করে নিয়েছে।নিজেকে কয়েকবার খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে স্ক্যান করে নিল।তারপর ঠোঁটে একটা মুচকি হাসি এনে নিজেই নিজেকে বলতে লাগল,

–“এইতো সামিরা এইটাই তো তোর আসল রুপ।হ্যাঁ এইটাই তোর আসল রুপ।এতদিন শুধু তানির বাজির কারনে তোকে শার্ট,জিন্স পড়তে হয়েছিল।সেটা তো আর নাবিল জানেনা।যাই হোক।এইবার থেকে তোর এই লুকই থাকবে।আর নাবিলকেও তোর করে নিবি।এট এনি কস্ট।তবে হ্যাঁ এতদিন নাবিলের পেছনে ঘুরেছিস এইবার আর নয়।এখন থেকে সাদাসিধে একজন সহজ সরল মেয়ে হয়ে থাকবি।যেটা তোর আগেও ছিল।”

নিজেই নিজেকে এইসব বলে একটু হাসল।তারপর মোবাইলে টাইম দেখল।প্রায় নয়টা বাজে।তাই আর দেরি না করে কাধে ব্যাগ ঝুলিয়ে বেড়িয়ে পড়ল কলেজের উদ্দেশ্য। প্রায় বিশ মিনিট পর কলেজে এসে পৌঁছালো।নাবিলরা প্রতিদিন যেখানে আড্ডা দেয় সেখানেই বসে আছে সবাই।আশ্চর্য্যের বিষয় হলো গতকাল এত কিছু হওয়ার পরেও আজকে আবার তানি নাবিলের কাছে।এইদিকে সামিরার জন্য কলেজ গেটে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে রুপালি ও আরশি।আজকে তারা সামিরাকে দেখে অবাক হয়ে গেল।আর বলল,

–“ওয়াও সামিরা ইউ লুকিং সো বিউটিফুল। সত্যিই অসাধারন লাগছে।ফাইনালি তুই আগের লুকে ফিরে এলি।”

সামিরা বেশি কিছু বলল না শুধু মুচকি হেসে বলল,

–“ধন্যবাদ।”

রুপালি দুষ্টুমি করে বলল,

–“সত্যিই সামু তোকে দেখে কিন্তু আজকে নাবিল তোর প্রেমে পড়তে বাধ্য হবে।কারন তোকে তো এই লুকে আগে দেখেনি নাবিল।”

সামিরা বলল,

–“আচ্ছা ওইসব কথা ছাড়।চল ক্লাসে যাই।”

সামিরারা ক্লাসের দিকে রওনা দিল।নাবিলদের দিকে লক্ষ করলেও কিছুক্ষন বলল না আজকে।সোজা চলে গেল।কিন্তু আজকে নাবিল,রাজ,আহান ও তানিই অবাক হয়ে চেয়ে রয়েছে সামিরাকে। সবাই যেন ভাবতেই অবাক হচ্ছে।সামিরাকে অন্যদিনের তুলনায় আজ অন্য রকম লাগছে।তারউপর তানিকে দেখেও কিছু বলল না।আর বড় কথা হলো নাবিলকে যেন সে দেখেই নি।যেন চিনেই না।কোন দিন কথায় হয়নি।আর কেউ কিছু না বুঝলেও নাবিল বুঝতে পেরেছে।

রাজ অবাক হয়ে বলল,

–“ব্যাপারটা কি হলো?আজ সামিরার লুক একদম পরিবর্তন হয়ে গেছে।সেই সাথে তার বিহেভিয়ারও।যেই জায়গায় নাবিলকে দেখলেই নাবিলের সামনে এসে বকবক করে সেই জায়গায় আজকে ফিরেও তাকাল না।”

আহান বলল,

–“সেইটা রাখ।আগে এইটা দেখ সামিরাকে কিন্তু আজকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।আমিতো দেখে ফিদা।মনে হচ্ছে ওর এই লুকে আমি ওর প্রেমে পড়ে গেছি।”

আহানের কথা শুনে নাবিলের বেশ রাগ হল।কিন্তু কিছুই বলতে পারছেনা।শুধু আহানের দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।আহানের কথা শুনে রাজ নাবিলের দিকে তাকাল।দেখেল নাবিল অনেক রেগে আছে।আহানকে এমনভাবে দেখছে যেন এক্ষুনি চিঁবিয়ে খাবে।তা দেখে রাজ এক ঢোক গিলল।

———

এইদিকে ক্লাসে বসে আছে রুপালি,সামিরা ও আরশি।স্যার এখনও আসেনি।সামিরাকে অনেকদিন পর আগের লুকে দেখে অনেকে অনেক ধরনের কমপ্লিমেন্ট করছে।আর সামিরা প্রতিউওরে শুধু মুচকি হেসে দিচ্ছে।এইদিকে ক্লাসে তানি এসে সামিরার সামনে দাঁড়াল। আর বলল,

–“কি ব্যাপার সামিরা?হঠাৎ এই বেশ ধরলে যে?আবার দেখলাম নাবিলের দিকেও তাকালে না।এর মানে কি আমি ধরে নিব তুমি হেরে গেছ?নাকি গতকাল নাবিলের থাপ্পড় খেয়ে ফেড আপ করেছ?”

সামিরা মুখের হাসি বজায় রেখে তানির সামনে দাঁড়াল।হাতে আঙ্গুলের ফাঁকে কলম ঘুড়াতে ঘুরাতে বলল,

–“সামিরা কিন্তু হারতে শিখেনি।আর তুমি খুব তারাতাড়িই বুঝতে পারব আমার এই পরিবর্তনের কারন।আর হ্যাঁ নাবিলকে আমি আমার প্রেমে ফেলেই দেখাব।তুমি শুধু দেখতে থাকো।”

তানি অট্টহাসি দিয়ে বলল,

–“এতদিন ট্রাই করে নাবিলকে তোমার প্রেমে ফেলতে পারোনি।আর আজ কিনা বলছ এমন সাদাসিধা গাইয়্যা সেজে ওকে জিতবে।হাহাহা সো ফানি।”

সামিরা কিছুই বলল না শুধু হাসল মাত্র।আর তানি সামিরাকে বেস্ট অফ লাক জানিয়ে চলে গেল।

——-

আজকে নাবিলের মন একেবারেই বসছে না ক্লাসে।মনটা কেন জানি উড়ু উড়ু করছে।আর বারবার আহানের বলা কথাগুলো মাথায় ঘুড়পাক খাচ্ছে।আর ভাবছে যেখানে আহান সামিরার উপর ফিদা হয়ে বসে আছে সেখানে অন্য ছেলেরা না জানি কি করবে।না আমার ওর উপর নজর রাখতে হবে।আর আজকে সামিরার জ্বালানো টাকেই মিস কিরছি।এই কয়দিনে অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল সামিরার এই অত্যাচার গুলোর।আজ যখন সামিরা তার দিকেও তাকায়নি তখন কেমন জানি ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।নাবিল আর থাকতে না পেরে ক্লাস থেকে বেড়িয়ে পড়ল।এইদিকে সামিরার খিদে পাওয়ায় সে আজও ক্যান্টিনে গেল।গিয়ে একটা চা আর নুডুলস অর্ডার দিল।এইদিকে নাবিলও বেশ টেনশনে আছে।একদিকে সামিরা আরেক দিকে জনি।সব টেনশন তার মাথা ব্যাথা শুরু করে দিয়েছে।তাই ক্যান্টিনে আসল যদি চা খেয়ে মাথা ব্যাথা কিছুটা কমে।নাবিল ক্যান্টিনে এসে প্রথমেই সামিরার দিকে নজর পড়ে।সামিরা বসে বসে এক চামচ করে নুডুলস মুখে দিচ্ছে আর মোবাইল ঘাটছে।সামিরাকে দেখে নাবিলের মুখে অজান্তেই হাসি ফুঁটে উঠে।কিন্তু সেই হাসি বেশিক্ষন স্থায়ী থাকল না।উল্টো মেজাজ গরম হয়ে গেল।দেখল একটা ছেলে সামিরার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে আর সামিরা ভ্রু কুঁচকে ছেলেটির দিকে তাকিয়ে।আর ছেলেটা হাঁটু গেড়ে বসে এক হাত বাড়িয়ে বলছে,

–“সামিরা তোমাকে আমার প্রথম থেকেই ভাল লাগত।ইনফেক্ট এখনও লাগে।কিন্তু কখনও কিছু বলতে পারিনি।এতদিন ভয়ে বলিনি যদি রিফিউজ করে দাও তাই।কিন্তু আজকে সাহস নিয়ে বলতে এসেছি।এতদিন নাবিলের সাথে তোমাকে দেখে আমার প্রচুর খারাপ লাগত এবং রাগও হতো।এতদিনে বুঝতে পারলাম আমার ভালোলাগাটা ধীরে ধীরে প্রেমের রুপ নিয়েছে।তাই আর দেরি করতে পারছি না।সামিরা আই লাভ ইউ।”

ছেলেটার কথা শুনে সামিরা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।কি বলবে না বলবে বুঝতে পারছে না।তাই এদিক ওদিক তাকাচ্ছে।হঠাৎ দেখল নাবিল তাদের দিকে তাকিয়ে আছে।এতে সামিরার যেন হুশ উঁড়ে গেল।নাবিলের চোখ সামিরার চোখে পড়তেই নাবিল চলে গেল হনহনিয়ে।এইদিকে সামিরা পড়ল বিপাকে।আর ভাবছে নাবিল যদি তাকে ভুল বুঝে?

চলবে…….