#মেঘের_উল্টোপিঠ
#সাদিয়া_মেহরুজ_দোলা
#পর্ব___২৬
ঢাকায় ফিরেছি আজ এক সপ্তাহ হতে চললো। ফেরার সাথে সাথে যেনো পড়াশোনার চাপ হুড়মুড়িয়ে বেড়ে গেলো আমার। ক্লাস টেস্ট, জমানো পড়া শেষ করা, পরিক্ষার প্রস্তুতি সব মিলিয়ে কাহিল অবস্থা। এতোটা চাপের মাঝেও রাত হলে ফোন হাতে নিয়ে বসে থাকি কাঙ্খিত এক ব্যাক্তির ফোন – কলের আশায়। কিন্তু আজ এক সপ্তাহ হয়ে গেলো সেই ব্যাক্তির দেখা অব্দি নেই। মেডিকেলে গেলেও দেখা মিলেনা ঠিক মতোন। দেখা যায় যখন আমি ফ্রী তখন সে অপারেশন করছে আর যখন সে ফ্রী তখন আমি ক্লাস করছি। এই এক সপ্তাহ আমার বিষন্নতায় কেটেছে। পূর্বের প্রতি যে ধীরে ধীরে কতোটা দূর্বল হয়ে পড়ছি তা হয়তো আমি নিজেও অনুভব করতে পারবো না।
রাত দীর্ঘ হচ্ছে! বাহির থেকে আসা হিমেল অনিলে মিলিয়ে গেলো আমার দীর্ঘ নিঃশ্বাস। অভিমানের পাতা আস্তে আস্তে ভারী হচ্ছে। অথচ অভিমানের কারণ যিনি। পূর্ব! তার কোনো খোঁজ – খবর অব্দি নেই। আদও কি সেই ব্যাক্তি জানে?তার জন্য আমার বক্ষঃস্থল কাপে?মনের অন্দরমহল হু হু করে ওঠে?হয়তো জানে না। জানবেও না। চিন্তা পাশে ফেলে বইয়ে মুখ ডুবিয়ে রাখি৷
কিয়ৎক্ষণ পর! টেবিলে থাকা মোবাইল টা ভাইব্রেট হলো। কিছুটা বিরক্তি নিয়েই ফোন নেত্র যুগলের সম্মুখে তুলে ধরি। তবে ফোন স্ক্রিনে ভেসে থাকা ‘ ‘পূর্ব ‘ নামটা দেখে সকল বিরক্তি যেনো হাওয়াই মিঠাই এর মতো অনিলে মিলিয়ে গেলো। একবার, দু’বার শেষে তিনবার যখন সে পুনরায় কল করলো তখন চটপট রিসিভ করে কানের সাথে লাগাই। তৎক্ষনাৎ অপাশ থেকে ভারী কন্ঠে পূর্ব বললেন,
‘ এতো লেট হলো যে ফোন রিসিভ করতে?’
আমি শুকনো ঢোক গিলে নিচু স্বরে বলে উঠলাম,
‘ পড়ছিলাম। তাই ফোন এসেছিলো যে খেয়াল হয়নি। ফোন সাইলেন্টে ছিলো। ‘
‘ অহ! ‘
অতঃপর মৌনতা পালন দু’জনেরই। আমার এই নীরবতা সহ্য হচ্ছে না। কতদিন পর ফোন দিল, কই একটু কথা বলবে! তার মিষ্টি কন্ঠস্বর শুনে হৃদ মহল শান্ত করবো তা না, সে চুপ করে আছে। ধৈর্যহারা হয়ে বললাম,
‘ এতো রাতে ফোন করলেন যে?কোনো দরকার? দরকার না হলে ফোন রাখুন। আমার পড়া আছে। ‘
প্রায় ৫, ৬ সেকেন্ড পর পূর্ব কন্ঠের খাদ ফেলে নম্র সুরে বললেন,
‘ দরজাটা খুলবে একটু? অনেকক্ষণ যাবৎ দাঁড়িয়ে আছি। কলিংবেল দিতে ইচ্ছে করছে না এতো রাতে।জলদি আসো! ‘
আমি অবাক হয়ে বলি, ‘ আ..আপনি বাহিরে?মানে, আমার ফ্লাটের সামনে?’
‘ অন্য কারো ফ্লাটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলে নিশ্চয়ই তোমাকে দরজা খোলার জন্য ফোন করতাম না? তাই না?ষ্টুপিড! কাম ফার্স্ট! ‘
টুট! টুট! টুট!
অপাশ হতে ফোন কেটে দেয়ার শব্দ কর্ণপাত হতেই হাতের ফোন সোফায় ছুঁড়ে ফেলে দৌড় লাগাই দরজার দিকে। দরজার নিকট দাঁড়িয়ে মাথায় ওড়না টেনে চটপট দরজার নবে হাত দিয়ে লক খুলি। পূর্ব সত্যিই এসেছেন। দরজার সামনে দাঁড়ানো। অবিশ্বাস্য দৃষ্টিপাত আমার, তার ওপর স্থাপিত।
পূর্বের পরনের নেভি ব্লু রঙের শার্টটা ঘামে সিক্ত হয়ে তার সুঠাম দেহের সাথে এঁটে সেঁটে আছে। কপালের কাছে তার কয়েক গাছি চুল এসে অবিন্যস্ত ভাবে ছড়িয়ে – ছিটিয়ে পড়ে আছে।বাম হাতে ভাজ করা সাদা এপ্রোন।স্টেথোস্কোপ টা এখনো গলাতেই ঝুলিয়ে রেখেছে। বোধগম্য হলো তিনি হসপিটাল থেকে সরাসরি আমার বাসায় এসেছেন। চুল গুলো’ও কিছুটা সিক্ত। আমি দরজা ডানে চাপিয়ে তাকে উদ্দেশ্য করে বললাম,
‘ ভেতরে আসুন। ‘
পূর্ব তার স্থির পায়ে গতি প্রদান করে হেঁটে আমার সামনে এসে পদচারণ থামালেন। গাল কিছুটা আস্তে টেনে ধরে মিহি কন্ঠে বললেন,
‘ মাথায় ওড়না, চোখে এসে ভর করা ঘুমু ঘুমু ভাব! তোমাকে এট দিস মোমেন্ট কতটা মারাত্মক লাগছে জানো? আমার একটু কন্ট্রোল’লেস হতে ইচ্ছে করছে বউ! ‘
একে তো তার মুখের অনাকাঙ্ক্ষিত বার্তা তার ওপর শেষে তার ওষ্ঠাধর দ্বারা উচ্চারিত ‘ বউ ‘ শব্দটা আমার মনে আনন্দে, অসম্ভব ভালোলাগায় ছুঁয়ে দিয়ে গেলো। একরাশ মন কাড়া অনুভূতি সাথে গালে তৈরি হওয়া রক্তিম আভা নিয়ে তার পানে দৃষ্টি দেই। পূর্ব সঙ্গে সঙ্গে আমার মাথার পিছনে একহাত রেখে কপালে তার ওষ্ঠাধরের স্পর্শ এলিয়ে দিয়ে ফিসফিসিয়ে বললেন,
‘ লাজুকলতা আমার! প্রতি ক্ষনে আমার শুধু তোমাকেই খুব করে প্রয়োজন লজ্জাবতী। তোমার এই লাজুক রূপ আমার মনে ক্ষনে ক্ষনে আহত করছে। হার্টলেস তুমি! মিনিটে, সেকেন্ড শুধু কষ্ট দাও তোমার প্রেমে ফালিয়ে। ‘
শেষে লম্বা লম্বা পা’য়ে আমার রুমের দিকে চললেন তিনি। যাওয়ার আগে তাড়া দিয়ে বললেন,
‘ জলদি রুমে আসো। ‘
লাজুকলতা রূপ ফেলে নিজ স্বাভাবিকতা বজায় রেখে রুমে আসি ত্রস্ত পা’য়ে। রুমে আসতেই দৃশ্যমান হয় পূর্ব আমার বেডে বসে দু’হাত পিছনে রেখে নেত্র যুগল বন্ধ করে বসে আছেন। আমি সেদিকে এগিয়ে বললাম,
‘ এতো রাতে কেনো এসেছেন? ‘
তিনি আঁখিজোড়া খুলে সটান হয়ে বসে বললেন,
‘ তোমাকে দেখতে। ‘
‘ আমায় দেখতে? আমাকে তো প্রতিদিনই দেখেন মেডিকেলে। এক্সট্রা করে দেখার কি আছে?’
পূর্ব আমার হাত ধরে আমায় তার পাশে বসালেন। এক হাত টেনে নিজের কাছে নিয়ে হাত নড়াচড়া করতে করতে বললেন,
‘ সেটা জাস্ট এক পলক দেখা হতো তোমার সাথে। আর যেখানে তোমায় আমি সামনাসামনি মাস, বছর সর্বক্ষণ দেখলেও আমার তৃষ্ণা মেটেনা সেখানে এক পলক দেখাটা আমার কাছে অতীব নূনতম! ‘
‘ খেয়ে এসেছেন? ‘
পূর্ব একটু আমতা আমতা করে বললেন, ‘ আব..হ্যা। তুমি খেয়েছো রাতে?’
আমি ভ্রু যুগল কুঁচকে নিয়ে বলি, ‘ মিথ্যা বলছেন তাই না? আপনি মিথ্যা বলার সময় আমতা আমতা করে কথা বলেন। এটা খেয়াল করেছি আমি বহুবার।’
পূর্ব আমার প্রতি কিয়ৎ ঝুঁকে ভ্রু নাচিয়ে বললেন,
‘ বাহ! আমার প্রতিও আজকাল নজর দেয়া হচ্ছে? ভালো তো। ‘
প্রসঙ্গ পাল্টাতে উঠে দাঁড়িয়ে বলি, ‘ আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন। আমি খাবার নিয়ে আসছি। ‘
কথা শেষ করে এক মূর্হত অপচয় না করে দ্রুত রুম ত্যাগ করি। রুম থেকে কয়েক কদম দূরে সরে স্বস্তির শ্বাস ফেলি। আমি পারতাম বলতে, পারতাম পূর্বকে জানাতে আমার মনের পুলকিত অনুভূতি সম্পর্কে। কিন্তু কেনো যেনো নিজের এই অনুভূতি গুলোকে নিজের মাঝেই আড়ালে রাখতে ইচ্ছে করে আমার। যার দরুন ভবিষ্যতে পূর্বকে যখন অকস্মাৎ ভালোবেসে ফেলবো তখন কখনো ‘ ভালোবাসি ‘ শব্দটা যে তাকে বলে ওঠা হবে না তা সম্পূর্ণ রূপে নিশ্চিত আমি।
নিজেকে ধাতস্থ করে হাতে প্লেটভর্তি খাবার নিয়ে কিছুক্ষণ পর রুমে প্রবেশ করি। পূর্ব তখন টাওয়াল দিয়ে মাথার সিক্ত প্রায় চুলগুলো মুছতে ভীষণ ব্যাস্ত। আয়নায় আমার প্রতিবিম্ব ভেসে উঠতেই তিনি হাতের টাওয়াল সোফার দিকে ছুঁড়ে মারলেন।ভ্রু কুঁচকে আসে আমার। তার এই ছোড়াছুড়ির অভ্যাসটা আমার ভীষণ বিরক্তির কারণ! নাক, মুখ কুঁচকে বলি,
‘ আপনি এই ছোড়াছুড়ির অভ্যাসটা কবে ত্যাগ করবেন?’
পূর্ব চুলে হাত গলিয়ে ভাবলেশহীন গলায় বললেন,
‘ কখনোই না। ‘
‘ জিনিসপত্র ছোড়াছুড়ির কাজ আমার কাছে বিরক্ত লাগে। ‘
‘ লাগলেও কিছু করার নেই অভ্যাস করে ফেলো। আর অভ্যাস না করতে চাইলেও সমস্যা নেই। বিয়ের পর তুমিই নাহয় ‘ আমিটাকে ‘ নিজের মন মতো করে পরিণত করে ফেলিও! ‘
প্রতিত্তুর করলাম না কোনো। নিশ্চুপ থাকা শেষে বলে উঠি,
‘ আপনার খাবার। ‘
পূর্ব সোফায় গিয়ে বসলেন। হাতের ইশারায় বললেন তার নিকট যেতে। আমি এগোতেই তিনি ফের হাত টেনে ধরে নিজের পাশে বসালেন। মিহি কন্ঠে বললেন,
‘ খাইয়ে দাও। নয়তো খাবার নিয়ে যাও। ‘
আমি হতভম্ব হয়ে বলি, ‘ খাইয়ে দিতে হবে কেনো?আপনার হাত নেই?’
পূর্বের মুখোশ্রী থমথমে হলো। কন্ঠে গাম্ভীর্যতা টেনে বলল,
‘ কেনো তোমার চোখ নেই? দেখতে পারছো না আমার হাত? স্বামীকে খাইয়ে দেয়া সুন্নত। আমি অবশ্যই মির্জাফর নই! তোমার সাথে মির্জাফরী করে তোমায় সুন্নত থেকে বঞ্চিত এটলিষ্ট আমি করবো না। সো, যা বলেছি তা করো। ফার্স্ট! ‘
আমি এখনো হতবিহ্বল। পূর্বের তাড়া দেয়া এবং গম্ভীর কণ্ঠে ধমক শুনে খাইয়ে দিতে বাধ্য হতে হলো সঙ্কোচ ঠেলে। কিন্তু এর মাঝেও আরেক বিপত্তি। তিনি আমার আঙুলে কামড় দিচ্ছেন যতবার তার ওষ্ঠাধরের সম্মুখে আমি খাবার তুলে দিচ্ছি। কঠিন দৃষ্টিপাত তার পানে দিয়েও কাজ হলো না। শেষে ব্যাকুল হয়ে বললাম,
‘ প্রবলেম কি আপনার? আঙুলে বারবার কামড় দিচ্ছেন কেনো? ব্যাথা পাচ্ছি তো। ‘
‘ এখানে অবশ্যই আমার কোনো দোষ নেই। দোষটা তোমার। ভাতের মতোই তুলতুলে তোমার আঙুল। আমি তো ভাত ভেবে কামড় দেই। এখন ঐটা তোমার আঙুল হলে আমার কিছু করার নেই। ‘
আমি বেকুব চাহনিতে তাকাই। বলে কি এই লোক?ভাতের মতো আবার কারো আঙুল নরম,তুলতুলে হয় নাকি?অদ্ভুত ব্যাপার তো! পরক্ষণে পূর্বের অধর কোণে থাকা মৃদু দুষ্টু হাসিটা দেখে সবকিছু পরিস্কার হয়ে গেলো আমার নিকট। রাগ সংযত করে নিরুত্তর রইলাম।
____________
অভ্র বেশ মনোযোগ সহকারে খাবার খাচ্ছে। অরিন তার খাওয়া বাদ দিয়ে আঁড়চোখে, আড়ালে অভ্রের প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি এলিয়ে রেখেছে। অরিনের মন’প্রশ্ন! এই অভ্রটা এতো সুন্দর কেনো? শ্যামবর্ণের পুরুষের মাঝে যেনো আল্লাহ তায়ালা একটু বেশিই সৌন্দর্য প্রদান করে থাকেন বলে মনে হয় অরিনের নিকট।তার মধ্যে অভ্র তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ!
পূর্ব ধবধবে ফর্সা হলেও অভ্র শ্যামবর্ণের। সবাই বলে পূর্ব হয়েছে তার বাবার মতো এবং অভ্র মায়ের অবিকল রূপ। ব্যাক্তিগত চরিত্রের দিক দিয়েও দুই ভাইয়ের আকাশ – পাতাল তফাৎ। অরিন মৌনতা ভেঙে বলল,
‘ অভ্র? তুমি তোমার পরিবারকে আমার কথা কবে জানাবে?কবে বিয়ে করবো আমরা?
অভ্র বিষম খায়। অরিন তাড়াহুড়ো করে পানির গ্লাস এগিয়ে দেয়। অভ্র পানি পান করা শেষে দম নিয়ে বলল,
‘ খুব জলদিই বলবো। ‘
‘ তুমি তোমার পরিবারের সাথে আমায় কখনো সাক্ষাৎ করাওনি। না তোমার পরিবার সম্পর্কে কখনো কিছু বলেছো। আজ জানতে ইচ্ছে করছে।কে কে আছে তোমার পরিবারে?’
‘ বাবা, মা আর ছোট ভাই। আরেকজন সদস্য আছে। সে হচ্ছে আমার ছোট ভাইয়ের ওয়াইফ। কিছুদিন আগে আকদ হয়েছে ওদের। এখনো উঠিয়ে আনেনি। ‘
‘ অহ! ‘
দু’জন ফের খাওয়াতে মনোযোগ দেয়। অভ্রের মনটা উশখুশ করছে। আর কতদিন? কতদিন সত্যিটা লুকিয়ে রাখবে সে? অভ্র সিদ্ধান্ত নেয় আজই জানাবে সে তার অনাকাঙ্ক্ষিত বিয়ের কথা। যেকোনো ভাবেই হোক!
খাওয়া শেষে ফুটপাত ধরে হাঁটছে তারা। তার মাঝে হটাৎ অভ্র বলল,
‘ অরিন! আমি বিবাহিত। বিয়ে হয়ে গিয়েছে আমার।কিন্তু.. ‘
অভ্র কথা অসমাপ্ত রেখে প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য অরিনের দিকে তাকাতেই দেখলো অরিন মাটিতে পড়ে আছে। আঁখিজোড়া তার ওপরের দিকটা ধরে উল্টো হয়ে আসছে। হাত, পা কম্পমান! মুখোশ্রীতে যেনো ক্ষনের মাঝেই বিশাল যন্ত্রণা এসে ভর করেছে তার। ওষ্ঠাধর প্রসারিত হয়ে সেখান হতে সাদা তরল জাতীয় বস্তু গলগল করে বের হচ্ছে।
_________
প্লেট রেখে হাত ধুয়ে রুমে আসতেই পুরো রুম অন্ধকার দেখে ভ্রু কুঁচকে যায় আমার। চন্দ্রপ্রভা রজনী হওয়াতে চাঁদের আলো রুমজুড়ে বিচরণ করছে। আশেপাশে পূর্বকে খোঁজার চেষ্টা করি। উঁচু কন্ঠে বলে উঠলাম,
‘ পূর্ব? আপনি কি রুমে নেই?’
ক্ষনিক বাদে বেলকনি থেকে সেই চিরচেনা রাশভারী কন্ঠ কর্ণধারে আসলো। পূর্ব বললেন,
‘ বেলকনিতে আমি। এখানে এসো। ‘
বেলকনিতে যেতেই পূর্বকে দৃশ্যমান হয় আঁখিজোড়া সম্মুখে। দৃষ্টিপাত তার আকাশের মাঝে স্থাপিত। আমি হেঁটে তার পাশে দাঁড়াতেই হুট করে তিনি নিজ স্থান হতে সরে দাঁড়িয়ে আমার পিছনে এসে দাঁড়ালেন। পিছন হতে নিবিড়ভাবে তার উষ্ণ আলিঙ্গনে আমায় আবদ্ধ করে কাঁধে নিজের থুতনি স্থাপন করে ভরাট কন্ঠে বললেন,
‘ ৭ টা দিন! এই ৭ টা দিন তোমার স্পর্শ, তোমার মেয়েলি ঘ্রাণ, নজরকাঁড়া হাসি, চোখের মায়াময়ী দৃষ্টি না দেখে আমার কিরূপ কাহিল অবস্থা হয়ে ছিলো জানো? শ্বাস নিতে গেলেও আমার তোমার কথা মনে পড়ো। নিজের অভ্যাসের সাথে এতোটা ব্যাডলি জরীয়ে গিয়েছো তুমি..! এতো কেনো আসক্ত আমি তোমার প্রতি স্নিগ্ধময়ী? এতোটা মিষ্টি, স্নিগ্ধাসুন্দরী হতে কে বলেছিলো তোমায়?’
নিরুত্তর আমি! সে আমার পিছন থেকে সরে দাঁড়িয়ে সামনে এসে কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে আমার নাকে নিজের নাক ঘসে হিসহিসিয়ে বললেন,
‘ সময়টা এখানে থেমে গেলে খুব বেশি কি ক্ষতি হতো? ‘
চলবে,