#রঙিন_বর্ষা
লেখা: নীলাদ্রিকা নীলা
৪র্থ পর্ব
.
ঝুমুরকে শাড়ি পরিয়ে বউ সাজানো হয়। ঝুমুর কাঁদতে কাঁদতে চোখ মুখের অবস্থা খারাপ করে ফেলেছে। শ্রাবণ রাগ চোখে ঝুমুরের দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই ঝুমুরকে গিলে খাবে। কিছুক্ষণের মধ্যই শ্রাবণ আর ঝুমুরের বিয়েটা হয়ে গেল।
শ্রাবণ বললো, স্যার আপনি হোটেলে ফিরে যান। আমি ঝুমুরকে নিয়ে আজই আমার বাড়ি ফিরতে চাই। বাড়িতে তো বিয়ের ব্যপারটা ম্যানেজ করতে হবে।
– ওকে মাই বয়। বেস্ট অফ লাক।
,
শ্রাবণ প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি দিয়ে বলছে, তুমিও ফিরে যাও। আর চিন্তা করো না তোমার বান্ধুবীকে আমি দেখে রাখবো। ক্যাম্পাসে দেখা হচ্ছে।
,
স্যার বাকি স্টুডেন্টদের নিয়ে চলে গেলেন। শ্রাবণ আর ঝুমুরের সাথে শুধু রাব্বি আর তুহিন থেকে গেল। রাব্বি বললো, তুই আজই বাড়ি ফিরবি?
– হুম। এখন রওনা দিলে সকালের মধ্যই পৌঁছে যাবো।
– আমরাও যাবো তোদের সাথে।
– হুম। আমাদের একটা মাইক্রো ভাড়া করতে হবে।
,
ঝুমুর চেচিয়ে উঠল, আমি তোমার সাথে কোথাও যাবো না!
শ্রাবণ ঝুমুরের দিকে এগিয়ে গিয়ে বলছে, চুপচাপ এখান থেকে চলো!
– আর না গেলে?
– শ্রাবণকে চোখ রাঙাচ্ছো? তোমার সাহস তো কম না! তুমি জানো তুমি আমার সাথে আজ কত বড় অন্যায় করেছো ! এর শাস্তি তুমি পাবে ঝুমুর! এখন তো তুমি আমার হাতের নাগালে!
,
শ্রাবণ টানতে টানতে ঝুমরকে মাইক্রোতে ওঠালো। মাইক্রোতে উঠে ঝুমুর চিৎকার চেচামেচি শুরু করে দেয়। শ্রাবণ ঝুমুরকে ধমক দিয়ে বলছে, চুপ! একদম চুপ! বেশি কথা বললে মুখে টেপ লাগিয়ে দেব।
ঝুমুর কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে যায়। রাগে শ্রাবণের মাথায় আগুন জ্বলছে। বাসায় ফিরে কিভাবে বিষয়টা ম্যানেজ করবে ভেবে কুল পাচ্ছে না। ঝুমুর এরকম একটা ঘটনা ওর সাথে ঘটিয়ে ফেলবে এটা ও ভাবতেই পারে নি। ঝুমুরকে এর জন্য শাস্তি দিতেই হবে।
,
বাড়ি পৌঁছাতে ভোরের আলো ফুটে যায়। কলিংবেল বাজাতেই শ্রাবণের মা এসে দরজা খুলে দিলো। শ্রাবণ ঝুমুরকে নিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। তার পাশে রাব্বি আর তুহিন।
– কিরে তোরা এই সময়! তোদের তো আরও দুইদিন পর ফেরার কথা?
শ্রাবণ মাথা নিচু করে শুকনো মুখে উত্তর দেয়, মা একটা সমস্যা হয়ে গেছে।
রাব্বি বললো, আন্টি আমি সবটা বলছি, দয়া করে আপনি আগে সবটা শুনুন। শ্রাবণের এতে কোনো দোষ নেই।
শ্রাবণের মা ভয়ার্ত চোখে শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে আছে। তারপর ওর পাশে ঝুমুরকে দেখে চেচিয়ে উঠল, এই মেয়ে কে! কে ও!!
,
রাব্বি সব কিছু বলার পর শ্রাবণের মা ঝুমুরের দিকে তাকিয়ে ঝুমুরকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখছেন । ঝুমুর কোনো রকমে দুপায়ে ভর করে দাঁড়িয়ে আছে। ঘুমে চোখ দুটো বন্ধ হয়ে আসতে চাইছে।
,
শ্রাবণের বাবা ওখানে এসে বলছেন। ছেলেমেয়ে গুলোকে ভিতরে আসতে দিচ্ছো না কেন। কি হয়েছে?
– ওগো শ্রাবণের বাবা, আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে। শ্রাবণ বিয়ে করে ফেলেছে। আর বউ নিয়ে বাড়িতে এসেছে।
– কি বলছো!
– হ্যাঁ গো সত্যি বলছি। এখন আমার শ্রাবণের কি হবে গো!
বলতে বলতেই উনি অচেতন হয়ে গেলেন। সাথে সাথে শ্রাবণ গিয়ে ওর মাকে ধরলো।
শ্রাবণের বাবা বলছেন, আমি তোর মাকে রুমে নিয়ে যাচ্ছি। তোরা ভিতরে গিয়ে বস।
,
শ্রাবণ ঝুমুরকে টেনে ভিতরে নিয়ে গেল। তারপর সব কিছু শোনার পর শ্রাবণের বাবাও চিন্তিত হয়ে পরেছেন৷ শ্রাবণ বললো, যা হবার তা হয়েছে এখন থেকে ঝুমুর এই বাড়িতেই থাকবে। আমি বিয়েটা মেনে নিয়েছি।
– কি বলছিস! তোর মা তো কান্ড ঘটিয়ে ফেলবে।
– তোমরা যদি ওকে থাকতে না দাও তাহলে আমি এই বাড়ি থেকে চলে যাবো।
,
তখনই শ্রাবণের মা রুম থেকে বের হতেই এই কথা শুনে দৌড়ে ছেলের কাছে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে বলছেন, না বাবা তুই কোথাও যাস না! কোথাও যাবি না তুই!
,
শ্রাবণ ওর মাকে শোফায় বসিয়ে দিয়ে বললো, মা তুমি একটু শান্ত হয়ে বসো । এতো চিন্তা করো না। শরীর খারাপ করবে তো ।
,
ঝুমুর মনে মনে বলছে, বিয়ে মেনে নিয়েছে মানে! শ্রাবণ তোর আমি এমন অবস্থা করবো তুই জাস্ট ভাবতে পারবি না!!
,
রাব্বি ফিসফিসিয়ে শ্রাবণের কানে কানে বললো, তুই এসব কি করছিস! তোর মাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি!
– মাথা খারাপ হয় নি। বিয়ে কি করেছি এমনি এমনি। ঝুমুরকে শায়েস্তা করতে হবে না? তার জন্য ঝুমুরকে তো এখানেই রাখতে হবে। আমার হাতের নাগালে।
– কিন্তু ও এখানে থাকতে রাজি হবে? আর ওর পরিবার যদি জানতে পারে তুই ওকে এখানে জোর করে আটকে রাখেছিস। ভাবতে পারছিস কি হবে!
– ওকে এখানে রাখার ব্যবস্থাও আমি করে ফেলেছি!
,
ওদের কথার মাঝে শ্রাবণের মা বলে উঠলেন, তোরা কি ফিসফিস করছিস রে!
,
রাব্বি বললো, কিছু না আন্টি আমরা এখন আসি।
,
শ্রাবণের বাবা ফোন হাতে নিয়ে আত্মীয় স্বজনদের এই খবরটা দিতে ব্যস্ত হয়ে পরেছেন। শ্রাবণের মা চিন্তিত হয়ে তার পাশে বসে উনার মুখের দিকে তাকিয়ে উনার ফোনে বলা কথা গুলো শুনছেন।
,
শ্রাবণ ঝুমুরকে শোফা থেকে তুলে টানতে টানতে ওর রুমের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ঝুমুরকে ওর রুমে নিয়ে এসেই দরজা লাগিয়ে দিল।
ঝুমুর এবার শ্রাবণের হাত থেকে ওর হাত ছাড়িয়ে নিয়ে চেচিয়ে উঠল, আমাকে কেন এখানে নিয়ে এলি? আমি বাড়ি যাবো! সর সামনে থেকে। আমায় যেতে দে!
,
শ্রাবণও ওর সাথে চেচিয়ে ওঠে, কেন? কেন বাড়ি যাবি! আমাকে বিয়ে করার ইচ্ছা হয়েছিল না তোর! তাই তো এমন একটা ঘটনা ঘটালি। আমাকে বিয়ে করতে চাস সেটা বলতে পারতি। এমন ভাবে অভিনয় করে সবার সামনে কেন আমার মান সম্মান ডোবালি!
,
ঝুমুর রেগে বলছে, তুই মার্কেটের ভেতর অতগুলো মানুষের সামনে আমার শাড়ি খুলে নিয়েছিলি। সেটা? সেটা কি ছিল! কেন করেছিলি?
-সেটার জন্য আমি সরি বলতাম! সব কিছু বলতাম আমি তোকে।
– চুপ! কেন করেছিস ওটা।
– কেন! আবার জানতে চাইছিস! তুই সবার সামনে আমাকে তোর মোবাইল ফোন চোর বানাতে চাসনি? তাই তোকে একটা উচিত শিক্ষা দিতে চেয়েছিলাম।
– আমিও তোকে শাস্তি দিতে চেয়েছিলাম!
– ভালো শাস্তি দিয়েছিস! আমাকে সবার সামনে খারাপ বানিয়েছিস।
– আমি এখানে থাকবো না। আমাকে যেতে দে! না হলে খুব খারাপ হবে। আমার বাড়ির লোকজন যদি একবার জানতে পারে তুই আমায় আটকে রেখেছিস! তোর কি হাল হবে তুই ভাবতে পারবি না।
– তোকে এখানেই থাকতে হবে এখন থেকে। যদি এখান থেকে যাবার চেষ্টা করিস তাহলে তোর চুন্নি রুপটা সবার সামনে দেখিয়ে দেব!
– মানে?
– মানে হলো ওইদিন লাইব্রেরিতে তুই আমার লেখা এসাইনমেন্টেটা চুরি করেছিলি। আর তারপর সেটা নিয়ে নিজের এসাইনমেন্ট বলে চালিয়ে দিয়েছিস। লাইব্রেরিতে তোর চুরি করার ফুল ভিডিও আমার কাছে কাছে। সিসিটিভিতে সব ধরা পরেছে। আমি ওইদিন তোকে কিছু বলি নি। কিন্তু ভিডিওটা নিয়ে ঠিকই নিজের কাছে রেখে দিয়েছি। এখন এটা স্যারকে দিলে তোর কি অবস্থা হবে ভাবতে পারছিস! তুই যে মিথ্যাবাদী আর চুন্নি সবাই সেটা জানবে।
,
ঝুমুর এবার চিন্তায় পরে গেল। ভ্রু কুচকে কিছুক্ষন চুপ থেকে তারপর বললো,
– না। তুমি ওটা স্যারকে দিয়ো না প্লিজ ৷ আমি যাবো না এখান থেকে।
ঝুমুর মনে মনে বলছে, কাজটা তুই ঠিক করছিস না শ্রাবণ। সুযোগ আমারও আসবে।
,
তখনই শ্রাবণের মা এসে দরজা ঢাক্কানো শুরু করে।
– শ্রাবণ দরজা খোল। তোর বাবা ডাকছে।
,
শ্রাবণ ঝুমুরের দিকে রাগ চোখে তাকিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল। তখনই কাজের মেয়ে রুমের ভিতর ঢুকে টেবিলে খাবার রেখে বললো, আফা খাইয়া লন! খাবার দেখার সাথেই ঝুমুর একা একাই বলতে থাকে, আমি শ্রাবণের বাড়িতে খাবো? ওর বাড়ির খাবার আমি কখনই খাবো না৷
বলতে বলতেই ঝুমুরের পেটের ভিতরে চো চো করে উঠল,
ঝুমুর চোখ মুখ কুচকে বললো, এখন এই খিদের জ্বালা মেটাতে খাবারটা না খেয়েও উপায় নেই।
খাবার খাওয়ার পর ঝুমুর নিজের শরীরের দিকে তাকিয়ে গা দেখতে দেখতে বলছে, ইস একদিনেই চেহারার কি অবস্থা হয়েছে আমার! এরপর ছেলেরা আমার দিকে তাকাবে কিভাবে। ক্যাম্পাসের সেরা সুন্দরী আমি! ইস রুমটাতে এসিও নেই। ধ্যাত ফ্যানের পাওয়ারটাও কম। ওরে বাবা কি গরম।
,
তারপর ঝুমুর মুখে হাত দিল। আর সাথে সাথে চিন্তিত হয়ে বললো, আমার মুখটা খুব ওয়েলি হয়ে গেছে মনে হচ্ছে। এরপর চেহারা নষ্ট হলে কি করবো আমি!
,
এসব ভাবতে ভাবতে ঝুমুর বাথরুমে ঢুকলো ফ্রেস হওয়ার জন্য।
,
শ্রাবণের বাবা বলছেন, তোর চাচা তোর দাদিকে নিয়ে আসছেন, শোভনরাও আসছে। আজ সন্ধ্যায় নাকি ছোট করে একটা ঘরোয়া অনুষ্ঠান করবে।
– কি বলছো বাবা! অনুষ্ঠান করবে মানে?
– বিয়ের কথা বাড়িতে বলতেই মা খুশি হয়ে গেছে। নাত বউ দেখার জন্য তাই ছুটে আসছেন। এই বয়সে মাকে তো আর আঘাত দিতে পারি না।
– তাহলে বাবা তুমি কি আমার বিয়েটা মেনে নিয়েছো ? মানে অনুষ্ঠানে মত দিলে যে।
– উপায় নেই। মাকে খুশি রাখতে তোর বিয়ে কেন সবই মেনে নেওয়া যায়।
– কিন্তু আমার মা!
– তোর মাকে আমি বোঝাবো। কিন্তু মেয়ের বাড়িতে কি এই বিয়ের ব্যপারে কিছু জানে!
– এখনো কিছু জানে না৷ তবে জেনে যাবে।
– তারা যদি এই বিয়েটা না মানে!
– বিয়েটা শাস্তি হিসেবে আমাকে করতে হয়েছে। তার সেটা শুধু তাদের মেয়ের জন্যই। আমি ওকে আমর কাছেই রাখবো।
– দেখিস কোনো বিপদে যেন আবার না পরতে হয়।
– ওসব তুমি ভেবো না বাবা। সেসব আমি সামলে নেব।
,
বিকালের দিকে শ্রাবণের চাচা চাচী, দাদী, চাচাতো ভাই শোভন এবং তার বউ মীম আর চাচাতো বোন শোভা শ্রাবণের বাড়িতে চলে এলো। বউকে দেখার জন্য শ্রাবণের রুমে মীম আর শোভা এলো। রুমে এসে ঝুমুরকে দেখে শোভা বলে ওঠে, বাহ! ভাবি তো দেখি হেব্বি সুন্দরী! পুরাই হিরোইন। ভাইয়ার সাথে ভালোই মানিয়েছে। মীমও বলছে, ঠিক বলেছিস! আমাদের শ্রাবণও তো হিরোর চেয়ে কম নয়।
,
ঝুমুর মনে মনে বলছে, উফ! এদের কথা শুনে পুরো গা জ্বলে যাচ্ছে! কিন্তু এখন চটে গেলে হবে না। এদের সাথে মিশেই পালানোর একটা ফন্দি আটতে হবে।
,
ঝুমুরকে ড্রইংরুমে নিয়ে আসা হলো। একে একে আত্মীয় স্বজনেরা সবাই ঝুমুরকে দেখার পর শ্রাবণের দাদী ঝুমুরের হাতে দুটো বালা পরিয়ে দিলেন। তারপর একটা বেনারসি শাড়ি বের করে বললেন, এটা আমার বিয়ের শাড়ি! আজ ছোট নাত বউকে এটা দিলাম।
তখনই শোভা বলে উঠল, এই শাড়িটা তাহলে ভাবিকে এখন পরিয়ে দেই?
দাদী হেসে বললেন, দে পরিয়ে দে।
,
শ্রাবণের মা মুখ গোমড়া করে রুমে চলে গেলেন।
শ্রাবণ সেটা বুঝতে পেরে শোফায় বসে মাথার চুলে হাত দিতে দিতে বলছে, এগুলো কখন শেষ হবে আর আমি কখন ঝুমুরকে একা পাবো। অনেক গুলো থাপ্পড় বাকি আছে ওর!
,
শোভন শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে বললো, কিরে শ্রাবণ বিরবির করে কি বলিস!
– না রে ভাই কিছু না। কি থেকে কি হয়ে গেল সেটাই ভাবছি।
,
খাওয়া দাওয়ার পর শোভা আর মীম ঝুমুরকে শ্রাবণের রুমে নিয়ে গেল। ঝুমুর অনেকক্ষন থেকে কোনো মোবাইল ফোন হাতানোর চেষ্টা করছে৷ লুকিয়ে ওর বাড়িতে ফোন
দিয়ে এইসব কিছু জানিয়ে দেবে। কিন্তু সুযোগ পাচ্ছে না। মীম ভাবি এসে বললো, এসো ঝুমুর তোমাকে এই বেনারসি শাড়িটা পরিয়ে দেই।
,
ঝুমুর মনে মনে বলছে, আবার শাড়িও পরতে হবে! আমাকে কি পেয়েছে এরা!
জোর করে মুখে হাসি টেনে এনে বললো, শাড়ি পরাবে ঠিকাছে পরাও।
শাড়ি পরানো হলে শোভা বলে উঠল, ওয়াও নতুন ভাবি তোমাকে যা লাগছে না! ভাইয়া তো দেখে ফিট হয়ে যাবে। যাই আমি দাদীকে গিয়ে বলি।
,
শোভা রুম থেকে যাওয়ার পর ঝুমুর বললো, আচ্ছা ভাবি তোমার মোবাইল ফোনটা একটু দেবে? আমার একটু দরকার ছিল।
,
মীম হেসে বললো, হ্যাঁ নিশ্চয়ই।
বিছানার এদিক ওদিক খুঁজতে খুঁজতে মীম বলে ওঠে, ওহ হো আমার ফোনটা তো তোমার শোভন ভাইয়ার কাছে ফেলে এসেছি। ওয়েট আমি নিয়ে আসছি।
,
মীম শ্রাবণের রুম থেকে বের হওয়ার সাথেই শ্রাবণ সেটা লক্ষ্য করলো,
– এতক্ষণে রুম থেকে বের হয়েছে। এখন নিশ্চয়ই সবাই ঘুমাতে চলে গেছে। আর ঝুমুর রুমে একা। ঝুমুর রানী এখন তোমার কি হবে৷ তুমি তো রুমে একা। হা হা হা।
,
শ্রাবণ হাসতে হাসতে রুমে ঢুকার সাথেই দরজা লাগিয়ে দিলো। শ্রাবণকে রুমের ভিতরে আসতে দেখে ঝুমুর চেচিয়ে ওঠে, একি তুমি এখানে এসেছো কেন?
– তোমাকে শাস্তি দিতে! বিয়ে করলে আর বাসর করবে না!
,
ঝুমুর এবার ভয় পেয়ে বিছানা থেকে সরে গিয়ে পেছাতে শুরু করে।
– চলে যাও এই রুম থেকে। আমার কাছে আসবে না।
– উহুম। এটা আমার রুম।
– শ্রাবণ তোর আমি কি হাল করবো তুই জাস্ট ভাবতে পারবি না!
– তার আগে নিজেকে এখন কিভাবে বাঁচাবে সেটা চিন্তা করো।
,
শ্রাবণ ঝুমুরের কাছে এগিয়ে গিয়ে এক টানে ঝুমুরের শাড়িটা খুলে ফেলে ফ্লোরে ছুড়ে মারলো। ভয়ে ঘামতে ঘামতে ঝুমুর শ্রাবণের কাছে থেকে সরে যাচ্ছে।পেছাতে পেছাতে একদম শেষ ঠিকানা দেয়ালের সাথে লেগে গেল। শ্রাবণও ঝুমুরের দিকে এগিয়ে গিয়ে ঝুমুরের হাত ধরে ফেললো। ভয়ে ঝুমুর চোখ বন্ধ করে আছে। তখনই দরজায় নক পরলো।
,
মীম বাহিরে থেকে দরজা ঢাক্কাচ্ছে। ওর সাথে শোভাও দাঁড়িয়ে আছে।
– দরজা খোলো। কি হলো দরজা খোলো।
,
দরজা ঢাক্কানোর শব্দে শ্রাবণ এসে তড়িঘড়ি করে দরজাটা খুলে দিলো। মীম আর শোভা ভেতরে এসেই দেখলো ঝুমুর শাড়ি খোলা অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে আর ওকে দেখে মীম অবাক হয়ে বলে ফেললো,
– একি ওর শাড়ি খোলা কেন৷ আমি তো এক্ষুনি ওকে কত সুন্দর করে শাড়িটা পরিয়ে দিলাম! শাড়িটা পরে কেমন লাগছে সেটা দেখতেই তো দাদী ওকে ডাকছে। এখনি শাড়িটা পরিয়ে দিলাম আর এখনি শাড়িটা খুলে ফেললো।
,
মীম ঝুমুরকে বললো, তুমি শাড়ি খুলেছো কেন!
ঝুমুর মাথা নাড়িয়ে উত্তর দেয়, আমি খুলিনি।
– তাহলে কে খুললো।
,
মীম এবার শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে বললো,
– তুমি এখানে কি করছিলে আর ওর শাড়ি খোলা কেন?
শোভা বললো, ভাইয়া তুই!
,
শ্রাবণ ওদের দিকে তাকিয়ে কিছু না বলে শুধু একটা ঢোক গিললো।
,
চলবে….