অনুভবে থাক যে তুমি পর্ব-০১

0
5710

#অনুভবে_থাক_যে_তুমি
#লেখিকা_লায়লা_আঞ্জুমান_ইতি
#পর্ব_০১

ফারদিন ক্লাসে ঢুকতেই সব মেয়ে হা হয়ে তাকিয়ে আছে,কিন্তু ইতির মধ্যে কোনো প্রকার পরিবর্তনই নেই।ফারদিন ক্লাসে ঢুকে, পড়াতে শুরু করলো।ক্লাস শেষ হওয়ার পর সবাই বাহিরে বের হলো,ইতিও বের হয়ে পর ছোট বোন সুমাইয়াকে খুজতে লাগল,তখনি ওকে কেউ টান দিয়ে, একটা ক্লাস রুমে নিয়ে মুখ চেপে ধরলো,ইতি ভয়ে ঘামতে লাগল,তখনি ইতির কাছে এসে ধির কন্ঠে বলতে লাগল, ফারদিন——-ভয় পাচ্ছিস কেন, আমি অন্য কেউ না।ইতি হাত সরিয়ে বলল,, ইতি ——–তুমি আমাকে তো মেরেই ফেলতে। ফারদিন —– এত ভয় পাস কেন তুই।ইতি—-তাতে তোমার কি, আমাকে যেতে দাও। ফারদিন ইতিকে হাত দিয়ে আটকে বলল,ফারদিন——তা তো যেতে দেব না,ইতি অবাক হয়ে বলল,ইতি—–কি, শোনো এটা বাড়ি না।ফারদিন—-তো।

অন্যদিকে,,,,,, সুমাইয়া ক্লাস থেকে বেড়িয়ে সামনে প্রিয়কে দেখে দৌড়ে প্রিয়র কাছে গিয়ে বলল
সুমাইয়া —- কোথায় যাচ্ছ তুমি,প্রিয় রেগে বলল, প্রিয়——-সুমাইয়া এটা বাড়ি না, আর আমি তোমার টিচার সো সেভাবেই ব্যবহার কর।সুমাইয়া দুষ্টু হেসে বলল, সুমাইয়া —- আমার কাছে সব সময় তুমি প্রিয় ভাইয়াই থাকবে।প্রিয় রেগে বলল, প্রিয় —– আমার ক্লাস আছে।বলেই প্রিয় চলে গেল।সুমাইয়া সামান্য হেসে বলল,সুমাইয়া— হা বাড়ীতে চল তারপর দেখাচ্ছি বলেই, বাকা হেসে সামনের দিকে গেল।

[ এবার গল্পের চরিত্রদের সম্পর্কে বলা যাক,ইতি আর সুমাইয়া হলো দুই বোন,ইতি বড় বোন,এবার অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে আর সুমাইয়া ছোট এবার প্রথম বর্ষে পড়ে।ইতি যেমন শান্ত, নম্র স্বভাবের, সুমাইয়া পুরো উল্টো। ফারদিন হলো ইতি আর সুমাইয়ার চাচাতো ভাই।ইতির মা নেই,ওর বাবা কাজের জন্য প্রায়ই নানা জায়গায় যায়,তাই ইতি আর সুমাইয়া ফারদিনদের বাড়ীতে থাকে,প্রিয় হলো ফারদিনের বেস্ট ফ্রেন্ড,প্রিয়র পুরো পরিবার চট্টগ্রাম থাকে,আর প্রিয় এখানে কাজ করে।ইতি আর সুমাইয়া যেই ভার্সিটিতে পড়ে, প্রিয় সেখানে টিচার,আর ফারদিনও।এবার গল্পে ফিরা যাক ]

ইতি এক পর্যায় রেগে বলল, ইতি—-তুমি আমাকে যেতে দিচ্ছ না কেন,আমার ক্লাস আছে।আর তোমার ও তো অন্য ক্লাসে ক্লাস নিতে যেতে হবে।ফারদিন ইতির কিছুটা কাছে গিয়ে বলল, ফারদিন —– কি করব তোকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না,তুই তো জানিস যে,বলার আগেই ইতি বলে উঠল, ইতি —- তুমি আমার জন্যই এখানে কাজ কর,যেন সারাক্ষণ আমাকে দেখতে পার।ফারদিন হেসে বলল,ফারদিন — রাইট।ইতি—– প্লিজ এখন আমাকে যেতে দাও,ফারদিন —– এভাবে না। ইতি অবাক হয়ে বলল,ইতি—— কি????, ফারদিন —— হুম আমার গালে আগে একটা কিস কর, তারপর। ইতি রেগে বলল, ইতি—— না।ফারদিন —– বেশী কথা বললে দুইটা করতে হবে,ইতি—কি????,ফারদিন —– এখন তিনটা, তুই না কিস দিলে, আমাকেই কষ্ট করে দিতে হবে।ইতি অসহায় ভাবে তাকিয়ে বলল, ইতি —— এমন কেন করছ,ফারদিন — এখন চার বার,ইতি এবার বলে উঠল, ইতি— একটার বেশী পারব না,বলেই ফারদিনের গালে ঠোঁট ছুড়িয়ে এক দৌড় দিয়ে পালালো।আর ফারদিন জায়গায় দাড়িয়ে গালে হাত দিয়ে হাসতে হাসতে বলল,ফারদিন —- আমার লজ্জা পতি পাগলী।

অন্য দিকে,,, প্রিয় ক্লাস নিচ্ছে, প্রিয়র চোখ পড়লো সুমাইয়ার দিকে,সুমাইয়া এক দৃষ্টিতে প্রিয়র দিকে তাকিয়ে আছে।প্রিয় যেই সুমাইয়ার দিকে তাকালো, ওমনি সুমাইয়া প্রিয়কে চোখ মারলো,প্রিয়র হাত থেকে বই পড়ে গেল,সুমাইয়া মুখে হাত দিয়ে হাসতে শুরু করলো।প্রিয় নিজেকে সামলে বই উঠিয়ে, নিজের হাত নিয়ে সুমাইয়ার দিকে রাগী একটা লুকে তাকালো,তারপর সুমাইয়া কাছে গিয়ে বলল, প্রিয় —– এই তুমি ওঠো।সুমাইয়া —– আমি😨,প্রিয় —- হুম,এত ক্ষণ কি পড়ালাম তা বল।সুমাইয়া টেনশনে পড়ে গেল,কি বলবে বুঝে পাচ্ছে না,সুমাইয়া মুখে একটা নকল হাসি দিয়ে বলল,সুমাইয়া —– স্যার আসলো😅।প্রিয় — বলতে পারবে না তো,সুমাইয়া —- না মানে হ্যা😰।প্রিয় —– ডোন্ট ওয়ারি,ক্লাস থেকে বেড়িয়ে যাও।সুমাইয়া —- সরি স্যার, প্রিয় —- যেতে বলেছি।সুমাইয়া আর কিছু না বলে, রেগে বেড়িয়ে গেল,বাহিরে গিয়ে, প্রিয়র দিকে তাকিয়ে বলতে লাগল,সুমাইয়া —— খরগোশের ডিম,কালো কুমির, লেজ কাটা হনুমান,মাথা ছাড়া বিড়াল,বিরানির এলার্চি,তোমাকে আমি দেখে নিব।

বাড়ীতে রাতের দিকে,,, সবাই বসে বসে খাবার খাচ্ছে তখনি ফারদিনের আব্বু বলল,ফারদিনের আব্বু —–ফারদিন,ফারদিন — বল,ফারদিনের আব্বু —- তুই আমার সাথে ব্যবসায় একটু মন দেয়, কিছু দিন পর আমি অফিস ছেড়ে দেব তারপর তোকেই সামলাতে হবে।সুমাইয়া দুষ্টু হেসে বলল,হ্যা বড় আব্বু কে জানে ভাইয়া ভার্সিটিতে কি পেয়েছে।ফারদিন রেগে সুমাইয়ার দিকে তাকিয়ে, ওকে ফিসফিস করে বলল, ফারদিন —- বেশী কথা বলবি না,কোশে এক চোড় মারবো।সুমাইয়া —– হা কচু করবা, আমাকে কি আপু পেয়েছ নাকি,বেশী কথা বললে বড় আব্বুকে সব বলে দেব, ফারদিন —- বল না,সুমাইয়া — ওকে বড়,,,,,
বলার আগেই ফারদিন বলে উঠল, ফারদিন —- আব্বু চল না কোথার থেকে ঘুরে আসি,কাল তো ছুটি, এটাই বলতে চেয়ে ছিল সুমু। বলেই সুমাইয়ার দিকে তাকালো, সুমাইয়া —– হ্যা চল না।ফারদিনের বড় আব্বু —- না আমি যাব না, তোরা যা আমি এখন গিয়ে ঘুমাই।ফারদিনের আব্বু উঠে গেল।সুমাইয়া সামনে প্রিয় বসে আছে আর এক মনে খাবার খাচ্ছে, সুমাইয়া টেবিলের নিচ দিয়ে লাথি মারলো প্রিয়র পায়ে,প্রিয় ব্যথায় চিল্লিয়ে উঠলো। ফারদিন — কি হয়েছে তোর,প্রিয় সুমাইয়ার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে বলল কিছু না।টেবিলে বসে থাকা ফারদিনের মা,ফারদিন, ইতি হেসে উঠলো।

প্রিয় ওয়াসরুমে শাওয়ার নিচ্ছে,ফারদিন বসে বসে ল্যাপ্টব টিপছে,ওখানে সুমাইয়া চা নিয়ে আসলো।সুমাইয়া — তোমাদের চা, ফারদিন — তোর বোন কথায়,সুমাইয়া —- প্রেম করছে।ফারদিন — বেশী পাকামো হচ্ছে তাই না,রুমে আছে তো,সুমাইয়া — হ্যা,ফারদিন —– ঠিক আছে,আমি গিয়ে একটু কথা বলে আসি, তুই একটু পর যাস বুঝলি।সুমাইয়া — ঠিক আছে।ফারদিন রুম থেকে চলে গেল।সুমাইয়া এদিকে ওদিকে তাকালো কোথায় প্রিয়,তখনি ওয়াসরুম থেকে প্রিয় বলে উঠল, প্রিয় —- ফারদিন তোয়ালেটা দে তো,আমি না নিয়েই চলে এসেছি,বলেই দরজা দিয়ে মাথা বের করে সুমাইয়াকে দেখে বলল, প্রিয় —— তুমি এখানে,সুমাইয়া —– হুম,প্রিয় —- ফারদিন কোথায়,সুমাইয়া— আপুর সাথে দেখা করতে গিয়েছে।প্রিয় —-ওফফফ, তোয়ালেটা দাও আমাকে।সুমাইয়া —- নিজে এসে নিয়ে যাও,প্রিয় —- কি?????,সুমাইয়া —- হুম নিজে এসে নিয়ে যাও।প্রিয় — তোয়ালেটা দাও প্লিজ,সুমাইয়া —- বললাম তো নিজে এসে নিয়ে যাও।প্রিয়— আমি সত্যি বের হয়ে আসবো কিন্তু,সুমাইয়া —- বের হও,প্রিয় —- ওকে আসলাম, সুমাইয়া — হুম, এই না না না না, আমি দিচ্ছি।

অন্যদিকে,,,,,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,
ভুলক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন