অনুভবে থাক যে তুমি পর্ব-০২

0
3909

#অনুভবে_থাক_যে_তুমি
#লেখিকা_লায়লা_আঞ্জুমান_ইতি
#পর্ব_০২

ফারদিন ইতির রুমে ঢুকে দেখে ইতি টেবিলে বসে বই পড়ছে,ফারদিন ধিরে ধিরে দরজাটা আটকে দিল, তারপর ইতির কাছে গিয়ে বলল,
ফারিদন —- কি করছিস
হঠাৎ এমন কথা বলার কারণে ইতি ঘাবড়ে উঠে,
ইতি — তুমি এমন কর কেন মেরে ফেলতে চাও আমাকে।
ফারদিন ইতির ঠোটে আঙ্গুল ধরে বলল,
ফারদিন — চুপ একদম চুপ আর যদি এসব কথা বলিস আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।
ইতি ওর হাত সরিয়ে বলল,
ইতি —- ঠিক আছে
ফারদিন —- কি পড়ছিস
ইতি — গল্পের বই,
ফারদিন —– তুই এত গল্প পড়িস তোর বিরক্ত লাগে না।
ইতি —- একদম না খুব ভালো লাগে।
ফারদিন —- তুই গল্প পাগলী পুরো,
ইতি — যা খুশি তা বল গল্প আগে বাকী সব পড়ে।
ফারদিন — আমার থেকেও বেশী।
ইতি একটু ভেঙ্গিয়ে বলল,
ইতি —- হুম তোমার থেকেও বেশী।
ফারদিন — দাড়া আমার থেকে তোর কাছে গল্প বেশী
বলেই দুইজন ছুটা ছুটি শুরু করে দিল।

তখনি দরজায় কেউ ধাক্কা দিল,দরজার অপাশ থেকে ফারদিনের মা বলছে,
ফারদিনের মা —ইতি সুমাইয়া দরজা খুল।
ভিতরে ইতি কি করবে বুঝে পাচ্ছে না
ইতি —- হায় আল্লাহ কাকী মা চলে এসেছে এখন কি করব 😰,
ফারদিন —- যা গিয়ে দরজা খুলে দে
ইতি —- কি বলছ তোমাকে এখানে দেখলে কি বলবে,
ফারদিন —– কি আর বলবে যা গিয়ে দরজা খুল,
ইতি —- কি????
ফারদিন —— হুম আমি সামলে নেব,
ইতি —- সত্যি দরজা খুলবো,
ফারদিন —– হ্যা যা।

ইতি গিয়ে দরজা খুললো,
ফারদিনের মা —- এত দেড়ি হলো কেন তোর,
ইতি —- আআ,,আমি,
বলেই পিছনে তাকিয়ে দেখে ওখানে ফারদিন নেই,ইতি একটু সস্থির নিশ্বাস ফেলে বলল,
ইতি — আমি আসলে ওয়াসরুমে ছিলাম,
ফারদিনের মা — ও ফারদিনকে দেখেছিস,
ইতি ——- না।
ফারদিনরে মা —— ঠিক আছে অনেক রাত হয়েছে যা গিয়ে ঘুমা,
ইতি —- ঠিক আছে।

ফারদিনের মা চলে গেল,ইতি ভিতরে ঢুকে সাথে সাথে দরজা আটকে দিল,আর চারপাশ দেখতে লাগল,
ইতি — কোথায় চলে গেল,
বলার সাথে সাথে ফারদিন সামনে এসে হাজির।
ফারদিন —- সোনা আমাকে মিস করছিলে,
ইতি —– না আমি ভাবছিলাম কোথায় চলে গেলে।
ফারদিন —- তোকে ছেড়ে কোথাও যাব না।
ইতি — শেষ হয়েছে তোমার কথা এখন যাও।
ফারদিন —– কোথায়,
ইতি —– বাহিরে,
ফারদিন —– হুম কবে যে এক রুমে থাকব।
ইতি ——- যাও তো,
ফারদিন —- ওকে।

ফারদিন বাহিরে চলে গেল,তার একটু পরই সুমাইয়া রুমে আসলো,
সুমাইয়া —- আপু,
ইতি —- কোথায় ছিলি,
সুমাইয়া —– আর কোথায় এখানেই ছিলাম এটা বল তোর সাথে ভাইয়ার কথা হয়েছে।
ইতি —- তুই জানলি কিভাবে
সুমাইয়া ——– আমার সামনে দিয়েই তো আসলো।
ইতি —- ঠিক আছে রাত হয়েছে ঘুমা,
সুমাইয়া —— আপু বল না কি কথা বললি
ইতি —- কি আর বলব তুই তো জানিস ওর আছে সব ফালতু কথা আর তোকে ওতো কিছু জানতে হবে না এখন ঘুৃমা
সুমাইয়া —– ঠিক আছে।

সুমাইয়া শুয়ে পড়লো কিন্তু ওর ঘুম আসছে না, ইতি বসে বসে বই পড়ছে
সুমাইয়া —— আপু,
ইতি —— কি হয়েছে ঘুমাচ্ছিস না কেন
সুমাইয়া —– ঘুম আসছে না তো তুই আমার কাছে এসে বস তো।
ইতি — কেন???
সুমাইয়া —— আহা বস না।
ইতি গিয়ে বসলো,
ইতি — এবার বল কি।

সুমাইয়া গিয়ে ইতির কোলে মাথা রেখে বলল,
সুমাইয়া — এখন আমার মাথায় বিলি কেটে দে।
ইতি সামান্য হেসে বলল,
ইতি —- ঠিক আছে।
সুমাইয়া — আপু জানিস এখন প্রায় ঘুম চলে এসেছে,
ইতি —— ঘুমা তাহলে,
সুমাইয়া —– ভাইয়ার ও কথা শখ তোমার কোলে মাথা রেখে ঘুমাবে,
ইতি —- মার খাবি এখন ঘুমা,
সুমাইয়া —— ঠিক আছে।

পরের দিন ভার্সিটিতে যাওয়ার সময়,ইতি আর সুমাইয়া ফারদিন আর প্রিয়কে দেখে হাসছে,আর ওরা দুজন ব্রু কুচকে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে
ফারদিন ——- কি ব্যাপার এভাবে হাসছিস কেন তোরা
প্রিয় ————–আসলেই তো কি সমস্যা
ইতি —————হাসবো না তো কি করব
সুমাইয়া ———তোমরা এমন আবহাওয়া ছাতা নিয়ে রেখেছ কেন
প্রিয় ————–খুব সম্ভবতঃ আজ বৃষ্টি হবে
ফারদিন ——-হুম তোরাও নিয়ে নেয়
ইতি ————– প্রয়োজন নেই কারণ আমাদের মনে হয় না আজ বৃষ্টি হবে
ফারদিন ——-হবে দেখিস
সুমাইয়া ——-কচু হবে
প্রিয় ————হবে
সুমাইয়া —— না
প্রিয়া ———–হবে
সুমাইয়া ——-না
প্রিয় ———– এই বাচ্চা মেয়ে বললাম না হবে
সুমাইয়া —–আমি বাচ্চা না 😠
প্রিয় ———-আসলেই তুমি বাচ্চা না তুমি বুড়ি
সুমাইয়া —-কি😠😠😠
ফারদিন —— আরে তোরা ঝগড়া বন্ধ কর
ইতি ————- হুম
ফারদিন —— আজ যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে তোরা যা বলবি আমরা তা করব,আর যদি বৃষ্টি হয় আমরা যা বলব তোরা তা করবি, কি প্রস্তাবে রাজি তো
সুমাইয়া ——-হ্যা হ্যা রাজি আমরা ভয় পাই না
ইতি ————-কি বলছিস তুই আরে কোনো কিছু হবে না
ফারদিন ——কি ভয় পাচ্ছিস তুই
ইতি ————-আমি ভয় পাই না
ফারদিন —— তাহলে ডান
ইতি ————-হুম ডান

ভার্সিটিতে পৌছে ইতি ওর ভবনের দিকে গেল আর সুমাইয়া পর ভবনের দিকে,,,,,,,
সুমাইয়া যেতেই হঠাৎ বৃষ্টি শুরু, সুমাইয়া গিয়ে একটা গাছের নিচে দাড়িয়ে বলতে লাগল
সুমাইয়া —যা বাবা বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল
তখনি ওপাশ দিয়ে প্রিয় যাচ্ছিল।প্রিয় ছাতা হাতে নিয়ে ওর কাছে গিয়ে বিশ্ব জয় করা একটা হাসি দিয়ে বলল
প্রিয় —কি বলেছিলাম সত্য হলো তো
সুমাইয়া —😶
প্রিয় সামান্য হেসে বলল
প্রিয় —- চল তোমাকে তোমার ক্লাসে দিয়ে আসি
সুমাইয়া —হুম

অন্যদিকে,,,,,,,,,ইতি যেতে যেতে বৃষ্টি শুরু হওয়াতে অবাক হয়ে দাড়িয়ে আছে, তখনি ফারদিন এসে ওর মাথার উপর ছাতা ধরলো
ফারদিন —– বোকা মেয়ে এমন বৃষ্টির মাঝে দাড়িয়ে আছিস কেন
ইতি ——–সত্যি সত্যি বৃষ্টি নেমে পড়লো।
ফারদিন —- চোখে দেখিস না
ইতি —- হুম
ফারদিন —-এবার চল
ইতি —- ঠিক আছে

ইতি আর ফারদিন যেতে, ফারদিন বলে উঠল
ফারদিন —–দেখলি সত্যি বৃষ্টি নেমে গেল
ইতি ——হুম,তুমি কিভাবে জানলে
ফারদিন —নিউস দেখেছিলাম তাছাড়া আমারও মনে হয়ে ছিল
ইতি —–ও
ফারদিন –বায় দ্যা ওয়ে,মনে আছে তো
ইতি —– কি
ফারদিন —— যা বলব তা করতে হবে, তুই হেরেছিস
ইতি শুকনো ঢোগ গিলে বলল
ইতি —–ক,,ক,,,কি করতে হবে
ফারদিন —-এখন না বাড়ীতে ফিরে তারপর বলব
বলেই হেসে সামনে তাকালো,ইতি ভয়ে ভয়ে ফারদিনের দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢোগ গিলে আবার সামনে তাকালো।

চলবে,,,,,,,,,,

ভুলক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন