অবৈধ বিয়ে পর্ব-১২+১৩

0
261

#পর্বঃ১২+১৩
#অবৈধ_বিয়ে
#Sabriha_Sadi
পর্ব : ১২

সকালে,,
রানির ঘুমটা হাল্কা হয়ে আসছে। মনে হয় এখনি সেই পূর্ণতার রাতের ঘুমটা কাচের টুকরোর মতো ভেঙ্গে যাবে।

চোখ গুলি মিটমিট করছে রানির। সে অনুভব করছে নরম কিছু একটার পরে আছে। রানি চোখ গুলি সম্পূর্ণ খুলে ফেলল। “পূর্ণতার রাতেরও কি অবসান ঘঠল তার চোখ খোলবার সাথে?”

রানি পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখে সে রাজের বুকে শোয়ে আছে। অথচ, সেই মানুষটার শরীর খালি। কাপড় ছাড়া, লোমযুক্ত সাদা ধবধবে বুকের দিকে তাকিয়ে আছে রানি। মুখটা রাজের বেশ মায়াদার কি শান্ত ভাবে ঘুমিয়ে আছে মানুষটা। দেখলে বুঝাই যাবে না, এই লোকটার এত রাগ। কিছু হতে না হতেই রাগে ফুসতে থাকে সাপের মতো। এই মুখটা দেখলে বুঝার কোন উপায় নেই য়ে, এই মানুষটাই অন্য মানুষদের মারতে পারে টাকার জন্যে, অপরাধ করতে পারে। “রানি ভাবছে। তার ভাবনা যেন শেষ হবার নয়।”
রানির খেয়াল এলো নিজের দিকে। সে অনুভব করতে পারছে তার শরীরে উপরের কাপড়টা ছাড়া অবশিষ্ট কিছুই নেই। রানির দুনিয়াটা যেন উল্টেপাল্টে যাচ্ছে। চিন্তাশক্তি, ভাবনাশক্তি সব যেন তার লোপ পেয়েছে। মাথাটাও যেন ঘুরছে। শরীরটা প্রায় নিস্তেজ হয়ে আসছে তার। চোখ দিয়ে গড়গড়িয়ে গাল বেয়ে চোখের দু ফোটা মুক্তো গড়িয়ে পড়ল। “যে বিয়েটা কে সে মানে না, সেই বিয়ের সূত্র ধরে রাজ তার সাথে এটা করতে পারল?” রাজ তার সাথে এটা করতে পারল? রাজ তো তাকে ভালোবাসে। আর ভালোবাসার মানুষের জন্যে তো ৩ দিন নয়, বছরের পর বছর অপেক্ষা করা যায়। এই ছিল রাজের মনে?
রানি আর কিছু ভাবতে পারছে না। চোখের পানি মুছে নিজের কাপড় গুলি খুঁজে পড়ে নিল। বুকটা তার কষ্টে ফেটে যাচ্ছে। রাগের প্রতি রাগ টাও বাড়ছে।

রানির নড়াচড়াতে রাজের ঘুমটা প্রায় ভেঙ্গে গেল। রাজ ঘুমঘুম চোখে রানির দিকে তাকাল। রাজ এক হাত রানির কপালে বাড়িয়ে দিতে দিতে,,

– দেখি তোমার জ্ব…….

কথাটা রাজের শেষ করতে দিল না রানি। এক ঝাঁটকায় রাজের হাতটা সরিয়ে দিল নিজের থেকে।
রাজ নিজের তাল সামলাতে না পেরে একটু সরে গেল।

রানি রাগে ঘটঘট করতে করতে ওয়াশরুমের দিকে যেতে পা বাড়াল। শরীরের সব গুলি লোমকূপে যেন তার ব্যথা। পা গুলি যেন নড়তে চাইছে না। ব্যথায় শরীর মটমট করছে। কোমরের নিচ থেকে যেন সে শক্তিই পাচ্ছে না।

রানি ওয়াশরুমে ডুকার আগের রাজ তার হাতটা ধরল।

– কি হয়েছে রানি?
রানি আবারও এক ঝাঁটকায় নিজের হাত ছাড়িয়ে নিল রাজের মুঠি থেকে।

– কি হবে মানে? কি হওয়ার বাকি রেখেছেন?
– কি বলছো তুমি?
– কি বলছি মানে? আপনি কিছু বুঝেন না? ভালো মানুষ আপনি? আরে ভালোই যদি হতেন তাহলে সুযোগ নিতেন না।
– রানি কি বলছো এইসব তুমি? সুযোগ? কোন সুযোগের কথা বলছো তুমি?
– বাহ্ রাজ চৌধুরী। বাহ্। দারুণ অভিনয় করতে পারেন আপনি। (হাত তালিয়ে বলছিল রানি)
– রানি কি বলছো তুমি? আমার কথাটা শুনো। তুমি যা ভাবছো তা নয়। আসলে কাল তুমিই….
– থাক রাজ চৌধুরী। আর বলতে হবে না। আমার যা বুঝার আমি বুঝে নিয়েছি। আর বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে বলে মিথ্যুক হবার দরকার নেই। আপনি নাটক করতে জানেন অনেক। এখন তে মনে হচ্ছে, সেই প্রথম থেকেই আপনি আমার সাথে নাটক করেছেন। আর এত দিনই আমার সাথে নাটক করে গেলেন আপনি। আর আজ? আজ কি করলেন আপনি? জ্বি…
আপনি তো ড্রামা কিং।

রাজের খুব বেশি রাগ হচ্ছে রানির কথাতে। কিন্তু রানি এমন কেন বলছে? কাল রাতে তো রানিই তাকে কাছে টেনে নিয়ে ছিল। রানির সম্মতিতেই তো কাল রাজ রানির পূর্ণতা মিলল। কিন্তু রানি এখন এমন কেন করছে? তাহলে কি রানির কালকের কথা কিছু মনে নেই? রানি জ্বরের ঘোরে রাজ কে কাছে টেনেছিল। জ্বরের ঘোর কাটতেই কি রানি সব ভূলে গেল? রানি হয়তো এখন তাকেই দোষারোপ করছে। ভাবছে হয়তো সে নিজেই রানিকে……… রানি হয়তো মনে মনে এটাই ভেবে নিয়েছে যে, সে রানির সুযোগ নিয়েছে।
কিন্তু এমন টা তো হয়। এমন কিছুই না।

– রানি প্লিজ। তুমি মনে করো কাল রাতে তুমিই আমাকে কা,,,,,,,

ঠাসসসসসসস।

রাজ হা করে রানির দিকে তাকিয়ে আছে। নিজেকে খুব বেশিই খারাপ মনে হচ্ছে। বুকের ভিতর চিনচিন ব্যথা হচ্ছে তার।

রানি তাকে চড়টা দিতে পারল? কি করে? রাজের তো কোনো দোষই ছিল না। কাল রাত যদি রানি জ্বরের ঘোরে এমন না করত তাহলে তো রাজ তাকে ছোঁয়েও দেখত না। রাজ চাইলে তো অনেক আগে সুযোগ নিত। কিন্তু তা তো সে করেনি। কারণ সে রানি কে ভালোবাসে। রাজের নিজের যে কন্ট্রোল আছে তাতে সে রানি কে চোখে দেখেই কাটিয়ে দিতে পারবে সারাটা জীবন। তাকে কাছে না পেয়েও শুধু চোখের সামলে রেখেই জীবন কাটাতে পারে রাজ। কাছে না পেলে কষ্ট পাবে ঠিকিই। রানির মত ছাড়া নিজেকে কন্ট্রোল রাখার ক্ষমতা আছে তার।
সে তো কাল রাতে চায়নি রানির কাছে যেতে। রানিই তো তাকে……
রাজের বুকে চিনচিন ব্যথায় মনে হচ্ছে বুকটাই ফেটে যাবে। রাজের আর ভাবতে ভালো লাগছে না।

– এত কিছুর পরেও আপনার সাহস কি করে হয় আমাকে ছুঁয়ার? কি মনে করেন?
-…..
– আপনি খুব খারাপ। আপনার চরিত্র ঠিক নেই। আপনার সাহস হয় কি করে আমাকে ছুঁয়ে দেখার?

রাজ রাগে, রানির হাত দুটি ধরে দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরল। চোখ দিয়ে যেন আগুন ঝরছে। সেই আগুনের একটুখানি ফুলকি যদি রানির উপর পড়ে। হয়তো রানি সেই আগুনেই পুড়ে ঝাঁঝরে যাবে। রাগে যেন মুখ দিয়ে রাজের কথা বের হচ্ছে না। দাঁত কিড়িমিড়ি করছে রাজ।

– তোমাকে ছুঁয়ার সাহস দরকার হয় না আমার। এটা আমার অধিকার। একটা স্বামীর অধিকার। আর তুমি নিজে যদি মনে করো আমি তোমাকে ইচ্ছে করেই তোমার সাথে খারাপ কিছু করেছি তাহলে তাই। যদি মনে করো আমি তোমার সুযোগ নিয়েছি, তাহলে তাই। হ্যাঁ আমি তোমার সুযোগই নিয়েছি। মনে রেখো, “কারো কাছে একবার সুযোগ এলে তা ছাড়তে নেই। সেটা ভালো হোক বা খারাপ।” আর আমি আমার অধিকার ছাড়ছি না। ছাড়বোও না। আমি আমার অধিকার বেশ ভালো করেই আদায় করতে জানি।

রাগে সে দেয়ালে জুরে একটা ঘুষি দিয়ে ওয়াশরুমে ডুকে গেল।

#অবৈধ_বিয়ে
#Sabriha_Sadi
পর্ব : ১৩

বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে। রানি জানালার গ্রিল দরে দাঁড়িয়ে আছে।

বাবার কথা তার বড্ড মনে পড়ছে। কি করছেন উনি? বাবা ভালো আছে তো? ঠিকঠাক থাকে উনি? কি খায় কে জানে? রান্না করে দেওয়ার মতে পাশের বাড়ির ঝরা আপু ছাড়া তো কেউ নেই। বাবা ওর হাতের রান্না করা খাবার খেতে পারে? এই সব চিন্তা করছিল রানি।

বাহিরের টুপটুপ করে পড়া রিমঝিম বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে রানি। তার স্মৃতি জুরে আরো একটা মানুষ যে রয়েছে। হ্যাঁ সেটা রাজই।
রাজের স্মৃতি গুলি রানি কে মনে করিয়ে দিচ্ছে।

রানির এখনো মনে হয়, এই তো সেদিন রাজ তার জন্যে এমন করত। পাগলের মতো করত একবার তাকে দেখার জন্যে। তাদের দেখাটা স্বাভাবিক ভাবে হয়নি।
রাজের গাড়িতে রানির ওড়না লেগে গিয়েছিল। সে সেদিন, সাদা একটা ড্রেস পড়েছিল। চুল গুলি খুলা। কমলা রঙ্গের ওড়নাটা রাজের গাড়ির চাকায় লেগে গিয়েছিল। সে তা খোলবার চেষ্টা করছিল নিচে বসে। চুলগুলি সামনের মুখে এসে পড়ছিল। সারা মুখটা যেন চুলে ঢাকা ছিল। রাজ গাড়িতে ছিল না। দোকান থেকে কি যেন কিনতে নেমেছিল। নিজের গাড়ির সামনে এমন একজন কে দেখতে পেরে সে অবাকই হলো। তার মুখ দেখা যাচ্ছিল না। রাজ ধীরগতি তে তার সামনে যায়। চুপ করেই ছিল কথা বলেনি। হঠাৎ করেই রানি উঠে গেল। রাজ হা করে তার দিকে তাকিয়ে ছিল। রাজের চোখ যেন পড়ছিলই না। রানি একবার রাজের দিকে তাকিয়ে তার সামনে দিয়ে ঘটঘট করতে করতে চলে এলো সে। সে দিনের পর থেকে প্রতিদিন রাস্তায় থাকত সে। রাস্তায় যদি রানি একবার না দেখতে পেত তাহলে ভার্সিটির সামনে ঠিকি চলে আসত বান্দা। রাজের এমন কাজে সে খুবই হাসত। রানির একটু একটু ভালো লাগত। রাজের এমন কাজে রাজ তার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিল। তাদের কখনো রাস্তায় চোখাচোখি হতো। রাস্তায়, কোনো এক মুড়ে, বা কখনো ভার্সিটির সামনে তাদের রোজ দেখা হতো। রাজ তার সাহায্য করার জন্যে কতবার এগিয়ে এসেছে। কিন্তু রানি ফিরিয়ে দিয়েছে। এভাবেই তাদের ২ মাস কেটে গিয়েছিল। ২ মাস পর যখন একদিন রানি হেটে হেটে রাস্তা দিয়ে ভার্সিটি যাচ্ছিল, তখন রাস্তায় অনেক লোক কে এক সাথে জড়ো হতে দেখে এগিয়ে যায়। চেঁচামেচি তে সে যতটুক বুঝছিল, সেখানে কয়েকটা লোক কে এক জনে অনেক মারছে। রানি কৌতূহলপূর্ণ হয়ে সেখানে গেল। চোখের সামনে যা যা দেখতে পেল তা দেখে সে হা করে তাকিয়ে আছে। কি হচ্ছে এটা? রাজ? এই নিরপরাধ মানুষ গুলি কে কি নির্দয় হয়ে মারছে। একটা মানুষ এমন হিংস্র হয় কি করে? সেদিন রাজ কে এই ভাবে দেখার পর রানির অনেকটা রাগী হয় পরে। রাজ কে সে ভালোবাসত না তবে একটু একটু ভালো লাগা কাজ করত। সেদিনের পর থেকে ভালোলাগাটাও তার কেটে গেল। রাজ কে যেন সে সহ্যই করতে পারত না। সে কখনোই ভালোবাসতে চাইত না কাউকে। কারণ টা ছিল তার বাবা। ছোট থেকে মানুষটা তার জন্যে সব করেছে। সে তাকে কষ্ট দিবে না বলে অনেক ভালো ভালো ছেলে কে ফিরিয়ে দিয়েছে। বাবার পছন্দে বিয়ে করবে বলে এত দিন নিজে কে সব কিছুর থেকে দূরে রেখেছে। কিন্তু ভাগ্য তাকে সেই তার বাবা কে কষ্টই দিল। কি হলো এত দিন ভালো করে থাকার? সে দিন মারার পর রাজ রানি কে দেখেছিল। রাজ রানি অনেকক্ষণ একে অপরের দিকে তাকিয়ে ছিল। রানির চোখে ছিল অবাক হওয়া আর করুণার দৃষ্টি। তবে সেদিনও রাজের চোখে ছিল আগুন মাখা রাগ। আস্তে আস্তে সব লোক চলে গেল। রাজ আর রানি দাঁড়িয়ে ছিল। রাজ একটুপর কিছু না বলে গাড়ি নিয়ে তার সামনে দিয়ে হনহন করে চলে গেল। সে দিনের পর থেকে রাজ কে দেখলেই তার রাগ হত। তার পিছু নিত বলে কত অপমান করে ছিল। রাজ সব সহ্য করে প্রায় ৬ মাসের মতো তার অবহেলা মেনে নিয়েও তার পিছু নিত। রানি কে না দেখলে যে রাজ থাকতে পারত না। অবহেলা সহ্য করেও রোজ চলে আসত তার সামনে। তারপর ৬ মাস পর, রাজ রাস্তার সামনেই তাকে প্রোপোজ করে দিল। এখনো তার কথা গুলি কানে বাজে।

– আমি জানি না আমি কতটা ভালো। ভালো খারাপ মিলেই তো দুনিয়া। আমাকে তুমি যা ভাবো আমি তেমনটা নই। খুব সুখে রাখব তোমায়। কখনো কষ্ট দিব না। দুনিয়ার সব সুখ দিতে না পারলেও এইটুক জানি, আমি তোমাকে কষ্ট পেতে দিব না। রানি আমি তোমাকে ভালোবাসি।

কিন্তু সেদিন সে রাজকে ফিরিয়ে দিয়েছিল। রাস্তায় সবার সামনে এই সব কথা বলার কারণে তার রাগ উঠে গিয়েছিল। সেই দিনের মানুষ গুলি কে মারার কথা তার মনে পরে গেল। রানি তাকে খুব অপমান করে ছিল।

– হাহাহাহা। বাহ্ খুব নিলজ্জ্য মানুষ তে আপনি। আমি যে এত দিন আপনাকে যা তা বলেছি, তারপরেও এমন বলেন কি করে আপনি? মানসম্মান কি একটুও নেই আপনার? এতটাই ছোটলোক আপনি? ছিঃ। ঘৃণা হয় আমার। আমি আপনাকে ঘৃণা করি। ভালোবাসা তো দূরের কথা। আর যাই হোক আপনার মতো কোনো গুণ্ডা কে কখনো ভালোবাসা যায় না। আপনি আপনার এই মুখটা কখনে আমার সামনে আনবেন না। যদি ভালো ঘরের ছেলে হোন তাহলে আপনি আমার সামনে আসবেন না। আর ভালে ঘরই বলছি কি করে? যদি আপনার মা বা ভালো শিক্ষাই দিত তাহলে রাস্তায় এইভাবে কাউকে মারতেন না। আর আমাকেও এইভাবে আপ………
– স্টপ। একদম চুপ। আর একটাও কথা না। অনেক হয়েছে। আরে তুমি নিজেই বা কেমন মেয়ে? যে কারো মা বাবা কেই সম্মান দিতে জানে না তাকে কেউ কি করে ঘরে বউ বানাবে? আজ তুমি না হয়ে অন্য কেউ হলে এই কথা গুলির জন্যে তাকে মেরে ফেলতাম।

সেদিন রাজ তার সামনে দিয়ে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে গিয়েছিল। সেদিনের পর থেকে আর সে রাজের মুখ দেখেনি। আবার সেই রাতে হঠাৎ করেই তার সামনে মানুষটা চলে এসেছিল। কিন্তু সে এখনো জানতেই পারল সে দিন তাকে তুলে রাজ আনিয়েছিল নাকি অন্য কেউ? সে ভুল করে এসে পরেছিল নাকি ইচ্ছে করে তাকে আনা হয়েছিল? রানি না হয়ে অন্য কেউ হলেও কি রাজ এমন করত তার সাথে? এইভাবে বিয়ে করিয়ে আনত? রাজ তার কোন ক্ষতি করত না? রাজ কেনোই বা এটা করেছিল। এই উত্তর গুলি সে জানে না। তবে জানতে চায়।

রানির ভাবনায় ছেদ পড়ল, বজ্রধ্বনি তে। এতক্ষণ তার ভাবনার জগতে রাজ নামক মানুষ টি ছিল। যার বেশির ভাগ টাই তার অজানা।

রানির আজ এইরকম করার কারণটা হলো, সে ভেবেছে রাজ তার সুযোগ নিয়েছে। কেন রাজ যে বাসর রাতে তার সাথে জুর করে কিছু করে নি? করেছিল তো। কিন্তু যেদিনও তো সে এতটা রিয়েক্ট করেনি। আজ কেন তার সুযোগ নিতে হলো তার? রাজ কি এতটাই খারাপ যে তার সুযোগ নিতে হয়?
কিন্তু তারও তো কাল রাতের কিছু মনে নেই। তার ইচ্ছে করে রাজ কে বিছানায় জায়গা দেওয়াতে কি রাজ তার সুযোগ নিল? এই বিষয়টা যেন রানি মানতেই চাইছে না। রাজ এতটা খারাপ হলো? রাজ কি এমনই?

রাজ ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করা রেখে বেলকুনিতে গেল।

– রানি ২ কাপ কফি বানিয়ে আনো না।
-…..
– তোমাকে কিছু বলছি।

রানি কথা না বলে রান্নাঘরে গেল। কফি বানিয়ে দুই মগে দুই কাপ কফি নিয়ে রাজের রুমে গেল।
কোনো শব্দ না করে টেবিলে মগ দুটি রেখে সে বেলকুনিতে চলে গেল।

রাজও তখন সেখানেই ছিল। রাজ এখবার তার মুখের দিকে তাকাল। মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে মুখ ভার হয়ে আছে। টেবিল থেকে রাজ মগ দুটি নিয়ে আবার বেলকুনিতে গেল।

– নাও।
-….
– রানি মগটা ধরো।
– ( রানি মগটা রাজের হাত থেকে নিল)
– সরি।
-…
– রানি সকালের রিয়েক্টের জন্যে সরি। তোমার কথাতে মাথা ঠিক ছিল না। সরি।
-….
– কিন্তু রানি আমার কাল রাতে কোনো দো…..
– থাক না। বাদ দিন। যা সর্বনাশ হবার আমার হয়েছে। আর কিছু হবার বাকি নেই। আর কিছুই না।

রানি চলে যেতে নিচ্ছিল। রাজ তার হাতটা ধরে ফেলল।

– এখানে দাঁড়াও।
– আমি ঘরে যাবো।
– তোমাকে দাঁড়াতে বললাম।
– আমি দাঁড়াব না।
– রানিইই।
– আপনি আমার উপর আর গর্জে উঠবেন না। আমি আপনাকে ভয় পাই না।

রাজ রানির হাতটা একটু শক্ত করেই ধরল।
– লাগছে আমার।
– এখানে আসো।
– না।

রাজ এক টানে রানি কে কাছে টেনে নিয়ে এলো।

– এখানে দাঁড়িয়ে থাকো আমার পাশে।

রানিও বাধ্য হয়েই দাঁড়িয়ে রইল।

চলবে….

চলবে…..