অভদ্র_প্রেমিক পর্ব-৭+৮

0
3470

#অভদ্র_প্রেমিক
#পর্বঃ০৭
#Arshi_Ayat

এখন মধ্য বিকেল।আরেকটু পরেই সন্ধ্যা নামবে।নিশাত ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে সাজুগুজু করছে।এরমাঝেই তিহান হাজির হলো।ওর পাশাপাশি দাড়িয়ে বলল”পেত্নী লাগছে তোকে!এতো আটা ময়দা মাখিস কেনো?এমনিতেই তো সুন্দর তুই।”

“আমার সাজগোজ নিয়ে কিচ্ছু বলবা না তুমি।সাজগোজ মেয়েদের জান প্রাণ সবকিছু।”

“হ্যা তা তো হবেই।আমি যাকে বিয়ে করবো ওই মেয়ে একটুও মেকাপ দিতে পারবে না।যদিও আটা ময়দা মাখে তবে সেটা আমার সামনে।”

“তুমি এমন মেয়ে কোথাও পাবা না।”

“না পেলে বিয়েই ক্যান্সেল।”

“ঢং!” নিশাত মুখ বাকিয়ে বলল।তিহান নিশাতের সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ খেয়াল করলো ওর পিঠে একটা তিল।লেহেঙ্গার পিছনের দিকের গলাটা হালকা বড় হওয়ায় ওর তিলটা দেখা যাচ্ছে।একদম জ্বলজ্বল করছে।এমন একটা সাদা পিঠে এই তীলটাই ছেলেদের সর্বনাশের কারণ।তাই তিহান সংযত হয়ে বলল”নিশাত এই লেহেঙ্গাটা খুলে অন্য কিছু পরে নে।”

“কেনো এটা কি খারাপ লাগছে?” নিশাত আইলেনার দিতে দিতে বলল।

“হুম আসলেই খারাপ লাগছে।তুই প্লিজ অন্যকোনো লেহেঙ্গা পড় না হলে শাড়ী পরে নে।”

“উফফ!এখন আবার তোমার জন্য পাল্টাতে হবে।আচ্ছা যাও আমি চেঞ্জ করে আসছি।খালামনি আর তনয় রেডি হইছে?”

“হুম ওনারা রেডি।আমি নিচে আছি।তুই তাড়াতাড়ি আয়।”

তিহান যাওয়ার পর নিশাত লেহেঙ্গা পাল্টে হলুদ কালারের শাড়ী পড়লো।তারপর নিচে আসতেই তিহান ওর পিঠের দিকে খেয়াল করলো নাহ!এখন আর ওর তীলটা দেখা যায় না বলে তিহান একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।তারপর ওরা রওনা হলো।

হলুদে পৌঁছে তিতির খান রিয়াদের মায়ের সাথে কথা জুড়ে দিলো।তনয় কই গেছে আল্লাহ মালুম।তিহান ওর বন্ধুদের সাথে কথা বলছে।বেচারি নিশাত শুধু বসার ঘরে একটা সোফায় চুপচাপ বসে আছে।হুট করে কোথা থেকে যেনো একটা মহিলা আসলো।এসেই নিশাতের পাশে বসে পড়লো।তারপর বললো”তুমি পাত্রের কে হও?”

নিশাত কি উত্তর দিবে?আসলেইতো ও পাত্রের কে হয়?নিশাত ভাবলো রিয়াদ ভাইয়া যদি তিহান ভাইয়ার বন্ধু হয় তাহলেতো রিয়াদ ভাইয়া আমার ভাই হয়।তাই নিশাত মহিলাকে বলল”বোন হই।”

মহিলা পান চিবোতে চিবোতে বলল”কেমন বোন?”

“রিয়াদ ভাইয়ার বন্ধুর খালাতো বোন তো সেই হিসেবে বোন হই।”

“ও তোমার বাড়ি কই?”

“ঢাকা।”

“এখানে কি খালার বাসায় আসছো?”

“হ্যা”নিশাত উত্তর দিলেও ওর এই মহিলার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।কিন্তু তবুও বলতে হবে।মহিলা আবার জিগ্যেস করলো” তোমার ভাই বোন আছে?”

“না আমি একাই।”

“ও,কোন ক্লাসে পড়ো?”

“অনার্সে।”

“তোমার খালা আসছে?”

“হুম।মনে হয় ওইদিকে।

“ও তোমার বাবা, মা কি করে?”

নিশাত উত্তর দিতে নিবে তার আগেই তিহান এসে বলল”কি রে তুই এখানে বসে আছিস কেনো?এদিকে আয় আম্মু ডাকছে।”

এটা বলে নিশাতকে টেনে মহিলার সামনে থেকে নিয়ে এলো।একটু দূরে যেতেই বলল”তুই ওই মহিলার সাথে এতো কি কথা বলছিলি?”

“না তেমন কিছু না।ওই মহিলা আমার সম্পর্কে জিগ্যেস করছিলো আর কি।”

“তারপর তুই কি সব বলে দিয়েছিস?”

“না বেশি কিছু বলি নি।শুধু বলেছি আমি ঢাকা থাকি আর এখানে বেড়াতে এসেছি।”

“এই মহিলার থেকে একশো হাত দূরে থাকবি।”

“কেনো?”

“এই মহিলা ঘটক।”

“ও আচ্ছা ঠিকাছে।দূরে দূরেই থাকবো।”

“আচ্ছা এখন তুই স্টেজের পিছনের দিকে যা ওইখানে মেহের আছে।রিয়াদের বোন।তোর সমবয়সী।ওর সাথে থাক।”

এই বলে তিহান অন্যদিকে চলে গেলো।আর নিশাতের মাথায় যে শয়তানি ঘুরছে সেটা ফলাতেই ও তিতির খানের কাছপ গিয়ে কানে কানে বলল”খালামনি তোমার সাথে সিক্রেট কথা আছে।একটু সাইডে আসো।”

তিতির খান নিশাতের কথামতো সাইডে আসলো।তারপর নিশাত গলা খাদে নামিয়ে বলল”খালামনি একটা ঘটকের সন্ধান পেয়েছি।তুমি চাইলে তিহান ভাইয়ার জন্য কথা বলতে পারো।”

তিতির খান খুশী হয়ে বলল”কোথায়?”

নিশাত তিতির খানকে নিয়ে বসার রুমে এসে ওই মহিলাকে দেখিয়ে দিয়ে চলে গেলো স্টেজের পিছনের দিকে।সেদিকে আসতেই একটা মেয়ে এসে বলল”তুমি কি নিশাত?”

“হুম।তুমি মেহের।”

“হুম আসো আমার ফ্রেন্ডদের সাথে পরিচয় করাই।”

নিশাত মেহেরকে নিয়ে চলে গেলো।

রিদয়,নয়ন,অয়ন,শাহেদ আর তিহান পাঁচবন্ধু মিলে আড্ডা দিচ্ছিলো।কথায় কথায় হঠাৎ শাহেদ বলল”কি রে তিহান তুই বিয়ে করবি কবে?”

“জানি না।”

“এমন করলে হবে না তিহান।” নয়ন বলল।

“তুই আমাদের বলিসও না কেনো এমন করছিস?শুধু শুধুই কষ্ট পাচ্ছিস তুই।” অয়ন তিহানের কাঁধে হাত দিয়ে বলল।

“ভাই তুই এমন করছিস কেনো?ধরছিসও না ছাড়ছিসও না।এভাবে হবে না হয় ওকে বলে দে নয় মুভ অন কর।”রিদয় বলল।

” তুই প্রান্ত কে বলে দিতেই পারতি।কিন্তু না তুই নিজেও বললি না আমাদেরও বলতে দিলি না।”শাহেদ কিছুটা রেগে বলল।

শাহেদের কথায় সবাই সমর্থন করলো।কিন্তু তিহান চোখের পানি গোপন করে কিছুটা হাসলো।এই হাসির অর্থ কি?কেনো তিহান এমন করছে সেটা বন্ধুরা কেউ জানে না ওর কষ্টটা সবাই উপলব্ধি করতে পারছে।

চলবে….

#অভদ্র_প্রেমিক
#পর্বঃ০৮
#Arshi_Ayat

হলুদ লাগানো শেষ।একে একে সব আত্মীয়রা মিলে রিয়াদের হলুদ শেষ করলো।এবার হলো নাচ,গানের আসর।সবাই পারফর্ম করছে।হঠাৎ মেহের এসে নিশাতকে বলল”হেই নিশাত তুমিও একটা গান গাও না প্লিজ।”

“তিহান ভাইয়া বকা দিবে।” নিশাত মন খারাপ করে বলল।

“আরে না কিছু বলবে না।আর বললে বলবে আমি গাইতে বলছি।”

“আচ্ছা তবে আমি কিন্তু কোনো গানই ঠিক করে গাই না।যেটাই গাই সেটার তেরোটা বাজিয়ে রাখি।”

“আচ্ছা ওকে সমস্যা নাই।”

তারপর মেহের নিশাতকে মাইকে ধরিয়ে স্টেজে পাঠালো।নিশাতকে স্টেজে দেখে তিহানের চোখ কপালে।তিহান মনে মনে বলল’আজকে মান ইজ্জতের ফালুদা করে দিবে এই মেয়ে।’তিহান স্টেজে উঠে ওকে থামাতে গেলে রিয়াদ আর নয়ন ওকে যেতে দিলো না।কি আর করার!!বসে বসে এখন এই অখাদ্য শুনতে হবে।নিশাত স্টেজে উঠেই একটা পোজ নিয়ে দাঁড়ালো।তারপর মাইকটা মুখের সামনে ধরে বলল”আর ইউ রেডি বেবিস?হোয়াটস আপ পোলাপাইন?”
নিশাত এতটুকু বলতেই সবাই একসাথে চিল্লিয়ে বুঝালো তারা রেডি।সো গান শুরু।নিশাত শুরু করলো

“জান ও বেবি,সোনা ময়না পাখি,
কবে তুমি হবে আমার আসবে বুকে।

তোমার যতো ভাই ব্রাদার ডাকবে আমায় ভাবী,
আমার শাড়ীর আচলে তে থাকবে ঘরের চাবি।
হাবুডুবু খাচ্ছি আমি প্রেম সাগরে নেমে।
প্রথম দেখায় পড়েছিলাম আমি তোমার প্রেমে।

তোমারি খাড়া চুল করে আমায় পাগল।
সময়টা যেনো থেমে যায়
আমি চাই না কিছু আর ছেড়ে দেবো রে সব।
তোমার এক ইশারায়।

এই মন তো তোমারি,
ওয়ে লাল পান্জাবি।
কবে তুমি নিবে বলো বউ বানিয়ে ঘরে।

যদি পারি এনে দেবো চন্দ্রতারার মেলা,
বিয়ের পর দুজন মিলে খেলবো মিষ্টি মিষ্টি খেলা।
আমার ছোট ভাইকে ডাকবে তুমি শালা।
বিয়ের পরে দুজন মিলে দেখবো আলিফ-লায়লা।

তোমার ওই দাড়ি বড়ো ভালোবাসি,
সুযোগ দিলে তুমি আমায় তোমার মাথায় উঠে বসি।🐸

জান ও বেবি সোনা ময়না পাখি,
কবে তুমি হবে আমার আসবে এ বুকে।

গানের মাঝখানে দিয়েই হাসির রোল পড়ে গেছে।গান শেষ হওয়ার পরও হাসি থামার নাম নাই।

নিশাত স্টেজ থেকে নামতেই মেহের এসে বলল”বোন তুমি কি গান গাইলা হাসতে হাসতে আমি শহিদ।”

“আমি এভাবেই গাই।” নিশাতও হাসতে হাসতে বলল।

তারপর মেহের, নিশাত আর ওর বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিতে বসলো।একফাঁকে রিয়াদের মা এসে বলল”মেহের ওদের নিয়ে খেতে বস।”

“আচ্ছা মা।” এটা বলে মেহের সবাইকে নিয়ে খেতে বসলো।একটু বিরিয়ানি খেতেই নিশাত আর খেতে পারলো না প্রচুর ঝাল লাগছে।তাই নিশাত আর না খেয়ে উঠে পড়লো।
মেহের নিশাতকে এভাবে উঠতে দেখে বলল”কি হলো খাবে না?”

“না মেহের আমার মাথা ধরেছে খেতে ইচ্ছে করছে না।”

“আমি মাথাব্যথার ঔষধ এনে দেই?”

“না না দরকার নেই মেহের ঠিক হয়ে যাবে।ঠিক হয়ে গেলে আমি খেয়ে নিবো।”

এগুলো বলে নিশাত পাশ কাটিয়ে আবার স্টেজের পিছনে চলে এলো।এদিকটা এখন ফাঁকা।সবাই খেতে বসেছে তাই!নিশাত এখানে এসে দাড়াতেই তিহান ওর পাশাপাশি এসে দাড়িয়ে বলল”তুই এখানে?আমি তোকে সারা এলাকা খুঁজলাম।”

“কেনো?” নিশাত ভ্রু কুচকে বলল।

“তোকে নিয়ে বাইরে যাবো খেতে।খাবারে ঝাল হয়েছে খেতে পারি নি।”

“কিন্তু তুমিতো ঝাল খেতে পারো।” নিশাত বলল।

“হ্যা,কিন্তু আজ খেতে ইচ্ছে করছে না।আমি জানি তুইও খাস নি।এইজন্যই চল দুজনে মিলে খেয়ে আবার চলে আসবো।”

“ওকে চলো।”নিশাত আর তিহান বেরিয়ে পড়লো।

ওদের দুজনকে যেতে দেখে রিয়াদসহ সব বন্ধুরা দীর্ঘশ্বাস ফেললো।রিয়াদ খেতে খেতে বলল” ও এমন করছে কেনো বলতো?আমার ভালো লাগছে না।এই বিরিয়ানিটা ও এতো পছন্দ করে কিন্তু নিশাত খেতে পারবে না বলে নিজেও খেলো না।ওকে নিয়ে বাইরে চলে গেলো।”

“আমিও বুঝতে পারছি না ও চাইছে কি?ও কি দেবদাস হয়ে মরতে চায়?”নয়ন বলল।

“জানি না রে ভাই।কিন্তু ওকে যতদূর জানি ও এভাবে নিজের জিনিস ছেড়ে দেয় না।কিন্তু এখন এমন করছে কেনো?প্রান্তর সাথে পরিচয় মাত্র একবছরের এইজন্যই ও জানে না।আর প্রান্তকেও ও বলছে না কেনো?” অয়ন চিন্তিত কন্ঠে বলল।

শাহেদ মন খারপ করে বলল”এর সুরাহা করা দরকার।আমরা যখন ইন্টারে পড়তাম তখন থেকেই ওর মুখে নিশাতের কথা শুনতাম।ও তখন থেকে নিশাতকে ভালোবাসতো।এত্তো বছর ওর মুখে নিশাতের কথা শুনতে শুনতে আমাদের কান পঁচে গেছে।কিন্তু এই একবছরে ওর কি হলো?এমন করছে কেনো?”

“আবার তোদের মনে আছে আমরা যখন অনার্সে ছিলাম তখন সিয়ামও নিশাতকে দেখে পছন্দ করেছিলো।তাই তিহানকে যখন কথাটা বলেছিলো তিহান কষিয়ে থাপ্পড় মেরে বলেছিলো’নিশাত আমার।ভুলেও ওর কথা চিন্তা করবি না।’সেই ছেলে এখন নিজের ভালোবাসা অন্যের হাতে তুলে দেবে!”

“আমার কাছে একটা প্ল্যান আছে।” রিয়াদ বলল।

সবাই একসাথে রিয়াদের মুখের দিকে চাইলো ওর প্ল্যান শোনার জন্য।রিয়াদ আবার বলতে শুরু করলো”শোন আজকে ওকে আমরা যেভাবেই হোক যেতে দেবো না।আটকে রাখবো।যেভাবেই হোক।তারপর রাতে চেপে ধরবো সব বলার জন্য।”

অয়ন চিন্তিত কন্ঠে বলল”যদি না বলে”

“তাহলে…” এতটুকু বলে রিদয় একটা শয়তানি হাসি দিয়ে ফোনে মদের বোতলের ছবি দেখালো।সবাই একে ওপরের দিকে চাওয়াচাওয়ি করলো।তারপর সবাই একসাথে হেসে দিলো।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে তিহান নিশাতকে নিয়ে হাটছে।নিশাত হঠাৎ বায়না ধরে বলল”তিহান ভাইয়া আইসক্রিম খাবো।”

“ঠান্ডা লাগানোর জন্য তাই না?পরে ঠান্ডা লাগলে তো ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মতো ম্যা ম্যা করবি।” তিহান বলল।

“না আমার ঠান্ডা লাগবে না তুমি প্লিজ আইসক্রিম এনে দাও।”

“আচ্ছা কিন্তু বেশি না।”

“ঠিকাছে বেশি খাবো না।” নিশাত সরলজবাবে বলল।

তিহান নিশাতকে আইসক্রিম কিনে দিলো।নিশাত রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতেই খাওয়া শুরু করলো।রিয়াদ দের বাড়ির কাছাকাছি আসতেই কয়েকটা বখাটে ছেলেকে দেখলো মোড়ে দাড়িয়ে হাসছে।তিহান কিছু বলল না। তিহান আর নিশাত ওদের ক্রস করতে করতেই শুনলো ওদের মধ্যে কেউ একজন বলছে”ভাই জিনিসটা হেব্বি!এত্তো সুন্দর পরী দেখি নাই কখনো।ইশশ! যদি পাইতাম”

নিশাত আর তিহান দুজনেই শুনলো।কেউ কিচ্ছু বলল না।নিজেদের মতো হেটে যেতে লাগলো।কিন্তু ভেতরে ভেতরে তিহান রাগে লাল হয়ে গেলো।নিশাত সাথে বলে কিছু করলো না।কিন্তু এই ছেলেগুলোকে যে ও ছাড়বে না সেটা ওর রাগ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।নিশাতকে মেহেরদের কাছে বসিয়ে দিয়ে তিহান আবার বেরিয়ে গেলো।ওকে এসে আবার যেতে দেখে অয়নের কেমন যেনো উলটপালট লাগলো।ওদের কিছু না জানিয়ে অয়নও তিহানের পিছনে পিছনে ছুটলো।তিহান মোড়ে এসই ধুমধাম থাপ্পড় মারতে লাগলো ছেলেগুলোকে।অয়ন পিছন থেকে দেখে দৌড়ে গিয়ে ওকে থামিয়ে বলল”মারছিস কেনো ওদের?”

“কুত্তার বাচ্চারা নিশাতকে নিয়ে বাজে কথা বলছে।আজকে ওদের একদিন কি আমার একদিন।” বলেই আবার মারতে শুরু করলো।তিনজনকেই একসাথে কচলাচ্ছে।অয়ন আর কিছু বলল না।কারণ ও জানে তিহান নিশাতের ব্যাপারে কতোটা পসেসিভ।অন্যকিছু হলে কোনমতে সামলানো যেতে।ইচ্ছামতো পিটিয়ে মনের ঝাল মিটিয়ে তিহান হনহনিয়ে চলে যেতে লাগলো পিছন পিছন অয়নও আসলো।অয়ন ওর পাশাপাশি হাটতে হাটতে বলল”দোস্ত এখনো রেগে আছিস কেনো?এতক্ষণ কেলিয়েও কি শান্তি পাস নি?”

“আরে ইয়ার কি করবো বল।প্রচন্ড রাগ লাগছে।”

“আচ্ছা ঠিকাছে শান্ত হওয়ার চেষ্টা কর।ছেলেগুলো বুঝতে পারে নি।চল ওরা অপেক্ষা করছে।”

দুজনেই ফিরে আসলো বিয়ে বাড়িতে।

মেহেরে আর নিশাত মিলে আড্ডা দিচ্ছিলো।মেহেরের বান্ধবীরা একটু আগেই চলে গেছে।হঠাৎ মেহের নিশাতকে বলল”তোমার মাথাব্যথা সেরেছে?”

“হ্যাঁ এখন ঠিকাছি।” নিশাত মৃদু হেসে জবাব দিলো।

“ও তাহলে এখন খাবার এনে দিই খেয়ে নাও।”

“না না মেহের আমি খেয়েছি।”

“কোথায় খেলে?কার সাথে খেলে?”

“তিহান ভাইয়ার সাথে।আমাকে বাইরে নিয়ে গিয়েছিলো।”

“বাব্বাহ!এতো ভালোবাসা।” মেহের ফোঁড়ন কেটে বলল।

“না মেহের তুমি যেমন ভাবছো তেমন না।আমার ভাই বোন নেই আমি একা।তাই তিহান ভাইয়া আমাকে ভাইয়ের মতো সঙ্গ দেয়।এর বেশি কিছু না।” নিশাত বলল।

“আমার তো মনে হচ্ছে এর থেকেও অনেক বেশি।” মেহের এক ভ্রু উঁচিয়ে বলল।

“মানে?” মেহের দ্বিধান্বিত কন্ঠে জবাব দিলো।

“মানে হলো আমার মনে হয় তিহান ভাইয়া তোমাকে ভালোবাসে।সে তোমার ভাই হিসেবে কিছু করছে না।তোমাকে ভালোবাসে বলে করছে।তুমি হয়তো বুঝতে পারছো না।কিন্তু একটু খেয়াল করলেই বুঝবে।আমি এর বেশি কিছু বললাম না।আমি চাই তুমি বোঝো।”

নিশাত কিছু বলল না কিন্তু মেহের কথাগুলো নিয়ে ভাবনায় পড়ে গেলো।

কোনোমতে অয়ন,রিয়াদ,শাহেদ ওরা মিলে তিহানকে রাজী করিয়েছে আজকে ওদের সাথে থাকার জন্য।বন্ধুদের জোরাজোরিতে তিহান আর না করতে পারলো না।তাই তিতির খান,নিশাত আর তনয়কে বাসায় পাঠিয়ে দিলো।

ওরা যাওয়ার পর ছয় বন্ধু ছাদে গেলো।রিদয়,রিয়াদ,অয়ন,নয়ন,শাহেদ আর তিহান গোল হয়ে বসলো।তিহান ছাড়া বাকি সবার মধ্যেই শয়তানি চলছে!আজ ওরা সত্যিটা জেনেই ছাড়বে!!

চলবে…

(ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।)