অভিনয় পর্ব-০৫

0
173

#অভিনয়
#পর্ব_৫
#মুমতাহিনা_তারিন

শাওন কিভাবে পারলো পারু কে ঠকাতে? পারু তো নিজে থেকে শাওনের সাথে এই আবেগে জড়ায়নি । শাওন নিজে ওকে বাধ্য করেছে । এতো ভালোবাসা কই গেলো? সব কি তাহলে ছিল #অভিনয়!!!যা সময়ের পরিক্রমায় হারিয়ে গেছে। না আর রিপা নিজেকে আটকাতে পারল না হন হন করে হেঁটে শাওনের রুম এ চলে গেলো । নিজের রাগ ক্ষোভ সব ঝেড়ে দেবে ও । মা ছেলে সব কিছু পেয়ে বসেছে যেনো।

‘ তুই পারুকে বিয়ে যখন করবি না তখন ওর পিছনে এতো বছর ঘুরলি কেনো? কেনো ওকে মিথ্যা আশা দিলি!!’

‘ আমি কি করলাম আবার?’

‘ কি করিস নি তুই???তুই যখন চলে গেলি প্রথম প্রথম কত কল দিতিস । যেনো ওকে ছাড়া তুই কত একা আর ঐখানে গিয়ে যখনই সুন্দর মেয়ে দেখলি অমনি গলে গেলি বাহ ভেরি গুড ‘

‘ দেখ মাথা গরম এখন প্যান প্যান করিস না ‘

‘ হুম সুন্দরী বউ কে না চায় যখনই নয়নের কথা বলছি গায় লেগে গেছে । তবে মনে রাখিস যখন তোর কিছু ছিল না তখন পারু ছিল এখন তোর সব কিছু আছে বলেই মানুষ তোর সাথে আছে । খুব অল্প মানুষই খারাপ সময় পাশে থাকে ‘

আর কথা বাড়ায় নি রিপা বেরিয়ে গেছে শাওনের ঘর থেকে । চোখ ফেটে পানি বেরোচ্ছে ওর । রিপার জানা নেই পারু এইসব জানলে কিভাবে নিজেকে সামলাবে ।
____________________

তনুজা বসে আছে মাটির বারান্দায় দৃষ্টি তার অদূরে । পারু কে খুব বেশি আদর দিয়ে তনুজা বড়ো করে নি । তবে পারুকে তনুজা অনেক ভালোবাসে চোখের সামনে পারু থাকবে ভেবে ভালো মনেই শাওনের সাথে বিয়ে দিতে রাজি হয়েছিল তনুজা । শাওন যা টিউশনি করে তাতে পারুকে চালাতে পারতো । পারুর বড়ো ইচ্ছা নেই ছোটো কিছুতেই খুশি থাকে। মেয়েটাকে শাওনের সাথে এতো হাসিখুশি থাকতে দেখে প্রশান্তি লাগতো তনুজার ।কেনো যে ভালো মানুষদের সাথেই এমন বেইমানি করে ।

তনুজা বুঝতে পেরেছিল তাদের এখন আর কোনো সম্পর্ক রাখতে চাইছে না তাহেরা বানু । এখন তারা বড়লোক আর তনুজা রা গরীব । সালাম মিয়া শাওন দের বাড়ি থেকে এসেই চুপ করে গেছে ।

পারু পাড়ার অন্য মহিলাদের সাথে মিলাদের সব কিছু গুছিয়ে দিয়ে বাড়ি আসলো । হাত দিয়ে আদা , রসুন,পেঁয়াজের মিশ্র গন্ধ বের হচ্ছে । যা এক্কেবারে বিচ্ছিরি লাগছে পারুর কাছে । তাই তাড়াতাড়ি গোসল করে নেবে ভেবেছে । বাড়ি এসে চাচা চাচীকে মন মরা হয়ে বসে থাকতে দেখে কিছুটা ভয় পেলো ।

‘ পারু এই দিকে আয় একটু ‘

সালাম মিয়া খুব নরম স্বরে ডাকল । চোখ ছল ছল করছে তার কখন যে টুপ করে পানি গড়িয়ে পড়বে । পারুকে নিজের মেয়ের মত দেখছে সালাম মিয়া ।
চাচার নরম ডাকে কাছে গিয়ে বসলো পারু । মাথায় আলতো হাত বুলিয়ে দিল সালাম মিয়া । তনুজা ও কাছে এসে বসলো ।

‘ শাওনের সাথে কি তোর কিছু হয়ছে? ঝগড়া বিবাদ?’

‘ না চাচা কিছু তো হয়নি কেনো?’

‘ ওদের বাড়ি আজকে তোর বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলাম মা । তোর খালা বিয়েতে রাজি না আর নাকি শাওন ও তোকে বিয়ে করবে না ‘

সালাম মিয়ার বুকটা কেঁপে উঠলো এই টুকু কথা উঠাতে । ওরা তো সাফ সাফ বলেই দিয়েছে বিয়েতে ওরা রাজি না। তাই যত দেরি করে পারু এইসব জানবে তত ওর কষ্ট লাগবে । পরে যা জানবে এখন জানলেই বা কি?

‘ ওহ । চাচা আপনি কষ্ট পাচ্ছেন কেনো দেখেন আমি তো পাচ্ছি না । আর আমি এমনি ও ওর যোগ্য না আমি বুঝে গেছি তাই এইসব নিয়ে আর কষ্ট পেতে হবে না ‘

পারুর অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে । কিন্তু ও প্রকাশ করতে চায় না । যারা তাকে ভরণ পোষণ দিয়ে বড়ো করলো এতো ভালোবাসলো তাদের সামনে এই ভাবে ভেঙে পড়লে তারা যে আর বাঁচবে না । ছোটো বেলা থেকেই ওর প্রিয় মানুষ গুলো ওকে ছেড়ে চলে যায় । ওর শুধু একটাই প্রশ্ন শাওনের কাছে ও তো নিজে এইসবে জড়ায়নি শাওন নিজে ওকে বাধ্য করছে আবার নিজেই ছেড়ে দিলো কেনো?
______________________

‘ রিপা তোর ভাই কবে আসবে ??কল দিলো নাকি??চাচীর ফোনে তো টাকা থাকে না আর ভালো শোনা ও যায় না । তোদের ফোনে কল দিলে আমাকে একটু ডাক দিস ‘

‘ দ্বারা ফোন দিচ্ছি ‘

‘ হ্যালো … হালো শাওন আমি পারু কেমন আছিস? কবে আসবি!’

‘ পারু এমন সময় কেউ কল দেয়?!!আমি এখন ব্যাস্ত আছি বাই’

‘ শোন না রাগ করিস না আসলে ….’

‘ কল কেটে দেছে রে রিপা । তোর ভাই কি আমার উপর রেগে আছে? একটু শুনিস বুঝলি ‘

‘ আরে না অনেক কাজ করতে হয় তো তাই মাথা গরম থাকে । আমার ভাই রে আমি চিনি অনেক ভালোবাসে তোরে । কোনোদিন বদলাবে না আমার ভাই ‘

কত গর্ব করে বলতো রিপা শাওনের কথা । কই গেলো সেই গর্ব লজ্জায় ঘৃণায় রিপা আর পারুর সামনে দাড়াতে পারবে না । এদের জন্য নিজের এক মাত্র বান্ধবী হারাবে হয়তো রিপা ভেবেই চোখে পানি জমলো ।
____________________

কেটে গেছে আরো দুইদিন পারু আগের মতই সব কাজ করে নিজেকে ব্যাস্ত রাখে । যতটা সম্ভব সাভাবিক জীবন যাপন করার চেষ্টা করছে পারু । কিন্তু রাতে যেনো সব এলেমেলো হয়ে যায় । বারো বছরে গড়া স্মৃতি গুলো হানা দেয় বারবার । চাপা কান্নার আওয়াজে ভরে যায় ঘর । তনুজা রাতের আধারে বুঝতে পারে কান্নার আওয়াজ তবু ও না শোনার ভান করে থাকে । সান্তনা দিতে গেলে পারু নিজেকে আর সামলাতে পারবে না । তনুজা চাই পারু নিজে থেকেই সব ভুলে যাক ।

নয়নের আম্মু নিধি রহমান কল দিয়েছে তাহেরা বানুর কাছে । তার মেয়ের কান্না মাখা মুখ নিধির সহ্য হচ্ছে না । বড্ড আদরের মেয়ে নয়ন । নিধি রহমান অনেক আগেই আন্দাজ করেছিলেন নয়ন হয়তো শাওনকে ভালোবাসে সেই আন্দাজ এখন পুরোপুরি মিলে গেছে । মেয়ের শুকনো মুখ দেখে উনার যা বোঝার বুঝা হয়ে গেছে তাই আর দেরি করেন নি তিনি । কুশল বিনিময় করেই নয়নের কথা বলেছেন নিধি রহমান । তাহেরা বানু তো খুশিতে আত্নহারা নিজের পছন্দ মত সব হচ্ছে দেখে । তাহেরা ভেবেছিল নয়নের পরিবার মনে কিনা । কিন্তু নিধি কল দিল তার কাজ সহজ হয়ে গেলো। তাহেরা কোনো ধরনের আপত্তি ছাড়াই দেখতে যাওয়ার ডেট ফিক্স করে ফেললো । শাওন অথবা রিপার মতামতে নেওয়ার দরকার মনে করলো না।

পড়ন্ত বিকেলে ছাদে দাঁড়িয়ে ছিল রিপা । এখন ওর আর সময় কাটে না পারু নেই সারাদিন একা একা থাকতে হয় । শাওন কেমন ঝিমায় গেছে আগের মত হাসি তামাশা করে না । মনটা অনেক খারাপ হয়ে আছে ওর ।

‘ এই রিপা …এই ‘

পারুর ডাকে নিচে তাকালো রিপা । হাতের ইশারায় নিচে নামতে বললো পারু তাই দেখে ঝড়ের বেগে নিচে নেমে আসলো রিপা ।

‘কিরে ভুলে গেলি নাকি । আমাদের বাড়ির দিকে মোটেও যাচ্ছিস না ।আগে তো আমাদের বাড়ি পড়ে থাকতিস।নাকি তোর ভাইয়ের মতো তুই ও ভুলে যেতে চাচ্ছিস? কোনটা?’

ছোটো বাচ্চাদের মত ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিল রিপা ।

‘ আমাকে মাফ করে দে । ‘

‘ তোর এতে দোষ কি? আমি কারোর উপরেই রেগে নেই না অভিমান করেছি । এইসব নিয়ে ভাবিস না চল পদ্ম তুলে আনি। উত্তর পাড়ার বিলে নাকি অনেক পদ্ম ফুটছে ‘

‘ চল চল । ‘

রিপা জানে পারু ভালো থাকার #অভিনয় করছে । কিন্তু ওর যে এ ক্ষেত্রে কিছু করার নেই শুধু মাফ চাওয়া ছাড়া । তবু মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো রিপা যত টুকু সময় পারবে পারুকে ভালো রাখার চেষ্টা করবে ।
_____________________________

সকালে উঠেই তাহেরা বানু শাওনের ঘরে গেলো শাওন তখন নিজের কাপড় গুলো পরিষ্কার করার জন্য বালতিতে পানি নিয়ে ডিটারজেন্ট দিয়ে ভিজাচ্ছে।

‘ বাবু আমরা আজকে একটা জায়গায় যাবো তোর কি কোথাও যেতে হবে নাকি?’

‘ না আম্মা । কিন্ত কোথায় যাবা? ‘

‘ সেইটা গেলেই দেখতে পারবি । ‘

‘ বাবু শোন খয়েরী রঙের যে শার্ট টা আছে ওইটা পড়বি । ওই শার্ট পড়লে তোকে খুব সুন্দর লাগে ‘

তাহেরা বানু রিপার ঘরে এসে আলমারি খুলে একটা সুন্দর গোল জামা বের করে দিল ।
‘ এইটা পরে গোছায় নে আজকে আমরা একটা জায়গায় যাবো’

‘ কোথায়?’

‘ অত জেনে তোর কি তাড়াতাড়ি কর বেশি সময় নেই ‘

তাহেরা বানু সুন্দর একটা বেগুনি শাড়ি পরে নিল । সোনার চুড়ি , চেইন পরে শাওন আর রিপাকে নিয়ে রওনা হলো শহরের উদ্দেশ্যে। রিপা বার বার জিজ্ঞাসা করে মাথা ব্যাথা ধরায় দিয়েছে তাহেরা বানুর । পরে শাওন এক ঝাড়ি দিয়ে রিপাকে চুপ করাইছে। পথিমধ্যে শাওনকে দিয়ে ভুরি ভুরি মিষ্টি ,ফলমূল কিনিয়ে নিল তাহেরা বানু । মিষ্টি দেখে রিপার বুক ধক করে উঠল । পারুর চাচী ও তো এমন মিষ্টি ফলমূল নিয়ে বাড়িতে এসেছিলো।

রাস্তার পাশে ফুল গাছ বিক্রি করছে এক লোক । শত শত রঙের ফুল গাছ শোভা পাচ্ছে তার ছোট্ট দোকানে । একটা ছোটো জবাগাছে সাদা ফুল ফুটেছে । শাওন সেটা দেখেই গাড়ি থামাতে বললো । সি এন জি ড্রাইভার গাড়ী থামিয়ে শাওনের দিকে পান খাওয়া দাত বের করে দিয়ে হেসে দিলো ।
‘ কি বাবা প্রেমিকার যন্যি গাছ কিনবা?’

ড্রাইভারের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে শাওন গাড়ী থেকে নেমে ।একটা সাদা জব গাছ কিনে আনলো । তিনটে কুড়ি আছে গাছটায় তার সাথে দুটো জব ফুটে আছে আশি টাকা নিল এই গাছটা । দর কষাকষি করলে দশ টাকা কমতে পারতো কিন্তু শাওন আর কমায় নি । সাদা রংটা পারুর খুব পছন্দের । আর সাদা জবা দিলে পারু যে কত খুশি হয় বাড়ি বানানোর সময় গাছটা কাটতে হয়েছিল ।তাই আরেকটা গাছ কিনে নিল শাওন ।

শাওনের পারুর পছন্দের গাছ অন দেখে রিপা হো হো হেসে করে উঠলো। ড্রাইভার তাহেরা বানু আর শাওন রিপার দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে হাসার কারণ কি? কোনো মতে হাসি থামিয়ে তিন জোড়া চোখের সম্মুখীন হলো রিপা ।

‘ তো ভাইয়া নয়নের ও কি সাদা জবা ভালো লাগে নাকি ? আমাকে বলছিলো নয়ন আপু তার ক্যামেলিয়া ফুল ভালো লাগে তাহলে তুই এই সস্তা ফুল কিনতে গেলি কেনো?’

‘ তোকে কি সব কিছুর কৈফিয়ত দিতে হবে?’

‘ তোরা দুইজন থামবি ‘

ঘনটাখানেক পার হয়ে গেছে রিপা ,শাওন আর তাহেরা বানু বসে আছে নয়ন দের ফ্ল্যাটে । নিধি রহমান তাদের অ্যাপায়ন কোনো খুঁত থাকছে কিনা নজরদারি করছেন । টি টেবিলে সাজানো রয়েছে দশ বারো রকমের নাস্তা ।

” আপা আপনার এতো ব্যাস্ত হতে হবে না । আমরা ঠিক আছি”
” কিযে বলেন না। আমি নিধিকে নিয়ে আসি আপনারা নাস্তা নেন না ।”

“হ্যাঁ নিয়ে আসেন”

শাওন ঝিম মেরে বসে আছে । শাওন কল্পনা ও করতে পরে নি তার আম্মা তাকে না জানিয়ে নয়ন কে দেখতে আসতে পারে তাও বিয়ের জন্য । তীব্র অস্বস্তি চেপে বসে আছে শাওন। বুকটা জ্বলে যাচ্ছে ওর ।

রিপা গোল গোল চোখে চারপাশ দেখছে । দামী দামী আসবাব পত্রে ঠাসা পুরো ফ্ল্যাট টা। নিধি রহমান নয়ন কে সাথে করে আনলেন,,,, দৃষ্টি তার নিচে হালকা গোলাপি রঙের শাড়ি জড়ানো গায়ে । গলায় শোভা পাচ্ছে ঝলমলে নেকলেস,তার সাথে হালকা মেক আপ ,চুল ছেড়ে দেওয়া কি অপরূপ সৌন্দর্য । নয়নের প্রতি রিপার কোনো বিদ্বেষ নেই নয়ন ভদ্র, মার্জিত অসম্ভব ভালো ব্যাবহার তার ।কিন্তু পারু!! কি সহজ আর সুন্দর মন তার এইযে তার ভাই আর আম্মু যে জঘন্য #অভিনয় তার সাথে করেছে । পারুর কোনো অভিযোগ নেই,,, নেই কোনো রাগ,, অভিশাপ দেয় নি কোনো, কি সাবলীল ভাবে নিজের কষ্ট গুলো লুকিয়ে রেখেছে এমন টা কয়জন পারে? হয়তো একটু চাপা গায়ের রং কিন্তু কেউ তো আর ইচ্ছা করে নিজের রং এমন করে না সব আল্লাহর ইচ্ছা । কি মায়া সারা মুখ জুড়ে ,সাধারণের মাঝে অসাধারণ পারু !!! দূর্ভাগ্য তার ভাই আর মা সেইটা বুঝলো না । একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়লো রিপা তার যে কিছুই করার নেই । মুখে ফুটালো মেকি হাসি ।

কি সুন্দর নয়ন ফর্সা শরীরে তার সাজ যেনো একেবারেই পারফেক্ট । এই চোখ ঝলসানো রূপ যে শাওনের অস্বস্তি কমাতে পারছে না । যেকোনো পুরুষ চাইবে এমন সুন্দর মার্জিত মেয়ে । নিঃসন্দেহে নয়ন যথেষ্ট ভালো রূপের কথা তো থাকলো আলাদা কিন্ত শাওন যে তার কোনো কিছুতেই মুগ্ধ হতে পারছে না । মাথা নিচু করে হাত কচলে যাচ্ছে শাওন ।

” জানিস আমার না টাকা পয়সা লাগবে না । যখন রাতে বড়ো একটা চাঁদ উঠবে তুই আর আমি বারান্দায় বসে গল্পঃ করবো ,,,। আমাদের বিয়ের পর অনেকগুলো জবা গাছ কিনবো বুঝলি সব সাদা,, আঙিনায় লাগাবো।”

” হ্যাঁ ঠিক আছে । আচ্ছা বিয়ের সময় আমি যখন তোকে দেখতে যাবো তখন তুই কি পরে আসবি? কেমন সাজবি?”

” আমাকে কি তুই দেখিস নি? আবার কেনো দেখতে হবে!”

“আরে বিয়ের সময় দেখতে যেতে হয়। ”

” আমি তোর দেওয়া শাড়িটা পড়বো । তোর দেওয়া চুড়ি ও পড়বো ”

” ওমন কম দামী শাড়ী পড়বি!”

” কে বলেছে কম দামী আমার কাছে তোর দেওয়া সব কিছুই অনেক দামী ”

বলেই পারু সেই চিরচেনা হাসি দেয় । হাসির জন্য চোখ গুলো খুজে পাওয়া যেত না আর সেই হাসি কি মুগ্ধতা নিয়ে না দেখতো শাওন ।

” মাশাআল্লাহ কারোর নজর না লাগুক এমন চাঁদের টুকরার গায়”

মুখে চমৎকার হাসি ফুটিয়ে বলে উঠলো তাহেরা বানু । তাহেরা বানুর কথা শুনে অতীত থেকে ফিরে আসলো শাওন । সামনে নত মস্তকে লজ্জা লজ্জা মুখ নিয়ে বসে আছে নয়ন।

” নয়ন কে আর কি দেখবো আমার তো ওকে পছন্দ। এখন আপনি আর ভাই যদি যেতেন । ”

” আপনার ভাই তো এখন ব্যাবসার কাজে বাইরে আছে ।সে আসলেই আমরা যাবো ”

” ঠিক আছে আপা।”
__________________

পারু উদাস মনে শাওনের দেওয়া শুকনো জবা গুলো দেখছে । শাওনের দেওয়া সব কিছুই পরম যত্নে উঠিয়ে রেখেছিল পারু । একটা শপিং ব্যাগ এ সেই সাদা উড়না,শাড়ি সহ সব ঢুকায় রাখলো । শুকনো জবা গুলো সুন্দর করে একটা চিঠির মত খামে ভরে উপরে রেখে দিল ফেরত দিতে হবে । ইসস যদি তার #অভিনয় টা ফেরত দিতে পারতো !!!! সত্যি কি সবটা #অভিনয় ছিল ????নাকি ভালোবাসা!!!!