অ্যাডিক্টেড টু ইউ পর্ব-১৪

0
393

#অ্যাডিক্টেড_টু_ইউ
#অরনিশা_সাথী
#পর্ব_১৪

কাল হলুদ, আজকেই পুরো বাড়ি মেহেমানে গমগম করছে। সবাই যার যার মতো ব্যস্ত। আগে নিজের বিয়ে নিয়ে কত্ত প্ল্যানিং ছিলো আর এখন হলো কি? রাতের খাবার খেয়ে ব্যালকোনিতে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছি। ফোনের রিংটোন হতেই আকাশ থেকে দৃষ্টি সরালাম। আদ্রর ফোন। রিসিভ করে কানে নিতেই ওপাশ থেকে বললো,
–“ও বউ___”

উনার এরকম ডাকে ভিতর শুদ্ধ নাড়িয়ে দিলো আমার। আমাকে চুপ দেখে আবারো একই ভাবে বললেন,
–“বউ___কথা বলবে না?”

এরকম ডাকে সারা না দিয়ে পারা যায় না। তাই বললাম,
–“বলুন।”

–“ভারাক্রান্ত মন নিয়ে একা একা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে এত মনোযোগ সহকারে তাকিয়ে কি দেখছিলে?”

–“দেখছিলাম না ভাবছিলাম।”

–“আমার কথা?”

উনার এমন প্রশ্নে হকচকিয়ে গেলাম আমি৷ আচ্ছা লোকটা জানলো কিভাবে আমি ব্যালকোনিতে আছি? আর উনার কথা-ই যে ভাবছি এটা? এটা বুঝলো কি করে? থমথমে গলায় বললাম,
–“আপনার কথা ভাবা ছাড়া কি আমার আর কোনো কাজ নেই?”

–“অবশ্যই আছে, থাকবে না কেন? তবে এই মূহুর্তে তুমি আমার কথাই ভাবছিলে।”

কিছু না বলে চুপ করে রইলাম। লোকটা তো বুঝেই ফেলেছে। অযথা কথা বাড়িয়ে আর লাভ নেই। উনি আবারো বললো,
–“কি ঠিক বললাম তো?”

–“হু।”

–“অনেক ভেবেছো আমায় নিয়ে এখন আর ভাবতে হবে না। মাঝে তো শুধু কালকের দিনটা মাত্র। পরশুই তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসছি। বি রেডি।”

প্রত্যুত্তরে কিছু বললাম না। এই মূহুর্তে শুধু উনি কেন কারো সাথেই কোনো কথা বলতে ইচ্ছে করছে না আমার। সেদিনের পর থেকেই কেমন যেন মুড অফ হয়ে আছে। মাথায় একটাই কথা ঘুরপাক খাচ্ছে ‘উনি আমায় ভালোবাসে না’। অনেকটা সময় দুজনেই চুপ। উনি নিজেই নিরবতা ভেঙে বললো,
–“আলতু ফালতু চিন্তা করে নিজের বেহাল দশা বানালে খুব খারাপ হবে কিন্তু৷ তাই চুপচাপ ঘরে গিয়ে ঘুমাও, অনেক রাত হয়েছে।”

–“হুম রাখছি।”

লাইনটা কাটতে চেয়েও কাটলাম না। ওভাবেই কানে ধরে রাখলাম। উনি বললো,
–“রুহি শুনো__”

–“শুনছি।”

–“ভালো___নাহ কিছু না, ঘুমাও রাখছি।”

কথাটা বলে উনি নিজেই ফোন রেখে দিলো। আমার মনে হচ্ছিলো এই বুঝি উনি বলবেন ভালোবাসি, কিন্তু না বললেন না। হালকা হেসে আবারো দূর আকাশের দিকে তাকালাম।

বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ বাজে। হলুদের অনুষ্ঠানের আয়োজনে সকলে ব্যস্ত। পার্লারের লোকজন চলে এসেছে। আপি হিমাদ্রি ওরা সকলেই সেজেগুজে ঘুরছে। আমি রুমে ঘাপটি মেরে বসেছিলাম৷ আদ্রর ভালো না বাসা কথাটির সাথে আজ আরো একটি মন খারাপ যোগ হয়েছে। আর তা হলো আজকের রাতটাই আমি এ বাড়িতে আছি। কাল নিজের বাড়ি ছেড়ে আমায় আদ্রর বাড়ি চলে যেতে হবে। কালকের পর থেকে এ বাড়িতে আমায় অতিথি হয়ে আসতে হবে। কথাগুলো ভাবতেই কান্নাগুলো গলায় এসে দলা পাকিয়ে যাচ্ছে। উপুড় হয়ে শুয়ে বালিশে মুখ গুজে নিঃশব্দে কাঁদছিলাম। তখনই দরজা খুলে আম্মু এলো রুমে। আম্মু বলছিলো,
–“রুহি আদ্রর বাসা থেকে হলুদের ডালা চলে এসেছে। আদ্র নিজে সবকিছু পছন্দ করে কিনেছে তোর জন্য দেখ। আর ওদিকে পার্লারের লোকও এসে পড়েছে৷ উঠে পড় মা, রেডি হতে হবে তো।”

আম্মুর কথায় বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠলো। আমি চুপচাপ ওভাবেই কাঁদতে লাগলাম৷ চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে আমার৷ এ বাড়ি ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না আমার৷ আম্মুকে আর কাছে পাবো না আমি। আব্বুর কাছে আগের মতো বায়না করতে পারবো না৷ কাঁদার ফলে শরীর মৃদু কেঁপে কেঁপে উঠছে আমার৷ স্পষ্ট বুঝতে পারলাম আম্মু পাশে এসে বসেছে৷ আম্মু আমার পিঠে হাত রেখে বললো,
–“রুহি উঠ, ওদিকে আবার সবাই অপেক্ষা__”

আম্মুর স্পর্শ পেয়ে কাঁদার পরিমান বেড়ে গেলো। আমার পিঠে আম্মুর হাত থাকায় আম্মু সহজেই বুঝে গেলো আমি কাঁদছি৷ শরীর ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে উঠছে কাঁদার ফলে তাই আম্মু আর কথাটা সম্পূর্ণ করতে পারলো না। ক্ষানিকটা সময় আম্মু চুপ করে থেকে ধরা গলায় বললো,
–“র্ রুহি, কাঁদছিস কেন পাগলী? তুই কি আজীবনের জন্য আমাদের ছেড়ে যাচ্ছিস নাকি?”

আম্মুর কথায় দ্রুত উঠে আম্মুকে জাপটে ধরে কেঁদে দিলাম। কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি উঠে গেছে আমার। আম্মু মাথায় পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। রুমে থেকে দেখলাম হিমাদ্রি বেড়িয়ে গেলো। একটু বাদেই আব্বুকে নিয়ে হাজির হলো ও৷ এদিকে আম্মু আমি তখনো একে-অপরকে ধরে কাঁদছি৷ আব্বু এসে আমার অন্যপাশে বসে আমার মাথায় হাত রাখলেন। সাথে সাথেই আব্বুর বুকে ঝাপিয়ে পড়লাম প্রায়৷ কান্নারত কন্ঠে বললাম,
–“আব্বু, আব্বু আমি বিয়ে করবো না। আমি যাবো না এ বাড়ি ছেড়ে, আমি তোমাদের ছেড়ে কোত্থাও যাবো না৷ বিয়ে বন্ধ করে দেও এক্ষুনি। উনাদের জানিয়ে দাও আমি বিয়ে করছি না। তোমাদের ছাড়া থাকতে পারবো না আমি। আর উনি যদি বিয়ে করতেই চান তাহলে এই বাড়িতেই থাকতে হবে। আমি এ বাড়িতেই থাকবো সাথে উনাকেও থাকতে হবে৷ নয়তো আমি বিয়ে করবো না।”

আমার এমন বাচ্চামো কথায় আব্বু মৃদু হাসলেন। তারপর আম্মুকে উদ্দেশ্য করে বললো,
–“শুনো আমাদের পাগলী মেয়ের কথা। বিয়ের পর নাকি আদ্রকে নিয়ে এ বাড়িতেই থাকবে।”

আম্মু কিছু বললো না। আঁচলে মুখ ঢেকে কাঁদছে। আব্বু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
–“তোমার যখন ইচ্ছে হবে আদ্রকে নিয়ে এসে পড়বে আমাদের এখানে। মেয়েরা সারাজীবন বাবার বাড়িতে থাকে না মা। সবাইকে একদিন বিয়ে করে স্বামীর বাড়ি যেতে হয়।”

–“আমি যাবো না৷ যাবো না আমি। উনি এখানে এসে থাকবে নয়তো আমি বিয়েই করবো না।”

–“তোমাদের অর্ধেক বিয়ে তো হয়েই গেছে মা। আদ্র চাইলে এখনই তোমায় নিয়ে যেতে পারে। আমরা কেউ বাঁধা দিতে পারবো না৷”

–“ঠিক আছে তাহলে উনি এখানে এসে থাকবে৷ আমি যাবো না কোত্থাও।”

কথাগুলো বলে আব্বুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। আব্বু হেসে বললো,
–“একদিন না একদিন স্বামীর ঘরে যেতেই হবে। এটাই দুনিয়ার নিয়ম রে মা। তোমার আম্মু আমাকে বিয়ে করে বাবার বাড়ি ছেড়েছিলো, তোমার ফুপ্পি এই বাড়ি ছেড়ে শশুড় বাড়ি গেছে। রুশা, নীলাদ্রি ওরা তো গেছে বলো? তোমাকেও যেতে হবে আদ্রর বাসায়। তবে তোমার যখন ইচ্ছে হবে তখনই এখানে এসে পড়বে তুমি। চব্বিশ ঘণ্টা তোমার জন্য আমার বাড়ির দরজা খুলা থাকবে।”

আমি কিছু বললাম না। ওভাবেই চুপ করে রইলাম। আব্বু ধরা গলায় বললো,
–“কোনো বাবা চায় না তার আদরের মেয়েটিকে দূরে পাঠাতে। কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম তো আর বদলানো যায় না মা৷ সব বাবারাই চায় তার আদরের রাজকন্যাটাকে নিজের কাছে রাখতে৷ আমিও ব্যতিক্রম নই, কিন্তু কিছু করার নেই মা যেতে তো হবেই।”

আমি একসাথে আম্মু আব্বু দুজনকেই জড়িয়ে ধরে কাঁদছি৷ আব্বু খুবই সতর্কতার সাথে চোখের পানিটা মুছে নিলো। কিন্তু সেটা আমার চোখ এড়ালো না। আম্মু চোখমুখ মুছে আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো,
–“অনেক কান্নাকাটি হয়েছে। এবার রেডি হবি চল। ওদিকে পার্লারের মেয়েরা অপেক্ষা করছে। আবার হলুদের অনুষ্ঠান শুরু করতে হবে তো।”

আম্মুর কথায় আব্বু আমাকে ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন৷ তারপর আমার চুলগুলো নেড়ে দিয়ে বললো,
–“যাও দ্রুত রেডি হয়ে নাও। একটু পরই আদ্রদের বাসা থেকে লোকজন আসা শুরু করবে তোমাকে হলুদ দেওয়ার জন্য।”

আমি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়াতেই আব্বু রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন৷ আম্মুও আমার গালে হাত রেখে আদর করে বেরিয়ে গেলেন রুম থেকে৷ যাওয়ার আগে বলে গেলেন পার্লারের মেয়েদের আমার রুমেই পাঠাবে৷ আমি চুপচাপ বিছানা থেকে নেমে ওয়াশরুমে গিয়ে চোখমুখে পানি দিয়ে ফ্রেশ হয়ে এলাম। রুমে আসতেই দেখি পার্লারের দুজন লোক এসেছে। সবকিছু গোছগাছ করছে। আমি যেতেই আমার হাতে ব্লাউজ আর পেটিকোট ধরিয়ে দিলো। ওসব নিয়ে আবারো ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালাম।

ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় নিজেই নিজেকে দেখে থ হয়ে গেছি। মেরুন রঙের পাড় এবং কাঁচা হলুদ রঙের জমিনের কাতান শাড়িতে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। কাঁচা গোলাপ এবং বেলি ফুলের গহনা পড়ানো হয়েছে৷ মাথায় গোল্ডেন কালারের উড়না। খোপায় একগুচ্ছ সাদা গোলাপ। নিজের কাছেই নিজেকে সুন্দর লাগছে। তাহলে আদ্রর কাছে কেমন লাগবে? আদ্রর কথা মনে হতেই মুখটা ছোট হয়ে গেলো আমার। কাল রাতের পর আজ এখন অব্দি আর একবারের জন্যও ফোনে করেনি উনি। মন খারাপ ভাবটা ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে৷ আচ্ছা উনার কি আমার সাথে একবারো কথা বলতে ইচ্ছে করছে না? হলুদের সাজে দেখতে ইচ্ছে করছে না একবারো আমাকে? কাজিন মহলের সকলে রুমে আসতেই মন খারাপ ভাবটা এক সাইডে রেখে হাসার চেষ্টা করলাম সবার সামনে। সবাই বেশ প্রশংসা করলো আমার। সাথে আদ্ররও, কেননা এত সুন্দর শাড়ি কাঁচা ফুলের গহনা এমন কি সাজটা অব্দি নাকি আদ্রর চয়েজে করা হয়েছে। একসাথে সবাই মিলে বেশ কিছু গ্রুপ ছবি তুললাম। হিমাদ্রি আমার সিঙ্গেল ছবিও তুলে দিয়েছে বেশ ক’টা। তারপর আমাকে নিয়ে স্টেজে যাওয়ার জন্য রেডি হলো সকলে।

স্টেজের এক সাইডে দাঁড়িয়ে আছি৷ মাঝেই আপি, রুশাপু, হিমাদ্রি, ফাইজা, রুপ, ফারাবী, শান, মুগ্ধ ভাইয়া সকলে মিলে ‘গতরে হলুদও লাগাইয়া কন্যা গো’ গানে নাচ করছে। মাঝে মুগ্ধ আর শান ভাইয়া আমার হাত ধরে মাঝ স্টেজে নিয়ে আসে। না চাইতেও সকলের সাথে তাল মিলিয়ে কিছুটা নাচ করতে হয় আমার। নাচানাচি শেষে সবাই মিলে গ্রুপ ফটো তোলা হয়৷ সোফায় বসে হিয়াজকে কোলে নিয়ে বেশ কিছু ছবি তুলেছি আমি। স্টেজে বসে আছি বেশ কিছুটা সময় হবে। আব্বু আম্মুর সাথেও ফটোশুট শেষ করেছি। আব্বু আম্মু সবার আগে হলুদ লাগিয়েছে আমার গায়ে। আদ্র দের বাসা থেকে আসা লোকজন এখনো হলুদ ছোঁয়ায়নি আমাকে। সম্ভবত কারো জন্য অপেক্ষা করছে সকলে। হঠাৎই মাইশা আর তিন্নি দৌড়ে এসে দুজনে আমার দু পাশে বসে জড়িয়ে ধরলো আমাকে। খুশিতে গদগদ হয়ে আছে মেয়ে দুটো৷ দুজনেই গাঢ় গোলাপি রঙের লেহেঙ্গা পড়ে আছে৷ বেশ সুন্দর লাগছে দুজনকে। মাইশা আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললো,
–“ওয়াও ভাবী, কি সুন্দর লাগছে তোমাকে।”

–“হ্যাঁ ভাবী, অনেক সুন্দর লাগছে তোমায়। ভাইয়া তো তোমার থেকে চোখই সরাতে পারবে না।”

তিন্নি আদ্রর কথা বলায় কিছুটা মন খারাপ হলেও সেটা গায়ে মাখালাম না। হেসে দুজনকেই বললাম,
–“তোমাদের দুজনকেও ভীষণ রকমের সুন্দর লাগছে দেখতে। মেয়ে হয়ে আমি নিজেই ক্রাশ। তাহলে ভাবো ছেলেদের কি অবস্থা?”

আমার কথায় ওরা দুজনেই ফিক করে হেসে দিলো৷ তারপর ছবি তুলতে লাগলো আমার সাথে। মাইশা আর তিন্নি দুটো মেয়েই ভীষণ মিশুক৷ প্রথম দেখাতেই একেবারে আপন করে নিয়েছিলো আমায়৷ তিন্নি আমার দিকে ঝুকে বললো,
–“ভাবী তোমার কি মন খারাপ?”

–“ন্ নাহহ__”

–“তোমার মুখ দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তোমার মন খারাপ৷ বাবার বাড়ি ছেড়ে যাবে বলে কষ্ট হচ্ছে?”

আমি মাথা নিচু করে নিলাম। একফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো গাল বেয়ে। মাইশা চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো,
–“প্লিজ ভাবী ডোন্ট ক্রাই৷ আমরা সকলে আছি তো ওখানে। তোমায় কোনো রকম মন খারাপ করে থাকতে দিবো না দেখো।”

–“হ্যাঁ ভাবী, তুমি একটুও কাঁদবে না। আমরা সকলে আছি তো৷ আমরা তোমাকে খুব হ্যাপ্পি রাখবো দেখো।”

তিন্নি বললো কথাটা৷ মেয়ে দুটোর কথা শুনে আমি আলতো হাসলাম। কি সুন্দর এইটুকুন মেয়ে দুটো আমাকে বোঝ দিচ্ছে আমি যাতে না কাঁদি৷ আরো বেশ কিছু সময় দুজনে আড্ডা দিলো আমার সাথে। শোরগোলের আওয়াজ শুনে আমাদের আড্ডার আসর ভাঙে। এদিক ওদিক উঁকি মেরে বুঝলাম সামনে থেকে শোরগোলের শব্দটা ভেসে আসছে। তখনই মাইশার ফোনে টুং করে ম্যাসেজ টোন বেজে উঠলো৷ ম্যাসেজ দেখেই মাইশা আর তিন্নি দ্রুত স্টেজ থেকে নেমে গেলো। স্টেজের দশ হাত সামনেই ছোটখাটো একটা জটলা পেকে গেছে। সেই জটলার মাঝেই মাইশা আর তিন্নি ঢুকে পড়লো। আচমকা এমন হওয়ার কারন বুঝলাম না। মেয়ে দুটো কি সুন্দর আড্ডা দিচ্ছিলো আমার সাথে। হুট করেই কিসের ম্যাসেজ পেয়ে আমায় না জানিয়েই চলে গেলো। আচ্ছা কিছু কি হয়েছে ওখানে? সবাই এমন ভীর জমিয়েছে কেন ওখানটায়? জানার জন্য মনটা আঁকুপাঁকু করছে। তাই উঠে দাঁড়ালাম। দু কদম সামনে এগিয়ে একদম স্টেজের কিনারায় চলে এলাম। হঠাৎই সকলে চেঁচিয়ে উঠলো। রুশাপু আপি রুপ ভাইয়া সকলকেই ওখানে দেখা যাচ্ছে৷ সকলে একসাথে সিটি বাজিয়ে উঠলো। হুট করেই সবটা শান্ত হয়ে গেলো। কোনো রকম হই হুল্লোড় চেঁচামেচি কিচ্ছু হচ্ছে না। সাউন্ড বক্সে ফুল ভলিউমে গান বেজে উঠতেই সামনের মানুষগুলো সরে গিয়ে মাঝে জায়গা রেখে দুদিকে দুই লাইন ধরে দাঁড়িয়ে গেলো৷ কি হচ্ছে কিচ্ছু বুঝতে পরলাম না। হুট করেই একজনের উপর চোখ আটকে গেলো আমার। সামনে থাকা মানুষটাকে এখানে উপস্থিত দেখাটা মোটেও বিশ্বাস হলো না আমার।

চলবে~