আগুন ঝরার দিনে পর্ব-২+৩

0
182

#আগুন_ঝরার_দিনে

#পর্ব_২

– তোকে স্যার ডাকছে।

রুহি সুমির দিকে বেশ অবাক হয়ে তাকাল। আজ সকালের প্রথম ক্লাসটা আশফাক স্যারের ছিল। রুহি তাই ইচ্ছে করেই সকালের ক্লাসটা মিস করেছে। সে ক্যাম্পাসে এসেছে দুপুর বারোটার দিকে। কারন দ্বিতীয় ক্লাসটা দুপুর বারোটার পর।

রুহি অবাক হয়ে বলল, কোন স্যার ডাকছেন আমাকে?

– আশফাক স্যার।

রুহির ভেতরটা ধক করে উঠল। আশফাক স্যার তাকে ডেকেছেন কেন? সে ফাঁকিবাজ টাইপের ছাত্রী নয়। খুব জরুরি কিছু না ঘটলে সে সহজে ক্লাস মিস করে না। তবে আশফাক স্যারের ক্লাস পরপর দুইদিন মিস হয়ে গেছে! হয়ত এই কারণেই স্যার তাকে ডেকেছেন। টিচার্স রুমে গেলে নিশ্চয় তিনি তাকে যাচ্ছেতাই অপমান করবেন। রুহির হাত, পা ঠান্ডা হয়ে গেল। এই হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার কারনটা অবশ্য আশফাক স্যার অপমান করবেন এই জন্য নয় বরং তার সামনাসামনি পড়তে হবে এই ভয়ে। রুহি দুরুদুরু বুকে টিচার্স রুমের দিকে রওনা হলো।

টিচার্স রুমে আশফাক স্যার ছাড়া আর কেউ নেই। পুরো রুম খালি। রুহি ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করল, স্যার আসব।

আশফাক স্যার বোধহয় তার কথা শুনতে পাননি। এই মুহুর্তে তার মন হয়ত ইকোনোমিক্সের কোনো এক বইয়ের পাতায় ডুবে আছে। রুহি আবারো বলল, স্যার আসব।

এবার বোধহয় স্যার রুহির কথা শুনতে পেলেন। তিনি ভ্রু কুঁচকে রুহির দিকে তাকালেন। অবাক হয়ে বললেন, কী ব্যাপার! আপনি এই সময় এখানে কেন?

এবার রুহির অবাক হবার পালা। স্যার নিজেই তাকে এখানে ডেকে এখন দিব্যি ভুলে বসে আছেন। নাকি সুমিটা তার সাথে এমন বাজে মজা করেছে! রুহি থতমত হয়ে বলে, সরি স্যার। আমার এক বন্ধু জানাল আপনি আমায় ডেকেছেন। সে বোধ ভুল বলেছে স্যার। আমি খুব-ই দুঃখিত।

আশফাক স্যার মুখ শক্ত করে জানালেন, তাই হবে হয়ত। আমি আপনাকে ডাকতে যাব কেন?

রুহি চলে যাবার জন্য পা বাড়াল। পেছন থেকে স্যারের গলা আবার শোনা গেল। আজকে আমার ক্লাসটা করেছেন আপনি?

রুহি মাথা নিচু করে বলল, না স্যার।

– কেন করেন নাই জানতে পারি। এখন তো দেখি দিব্যি ফিটফাট হয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমার ক্লাসের সময় কী সমস্যা ছিল আপনার?

রুহি আশফাক স্যারের প্রশ্নের কোনো জবাব দিল না। এই মুহুর্তে সে নিজের কান্না চেপে রাখার প্রাণপন চেষ্টা করছে। স্যার ডেকেছেন শুনে সে এক ফাকে কমন রুমে যেয়ে চোখে কাজল দিয়ে এসেছে। এখন তার ভয় হচ্ছে চোখের পানিতে তার কাজল বোধহয় পুরোপুরি লেপ্টে যাবে। কাজল লেপ্টে যেয়ে আশফাক স্যারের সামনে তাকে ভূতের মত দেখাবে।

আশফাক স্যার আবারো বললেন, কী হলো জবাব দিচ্ছেন না কেন? ঠিক আছে আপনি যদি মৌখিক কোনো জবাব দিতে না চান তবে আমার কাছে লিখিত জবাব দিন। আজ বিকেল চারটার মধ্যে আপনি আমাকে লিখে জানান, আজ সকলে ইকোনোমিক্সের ক্লাসটা কেনো করেননি আপনি?

কথাগুলো বলার পর আশফাক স্যার রুহির মুখের দিকে তাকানোর প্রয়োজন মনে করলেন না। তিনি কঠিন মুখে আবার নিজের বইয়ের দিকে মনোযোগ দিলেন।

রুহি প্রায় দৌড়ে টিচার্স রুমের সামনে থেকে চলে এল। যে কেউ তাকে দেখলে ভাববে তার উপর দিয়ে বড় রকমের একটা ঝড় বয়ে গেছে। নিজেকে একটু স্বাভাবিক করার জন্য ওয়াশরুম থেকে সে নিজের মুখে কয়েকবার পানির ঝাপটা দিয়ে এলো। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল, সারে বারোটা বাজে। একটু পরেই দ্বিতীয় ক্লাসটা শুরু হবে। রুহি ক্লাস রুমের দিকে এগুলো। নিয়ম মাফিক পুরো ক্লাসটাও করল। কিন্তু ক্লাসে এক বিন্দু মোনোযোগ দিতে পারল না। তার সামনে বারবার আশফাক স্যারের রাগী কঠিন চেহারাটা ভেসে উঠছে। কী এমন করেছে সে? একটা ক্লাস করেনি এই তো! এই জন্য এত রাগ! নিজের অজান্তেই রুহির চোখ ভর্তি করে পানি এলো।

……………….

আশফাক আজ বেশ ভালো মুড নিয়ে ক্যাম্পাসে এসেছিল। গতকাল রাতে দীপা ছেলেকে নিয়ে বাসায় ফিরেছে। রোজবারের মত এবার আর আশফাককে দীপার রাগ ভাঙাতে শ্বশুর বাড়ি যেতে হয়নি। তবে আশফাকের ভালো মুডের কারন দীপার সন্তানসহ বাড়ি ফেরার চেয়েও অন্য কিছু ছিল। আশফাক খুব ভালো মতই জানে মানুষের জীবনে অন্যায়গুলো আসে খুব ছোট্ট কোনো পথ ধরে। সে পথগুলোকে শুরুরদিকে খুবই নির্দোষ এবং মসৃণ লাগলেও পরে তা বন্ধুর আকার ধারন করে। আশফাক যথেষ্ট ম্যাচিউর একটা মানুষ। গত বছর সে ঊনচল্লিশ পেরিয়ে চল্লিশে পা দিয়েছে। সে ন্যায় অন্যায় খুব ভালো বোঝে। তবুও তার আজ ক্যাম্পাসে আসার সময় মনে হয়েছিল, অসম্ভব মায়াময় সেই চোখের মালিকের সাথে তার আজ দেখা হবে। ক্লাস নেয়ার ফাঁকে দুই একবার সেই চোখে তার চোখ পড়বে! এর বেশী তো আর কিছু নয়! এটুকু ভাবতেই আশফাকের ভেতর অসম্ভব ভালোলাগার একটা রেশ কাজ করছিল। তবে ক্লাসে এসে আশফাক অবাক হয়ে খেয়াল করল, মেয়েটি আজ তার ক্লাসে উপস্থিত নেই। রাগে, বিরক্তিতে আশফাকের মুখটা তিতকুটে স্বাদে ভরে গেল। যে টপিকের উপর সে এর আগে শতবার ক্লাস নিয়েছে সেই টপিকটা পড়াতে যেয়ে বার বার তার ভুল হয়ে গেল। মাথা ব্যথার অজুহাত দেখিয়ে আশফাক টিচার্স রুমে চলে এলো। তবে আসার আগে সুমি নামের মেয়েটিকে বলে এলো রুহি ক্যাম্পাসে এলে যেন তার সাথে টিচার্স রুমে এসে দেখা করে।

“চলবে”

#আগুন_ঝরার_দিনে

#পর্ব_৩

চারটা দশ বাজে। রুহি ভয়ে ভয়ে টিচার্স রুমের দিকে এগুলো। আশফাক স্যার তাকে বিকেল চারটার মধ্যে ক্লাসে উপস্থিত থাকতে না পারার কারন লিখিত ভাবে জমা দিতে বলেছিলেন। পরপর দুটো ক্লাস থাকার কারনে রুহির দশ মিনিট দেরী হয়ে গেল। সে টিচার্স রুমে উঁকি দিল। টিচার্স রুমে অনেকে স্যার ম্যাডামরাই আছেন তবে রুহি কোথাও আশফাক স্যারকে দেখতে পেল না। রুহি বেশ কিছুক্ষণ টিচার্স রুমের সামনে দাঁড়িয়ে রইল। সে অবাক হয়ে দেখল, টিচার্স রুমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে তার ভালো লাগছে। এই ভালোলাগাটা একটু অন্যরকম। এই ভালোলাগা হচ্ছে প্রিয়জনের জন্য অপেক্ষার, অজানা কোনো রহস্যকে ভেদ করার অপেক্ষার! রুহি এই প্রথম খুব ভালো মত জানল, কিছু কিছু অপেক্ষাও মধুর হয়।

– তুমি কি কারো জন্য এখানে দাঁড়িয়ে আছো?

রুহি দেখল, কেয়া ম্যাডাম কখন যেন তার সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন। রুহি একটু ইতস্তত করে বলল, ম্যাডাম আশফাক স্যার আমাকে আসতে বলেছিলেন।

কেয়া ম্যাডাম ভ্রু কুঁচকে বললেন, সে তো এখানে নেই। একটু আগেই বেরিয়ে গেল।

– স্যার চলে গিয়েছেন বুঝি?

– তাই তো মনে হলো। কিছুক্ষণ আগে আশফাকের মিসেস এসেছিল তাদের ছোট বাচ্চাটাকে নিয়ে। তাদের একটা পারিবারিক অনুষ্ঠান আছে সেখানেই গিয়েছে সম্ভবত। তুমি বরং কাল এসো।

রুহি মন খারাপ করে টিচার্স রুমের সামনে থেকে চলে এলো। হুট করেই তার ভীষণ কান্না পাচ্ছে। এই কান্নার উৎস সম্পর্কে তার কোনো ধারনা নেই। এর মাঝে আকাশে ঘন কালো মেঘ করেছে। একটু পরেই
বোধহয় মুষলধারে বৃষ্টি নামবে। রুহি পুরো ক্যাম্পাসে তার কাছের বন্ধুদের কাউকে খুঁজে পেল না। সবাই বোধহয় রুহিকে ছাড়া যে যার মত বেরিয়ে গেছে। রুহির আবারো খুব কান্না পেল। আজকের দিনটা তার জন্য আসলেই খুব খারাপ। রুহি বাড়ি ফেরার জন্য একটা উবার কল করল এবং অবাক হয়ে দেখল, আজ উবারেও কোনো গাড়ি এভেইলেবল নেই। রুহি হতাশ হয়ে রাস্তার দিকে তাকালো। রাস্তায় দুই একটা
সি এন জি দেখা যাচ্ছে বটে তবে সেগুলো যাত্রী দিয়ে পরিপূর্ণ। রুহি চুপচাপ রাস্তার এক পাশে দাঁড়িয়ে রইল। ইতিমধ্যে দুই এক ফোঁটা বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে। রাস্তার লোকজন সবাই নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এদিক, সেদিক দৌড়াচ্ছে। রুহির জেদ চেপে গেল। সে রাস্তার পাশে একই ভাবে দাঁড়িয়ে রইল। আরো জোরে বৃষ্টি আসলে আসুক! আজ সে কাকভেজা হয়ে ভিজলেও ভিজুক! যা ইচ্ছে হোক। আজ তার মন খারাপ হবার দিন। আজ কোনো কিছুতেই তার যায় আসে না। এক আকাশ বৃষ্টিতে ভিজলেও না!

……………..

আশফাক ঘন ঘন ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে। সারে তিনটা বাজে। চারটা বাজতে আরো ত্রিশ মিনিট বাকি। আশফাক নিজের উপর খুব বিরক্ত হলো। সে খুব ভালো মত জানে চারটা বাজলেও তার কোনো যায় আসে না। তার কাছে সারে তিনটাও যা, চারটাও তা। তবুও আশফাকের ভেতরে অদ্ভুৎ রকমের একটা অস্থিরতা কাজ করছে। আশফাকের এসব অস্থিরতার মাঝেই ঠিক তিনটা পয়তাল্লিশ মিনিটে দীপা এলো তাদের ছেলেটাকে নিয়ে। বলা যায় তাদের মা ছেলের আশফাকের ক্যাম্পাসে প্রথম বারের মত ছোট খাটো একটা সারপ্রাইজ ভিজিট। দীপাদের দেখে আশফাকের একই সাথে খুব ভালো লাগলো, আবার মন খারাপও হলো। আশফাক নিজের মন খারাপ লাগাটুকুকে এক পাশে সরিয়ে রেখে হাসিমুখে দীপার দিকে এগুলো।

দীপার চাচাতো বোনের আজ হলুদ সন্ধ্যা। এই অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল পাঁচটা থেকে। দীপা আজ তাই কোনো রিস্ক নেয়নি। সে আশফাককে খুব ভালো মত চেনে। দীপা তাকে বগলদাবা করে নিয়ে না গেলে সে তার বোনের হলুদ সন্ধ্যায় যাবে না। না যাবার কোনো না কোনো অজুহাত সে ঠিকই বের করবে। তাই দীপা একেবারে তৈরি হয়ে আশফাকের ক্যাম্পাসে এসেছে। আশফাক অনুষ্ঠানে যা পরবে সেই সব কাপড় চোপড় পর্যন্ত সে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে।

আশফাক দেখল হলুদ শাড়ি আর খোপায় বেলী ফুলের মালায় দীপাকে খুব চমৎকার দেখাচ্ছে। অনেকদিন পর দীপাকে দেখে তার পুরোনো দিনগুলোর কথা মনে পড়লো। তবে এটাও সত্য যে, হৃদয়ের কোনো এক কোনায় যেন এক জোড়া বড় বড় চোখ আশফাককে বড় বেশী অস্বস্তি দিচ্ছে। আশফাক তার অস্বস্তিটুকু একপাশে সরিয়ে রেখে দীপাদের দিকে মোনোযোগ দিল। আরো মিনিট দশেক টিচার্স রুমে কাটিয়ে সে দীপাদের সঙ্গে নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে গেল।

বিকেলটা খুব ভালো মতই শুরু হয়েছিল। তবে দীপাদের নিয়ে গাড়িতে ওঠার পরেই বিপত্তি ঘটলো। দীপার সাথে আশফাকের গাড়িতে ছোটখাটো একটা ঝগড়া বেধে গেল। ঝগড়ার সূত্রপাত ঘটলো খুব ছোট্ট একটা বিষয় নিয়ে। গাড়িতে ওঠার পর দীপা আশফাকের জন্য যে পাঞ্জাবীটা নিয়ে এসেছিল সেটা দেখে আশফাকের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। দীপা তার জন্য ক্যাটকেটে টিয়া রংয়ের একটা পাঞ্জাবী নিয়ে এসেছে।

আশফাক অবাক হয়ে বলল, তোমার বোনের হলুদ সন্ধ্যায় আমি এই রংয়ের পাঞ্জাবী পরব?

দীপা নির্বিকার গলায় বলল, হুম পরবে। আজ ছেলেরা সবাই এই রংয়ের পাঞ্জাবী পরবে।

– আমি পরব না দীপা। দরকার হলে তোমার বোনের অনুষ্ঠানে আমি যাব না, তবুও এই রংয়ের পাঞ্জাবী আমি পরব না।

দীপা গম্ভীর গলায় বলল, বেশ তাহলে তুমি এক্ষুনি গাড়ী থেকে নেমে যাও। কারন অনুষ্ঠানে গেলে তোমাকে এটাই পরতে হবে।

– কী পাগলামি শুরু করলে বলো তো! ছোট্ট একটা বিষয় নিয়ে শুধু শুধু এমন পাগলামি কেন করো তুমি?

– কোনো পাগলামি আমি করছি না। যা বলছি তোমাকে তাই করতে হবে। তুমি হয় এক্ষুনি গাড়ী থেকে নেমে যাবে নয়ত এই পাঞ্জাবী পরে আজকের সন্ধ্যা তোমায় কাটাতে হবে।

আশফাকের কেমন যেন জেদ চেপে গেল। সে থমথমে গলায় বলল, বেশ আমি তাহলে নেমে যাচ্ছি। আমার পক্ষে এই পাঞ্জাবী পরা সম্ভব নয়।

আশফাককে হতভম্ব করে দিয়ে দীপা তাকে সত্যি সত্যি গাড়ী থেকে নামিয়ে দিলো। আকাশ জুড়ে ঘন কালো মেঘ করেছে। একটু পরেই বোধহয় ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামবে। তবে দীপার নজরে এসব কিছুই এলো না। দীপা আশফাককে রাস্তার মাঝে নামিয়ে দিয়ে নির্বিকার ভাবে গাড়ী নিয়ে চলে গেল। আশফাক ঘড়িতে দেখল চারটা ত্রিশ বাজে। এই সময় বাড়ি ফেরার কোনো মানে হয় না। রাস্তায় অনেক জ্যাম ছিল তাই গাড়ী খুব বেশীদূর আসে নাই। আশফাক ভাবল, ক্যাম্পাসের লাইব্রেরিতে আজ কিছুটা সময় কাটাবে। একটা রিক্সা নিয়ে ক্যাম্পাসে যেতে তার হয়ত খুব বেশী হলে মিনিট দশেক সময় লাগবে। আশফাকের রিক্সায় বসার পাঁচ মিনিটের মাঝেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামল। তুমুল বৃষ্টির কারনে ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে তার আরো পনের মিনিট সময় লাগলো। ক্যাম্পাসের গেইট পর্যন্ত আশফাকের রিক্সাটা যখন পৌঁছালো তখন আশফাক অবাক হয়ে দেখল, তুমুল বৃষ্টির মাঝেও একটি মেয়ে ক্যাম্পাসের গেইটের পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। তুমুল বৃষ্টির তোড়ে মেয়েটি পুরোপুরি ভিজে গেছে। ভেজা কাপড় তার পুরো শরীরের সাথে লেপ্টে রয়েছে। এমনকি মেয়েটি ঠান্ডাতেও অল্প অল্প কাঁপছে। তবুও যেন তার কোনো ভ্রুঁক্ষেপ নেই। আশফাক অবাক হয়ে দেখল, বৃষ্টিতে ভেজা সেই মেয়েটি আর কেউ নয়, সেই মেয়েটি হলো তার হৃদয়ের কোনে জমে থাকা বড় বড় সেই চোখের মালিক! যার নাম রুহি!

“চলবে”