আপনিময়?তুমি Part-23 Last Part

0
3194

#আপনিময়?তুমি [ An unexpected crazy love ]
#Written By: Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr [ Mêhèr ]
Part: 23 & last part…….
.
.
.
……..

ইহান: আমার কিছু কাজ আছে আপনার সাথে??

[ আনহা খেয়াল করে দেখল ইহানের হাতে কিছু আছে। ইহান তা আনহার দিকে বাড়িয়ে দেয়….

আনহা: এগুলো কি??? [ অবাক হয়ে ]

ইহান: এগুলো….. [ বাকা হেশে ] নিজেই দেখুন…..

আনহা: কিন্তু……….

ইহান সামনে এগিয়ে দিতেই আনহা বেশ অবাক হয়। কারন ইহানের হাতে কতগুলো প্যাকেট।

আনহা: এগুলো কিসের প্যাকেট???

ইহান: আচ্ছা আমাকে এত প্রশ্ন করে বিব্রত না করে নিজেই দেখে নিন না। [ কিছুটা বিরক্তির সুরে ]

আনহা প্যাকেট গুলো খুলে অবাক হয়ে গেল। কারন প্রতিটি প্যাকেটে বিয়ের সব জিনিস পত্র রয়েছে। বিয়ের সমস্ত শাড়ি অলংকার রয়েছে এতে। কিন্তু কেন???

আনহা: এগুলো….

ইহান: ঠিকি ভেবেছেন বিয়ের সবকিছু…

আনহা: কার জন্য…. [ কাপা গলায় ]

ইহান: আমার হবু বউয়ের জন্য।

আনহা: মানে…..???

ইহান: মানে… আমি আমার হবু বউয়ের জন্য নিজের পছন্দ অনুযায়ী এসব কিনেছি…. তাকে নিজ হাতে সাজিয়ে নিজের স্ত্রী হিসেবে দেখব বলে….

আনহা ইহানের কথা শুনে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। কারন ইহানের হবু বউত রাইসা তাহলে কি ইহান এসব রাইসার জন্য এনেছে তাহলে আনহাকে কেন দিচ্ছে?? আনহা খুব করুন দৃষ্টিতে ইহানের দিকে তাকায়….

আনহা: [ আর কত শাস্তি দিবি ইহান। একটা ভুলের শাস্তি যে এতটা মারাত্মক হতে পারে আমি জানতাম না। আমি আর নিতে পারছি না। ]

ইহান: কিহল আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেন??? কি বলেছি শুনেছেন???

আনহা: তাহলে এসব আমাকে কেন দিচ্ছিস??? তোর হবু বউত রাইসা।।।

ইহান: হুমম কিন্তু একটা সমস্যা হয়ে গেছে??? তাইত বললাম আপনার সাথে আমার একটা কাজ আছে……

আনহা: কি??? [ মাথা নিচু করে ]

ইহান: আপনাকে আবার বিয়ে করতে হবে…

এইটা শুনে আনহা ইহানের দিকে বিস্মিত চোখে তাকায়…. ওর চোখে পানি বিদ্যমান।

ইহান: এত খুশি হবার কিছু নেই। আপনাকে অন্য কাউকে না আমাকেই বিয়ে করতে হবে। সো এতটা খুশি হবেন না…

আনহার চোখে পানি চিকচিক করছে।
নিজের অজান্তেই আনহার মুখে খুশির ঝলক দেখতে পাচ্ছে ইহান কিন্তু ও তবুও নিজেকে শক্ত করে নেয়…..

ইহান: কিহল আমাকে বিয়ের কথা শুনে চোখে পানি চলে এলো। কিন্তু কিছু করার নেই আমি বাধ্য নাহলে আপনাকে জোর করতাম না।

আনহা: তারমানে তুই রাইসাকে বিয়ে করবি না।

ইহান: দেখুন আনহা আমি রাইসাকে না .. রাইসা আমাকে বিয়ে করবে না বলে পালিয়ে গেছে। আর যেহেতু সমস্ত অতিথিরা এসেছে এখন বিয়েটা না হলে সেটা খুব অসন্মানের ব্যাপার…. আর আমি আমার ফ্যামিলির মান সন্মান ধুলোয় মিশাতে পারব না। আর এখন আপনি ছাড়া কোনো অপশন নেই তাই আমি বাধ্য হয়ে আপনাকে বলছি। আমার এই হেল্পটা করে দিন।

ইহানের মুখে এসব শুনে আনহার খুশিটা মুহুর্তে মিশে গেছে। ইহান তার কাছে হেল্প চাওয়ার জন্য এসেছে। ভাবতেই অবাক লাগছে। ইহান আরেকটা মেয়ের জায়গায় আনহাকে বসাতে চায়……

ইহান: কিহল কি ভাবছেন???

আনহা: ঠিক আছে। তুই যখন চাইছিস তবে সবটা তোর ইচ্ছায় হবে… আমি তৈরি হয়ে আসছি শাড়ি ব্লাউজ নিয়ে বাথরুমে যেতে নেয়…. তখনি ইহান আনহার হাত ধরে…. তারপর আনহাকে নিজের কাছে এনে পিছন থেকে জড়িয়ে নেয়…. আনহার কানের কাছে নেশাক্ত কন্ঠে বলে…..

ইহান: কি বললাম আপনাকে?? বলেছি না আমি আমার হবু বউকে নিজ হাতে আমার বিয়ের জন্য সাজাতে চাই….. এখন যদি আপনি নিজে থেকে সাজেন তাহলে আমার কি??? আমার ইচ্ছে তো পুরন হবে না।

আনহা: মানে….

ইহান: একবার বিয়ে করেছি কিন্তু মনের মত হয়নি। কিন্তু এবার যখন করতে যাচ্ছি তাতে নিজের সবটা শখ পুরন করে নেব…..

আনহা: আমি কি করব???

ইহান: বেশি কিছু না শুধু ব্লাউজ আর পেটিকোট পরে আসেন বাকিটা আমি করব।
এমনিতেও আপনি শাড়ি তো পরতেই জানেন না..

আনহা আর কিছু না বলে বাথরুমের দিকে পা বাড়ায়…..

কিছুক্ষন পর….

ইহান বিছানার উপর বসে কি জানি ভাবছে তখনি বাথরুমের দিকে তাকিয়ে আনহার দিকে চোখ যায়। শাড়ি বিহীন শরীর একটা ওড়না দিয়ে পেচিয়ে রেখেছে আনহার। চুল গুলো খোলায় মৃদু উড়ছে…. নিচের দিকে ইহানের দিকে এগিয়ে আসছে। ইহান এইরুপে আনহাকে দেখে নিজের দিকটাই হারিয়েছে…… ও বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে হা করে দেখছে আনহাকে….. আনহা এইটা বুঝতে পেরে গলা ঝারতেই ইহান নিজের চোখ সরিয়ে নেয়…..

আনহা: এখন কি করব???

ইহান উঠে আনহার কাছে যায়। তারপর শাড়ির আচলটা আনহার শরীরে জড়িয়ে উপর দিয়ে উড়নাটা সরিয়ে দেয়……নিজ হাতে পরম যত্নে শাড়িটা পরিয়ে দেয় আনহাকে। বার বার ইহানের ছোয়ায় কেপে উঠে আনহা। আনহা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একদৃষ্টিতে ইহানকে দেখতে থাকে….. নিজের অজান্তেই আনহার চোখ গুলো থেকে অশ্রু বির্সজন দিতে থাকে এই ভেবে আনহা নিজের দোষে ইহানের ভালোবাসা হারালো। শাড়ি পরানো হয়ে গেলে ইহান আনহাকে একজনকে এনে সাজিয়ে দিতে বলে… মেয়েটা পুরোটা সময় ইহানের সামনে আনহাকে বউয়ের মত সাজিয়ে বেড়িয়ে যায়। তারপর ইহান বাকিসব অনামেন্ট আনহাকে পরিয়ে দেয়…. আনহাকে আয়নার সামনে দাড় করিয়ে ওর কাধে মাথা রেখে ওর কোমর জড়িয়ে ধরে….

ইহান: দেখুন তো এবার বউয়ের মত লাগছে কিনা আপনাকে….

আনহা আয়নার দিকে তাকিয়ে কি বলবে বুঝতে পারছে না। নিজেকে অদ্ভুত ভাবে দেখছে…

ইহান: কেমন লাগছে আমার বউকে আনহা। আপনার কাছে কেমন জানিনা কিন্তু আমার কাছে অপ্সরীর মত লাগছে ওকে। যেন শত জনম ধরে এই চেহারাটা দেখে যাই….

আনহা:…… [ আনহা স্হীর চাওনিতে তাকিয়ে আছে ]

ইহান আনহার ঘাড়ের কাছে গিয়ে ঘ্রান নেয় আনহার। অদ্ভুত ভাবে নেশাক্ত সেই ঘ্রান। যা ইহানকে পাগল করে দেবার জন্য যথেষ্ট। ইহান খুব সফটলি আনহার ঘাড়ে একটা গভীর চুমো খায়…. আনহা নিজের চোখ দুটো বন্ধ করে নেয়…..

তখনি দরজায় কড়া নাড়ে…… আনহা নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চাইলে ইহান আরো তীব্র ভাবে আনহাকে ধরে……

ইহান: এত তাড়া কিসের আনহা। এখান থেকে যেয়ে তো সেই আমার কাছেই আপনাকে ফিরতে হবে…..

তারপর ইহান আনহাকে ছেড়ে দেয়…. আনহার হাত ধরে ওকে নিয়ে বাইরে বেড়িয়ে আসে….. বাইরে কতগুলো মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে…..

…… ভাইয়া এইবার তো বউকে ছাড়েন আমাকে নিয়ে যেতে দেন [ হাশি দিয়ে ]

….. চিন্তা করবেন না আপনার বউকে নিয়ে যাব না। আপনার কাছেই ফেরত দেব।

এইটা শুনে ইহান হেশে দিয়ে বলে….

ইহান: ফেরত দিতে হবে না। শুধু বলে দিও কোথায় রেখেছ….

এইটা শুনে হাসির রোল পরে যায়। তারপর ওরা আনহাকে নিয়ে যায়। স্টেজে বসিয়ে দিতে আনহা বেশ অবাক হয়। কারন রাইসার জায়গায় যে আনহা বসে আছে তা নিয়ে যেন আরো মাথা ব্যাথাই নেই। মি.& মিসেস আহমেদ খুব হেশে হেশে কথা বলছে। তখন আনহা নিজের বাবা মাকেও দেখতে পায় তারা বেশ খুশি…

আনহার মা: দেখলি বলেছিলাম না ইহান তোকে খুব সুখে রাখবে মিলল আমার কথা…. যাক পাগলিটাকে সামলানোর জন্য যোগ্য কাউকে পাওয়া গেল [ মুচকি হেশে চলে যায় ]

কেউ এসে আনহাকে জড়িয়ে ধরে….

আনহা: অন্তি তুই….

অন্তি: তুই আমার বেষ্টু আর বিয়ের দাওয়াত ওই ইহান দিল। যে আমাকে দেখতেই পারত না। [ গাল ফুলিয়ে ]

আনহা: কিন্তু……. [ কিছুই আনহার মাথায় ডুকছে না। ]

অন্তি: দেখলি ছোটবেলার কথাটা ফলে গেল। সেই তুই ইহানকেই বিয়ে করলি?? আল্লাহ গো সেই পিচ্চি তোর বর…..

আনহা: চুপ করবি তুই??? [ এমনি আবালের মত কিছুই বুঝতে পারছি না ]

তখনি আনহা কাউকে দেখে কলিজায় পানি শুকিয়ে যায়। ওর সামনে আদ্র দাঁড়িয়ে আছে। ওর সাথে একটা মেয়ে….

আনহা: আদ্র তুমি……

আদ্র: কি করব বলো তোমার বর বাধ্য করেছে তোমাদের বিয়ে দেখার জন্য। যদিও তোমাকে বউ সেজে দেখার ইচ্ছে টা ছাড়তে পারিনি তাই চলে এলাম… [ তখনি পাশে থাকা মেয়েটা রেগে আদ্রকে মৃদু ধাক্কা দেয় ] ও সরি ও আমার ওয়াইফ…….

[ এসব কাহিনি আনহার মাথার কোথা দিয়ে যাচ্ছে হয়ত বুঝতে পারছে না। অবশেষে ইহান আর আনহার আবার বিয়েটা সম্পুর্ন হয়। ]
,
,,

,
,
,

,,
,
,
,

,
,
,,কয়েকঘন্টা পরে….
আনহা ইহানের রুমে বসে আছে। ঠিক প্রথম বারের মত। তবে যেভাবে দেখে গিয়েছিল রুমটা তেমন নেই। কয়েকঘন্টায় রুমটা অসম্ভব সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে। সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছে আনহা। কিন্তু ইহানের কোনো খবর নেই…….

তখনি রুমে কেউ প্রবেশ করে….. তবে ইহান নয় রাইসা……. রাইসা একটা গ্রিন আপেল খেতে খেতে রুমের মধ্যে ডুকল….

রাইসা: আমাকে তো কম জলতে হলো না তোমাদের জন্য???

আনহা: তুমি না পালিয়ে গেছ??

রাইসা: আহা শখ দেখলে আর বাচিনা। আমি যদি পালিয়ে যাই তাহলে এগুলো কে সাজালো???

আনহা: মানে??

রাইসা: ডং দেখে বাচিনা এত কিছুর পর ন্যাকামি হচ্ছে।

আনহা: তুমি না ইহানকে বিয়ে করতে…

রাইসা: আচ্ছা আমাকে দেখে তোমার কি অটিস্টিক মনে হয় যে আমি ইহানের মত একটা আনরোমান্টিক, এরোগেন্টকে বিয়ে করব।???

আনহা: মানে…. ?

রাইসা: এই তোমার আর ইহানের জন্য আমার লাইফ শেষ হয়ে গেল??

আনহা: কি হয়েছে….

রাইসা: ইহান আমাকে তোমাকে জালানোর জন্য নিয়ে এসেছিল। ??? আমি ওর কথায় অবাক হই। কিন্তু পরে রাজি হই কারন ও আমার সাথে কোনোদিন কথাও বলত না। তাই আমিও চাঞ্জ খুজছিলাম ওকে জালানোর এই জন্য রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু আমি তাতে আমার নিজের পায়ে কুড়াল মেরেছি??

আনহা: মানে….

রাইসা: আমার বয়ফ্রেন্ড আরিয়ান লন্ডনে থাকে। ও যখন জানতে পেরেছে আমি এখানে এসেছি ও আমাকে ডিরেক্টলি বলেছে যদি আমি না ফিরি তাহলে আমার সাথে ব্রেকআপ করে দিবে…. ??

আনহা: ???

রাইসা: যদিও জানি করবে না [ নাক মুছতে মুছতে ] ভয় দেখানোর জন্য বলেছে….. কিন্তু আমার কি বলো আমাকে তো ফিরতে হবে।

আনহা: ?

রাইসা: জানো সেদিন রাতে যে আমি ইহানকে জড়িয়ে ধরে কাদছিলাম তার কারন ছিল এটা। আর আমি ওর উপর রাগ করেছিলাম কারন ইহান নিজের বিয়ের কথা আমাকে বলেনি। আর তুমি ভেবেছিলে আমার ইহানের সাথে সম্পর্ক আছে। যদিও আমরা এটাই চাইতাম কিন্তু আমরা এভাবে বোঝাতে চায়নি। কারন সেদিন রাতে আমি সত্যি আরিয়ানের জন্য কাদছিলাম কারন ও আমার উপর অনেক রাগ করেছিল।

আনহা: কিন্তু….

রাইসা: কথা বললে না গুলি করে দিব। জানো প্রথমবার তুমি আমাকে থাপ্পড় মেরেছিলে তাও বিনা দোষে। আর ইহান আমাকে বলে ভাবির চড় না খাইলে নাকি বুদ্ধি গজায় না। এই কথায় কার রাগ না উঠে ??? তাই আমিও ডিসাইড করে নিছিলাম তোমাদের দুজনকে শিক্ষা দিব। তাই তো ইহানকে বলেছিলাম আমি আর এসব নাটক করব না। বলেছিলাম বিয়ের নাটক করতে…. কিন্তু ওনি তাতে রাজি হয়নি। এতে নাকি তুমি অপমানিত হবে। তাই ব্ল্যাকমেইল করেছিলাম ও যদি বিয়ের নাটক করতে রাজি না হয় তাহলে আমি তোমাকে ওর সমস্ত প্লান বলে দিব যে তুমি আমাকে এখানে কেন এনেছ….

আনহা: তারপর??? [ রাগে ফুসতে ফুসতে ]

রাইসা: তাই ও বাধ্য হয়ে রাজি হয়ে যায়। বিয়ের নাটক করতে৷ নাইলে তোমার কপালে দুঃখ ছিল তুমি জানো আমি তোমার অবস্থা দেখে বাধ্য হয়েছি এসব বন্ধ করতে। নাহলে না…. তবে আমি নিজের জন্য করেছি কারন আমাকে আরিয়ানের কাছে ফিরতে হবে।

আনহা: এই হলো আসল কাহিনি??

রাইসা: তাতেও আমি শান্তি পাইনি। তোমার বিয়ের কার্ড, দাওয়াত, এমনকি তোমার বিয়ের শপিং আমার করতে হইছে??? আমি একটু শান্তিতে খেতেও পারিনি। আর আজ কই ভাবছিলাম একটু বিয়েটা ইনজয় করব তা না হারামিটা বাসর ঘর সাজানোর দায়িত্ব আমাকে দিয়ে চলে গেছে??? আর তোমার কাছে বদনাম করেছে আমি নাকি পালিয়েছি। মানে তোমাকে জালানোর জন্য এক ফোটাও চান্স নষ্ট করেনি।

আনহা: ???

তখনি ইহান রুমে প্রবেশ করে…… আনহা আর রাইসাকে রুমে দেখে অবাক হয়ে যায়। আনহা ইহানকে দেখে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে এটা দেখে বুঝতে পারে রাইসা সব বলে দিয়েছিলে…..

ইহান: রাইসা তোকে…..

রাইসা: আরেকটা কথা বললে আপেল দিয়ে মাথা ফাটাই দিব। আমারে এই কয়দিন অনেক জালাইছো৷ এমনকি আমাকে দিয়ে আনহাকে কত কথা শুনিয়েছ….

ইহান ভয়ে ভয়ে আনহার দিকে তাকায়…… আনহা প্রচন্ড রেগে আছে…….

ইহান: আনহা আসলে…..

আনহা: তাহলে কালকে এমন করিছিলি কেন???

ইহান: আসলে…..

রাইসা: কি করেছিন রেষ্টুরেন্ট আসার পর তোমাকে মেরেছিল বুঝি???

আনহা: হুমম। মেরেছে তো বটেই তার সাথে….???

ইহান: আনহা প্লিজ?? [ বেশ খানিকটা লজ্জা পেয়ে ]

রাইসা: কি হল??????

ইহান: তুই এত কিছু শুনে কি করবি???

আনহা: সবটা তো ওর জানা দরকার তাইনা???

রাইসা: কি জানব??

ইহান: কিছুনা…..

রাইসা: ধুর বাবা। ??? আচ্ছা আমি বলছি কাল রেষ্টুরেন্টে কি হয়েছিল………
কাল রেষ্টুরেন্ট আমি আদ্রকে ডেকেছিলাম। কারন ইহানের কাছ থেকে আদ্রের কথা জানার পর আদ্রের ব্যাপারটা আমার ক্লিয়ার করার দরকার ছিল। তাই ডেকেছিলাম। আদ্র ওর ওয়াইফের সাথে আসে। কিন্তু ইহান বা আদ্র কেউ জানে না আমি ওদের ডেকেছিলাম। আমি চাইছিলাম তোমাকে নিয়ে ইহান আর আদ্রের সবটা ক্লিয়ার হয়…………
.
.
.
.
.
.
.
.
.

ফ্লাসব্যাক……………….

কাল রেষ্টুরেন্ট……
.

ইহান: এসব না করলে কি হত না রাইসা…

এইটা শুনে রাইসার খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। রাইসা খুব রেগে যায়। ]

রাইসা: তা তোমার আগে ভাবা উচিত ছিল??? এখন কিছু করার নেই। আমার আরিয়ানের কাছে যেতে হবে…. এমনিতে তোমার বউয়ের হাতের চড় খেয়ে আমার শুধু শিক্ষা হয়েছে।

ইহান: কিন্তু..

রাইসা: আমি তোমাকে কিছু দেখাতে চাই…. দেখবে…. তারপর আর তোমার কোনো আপত্তি থাকবে না। ???

ইহান: কি???

রাইসা: Look……..

এবার ইহানের মেজাজ খুব খারাপ হয়ে গেল…. কারন আদ্র একটা মেয়ের সাথে বসে আছে….

ইহান আদ্রেকে দেখে প্রচন্ড রেগে যায়। কারন এই মানুষটার জন্য ইহান আনহাকে পেয়েও বার বার হারিয়েছে। ইহান প্রচন্ড রেগে আদ্রের কাছে গিয়ে ওর কলার চেপে ধরে।

ইহান: আমার আর আনহার সম্পর্কের ফাটল ধরিয়ে দিব্বি সুখে আছো..…

আদ্র: কি বলছ এসব???

ইহান: ন্যাকা সাজা হচ্ছে। শুধু মাত্র আপনার জন্য আমার বেবি মারা গেছে। আপনারা এটাই প্লান করেছিলেন তাই না। আমার বেবিকে মেরে নিজেরা বিয়ে করবেন। কিন্তু সেগুড়ে বালি আমি তা হতে দেইনি তাই এখন অন্য মেয়েকে দিব্বি বিয়ে করে সংসার করছেন। আপনি আর আনহা মিলে……

তখনি আদ্র ইহানকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়….

আদ্র: Shut up ইহান। আমার নামে যা বলার বলো কিন্তু আনহার ব্যাপারে আরেকটা বাজে কথা না। আমার ভেবে অবাক লাগছে তুমি সেই ইহান যার জন্য আনহা আমাকে রিজেক্ট করেছে……

এইটা শুনে ইহান থমকে যায়…..

আদ্র: হ্যা ইহান সেদিন কি হয়েছিল শুনবে….. তাহলে শোন……..

সেদিন তোমার বাড়ি থেকে আনহাকে নিয়ে আসার পর……..
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.

আনহা: আমাকে এখানে নিয়ে এলে কেন??? আর কি বলবে বল???

আদ্র: আমি তোমাকে ভালোবাসি আনহা প্রচন্ড ভালোবাসি তোমাকে ছাড়া আমার লাইফ লীড করা পসিবল না।

আনহা: আমি কনসিভ করেছি আদ্র….. [ মাথা নিচু করে ]

আদ্র: What……

আনহা: ঠিক শুনেছ তুমি। আমি ইহানের সন্তানের মা হতে চলেছি।

আদ্র: কিন্তু তুমি ইহানকে ভালোবাসনা…….. আমি জানি এসব কিছু ইহান করেছে। আমার কোনো সমস্যা নেই আনহা আমি তোমার বেবিকে মেনে নেব। তোমার বেবিকে আমি নিজের সন্তানের…….

আনহা: চুপ করো আদ্র…. তুমি ভুলে যাচ্ছ কেন ইহান আর আমি হাসবেন্ড ওয়াইফ। আর এই বেবি আমাদের ভালোবাসার ফল…..

আদ্র: তুমি তো ইহানকে ডির্বোস……..

আনহা: হ্যা প্রথমে ইহানকে মেনে নিতে না পারলেও ওর ভালোবাসা আমাকে বাধ্য করেছ ওকে মেনে নিতে……

আদ্র: তারমানে তুমি ফিরবে না আমার কাছে…

আনহা: হুমম সেটা তো আর পসিবল না। কারন আমি এখন সবটা দিয়ে শুধু ইহানের। তোমাকে এটা বলার জন্যই আমি এসেছি। আমি ইহানের সাথে বাধ্য হয়ে থেকেছি ঠিকি কিন্তু আমি এখন সবটা দিয়ে শুধু ইহানের। আমি শুধু নিজের জিবনে ওকেই চাই।

আদ্র: কিন্তু……..

আনহা: আমি জানি ওর কয়েকটা ভুল ছিল কিন্তু বিশ্বাস করো আদ্র সেগুলো ওর ভালোবাসার চেয়ে বেশি নয়। ও আমাকে যতটা ভালোবাসে আমি চাইলেও এতটা ভালোবাসতে হয়ত কোনোদিন ওকে দিতে পারব না। আমি ওর চেয়ে বড় হলেও আমাকে ও বাচ্চার মত আগলে রাখে।

আদ্র:………

আনহা: আর তোমাকে তো বললাম আমি ইহানের সন্তানের মা হতে চলেছি। কিন্তু নিজের মা হওয়ার খুশির চেয়েও বেশি আমি ইহানের মুখের খুশিতে হয়েছি।

আদ্র: কিন্তু তুমি….

আনহা: জানত আমি ওকে বলেছিলাম আমি বাচ্চাটা চাই না। শুধু এটা দেখার জন্য এর পর ও কি ও আমাকে আগের মত খেয়াল রাখে কিনা। কিন্তু বিশ্বাস কর আমার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ফল পেয়েছি আমি…….. আমার পরীক্ষায় ও পাশ করেছে। এতকিছুর পরও ওর মনে আমার জন্য ভালোবাসা আর সন্মান কোনোটাই কমেনি……

আদ্র: তাহলে তুমি…….

আনহা: হুমম আদ্র। ইহানকে না বললেও তোমাকে বলছি ভালোবাসি আমি ইহানকে প্রচন্ড ভালোবাসি……..

কথাটা শুনে আদ্রের চোখে পানি চলে এসেছে।

আদ্র: আমিও যে তোমায় ভালোবাসি আনহা..

আনহা: ভুলে যাও এসব আদ্র। নতুন ভাবে কাউকে নিয়ে জীবন সাজাও দেখবে সে তোমাকে খুব ভালোরাখবে…… আমিও তো ভালোবেসিছিলাম কিন্তু দেখ আজ স্বামী স্ত্রী পবিত্র ভালোবাসার কাছে আজ সবটাই মিথ্যে….

আদ্র: কিন্তু তোমার মত করে কাউকে কিভাবে ভালবাসবো……

আনহা: এত কেন ভাবছ আদ্র….. সবার জীবন তো একরকম ভাবে কাটে না। আমি জানি এখন তোমার খারাপ লাগবে কিন্তু দেখবে পরে সবটা ঠিক হয়ে যাবে…… [ আদ্রের হাত ধরে ]

আদ্র: তুমি সত্যি বলছ আনহা……..

আনহা: হুমম…. কারন ইহানকে আমি মেনে নিতে পারিনি আর এই জন্য ওর থেকে দুরে সরে রয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমার মনে ও ছাড়া আর কেউ নেই। আমি চাইলেও হয়ত পারব না ওর জায়গা কাউকে দিতে…….

আদ্র:।।।।

আনহা: ইহান আমার নিশ্বাসে মিশে আছে….. আমি আমার সারাজিবন ইহানের সাথে থাকতে চাই…….

আদ্র: তুমি যদি এটাই চাও তবে তাই হোক। আর তোমার বেবি জন্য শুভ কামনা রইল…..

কথাটা শুনে আনহা মুচকি হাসে…….

আদ্র: তাহলে আমি আজ আসি…….

আনহা: হুমম….. তবে যাওয়ার আগে আমাকে একটা কথা দেও, খুব ভালো একটা মেয়ে দেখে বিয়ে করবে। আর আমার কথা মনে করবে না। প্রমিস…… [ বেবি ফেস করে ]

আদ্র: তুমি এখনো বদলাও নি আনহা।

আনহা: আগে প্রমিস করো……

আদ্র: প্রমিস। তোমার কথাই রাখব……. আজ আসি…. [ বলে চলে যায়। ]

আনহা: বায়…. ভালো থেকে…. [ প্রশান্তির হাসি দিয়ে ]

তারপর আনহা বাইরে বেরিয়ে এসে আকাশের দিকে তাকায়………..

আনহা: হুমম আজ আমি আমার ইহানকে নিয়ে নতুন জীবন শুরু করব। তোর…….হায় না তোমার সংসার আমি তোমার মনের মত করে সাজিয়ে দেব ইহান।। এবার থেকে নিজের সবটা দিয়েই তোমায় ভালোবাসব……. [ বুক ভরে নিশ্বাস নিয়ে ]
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.

আদ্র: জানো আমি বলেছিলাম আনহাকে ও যা চায় তাই কিন্তু ও তোমাকে চেয়েছিল ওর কথা রেখে আমি মারিয়াকে বিয়ে করেছি। তারপর আনহার সাথে যোগাযোগ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারিনি। ভেবেছি হয়তো ও ওর পিচ্চির সাথে ভালো আছে কিন্তু তোমাকে দেখে যা বুঝলাম তারপর….. আমার মনে হয় ওকে ছেড়ে ভুল করেছি।

ইহান:….

আদ্র: তুমি তো আমার চেয়ে আনহাকে ভালো চেন তাহলে তুমি কিভাবে…..???

ইহান:….

আদ্র: সেদিন আমি আনহাকে একটা কথা চেয়েও বলতে পারিনি যে আনহাকে তুমি আমার থেকে আলাদা করেছে। আমি যখন বিদেশে পরার জন্য স্কলারশিপ পাই তখন যেতে চায়নি আনহাকে না বলে কিন্তু অনেক চেষ্টার পরও আমি ওর সাথে কথা বলতে পারিনি। শেষে বাধ্য হয়ে মা বাবা আর বোনের দিকে তাকিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওখানে গিয়েও আমি অনেক ট্রাই করি কিন্তু আনহার সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি। শেষে আমি খবর নিয়ে জানতে পারি আমি স্কলারশিপ পাইনি বরং আমার পরার খরচ তুমি দিয়েছিলে। প্রচন্ড রাগ হয়েছিলাম। দেশেও আসতে চেয়েছি কিন্তু পারিনি কারন তুমি যান। [ মৃদু হেশে ] পরে নিজেও কিছুটা স্বার্থপর হয়ে গিয়েছিলাম। ভালো একটা ক্যারিয়ারের লোভ ততদিনে বাসা বেধেছিল মনে। তাই যখন ওখানেই থাকতে হবে তাই তা ছাড়তে চায়নি। তারপর ফিরে এসে আনহাকে নিজের কাছে নিয়ে আসার চেষ্টা করি। নিজের ভালোবাসা ফিরে পাওয়ার লোভ হয় খুব। কিন্তু আনহার মুখে যখন তোমাকে ভালোবাসার কথা শুনি। তোমাকে ভালোবাসার আলাদা এক চাওয়া দেখি ওর মাঝে যা আমার জন্য কখনো দেখিনি

ইহান:……

আদ্র: তার চেয়ে বড় কারন ছিল তোমার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা। তুমি চাইলে আমার লাইফ ক্যারিয়ার সবটা শেষ করে আনহাকে দুর করতে পারতে। কিন্তু তুমি তা করোনি। হয়ত এই জন্য কারন আনহাকে আমি ভালোবাসতাম। তাই তুমি আমার ক্যারিয়ার গড়ে দিয়েছ আমার ভালোবাসার বদলে। তোমার জন্য আজ আমার পরিবার সুখি। আমি না থাকলে তারা পথে বসত।

ইহান:……

আদ্র: অদ্ভুত প্রতিশোধ নিয়েছ আমার উপর। যেখানে তোমাকে কোন দোষ দিতে পারিনা। কিন্তু একটা কথা বলত যার জন্য এত কিছু সেই আনহাকে কি দিয়েছ তার ভালোবাসার মুল্য হিসেবে……..

ইহান: আমি আসছি……..???

আর দাড়াতে পারে না ইহান চলে আসে বাড়ি। আর বাড়ি ফিরে কি হয়েছে তাতো আপনাদের জানা…… ???

রাইসা: বায় বায়।।। [ আনহা বেবি তোমার কপালে আজ দুঃখ আছে.।।??? ]

.
.
..
.
.
.
..
.
.
.
.
.
.
,
ফ্ল্যাশব্যাক শেষ……….
,,
,
,
,
,
,

,
,
,

রাইসা: এই হলো কালকের কাহিনী। কিন্তু আমি বুঝলাম না কালকে ইহান এসে করেছিল কি???

ইহান: ওই তোর এত জানতে হবে না তুই যা এখন।

রাইসা: যাব না। তোমার জন্য আমার আরিয়ান???

আনহা: কি হয়েছে ব্রেকআপ….

রাইসা: তা হইলে তো হয়েই যেত??

আনহা: তাহলে???

রাইসা: আমার যাওয়ায় দেরি হওয়ার কারনে ও নিজেই বাংলাদেশে আসছে আজকে। বিয়ের আগেই আসত কিন্তু ফ্লাইট ২ ঘন্টা লেট….. তাই দেরি হচ্ছে…

আনহা: তাহলে কাদছ কেন???

ইহান: [ আজকে আমার বাসরের সমস্ত প্লান মাঠে মারা যাবে ??? ]

রাইসা: তুমি তো চেন না আরিয়ানকে খুব ডেঞ্জারাস। আর ভিষন রোমান্টিক ☺☺। ও ইহানের বয়সী। তবে ওর মত এতো আনরোমান্টিক নয়।

আনহা: ওওওও… ??

রাইসা: জানোত আমার তোমার জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে….

আনহা: কেন???

রাইসা: এরকম একটা Mr. attitude & আনরোমান্টিক এর সাথে তোমার বিয়ে হল।

আনহা: সত্যি তোমার ইহানকে এমন মনে হয়?

রাইসা: তা নয়ত কি??? ছোটবেলা থেকে যাকে ভালোবাসে অথচ তাকে একবার ও বলেনি।??? এমনকি একটা বার হাত ধরার সাহস পায়নি???

[ এইটা শুনে ইহান কাশি উঠে। ]

আনহা: ??? ইহান তোমাকে আমি যা যা করেছি সব বলেছে তাই না??? [ রাগী চোখে ইহানের দিকে তাকিয়ে ]

ইহান: আমাকে দেখে তোর কি রকম ছেলে মনে হয় বলত??? ভালোবাসলে কি….. [ আনহার দিকে তাকিয়ে আর কিছু বলতে পারল না ] না মানে…..

আনহা: তোমার এই ইহান বিগত ৫ বছর আমার সাথে….. [ বলতে দিল না ইহান ]

ইহান: ওই তুই বের হো আমার ঘর থেকে… ???

রাইসা: কিন্তু আনহা ভাবি….

ইহান: শুনতে হবে না??? [ বলে বের করে দরজা আটকে দেয় ] আমার বাসর নষ্ট করার কাজ???

দরজা বন্ধ করে পিছনে ফিরতেই দেখে আনহা লাঠি নিয়ে দাড়িয়ে আছে….. এইটা দেখে ইহান ঢোক গেলে। কারন যা ছিল রাইসা ফাস করে দিয়ে গেছে ওর জাড়ি জুড়ি খতম…..

ইহান: আনহা…???

আনহা: আমাকে কাল কি বলছিলি যেন???

ইহান: আসলে…?

আনহা: আর রাইসাকে আমি কি করেছি বলেছিস কিন্তু তুই ৫ বছর ধরে আমার সাথে কি করেছিস কেন বলিসনি?? আর ওর কাছে তুমি কি……???

ইহান: আজব তো এখন গার্লফ্রেন্ড এর সাথে কি করেছি তা আমি বোনকে কিভাবে??

আনহা: কিহহহ??? তোর গার্লফ্রেন্ড…

ইহান: না মানে বউ..?

আনহা: তবে… [ বলেই ইহানকে ইচ্ছে মত পেটাতে শুরু করল ]

ইহান: আনহা থামুন…. কি কপাল আমার বাসর ঘরে বউয়ের আদরের জায়গায় বেতের বাড়ি খাচ্ছি….

আনহা: টিচারকে বিয়ে করলে এমনি হয়….???

ইহান এবার লাঠিটা ধরে আনহাকে টান দিতেই আনহা বেডে ইহানের উপর পরে যায়। তখন ইহান খুব শক্ত করে আনহাকে ধরে…

আনহা: হচ্ছে টা কি ছাড়….

ইহান: বাসর ঘরে আদরের পরিবর্তে হাসবেন্ডকে মারলে এমনি হয়…. [ চোখ মেরে ]

আনহা: সবটা যখন জেনে গিয়েছিলি তাহলে কাল এমন করলি কেন???

ইহান: খুব রাগ হয়েছিল আপনার প্রতি। এতটা ভালোবেসেও কেন নিজেকে আমার থেকে দুরে রেখেছেন আর কেনই বা আমাকে আর নিজেকে কষ্ট দিয়েছেন। আর তাই কাল রাগের বসে…… সরি…

আনহা এইটা শুনে ইহানের কপালে ভালোবাসার পরশ আকে।

আনহা: কি করে বলতাম তুই তো আমাকে বলার সুযোগ দিসনি। আর তার চেয়ে বড় কথা তার আগেই আমাদের বেবি [ ডুকরে কেদে উঠে ] নিজেকে খুব অপরাধী মনে হয়েছিল। তাই সবটা মেনে নিয়ে চলে যেতে চেয়েছিলাম।

ইহান: আপনি কি বুঝতে পারেননি যাই হোক আপনার ইহান আপনাকে ছাড়বে না।

আনহা: অপরাধ বোধটা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। বরাবর নিজেকে তোর অযোগ্য বলে মনে হত। তাই….

ইহান: তাই বলে নিজেকে আর আমাকে দুজনকে এভাবে কষ্ট দেবেন……

আনহা: সরি….

ইহান: এর কোনো ক্ষমা নেই। তাই এর জন্য আপনাকে শাস্তি….. [ বলতে না দিয়ে ]

আনহা: আচ্ছা এই রাইসার ব্যাপারটা বুঝলাম না?

ইহান: আসলে আপনি তো জানেন আমি আপনি ছাড়া কারো সাথে কথা পর্যন্ত বলিনা। রাইসা আমার ৩ বছরের ছোট। ৫ বছর আগে যখন আমি অনার্সে ভর্তি হই ওর বয়স কেবল ১৩ বছর ছিল। খুব চঞ্চল ঠিক আপনার মত। ও আমাদের বাসায় আসে। আমি বরাবরের মতই ওর সাথে সবার মত খারাপ বিভেব করি। কিন্তু মেয়েটা তবুও আমার পিছন পিছন থাকত যদিও সামনে আসতে ভয় পেত। একদিন ওকে খুব বকা দি আমার জিনিসপত্র ধরার জন্য। তারপর যখন বাইরে যেতে ধরি সিড়ির থেকে পরে মাথাটা কেটে যায়। সেদিন ওর কান্না দেখে আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। পরে জিজ্ঞেস করতে বলে…. ওর নাকি একটা ভাইয়ের খুব শখ আর এইজন্য ও এখানে এসেছে যদিও কোনোদিন ভাইয়া ডাকেনি। তারপর থেকে ওর উপর রাগ দেখালেও ওর জন্য আলাদা সফটকর্নার তৈরি হয়। আর আপনি যখন ওকে নিয়ে বাজে কথা বলেছিলেন খুব রাগ উঠে….

আনহা: সরি…..

ইহান: সে না হয় নিলাম কিন্তু আমার শাস্তি??? তার ত মাফ নেই…

আনহা: ইহান….

ইহান: জি… ???

আনহা: আমার ঘুম পাইছে…. [ বলেই বিছানায় কাথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পরে ]

ইহান: তা বললে কে শুনছে….

[ কাথা সমেত আনহাকে কোলে তুলে নিয়ে ছাদে নিয়ে যায়। তারপর আনহাকে দোলনায় বসিয়ে নিজেও ওর পাশে বসে পরে ]

ইহান: আজকে সারারাত দুজন মিলে চাঁদ দেখব।

আনহা মুচকি হেশে ইহানের কথায় শায় দেয়। আনহা মৃদু হাওয়ায় চাঁদ দেখে আর ইহান আনহাকে….

আনহা: চাঁদ না দেখে আমাকে কি দেখছিস…

ইহান: আমি আমার চাদকে দেখছি।

আনহা: দেখার কি আছে আগে দেখিসনি??

ইহান: নাতো। এই চাঁদ প্রতিদিন নতুন ভাবে আমার চোখে ধরা পরে যা আমি নতুন করে আবিষ্কার করি…..

আনহা: ধুর বাজে কথা….

ইহান: আপনার শাস্তিটা….

আনহা: আবার কি শাস্তি দিবি?? কমত দিসনি???

ইহান: আমাকেও তো কম পোড়ানোর ব্যবস্থা করেনি??? [ আনহার গাল টেনে কাছে টেনে এনে ]

আনহা: তো কি শাস্তি দিতে চান??? ?

ইহান: আপনার শাস্তি এটাই আপনি আমাকে তুই নয় তুমি করে বলবেন??? আমি আমার #আপনিময়?তুমির তুমি হতে চাই৷ কি বলবেন না???

আনহা মুচকি হেশে ইহানকে জড়িয়ে ধরে ইহানের বুকে মাথা রাখে….

আনহা: আমি সবসময় তোর… [ জিহবায় কামর দিয়ে ?? ] না তোমার বুকে থাকতে চাই….

ইহান: ভালো কিন্তু কেমন জানি লাগছে??

আনহা: ধুর কচুর মাথা ওই পারতাম না তুমি থুমি কইতে আমার লাইগা তুই… তুই ঠিক আছোস।

ইহান: ধুর…

আনহা: ওই আগে আমার চেয়ে বড় হইয়া দেখা তারপর তুমি কমু…

ইহান: আল্লাহ এ কাকে বিয়ে করছি???

আনহা: ওকে চলে যাই?? তুই অন্য কাউকে বিয়ে করে…. [ উঠে চলে যেতে ধরে ]

ইহান এবার রেগে যায়… আনহাকে টান দিয়ে নিজের কোলে বসিয়ে দেয়। তারপর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।

ইহান: আপনি কোনোদিন মানুষ হবেন না তাইনা। বলতে হবে না আপনাকে তুমি। তবুও কোথাও যেতে হবে না।

আনহা: তুই তো তুমি ডাকতে পারিস।কেন ডাকিস না……

ইহান: এর কোন প্রয়োজন হয়নি।

আনহা: কেন????

ইহান উঠে আনহাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে নেয়। তাই আনহা নিজেও ইহানকে জড়িয়ে ধরে…..

আনহা: কি হয়েছে ইহান….

ইহান: প্লিজ আনহা কখনো আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাববেন না???

আনহা: যাব না?? কিন্তু তুই কেন আমাকে তুমি ডাকতে চাস না।

ইহান: কারন আপনাতেই আমি তুমিকে চাই কিন্তু তুমি করে না…. আপনি করে। তাইত আপনি আমার……

#আপনিময়?তুমি…… [ An unexpected crazy love ]
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,

#আপনিময়?তুমি……….[ An unexpected crazy love ]

#সরি আজ আর কালকের জন্য কিছু বলতে পারলাম না….. ???
জানিনা কেমন হয়েছে। আমি ওতটা ভালো লিখতে পারিনা। নিজের মত করে যতটুকু পেরেছি লিখেছি। যদি ভুল ত্রুটি হয় ক্ষমা করবেন। তবে এই কাহিনী পুরোপুরি মিথ্যে নয়। এর মধ্যে ইহান আর আনহা দুজনেই সত্যি….আর এই গল্পের মুল চরিত্রগুলো ]