আবার প্রেম হোক পর্ব-১১+১২+১৩

0
494

#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম

১১.
কালো বাদলে আকাশ ছেয়ে গেলে বোধহয় মেঘের গর্জন শুনতে পাওয়া যায়?আকাশ আর মেঘের মাঝে হয় তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা!নিজের দাম্ভিকতাটুকু বজায় রাখার প্রচেষ্টায় মত্ত থাকে তারা।মেঘ যেমনভাবে ভুলে যায় সে আকাশে কেবল সাময়িকের জন্য বিরাজমান,তেমনিভাবে আকাশও বোধহয় ভুলে যায় মেঘের আগমণ আছে বলেই আকাশের এতো কদর!আকাশের কালো মেঘে ছেয়ে যাওয়ার মতোই মেয়েটার চোখেমুখেও অন্ধকার ছেয়ে যেতে বিলম্ব হয়নি ক্ষণকালের জন্যও।কেবল গর্জনের পালা!সে কি মেঘের মতোই গ!র্জি!য়ে উঠবে?

ছেলেটা তার বন্ধুমহলের সামনে এসে বললো,

“ডেয়ার ডান মামা এন্ড খালাজ”

হঠাৎ করে এমন বাক্য কর্ণপাত হতেই চোখমুখ কুচকে আসলো মেয়েটার।নিজেকে সামলাতে বড্ড কষ্ট হচ্ছে তার।সে খুবই রণ!চ!ণ্ডী মেজাজের মেয়ে।তার মতে,প্রতিবাদ তখনই করা উচিত যখন খারাপ কিছু বর্তমানে হচ্ছে।তখন নয় যখন তা অতীতে পরিণত হয়ে যায়।তাই সে বিলম্ব না করেই দ্রুতগতিতে ছেলেটার সামনে এসে কলার ধরে কিছু বলার জন্য উদ্যত হতেই ছেলেটার বান্ধবী রিহা সামনে এসে বললো,

“তোমার তো দেখছি সাহস কম না?সিনিয়রের গায়ে হা!ত দিচ্ছো?”

মেয়েটার রা!গ কিছুতেই সংবরণ হচ্ছেনা।একটা মেয়ে হয়ে কি করে অন্য মেয়ের সাথে এসব দেখছে এটাই ভেবে পাচ্ছেনা সে।তবুও দাতে দাত চেপে রা!গ সংবরণ করে ঠান্ডা স্বরেই বললো,

“সাহসের দেখেছেন ই বা কী?এখনো তো কিছু দেখালাম ই না।ওয়ানা সি?”

রবিন ধ!ম!কে বললো,

“আবার মুখে মুখে তর্কও করছো?বাবা-মা কি…. ”

গিটার হাতে ছেলেটা রবিনের দিকে তাকিয়ে গলা উচিয়ে বললো,

“শা!ট আপ রবিন।জাস্ট শা!ট ইওর মাউথ!বাবা-মা নিয়ে একটা কথাও আমি শুনবোনা”

“কিন্তু মেয়েটা তোর কল…. ”

“কলার ধরার মতো কাজ করেছি বলেই ধরেছে”

মেয়েটার রাগ তরতর করে বাড়ছে।তাই এবার নিজের সমস্ত রা!গ ছেলেটার উপর ঢেলে দিয়ে কলার ধরে রেখেই ঝা!ঝা!লো স্বরে বললো,

“ওহ হ্যালো!মি.বিড়ালাক্ষী মানব?সমস্যা কী হা?না মানে কী প্রমাণ করতে চাচ্ছেন টা কী?এটাই তো যে আপনি খুবই মহান!আমাকে করুনা করছেন।তা এসব মহানুভবতা র‍্যা*গ দেয়ার আগে কোথায় ছিলো?”

ছেলেটা মেয়েটার হাত থেকে কলার ছাড়িয়ে কলার ঠিক করতে করতে গম্ভীরভাবেই বললো,

“যেহেতু এসেছেন গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট না করে আপনিও যাবেন না আমিও যাবোনা।আমার সম্পর্কে সবই জানতে পারবেন।”

বলেই চলে গিয়েও আবার ফিরে আসার ভঙ্গিমায় পিছু ঘুরে বললো,

“আর আপনাকে কোনোপ্রকার র‍্যা*গ দেওয়া হয়নি।আ’ম সরি বাট আই ওয়াজ হেল্পলেস”

বলেই প্রস্থান করলো।আর মেয়েটা কেবলই সে প্রান্তে তাকিয়ে রইলো।

অরণ মেয়েটার সামনে এসে অনুতপ্ত হয়ে বলতে চাইলো,

“উই আর ভেরি….”

মেয়েটা অরণের কথায় কর্ণপাত না করেই তার বান্ধবীর হাত ধরে সেখান থেকে চলে গেলো।

মির সবাইকে বলছে,

“প্রণয় সত্যিই কি*স করলো?”

রিহা বললো,

“সবকিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে”

অরণ অপ্রস্তুত হয়ে বললো,

“আমি প্রণয়ের সাথে কথা বলে আসছি”

ফার্স্ট ইয়ারের দুটো মেয়ে একসাথে ক্লাসে এসে বসতেই ওদের পাশে আরেকটা মেয়ে এসে বসে।বসেই হাসিমুখে একজনকে জিজ্ঞেস করে,

“হাই?আমি অবনী আর তুমি?”

“চাঁদ”

“আমি জানি তুমি দেখতে চাঁদের তুলনায় এতোটাও খারাপ না কিন্তু আমি তোমার নাম জিজ্ঞেস করেছি।”

চাঁদ ভীষণ বিরক্ত হলো।অতিরিক্ত কথা চাঁদের মোটেও পছন্দ নয়।চাঁদের বান্ধবী তা বুঝতে পেরে অবনীকে বললো,

“ওর নাম ই চাঁদ।মুহাইমা বিনতে চাঁদ”

অবনী চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললো,

“ওহ সরি সরি!তুমি এমনভাবেই বললে যে আমি….ইম…এক্সট্রিমলি সরি।মনে কিছু নিয়োনা”

চাঁদ জবাবে বললো,

“না না মনে নেয়ার কী আছে?”

অবনী বললো,

“তুমি চাঁদ আর তুমি?”

“আমি ইপ্সি।চাঁদ আর আমি ফেসবুক ফ্রেন্ড ছিলাম।ভাগ্য করে এখন মেডিকেল ফ্রেন্ডস ও”

হেসে জবাব দিলো ইপ্সি।

অবনী অবাক হয়ে বললো,

“ওয়াও!দ্যাটস সো গ্রেট!নিশ্চয়ই বেস্ট ফ্রেন্ড?”

ইপ্সি বললো,

“না এমনিতে ক্লোজ ফ্রেন্ডস।”

ইপ্সি মিশুক প্রকৃতির হলেও চাঁদ কিছুটা চাপা স্বভাবের।সবার সাথে তেমন একটা মিশতে চায়না বা মিশেনা।বিশ্বাস জিনিসটা মানুষকে বরাবরই কম করে সে।তাইতো ইপ্সি আর অবনী তুইতে চলে গেলেও চাঁদ এখনো অবনীর সাথে তেমন একটা কথা বলেনি আর তুইতো দূরেই থাক!

দুই পিরিয়ড পর অবনী,ইপ্সি আর চাঁদ ক্যাম্পাসে আসলো।আসতেই সকলের মুখে বলাবলি করতে শুনতে পেলো মেডি ক্রাশ এই প্রথম কোনো মেয়ের সাথে নিজে থেকে কথা বলেছে সেই সাথে কি!সও নাকি করেছে!এসব শুনে চাঁদ বললো,

“ইপ্সু,অবনী চলো ক্লাসে যাবো”

অবনী বললো,

“আরে দাড়া না।আমি কী শুনেছি জানিস?মেডিকেলের ড্রিম বয় সবার কাছে নাকি মেডি ক্রাশ নামেই পরিচিত ছেলেটার কি যেনো নাম শুনেছি!”

চাঁদ সেদিকে তোয়াক্কা না করে ইপ্সিকে বললো,

“দোস্ত চলতো”

অবনী ওদের থামিয়ে দিয়ে বললো,

“আরে কোথায় যাস?শুননা।ছেলেটা নাকি সেইই হ্যান্ডসাম!সব মেয়েদের ক্রাশ।আমারতো তাকে দেখতে ইচ্ছা করছে।না জানি কত্ত হ্যান্ডসাম!আরও শুনেছি আজ পর্যন্ত নাকি কোনো মেয়েদের সাথে কথা পর্যন্ত বলেনি।কোনো মেয়ের আশেপাশেও তাকে নাকি দেখা যায়নি।”

ইপ্সি আগ্রহ দেখিয়ে বলে,

“তাই নাকি?কিন্তু আমিতো সকালে অন্যকিছুই দেখলাম”

“অন্যকিছু মানে?”

“বাদ দে।চল ক্লাসে যাই”

অবনী আবারও ইপ্সির হাত ধরে আটকে বলে,

“আরেএ এমন করছিস ক্যান।মজার বিষয়তো শোন!এই ছেলে নাকি নিজের কাজিনদের সাথেও কথা বলতে পছন্দ করেনা।মা আর এক না দুইটা ফ্রেন্ড আছে হয়তো। এরা বাদে আর কারো সাথেই কথা বলেনা,মেশেনা।ছেলেটা কি জোস রে ভাই!এজন্যইতো সে মেডিকেলের প্রায় সব মেয়ের ই ড্রিম বয়।এমন ছেলেকে ধরে!বে!ধে বিয়ে করে ফেলা উচিত।হায়েএএএএ!”

বলেই ডান হাত ডান গালে রেখে লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গিমা করে অবনী।এসব শুনে চাঁদ মেজাজ খারাপ করে ভ্রু কুচকে উচ্চস্বরে বলে,

“এই থামো তো।জানোটা কী তুমি?”

“ভ!ড়কে যাচ্ছিস কেনো?”

“ভ!ড়কাবোনা কেনো?তুমি নিশ্চয়ই এটা শুনোনি যে লোকটা আস্ত খা!টাস আর লু*ইচ্ছা!”

অবনী অবাক হয়ে বললো,

“কীসব বলিস!আমিতো শুনেছি সে নাকি মেয়েদের থেকে দশ হাত দূরে থাকে”

চাঁদ নাটকীয়ভাবে বললো,

“হ্যা।দূরে থাকে বলেই তিন তিনটা বান্ধবী নামক হাফ গার্লফ্রেন্ড আর অপরিচিত মেয়েদের ডেয়ারের নামে কি*স করে যত্তসব!”

অবনী অবাক হয়ে বললো,

“কিসব বলছিস?”

“ইপ্সু ক্লাসে যাবি তুই?”

বলেই চাঁদ হনহনিয়ে যেতে লাগলে অবনী বললো,

“এই চাঁদ যাসনা।ছেলেটার নাম মনে পড়েছে রে ইপ্সু।নামটাও সুন্দরই,প্র….”

চাঁদ রেগে বললো,

“তোর নাম তুই ই রাখ!”

অবনী চাঁদের সামনে এসে বললো,

“তুই এতো রাগছিস কেনো?আর এসব জানিস ই বা কী করে?”

ইপ্সি বললো,

“আরে অবু!আজ ওকেইতো সেই ছেলে কি*স করেছে”

অবনী চেচিয়ে বললো,

“কী!প্রণয় চাঁদকে কি*স করেছে?”

অবনীর চেচিয়ে বলা কথা ক্যাম্পাসে উপস্থিত অনেকের কানেই পৌছালো।কথাটা শ্রবণ হতেই তারা ওদের দিকে শকুনের দৃষ্টিতে তাকালো।তাদের অবিশ্বাস্য চাহনী পর্যবেক্ষণ করে ইপ্সি চাঁদের দিকে তাকালো।তাকিয়ে দেখলো চাঁদের ফর্সা মুখ লাল বর্ণ ধারণ করছে।সে তৎক্ষনাৎ ভ!ড়কে অবনীকে বললো,

“চেচাচ্ছিস কেনো?”

অবনী তাও বিস্ময় নিয়েই বললো,

“সিরিয়াসলি?ক্যাম্নে?আই মিন কিভাবে কী ভাই!”

কয়েকটা মেয়ে সামনে এসে বললো,

“চাঁদ?কোনটা চাঁদ?দেখি।কই মেয়েটা?মেয়েটাকে দেখবো আমরা।শুনেছি কি*স করেছে।লি!প কি*স করেনিতো আবার?”

এসব শুনে চাঁদের মেজাজ যেনো সপ্তম আসমানে চড়ে বসলো!সেখান থেকে ক্ষীপ্র গতিতে যেতে লাগলো সে।অবনী আর ইপ্সি চাঁদের পিছু নিলো।অবনী যেতে যেতে বললো,

“চাঁদ এই চাঁদ?দোস্ত?রাগিস কেনো?আমার কথাটা শোন”

সবার মাঝে রটিয়ে গেলো মেডি ক্রাশ প্রণয় চাঁদ নামক একটি মেয়েকে কি*স করেছে।তাদের মাঝে ঠিক কী রকম কি*স হয়েছে এসব ই বর্তমানে কলেজের মূখ্য বিষয় হয়ে উঠেছে।মেয়েটা ঠিক কতটা সুন্দর হলে যেই ছেলের মেয়েতে এলার্জি, সেও কিনা তাকে কি*স করে?এসব ভেবেই কেউ কোনো উত্তর মিলাতে পারছেনা।কলেজের প্রায় সব ইয়ারের ছেলে-মেয়েই চাঁদকে একবার দেখার জন্য ব্যাকুল!

To be continued…

#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম

১২.
আকাশে পেজা তুলোর ন্যায় মেঘগুলো ভেসে বেড়াচ্ছে।দখিনা হাওয়া সকলকে জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমণ।বসন্ত এসেছে আরও মাস খানেক আগে!প্রায় মাস দেড়েক তো হবেই।চলে যেতে যেতে আর মাত্র গুটি কয়েকদিন ই বাকি।তবুও আজ হঠাৎ করেই বসন্তকে খুব করে অনুভব করছে কেউ একজন।কেউ একজন চাইছে আজ কোকিল তার সুমধুর কন্ঠস্বরে একবার হলেও ‘কুহু’ করে গান ধরুক।সেই সাথে সেও গিটারের টুংটাং শব্দে ধরুক কিছু পঙক্তি,

♪♪♪….বাতাসে বহিছে প্রেম,
নয়নে লাগিলো নেশা!….♪♪♪

প্রণয়ের ভাবনায় ছেদ ঘটলো কারও পায়ের শব্দ কর্ণগুহর হতে।তার বুঝতে কোনোপ্রকার অসুবিধা হলোনা কে এসেছে।তাই পিছু না ঘুরেই বললো,

“একটু আগে নিচে কী করে আসলাম তাই জানতে এসেছিস?”

অরণ একটুও অবাক হলোনা।অবাক হওয়ার কথাও না।অভ্যস্ত এসবে তারা।একে অপরের আহটেই বুঝতে পারে কখন,কোথায় বা কেনো তারা আসলো বা কোথায় থাকতে পারে।তাইতো প্রণয়কে ক্লাসে না পেয়ে অরণ ছাদে চলে আসে।এসেই দেখতে পায় প্রণয় গিটার নিয়ে আকাশ পানে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বসে আছে।সে পানে তাকিয়েই সে অরণকে উদ্দেশ্য করে একটু আগের বাক্যটুকু সম্পন্ন করেছে।

অরণ সামনে এগুতে এগুতে বললো,

“জানিস ই যখন উত্তরটাও দিয়েই দে”

আকাশ পানে তাকিয়েই ভরাট কন্ঠে প্রণয় বললো,

“উত্তর জানা থাকলে নিজের কাছে নিজেই প্রশ্ন হয়ে থেকে যেতাম না”

অরণ প্রণয়ের পাশে বসে বললো,

“তোর মতো ম্যাচিওর ছেলে এমন ইমম্যাচুরিটি করলে কি আমার ভালো লাগবে প্রণয়?”

“আমি ইমম্যাচুরিটি করছি?”

“তা নয়তো কি?”

প্রণয় অরনের দিকে তাকিয়ে বললো,

“বুঝিয়ে বল”

“এইযে একটু আগেই বললি তোর কাছে কোনো উত্তর নেই।এটা ইমম্যাচুরিটি না?”

“সিরিয়াসলি অরণ?”

“আ’ম সিরিয়াস প্রণয়”

গম্ভীরভাবে বললো অরণ।

“হাউ ক্যান আই বি অ্যান ইমম্যাচিওর ইফ আই কান্ট সে সামথিং?ডাজ ইট মেক মি ইমম্যাচিওর?ইফ ইয়েস দেন হাউ?” [যদি আমি কিছুর উত্তর দিতে না পারি,তাহলে কী করে আমি অপরিপক্ক হই?এটা কি আমাকে অপরিপক্ক বানায়?যদি উত্তর হ্যা হয়,তাহলে কিভাবে?]

“তুই একটা অপরিচিত মেয়েকে কি*স তো করে এসেছিস কিছু না জেনেই।আমি মানছি এতে তোর বা মেয়েটার কোনো দোষ নেই।বাট তুই কি জানিস? তোর এই কাহিনী পুরো কলেজে ছড়িয়ে গেছে?কলেজের বর্তমান ব্রেকিং নিউজই হচ্ছে ‘মেডি ক্রাশ প্রণয় চাঁদ নামক একটি মেয়েকে কি*স করেছে’ আর তুই মেয়েটাকে লি*প কি*স করেছিস কিনা,মেয়েটা দেখতে কেমন এসব কিছুই কলেজে গবেষণা চলছে।”

প্রণয় ভ!ড়কে গিয়ে গিটার নিয়েই উঠে বললো,

“হোয়াট!”

অরণও দাঁড়িয়ে বললো,

“হ্যা।তোরতো কিছুই হবেনা।মেয়েটা বোধহয় অ!পমানিত হচ্ছে।আই ডোন্ট নো মেয়েটার ভেতর দিয়ে কী চলছে এখন”

প্রণয় ধি*ক্কার জানিয়ে বললো,

“ওদের মন আর মস্তিষ্ক এতো সংকীর্ণ?”

চাঁদ আ!গুনে!র ফুল্কির ন্যায় দা!উদা!উ করছে।যেকোনো সময় প্রণয় নামক ছেলেটা নাহয় অবনী নামক বাচাল মেয়েটাকে ভ*স্ম করে দেবে।তাকে সবাই খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে।এসব কিছুই মানতে নারাজ চাঁদ।সেই সাথে উলটা-পালটা আর বানোয়াট কথাবার্তা তো আছেই!কান আর মাথার মধ্যভাগ তথা চাদি দিয়ে ধোয়া ছুটছে তার।শরীরের তাপমাত্রা বেগতিক বাড়ছে।মুখশ্রী হয়ে আছে লালচে।মনে মনে সে প্রার্থনা করছে প্রণয় নামক সেই বিড়ালাক্ষী মানব যেনো আর কখনোই তার সামনে না আসে।নাহলে তাকে চাঁদ ঠিক কী করবে সে নিজেও জানেনা।এসব ভাবতে ভাবতেই দেখলো একটা মেয়ে তার পথ আটকে দাড়িয়েছে।সেই সাথে তাকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে।বড্ড বিরক্ত হলো চাঁদ।নিজেকে সামলাতে না পেরে মেয়েটার সাথে চেচিয়ে বললো,

“সমস্যা টা কী আপনাদের?আমি সত্যি ই বুঝতে পারছিনা!এখানে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে এসেছি, হাসির পাত্র হতে নই!প্রথমদিন এসেই অপ্রত্যাশিতভাবে এক অপরিচিত ছেলে ডেয়ার বলে অযথাই ছুয়ে চলে গেলো।পরে জানতে পারি সে নাকি মেডিকেলের মেয়েগুলোর ড্রিম বয়!আরে ভাই তাতে আমি কী করবো?আমি কি কাউকে একবারও বলেছি যে ঐ বিড়ালাক্ষী মানবকে আমার মনে ধরেছে বা সেই মানব আমার ড্রিম বয়?কি*স করলো সে কথা বললো সে ব্যাপারটা তার বিষয়।তাকে জিজ্ঞেস করো।তাকে নিয়ে মাতামাতি করো।আমার পেছনে লেগেছো কেনো তোমরা?আর সেতো ভালোভাবে আমায় ছোয়ও নি।এটাকে বোধহয় কি*সও বলা চলেনা।আর বিরক্তিকর মেয়েগুলো লি!প কি*স পর্যন্ত চলে গেছে‌!কবে যেনো বলবে তার সাথে আমার সম্পর্ক চলে আর বে*ডেও….”

“জাস্ট শা!ট আপ মিস চাঁদ!”

কোনো পুরুষালি কন্ঠস্বর শুনে পেছনে ফিরলো চাঁদ।প্রণয়কে দেখা মাত্র মেজাজ আরও বেশি উ*গ্র হয়ে উঠলো তার।প্রণয়ের মুখের সামনে তর্জনী নিয়ে চেচিয়ে চেচিয়ে বলছে,

“ইউ শাট আপ মি.বিড়াল!সমস্যাটা কী আপনাদের?এখানে কি পড়তে এসেছি নাকি এভাবে ব্রেকিং নিউজের হেডলাইন হতে?আপনার আর আপনার ঐ দলের জন্য এসব বানোয়াট আর বা!জে কথা শুনতে হচ্ছে আমায়।আমি কিন্তু এসব একদম টলারেট করবোনা!প্রিন্সিপাল….দরকার পড়লে সভাপতির কাছে কমপ্লেইন দেবো আমি!”

প্রণয় চাঁদের আঙুল তার এক আঙুল দিয়েই নিচে নামিয়ে একটু বিরক্ত হয়ে জোরেই বললো,

“ফার্স্ট অফ অল স্টপ কলিং মি বিড়াল!আই আম প্রণয়!রুহায়ের প্রণয়!ক্যান ইউ হিয়ার মি?”

“এই ছেলে!আপনি বিড়াল হন,প্রণয়,রুহায়ের বা ফুহায়ের যাই হন না কেন আই জাস্ট হার্ডলি কেয়ার!আমি আপনার মতো কানে কালা নই।চেচাবেন না”

গম্ভীরভাবে প্রণয় বললো,

“চেচাচ্ছিনা।চলুন”

বলেই চাঁদের হাত ধরে ক্যাম্পাসের মাঝে নিতে নিতে রবিনকে কিছু ইশারা করলো।চাঁদ আবারও চেচিয়ে বললো,

“এক্সকিউজ মি?ওহ হ্যালো মি.বিড়াল?হাত ছাড়ুন।আমার হাত ধরার কোনো অধিকার আপনার নেই”

“আপনার হাত ধরার জন্য আমি মরিয়াও হয়ে যাইনি।আর আমি কানে স্পষ্ট শুনতে পাই।কানের সামনে দাঁড়িয়ে এভাবে গলা ফা!টানো!র প্রয়োজন নেই।আই ক্যান আন্ডারস্ট্যান্ড আপনি ভীষণ রেগে আছেন।বাট প্লিজ স্টপ নাও।আমি সব ঠিক করে দেবো আপনি একটু চুপ থাকুন”

চাঁদ চুপচাপ রইলো।সে ভাবলো প্রণয় তাকে সুযোগ পেয়েও খুবই আলতোভাবে শুধু ঠো!ট ছুইয়েছে।সে চাইলেই পারতো খারাপভাবে ছুতে।এমনকি এখনও তার হাত ছুয়েছে তবুও লাগছেনা এই ছোয়াতে কোনো কা!মনা বা এমন কিছু আছে!এ ছোয়ায় আছে শুধুই পবিত্রতা।প্রণয় নামক এই বিড়ালাক্ষী মানব বোধহয় কেবলই শুদ্ধতা আর পবিত্রতায় মোড়ানো?

প্রণয় ক্যাম্পাসের মাঝে এসে চাঁদের হাত ছেড়ে দিয়ে রবিনের হাত থেকে মাইক নিয়ে গলা পরিষ্কার করে বলতে আরম্ভ করলো,

“অ্যাটেনশন এভ্রিওয়ান!আ’ম থার্ড ইয়ার’স ক্যাপ্টেন রুহায়ের প্রণয়,ক্যান ইউ গাইজ হিয়ার মি?” [সকলে মনোযোগ দিন!আমি তৃতীয় বর্ষের ক্যাপ্টেন রুহায়ের প্রণয়,আপনারা কি আমায় শুনতে পাচ্ছেন?]

সবাই প্রণয় আর চাঁদকে একসাথে দেখে একটু বেশিই আগ্রহী হয়ে উঠলো।তাই তাদেরকে ঘিরে দাড়ালো তারা।চাঁদের এতো মানুষের সামনে আসার অভ্যেস নেই।তাকে অস্ব!স্তি ঘিরে ধরতেই প্রণয়ের বাহু ঘেষে পিছু এসে দাড়ালো।প্রণয় একটু তাকালো সেদিকে।আবারও সামনে দৃষ্টিপাত করে বললো,

“আমার ভাবতেই অবাক লাগছে বাংলাদেশের টপ মেডিকেলে পড়ুয়া হাই এডুকেটেড স্টুডেন্টদের মন আর মস্তিষ্ক এতো সংকীর্ণ!কেনো এসব বলছি নিশ্চয়ই বুঝেছেন?এই যে আমার পাশে যেই মেয়েকে আপনারা দেখছেন।তার নাম চাঁদ।পুরো নাম..ইম….”

থেমে চাঁদের মুখের কাছে মাইক ধরতেই চাঁদ বিনা সংকোচে গর্ববোধ করে বললো,

“মুহাইমা বিনতে চাঁদ”

এ কথা শুনতেই সকলের মাঝে আবারও বলাবলি শুরু হলো এবং এবার একটু বেশিই।সবাই ভীষণভাবে চমকালোও।অবাক হলো স্বয়ং প্রণয়ও।তবে চাঁদকে বুঝতে দিলোনা সে।মাইক চাঁদের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে চোখের ইশারায় আশ্বস্ত করলো।চাঁদও এক অদৃশ্য ভরসা এবং সাহস পেলো।মাইক হাতে নিলো সে।মুখের কাছে এনে খানিকটা কেশে বললো,

“অবাক হয়েছেন নিশ্চয়ই?হওয়ার ই কথা।আপনারা হয়তো আশা করেননি এই চাঁদ ই মুহাইমা বিনতে চাঁদ হবে?আপনারা তো আমায় আর দেখেননি।ছবিতে দেখলেও বুঝতে পারেননি এটাই আমি।ছবি থেকে বাস্তবে অনেকটাই অন্যরকম লাগে বৈকি!”

অবনী ইপ্সিকে ফিসফিসিয়ে বললো,

“সবাই এমন অবাক হচ্ছে ক্যান রে?চাঁদ কী করেছে?আর দেখনা দুজনকে সেই মানিয়েছেনা বল?”

ইপ্সি ভ্রু কুচকে বললো,

“চুপ থাক গ!বেট!”

চাঁদ আবার বলা শুরু করে,

“আমাকে না চেনার অন্যতম কারণ আমি মিডিয়ার সামনে আসিনি।এসব আমার বরাবরই বিরক্ত লাগে।এজন্যই স্বাধীনভাবে চলতে পারি।যাইহোক।সেসবে না যাই।আসল কথা বলি!আমার পাশের ছেলেটাকে দেখছেন?তাকে না চেনার কিন্তু কোনো প্রশ্নই আসেনা।সে যেহেতু আপনাদের ড্রিম বয় তাকে নিয়ে মাথা ব্যথা থাকবেই।আর আমি বুঝতে পারলাম মেয়েগুলো নিজেরা মেয়ে হয়েও অন্য আরেকটা মেয়েকে নিয়ে এতোটা বা!জে কথা কি করে বলতে পারলো।বিকজ দে আর জেলাস অফ মি।আচ্ছা আপুরা হোয়াট ইফ আই উইল বি হিজ ওয়াইফ?আমাকেতো আপনারা কে!টেকু!টে ভা!সিয়েই দেবেন”

বলেই উচ্চশব্দে হাসতে লাগলো চাঁদ।অথচ চাঁদ জানলো ও না এই হাসিতে সেখানে উপস্থিত কতজনের হৃদয়ে র!ক্তক্ষ‌!রণ হয়ে গেলো!

‘প্রণয়ের ওয়াইফ’ কথাটা শুনে সবাই অবাকও হলো ভীষণ। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখতে লাগলো দুজনকে।চাঁদ হেসে বললো,

“রিল্যাক্স গাইজ!আ’ম জাস্ট কিডিং।এতো সিরিয়াসভাবে আমাদের দেখার দরকার নেই।আমি বা সে কেউ ই কাউকে চিনিনা।তার বড় প্রমাণ সে আমার নাম টা পর্যন্ত জানতোনা।আপনাদের মুখে মুখে শুনেই জেনেছে।কারণ কলেজের হ*ট নিউজ ই হচ্ছে ‘মেডি ক্রাশ প্রণয় চাঁদ নামক একটি মেয়েকে কি*স করেছে’ এমনকি একটু আগ পর্যন্ত ও কেউই জানতোনা এই টপ নিউজের চাঁদ ই মুহাইমা বিনতে চাঁদ”

অবনী চেচিয়ে বললো,

“দোস্ত।তোর পুরো নাম মুহাইমা বিনতে চাঁদ তা তো বুঝলাম কিন্তু এর কাহিনী টা বল না”

আরও একবার ঝংকার তোলা হাসিতে মেতে উঠলো চাঁদ।হেসেই উত্তর দিলো,

“ইপ্সু থেকে জেনে নিস।আর আপনারা,যেই ছেলে আমাকে চেনেই না আর যার মেয়েতে এ!লার্জি সে কি করে লি!প কি*স করতে পারে ভাবলেন না একবারও?হোক না সে যেই মেয়ে ই!আর আপনারা একজন শুদ্ধ-পবিত্র মানবের গায়ে এমন ট্যাগ মোটেও লাগাতে পারেন না।সে কেবলই গালে ঠোট ছুইয়েছে।বাজে ভাবে চু*মুও খায়নি।কোনো প্রকার সু্যোগ নেয়নি।এটাকে ঠিকভাবে কি*সও বলা যায়না।সে শুধুই ফর্মালিটির জন্য গাল ছুয়েছে।তার বন্ধুবান্ধব ডেয়ার দিয়েছিলো কিনা?চাইলেই আপনারা যা ভেবেছেন তাও করতে পারতো।তবে ঐ যে বললাম,শুদ্ধতা?আর আপনারা কত অগ্রীম ভেবে ফেলেছেন!তার জন্য আমার ব!দনা!ম হচ্ছে বলে সবটা ক্লিয়ার করতে সে সবাইকে এখানে জড়োও করেছে।অন্য ছেলে হলে বোধহয় বলতো ‘ধুর!এই মেয়েকে নিয়ে যা ইচ্ছা বলুক?আমার কি?আমিতো সবার ক্রাশ।আমার গায়ে ফুলের টোকাও আসবেনা।আই জাস্ট হার্ডলি কেয়ার বাউট হার!’বলে এসব ঝামেলা থেকে দূরে থাকতো।বাট দিজ বয়!”

বলেই প্রাণভরে একগাদা বায়ু নাসারন্ধ্রে প্রবেশ করালো চাঁদ।সে বায়ু একই পথে নির্গমন করিয়ে বললো,

“ইজ রিয়েলি আমেজিং!উহু,তার হ্যান্ডসামনেসকে মোটেও বলিনি।মানসিকতাকে বলছি।আপনারা তার হ্যান্ডসামনেসে বারবার বোধহয় ফিদা হন আর হয়েই তার জন্য এতো পাগলামো করেন।তবে তার ব্যক্তিত্বে ফিদা হলে বোধহয় প্রকৃত অর্থে তার প্রেমে পড়বেন?বারবার পড়বেন এবং পড়তেই থাকবেন।পড়তে বাধ্য হবেন!এসব ইনফ্যাচুয়েশনকে প্রেম বা ভালোবাসা বলে অপ!মানিত করবেন না প্লিজ।আমি ভালোবাসার সংজ্ঞা জানিনা।তবে বলতে পারি শুধু ক্রাশ খেলেই কাউকে প্রকৃত অর্থে ভালোবাসা যায়না।প্রেম সুন্দর সত্যিই সুন্দর।যদি জীবনে প্রেম নিয়ে আসে সত্যিকারের প্রেমিক পুরুষ!আমি জানিনা তার মেয়েতে কী সমস্যা তবে এমন সমস্যা হাজারো ছেলেদের মাঝে হলে মন্দ হবেনা?যারা প্রকৃত অর্থে মেয়েদের সম্মান করে এমন ‘মেয়ে এলার্জেটিক’ ছেলে প্রতিটা ঘরে ঘরে থাকুক।আপনারা তার জন্য যেসব পাগলামো করেন তা দেখে সে কতটা বিরক্ত তাতো আমি জানিনা।তবে তার জন্য মাতোয়ারা না হয়ে সম্মান করুন সে হয়তো খুশি হলে হতেও পারে।এসব বলছি বলে ভাববেন না আমি তার প্রেমে পড়ে গেছি বা এমন কিছু।চাঁদের এসব প্রেম ট্রেমে কোনো ইন্টারেস্ট নেই।এগুলো মানুষ কেবলই সময় অপচয়ের জন্য করে।আর দুনিয়ার যত সুদর্শন পুরুষই চাঁদের সামনে দিয়ে যাক না কেন ভুলবশত একবার চোখ পড়ে গেলে দ্বিতীয়বার সেখানে তাকানোর মতো ভুল চাঁদ করেনা,করবেওনা।তবে আমি অবশ্যই বলবো আমার পাশে দাঁড়ানো এই শুদ্ধ ব্যক্তিত্বের বিড়ালাক্ষী মানবের জন্য আমার ভেতর থেকে সম্মান বৈ কিছু আসেনা।আমি চাই এই মানব এমনই থাকুক।তার মেয়েতে এ!লার্জি আজীবন বিদ্যমান থাকুক!”

To be continued…

#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম

১৩.
হঠাৎ করেই দমকা হাওয়া বয়ে গেলো।হাওয়ায় মিশলো সামান্য ধূলিকণাও।গাছের পাতাগুলো কিঞ্চিৎ নড়েচড়ে উঠলো।এ যেনো বৈশাখের আগাম বার্তা!বৈশাখী ঝড় বোধহয় জানান দিচ্ছে ‘আমি আসছি তোমরা তৈরি থেকো আমার স্বাগতমে!’ সেজন্যই হয়তো পহেলা বৈশাখ নিয়ে লোকজনের এতো আমোদ,এতো ফূর্তি।গ্রামে-গঞ্জে,শহরে-বন্দরে বৈশাখী মেলার রোল পড়ে যায়।কিন্তু কারও হৃদয়েও যে সামান্য কয়েকটা বাক্য ঝড় বইয়ে দিতে পারে তা কি কেউ জেনেছে?বুঝেছে কি তার মনোবস্থা?পেরেছে কি পড়তে তার অনুভূতিশূন্য মুখশ্রী?সে নিজেও কি জানতে পেরেছে ঝড়ের আগাম বার্তা?

চাঁদ প্রণয়ের হাতে মাইক থামিয়ে দিয়ে চলে যেতে উদ্যত হতেই শুনতে পায় প্রণয়ের গম্ভীর কন্ঠস্বর,

“ভেবেছিলাম মেয়েটা বোধহয় নিজের প্রোটেকশনে বহু বাক্য ব্যয় করবে।কিভাবে নিজের সম্মান বাচানো যায়।নিজের নামে লাগানো মিথ্যা অপবাদগুলো মোছা যায়।কিন্তু আমি বরাবরই অবাক হয়েছি সে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করতে একটুও চেষ্টা করেনি।এমন মেয়ে মানুষ আমি আজ পর্যন্ত দেখিনি।আমি জাস্ট রীতিমতো অবাকই হয়েছি।এটাও ভাবতে পারছিনা যে,সে আমার প্রেমে পড়েছে।কজ তার হাবভাব দেখলেই বোঝা যায় এই মেয়ে কারো প্রেমে পড়তে পারেনা।আর আমার প্রেমে যে পড়তে পারেনা তা তখনই বুঝেছি যখন ফ্রেন্ডদের ডেয়ার কমপ্লিট করার পর আমার কলার ধরে আমার ফ্রেন্ডদের সাথে তর্ক আর আমারই আরেক ফ্রেন্ড পূর্ণর সামনে আমারই ব!দনামি করতে শুনছিলাম, ‘সমস্যা টা কি আপনাদের?আমি সত্যি ই বুঝতে পারছিনা!এখানে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে এসেছি,হাসির পাত্র হতে নই!প্রথমদিন এসেই অপ্রত্যাশিতভাবে এক অপরিচিত ছেলে ডেয়ার বলে অযথাই ছুয়ে চলে গেলো।পরে জানতে পারি সে নাকি মেডিকেলের মেয়েগুলোর ড্রিম বয়!আরে ভাই তাতে আমি কি করবো?আমি কি কাউকে একবারও বলেছি যে ঐ বিড়ালাক্ষী মানবকে আমার মনে ধরেছে বা সেই মানব আমার ড্রিম বয়?’ তো আপনারা কী বুঝলেন?যেই মেয়ে আমারই ফ্রেন্ডের সামনে আমার ব!দনাম করতে ভয় পায়না ঐ মেয়ে কেমন হতে পারে?আর আমার প্রেমে পড়বেই বা কেনো?আমি কখনোই এটা বুঝে উঠতে পারিনি,আমি দেখতে শুনতে আর দশটা ছেলের মতোই তবুও আমাকে নিয়ে এতো মাতামাতি।আমার পাশে দাঁড়ানো এই মেয়েটার কাছে হয়তো আমি অপছন্দীয়।তার মতোই এমন আরও অনেকেই আছে যারা আমায় পছন্দ দূরে থাক চেনেওনা।সো স্টপ ডুয়িং সাচ রিডি!উকুলাস থিংস!আর সে শেষে এও বললো সে চায় আমি যেনো আজীবন ‘মেয়ে এলার্জেটিক’ হয়ে থাকি।আই জাস্ট রিয়েলি কান্ট বিলিভ এমনও মেয়ে হয়?আমার যতদূর লাগছে মিস চাঁদ আপনি নিজেই একজন ‘ছেলে এলার্জেটিক’?”

এ কথা শুনে ঘুরে তাকালো চাঁদ তবে কিছু বললোনা।বলার মতো কিছু পেলোও না।তার লজ্জা লাগছে।সে প্রণয়ের ব!দনা!মী করেছে,সেগুলো সে শুনেও নিয়েছে এমনকি মাথায়ও গেথে রেখেছে।হুবুহু তাকে মিমিক্রি করেছে!যার জন্যই চাঁদ মুখে কলুপ এটেছে।কিছুই বলতে পারছেনা।শুধুই শুনছে।

প্রণয় আবারও বলছে,

“আর আপনারা,শুনুন!যেই মেয়ে নিজের জন্য একটা বাক্যও ব্যয় করেনি।অপর একটা ছেলের নামে মিথ্যা দুর্নাম করছেন বলে সে তার প্রতিবাদ করলো।সে কি আদৌ খারাপ কিছু করতে পারে?সে তো ঠিকই বললো তার পাশে দাঁড়ানো ছেলেটা নাকি একজন শুদ্ধ ব্যক্তিত্বের মানব?সে আমায় শুদ্ধ হিসেবে নিয়েছে বলে শুদ্ধ লেগেছে।অশুদ্ধ হিসেবে নিলে অশুদ্ধই লাগতো।এটা যার যার চিন্তাধারা।মনে যা মুখেও তাই এমন পেচহীন মেয়ে আমি দুটো দেখিনি।এখন বলুন আপনাদের ভুল ধারণা কি ভাঙলো?”

সবাই উচ্চস্বরে বলে উঠলো,

“হ্যা”

প্রণয় আবারও বললো,

“যাচাই-বাছাই না করে কোনোকিছু রটাবেন না।ইটস আ হাম্বাল রিকুয়েষ্ট।আর এই মেয়েটার দু-একটা প্রশংসা করেছি বলে ভাববেন না আমি মেয়েদের সাথে প্রাণবন্ত হয়ে যাবো।আমার মা আর তিন ফ্রেন্ড বাদে অন্য কোনো নারীর কথা-ছোয়া আমার বরাবরই অপছন্দীয়।আর এরা বাদে বাকি সব মেয়েতেই আমার এ!লার্জি ছিলো আর আজীবন থাকবে!এনি কুয়েশ্চন?”

কেউই কিছু বললোনা।তাই প্রণয়ই বললো,

“ওকে ডিসমিস”

বলতেই সবাই একে একে চলে যেতেই প্রণয়ও যাবে এমন সময় চাঁদ পেছন থেকে ডেকে উঠলো,

“এক্সকিউজ মি?মি.বিড়াল?”

কয়েকবার ডাকার পরও প্রণয় চলে যাচ্ছে বলে দৌড়ে চাঁদ তার সামনে আসায় বিরক্ত হলো প্রণয়।ভ্রু কুচকালো তবে কিছু বললোনা।মৌনতা অবলম্বণ করলো।তা দেখে চাঁদ বললো,

“শুনুন মি.বিড়াল অতিরিক্ত ভাব দেখাবেন না বুঝেছেন?আপনার সাথে গায়ে পড়ে কথা বলার জন্য ডাকিনি যে এভাবে ভাব দেখিয়ে চলে আসছেন”

“আপনি আমায় কখন ডেকেছেন?আমিতো শুনিনি”

“শুনবেন কি করে?আপনিতো কানে কালা।সে যাইহোক শুনুন বিড়াল”

“এই মেয়ে আপনার আমাকে কোন দিক দিয়ে বিড়াল মনে হয়?”

“কেনো?আপনার এই বিড়ালাক্ষীজোড়া?তাছাড়া আপনি যেই ফর্সা বাপরে!পুরোই বিড়াল!”

“হোয়াট রা!বি!শ!”

“হোয়াটেভার।থ্যাংক ইউ বিড়াল”

রাগ সংবরণ করে প্রণয় বললো,

“কি জন্য?”

“সবকিছু ঠিক করার জন্য”

“যা করেছেন আপনি ই করেছেন।আমি শুধু ব্যবস্থা করে দিয়েছি”

“আপনি না থাকলে হতোনা”

“আপনার পুরো নাম আগে বললে বহু আগেই হয়ে যেতো কজ যেই মেয়ে মেডি এডমিশনে ৯৮ পেতে পারে সে যে কেমন বইপোকা আর ছেলে এলার্জেটিক সবাই আগেই বুঝে যেতো।এতো কাহিনীর দরকার হতোনা”

“এসব ফালতু পপুলেশনের প্রয়োজন আমার নেই।আমার সাধারণ জীবন-যাপন ই পছন্দ।সাহায্য করেছেন থ্যাংক্স বলেছি ব্যাস এইটুকুই।অবশ্য থ্যাংক্স না বললেও কিছু হতোনা কারণ সমস্যায়ও পড়েছি আপনাদেরই বদৌলতে।আর একটু বেশি প্রশংসা করেছি বলে ভা….”

চাঁদকে বলতে না দিয়ে প্রণয়ই বললো,

“ভাববেন না আমি আপনার প্রেমে পড়ে গেছি বা এমন কিছু।চাঁদের এসব প্রেম ট্রেমে কোনো ইন্টারেস্ট নেই।এগুলো মানুষ কেবলই সময় অপচয়ের জন্য করে।আর দুনিয়ার যত সুদর্শন পুরুষই চাঁদের সামনে দিয়ে যাক না কেন ভুলবশত একবার চোখ পড়ে গেলে দ্বিতীয়বার সেখানে তাকানোর মতো ভুল চাঁদ করেনা,করবেওনা।তাইতো?”

চাঁদ দ্বিতীয়দফা অবাক হলো।চোখের পলক ফেললো ঘনঘন।তা দেখে প্রণয় বললো,

“আপনার মতো অতো বই বিষয়ক জ্ঞানী নই বলে এডমিশনে ৯৮ ঠিকই পাইনি তার মানে এই নয় যে জীবনের জ্ঞান আমার নেই।আপনার মতো মেয়ে আর আমার বেস্টফ্রেন্ডের মতো ছেলেদের দেখলে বোঝাই যায় বই ছাড়া অন্য কিছুর প্রেমে পড়া আপনাদের দিয়ে অসম্ভব।আমার ফ্রেন্ডের বিষয় আলাদা।আপনার জন্য একেবারেই অসম্ভব কজ বাংলাদেশের হিস্ট্রি ই আপনি বদলে দিয়েছেন।সরি নতুন হিস্ট্রি গড়েছেন।যার জন্যই চোখ দুটো অকালে খুই*য়েছেন।সেটা অবশ্য আপনার ব্যাপার।আর নিশ্চিন্তে থাকুন কারণ আমি জানি আর বুঝতে পেরেছি আমি আপনার অপছন্দের একজন।আমাতে আপনি মোটেও ইন্টারেস্টেড নন।একচুয়ালি আপনি বই ছাড়া আর কিছুতেই ইন্টারেস্টেড হতে পারেন না”

চাঁদ ভ!ড়কে বললো,

“আপনি আমাকে রীতিমতো অপমান করছেন!আমি কোনো ছেলেতেই ইন্টারেস্টেড নই।আর আমি জড়বস্তুও না যে কখনো ইন্টারেস্টেড হবোনা বা হইনি!আর আপনি আমার অপছন্দ…. ”

“আমি জানি আপনি আমায় দুচোখে দেখতে পারেননা।এটা অবশ্যই স্বাভাবিক।হুট করে সকালে যা হয়েছে এমন ভাবা অস্বাভাবিক না।আপনি যে আমাকে বিড়াল বাদে আরও কী কী ট্যাগ দিতে পারেন আমি বুঝতে পারছি।আর আমার সম্পর্কে এমনিতেই অনেককিছু ধীরে ধীরে জানতে পারবেন।তবে আমি নিজেই আপনাকে একটা বিষয় জানাচ্ছি।মাথায় গেথে রাখার অনুরোধ রইলো।”

চাঁদ ভ্রু কুচকে তাকালো কেবল।প্রণয় চাঁদের চোখে চোখ রেখেই বলতে লাগলো,

“আমি বরাবরই মেয়েদের থেকে দূরে থাকি।কথা বলতেও বিরক্ত লাগে।নিশ্চয়ই এই কয়েকঘন্টায় জেনে গেছেন তাদের থেকে দশ হাত দূরে থাকি?আসলেই কিন্তু থাকি!আপনার সাথে মি!সবিহেভ করেছি বলে শুধরানোর চেষ্টা করতে গিয়েই হাত ধরা।আপনি একটু বেশি ই ভাবেন।তাই বলছি আবারও।আমার কোনোকালেই কোনো বা!জে ইন্টেশন ছিলোনা।আর আপনার সাথে যা বলার ছিলো বলে দিয়েছি।আশা করছি আমাদের আর কখনোই কথোপকথনের দরকার পড়বেনা।আর আপনি আমার অনেক সামনে দাড়িয়ে আছেন।আমার খুবই আজব লাগছে।প্লিজ লিভ”

চাঁদ থমকালো,ভ!ড়কালো।অপ!মানিত হলো ভীষণ। কিছু বলতে পারছেনা সে।শেষের কথা তার আত্মসম্মানবোধে লেগে গেলো যেনো।চুপচাপ চলে যাচ্ছিলো এমন সময়ই রিহা সামনে এসে বললো,

“তখনকার জন্য আমি সরি চাঁদ।তুমি প্লিজ কিছু মনে করোনা?আসলে প্রণয় আমাদের সবার প্রাণ।আর তুমি নিজেই বলেছো ও… ”

“বুঝেছি আপু।সমস্যা নেই।আপনার ফ্রেন্ডের ক!লার ধরেছি বলে আপনাদের গায়ে লাগবে এটাই স্বাভাবিক।কিন্তু কেনো ধরেছি তা হয়তো আপনাদের বলতে হবেনা?আর প্লিজ আপুরা আপনারা এরপর থেকে এমন ডেয়ার কাউকে দেবেন না।শুনেছি আপনাদের গ্যাং নাকি ফেমাজ।আপনারা সাত জন নাকি এই মেডির টপ সেভেন।আপনাদের থেকে এমনটা আশা করবেনা হয়তো কেউই।”

“কে বললো আমরা টপ সেভেন?ইউ আর দি টপার!আমরা কেউই কিন্তু এডমিশনে ৯৮ তো দূরের ৯৪ ও ক্র‍্যাক করতে পারিনি।হায়েস্ট ছিলো প্রণয় আর অরণের।ওরা ৯২ আর ৯৩ পেয়েছিলো।”

“অরণ?”

অরণ রিহার পাশে থেকেই বললো,

“হেই”

“আপনি ই ৯৩?”

“না।তোমার বিড়ালাক্ষী মানব ৯৩।ও আমাদের স্টিল ক্যাপ্টেন।টানা তিন বছরই”

“ওহ!”

রবিন বললো,

“আমিও সরি চাঁদ।তুমি আমার কথায় কষ্ট পেয়োনা কেমন?”

“না না ভাইয়া ইটস ওকে”

মির বললো,

“হেই বিড়ালিনী শোনো”

“বিড়ালিনী মানে?”

“আমার বন্ধুকে বিড়াল বলছো তাই তোমায়ও বললাম”

“কিন্তু আমার চোখ তো কালোই”

“তো কি হয়েছে?ফর্সাতো তুমিও।এখন অনেকটা লাল ও দেখাচ্ছে।আবার দেখো বাম হাতের নখও বড়।বিড়ালিনীর থেকে কোনো অংশে কম কি?

“নখতো এমনিই রেখেছি।কাটতে আলসেমো লাগে বলে….”

“থাক সেসব।আমার কথা শোনো।আমরা ওকে প্রতি বছর ই এই ডেয়ার দেই।সববার ও রাজি হয়না।যেই মেয়েই দেখাইনা কেন।কিন্তু এবার…”

মুখ ফসকে সব বলে দিচ্ছে বলে মিরের মুখ চে!পে ধরলো মিরা।চে!পে ধরেই বললো,

“চাঁদ তুমি যাও বোন।তোমার সাথে আমরা অন্যসময় আড্ডা দেবো।তোমার ক্লাস শুরু হবে।লেট করো না।আজ প্রথম দিন মিস দিওনা।তোমার ফ্রেন্ডরাও ওয়েট করছে।নবীনবরণে দেখা হবে কেমন?যাও এখন”

গম্ভীরভাবে চাঁদ বললো,

“চলেই যাচ্ছিলাম”

বলেই সেখান থেকে চলে আসলো।

চাঁদ যেতেই মিরের মুখ ছাড়ে মিরা।মির লম্বা লম্বা শ্বাস নিতে নিতে বললো,

“সমস্যা কী তোর?”

“সমস্যা আমার নাকি তোর হ্যা?”

পূর্ণতা সামনে এসে বললো,

“তোরা আর লাগিস না প্লিজ”

মির বললো,

“আমি তো শুধু এটাই বলছিলাম যে প্রণয় কখনোই আমাদের ডেয়ার এক্সেপ্ট করেনি।সবাই তো ঠিকই বলছে এই মেয়েতে কিছু আছে যার জন্যই…”

প্রণয় গম্ভীরভাবে বললো,

“কিছুই নেই।তোরা এবার যে কোনো ঘাপলা করবি তা বুঝেছিলাম আগেই।অরণ আমায় বলে দিয়েছিলো তোরা এবার ডে!ঞ্জারা!স পানিশমেন্ট দিবি যার জন্যই আমায় কাজটা করতে হয়েছে”

সবাই অরণের দিকে রা!গী চোখে তাকালো।পূর্ণতা অরণকে বললো,

“সবকিছু তোর জন্য হয়েছে।তোর এতো উদারতা কবে যাবে হ্যা?তোর জন্য একটা মেয়ের কতটা অসম্মান হলো।আর প্রণয় তুইও যে খুব ভালো করেছিস তা কিন্তু নয়”

প্রণয় পাল্টা জবাব দিলো,

“তোরা নিজেরা যে প্রতিবছর মাত্রাতিরিক্ত খারাপ করিস তা কি আমি একবারও বলেছি?”

মিরা সবাইকে থামাতে বললো,

“জাস্ট স্টপ গাইজ!আমাদের সবার ই দোষ।কিন্তু মাঝ দিয়ে মেয়েটার মনে দাগ কেটে গেলো।প্রথম দিন এসেই এতোকিছু।এই মেয়ে টপার।স্বাভাবিক ই প্রথম দিন নিয়ে এক্সাইটেড ছিলো।আমাদের জন্য সব নষ্টতো হলোই।তুই মেয়েটাকে শেষে দিয়ে বা!জেভাবে ই!নসাল্টও করলি প্রণয়!”

“আমি?”

“এখানে প্রণয় নামে আর কে আছে?”

“কিন্তু কিভাবে?”

“সেসব তুই বুঝবিনা।বোঝার হলে কখনো এমন কথা বলতি ই না”

“মেয়েটাকে যেতে বলেছি তাই?”

“তুই ই ভালো জানিস”

“মিরা তুইও কিন্তু জানিস আমি মেয়েদের সাথে কথা বলা পছন্দ করিনা।প্রবলেমে পড়ে বলেছি।এখন যেহেতু সব ঠিক হয়েছে আমি তাকে যেতে বলতেই পারি”

“ভালোভাবেও বলা যায়”

“আমি এভাবেই কথা বলি সেটা যে তোরা নতুন জানছিস এমন তো না?”

“তুই কখনোই বুঝবিনা”

পূর্ণতা এবার বললো,

“মিরা তুই সবসময় বেশি ভাবিস।নিজেকে জ্যোতিষী ভাবা বন্ধ কর।তখনও অরণকে নিয়ে বেশি ভেবেছিস।এখনো মেয়েটাকে নিয়ে ভাবছিস।আমি মানছি মেয়েটা কষ্ট পেয়েছে।তবে প্রণয়তো এমনই এতে এমন করার কি আছে?”

অরণ সামনে এসে বললো,

“স্টপ পূর্ণ।মিরু মোটেও ভুল বলছেনা বা বলেনি।হ্যা,ও কোনো জ্যোতিষী না।তবে তোর থেকে অন্যকে বোঝার ক্ষমতা ওর বরাবরই বেশি।আমি নিজেও মেয়েটাকে দেখেছি।ফর্সা মুখটা অ!পমানে থমথমে হয়ে লাল হয়ে গিয়েছিলো।চোখে চশমা থাকলেও সেই চোখে ছিলো একরাশ অ!পমানিতো হওয়ার রেশ।এন্ড আই গেস মিরার শেষের কথায়ও মেয়েটা কষ্ট পেয়েছে”

মিরা বললো,

“আমিও তাই ভাবছি অরণ।”

অরণ বললো,

“তুই মেয়েটার কাছে যাবি ভাবছিস?”

“ভাবছিলাম ই!”

“এখন যাসনা ক্লাস হচ্ছে হয়তো।শেষ হলে যাস।”

“ঠিক আছে চল”

“তোরা সবাই ক্লাসে যা।আর আজ যা হয়েছে ভুলে যা।খামোখা নিজেদের মাঝে এসব নিয়ে মন রেশারেশির কি দরকার?”

রিহা বললো,

“আমিও তাই বলছি।তোরা শুধু শুধু নিজেদের মাঝে ঝগড়া করছিস”

মির বললো,

“সবই বুঝলাম তবে মিরা আমার মুখ কেন চে!পে ধরলো বুঝলাম না”

পূর্ণতা বললো,

“ডাফার কোথাকার!কখনো বুঝবিওনা।ক্লাসে চল বুঝাচ্ছি”

সবাই ক্লাসে যাচ্ছে কিন্তু অরণ দাঁড়িয়ে আছে বলে রবিন বললো,

“দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?”

“বইটা ধর।আমার ব্যাগে ভরে রাখবি।আমি একটু পর আসছি”

প্রণয়ের দিকে রবিন তাকাতেই সে বলে,

“যা তুই”

সবাই যেতেই প্রণয় অরণের দিকে তাকিয়ে বললো,

“কেনো দাড়িয়েছিস আমি জানি।তবে সেটার উত্তর আমার জানা নেই।তাই অযথা ঘাটাস না”

“তুই যে উত্তর জানিস না সে আমিও জানি।তবে আমি যা জানি তুই কি তা জানিস?”

To be continued…