#আমার_খাঁচায়_তুমি_বন্দি
#Avigya_Ayaat
#পর্ব:২৪(শেষ অংশ)
রিফাত: রাহি একটা কথা বলি…
রাহি রিফাতের দিকে তাকিয়ে বলে…
রাহি: বলো…
রিফাত: আচ্ছা আমাদের কি একটা নতুন মেহমান দরকার না।
রাহি: মানে?
রিফাত: মানে আমাদের একটা ছোট রাজকুমারী বা রাজকুমার দরকার না।
রাহি মুচকি হাসি দিয়ে বলে
রাহি: হুমম।
রিফাত: হুম খুব তাড়াতাড়ি আমাদের একটা বাবু দরকার।
রাহি: কেনো?
রিফাত: আমি একা দেখে তুমি চলে গিয়েছিলে দইু জন হলে তখন তো আর আমাদের ছেড়ে যেতে পারবে না তাই।
রাহি: হায়রে আমার গাঁধা।
রিফাত: আমার গাধী। তুমি যেতে চাইলে ও যেতে পারবে না কখনো কারণ #আমার_খাঁচায়_তুমি_বন্দি।
রাহি: আমি ও কখনো যাবো না।
রিফাত: জানিরেরে ফাজিল মেয়ে।
এই বলে রাহির নাক টান দেয়।
রাহি: হুরর ফাজিল ছেলে।
দুষ্টুমিষ্টি ঝগড়া করে দুজন আরো কিছু সময় রাস্তায় হাটে তারপর বাসায় চলে যায়।
সকালে….
সকালে রিফাতের ঘুম ভাঙ্গে আর মিটিমিটি চোখে তাকিয়ে দেখে রাহি তার বুকের ওপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে। রিফাত রাহির ঘুমন্ত মুখের দিকে পলকহীন তাকিয়ে থাকে। কিছু সময় পর রাহির কপালে কয়টা চুমু দিয়ে মুচকি হাসতে হাসতে আবার ঘুমিয়ে পরে।
রাহি ঘুম থেকে ওঠে ঘুমন্ত রিফাতের কপালে চুমু দিয়ে ফ্রেশ হতে যায়। ফ্রেশ হয়ে রিফাতের জন্য চা আনতে রান্না ঘড়ে যায়।
ড্রইংয় রুমে বসে রিফাতের দাদু টিভি দেখছিলো।
রাহি দাদুকে চা দিতে যায় আর তখনি রাহডর টিভির দিকে চোখ যায় আর যা দেখে তা দেখে রাহি তাড়াতাড়ি দৌড়ে রিফাতের কাছে যায়…
রাহি: রিফাত ওঠো,জান ঘুম থেকে ওঠো দরকারী কথা আছে।
রাহির ডাকে রিফাতের ঘুম ভাঙ্গে।
রিফাত: চা কোথায়। তুমি চা না এনে আমাকে ঠাকছো। তোমাকে না বলছি সব সময় আমার ঘুম ভাঙ্গাবে তোমার হাতের চা সাথে এনে।
রাহি: আরে চা পরে খাইতে পারবে এখন একটা জিনিস দেখো।
এরপর রাহি রুমের টিভিটা চালু দিয়ে বলে…..
রাহি: দেখে কাল পুলিশের গাগি এক্সিডেন্ট হইছে।
রিফাত: তাই কি হয়ছে?
রাহি: কাল অয়ন ভাই যে গাড়ি করে ওদের নিয়ে গেছিলো সেই গাড়ি এক্সিডেন্ট হইছে আর তিন জনই মারা গেছে।
রিফাত: তো ভালই হয়ছে পাপের শাস্তি পেয়েছে।
রাহি: তোমার খা…….
রিফাত রাহিকে কিছু বলতে না দিয়ে নিজেই বলে…
রিফাত: তাড়াতাড়ি আমার জন্য চা নিয়ে আসো যাও।
রাহি আর কিছু না বলে রিফাতের জন্য চা আনতে যায়।
রাহি রুম থেকে বের হবার পর রিফাত মুচকি হাসি দিয়ে নিজের ফোন হাতে নেয়।
রিফাত: হ্যালো অয়ন।
অয়ন: হুমম বল।
রিফাত: কাজটা করার জন্য ধন্যবাদ।
অয়ন: তোর জন্যই এমন ইচ্ছা করে এক্সিডেন্ট করাইছি।
রিফাত: জানি আমি। আমি কখনো ওদের এতো সহজ
শাস্তি দিয়ে শান্তি পেতাম না কারন আমার সাথে যা করছে তার জন্য একমাএ মৃত্যুই ওদের শাস্তি ছিলো। নিজের হাতে দিতে পারলে আরো ভাল লাগতো।
অয়ন: আচ্ছা বাদ দে। এখন আর কখনো তোদের মাঝে আসতে পারবে না ।
রিফাত : হুমম।
অয়ন: আচ্ছা পরে কথা বলবো এখন বাই।
এরপর অয়ন ফোন রেখে দেয়।
রিফাত মনে মনে বলতে থাকে…
রিফাত: রাহি আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় শুএুরা শেষ এখন আর কেউ কখনো আমাদের মাঝে আসবে না। যতি কেউ আসে তাকে ও আমি শেষ করে তিবো। তবে তোমাকে কখনো আমার থেকে দূরে যেতে দেবো না।
রাহি চা নিয়ে রুমে আসে এরপর নিজে এক চুমুক খেয়ে রিফাতকে বলে.
রাহি: তোমার চা।
রিফাত: হুমম।
এরপর রিফাত চা খেতে থাকে আর রাহিকে বলে…
রিফাত: কলিজা তাড়াতাড়ি রেড়ি হয়ে নাও।
রাহি: কই যাবো?
রিফাত: তোমাদের বাসায়।
রাহি: সত্যি।
রিফাত: হুমম।
রাহি খুশি হয়ে তাড়াতাড়ি রেড়ি হয়ে নেয়।
রাহিদের বাসায়….
রাহি আর রিফাত রাহিদের বাসার ভেতরে যায়।
রাহির বাবা-মা ড্রইংয় রুমে বসে ছিলো দুজনকে তেখে তারা অবাক।
রাহির মা: রাহি তোরা।
রাহি: কেমন আছো মা?
রাহির মা: ভালো, তোরা কেমন আছিস?
রাহি : ভাল আছি।
রাহি তার মায়ের সাথে কথা বলছে তখন রিফাত রাহির বাবার কাছে যায়।
রিফাত: আমি এতোদিন আপনার সাখে খারাপ ব্যবাহার করেছি তার জন্য আমি মাফ চায়। দয়া করে আমাকে সাফ করে দিবেন। আপনি সবই জানেন যে এতোদিন আমি এমন কেনো করেছি। রাহি আমার সব তাই ওকে আমি কখনো আমার থেকে দূর করতে পারবো সা। তাই সেই দিন জোর করে বিয়ে করেছিলাম। আমি সবকিছুর জন্য আপনার কাছে মাফ চাইছিো।
রাহি তার বাবার দিকে তাকিয়ে আছে সে কি বলবে তা শুনার জন্য
রাহির বাবা: সব কিছু জানার পর আর তোমার পাগলামি গুলো দেখে আমি বুঝে গেছি তুমি আমার মেয়েকে কতোটা ভালবাসো। সত্যি আমার মেয় অনেক ভাগ্যবান যে তোমার মতো স্বামী পেয়েছে। আমার তোমার ওপর কোনো রাগ নেয়।
রাদিকা: আরে আমার বোনের জামাই ওরফে আমার দুলাভাই কেমন আছেন?
রিফাত: আরে আসার বউয়ের বোন আমার আধাঘরয়ালী ওরফে শালিকা ভালো আছি, তুমি কেমন আছো?
রাদিকা: ভালো।
সারাদিন রাহি আর রিফাত রাহিদের বাসায় থেকে যায়। সবাই মিলে অনেক আড্ডা দেয়।
বিকেলে কেউ আসতে দিতে চাইছিলো না কিন্তু রিফাতের একটা দরকারি কাজের জন্য চলে আসতে হয়।
কয়েকদিন পর…
রাহি আর রিফাত ও তাদের পুরো পরিবার অয়নের বিয়েতে এসেছে।
রাহি আর রিফাতকে দারুন দেখতে লাগছে।
অনুষ্ঠানে রাহি খেয়াল করে রিফাতের দিকে অনেক মেয়ে হা করে তাকিয়ে আছে যা দেখে রাহির খারাপ লাগছে। তখনি রিফাতের এক বন্ধু তাকে ডাকে আর রিফাত ও রাহিকে রেখে তার কাছে যায়। বন্ধুর সাথে কথা বলে রিফাত রাহির তিকে আসছে তখন একটা মেয়ে হুটেকরে রিফাতের সামনে চলে আসে আর রিফাতের হাত ধরে ।
রাহিরর এসব দেখে রাগ ওঠে যায়। রাহি তাড়াতাগি রিফাকের কাছে এসে রিফাতকে সেই মেয়ের সামনে থেকে টান দিয়ে নিয়ে যায়।
রিফাত: রাহি কি হয়ছে?
রাহি: ওই মেয়ে তোর হাত ধরলো কেনো?
রিফাত দেখছে রাহি রেগে আছে তাই আর একটু রাগানোর জন্য বলে….
রিফাত: হাত ধরছে তাই কি হয়ছে?
রাহি: ধরবে কেনো, আর তুই এতো সুন্দর হয়ে আইছিস কেনো সব মেয়ে তোর দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
রিফাত: দেখতে সুন্দর তাই তাকিয়ে থাকে বুঝছো।
এই বলে রিফাত রাদিকার কাছে চলে যায়।
রিফাতের কথা শুনে রাহি ফুসছে আর একা একা বলছে
রাহি: ফাজিল ছেলে,বদের হাড্ডি,খাটাশ,রাক্ষস।
রিফাত আর রাদিকা দূর থেকে রাহির কান্ড দেখে হাসছে।
কিছু সময় পর রিফাত দেখে রাহির কাছে একটা ছেলে আসে। রাহি তার সাথে অনেক হেসে কথা বলছে আর ছেলেটি ও হেসে কথা বলছে।
তারা কি কথা বলছে রিফাত শুনতে পাচ্ছে না তাই তার আরো রাগ হচ্ছে।
রিফাত রাগ কন্টোল না করতে পেরে রাহির কাছে যায় আর তাকে একটু দূরে এনে বলে…
রিফাত: ছেলেটা কে? যার সাথে এতো হেসে কথা বললি।
রাহি : আরে তুমি তো জানো আমি দেখতে অনেক সুন্দর তাই ছেলে না তো কথা বলবেই।
রিফাত: তুই কথা বললি কেনো?
রাহি রিফাতের প্রশ্নের উওর না তিয়ে সেখান থেকে চলে যাচ্ছিলো তখনি রিফাত রাহির হাত টেনে ধরে…
রিফাত: ফাজিল, সয়তানি মেয়ে উওর দিয়ে যা।
রাহি: বলবো না কি করবি তাই…
রিফাত: না বললে সবার সামনে তোরে কিস করবো রাজি তুই….
রিফাতের কথা শুনে রাহি চোখ বড় করে তাকায়।
রিফাত: বলবি নাকি কিস করবো।
রাহি: বলতেছি।
রিফাত: বল।
রাহি: ওই আমার স্কুলের ফ্রেন্ড অনেকদিন পর আজ দেখা হলো তাই কথা বলছি।
রিফাত: আচ্ছা।
বিয়েতে সবাই অনেক আনন্দ করছে। রাহি আর রিফাত বসে সবার নাচ দেখছে তখন অয়ন বলে…
অয়ন: আজ রাহি আর রিফাত দুজন দুজনের জন্য কিছু বলবে মাইকে সবার সামনে।
রাহি: আমি বলবো না।
অয়ন: ভাবি একটু বলেন…
অনেকক্ষন বলার পর রাহি রাজি হয়।
রিফাত মাইক হাতে নিয়ে রাহির দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে….
আমার জীবনে আসার জন্য…
তোমায় অনেক ধন্যবাদ।
তুমি না আসলে হয়তো জীবনের মানেটা বুঝা হতো না।
তুমার সাথে কাটানো সবটুকু সময় আমার কাছে জীবনের সবচেয়ে ভাল সময়।
তোমার বলা কথাগুলো আমার কাছে মধুর মতো।
প্রিয় তুমি জানো না তুমি আমার জীবনে বেঁচে থাকার কারন।
তোমার আমার প্রতি ভালবাসা,কেয়ার,বিশ্বাস গুলো আমার অনেক ভাল লাগে।
আমার কোনো বোকামির জন্য যখন আমার ওপর রাগ করো আমার অনেক ভাল লাগে।
তোমায় জ্বালাতন করতে আমার অনেক ভাল লাগে।
তোমার রাগ আমার অনেক ভাল লাগে।
তাইতো অনেক সময় ইচ্ছা করে তোমার রাগ ওঠায়।তোমার রাগি মুখটাকে আমি অনেক ভালবাসি প্রিয়।
তোমায় প্রিয়ো অনেক ভালবাসি।
সারাটা জীবন তোমার দুই হাতটা ধরে তোমার সাথে কাটাতে চাই।
মৃত্যর মূর্হতে ও তোমায় পাশে চাই প্রিয়।
সারাজীবন পাশে থেকো প্রিয় ।
রিফাতের কথা শুনে সবাই জোরে তালি দেয়। রাহি অবাক হয়ে রিফাতের মিকে তাকিয়ে আছে।
অয়ন: ভাবি আপনার পালা…
রাহি মাইক হাতে বলতে থাকে…
আমি এমন একজন মানুষ আমার জীবনে চেয়েছিলাম
যে আমার অগোছালো জীবনটাকে ভালবেসে গুছিয়ে নিবে।
যার ভালবাসা পেয়ে তার সাথে শুধু বাঁচতে ইচ্ছে হবে।
যাকে আগলে ধরে আমার জীবনের প্রতিটা মূর্হত কাটবে।
এমন একজন মানুষ যে আমার পাগলামো গুলো ভালবেসে বরন করবে।
আমার ভাল খারাপ সব গুন ভালবাসবে।
আমার রাগ গুলো সহ্য করবে।
আমার অভিমান গুলো সবসময় ভাঙ্গাবে।
আমার সব আবদার গুলো তার স্বার্থ মতো পূরন করার চেষ্টা করবে।
আমি তেমন একজন মানুষ পেয়েছি।
সে হলো আমার প্রিয় ভালবাসা।
রাহির কথা শুনে সবাই তালি দেয়।
রিফাত রাহির দিকে বুক ভরা ভালবাসার চোখে তাকিয়ে আছে।
অয়ন: দুজনের মধ্যে অনেক ভালবাসা
দোয়া করি সব সময় যেনো থাকে।
পুরো সময় অনেক আনন্দ করে সবাই বাসায় চলে আসে।
কয়েক মাস পর….
রাহি: রিফাত জান ঘুম থেকে ওঠো।
রিফাত ঘুম থেকে ওঠে বিছানায় হেলান দিয়ে বসে।
রাহি: তোমার চা।
রিফাত চা জাতে নিয়ে বলে আজ তুমি চুমুক দিয়ে দেওনি তাই মিষ্টি কম লাগছে।
রাহি: আজ অন্য মিষ্টি দিবো তাই।
রিফাত: কি মিষ্টি?
রাহি প্রেগন্যান্সি কিট রিফাতের চোখের সামনে ধরে।
রিফাত তা দেখে অনেক খুশি হয়।
রাহিকে জরিয়ে ধরে বলে…
রিফাত: আজ আমি অনেক খুশি তোমায় বলে বুঝাতে পারবো না ।
রাহি : আমি ও।
রিফাত বাসার সবাইকে মিষ্টি খাওয়ায় আর খুশির কথা বলে।
রিফাত: রাহি আমাতের মেয়ে হলে নাম রাখবো রাহিকা আর ছেলে হলে রাহিত।
রাহি: আচ্ছা।
চার বছর পর……
রাহি: আমি চলে যাবো থাকবো না আর তোমাদের সাথে সবসময় আমাকে রাগিয়ে মজা নাও তোমরা।
রিফাত: রাহিকা মামুনি কি করছো তুমি।
[রাহিকা রাহি আর রিফাতের মেয়ে ]
রাহিকা: পাপা আমি মামুনির সাথে মজা করেনি।
রাহি: পাপার সামনে ভাল সাজা হইছে বুঝি। তোমার মেয়ে না খেয়ে আমাকে রাগিয়ে মজা নিচ্ছে।
রিফাত: মামুনি এমন করে না বুঝছো।
রাহিকা: ওকে পাপা।
রাহি: আমি চলে যাবো।
রিফাত: তুমি কোথাও যেতে পারবে না কারন….
রিফাত আর রাহিকা এক সাথে বলে কারন #আমার_খাঁচায়_তুমি_বন্দি।
রাহি দুজনের কথা শুনে দুজনকে বুকে জরিয়ে নেয়।
ভালবাসা নিয়ে বেচেঁ থাকুক ভালবাসার মানষগুলো।
……সমাপ্ত…