আমার হিয়ার মাঝে পর্ব-০৩

0
317

#আমার_হিয়ার_মাঝে
লেখিকা: তাহসীন নাওয়ার রীতি
পর্ব:০৩

স্টেজের কাছেই একটি চেয়ারে হেলান দিয়ে থম মে/রে বসে আছে আশ্বিন। তার পাশেই রোদ্দুর চরম বিরক্তি নিয়ে বসে দাঁত দিয়ে নখ কে/টে যাচ্ছে। পাশ ফিরে রোদ্দুরের এমন কাজ দেখে আরো বেশি রাগ হচ্ছে তার।
‘কোন যুক্তি দিয়ে তোর চাচা উনার কলেজে পড়ুয়া মেয়ের জন্য এমন এক বয়স্ক পাত্র খুঁজে আনলেন, বোঝা আমাকে। দেশে ছেলের কি অভাব হয়েছিলো নাকি?’
‘আমাকে জিজ্ঞেস করে কি লাভ? যার বিয়ে সে তো নিজেই এই বিয়েতে সবার আগে রাজি। বাবা মেয়ে টাকা ছাড়া আর কিছু বুঝে?’

রোদ্দুরের কথায় রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে আশ্বিনের। কোন ভুলে যে আন্টির কথায় রোদ্দুরের সাথে তার চাচাতো বোনের বিয়েতে এসেছিল সে! গান বাজনা, মেহমান আপয়ানক কোন কিছুই নেই এখানে। স্টেজে বসে আছে রেণু আর তার বর মশাই। রেণুর দুই প্রান্তে বসে তার মা আর খালা এমনভাবে কান্না আহাজারি করে যাচ্ছেন যেন এটা বিয়ে বাড়ি নয়, কোন শো/ক বাড়ি।
‘মেয়ের বিয়ে হচ্ছে, তাই চাচীর কান্না করা যুক্তিপূর্ণ। কিন্তু তার খালার এভাবে আহাজারি করার কি আছে? মার চেয়ে মাসির দরদ বেশি নাকি?
‘আরে কোনো দরদ নেই। রেণুর খালার মতো তার খালাতো বোন রুমে বসে কান্না করছে। আফসোসে।
‘কিসের আফসোস?’
‘এতো ভালো একটা পাত্র নিজের মেয়ের জন্য না পাওয়ার আফসোস।’
মাথা ঘুরে উঠলো আশ্বিনের। এ কেমন পরিবারে বিয়ের দাওয়াত খেতে এসেছে! এখন বুঝতে পারছে রোদ্দুর কেনো কখনও তার চাচার বাড়ি আসতে চাইতো না।

কথায় আছে অল্প শোকে কাতর আর অধিক শোকে হয় পাথর। আশ্বিন ভালোভাবে বুঝে গিয়েছে আর কিছুক্ষণ এখানে থাকলে অধিক শোকে পাথর হতে তার আর বেগ পেতে হবে না। তাই জীবন বাঁচাতে এখান থেকে কেটে পড়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
‘রোদ চল বাসায় যাবো। এখানে থাকা আমার পক্ষে আর সম্ভব না।’
‘আমি তো আগেই বলেছিলাম। তখন আমার কথা শুনলি না। চল এখন, চাচা দেখে ফেলার আগেই পালিয়ে যাই।’
আশ্বিন আর রোদ্দুর মিলে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে চোরের মতো করে ধীরে ধীরে গেটের কাছে চলে আসলেও শেষ রক্ষা আর হলো না তাদের। কোথা থেকে যেন রোদ্দুরের চাচা এসে হাজির হয় তাদের কাছে।
‘এই এই কোথায় যাচ্ছিস তোরা রোদ্দুর?’

পলাতক আসামীর ন্যায় দুজন একে অপরের দিকে অসহায়ভাবে তাকিয়ে থাকে। যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই রাত হয়। যার থেকে আড়াল করে দুজন পালিয়ে যাচ্ছিল এখন তিনিই তাদের কাছে এসে হাজির।
‘আশ্বিনকে নিয়ে একটু আশেপাশে ঘুরতে যাচ্ছিলাম চাচা।’
‘এখন কি ঘুরার সময়? দেখছিস না বরপক্ষ এখনই খেতে বসবে। তাদের সবাইকে খাবার সার্ভ করবেটা কে? আমার কি টাকা বেশি হয়েছে নাকি যে আলাদা মানুষ রাখতে হবে সবাইকে খাবার বেড়ে দেওয়ার জন্য? আয় তোরা দুইজন কাজে সাহায্য করবি। জোয়ান ছেলে কাজ না করে কিভাবে বসে আছে! আয় এদিকে।’
রোদ্দুর আশ্বিনের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। আশ্বিন কটমট দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রোদ্দুরের দিকে।
শেষে বাধ্য হয়েই চাতক পাখির মতো দুজন মিলে চাচার দিকে তাকিয়ে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে।

‘ভালো মতো শুনে রাখ রোদ্দুর, বরপক্ষের মানুষ কিন্তু খেতে বসলেই বেশি বেশি গোশত চায়। তাই গোশত দেওয়ার আগে তোরা অনেক সাবধান থাকবি। আগেই সবার প্লেটে বেশি করে নিরামিষ দিয়ে দিবি। তারপর গোশত চাইলে এক পিস করে দিবি, বেশি দিবি না কিন্তু। মুরুব্বী মানুষ হলে আর এক পিস বেশি দিতে পারিস। বুঝেছিস তো? আমার কি টাকা পয়সা বেশি হয়ে গিয়েছে নাকি যে সবাইকে পেট পুরে খাওয়াতে হবে?’

রোদ্দুর তার হাতের উপর থাকা পোলাওয়ের বাটির দিকে নির্লিপ্ত ভাবে তাকিয়ে আছে। মনে মনে খুব আফসোস হচ্ছে তার। এমন এক কি/প/টা চাচা তার কপালেই কেনো জুটলো?
‘চাচা, আমি বলি কি? কি দরকার ছিল এতো সব আয়োজন করার? এর পরিবর্তে কিন্তু আমরা চা বিস্কুট দিয়েই বরপক্ষ আপ্যায়ন করতে পারতাম।’
‘একদম মনের কথাটাই বলেছিস তুই রোদ্দুর। আমি তো তাই ভেবেছিলাম কিন্তু তোর চাচী আমার কথা শুনলো কোথায়। যাই হোক, এই নিয়ে তোদের সাথে পরে কথা হবে। এখন তোরা কাজে লেগে পড়।’
কথাগুলো বলেই চাচা স্থান ত্যাগ করলেন যেন এক ব্যাস্ত পথিকের মতো। আশ্বিন বিস্ময়ের শীর্ষে পৌঁছে স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছেন চাচার যাওয়ার দিকেই।
পৃথিবীতে কতো বিচিত্র সব লোকের বসবাস, উনাকে না দেখলে হয়তো তা জানা হতো না আশ্বিনের।
—————-

স্কুটার থেকে নেমে সামনের বিয়ে বাড়ির দিকে একবার নজর দিতেই কপালে ভাঁজ পড়লো অধরার। না আছে কোন মরিচ বাতির সাজসজ্জা, আর না আছে কোন বিয়ের গেইট। ভালোভাবে কান খাড়া করে শুনলে ভেতর থেকে দুজন মহিলার ভ্যা ভ্যা করে কান্না ছাড়া আর কোন আওয়াজও শোনা যাচ্ছে না।
শুধু অধরা না, অধরার ন্যায় অবাক হয়েছে বাকি সবাই। ইশা হতাশ হয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে,
‘আমার মনে হচ্ছে আমরা ভুল ঠিকানায় চলে এসেছি।’
‘ভুল না। এটাই রেণুর বাসার ঠিকানা।’
অনিকের প্রতিউত্তরে অধরা ছাড়া বাকি সবাই তার দিকে ফিরে তাকায়। অধরার যেন সেদিকে হুশ নেই। সে বেখেয়ালি ভাবে একনজর আশেপাশে তাকিয়ে নিজের ব্যাগ থেকে সানগ্লাস বের করে তা চোখে পড়ে নেয়।
‘টেনশন নট গাইস! আমরা তো এসেছিই সবাইকে বিয়ে বাড়ির আসল অর্থ বোঝাতে। চলো সবাই।’

সেই প্রথম থেকেই রেণু আর তার বর মশাই স্টেজের উপর বসে আছে পুতুলের ন্যায়। সকাল থেকে একভাবে বসে থেকে মায়ের এভাবে ম/রা কান্না দেখতে দেখতে এক প্রকার বিরক্তি এসে ভর করেছে রেণুর মাঝে। পাশে বসে থাকা বর কেও সহ্য হচ্ছে না তার। একটা হামি তুলে দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে।
হঠাত কোথা থেকে যেন মিউজিক অন হয়ে যায়। মিউজিকের শব্দ শুনে সবাই তার কাজ বন্ধ করে শব্দের উৎস খুঁজতে থাকে। রেণুর বাবা হন্তদন্ত হয়ে স্টেজের দিকে এগিয়ে এসে,
‘এই গান বাজনা আবার কে শুরু করলো? বন্ধ করো এসব।’
কে শোনে কার কথা? কেউ তো জানেই না এই গান কোথা থেকে আসছে। ঠিক তখনই গেইট দিয়ে অধরা ইশা জারিফ আর সাদমান প্রবেশ করে। তারা একে একে সানগ্লাস পড়ে ড্যাম কেয়ার ভাবে হেঁটে স্টেজের উপর উঠে আসে।

পরিচিত মুখ না হওয়ায় প্রথমে তাদের দিকে সবাই কিছুটা বিস্মিত নয়নেই তাকিয়ে থাকে। তবে সকলের কাছে অপরিচিত হলেও রেণু তাদের দেখে ঠিকই চিনে ফেলে। সে কিছু বুঝে ওঠার আগেই অনিক হিরোর মতো গেইট দিয়ে প্রবেশ করে। মুহূর্তেই অনিককে দেখে রেণু চরভ বিভ্রান্তিতে পড়ে যায়। মাথায় ঘুরতে থাকে একটি প্রশ্ন, তবে কি তারা বিয়ে ভাঙতে চাইছে? কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে অনিক সহ বাকি সবাই স্টেজে উঠে ডিজে ডান্স শুরু করে দেয়।
সারাজীবন ধরে যেই অনিককে চুপচাপ লাজুক শান্তশিষ্ট ছেলে হিসেবে জেনে এসেছে, সেই ছেলের এমন সব কাজ তাক লাগিয়ে দিয়েছে রেণুকে।

রোদ্দুর আর আশ্বিন এতোক্ষণ ধরে চরম বিরক্তি নিয়ে মেহমানদারী করায় ব্যস্ত থাকলেও হঠাত গানের শব্দে দুজন স্টেজের কাছে এসে চমৎকৃত হয়। তিনজন ছেলে আর দুজন মেয়ে রেণু আর তার বরকে কেন্দ্র করে ডান্স করছে।
‘আরে বাহ! এখন না এটা বিয়ে বাড়ির মতো লাগছে। বাই দ্য ওয়ে, এরা কে?’
রোদ্দুর প্রশ্নবিদ্ধ চোখে তাকায় আশ্বিনের দিকে। কিন্তু আশ্বিন স্তব্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে স্টেজের উপর নীল লেহেঙ্গা পরিহিত শ্যামবর্ণ মেয়েটির দিকেই। যার চোখ মুখে উপচে পড়ছে অসীম চাঞ্চল্যতা, সামনের বাঁকা দাঁতের হাসিটি যেন তার মায়াবী রূপকে প্রকাশ করতে ব্যস্ত।

রেণুর বাবা সেই কখন থেকে চিৎকার চেঁচামেচি করেই যাচ্ছেন অধরাদের নাচ গান বন্ধ করার জন্য। কিন্তু কেউ শুনতে পারছে না উনার কথা। কেননা গানের শব্দের প্রতিধ্বনিতে চাচার কথা শোনাই বড় দায়। আর, রেণু নিছক কল্পনা ভেবে গোল গোল করে তাকিয়ে দেখছে অনিককে। কিভাবে বন্ধুদের নিয়ে সাবলীল ভাবে নেচে চলেছে তারা গানের তালে তালে,
‘আরে ফুল কলি রে ফুল কলি
ফুল বানাইয়া কই গেলি?
গন্ধ পাইয়া টাকার নেশায়
আমায় থুইয়া দৌড় দিলি।
চোখেতে ধুলা দিয়া,বড়লোক করলা বিয়া
এই জ্বালা তো মিটাবো আমি
ডিজে গানের বেজ দিয়া। আর বলবো,
আইজ আমার গার্লফেন্ডের বিয়া।’

সকাল থেকে এমন পানসে ভাবে বিয়ের আয়োজন হওয়ায় দাওয়াতে আসা কম বেশি সবাই খুবই বিরক্ত ছিলেন। তাই তো নাচ গান বিনোদন দেখে যুবক সবাই উঠে আসে স্টেজে অনিকের সাথে নাচে যোগ দিতে।
এদিকে সাতচল্লিশ বয়সি বর মশাই ও ভুলে গিয়েছেন নিজের বয়স এবং ওজন। চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে নাচতে শুরু করে অনিকের পাশে। শুধুমাত্র রেণুই বসে আছে স্তব্ধ হয়ে। এসব কি হচ্ছে, সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে তার।
হঠাত অধরা বুঝতে পারলো স্টেজটা যেন কাঁপতে শুরু করেছে। বিষয়টা সুবিধার না লাগায় সে সবাইকে নিচে নেমে আসতে ইশারা করে নিজেও নেমে যায়।
অধরা ইশা জারিফ সাদমান আর অনিক নেমে যেতেই হঠাত ধুরুম করে এক বিকট শব্দে চমকে উঠে সবাই। অনেক মানুষের ওজনে বর মশাইকে নিয়েই স্টেজ ভেঙে পড়েছে। অধরা সহ সবাই প্রথমে অবাক হলেও পরমূহুর্তে রেণুর বরের অবস্থা দেখে তারা মুখ টিপে হেসে উঠে।
এদিকে রোদ্দুর আর আশ্বিন এসব কর্মকান্ড হা করেই দেখে যাচ্ছে। কিভাবে ঝড়ের বেগে এসব কিছু ঘটে গিয়েছে সব কিছুই মাথার উপর দিয়ে চলে গেলো।

বরের এমন অবস্থা দেখে রেণুর বাবা মা দৌড়ে এসে উনাকে উঠানোর চেষ্টা করতে থাকে।
‘হায়হায়, জামাই বাবা। ঠিক আছেন আপনি? এই! কারা এই নাচ গান শুরু করেছে ধরে নিয়ে আয় তাদের।’
চাচার হুংকারে অধরা চমকে উঠে অনিকের দিকে ফিরে,
‘সবাই দৌঁড়!’
‘না। এক মিনিট দাঁড়া সবাই।’
অনিক এক নিমেষে দৌড়ে কোথা থেকে যেন একটা প্যাকেট নিয়ে এসে রেণুর কাছে এসে,
‘শা/ক/চু/ন্নি, মুখের ময়দা কম হয়ে গিয়েছে তোর।’
কথাটা বলতে দেরি হয়েছে কিন্তু রেণুর মাথায় ময়দার প্যাকেট ঢালতে দেরি হয়নি অনিকের।

অনিকের এমন কাজে অধরা হেসে উঠে তাকে ডাক দিতেই সবাই গেটের দিকে দৌড়ে পালাতে শুরু করে। রেণুর বাবা সেদিকে তাকিয়ে রোদ্দুরকে স্বজোরে হাক দেয়।
‘রোদ্দুর! ধর এদেরকে।’
রোদ্দুর বেচারা এতোক্ষণ যেন আকাশ থেকে পড়ার মতো চমকে ছিলো। চাচার কথায় ধ্যান ফিরে অনিককে ধরার জন্য দৌড়ে চলে যায়। কিন্তু এই চঞ্চল প্রকৃতির অধরাদের ধরা কি এতোই সহজ নাকি? ফড়িং এর মতো লাফিয়ে এদিক ওদিক ছুটে যাচ্ছে সবাই।

আচমকা অধরার সামনে আশ্বিন এসে দাঁড়াতেই অধরা তার সাথে এক ধাক্কা খেয়ে পড়ে যেতে নিতেই আশ্বিন তার কোমর ধরে ফেলে। ভয়ে কুঁকড়ে উঠে পিটপিট করে চোখ মেলে আশ্বিনকে দেখে থমকে যায় সে। ডগর ডগর চোখে দুজন যেন তাকিয়ে আছে দুজনের দিকেই। মুহূর্তেই যেন চারপাশের সবকিছু হয়ে উঠে নিরব নিস্তব্ধ!

‘অধরা, জলদি চল।’
জারিফের ডাকে হুশ ফিরে আসে অধরার। দুহাত দিয়ে এক ধাক্কা দিয়ে আশ্বিনকে দূরে ঠেলে দিয়ে দৌড়ে চলে আসে সে। যেতে যেতে মাঝপথে একবার পিছু ফিরে দেখে আশ্বিন এখনও ঠাঁই দাঁড়িয়ে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে তার দিকেই।
স্কুটারের আয়নায় যতক্ষণ দেখা যায়, অধরা দেখে যাচ্ছিল আশ্বিনকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সবাই অনেক দূরে চলে আসে সেখায় থেকে।
—————–

‘অধরা! অধরা উঠো। আর কতক্ষণ ঘুমাবে তুমি?’
পিটপিট করে চোখ খুলে আশ্বিনকে পাশে বসে থাকতে দেখে অধরা। আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নেয় সে। বিয়ের পর আজ তার এই বাড়িতে প্রথম দিন, সেই হিসেবে তার উচিত ছিল সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে মামুনির কাজে সাহায্য করা। কিন্তু বরাবরই অভ্যাসগত কারণে সকালে ঘুম ভেঙে না তার। একটা হামি তুলে আশ্বিনের দিকে তাকিয়ে,
‘সকাল হয়ে গিয়েছে?’
‘কি মনে হয় তোমার? নয়টা বাজতে চলেছে এখন। অর্ধেক দিন শেষ আপনার ঘুমের ঘোরেই।’
‘তো কি হয়েছে? আমি যখন ঘুম থেকে উঠি তখনই সকাল হয়। এতো সাত সকালে উঠে আমি কি করবো? আমার কি স্কুল আছে নাকি?’
কথাগুলো বলে অধরা খাট থেকে নেমে হেলে দুলে ওয়াশরুমে চলে যায়। আশ্বিন খটকা লাগা চোখে তাকিয়ে থাকে তার যাওয়ার দিকে। কি বললো এটা অধরা? সে কি জীবনেও কোন ব্যাপারে সিরিয়াস হবে না?
মা বাবা নাকি তাদের ছেলের বউ হিসেবে সংসারী মেয়ে খুঁজে। তবে তার মা এই অধরার মাঝে কোন সাংসারিক মনোভাব দেখলো কে জানে? একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুম থেকে বেরিয়ে যায় আশ্বিন।

–চলবে(ইনশাআল্লাহ)