এক্স গার্লফ্রেন্ড যখন বেয়াইন পর্ব-০৩

0
432

#এক্স_গার্লফ্রেন্ড_যখন_বেয়াইন
#পর্ব_৩
#লেখক_মোঃ_আঃ_আজিজ
হেডফোন কানে নিয়ে বসে আছি বাসের মধ্যে। হঠাৎ চোখ গেলো বাসের দরজার দিকে। একটা মেয়ে,,, মাশাল্লাহ দেখতে একদম দুধে-আলতা। মেয়েটি দেখি আমার সিটের দিকেই এগিয়ে আসছে। আর আমি অপলক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে রয়েছি। আমার সামনে দাড়িয়ে মেয়েটি বললো,,,,
মেয়েটি– ভাইয়া জানালার পাশের সিট টা আমার যদি একটু এই পাসে আসতেন।
আমি– ওহ হে সরি আপু,,, আসুন বসুন।
— আরে সরি বলছেন কেনো ঠিক আছে।
— হুম ধন্যবাদ। আচ্ছা আপনি কোথায় যাবেন আপু?
— সিরাজগঞ্জ! আপনি?
— আরে আমিওতো সিরাজগঞ্জেই যাচ্ছি।
— বাহ ভালোই হলো গল্প করতে করতে যাওয়া যাবে। তা আপনি সিরাজগঞ্জের কোথায় যাবেন?
— উল্লাপাড়া! আপনি?
— সিরাজগঞ্জেই।
— ওহ! আপনার নাম টা কিন্তু জানা হলো না আপু।☺☺
— আমি সামিরা,,, অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্রী। আপনি?
— আমিও অনার্স ২য় বর্ষে।😍 আমি আজিজ। আমরা যেহেতু একই ক্লাসে তাহলে আমরাতো তুমি করেই বলতে পারি,,, তুমি কি বল সামিরা☺
— অবশ্যই কেনোনা🙈🙈
— আচ্ছা সামিরা তুমি কি সিঙ্গেল,,?
— কেনো বলোতো😒
— না এমনি শুনতে চাইলাম।
— নাহ আমার বয়ফ্রেন্ড আছে😊 আর তুমি?
— কি আর বলবো দুঃখের কথা😭
আমি বর্তমানে ঝুলে আছি😂
— ঠিক তোমার কথা বুঝলাম না।
— মানে ৩ মাস আগে ব্রেকআপ হয়েছে। কাল রাতে আবার এক্স এর সাথে কথা হয়েছে।
— ওহ তা কি কথা বললে কাল রাতে?
–শুনবে?
— হুম বলো।
— কথা গুলো শুনে যদি তোমার হাসতে হাসতে কাপর খুলে যায় তাহলে আমি কিন্তু দায়ী নই😂😜
— ধুর ফাজলামো কর নাকি🙈বলোতো।
— তাহলে শোন,,,,,( কাল রাতের সব কথা গুলো সামিরাকে বল্লাম। মেয়েটা হাসতে হাসতে যেনো গরাগরি খাওয়ার মতো অবস্থা😂 আমার সব কথা শুনে সামিরা হাসতে হাসতে বললো)
সামিরা– আজিজ তুমি তাহলে ভাত খোর😂😂
— তুমিও শুরু করলে নাকি😢
— আরে নাহ এমনি মজা করলাম😝
— হুম😒😏
— আচ্ছা আজিজ একটা কথা বলবো।
— হুম বলো।
— তুমি যদি ভাত খোর হও,,,,, তাহলে তুমি এত চিকন কেনো? তোমায় তো দেখে মনে হয় না তুমি ভাত খোর😂( কথাটা বলে মুখে হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে হাসতে হাসতে)
— ধুর ফাজলামো করতেছো আমার সাথে। যাও তোমার সাথেও কথা নাই।
— আরে আরে রাগ কর কেনো আমিতো মজা করলাম।
— হুম। আচ্ছা সামিরা ভাত খোর কাকে বলে বলতে পারবে। আমি কিন্তু এর মানেটা বুঝলাম না।😒
— হা হা হা ওটা তোমার গার্লফ্রেন্ড এর কাছেই জিজ্ঞেস কইরো আমি বলতে পারলাম না।
( মেয়েটার সাথে কথা বলতে বলতে তার গন্তব্য স্থানে পৌঁছে গেলাম। বাসের মধ্যে দুজন যতটা সময় এক সাথে ছিলাম সারাক্ষণ সামিরার মুখে হাসি ছিলো। যাওয়ার সময়)
সামিরা– আজিজ তুমি কিন্তু খুবই মজার একটা মানুষ। যতক্ষণ তোমার সাথে ছিলাম খুবই ইনজয় করলাম মুহুর্ত টা। আর তোমার কথা শুনে যত টুকু বুঝলাম জান্নাত তোমাকে খুবই ভালোবাসে। আর অভিমানের বসে শুধু তোমার সাথে এমন ব্যবহার করেছে।
— হুম আমি জানি।
— আমি কিন্তু তোমার গার্লফ্রেন্ড কে চিনি।
— কি বলো কি ভাবে? 😱😱
— সময় হলেই জানতে পারবে। আল্লাহ হাফেজ! ভালো থেকো আজিজ আর জান্নাত এর সাথে আবার ভাব করে নিয়ো।
— আল্লাহ হাফেজ সামিরা। কিন্তু তুমি কি ভাবে জান্নাতকে চেনো সেটা তো বলে যাও।
(যাহ মেয়েটা চোলে গেলো। ধুর ভালো লাগে না আবার একটা রহস্যের মধ্যে রয়ে গেলাম। আবার ওর নামটা ছাড়া কিছুই জানা হলোনা। এমন কি ফোন নাম্বার টাও নেওয়া হলো না।
কথা গুলো ভাবতে ভাবতে আমার গন্তব্য স্থানে পৌঁছে গেলাম। আমার শহর উল্লাপাড়া তে। বাস থেকে নেমে একটা সিএনজি নিয়ে সোজা বাড়িতে। দরজার সামনে এসে কলিং বেল বাজাতেই আম্মু এসে দরজা খুলে দিলেন)
আম্মু– কিরে এত তারাতাড়ি এসে গেলি।
আমি– কোই আসলাম এত দিন পর একটু আদর যত্ন করবে তা-না বলসো এত তারাতাড়ি চলে আসলাম। আর এখন কত বাজে সে দিকে খেয়াল আছে তোমার আম্মু,,,,, বিকাল ৫:৩০টা বাজে।
— আচ্ছা বাবা আমার ভুল হয়ে গেছে মাফ কর আমাকে। এখন যা ফ্রেশ হয়ে এসে খাবি কিছু।
— হুম! ভাইয়া কোথায়??
— তোর ভাইয়া তার রুমেই আছে।
ওকে আম্মাজান আমি গেলাম। বলেই সোজা আমার রুমে চলে গেলাম। তারপর ফ্রেশ হয়ে খাওয়া করে ভাইয়ার রুমে গেলাম। গিয়ে,,,,,,,,
আমি– কি করছিস ভাইয়া।
ভাইয়া– আরে আজিজ তুই? তুই কখন আসলি আয় এদিকে আয় বস এখানে।
— হুম! ভাইয়া শুনলাম কাল নাকি তোর জন্য মেয়ে দেখতে যাবে।
— হা,,,, সেই জন্যই তো তোকে নিয়ে আসলাম।
— কিন্তু তুই নাকি একটা মেয়ের সাথে রিলেশন করিস। তাহলে তার কি হবে?
— আরে বোকা তার আবার কি হবে। ওর সাথেই তো বিয়েটা ঠিক হলো। আমার পছন্দের মানুষের সাথে☺
( ভাইয়া তোর সাথে তো তোর ভালোবাসার মানুষ টার বিয়ে হচ্ছে। কিন্তু আমার যে কি হবে আল্লাহ ভালো জানে,,, মনে মনে)
কিরে এত কি ভাবিস?
আমি– কোই কিছু না তো।
— হুম তা তোর জান্নাতুল এর কি খবর? এখনো কি তোরে ঝাড়ির উপর রাখে নাকি।
— ধুর তুই যে কি বলিস না ভাইয়া।
— মেয়েটা কিন্তু খুব ভালো।
— হয় তোরে কইছে মেয়ে টা ভালো। তুই কি ওরে দেখছিস নাকি।
— দেখি নাই তবে কথাতো বলছি।
— তুই থাক তোর কথা নিয়ে আমি গেলাম এখন ঘুমাবো আবার ডাকতে যাসনে যেনো। কাল কখন যাবি ভাবিকে দেখতে তাই বল।
— সকাল ১০টার দিকে।
ওকে বায়। বলেই আমার রুমে চলে আসলাম। সারা দিন অনেক ধকল গেছে এখন একটু ঘুমাই।
হঠাৎ করেই ঘুমটা ভেঙে গেলো,, টেবিলের দিকে তাকিয়ে দেখি জান্নাত। জান্নাত সাজগোছ করতেছে। আমি তো দেখেই অবাক। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক,, চুল গুলো খোপা করা,, পরনে একটা কালো সারি। আমি দেখে যেনো মুগ্ধ হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার তাকিয়ে থাকা দেখে জান্নাত বল্লো।
জান্নাত– কি দেখো অমন করে?
আমি– তোমাকে,,,,,, তোমাকে একদম পরীর মতো লাগছে।
— যাহ দুষ্টু ওই ভাবে কেউ বলে। আমার বুঝি লজ্জা করে না।
— আমার কাছে আবার কিাের লজ্জা সোনা। আসো কাছে আসো আজ তোমার সব লিপস্টিক খাবো। (বলেই হাত ধরে একটানে বুকে নিয়ে আসলাম)
— এই এই কি করো।
দেখো কি করি। বলেই জান্নাতের ঠোঁটে আমার ঠোঁট চোখ বুজে ডুবিয়ে দিলাম।
**কিছুক্ষণ পর**
— একি জান্নাত তোমার ঠোঁট বালু বালু লাগে কেনো,,,,? কি হলো কথা বলোনা কেনো। জান্নাত তোমার লিপস্টিক পানি পানি লাগে কেনো। (চোখ খুলে তাকিয়ে দেখি জান্নাত নেই😭 আর আমার সামনে রইছে দেয়াল। আর ওটা লিপস্টিক না আমার ঠোঁট কেটে রক্ত বের হচ্ছে😢 রক্ত দেখে দিলাম এক চিল্লানি,,, এক চিল্লানিতে পুরো বাড়ি আমার রুমের মধ্যে)
ভাইয়া– কিরে কি হইছে এত জোরে চিল্লাস কেন। একি তো ঠোঁট কাটলো কেমনে?
আম্মু — হুম কিরে এতখানি কাটলো কি ভাবে।
আব্বু– সত্যি করে বলতো কি ভাবে কাটলি। খাটে থেকে পরে টরে গেছিলি নাকি।
(একন এদের আমি কি বলবো যদি বলি সপ্নের মধ্যে জান্নাত কে চুমু দিতে গিয়ে দেয়ালের সাথে ঠোঁট ঘসেছি তাহলে তো মান ইজ্জত সব যাবে😭)
আমি– আসলে ভাইয়া আম্মু আব্বু আমি খাটে থেকে পরে গেছিলাম। তোমরা তো জানোই আমার ঘুমের মধ্যে এপাশ ওপাশ করার সভাব আছে।
— সাবধানে ঘুমাতে পারিস না।,,,,, সবাই বিভিন্ন রকম এর কথা বলে চলে গেলো। উফফ বাঁচলাম কি একটা কান্ড হয়ে গেলো বলুনতো। এই জান্নাত কি ঠিক মতো ঘুমাইতেও দেবে না। সপ্নের মধ্যে কত সুন্দর একটা ব্যবহার করলো কিন্তু সামনা সামনি,,,, ওরে বাবা একদম পেতনি। জান্নাত সবার সাথেই ভালো ব্যবহার করে শুধু আমার বেলায় এমনটা করে কেনো বুঝিনা। হয়তো ভালোবাসার মানুষ টার প্রতি একটু বেশিই অধিকার খাটাতে চায় তাই আমার সাথে এমন করে।
কথা গুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছি খেয়ালই নাই। ঘুম থেকে উঠে ফজরের নামাজ পরে খাওয়া করে রেডি হয়ে ভাইয়ার জন্য মেয়ে দেখতে চলে আসলাম।
তারপর যা দেখলাম মটেও তা দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। কারন তা হলো,,,,,,,,,,,,
চলবে,,,,,?
বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।