এক্স গার্লফ্রেন্ড যখন বেয়াইন পর্ব-১+২

0
1247

#এক্স_গার্লফ্রেন্ড_যখন_বেয়াইন
#পর্ব_১
#লেখর_মোঃ_আঃ_আজিজ

প্রায় তিন মাস পর এক্স এর প্রোফাইলে ডুকলাম। দেখলাম relationship status দিছে কিন্তু কার সাথে সেটা mansion করে নাই । দিলাম 😂 হা হা react। তারপর ফেচবুক থেকে বেরিয়ে এসে ছোট করে একটা ঘুম দিলাম। ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নিয়ে massenger এ গিয়ে দেখি উপরে লেখা আছে New Massege Request। id টার নাম Jannatul Ferdous। চিনতে আর বাকী রইলো না এটা আমার এক্স এর id। অবাক হলাম তার sms গুলো দেখে। আপনারা শুনলে বুঝতে পারবেন।
এক্স– কুত্তা, শুয়োর,, বানর, লুচ্চা লমপট কুলাঙ্গার হারামজাদা হারামি হনুমান হাঁদারাম গাঁজা খোর মদ খোর,, সিগারেট খোর, পান খোর, পানি খোর, বিড়ি খোর, ভাত খোর নুডলস খোর। যা যা বলা যায় সব বলছে।
— ওই কুত্তা তুই আমার status এ হা হা দিলি কেন রে। কুত্তার লেজ কি কখনোই সোজা হয় না। আর তুই এত দিন কোই ছিলিরে কুত্তা।
— তোরে একবার পাই তোর হাত পা ভেঙে দিবো আমার পোস্ট এ হা হা দেয়া না,,?
বাপরে বাপ এ কি ডেঞ্জারাস মাইয়ারে বাবা। একটা হা হা তেই এত কিছু ভাগ্য ভালো যে এর সাথে আমার ব্রেক আপ হয়ে গেছে। নইলে অবস্থা কেরোসিন বানিয়ে দিতো। আর তুই আমারে পাইলে তবেই না হাত পা ভাঙবি না পাইলে কেমনে হা হা বোকা মেয়ে কোথাকার😂😂।
আমি এসএমএস দিলাম
— কে আপনি আর এগুলা কি সব আবোল তাবোল কথা বোলতে আছেন,,? ( সঙ্গে সঙ্গেই রিপ্লাই)
— কুত্তা আমারে তুমি এখন চিনতে পারতেসো না তাই না,😡😬 দুই বছর প্রেম করে এখন বলতেছ আমি কে?
— সরি রং নাম্বার,।
— রং নাম্বার মানে আমি কি তোর সাথে ফোনে কথা বলতেছি নাকি রে বানর? 😡
— ওই ছেরি এত কথা বলিস কেনো,, যা তুই ব্লক।
You can’t massege or call them in this chat, and you won’t receive their massege or calls.
এখন কি যে ভালো লাগতাছে ভাই আপনাদের বলে বোঝাতে পারবনা☺☺* আমার সাথে ব্রেক আপ করার পর একটা বারের জন্যও খোঁজ নিস নাই। এখন আবার আমারে বলতেছ আমি ভাত খোর। জীবনে তো কিছু খাওয়াশ নাই আমারে আমার তাই সারা জীবন খেয়েগেলি ,,, নাকি দুইটা বছর খেয়ে গেলি আর এখন আমাকেই খোটা দিচ্ছিস আমি ভাত খোর। কথা গুলো ভাবতে ভাবতেই ফোনটা বেজে উঠল নাম্বার টা অচেনা। ধরলাম তারপর ওপাশ থেকে
— ওই কুত্তা তুই আমরে ব্লক মারলি কেন। শুয়োর তারাতাড়ি ব্লক টা উঠা বল্লাম কথা আছে তোর সাথে।
— ট্যুট ট্যুট ট্যুট,,,,,,,,,,, দিলাম ফোন কেটে আর নাম্বার টা ব্লাকলিস্টে। ওহ কি মজা রে মজা টানা দুই টা বছর জালাইচিস। তিন মাস যাবত তো ভালোই ছিলাম। কি জন্যে যে হা হা দিতে গেলাম ধুর ভাল্লাগে না। টানা দুই বছর জোলছি আর জোলতে চাই না। আবারো ফোন আসলো ধরলাম
— প্লিজ ফোনটা কেটো না তোমার সাথে আমার কথা,,,,,,,,,, ট্যুট ট্যুট ট্যুট আবরো কেটে দিলাম
তোর সাথে। তারপর,,,,,,,,,,,,,,
চলবে,,,,,?

#এক্স_গার্লফ্রেন্ড_যখন_বেয়াইন
#পর্ব_২
#লেখক_মোঃ_আঃ_আজিজ
.
–প্লিজ ফোনটা কাটবেনা তোমার সাথে আমার কথা আছে। (জান্নাত)
— কাটব তুই কি করবি? তোর সাথে আমার কোনো কথা নাই।😠
–ওই তুই আমারে তুই করে বললি?
— হে বল্লাম তুই কি করবি।
— কুত্তা তোর সাহস তো কম না, আমারে তুই করে বলিস,? তুই জানিস আমি কে?
— এহ আইছে তুই কে আমি জানি না হুম। তোর কোথায় কি আছে আমি সব জানি🙈 আর তুই কে আমি তা জানিনা।☺
— কি বললি তুই কুত্তা 😱?
— কি বলবো আবার,? তোরে আমি জানি তুই কে তাই বল্লাম।
–কুত্তা তার আগে তুই কি বললি?😠 আমার কোথায় কি আছে তুই সব জানিস😭😭
— আরে ওটাতো কথার কথা বল্লাম। তোর কোথায় কি আছে আমি কি ভাবে বলবো? তুই কি জীবেনে তোর হাতটা পর্যন্ত ধরতে দিছিস নাকি কুুত্তি।
–তুই আমারে কুত্তি বললি? তুই জানিস আমার আম্মু জীবনে আমায় কুত্তি বলে নাই। বানর শুয়োর কুত্তা যা তোর সাথে আবার ব্রেকআপ। জীবনে আমারে আর ফোন দিবিনা, আমার পোস্টে আর হা হা😂 দিবিনা। তোর সাথে আবার রিলেশনে জরাইতে চাইছিলাম কিন্তু তোর ভাষার জন্য তা আর হলোনা। হারাম জাদার ভাষা কি কুত্তা ফুট। ট্যুট ট্যুট ট্যুট,,,,,,,,,
হা হা হা হা হা,,,,,,,,, কথায় আছে না ভুতের মুখে রামনাম এর হইছে তাই😂😂😂 যে মাইয়া কুত্তা বানর শুয়োর লুচ্চা ছাড়া কোথাই বলে না সে নাকি আমার সামান্য কুত্তি বলার জান্য ব্রেকআপ করলো ভাবা যায় বিষয় টা😁
যাই হোক পরিচয় টা দিয়ে নেই,,,, আমি আজিজ। এবার অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আর যার সাথে এতক্ষণ কথা বলছিলাম ও হলো জান্নাত। আমার গার্লফ্রেন্ড,,,,, গার্লফ্রেন্ড বললে এখন ভুল হবে। বলতে হবে #এক্স_গার্লফ্রেন্ড। এবার ইন্টার ফাইনাল ইয়ারে ।
আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে ফোন টা আবার বেজে উঠল মেজাজ টা আবার খারাপ হয়ে গেলো। জান্নাত মনে করে নাম্বার টা না দেখেই ধরে বলতে শুরু করলাম,,,,,,,,
–ওই কুত্তি আবার ফোন দিলি কেন? তোর কি লজ্জা নাই খুব তো বললি আর ফোন দিবি না। সেই তো ঘুরে ফিরে আবার আমার কাছেই ফোন দিলি। বেলজ্জ বেপর্দা বেহায়া মহিলা কোথাকার।
(ওপাশ থেকে)
— কি আবোল তাবোল কথা বলিস বাবা? আমি তোর মা বলতেছি। তুই কি পাগল হইলি নাকি রে বাবা?
(ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি এমা এতো দেখি সত্যি আম্মুর নাম্বার। এখন কি বলবো আম্মরে😟😒)
— আম্মু সরি আম্মু। ভুল হয়ে গেছে।
— ভুল মানে তুই আমারে কুত্তী বেহায়া বেপর্দা বললি😭
–আম্মু আমি সত্যি তোমারে বলতে চাই নাই।
–তো কারে বলতে চাইছিলি?
— দাঁড়াও তোমারে সব বুঝিয়ে বলতেছি।
— দাড়াঁইতে পারবো না তুই বল।
–ওকে তাহলে শোন (সব বুঝিয়ে বল্লাম)
— ওহ ঠিক আছে বেশি চিন্তা করিসনে সব ঠিক হয়ে যাবে।
–হুম। তা কি জন্য ফোন দিয়েছিলে সেটা বল।
— একটা খুশির খবর আছে বাবা। তুই বাড়িতে চোলে আয় তোর ভাইয়ের জন্য মেয়ে দেখতে যাবো। দুই একদিনের মধ্যেই চলে আয়।
–ওহ আম্মু কি খবর দিলে গো ভাইয়ার বিয়ে আমি কালকেই বিকালের দিকে চলে আসতেছি। (খুশি হয়ে। কারন ভাইয়ার বিয়ে হয়ে গেলেই আবার পথ পরিষ্কার☺😊😀)
— ওকে আয়। সাবধানে আসবি কিন্তু।
ঠিক আছে আম্মি। বলেই ফোনটা কেটে দিলাম।
কাল আগে ভার্সিটি গিয়ে ছুটি নিয়ে আসতে হবে। তারপর বিকালের দিকে সোজা বাড়িতে। কিন্তু জান্নাতের জন্য খুব খারাপ লাগতেছে। যদিও ব্রেকআপ করে থাকি তবুও তো ভালোবাসি মেয়েটাকে। অভিমানের বসে শুধু ব্রেকআপ করা। ব্রেকআপ করলেও তাও তো মেয়ে টাকে একবার করে দেখতে পারি। কিন্তু বাড়িতে গেলে তাও দেখা হবে না।
জান্নাতের সাথে আমার পরিচয় আমার বন্ধুর বনের মাধ্যমে।
সেদিন ছিলো নাবিলার(বন্ধুর বোন) জন্মদিন।
আমিও যাই সেদিন বুলবুল (আমার বন্ধু) দের বাড়িতে। জান্নাতুল কে সেদিনই প্রথম দেখি। তারপর প্রপোজ প্রেম। আর প্রেম পর ব্রেকআপ হা হা হা কি একটা জিনিস তাই না। ওকে প্রোপজ টা আমি করেছিনাম আর ব্রেকআপ টা করলো জান্নাত।
পুরনো দিনের কথা গুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি মনেই নেই। সকালে ঘুম ভাঙলো ফজরের আজান এর আওয়াজ শুনে। নামাজ পরে এসে সব কিছু গুছিয়ে নিলাম। তারপর খাওয়া করে ভার্সিটিতে গেলাম। ভার্সিটিতে পৌঁছাতেই,,,,,,,,,,,,,
রিয়া– এই আজিজ এদিকে আসো (এর নাম রিয়া,,, খুবি গা ঘেষা একটা মেয়ে। আমাকে নাকি তার খুবই পছন্দ,,, কিন্তু আমাকে আর জান্নাত কে যখন এক সাথে দেখে তখন নাকি তার গা,,,,,,,, জলে যায়😂😂)
আমি– হে বলো,,,,,,, তবে যা বলবে একটু তারাতাড়ি বলবে। আজকে আমার বেশি সময় নাই।
–তোমার কবেই বা সময় থাকে গো সোনা। আমার কাছে একটু বসতে তোমার কি এমন সমস্যা হয় বলো তো (হাতটা ধরে আরেক হাতের নখ দাতে কামার দিয়ে)
— এই হাত ছাড়ও বলসি,,, হাত ধরলে কেন আবার।
— নাহ ছাড়বো না। ওই ছেমরি (জান্নাত) যখন তোমার হাত ধরে তখনতো কিছু বলনা আর আমি ধরলেই দোষ তাইনা। আর তোমাদের তো এখন ব্রেকআপ হয়ে গেছে হাত ধরলে কোনো সমস্যাই হবে না।
—(কোনো মতে হাত টা ছাড়িয়ে) সেটাই তো গো সোনামণি আমার গুলো গুলো টা রিয়া সোনা। তুমিই তো এখন আমার হাতটা ধরে থাকবে। কিন্তু ওইযে বল্লাম আমার আজ একটু কাজ আছে। কাজটা সেরে এসেই আমার হাতটা তোমাকে দিয়ে দিবো কেমন রিয়া সোনা(একবার ছুটি টা নিয়ে আসি তারপর তুই আময় কেমনে পাস তা দেখা যাবে😂😂 মনে মনে)
রিয়া যেনো খুশিতে অবাক। আমি যে ওর সাথে এত ভালোভাবে কথা বলবো বিশ্বাসই করতে পারে নাই
— তুমি আমাকে সোনা বললে আজিজ😍😍
— হে গো সোনা আরো কত কি বলবো। আমি কাজ টা সেরে আসি তারপর না হয় সব হবে।
–ঠিক আছে,৷ কিন্তু কোথায় যাবে?
— প্রিন্সিপালের রুমে।
— আচ্ছা তুমি তাহলে যাও আমি তোমার জন্য এখানে অপেক্ষায় থাকি।
–আরে না,,, না। তোমার অপেক্ষা করতে হবে না। তুমি বরং ক্লাস এ যাও। আমি কাজ টা সেরেই আসতেছি।
–ঠিক আছে তারাতাড়ি আসবে কিন্তু আমি ক্লাসে গেলাম।
হ তুই তারাতাড়ি যা আর আমি আগে ছুটি টা নিয়ে আসি। তারপর তুই আমারে কেমনে পাস তা দেখা যাবে😂😂
ওখান থেকে প্রিন্সিপালের রুমে আসলাম তারপর ছুটি নিয়ে দিলাম এক দৌড়। এক দৌড়ে হোস্টেলে। তারপর ব্যগ টা নিয়ে বাস ইস্টিশন।
এদিকে রিয়া ভাবছে স্যরের রুমে আজিজ এতক্ষণ কি করে একবার দেখে আসতে হয়। যেই ভাবা সেই কাজ,,,, কিন্তু একি স্যারের রুমে তো আজিজ নাই। একবার স্যার কে জিজ্ঞেস করতে হয়।
রিয়া– আসতে পারি স্যার?
প্রিন্সিপাল — জ্বি আসো। আর তোমরা লেখাপড়া কর কেনো বলতে পারো। আসতে পারি স্যার এই কথাটা কি ইংরেজিতে বলা যায় না।
— sorry sir.
–it’s ok আর sorry বলতে হবে না। কি জন্যে এসেছো তাই বলো।
— স্যার আজিজ কি আপনার এখানে আসছিলো?
–হুম আসছিলেন। ছেলে টা খুবই ভালো।
— হুম স্যার জানি। কিন্তু কি জন্য এসেছিলো স্যার।
— ছুটি নেবার জন্য।
— এ্যাহহহহহ😒😢😟😲😲😞😩😭
–হ্যায়য়য়য়☺
**এদিকে টিকিট কেটে বাসে উঠে বসে আছি আমি যেই কানে হেডফোন দিব ওমনি চোখ গেলো বাসের দরজার দিকে। যা দেখলাম তা হলো,,,,,,,,,,,,
.
.
চলবে,,,,,,,,?