এক শ্রাবণ হাওয়ায়-২ পর্ব-৪+৫ এবং বোনাস পর্ব

0
687

#এক_শ্রাবণ_হাওয়ায়-২
#লেখিকা – কায়ানাত আফরিন
#পর্ব – ৪+৫
একপর্যায়ে উনি একেবারেই কাছাকাছি এসে পড়লেন আমার। দুষ্টু হেসে জগিং আউটফিটের চেন খোলায় হাত দিতেই আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম। সাথে সাথেই বলে ওঠলাম,

-‘ আমি…..আমি রাজি আছি আপনার শর্তে আনভীর। প্লিজ এবার দূরে সরুন।’

উনি হেসে নিজের আউটফিটের চেন পুরোটাই খুলে ফেললেন৷ বললেন,

-‘ ভয় পেও না। এমন কিছুই করবো না তোমার সাথে। আমি তো জাস্ট দেখতে চেয়েছিলাম যে….’

বলেই ঠোঁট কামড়ালেন উনি। কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে ওঠলেন,

-‘ ডার্টি মাইন্ডেড বেবিগার্ল! ‘

কানের কাছে এমন কিছু শব্দ শোনাতে শরীরে অদ্ভুত শিহরণ জেগে ওঠলো আমার। আনভীর এবার মুচকি হেসে দূরে সরে গেলেন আমার থেকে। ঠিক তখনই উনার বেডরুমের দরজায় হালকা করাঘাত পড়লো। আনভীর বলে ওঠলেন,

-‘ কাম ইন!’

দরজা খুলে প্রবেশ করলেন নাহিদ ভাইয়া। বললেন,

‘ ব্রেকফাস্ট রেডি এআরকে।’

আনভীর অপ্রসন্ন হলেন। বলে ওঠলেন,

-‘ ব্রেকফাস্টের টাইমের হেলফেল আমি কখনোই পছন্দ করি না, তবুও আজ এত লেট হলো কেনো?’

-‘ নেক্সট টাইম থেকে মাথায় রাখবো বিষয়টা। আর মিসটেক হবে না। এখন ব্রেকফাস্ট কি এখানে নিয়ে আসবো, নাকি ডাইনিং এ দেবো?’

-‘ আমি এখানেই করবো, নুড়ী আপাকে বল ব্রেকফাস্ট আমারটা এখানেই দিতে। আমি শাওয়ার নিয়ে আসছি।…..(আমার দিকে তাকিয়ে) আর এই মহারাণী কোথায় খাবে এটা উনাকেই জিজ্ঞেস করে নে। সে চাইলে ডাইনিং হলে, চাইলে বেডরুমে, চাইলে স্টোররুমেও এখন খেতে পারবে। আফটার অল, আমার শর্তে রাজি হয়েছে যে!’

আমি মৌনতা বজায় রাখলাম। নাহিদ ভাইয়া বললেন,

-‘ আপনি কোথায় ব্রেকফাস্ট করবেন মিস.আহি?’

-‘ড…ডাইনিং রুমে।’

উত্তর দিলাম তৎক্ষনাৎ। কেননা এখানে থেকে পালাতে হলে এখানকার কোণাকাণা সবকিছু সম্পর্কে ধারনা রাখতে হবে আমার। তাই এই সুযোগটা মিস করা নিতান্তই বোকামি হবে আমার জন্য। নাহিদ এবার মিহি কন্ঠে বললেন,

-‘ নিচে চলুন তাহলে।’

বলেই চলে গেলেন উনি। আমি তখনও ঠায় হয়ে রুমটিতে দাঁড়িয়ে রইলাম। ভাবতে লাগলাম অনিচ্ছায় যে উনার শর্তে রাজি হলাম এটা আদৌ ঠিক হবে কি-না। অপূর্ব ভাইয়া জানতে পারলে মেরেই ফেলবে আমায়। এসব ভাবতে ভাবতেই মন আমায় ভয়ের সঞ্চার হলো। আনভীর কিছুক্ষণ তীব্র দৃষ্টিপাত করলেন আমাতে। তারপর বলে ওঠলেন,

-‘ উমমমম…..ব্রেকফাস্ট টা আমার সাথে করার ইচ্ছে আছে যে এখনও দাঁড়িয়ে আছো? নাকি আমি শাওয়ারে যাবো বলে আমায় হাফ নেকেড দেখার অপেক্ষায় আছো?’

লজ্জায় আমার কান দ্বারা রীতিমতো ধোঁয়া বের হচ্ছে। আমার মনে হয় না যে এই দুনিয়াতে এর চেয়ে ঠোঁটকাটা লোক আদৌ দেখেছি কি-না। আমি আর কোনো কথা না বলে তড়িঘড়ি করে প্রস্থান করলাম রুমটি। বাইরে এসেই ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলেতে লাগলাম। কি অসভ্য কথাবার্তা মানুষটার আল্লাহ!
.
.
.
আনভীরের বাসাটা এককথায় বিশাল। শৌখিনতার ছাপ দেখা যাচ্ছে প্রতিটা ঘরে ঘরে। বাইরে বিশাল একটি ইয়ার্ড। নাহিদ ভাইয়া বললেন যে ছোটবেলা থেকে এখানেই বড় হয়েছেন আনভীর। এখানে নাকি উনার মায়ের সমস্ত স্মৃতি আছে তাই কখনোই উনি এ বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেনি। আমি চুপচাপ ব্রেকফাস্ট করছিলাম তখন। আমার সামনে বসে ছিলেন নাহিদ ভাইয়া। কথায় কথায় উনার মায়ের প্রসঙ্গ উঠতেই আমি সাথে সাথে প্রশ্ন করলাম,

-‘ উনার মা এখন কোথায় ভাইয়া?’

নাহিদ ভাইয়া মৌনতা কাটালেন কিছুক্ষণ। অতঃপর বলে ওঠলেন,

-‘ আহি ডোন্ট থিংক সো আহি যে আপনাকে এভাবে এআরকে’র পার্সোনাল ম্যাটারে প্রশ্ন করা উচিত। ওটা উনার ব্যাপার, উনাকেই সামলাতে দিন।’

নাহিদ ভাইয়ার কথায় গা শিরশির করে ওঠলো আমার রাগে। কোনোমতে দাঁতে দাঁত চেপে বললাম,

-‘ জানেন আমার ইচ্ছে করছে আপনাদের দুটোকে তুলে আছাড় মারতে। আমি এআরকে’র পার্সোনাল ম্যাটারে হাত দিলে দোষ, আর উনি? উনি যে আমার পুরো জন্মকুন্ডলী ঘেটে এসেছেন তার কি? আমার আশপাশের পরিচিত মানুষও আমার সম্পর্কে এতটা জানেন না যতটা উনি জানতে পেরেছেন। এটার কারন কি ভাইয়া? পেনড্রাইভটিতে এমন কি আছে যেটার মধ্যে উনার সাথে আমিও জড়িয়ে আছি? আমাদের কি এমন সম্পর্ক যার জন্য উনি এভাবে আমার পিছে পড়ে আছেন?’

একটা কথারও উত্তর দিলেন না ভাইয়া৷ অবশ্য আমি এটাই ধারনা করেছিলাম যে এই ছেলে আর যাই হোক, বোমা ব্লাস্ট করলেও এআরকের সম্পর্কে কিছু বলবেন না আমায়। নাহলে খামোখা কি উনি এমনি এমনিই আছেন এআরকে’র সাথে টানা এতগুলো বছর?

নাহিদ ভাইয়া এবার বললেন,

-‘ গার্ডেনে যাবেন?’

আমি মাথা নাড়ালাম। কেননা এভাবে থাকতে থাকতে দম বন্ধ হয়ে এসেছিলো আমার। নাহিদ ভাইয়া এবার বললেন,

-‘ এআরকে আপনাকে পুরো বাসায় চলাফেরার পার্মিশন দিয়েছে মিস.আহি। শুধু একটি রুম ছাড়া। গ্রাউন্ড ফ্লোরে লাইব্রেরির পাশে যে রুমটি আছে সেখানে যাওয়ার পার্মিশন কারও নেই। এমনকি আমারও না, আই হোপ আপনি বুঝবেন এবং যাবেন না সেখানে।’

সন্দেহ জেগে ওঠলো আমার মনে। কি এমন আছে ওই রুমটিতে যে নাহিদ ভাইয়া যেতে নিষেধ করলো? আমি কথা বাড়ালাম না আর। উনার পিছু পিছু ড্রইংরুমের এককোণে থাই গ্লাস ঠেলে গার্ডেনে পা বাড়ালাম। গার্ডেন টা এককথায় বিশাল। এমনকি এই বাড়ির তুলনায়ও। একদিকে নীলচে পানির সমাহারে একটি সুন্দর সুইমিংপুল দেখা যাচ্ছে। রৌদ্দুরের এক ফালি রশ্নি আছড়ে পড়ছে সমান্তরাল দূর্বাঘাসের ওপর। বর্ডার ওয়ালগুলোর কার্নিশ ঘেঁষে নানা জাতের গাছ আছে ফুলের সমারোহে যা এক নিমিষেই বলে দিতে পারবে যে এ বাড়ির মালিক নিতান্তই সৌখিন। গার্ডেনের এক কোণে সুন্দর একটি বসা জায়গা আছে যেখানে সন্ধ্যার পর প্রায়ই নাকি আনভীর গিটারের সুর তোলেন।

এখানে আমায় আরও একটি জিনিস অবাক করেছে আশপাশে এত গার্ডদের দেখে। প্রত্যেকেই কালো পোশাকধারী এন্ড বডি মিজারমেন্টও পার্ফেক্ট এককথায়। এমন না যে উনার ডুপ্লেক্স বাড়ির আশপাশে ঘেঁষে ঘেঁষে আরও বাংলো আছে। কেননা আজ সকালে বারান্দা দিয়ে, আবার এখন বাইরে পা রেখে যা বুঝলাম, আশপাশে যত বাড়ি আছে সবগুলোর অন্তরেই বিশাল দুরত্ব। আমি প্রশ্ন করলাম,

-‘ এখানে এত গার্ড কেনো?’

নাহিদ ভাইয়া এমনভাবে হাসলেন যেন খুব মজার একটা কথা বলেছি আমি। তাই বললেন,

-‘ ভুলে যেয়েন না আহি যে আপনি ‘স্টার হিট’ এর গ্রেট ভোকালস্টার এআরকে’র বাড়িতে আছেন৷ এমন একটা মানুষের শুধু বাড়িতে না, প্রত্যেকটা জায়গাতেই সেফটির জন্য গার্ড নিয়ে চলতে হয়।’

-‘ তাহলে এর আগে উনাকে যে শুট করা হয়েছিলো তখন কোথায় ছিলো এই গার্ডগুলো?’

থমকে গেলেন নাহিদ ভাইয়া। অতঃপর বলে ওঠলেন,

-‘ এআরকে আসলে ঠিকই বলে, কথা বলার জন্য আপনি খুব একটা সুবিধার মানুষ না।’

-‘ আপনিও এমন মানুষ না যাকে ফন্দি করে কথা বের করা যাবে। আপনি যে উনার কতটা বিশ্বস্ত, এই অল্পসময়তেই ভালো ধারনা হয়ে গিয়েছে আমার। পেটে বোমা ফাটালেও কথা আর বের হবে না!’

শেষ কথাটি বললাম আমি বিক্ষোভ সুরে। হঠাৎ কুকরের শব্দে চমকে উঠলাম আমি। নাহিদ ভাইয়া বললেন,

-‘ চমকে ওঠার কিছুই নেই মিস আহি৷ এআরকে’র একটা পেট ডগ আছে জীম নামের, গার্ডেনেই থাকে।’

-‘ ওহ্! আমি….আমি আসলে কুকুর ভয় পাই। একবার আম চুরি করতে গিয়ে কুকুরের কামড় খেয়েছিলাম তো!’

অপ্রস্তুত হয়ে বললাম আমি। তখনই পেছন থেকে ভেতরে আসার ডাক পড়লো আমাদের। দেখি আনভীর দাঁড়িয়ে আছেন ড্রইংরুমে। একটা চেক টিশার্ট আর আর ওপর ব্লু ডেনিম পড়েছেন, চোখে একটা চিকন ফ্রেমের গ্লাস। উনি বেশিরভাগ সময়েই লেন্স পড়ে থাকলেও এটা সত্য যে এমন চিকন ফ্রেমের গ্লাসে মারাত্মক লাগে উনাকে দেখতে। আনভীর এবার বললেন,

-‘ স্টুডিওতে যাচ্ছি আমি। আর একটা টক শো তেও অতিথি হিসেবে যেতে হবে। বলা বাহুল্য অনেক কাজ। যদি আমি শুনি যে তুমি খাওয়া-দাওয়া নিয়ে অনীহা করেছো বা বাসায় যাবো-বাসায় যাবো বলে গান উঠিয়েছো, ফলাফল ভালো হবে না বেবিগার্ল। রিমেম্বার দ্যাট। টেক কেয়ার।’

এমনি একটা ছোটখাটো থ্রেট দিয়েই উনি বেরিয়ে গেলেন নাহিদ ভাইয়া আর কয়েকজন গার্ডদের নিয়ে। আমি অবশেষে তপ্তশ্বাস ছাড়লাম। মনে হচ্ছিল যে এতক্ষণ একটা যমদূতের সামনে ছিলাম। ব্যাটা চাশমিশ বিলাই কোথাকার!

——————

টেবিল থেকে রিভলবারটা হাতে নিয়ে ক্রমাগত হাতের মধ্যে ঘোরাচ্ছে অপূর্ব। সামনেই হাটু গেড়ে বসা মধ্যবয়স্ক এক লোক। ভয়াবহ আতঙ্ক সেই লোকটার চোখেমুখে। সে কাতর স্বরে বলে ওঠলো,

-‘ আমায়………আমায় মাফ করে দিন স্যার! পরবর্তীতে আর কখনোই আপনার বিরুদ্ধে এভিডেন্স নিয়ে কাজ করবো না।’

অপূর্ব হেসে দিলো এ কথায়। যেন লোকটার কথায় সে খুব মজা পেয়েছে। আড়চোখে তাকালো সে ওর বাবার দিকে। বললো,

-‘কি বলো বাবা! ছেড়ে দিবো নাকি?’

-‘ ভাব তো তুই এমন করছিস যে আমি ছেড়ে দিতে বললেই তুই ওরে ছেড়ে দিবি।’

বেপোরোয়া কন্ঠে বলে ওঠলেন উনি। লোকটা উঠে অপূর্বের পায়ের কাছে বসে পড়লো এবার। বললো,

-‘আমায়….আমায় মাফ করে দিন স্যার। টাকার লোভ আমায় অন্ধ করে দিয়েছিলো। তাই আপনার এভিডেন্সগুলো আমি তাকে দিয়ে দিতে চেয়েছিলাম।’

-‘ আর সেই ‘তাকে’ টা কে? কাকে দিতে গিয়েছিলে আমার বিরুদ্ধে এভিডেন্স?’

-‘ আমি এতকিছু জানি না। শুধু জানি, ছেলেটার নাম নাহিদ। কোনো এক সেলিব্রেটির বিশিষ্ট সেক্রেটারি সে। তারপর আর কিছুই আমি জানি না। কারন আমার কাছে টাকাটাই মুখ্য ছিলো।’

কিছুক্ষণ ভাবলো অপূর্ব। কেননা ওর মনে পড়ছেনা যে নাহিদ নামে আদৌ কাউকে সে চিনে কি-না। আর এমন কোনো বিশিষ্ট ব্যাক্তি আছে যে এভাবে ওর মতো মানুষের পিছে পড়ে থাকবে? না ও কোনো মাফিয়া, আর না কোনো রাজনীতি সংশ্লিষ্ট কাজে যুক্ত। ওর কাজ হলো শুধু বাবার এই কালো ব্যবসাটাকে সামলানো। লোকটা অপূর্বের পা ধরে অনেকবার অনুরোধ করলো ওকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। অপূর্ব বাকা হাসি দিলো এতে। লোকটার কপাল বরাবর রিভলবার রেখে বলে ওঠলো,

-‘ সরি ডার্লিং, অপূর্ব বেট্রায়ারদের পৃথিবীতে বাঁচতে দেয় না।’

বলেই পরপর দু’বার ট্রিগারে চাপ দিলো অপূর্ব। আশপাশের দাঁড়িয়ে থাকা সাঙ্গপাঙ্গরাও রীতিমতো হিমিশিম খাচ্ছে। এমনকি ওর বাবাও। জীবনে কালো ব্যবসার দরুন বহুত খুন-খারাবির সম্মুখীন হয়েছে ওর বাবা। কিন্ত ছেলের মতো এতটা হিংস্র কখনোই হয়ে ওঠতে পারেনি। অপূর্ব চিৎকার করে বলে ওঠলো,

-‘ এই বা*র্ডটার লাশ গুম করে দাও।’

এবার বাবার উদ্দেশ্যে অপূর্ব বলে ওঠলো, ‘ বাবা! খোঁজ নাও তো নাহিদ টা কে? আমি এ টু জেড সব জানতে চাই।’

তন্মধ্যেই এখানে এসে পড়লো ইকবাল সাহেব। অপূর্বকে দেখে সে হেসে বলে ওঠলো,

-‘ সুখবর নিয়ে এসেছি তোমার জন্য অপূর্ব চাচাজি।’

অপূর্ব হাসলো। যেন এই লোকটা জন্মই হয়েছে ওর জন্য সুখবর নিয়ে আসতে । বলে ওঠলো,

-‘কি সুখবর চাচু?’

-‘ আজ রাতের মধ্যেই সব মাল এসে পড়বে। আর এগুলোকে রাতেই সদরঘাটের চাঁদপুর লঞ্চে সাপ্লাই করা যাবে। তুমি যাবা এসব সামলানোর জন্য?’

তখনই অপূর্বর বাবা বলে ওঠল,

-‘পাগল হইছস নাকি তুই ভাই? আমার ছেলে ওসব জায়গায় কেন যাইবো? তুই যা!’

-‘ হুহ! ছেলেরে যাইতে দেয় না ওসব জায়গায় আর ছেলেরে ব্যবহার করে ওসব জায়গার খাসামাল ঠিকই পকেটে পুরে।’

বিড়বিড়িয়ে বলে ওঠলো ইকবাল। অপূর্ব জিঙ্গেস করলো,

-‘ রাহির খোঁজ পেয়েছো?’

-‘ না গো চাচাজি।’

-‘ ও আসুক খালি একবার। আসলে ঠাসাইয়া দুটো চড় না মারলে আমার নামও অপূর্ব না। ওকে বাঁচিয়ে রেখেছি কেনো আমি? এভাবে গুম হয়ে যেতে? ওর কাজ হলো আন্ডারকভার মিশনের সব তথ্য আমায় সাপ্লাই করবে। আর ও করছে টা কি? তোমার ওই মেয়ের জন্য একদিন জেলের ঘানি টানতে হবে তোমাদের।’

বলেই ফোস ফোস করতে থাকলো অপূর্ব। ইকবাল ওকে শান্ত হওয়ার জন্য বললো,

-‘রাহির চিন্তা করো না বাবাজান। ও ঠিকই এসে পড়বে। তুমি নাহয় আহির কথাই ভাবো। আমাদের সোনার চাবি হলো আমার ওই মেয়েটা। ও যদি পালিয়ে যায় তবে……’

-‘ আহির এত সাহস হয়নি আজ পর্যন্ত। ও জানে যে এমন কিছু করলে মেরে ফেলবো আমি ওকে। আহির জন্য আমিই আছি। তুমি আগে ওই রাহির খোঁজ করো যে কই উধাও হয়ে গিয়েছে?যাও, এখন।’

চলে গেলেন ইকবাল সাহেব। অপূর্ব এবার বাবাকে বললো,

-‘ বাবা। আমার আদরের চাচাজানের পেছনেও লোক লাগাও তো। কেনো যেনো মনে হচ্ছে কিছু লুকাচ্ছে চাচু।’

-‘ মানুষরে এত অবিশ্বাস করিস নারে বেটা।’

তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো এবার অপূর্ব। বলে ওঠলো,

-‘যে লোক টাকার লোভে নিজের বউকে খুন করতে পারে, নিজের মেয়েকে ব্যবহার করতে দু’বার ভাবেনা, সে যেকোনো কিছু করতে পারে।’

———————————–

সেই যে সকাল দশটা নাগাদ বেরিয়েছেন আনভীর, সাতটা বাজতে চললো এখনও উনার আসার নামগন্ধ নাই। না নাহিদ ভাইয়ার। আমি ভেবেছিলাম এ সময়টা কাজে লাগিয়ে বাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করবো কিন্ত পারিনি আমি। কেননা পুরোটা সময় কেউ না কেউ নজরে রাখছিলো আমায়। এতটুকুই না, ঘন্টায় ঘন্টায় আমার সম্পর্কে আপডেট জানাচ্ছিলো আনভীরকে।
সন্ধ্যার পর আমি গার্ডেনে আনমনে হাঁটছিলাম। আসলে চিন্তার বাসা বেঁধেছিলো আমার মনে। রাহি আপুকে নিয়ে, আবার অপূর্ব ভাইয়াকেও নিয়ে। আমি অপূর্ব ভাইয়াকে বিয়ে করার জন্য রাজি হয়েছিলাম শুধুমাত্র রাহি আপুর যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সে ভয়ে। এখন আমি চিন্তায় আছি যে অপূর্ব ভাইয়া যদি জেনে যায় যে আমি উনার রাখা জায়গাতে নেই, এদিকে আনভীরের শর্তেও রাজি হয়েছি, আমার কি হবে, আমি নিজেও জানিনা। এদিকে আনভীর মানুষটাও আপাদমস্তক রহস্যে ঘেরা একজন মানুষ। এতগুলো প্রশ্নের উত্তর খোঁজা নিয়ে ভাবতেই হুট করে আমার মাথায় এলো পেনড্রাইভটার কথা। আচ্ছা, এত বড় ঘরে আমি এমন কিছুই পেলাম না আনভীরের অতীত সম্পর্কে যেদিকে নাহিদ ভাইয়া বলেছিলো যে উনি এখানেই বড় হয়েছেন। কিন্ত কেনো? এমন তো নয় যে ওই নিষিদ্ধ ঘরটিতেই পেয়ে যাবো আমার সব প্রশ্নের উত্তর?

স্থির করলাম আমি নিজেকে। বললাম রাতে সবাই ঘুমোনোর পরেই ও ঘরে যাবো।হঠাৎ গার্ডেনের এককোণে ডগ হাউজ থেকে কুকুরের শব্দে চমকে উঠলাম আমি। এমনিতেও কুকুরকে আমি অনেক ভয় পাই। এখন আবার কুকুরটা আবার ডাক দিচ্ছে কেনো? আমি খেয়াল করলাম যে হাটতে হাটতে ডগহাউজের অনেকটাই কাছাকাছি এসে পড়েছি আমি। কুকুরটা আমায় দেখেই আরো ডাক দিয়ে আমার দিকে দোঁড়ে আসলো। কুকুরটা যেদিকে আসছিলো আমায় আদর করতে, আমি উল্টো চিৎকার দিয়ে সরে আসতে নিলাম। একপ্রকার দৌঁড়ে ভেতরের দিকে যেতেই একজনের প্রশস্ত বুকের সাথে ধাক্কা খেলাম আমি। দেখি এটা আনভীর। আমি সাথে সাথেই বললাম,

-‘ এই কুকুটাকে প্লিজ দূরে সরান। নাহলে আমায় কামড় লাগিয়ে দিবে।’

কুকুরটা আমায় পায়ের কাছে ঘেঁষতেই আরও একদফা চিৎকার দিয়ে আনভীরকে জড়িয়ে লাফালাফি করতে লাগলাম আমি। মনে পড়ছিলাম সেবার ছোটবেলায় আম চুরি করতে গিয়ে কি কামড়টাই না খেয়েছিলাম। চোখ বন্ধ করেই বারবার বলছিলাম,

-‘ আমি তো আর আম চুরি করিনি। তবে এই কুকুরটা সরছে না কেনো? প্লিজ সরান এটাকে?’

আনভীর এবার যেন হাসবে না কাদবে বুঝতে পারলেন না। রম্যাত্নক হাসি দিয়ে তাকিয়ে দিয়ে তাকিয়ে রইলেন আমায় ভয়ার্ত মুখের দিকে। ইশারায় পেছনে থাকা নাহিদ ভাইয়াকে বললেন ‘জীম’ কে সরানোর জন্য। নাহিদ ভাইয়া করলেনও তাই। নুড়ী আপা এবার বলে ওঠলো,

‘ আপামণি কুকুররে দেখলে এত ডরাইতে লাগে? আনভীর ভাইজানের এই কুকুরটা ভালো আছে। কাউরে কামড় দেয় না।’

আনভীর আমায় এভাবে পা ছুড়োছুড়ি করতে দেখে পাজাকোলে তুলে নিলেন আমায়। আমি থমকে গেলাম। চোখের ভয় সরে এখন অবস্থান করেছে বিস্ময়। তবুও কুকুরটার ভয়ে কাপছি আমি৷ আমি বাক্য ব্যায় না করে আমায় গার্ডেনের এক প্রান্তে থাকা বেঞ্চে বসে পড়লেন। আমি তখনও উনার কোলে। আশপাশ তাকিয়ে দেখি গার্ডরা বরাবরের মতোই দাঁড়িয়ে আছে মাথা নিচু করে। নুড়ী আপা মিটমিটিয়ে হাসলেও নাহিদ ভাইয়ার তাতে কোনো ভাবান্তর নেই। আনভীর এবার ভ্রু নাচিয়ে বললেন,

-‘ খুব তো বলো যে কাছে আসবেন না, টাচ করবেন না, ব্লা ব্লা ব্লা….আর তুমি যে আমায় এভাবে সিডিউস করো তার হিসাব কে রাখবে?’

মানে? আমি….আর ‘সিডিউস’ করছি উনাকে? আমি তো এসব ভাবতেই চাই না আর উনি এসব মুখে বলেনই বা কিভাবে? আমি করুন চোখে বললাম,

-‘ আমি…..আমি গেলাম।’

বলে যেই না উনার কোল থেকে আমি উঠতে যাবো আমায় চেপে ধরলেন উনি। আমার অস্বস্তির হার হু হু করে বাড়তে থাকলো এবার৷ বললাম,

-‘ প্লিজ ছাড়ুন, সবাই এখানে আছে। আপনি এমন করছেন কেনো?’

-‘ আমায় জড়িয়ে লাফালাফি করার আগে এটা তোমার ভাবা উচিত ছিলো বেবিগার্ল। নিজে তো ডার্টি মাইন্ডেড সাথে আমার মতো পিওর ছেলেকেও তোমার মতো ডার্টিমাইন্ডেড বানিয়ে দিলে।’
.
.
.
.
.
#চলবে…..ইনশাআল্লাহ!
ভুলক্রুটি মার্জনীয়।

#এক_শ্রাবণ_হাওয়ায়-২
#লেখিকা – কায়ানাত আফরিন
#বোনাস_পার্ট
-‘ আমায় জড়িয়ে লাফালাফি করার আগে এটা তোমার ভাবা উচিত ছিলো বেবিগার্ল। নিজে তো ডার্টি মাইন্ডেড সাথে আমার মতো পিওর ছেলেকেও তোমার মতো ডার্টিমাইন্ডেড বানিয়ে দিলে।’
কথাটি বলেই আমায় ছেড়ে দিলেন আনভীর। আমি তৎক্ষণাৎ উঠে দাঁড়ালাম। নাহিদ ভাইয়া আর নুড়ী আপা তখনও হেসে চলছে মিটমিটিয়ে। আনভীর জিজ্ঞেস করলেন,

-‘ ডিনার করেছো?’

-‘ না।’

-‘ তাহলে করে নাও। আমি খেয়ে এসেছি বাহির থেকে।’

আনি মৌনতা বজায় রাখলাম এতে। আনভীর এবার বললেন,

-‘ আর একটি কথা ছিলো।’

-‘ কি কথা?’

-‘ তোমার ইন্টার্নশিপ কমপ্লিট এটা বলেছিলে না?’

-‘ হুম।’

-‘ তো কোন হসপিটালে এসিস্ট্যান্ট ডক্টর হিসেবে জয়েন হতে যাচ্ছো তুমি?’

-‘ (………) হসপিটাল।’

-‘ ওহ্ , ওকে। CV জমা দিয়েছিলে?’

-‘না।’

-‘ তাহলে রেডি করে নাও। আগামীকাল নাহিদ জমা দিয়ে আসবে।’

বলেই চলে যাচ্ছিলেন আনভীর। আমি তৎক্ষণাৎ বলে ওঠলাম,

-‘ আপনি……….আপনি সত্যিই যেতে দিবেন আমায় আনভীর?’

পা থামালেন উনি। চোখজোড়া মিহি করে পেছনে তাকালেন। অতঃপর বলে ওঠলেন,

-‘ আমি তোমার অপূর্ব ভাই নই। যে নিজ স্বার্থে ইউজ করে যাবে তোমায়। না তোমার বোন রাহি। আর না তোমার ওই জল্লাদ বাপ ইকবাল সাহেব। আমি আনভীর রেজওয়ান খান। নিজেকে নিয়ে যতটা প্রোটেকটিভ, নিজের দায়িত্ব নিয়ে এর থেকেও প্রোটেকটিভ হতে পারি।’

বলেই চলে গেলেন উনি। আমার মনে রাজ্যের প্রশ্ন জেকেঁ বসলো এবার। এই মাত্র কি বললেন উনি? আমি উনার দায়িত্ব? কেমন দায়িত্ব? কেনই বা দায়িত্ব? গত দুদিনের ব্যাবহারে এতটুকু সিউর হলাম আমি যে এই মানুষটার অতীতের সাথে কিছু একটা সম্পর্ক আছে আমার। যেটা যেকোনো ক্রমেই হোক, আমায় বের করতে হবে।

———————

নাইট ক্লাব হওয়ার দরুন মুখোরিত আশপাশ। অপূর্বের একহাতে ড্রিংকসের গ্লাস আর অন্য হাত গুঁজে রেখেছে পকেটে। পরপর এতগুলো গ্লাস সাবার করার পর ওর নেশা যেনো কিছুতেই উঠছেনা। উঠবেই বা কি করে, এই নেশা যে আহি কেড়ে নিয়েছে ওর থেকে? বিগত এক সপ্তাহ ধরে কোনো যোগাযোগ নেই ওর মেয়েটার সাথে। ওসব ব্ল্যাক মানির ঠিকানা করতে ও এতটাই মশগুল হয়ে পড়েছিলো যে আহির দিকে নজর রাখার কথা মনেই ছিলো না ওর। আজ চাচার কথায় একটু মনে হলো আহি কোথায় সেটা জানার।ওর ভাবনার মধ্যেই একজন এসে পড়লো ওর কাছে। কাঁপাকাঁপা কন্ঠে বললো,

-‘স….স্যার!’

-‘ আহির বাসায় গিয়েছিস?’

শুকনো ঢোক গিললো লোকটা। এতটা বিব্রত দেখে অপূর্ব থম মারা চাউনি দিলো তার দিকে। বললো,

-‘ এত কাঁপছিস কেনো? আহির আপডেট বল?’

-‘ স্যার ভাবি, ফ্ল্যাটে নেই।’

চোখের অর্ধ নেশা নিমিষেই উড়ে গেলো অপূর্বের। বলে ওঠলো,

-‘ হোয়াট?’

-‘ জ…জ্বি স্যার। আমি অনেকক্ষণ নক করছিলাম ফ্ল্যাটে। দাঁড়িয়ে ছিলাম কয়েকঘন্টা। ভাবিও আসেনা , কেউ দরজাও খুলেনা। সিসিটিভিতেও ভাবির লাস্ট ফুটেজ পায়নি স্যার। ভাবি…..ভাবি মনে হয় আবার পালায় গেসে।’

এই শেষ কথাটাই ছিলো অপূর্বকে হিংস্র করে তোলার জন্য যথেষ্ট। হাতে থাকা গ্লাসটা জোরে চাপ দিতেই তা দুমড়ে-মুচড়ে ওর হাতের প্রতিটা অংশ কেটে দিলো। রক্তাক্ত হয়ে ওঠলো ওর হাত। কপালে নিজের আঙুল চালিয়ে বলে ওঠলো,

-‘ টাকা দিয়ে গর্দেভগুলারে পালছি আমি। একটা জলজ্যান্ত মেয়ে হুট করে গুম হয়ে যাবে কিভাবে? সিসিটিভি ফুটেজেই বা উঠবেনা কেনো কিছু? আহির মাথায় এই সৃন্স নেই যে ও নিজ থেকে পালাবে সব ক্লু কিয়ার করে। আই এম ড্যাম শিউর কেউ না কেউ তো হেল্প করেছে ওকে।’

অপূর্বকে এতটা রেগে যেতে দেখে কেপেঁ উঠলো লোকটা। বললো,

-‘ স……..স্যার, আপনার হাত!’

-‘ গো টু ইউর হেল।’

অপূর্ব একথাটা বলতেই চলে গেলো লোকটি। রাগে মুখমন্ডল লাল হয়ে গিয়েছে ওর। হাতের আংটির দিকে নিষ্পলক ভাবে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো। বলে ওঠলো,

-‘ এর আগের শাস্তিটা তোর জন্য প্রোপারলি হয়নি রে আহি! তাই এবারও পালাবার দুঃসাহস করেছিস। ট্রাস্ট মি! এবার যদি হাতের নাগালে পাই না, ভেঙে গুড়িয়ে দেবো তোর পা। তুই আমার ভালোবাসা না হতে পারলেও জেদ থেকে কম কিছু না। আমিও দেখবো তুই কতদিন গুম হয়ে থাকতে পারিস!’

————————–

রাত হয়েছে অনেক। এ বাড়ির প্রায় সবাই হয়তো গভীর ঘুমে মগ্ন। আমি পা টিপে টিপে রুম থেকে বেরোলাম। হাতে মোবাইল। কিন্ত সাইলেন্ট করতে ভুলিনি। সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে আস্তে আস্তে আমি চলে গেলাম ওই রুমটিতে। যা ভেবেছিলাম তাই। রুমটা ছিলো লক করা। কিন্ত হার মানিনি আমি। রাহি আপু সিক্রেট এজেন্ট হওয়ার দরুন একজন উডবি ডক্টর হলেও একটা জিনিস শিখতে পেরেছি আমি। আর সেটা হলো দরজার লক কিভাবে খুলতে হয়। আমি চুলের থেকে বিউটি ক্লিপ খুলে নিলাম। তারপর কৌশলে তা প্রয়োগ করতেই ব্যাস! খুলে গেলো লকটি।

রুমটা নিতান্তই অন্ধকার। চাঁদের ম্লান আলোটাই রুমটাকে জাস্ট আলোকিত করে রেখেছিলো। পর্দা উড়ে চলছে অসমান্তরালভাবে। আমি লাইট জ্বালালাম না। মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইটের আলোতে যা বুঝলাম আনভীরের মিউজিক রুম এটি। কারন এখানে কিবোর্ড, গিটার, ভায়োলিন, হারমোনিকা , মাইকসহ আরও অনেক কিছুই ছিলো। একপাশে সুসজ্জিতভাবে রাখা ছিলো উনার সব মিউজিক আওয়ার্ড। এমনকি ছোটবেলা যেসকল প্রাইজ পেয়েছিলেন সেগুলোও। আমি এবার একে একে করে রুমের ড্রয়ার, বুকশেলফ, টেবিল সবগুলো ঘাটতে থাকলাম ভালোমতো। বেশিরভাগ ড্রয়ার লক করা ছিলো বলে পাইনি বিশেষ কিছু। একরাশ হতাশা নিয়ে আমি যখন ফিরে যাচ্ছিলাম তখনই এককোণে চোখ পড়লো আমার। আমি এগিয়ে গেলাম সেখানে। বেশ কয়েকটা ফাইল একসাথে। ঘেটে দেখলাম মেডিক্যাল রিপোর্ট। মেডিক্যালে পড়েছি বলে এসব রিপোর্ট বুঝতে অসুবিধে হয়নি আমার। সেখানে যা দেখলাম কয়েকসেকেন্ড থম মেরে রইলাম আমি। মনে হলো যে ভুল দেখছি নাতো? নাকি এখনও স্বপ্নে ভাসছি আমি?

রিপোর্টে পেশেন্টের নাম স্পষ্ট করে লিখা আছে ‘আনভীর রেজওয়ান খান’ আর উনার মেন্টাল কন্ডিশন অন্য চার-পাঁচজন স্বাভাবিক মানুষের মতো নয়। হি ইজ এ ভিক্টিম অফ ‘প্যারানয়েড পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার’! এতবড় সত্য নিজের স্বচক্ষে দেখে অবাক হওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিলো আমার জন্য। তার মানে উনার আমার প্রতি এই ব্যবহারগুলো কি সত্যিই ডিসঅর্ডারের কারন? আর ভাবতে পারলা না আমি। কেননা হঠাৎ পেছন থেকে শুনতে পেলাম,

-‘ এখানে কি করছো তুমি?’
.
.
.
~চলবে……ইনশাআল্লাহ