এক সমুদ্র ফুল পর্ব-০৩

0
6311

#এক_সমুদ্র_ফুল
#পর্ব_3
Writer::Shaanj Nahar Sanjida


সবাই অধীর আগ্রহে বসে আছে আমার উত্তরের আশায়
আমি দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে দৌড়ে সমুদ্রের কোল থেকে আলোকে নিয়ে মিতু ভাবীর কাছে দিয়ে বললাম
আলো মা,,বাবা মাত্র এসেছে ফ্রেশ হয়ে আসুক তারপর না হয় তুমি গল্প করো।
বলেই সমুদ্রকে টেনে উপরে চলে আসলাম।নিচে আলো একটু কান্না করছিলো সোনালী আপু আর মিতু ভাবী মিলে সামলে নিয়েছে।
আয়শা আর আরমান একে অপরের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেললো।


এদিকে
আমি একটানে সমুদ্রকে রুমে এনেই দরজা বন্ধ করে দিলাম।দিয়েই জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলাম।
স্বাভাবিক হয়ে উপরে তাকাতেই দেখলাম উনি আমার দিকে রক্ত চুক্ষ দিয়ে তাকিয়ে আছে।

আমি জোরপূর্বক হাসি দিয়ে
আসসালমুআলাইকুম

অলাইকুম আসসালাম।(সমুদ্র জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে)

হি হি হি।(আমি দাঁত বের করে হাসছি)

আরেক বার বলদের মত হাসলে থাপ্পড় মেরে সামনের দাত গুলো ফেলে দিবো!এখন বল নিচের ওই বাচ্চা মেয়েটা কে?(সমুদ্র)

আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন।তারপর আমি বলছি।(আমি)

না এখন বল।(সমুদ্র)

সব বলতে আমার একটু সাহস লাগবে।আপনি ফ্রেশ হতে হতে আমি সাহস জোগাড় করছি।(আমি)

কিছুক্ষণ সমুদ্র কি যেনো ভেবে বললো
ঠিক আছে।
বলেই সমুদ্র দরজা খুলে বের হতে লাগলো।

এই এই কি করছেন? বলেছিনা ফ্রেশ হতে।(আমি)

আমার সুট কেস নিচে।জামা কাপড় ছাড়া ফ্রেশ হবো কি করে?(সমুদ্র)

আমি আনছি না!আপনি যান।তাড়াতাড়ি যান।
বলেই উনাকে ঠেলে ওয়াশরুমে ঢুকলাম।পরেই একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে সোনালীকে ফোন দিয়ে উনার যে সুট কেসে কাপড় তা আনতে বললাম।
দরজায় টোকা পড়তেই খুলে দেখি সোনালী আপু সুট কেস নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
উনি সুট কেস আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো
ফুল।সাবধানে।

তোমার সহানুভূতি এখন আমার বিষের মতো লাগছে।
বলেই সোনালী আপুর মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিলাম।


পরে উনি ওয়াশরুম থেকে টাওয়েল পেঁচিয়ে বেরিয়ে আসলো।

ঐযে আপনার সুট কেস!কাপড় পরে নেন তারপর কথা হবে।(আমি)

উনি আর কথা বাড়ালো না।চটপট কাপড় পড়ে নিলো।পরেই আমাকে একটা টাওয়েল মুখের উপর ছুঁড়ে মেরে বললো

আমার মাথা মুছে দে।

আমি আর কিছু বললাম না।উনার দেশে থাকালীন আমি রোজ উনার চুল মুছে দিতাম আর দুজন মিলে অনেক গল্প করতাম।উনার এখনও তা মনে আছে দেখে ভালোই লাগলো।

আমি বেডে বসলাম উনি আমার সামনে ফ্লোরে বসলো।আমি উনার চুল মুছতে লাগলাম বলতে শুরু করলাম
আলো আমাদের মেয়ে।

উনি আমার দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

হুম। ও আপনার মেয়ে।(আমি মাথা নিচু করে)

তাহলে সেই রাতের পরে তুই,,
বলেই থেকে গেলো সমুদ্র।

আপনি তো সেদিন সকাল সকাল কাউকে কিছু না বলে বিদেশ চলে গিয়েছিলেন।আর আমি দুমাস পর জানতে পারি আমি মা হতে চলেছি।

কথাগুলো বলার সময় আমার গলা ধরে আসছিলো।

তুই আমাকে বলিস নি কেন?(সমুদ্র)

আপনি এমনি আমাদের বিয়ে চান নি।শুধু বাবার কারণে আমাদের বিয়ে হয়েছে।এক দোহায় দিয়ে বিয়ে হয়েছে।আরেক দোহায় দিয়ে আমি আপনাকে দেশে আনতে চাইনি।(আমি)

তুইই কি সবাইকে বলেছিস আমাকে না জানাতে?(সমুদ্র)

হুম।আমার কেনো জানি মনে হচ্ছিলো আলোর কথা জানলে যদি আপনি দেশেই না ফিরেন।এমনি আপনি আমার উপর রাগ করে আছেন,, আপনাকে জোর করে বিয়ে করেছি বলে।আপনার অনুমতি ছাড়া আলোকে পৃথিবীতে এনেছি এইজন্য যদি আপনি আরো রাগ করেন।আর এই রাগের কারণে যদি আপনি আর দেশেই না আসেন।(আমি মাথা নিচু করে)

তুই যদি জানতিস আমি আলোর কথা শুনে রাগ করবো তাহলে তুই কেনো আলোকে পৃথিবীতে আনতে গেলি!(সমুদ্র ফুলের দিকে তাকিয়ে)

একটা মা হয়ে নিজের সন্তানকে কি করে,,,,।তখন আমার একটা ফ্যামিলির দরকার ছিলো।যার শরীরে আমার রক্ত বইবে।যাকে বলতে পারবো আমার শুধু আমার।আপনিই তো বলেছিলেন আপনার পরিবার কখনও আমার পরিবার না।আর আমার পরিবার নেই বলে আমি তার কদর করি না।তাই উপরওয়ালা আলোকে আমার পরিবার হিসেবে পাঠিয়েছে।আল্লাহর এতো সুন্দর একটা উপহার আমি কি করে ছুঁড়ে ফেলে দেই।(আমি কথা গুলো বলেই কেঁদে উঠলাম)

ফুল তুইই এখনও সেই রাতের কথা মনে করে আছিস!আমি রাগের মাথায় যা বলেছি সব তোর মনে এতো গভীর ক্ষত করেছে।যার জন্য তুই আমার কাছ থেকে আমার মেয়ের কথা লুকিয়ে গেছিস!(সমুদ্র মনে মনে)

তবে হ্যা,,আপনি একদম চিন্তা করবেন না আপনি বলেছিলেন দেশে ফিরে আসলেই আপনি আর আমি আলাদা হয়ে যাবো।আমার মনে আছে।আর এতে আমার আপত্তিও নেই।কারণ এখন আর আমাকে আর একা থাকতে হবে না।কারণ এখন আমারও পরিবার আছে।তখন আমি আপনার আর আপনার পরিবারের মধ্যে আপনাকে বেছে নিতে পারিনি।কিন্তু এখন আমি আপনার পরিবার ছাড়তে রাজি।আপনি যেইদিন বলবেন সেইদিন আমি ডিভোর্স পেপারে সই দিয়ে দিবো।আর আপনাকে প্রমিজ করছি আলো বা আমি কোনো দিন আপনার সামনেও আসবো না।(আমি কাদতে কাদতে)

সমুদ্র একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে
আমরা আলাদা হলে আলোর কি হবে?

ও আমার সাথে থাকবে!(আমি)

তুই এমনি চার বছর আমার মেয়েকে আমার থেকে আলাদা রেখেছিস।এখনও কি আমি তোকে তাই করতে দিবো!(সমদ্র)

মানে?(আমি অবাক হয়ে)

মানে আলো আমার সাথে থাকবে।
বলেই সমুদ্র উঠে দাঁড়ালো।

আর,,,
আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই আমি সমুদ্রের পায়ে ধরে কাদতে লাগলাম

প্লিজ।আমাকে আলোর থেকে আলাদা করবেন না।আমি ওকে ছাড়া বাঁচব না। ও আমার প্রাণ। আমার সব ও।
বলেই ওর পা ধরে কাদতে লাগলাম

আরে আমার পুরো কথাটা শুন।(সমুদ্র ফুলকে টেনে নিজের সামনে দাড় করালো)

আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।

আর তুইও আমার সাথেই থাকবি।দেখ ফুল আগে আমরা স্বামি স্ত্রী ছিলাম।এখন আমরা বাবা মা।আমাদের প্রতিটা ডিসিশন আমাদের সন্তানের উপর প্রভাব ফেলবে।আমি চাইনা আলোর উপর এমন কিছুর প্রভাব পড়ুক।আর তুইও তো চাস আলো একটা সম্পূর্ন পরিবার পাক।সবার ভালোবাসায় বড়ো হোক।(সমুদ্র)

চাইতো কিন্তু,,,(আমি)

কোনো কিন্তু না।চল পরেরটা পরে ভাবা যাবে।এখন মেয়ে আমার মেয়ের সাথে মজা করি।
বলেই সমুদ্র আমার কাঁধে হাত রাখলো আর একদম বন্ধুদের মত আমরা বেরিয়ে গেলাম রুম থেকে।

আসলে আমাদের সম্পর্ক হচ্ছে বেস্ট ফ্রেন্ড এর।আমি আর সমুদ্র দুজনেই একে অপরের বেস্ট ছিলাম যতক্ষণ না পর্যন্ত আমি উনার স্ত্রী হই।বেস্ট ফ্রেন্ড থেকে হটাৎ বউ হয়ে যাওয়া ও মেনে নিতে পারেনি।আর আমি এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে খাওয়াতে সমুদ্রকে হারিয়ে ফেলি।সেদিন আমাদের বাসর ঘরে সমুদ্র ভালোবেসে আমাকে ছুয় নি।ওর প্রতিটা ছোঁয়ায় আমি শুধু ঘৃণা দেখতে পেয়েছি।সকালে ঘুম থেকে উঠার পর জানতে পারলাম ও ভোর হতেই চলে গেছে।আমি ওকে আটকাতে পারলাম না,,,না ওর বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে না হয় স্ত্রী হয়ে।তখন কেনো যেনো মনে হয়েছে ওকে চলে যেতে দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।প্রথম প্রথম খুব মন খারাপ হতো।খুব কাদতাম নিজের একটা মাত্র বন্ধুকে হারিয়ে।নিজেকে একটা বদ্ধ ঘরে ঢুকিয়ে রেখেছিলাম।যে ঘরটা ছিলো অদৃশ্য যা ছিল আমার মনে।নিজেকে হারিয়ে ফেলতে শুরু করছিলাম তখনই আলো হয়ে আসে আলো আমার জীবনে।যেদিন জানতে পারলাম আলো আসবে সেদিন আমি অনেক খুশি হলাম।কিন্তু মা বাবা আর বাড়ির পরিবার কেউই চায়নি আমি আলোকে জন্ম দেই।আমার বয়স কমছিল মাত্র 16।SSC পরীক্ষা দিয়েছি কলেজে ভর্তি হব।ডক্টর বলেছে মৃত্যুর ঝুঁকিও অনেক বেশি।তবুও সব উপেক্ষা পার করে আমারই 17 বছর জন্মদিনে পৃথিবীতে এসেছে আলো আমার কোলে।
সেদিন হসপিটালের বেডে শুয়ে ওর ছোটো ছোটো হাতটা ধরে বুঝতে পেরেছি আমার সব কষ্টই সার্থক হয়েছে। আলহমদুলিল্লাহ আমরা দুজনই সুস্থ ছিলাম।আমি আমার মনের জোরে আমার মেয়েকে আমার কোলে পেয়েছি।
যখন আমি কারো কথা শুনছিলাম না।তখন বাবা আর বাকি সবাই বলেছিলো সমুদ্রের সাথে কথা বলবে।সমুদ্র যা চায় তাই হবে।কিন্তু আমার জোরাজুরিতে কেউ ওকে কিছু বলেনি।এমনকি সব সময় আমি ছাড়া সমুদ্রের সবার সাথে কথা হয়েছে কিন্তু কেউই বলিনি ওকে আলোর কথা।কারণ আমিই সবাইকে না করে দিয়েছিলাম বলতে।আর আমি নিজেও ওর সাথে কথা বলার প্রয়োজন মনে করি নি আর আলোর কথা তো দূরেই থাক।
যখন আলো একটু একটু কথা বলতে শুরু করলো তখন প্রায় বাবার সাথে কথা বলবে বলে জিদ করতো।তাই ওকে বললাম বাবা আসলে তাকে সারপ্রাইজ দিবো তাই ও সেই আশায় দিন গুনত।কখন ওর বাবা আসবে আর ও সারপ্রাইজ দিবে।মন খুলে খেলবে,প্রাণ খুলে হাসবে।মুখ ফুটে সব বায়না গুলো বাবাকে বলবে।মেয়েরা নাকি বাবার সব চেয়ে আদরের হয়!দেখা যাক ওদের বাবা মেয়ের সম্পর্ক কতো সুন্দর হয়!আচ্ছা আমি কী ভুল করেছি সমুদ্রকে আলোর কথা না বলে!
এইটা ভেবেই আমি সমুদ্রের দিকে তাকালাম।ওর চোখে আমি খুশির ঝলক দেখতে পাচ্ছি।আলোর কথা শুনে বোধ হয় অনেক খুশি হয়েছে!তবে কি আলো যেকিনা আমার একমাত্র পরিবার তাকেও আমায় ছেড়ে যেতে হবে!না না পারবো না।আমি কিছুতেই আলোর কাছ থেকে দূরে সরে থাকতে পারবো না।যদি সমুদ্রের পরিবারের জন্য সমুদ্রকে বিয়ে করতে পারি তাহলে আলোর জন্য সারাজীবন ওর সাথেই থাকবো।কিছুতেই যাবো না ওকে ছাড়া। যতোই সমুদ্র আমাকে ঘৃণা করুক।না আমি আলোকে ছাড়বো না আলোকে সমুদ্র থেকে আলাদা করবো।
ভেবেই নিচের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেললাম।

অন্যদিকে সমুদ্র ফুলের দিকে তাকিয়ে
আমি জানি ফুল তুই কি ভাবছিস!এইবার না তোকে আমি দূরে ঠেলে দিবো না আমাদের আলোকে।নিজের স্বপ্নকে সফল করতে গিয়ে তোকে,,বাবাকে পুরো পরিবারকে আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি।তবে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে তুই আর আমার পরিবার এখনও আমার সাথেই আছিস।দ্বিতীয় বার আমি সব কিছু মিল করার সুযোগ পেয়েছি।এইবার আর হাত ছাড়া করবো না।
বলেই ফুলের কাধ আরো শক্ত করে চেপে ধরল।

কাধ চেপে ধরায় আমি কিছুটা অবাক হলেও আবার চুপ হয়ে গেলাম।


নিচে
ঐযে আব্বু এসে পড়েছে।
বলেই মিতুর কোল থেকে নেমে আলো দৌঁড়ে সমুদ্রের কোলে উঠে গেলো।

আব্বু।তুমি কি এখন আমাকে চিনতে পেরেছো?(আলো)

আব্বু তার রাজকুমারীকে চিনবে না তা কি কোনো দিনও সম্ভব!(সমুদ্র আলোর কপালে চুমু দিয়ে)

বাবা আর মা আমাকে ইশারা দিয়ে জিজ্ঞেস করছে সব ঠিক আছে কি না?
আমিও তাদের ইশারা দিয়ে বললাম সব ঠিক আছে।উনারা যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচলো।

সোনালী আপু আর মিতু ভাবী আমার কাধে হাত রেখে
তুই পেরেছিস ফুল!(সোনালী এক পাশে আমাকে জড়িয়ে ধরে)

বলেছিলাম না সমুদ্র ভাইয়া মানবে!(মিতু ভাবী অন্যপাশ দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে)

হুম। থ্যাঙ্ক ইউ আমাকে সাহস দেয়ার জন্য।(আমি)

চলো চলো এখন অনেক হয়েছে কথা এখন একটু খাওয়া দাওয়া শেষ করা যাক।ছেলেটা সেই কখন এসেছে।(আয়শা)

হুম।চলো চলো আমার অনেক ক্ষুদা লাগছে।কতো দিন মায়ের হাতের রান্না খাই না।আজ মা নিজের হাতে আমাকে খাইয়ে দিবে।কি দিবে তো মা?।(সমুদ্র)

মা অবাক হয়ে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে।শুধু মা না আমরা সবাই।এই আমরা কোন সমুদ্রকে দেখছি! এ তো একদম আলাদা।আগে মা খাবার খাইয়ে দেয়া তো দূরে থাক যদি খাওয়ার কথাও বলত তাহলে মা সহ বাড়ি শুদ্ধ লোককে ধুয়ে দিতো।চিৎকার চেঁচামেচি করে বাড়ি মাথায় তুলতো।সব সময় নিজের মধ্যে থাকা সমুদ্র কবে থেকে এতো বিশাল হয়ে গেলো।কবে থেকে অন্যর ফিলিংসের পরোয়া করতে শুরু করলো উনি।(আমি অবাক চোখে উনার দিকে তাকিয়ে)

কি হলো সবাই হা হয়ে কি দেখছো!চলো খেতে বসা যাক।(সমুদ্র)

বাবা দাদীমা তোমাকে খাইয়ে দিলে তুমি আমাকে খাইয়ে দিবে না?(আলো)

অবশ্যই মা।
বলেই সমুদ্র আলোকে নিয়ে বসলো।


পরেই
সবাই হাসিমুখে খাবার খেলো।


খাবারের পর সবাই নিচে বসে গল্প করছে।সোনালী তো সুট কেস খুলে দেখছে ওর ভাই ওর জন্য কি কি এনেছে!আর অন্যদিকে আলোকে খালি আদো আদো গলায় বলছে
আমার আব্বুর ব্যাগ খুলো না ফুপি।আম্মু বলছে অন্যর ব্যাগ খোলা ভালো না।(আলো)

দূর তোর আম্মু বলছে অন্যর ব্যাগ খোলা ভালো না।ভাইয়ের ব্যাগ খোলা নিয়ে তো কিছু বলে নেই তো।আমার ভাই কি অন্যজন?(সোনালী)

তাইতো আব্বু তো অন্যজন না।তাহলে আমিও আব্বুর ব্যাগ খুলি?(আলো মুখে হাত দিয়ে)

আয় আয়।দুজন মিলে খুলি!
বলেই সোনালী আলোকে নিয়ে ব্যাগ খুলতে লাগলো।

আর তা দেখে আমরা সোফায় বসে বসে হাসছি

বাচ্চাদের মন ঘুরানো কতো সহজ।(মিতু হেসে)

আমার মেয়েটাকে এই সোনালী নিজের মতো বানিয়ে ফেলেছে।(সমুদ্র মাথায় হাত দিয়ে)

পার্টনার ইন ক্রাইম।(আমি হেসে)

যা করার করতে দে।বাচ্চাই তো দুজন।(আরমান)

হ্যা।ওর বয়সে আমার কোলে সাগর আর সমুদ্র ছিলো।বিয়ে দিলে এখন ওর কোলেও থাকতো।বাচ্চা!তোমার আস্কারায় আরো বদমাইশ হয়েছে।(আয়শা)

আমি তো ফুলকেও আস্কারা দিয়েছি।কই ও তো এমন হয়নি।(আরমান)

কারণ ও তো সারাক্ষণ সমুদ্রের কাছে থাকতো। সমুদ্রের ছায়া হয়ে।যেনো দুই দেহ এক প্রাণ।
বলেই আয়শা চুপ হয়ে গেলো।আর সবাই আমার আর সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে রইলো।আমি নিচের দিকে তাকিয়ে আছি আর সমুদ্র আমার দিকে।এতক্ষন হাসিখুশি থাকা মুহূর্ত হটাৎ স্তব্দ হয়ে গেলো।পরিবেশটা স্বাভাবিক করতে মিতু ভাবী বলে উঠলো
সবাই যখন এখানে আছিই তাহলে তোমাদের বড়ো ভাইকে ফোন করে দেখি।

হ্যা হ্যা মিতু মা তাই করো!(আরমান)


চলবে,,^_^