#কতোবার_বোঝাবো_বল 🌿
#ইফা_আমহ্নদ
পর্ব::২৩
— ওর মতো মেয়েরা এটাই খুব ভালো পারে।। কাজের নামে ঠন ঠনা ঠন ।। অকাজের নামের ভন ভনা ভন।। তুমি একবার ভেবে দেখো ,, পুকুর দেখেছে আর নিজের লোভ সামলাতে পারে নি ,, তাড়াতাড়ি মাছ ধরতে নেমে গেছে।। (ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে আবির)
আবিরের কথা শুনে একবার রাগি চোখ নিয়ে তার দিকে তাকালাম কিন্তু রাগ টা আর বেশীক্ষণ স্থায়ী রইল না।। তাকে দেখে হাসতে হাসতে মাটিতে পড়ে যাচ্ছি আমি ।। আবিরের পরনে একটা লুঙ্গি আর গেঞ্জি ।। হাসতে হাসতে বললাম….
— ও আচ্ছা তাই বুঝি,, মাছের কি লোভ দেখেছেন ।। তাই তাড়াতাড়ি লুঙ্গি পড়ে নিয়েছি ,,আমি,,দেখেছেন ।। (আবির কে প্রিন্ট করে আমি)
— সাট আপ ।। মাছির মতো ওতো ভন ভন করো না তো ,,যাও এখান থেকে।।(আবির)
— যাও এখান থেকে,,, হুস ।।।( ভেংচি কেটে আমি)
— হুড় !!( আবির )
— সত্যি ই তোমাদের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কটা কিন্তু আর ৫ টা সম্পকের চেয়ে আলাদা।। দোয়া করি তোমরা সারাজীবন এভাবে একে অপরের ভালোবাসায় আবদ্ধ থাকো।। (বুড়িমা)
বুড়ি মায়ের কথা শুনে আমাদের ঝগড়া সাথে সাথে অফ হয়ে গেল। আমি একবার তাদের দিকে তাকিয়ে আবিরের দিকে তাকালাম।। কিন্তু তার মুখের আঁকার ঠিক আগের মত ই আছে।।
— বলছিলাম কি বুড়িমা ।। আসলে আমি আর আবির ভাইয়া স্বামী স্ত্রী…
আর কিছু বলার আগেই বুড় দাদু বললেন…
— এই আবার কেমন কথা।। নিজের স্বামী কে কেউ ভাইয়া বলে ।। তোমাদের মত শহরের মেয়েদের আমি ঠিক বুঝতে পারি না।।
— আসলে আমি মিষ্টির দূর সম্পর্কের ভাই হই ।। তাই ভাই ভাই বলে ডাকতে ডাকতে ,,অভ্যস হয়ে গেছে।। (আমাকে থামিয়ে দিয়ে আবির)
— ও আচ্ছা ।।
আমি আবিরের কথার কোনো মানে খুঁজে পেলাম না।। শুধু ডেপডেপ করে তাকিয়ে ছিলাম।।
অনেকক্ষন কথা বলে আমরা একসাথে লাঞ্চ করে নিলাম।। ব্রেক ফাস্ট তো আর হলোই না ।।নো প্রবলেম,, বাড়িতে গিয়ে একসাথে দুই দিনের ব্রেক ফাস্ট করে নিবো ।।
বিকেলে আর তাদের ঘর থেকে বের হলাম না ।। এই ধরনের ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পরে কি আর বাহিরে যাওয়া যায়।। তারা যেতে পারে কারন তাদের অভ্যস আছে ।। কিন্তু আমার তো আর নেই।।
সন্ধ্যা হতে না হতেই ডিনার করে নিলাম।। গ্ৰামে তো সবাই সন্ধ্যা হওয়ায় আগেই ঘুমিয়ে পড়ে আর খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে।। তাদের নিয়ম অনুযায়ী আমরা ডিনার করে অন্য একটা ঘরে ঘুমানোর জন্য এসেছি।।ঘুমাবো যে কিন্তু ঘুমাবোটা কোথায় । দুজনের একটা চৌকি ।। নিচের শোয়া যাবে না।।তার উপর একটা বালিশ আর একটা গ্ৰাম্য নকশি কাঁথা ।।আমি সারা ঘরে পায়চারী করছি আর আবির বালিসে হেলান দিয়ে কাঁথাটা কোমর অবধি দিয়ে আমার কান্ড দেখছে।।
— তুমি পায়চারী করছো ,,আরো বেশি করে করো ।। ৪ টা বাজলে আমাকে ডাক দিয়ে দিও কেমন।।আমি ঘুমালাম,,আর হে যদি ভূতে টূতে ধরে আসে তাহলে আমার ঘুম ভাঙাতে বারন করবে ।। বলবে তোমাকে ধরে নিয়ে যেতে!!( আবির)
— ভভভূত ।। ভূত বলে কিছু হয়না !! (চৌকিতে উঠে আমি)
— যেটা তো আসলেই দেখতে পাবে ।। গুড নাইট!!
বলেই আবির অন্যপাশ ফিরে শুয়ে পড়লো ।। আর তো এখন একটু একটু ভয় করছে।। আবিরকে ধাক্কা দিলাম কিন্তু তার কোনো রেসপন্স নেই ।। হয়তো ঘুমিয়ে গেছে।। চারপাশে থেকে কেমন যেন আওয়াজ পাচ্ছি,,ভয়টা আরো বেড়ে গেল।। আমি তাড়াতাড়ি কাঁথা টার ভেতরে ঢুকে আবিরকে পেছন থেকে আষ্ঠে পিষ্ঠে জরিয়ে ধরে চোখ দুটো খিচে বন্ধ করে নিলাম।। পারলে তো আবিরের বুকের মধ্যে ঢুকে যাই।। হাজারো ভয় থাকার পরও ঘুমের দেশে পাড়ি জমালাম।।
🌅 🌅 🌅
মিষ্টি মিষ্টি বলে আবির আমাকে ডাকছে ।। কিন্তু আমি উঠছি না ।। আমি আবিরকে শক্ত করে এখনো ধরে আছি ।। এর মধ্যে অলরেডি বুড়িমা ৪ বার এসে ডেকে গেছে।। আবির ও উঠে গেছে কিন্তু কোনো হুস নেই আমার। আমি ঘুমে ব্যস্ত।।
— এই মেয়ে তুমি কি উঠবে ।। উঠলে উঠো না উঠলে না উঠো ।। এক লিষ্ট আমাকে তো ছাড়ো ।। (রিরক্তিকর সুরে আবির )
— ঘুমান তো ।। এখন ৪.৩২ বাজে ।। এতো তাড়াতাড়ি উঠে কি মহাভারত টা অশুদ্ধ করবেন ,,,শুনি ।।( ঘুম ঘুম চোখে না তাকিয়ে আমি)
— সেটা তোমাকে জানতে হবে না ,, (আমাকে ছাড়িয়ে আবির) এবার তুমি ঘুমাও আমি চললাম।।
আবিরের মুখ থেকে চললাম শব্দ টা শুনে ঘুমটা সাথে সাথে উধাও হয়ে গেল।। আমি তাড়াতাড়ি উঠে বসে আবিরের দিকে তাকিয়ে বললাম…
— আমি যাবো তো,,
— আমি কি যেতে বারন করছি নাকি । আর তুমি কি এই ড্রেসেই যাবে ।। গেলে আমার কোনো সমস্যা নেই।। আমি নিজে যেতেই পারি ।।(আবির)
আবিরের সাথে কথা বললে শুধু শুধু মুখ ব্যাথা হবে এছাড়া আর কিছু না।।তাই আর কোনো কথা বাড়ালাম না।। সোজা ড্রেসটা চেঞ্জ করে নিয়ে ,,,বুড়ো বুড়ির কাজ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এলাম।। অবস্য আসার সময় আবির তাদের কিছু টাকা দিয়েছিলো তারা নিতে চাই নি ।। কি জোর করে দিয়েছে আর বলছে ,,যদি না নেই তাহলে আর তাদের কাছে যাবে না ।। তাই নিয়েছে ।। আমাদের আবার তাদের ঐ ছোট্ট কুড়েঘরে মেয়ে বলেছে।।
গাড়ি চলেছে নিজের আপন গতিতে।। আমি জেগে আছি,, ঘুম ভাঙার পর আর ঘুম আসছে না।। আর আবির ঘুমিয়ে আছি আমার কাঁধের উপরে ।। আমি একহাত দিয়ে তাকে জরিয়ে ধরে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি আর বাহিরের প্রকৃতি দেখছি।। কখনো বাসে উঠি নি এই প্রথম এক্সপেরিয়ান্স ।। ভালো না লাগলেও খারাপ লাগছে না,, নিজের প্রিয় মানুষটা কাছে হয়তো তাই ।।
প্রায় ৩ ঘন্টা বাস জার্নি করার পর আমরা পৌঁছে যাই গ্ৰামে ।। কিন্তু বাড়িতে নয় ।। এখান থেকে বাড়িতে যেতে আধ ঘন্টা সময় লাগে ।। বাস থামতেই আমি জানভি কে ফোন দিয়েছি।। পাক্কা ১০ মিনিট পর জানভি বাস স্টপে এসে পৌঁছায়।। এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে পৌঁছালো বুঝতে পারলাম না।। জানভি এসেই আমাকে জরিয়ে ধরলো।। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে ,, মুখের বাজে চিন্তার ভাঁজ ।। আমাকে দেখতেই মুখের কোনো মিষ্টি হাসি ফুটে উঠলো।।
বাইককে করেই দাদু বাড়িতে পৌঁছালাম।।ড্রাইভ করছিল জানভি ,,পেছনে আবির আর তার পেছনে আমি ছিলাম।।
বাড়ি পৌঁছে আগে শাওয়াল নিয়ে নিলাম।।যেহুতু লাকেজ আগেই পাঠিয়ে দিয়েছিল।। তাই আর কোনো সমস্যা হলো না।। কিন্তু সমস্যা হল অন্য জায়গায়।। সেদিন বৃষ্টিতে ভিজা+ সারারাত ঐ অবস্থায় থাকাতে হাঁচি দিতে দিতে আমি শেষ ।। শুধু আমিই না আবিরও ।। আমাদের দেরিতে ফেরার কারন যেনে তো বাড়ির সবাই টেনশনে পড়ে গিয়েছিল।। কিন্তু এখন আর সেই টেনশন নেই।। সবাই এখন আমাদের ঠান্ডা কমানোর চিন্তায় মগ্ন।। একবার আমি হাঁচি দিচ্ছি তো আরেক বার আবির ।। হাঁচি দিতে দিতেই জীবনটা তেজপাতা হয়ে গেল।।।
🍁 🍁 🍁
কেটে গেলো ৩ টা দিন ।। এই ৩ দিনে সবাই নিজেদের মতো করে কাটিয়েছে।। সকালে সবাই একসাথে নদীর তীরের কুয়াশা উপভোগ করা আর রাতে সবাই মিলে একসাথে কফি খাওয়ার আর গল্প করাটা আমাদের স্বভাব হয়ে গেছে।। সত্যি ই কিভাবে কেটে গেলো বুঝতেই পারি নি।। কালকে আপির গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান।।তাই সবাই ,,,মানে আমার পুরো ফ্যামিলি একসাথে নদীর তীরে হাঁটতে যাচ্ছি।। ছোটরা যাচ্ছে আগে আগে আর বড়রা পিছে পিছে।। হঠাৎ নদীর মাঝে কচকুটির ফুল আমার নজর কেড়ে নিলো ।। প্রথম বার এই ফুল দেখছি।। কেমন জানো অদ্ভুত দেখতে । অনেক রকমের ফুল দেখেছি কিন্তু এমন ফুল দেখি নি।। তাই বারবার কেনো জানি ফুলগুলোকে ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করছে।। কিন্তু তা সম্ভব নয়।। কিছুদূর এগিয়ে যেতেই আবির কিছু গোলাপ ফুল এনে আমার সামনে ধরলো। কিন্তু আমার যে এই ফুল গুলো পছন্দ নয় কি করবো আমি বুঝতে পারছি না।।
চলবে….💞💞
#কতোবার_বোঝাবো_বল 🌿
#ইফ_আমহ্নদ
পর্ব::২৪
— মানুষের মন সবার দ্ধারা বোঝা সম্ভব নয়।।যেমন তোমার মতো নোংরা মন মানসিকতা মানুষ তো একদম ই না ।। মাঝে মাঝে ভাবি ,,, তুমি সত্যি কি নিবিড় ভাইয়ার ভাই ।। নাকি অন্য কেউ।। ( আমাদের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে জানভি)
জানভির কথা শুনে আমি আর আবির জানভির দিকে তাকালাম।। তাকিয়ে দেখি সে আমাদের দিকেই এগিয়ে আসছে ।। হাতে তার কচকুটির ফুল।। আর কোমর পর্যন্ত ভেজা।। জামা কাপড়ে কাঁদা লেগে মাখামাখি।।
জানভি এসে আমার হাতে ফুল গুলো ধরিয়ে দিয়ে আবার সামনের দিকে হাঁটা দিলো।। আসলে জানভি আবিবের সাথে কোনো কথা বলতে চায় না।। সেদিন পার্কের সেই ঘটনার পর জানভি আবিরকে একদমই সহ্য করতে পারতো না।। আবির যেখানে থাকে তার থেকে ১০ হাত দূরে থাকে জানভি। আমি কেও আবিরের থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে সবসময়।।জানভি চলে যেতেই আবির আমার হাতে ফুলগুলো ধরিয়ে দিয়ে করুন সুরে বললো…
— আমি জানি টাকা দিয়ে এমন হাজারটা গোলাপ ফুল কেনা যাবে কিন্তু জানভির দেওয়া এই ফুল গুলো কেনা যাবে না।। কিন্তু আমি তো আর জানভির মতো গ্ৰাম + শহরের ছেলে নই যে নদীতে নেমে এগুলো নিয়ে আসতো ।। তাছাড়া আমার অসভ্যসও নেই আর আমি কখনো গ্ৰামে আসি নি ,,তাই সাঁতার ও জানি না।। যদি ইচ্ছে হয় তাহলে তোমার কাছে রেখো নাহলে ফেলে দিও।।।
বলেই সামনের হাঁটা দিল।। আমি একবার দুজনের দেওয়া দুটো ফুলের দিকে তাকিয়ে দুটোতেই আমার ঠোট দুটি ছুয়িয়ে দিয়ে আমিও সামনের দিকে হাঁটা দিলাম।।
সন্ধ্যার পর থেকে সবাই একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছি।। নামে আড্ডা দিচ্ছি।। শুধু একে অপরের পিছনে লাগা।। ঠিক করা হলো আমরা স্পিন দা বতল খেলবো ।। তাই একসাথে সবাই গোল করে বসলাম।। এর মধ্যে জয়িতা (কাজের মেয়ে) এসে কফি আর পকোড়া দিয়ে গেছে।। আমরা খাচ্ছি আর খেলছি ।। প্রথম বার ঘোরানোর পরে বোতলটা গিয়ে থামলো নিবিড় ভাইয়ার সামনে সে তো একদম চুপ করে ইনোসেন্স ফেইস করে বোতলটার দিকে তাকিয়ে আছে।। নিবিড় ভাইয়া ট্রুথ ওর ডিয়ারের মধ্যে ডিয়ার চুজ করলো ।। আবির ” আপিকে সবার সামনে প্রোপজ করার ” ডিয়ার দিলো।। নিবিড় ভাইয়া দৌড়ে নিচে চলে গেলো।। আমরা ভেবেছিলাম ,, হয়তো ভাইয়া প্রোপজ করার ভয়ে পালিয়েছে কিন্তু না।। সে নিচে গিয়ে বাগান থেকে ফুলকপি এনে আপির সামনে হাঁটু গেড়ে বসলো পড়লো ,,তারপর বললো….
— তোমার এই ছোট পেটে কি একটু জায়গা হবে ।। বেশি না মাএ একটু ।।
— কেন ,, জায়গায় দিয়ে তুমি কি করবে??( কৌতূহল নিয়ে হিয়া)
— না মানে তুমি কি আমার বাচ্চার জননী হবে ।।(নিবিড়)
আমি চুপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়ালো।। যার অর্থ হে ।। এতোক্ষণ আমরা চুপ থাকলেও এবার সবাই শব্দ করে হেসে দিলাম।। কি প্রোপজ মাইরি ।। জীবনেও দেখিনি ,,শুনিনি ও।।আমার বোতলটা ঘোরানো হলো ।। কিছুক্ষণ ঘুরে বোতলটা জানভির দিকে এসে আটকে গেলো । জানভি ট্রুথ চুজ করলো ।। সাদিব জানভিকে তার ভালোবাসার মানুষটির কথা জানতে চাইলো।। তখন জানভি উঠে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে তার মনের কথা বলতে শুরু করলো….
( সাদিব , সামান্তা আমার মামাতো ভাই বোন!! রাতুল, রাফিজা আমার চাচাতো ভাই বোন।।)
— হ্যা আমি একজনকে ভালোবাসি,, খুব ভালোবাসি।।তার অজান্তেই তাকে ভালোবাসি।। এই জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসি।। আর সারাজীবন ভাসবো ।।তোমরা ভাবছো ,,এটা কেমন ভালোবাসা।। সেখানে আমি আমার মনের কথা আমার প্রিয় মানুষটিকে বলতেই পারি নি।। আমার ভয় করে যদি সে আমাকে রিজেক্ট করে।। যদি সে আমার কাছ থেকে দূরে সরে যায়।। আমি সহ্য করতে পারবো না।। সেই ছোট্ট বেলা থেকে তাকে ভালোবাসি আর সারাজীবন তাকেই ভালোবাসতে চাই।। ।।
জানভি আমার দিকে তাকিয়ে এমন ভাবে ফিলিং দিয়ে বলছিলো যে,,আমাকেই বলছিলো ।।।।
— কে সে জানভি ভাই !!( রাতুল)
— আমার কিন্তু হানির জন্য কষ্ট হচ্ছে।। তুমি ওর থেকেও অন্য কাউকে বেশি ভালোবাসো।।( রাফিজা)
— সেটা জেনো তোরা কি করবি ।। শুধু এতটুকু জান,, যে আমি তাকে আমির বিয়ের দিন রাতে প্রোপজ করছি।।
— এই জান দেখো তুমি আমার থেকে আর কাউকে বেশি ভালোবাসবে না বলে দিলাম কিন্তু।। মিষ্টি আর জান ছাড়া কি মিষ্টি জান হয় । তুমি বলো।। তুমি আমাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসো তাই আমাকে হানির বদলে মিষ্টি বলে ডাকতে ।। তার সাথে তোমার নামটা মিলিয়ে মিষ্টি জান বানিয়েছো। আমি বলে দিচ্ছি কিন্তু ,,আমি কিন্ত সে মেয়েকে খুন করে ফেলবো।।( ইনোসেন্স ফেইস করে রাগি লুক নিয়ে আমি)
সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।। জানভি এসে আমার হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।। কিন্তু আমি কিছুতেই থামছি না,, মুখ ফুলিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে আছি।।জানভি আমাকে তার দিকে ফিরিয়ে ,,তার ঠোঁট দুটো আমার কপালে ছুঁয়ে দিলো।। আমিও তাকে জরিয়ে ধরলাম।।
— কি মিষ্টি না ওদের সম্পর্ক টা ।। শেষ্ঠা হয়তো এদের একে অপরের জন্য তৈরি করেছে।। যাকে বলে মেইড ফর ইচ আদার।।(নিবিড়)
— হম!!( হিয়া)
সবাই মুখে হাসি থাকলেও হাসি নেই আবিরের মুখে। নিবিড় ভাইয়ার কথা শুনেই , কোনো কথা না বলে নিচে চলে গেল।। একটু পর ডিনারের ডাক পড়তেই আমরা সবাই ডিনার করতে নিচে চলে গেলাম।।ডিনার করে যে যার মত ঘুমিয়ে পড়লাম।।।
🍂 🍂 🍂
হলুদের শাড়ি পরেছি কিন্তু কিছুতেই পেট টাকে ডাকতে পারছি না।। এই শাড়ির এই একটা সমস্যা ভালো লাগছে না।। তার উপরে আবার ব্লাউজের ফিতাটা বাঁধতে পারছি না।। সবই বিরক্তিকর লাগছে।।সবাই যে যার নিজের মতো সাজছে।। আমাকে সাহায্য করার মতো কেউ নেই।।শাড়িটা যে খুলে রাখবো ,,তার কোনো উপায় নেই কারন ,, সাজটা শাড়ির সাথে ম্যাচিং করে সেজেছি।।
হঠাৎ ফোনে একটা মেসেজ চলে এলো ।। আমি সামান্তাকে বললাম…
— সামু দেখতো কে মেসেজ করেছি ।।
— আপি,, তুই দেখ।। দেখছিস না আমি সাজতে ব্যস্ত।। (সামান্তা)
— ঠাঁটিয়ে লাগিয়ে দিবো একটা।। বড়দের কথা শুনতে হয় জানিস না।।(আমি)
সামান্তা গোমরা মুখ করে আমার দিকে তাকিয়ে মেসেজ নোটিফিকেশন দেখে বললো…
–মিষ্টি প্রেমিকের মেসেজ ।।আচ্ছা এই মিষ্টি প্রেমিকটা কে ।। মেসেজ টা সিন করে দেখি!!( (সামান্তা)
মেসেজ সিন করার আগেই আমি ফোনটা হাতে থেকে নিয়ে সিন করলাম….
“” চিলে কোঠার ঘরে একবার আসতে পারবে ।। ”
আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না।। আমাদের বাড়ির চিলে কোঠার মিষ্টি প্রেমিক কি বা করবে।।তাই আমি টেক্সট করলাম…
“”আপনি এখানে চিলে কোঠার ঘরে কি করছেন।।আর এখানে ই বা এলেন কবে ।। কি করে”
“” তোমার জন্য,, তাড়াতাড়ি এসো ।। ওয়েট ফর ইউ”” (অন্যপাশের টেক্সট)
আমি আর কোনো কথা না বাড়িয়ে চিলে কোঠার দিকে পা বাড়ালাম।। চিলেকোঠার ঘরের ভেতরে ঢুকতেই কেউ আমার হাত ধরে টেনে ভেতরে নিয়ে গিয়ে দেয়ালে চেপে ধরলো।।এই প্রথমবার আমি আমার মিষ্টি প্রেমিককে দেখছি ,,তাই আবার খুব কাছ থেকে।। কিন্তু ফেইস দেখা যাচ্ছে না,,পুরো ঘরে অন্ধকার বিরাজ করছে।। তিনি আমার দুই বাহু ধরে পেছনে ফিরিয়ে ব্লাউজের ফিতাটা বেঁধে দিলেন।। ফিতা বাঁধার সময় তার হাত বারবার আমার পিঠে ছুঁয়ে যাচ্ছিলো ।। যাতে বারবার আমি শিহরিত হচ্ছিলাম।। আমাকে সামনের দিকে ফিরিয়ে তিনি সেফটিপিন দিয়ে আমার শাড়িটা ঠিক করে দিলেন যাতে আমার পেট দেখা না যায়।।শাড়িটা ঠিক করে দিয়ে ,, আমার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আমার পা তার হাঁটুর উপর রেখে আলতা পরিয়ে দিতে লাগলো ।। খুব যত্ন সহকারে হালতা পরিয়ে দিয়ে সোজা হয়ে আমার সামনে দাঁড়িয়ে বললেন….
— আচ্ছা ,, তুমি কি আমাকে সত্যি ই ভালোবাসো নাকি ,, আমাকে দেখার জন্য অভিনয় করছো ।।আমাকে কি ভালোবাসা যায় না।। তুমি কি আমাকে ভালোবাসতে পারো নি।। (একটু থেমে আবার আবির) তুমি কি জানভিকে ভালোবাসো ।। তাহলে আমার কোনো সমস্যা নেই,, আমি নাহয় দূর থেকে ই তোমাকে ভালোবাসবো ।। তুমি যাতে খুশি থাকো ,,ভালো থাকো সেটাই করার চেষ্টা করবো।। পিলিস বলো …..
কি বলবো সত্যি ই বুঝতে পারছি না।। আমি তো জানভিকে ভালোবাসি না ।। আমি যে শুধু মাএ ওকে আমার ভাইয়ের চোখে দেখি।।হে কালকে রাতে ওমন করেছিলাম।। কারন আমার কোনো জিনিসে আমি কাউকে ভাগ দিতে চাই না।।
চলবে …💞💞