কাননবালা পর্ব-০৫

0
405

#কাননবালা!
#আয়েশা_সিদ্দিকা
পর্বঃ৫

নিশুতি রাত।চারপাশে ঘুটঘুটে অন্ধকার।ঝিঁঝি পোকার অনবরত আওয়াজ আর বেলি ফুলের গন্ধে চারপাশ মোঁ মোঁ করছে।হুট করে গোলির মোড় থেকে তিন চারটে কুকুর ঘেউ ঘেউ করে ডেকে উঠে।নীতু কান্নারত অবস্থায়ই কেঁপে ওঠে। নীতুর কুকুর ফোবিয়া আছে! কিন্তু আজ কুকুরের ডাকের থেকেও মানুষের বুলিকে ভয়ংকর লাগছে! নীতু দ ভঙ্গিতে বসে আছে ছাদের রেলিং ঘেসে।ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে নীতু।পড়নের জামা ঘামে ভিজে গেছে,হাতে পায়ে বসেছে মশার কামড়!তবুও কোন দিকে লক্ষ্য নেই মেয়েটার।নিজেকে ভেঙে চুড়ে কাঁদছে নীতু। এ কান্না অপমানের, লজ্জার! নিজেকে তুচ্ছ মনে হয় নীতুর।বিধাতার কাছে করে বসে অভিযোগ। চামড়ার রঙই যদি গুরুত্ব পায় মানুষের কাছে তবে কেন এই ভিন্নতা? কেন সবাইকে এক রঙে পাঠালো না?নীতু অত্যাধিক মোটা নয়।কিছুটা ভরাট সাস্থ্য!তাতেই সে হাতি উপাধি পেয়ে বসে আছে! আবারো ডুকরে কেঁদে ওঠে নীতু! উন্মাদের মত নিজের জর্জেট ওড়না দিয়ে হাতে পায়ের চামড়া ঘসতে থাকে।যেন মুছিয়ে ফেলতে চায় নিজের কালো রঙ। জর্জেট ওড়না দিয়ে জোরে জোরে ঘসার কারণে হাতের নরম চামড়া জ্বলে ওঠে।কিন্তু সেদিকে খেয়াল নেই মেয়েটার!আজ সে নিজের কাছে নিজে পরাজিত!

“কি করছিস নীতু?নিজেকে সামলা বোন।”….. বলে চেঁচিয়ে ওঠে জায়েদ।
নীতুর হাত থেমে যায়। কিন্তু বুকের ভিতরের রক্তক্ষরণ কি থামে? থামে না।জায়েদ পরম ভরসায় নীতুর পাশে বসে হাত মুঠো করে ধরে।যেন বলতে চায়,আর কেউ পাশে না থাকুক আমি আছি তো!
নীতু বিড়বিড় করে বলে,” দাদাভাই? ও দাদাভাই, আমার এত কষ্ট কেন হচ্ছে বলো তো?ভীষণ কষ্ট হচ্ছে, দাদাভাই!কলিজাটা পুড়ছে!মনে হচ্ছে কেউ বিষ ঢেলে দিয়েছে!তুমি গন্ধ পাচ্ছো দাদাভাই?মন পুড়ার গন্ধ!শরীরটা কেন পুড়ে না? দাদাভাই এই কুৎসিত শরীরটা কেন জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যায় না?বল তো?আমার কপালে কি ভালোবাসা বলতে কিছু নেই?এতটা কপাল পোড়া করে কেন পাঠালো আল্লাহ?”

জায়েদ অনুভব করে তার বুকের ভিতরটা জ্বলছে।এই মেয়েটা এত অসহায় কেন?
নীতু ফের বলে,”দাদাভাই, সবার কাছে এতটা তুচ্ছ কেন আমি?গাঁয়ের রঙই কি আসল?মানুষের মন বলে কিছু থাকতে নেই?পাত্রস্থ মেয়ে ঘরে থাকা পাপ!পরিবারের বোঝা কমাতে আল্লাহ কি আমার জন্য একটা পুরুষ পাঠাতে পারে না?এতবড় দুনিয়াতে কি আমার জন্য একটা পুরুষ নির্বাচিত হয়নি?আমি এতটাই কি জঘন্য? এতটাই কুৎসিত? ”

“চুপ কর নীতু।নাহলে থাপ্পড় দিয়ে গাল লাল করে দিবো।তুই জঘন্য নস।জঘন্য ওরা যারা তোকে মানুষ বলে বিবেচনা করেনা।”…… বলতে বলতে জায়েদ কেঁদে দেয়।

” তুমি কাঁদছো দাদাভাই?ছিঃ পুরুষ মানুষের কাঁদতে নেই, জানো না?আমার মত একটা কালো মেয়ের জন্য তুমি কাঁদছো এ কথা লোকে জানলে হাসবে দাদাভাই!আমাকে নিয়ে উপহাস করা যায়।কাঁদা যায় না!”…..বলতে বলতে নীতু জায়েদের কাঁধে মাথা রাখে।দু-চোখ বন্ধ করতেই দু’ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে গাল বেয়ে।কালো মেয়ের চোখের জল কেমন হয়?তাও কি কালো?নাকি অন্য কোন রঙ সেই জলের?

নীতুর কানে অনবরত বাজতে থাকে তাজের মায়ের বলা ঐসব তিক্ত কথা!যা সে সহজ ভাবে বলে গেলেও একবারো চিন্তা করেনি নীতু সে সব কথা সহ্য করতে পারবে কিনা?
” এই পাতিলের তলার মত রুপ নিয়ে এসেছো আমার ছেলের বউ হতে?লজ্জাও করলো না।কোনদিন নিজেকে আয়নায় দেখেছো মেয়ে?এই তো রুপ তারপর তো বয়সেও আমার ছেলের বয়সী! কি বেল্লালপনা?ছিঃ ছিঃ! বুড়ি একটা মেয়ে হয়ে পটিয়ে পাটিয়ে আমার ছেলের মাথা খেয়ে বসে আছো।ভালোই তো চতুর!আজ পর্যন্ত কটা ছেলের মাথা খেয়েছো মেয়ে?কালো হলে কি হবে হাতির মত শরীর দিয়ে পুরুষ পটাতে তো ভালোই পারো। “…..এত গুলা কথা ঐ মহিলা খুবই সহজ ভঙ্গিতে বলে গেলো।

নীতু তখন বিস্ফোরিত নেত্রে তার কথা শুনছিল।নীতুর মনে হলো দিনে দুপুরে তার মাথায় বজ্রপাত পড়েছে!নীতুর বিশ্বাস হচ্ছিল না এরকম কথাও মানুষ বলতে পারে! নীতুর শিক্ষা, যোগ্যতা,মার্জিত ব্যবহার কোনোকিছুই তাজের মায়ের চোখে বিঁধলো না।বিঁধলো শুধু শরীরের রঙটা!
এক সপ্তাহ আগে তাজ কল করে বলেছিল, ” নীতু তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে।কাল আম্মা তোমার সাথে দেখা করতে যাবে।”
নীতু তখন ভীষণ অবাক হয়ে বলেছিল, “কেন?”

তাজ প্রতিত্তোরে হেসে বলেছিল,”আমার মায়ের একমাত্র ছেলের ইদানীং এই শহরে মন টিকে না।তাই ছেলের মন ফিরানোর ব্যবস্থা করতে যাবে!”

নীতু ভীষণ নার্ভাস হয়ে পড়েছিল।তাজ আসবে নাকি দুদিন পড়ে।তার আগে তার মা দেখা করতে চায়।নীতু ভীষণ ভয় পাচ্ছিল।তাজ সে কথা শুনে কেবল হেসেছিলো।বলেছিলো,”আমার সাথে তোমার দেখা একটু অন্যরকম ভাবেই না হয় হোক! আমি দেখতে অতোটাও খারাপ নই।এই বন্ধুর উপর ভরসা করতে পারো।”
ভরসা তো নীতু করেছিলোই।একরাশ নার্ভাস নেস নিয়েই বেছে বেছে আলমিরার সবচেয়ে সুন্দর শাড়িটা পড়েছিলো।চোখে যত্ন করে কাজল দিয়েছিলো।ঠোঁটে হালকা রঙের আঁচ দিয়েছিল।লম্বা চুলগুলো শ্যাম্পু করে ছেড়ে দিয়েছিলো পিঠ জুড়ে!কানে গলায় সেতুর অর্নামেন্টস থেকে বেছে বেছে ঝুমকো, পাতলা চেন পড়েছিলো।
নীতুকে সেদিন দেখে ভাবি পর্যন্ত প্রশংসা করলো! এই এত সজ্জা তাজের মায়ের চোখে পড়লো না।নীতুর বিশ্বাস,ভরসায় পরিপূর্ণ চোখদুটো তার নজর কাড়লো না! তার নজরে বিঁধলো কেবল,নীতুর গায়ের রঙ!

তাজের মা নীতুকে প্রথমে দেখে কোন কথাই বলেনি।নীতুর মা একজন অপরিচিত মহিলা দেখে প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও পড়ে নিজেকে সামলে নিয়েছিলো।যার ঘরে দু দু’টো অবিবাহিত মেয়ে আছে তার ঘরে মানুষ আসতেই পারে।তাই সে খুব পরিচিত ব্যবহার করলো।ঘরে যা আছে তা দিয়েই সাধ্যমত আপ্যায়ন করলো।তাজের মাও নিজের পরিবারের সকল আদ্যোপন্ত বলে গেলেন হাসি মুখে।নীতু পাশে দাঁড়িয়ে তা চুপচাপ শুনে গেলো। যাওয়ার সময় নীতুর মায়ের কাছে থেকে ফোন নম্বর চেয়ে নিয়ে গেলো।নীতু যখন গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিতে গেলো তখন তাজের মা ঐসব কটু কথা গুলো বলে গেলো।নীতুকে হতভম্ব অবস্থায় রেখেই তিনি বেড়িয়ে গেলেন। রাতে তাজ ফোন করলো না।এমনকি পরদিনো না।তার পরদিন বিকেল বেলা কল করে নীতুকে রুপসা ব্রিজের কাছে আসতে বললো।নীতু কোথাও একটা ছোট্ট আশা নিয়ে তাজের সাথে দেখা করতে গিয়েছিল।কিন্তু সেখানে গিয়ে তাজকে বিধ্বস্ত রুপে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো।তাজ বারবার শুধু নিজের চুল টানছিল। খোঁচা খোঁচা দাড়িতে হাত বুলাচ্ছিলো।নীতুর মায়া লাগলো।তাজকে সেদিন প্রথম দেখেও নীতুর মনে হলে কত চেনা মানুষটা।তাজ সেদিন কোন কথাই বলতে পারলো না,শুধু অসহায় চোখে তাকিয়ে ছিলো।নীতু ঘন্টাদুয়েক পর যখন চলে আসছিলো তখনও তাজ কিছু বললো না।নীতুর বারবার মনে হলো,এই বুঝি তাকে তাজ ডাকবে!তাকে ফিরাবে!বলবে, “দেখো আমি সবটা সামলে নিবো!” কিন্তু কিছুই বললো না।ভরসা দিয়ে যারা কথা বলে একসময় তারাই নির্ভরসার কাজ করে!

সেদিনের পর আজ বিকেলে তাজের মা এসে সেতুকে আংটি পড়িয়ে নিজের পুত্রবধু হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষনা করে গেলো!নীতু সবটা অবাক চোখে দেখছিলো।তার মাথা কাজ করছিল না।এত কিছু কখন হলো।মা কিছুই তাকে জানালো না?এতটা অবহেলিত, অযাচিত এই পরিবারে সে? নীতু অবাক নেত্রে তাকিয়ে দেখছিলো তার মায়ের, ভাইয়ের বউয়ের মেয়ে বিদায়ের তৎপরতা! এতটা খুশি তারা ঘার থেকে বোঝা নামাতে। আর সেতুও সবটা হাসিমুখে মানছিলো!লজ্জানেত্রে পাটভাঙা শাড়ি পড়ে বসেছিলো!ফর্সা শরীরে টকটকে লাল শাড়ি,সত্যিই ভীষণ সুন্দর! আচ্ছা নীতুকে কি এই লাল শাড়িতে মানাতো?নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করে।

নীতু একছুটে নিজের রুমে গিয়ে তাজকে কল করেছিলো।জিজ্ঞেস করেছিলো, “এসবের মানে কি?”
উত্তরে তাজ ঠান্ডা কন্ঠে বললো,” অনেক চেষ্টা করলাম নীতু।মা শুনলো না।মা কিছুতেই তোমাকে আমার পাশে চায় না।সে মরে যাবার হুমকি দিলো।আমি চিল্লাফাল্লা করলাম।সে কাল থেকে নাওয়া খাওয়া বন্ধ করে দিলো।আমি কিছুই করতে পারলাম না নীতু!তাদের একমাত্র ছেলে আমি।আমি তাদের কি করে কষ্ট দিবো নীতু?”

“আমাকে ঠিকই কষ্ট দিতে পারলেন, তাজ!আজ আমার বোনের হাতে আপনার নামের আংটি উঠলো।আপনার মায়ের আমাকে পছন্দ হলো না। ভালো কথা কিন্তু আমার বোনকে পছন্দ করে কেন আমাকে অপমানিত করলেন?”

“আমি চেষ্টা করেছি নীতু।মা শুনলো না।রাগ করে বলেছি,যা খুশি করো।তাই করছে। নীতু,মানুষ কিছু কিছু ক্ষেত্রে সত্যিই ভীষণ অসহায় হয়!কিছু মুহূর্তের কোন সঠিক ব্যাখ্যা থাকে না!”

নীতু শ্লেষ কন্ঠে হেসে বলেছিলো,”আজ আবারো স্বীকার করলাম,আপনি খুবই সুন্দর করে কথা বলতে পারেন। আমাকে অপমান করতে একটুও বাধলো না।সত্যিই কি চেষ্টা করেছিলেন নাকি আপনার মায়ের মত আঠারোর যৌবন দেখে নিজেকে সামলাতে পারেন নি।”

নীতুর কথা শুনে তাজের মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। কিছুটা রুক্ষ কন্ঠেই তাজ বলে উঠলো,”আমার মনে পড়ে না আমি তোমাকে কখনো ভালোবাসি কথাটি বলেছি।বা কোন প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।যে তুমি এভাবে বলছো।আমরা দুজন বন্ধু ছিলাম নীতু।সেখান থেকেই সম্পর্কটা আগাতে চেয়েছি তাও আমি একক ভাবে।তারপরও কিভাবে তুমি আমাকে দোষ দাও।আমি তোমারই জন্য যা কখনো করিনি তাই করেছি।ঢাকা থেকে খুলনা ছুটে এসেছি।মায়ের বিরুদ্ধে গেছি।”

নীতুর বুকের ভিতর খা খা করে উঠলো।কত সহজেই না সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়।কিন্তু মায়া কি শেষ হয়? এতই সহজ প্রত্যাখ্যান? নীতু ধীর কন্ঠে বললো,”আপনার সাথে আজ থেকে আমার বোনের সুখ জড়িয়ে গেলো।তাই দোয়া করি সবসময় সুখী থাকুন।নীতুর কালো ছায়া কখনোই আর পড়বে না আপনাদের মাঝে। আপনি একবার বলেছিলেন, নিজের ভালো থাকা নিজেকেই দেখতে হয়।আমি না হয় তাই করবো।ভালো থাকুন।

“তুমিও নীতু!”

এরপরে সবকিছু সহজ হয়ে গেলো।তাজের মা নীতুরই চোখের সামনে অষ্টাদশী সেতুকে আংটি পড়িয়ে গেলেন। হাসিমুখে পানচিনি খেলেন।মা ব্যাংকার জামাই পাবে সেই খুশিতে নিজের মুখ থেকে হাসিই সরাতে পারলেন না।পাটভাঙা শাড়ি পড়ে লক্ষীমন্ত বউয়ের রুপে সুরভী ভাবি সবার মেহমানদারী করলো।শুধু জায়েদ ক্ষেপে উঠেছিল।অপমানিত করতে চাইলো কিন্তু নীতু বাধ সাধলো। যে সুখ অন্যের তা কখনো জোর করে পাওয়া যায় না।নিজের প্রাপ্তি একসময় না একসময় ধরা দিবেই!তা কখনো কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না।
সবাই চলে যাবার পর থেকেই নীতু ছাদে বসে কান্না করছে। আগাছা সাদৃশ্য নীতুর দিকে কারোরই খেয়াল নেই!একমাত্র দাদাভাই ব্যতীত।

জায়েদের কথায় নীতুর ধ্যান ভাঙে,”একটা সময় দেখিস সব হবে তোর।সব!”

“দাদাভাই বেশি কিছু তো চাই না আমার।শুধু এ বাড়ি থেকে মুক্তি চাই।আজ রাতের পর আর এই বাড়িতে আমি থাকবো না।কোন পুরুষ চাই না আমার জীবনে। কোন মিলন বা তাজ নামের পুরুষ আমার সুখের মূল কেন্দ্র বিন্দু হবে না!আবার শেষ থেকে শুরু করবো দাদাভাই!আমার নিজের সুখের কলকাঠি এখন থেকে আমার হাতেই থাকবে।তা অন্যকেউ আর নির্ধারণ করতে পারবে না।পুতুল নাচ তো অনেক হলো।এবার নিজের মত বাঁচা হোক!”

জায়েদ আৎকে উঠে বলে,”কি করবি তুই?কোথায় যাবি?”

“জানি না দাদাভাই।শুধু জানি এই বাড়ি, এই মানুষগুলোর নিঃশ্বাসে আমার দমবন্ধ লাগছে।আমি এখানে থাকলে মরে যাবো দাদাভাই!আমাকে বাঁচতে হবে!”

জায়েদ অন্ধকারেও স্পষ্ট যেন নীতুর জ্বলে ওঠা আগুন দেখতে পেলো।এই নীতুকে জায়েদ আগে কখনো দেখেনি।এতটা শক্ত,কঠোর করে কথা কখনো নীতু বলেনি।এই রাতের শেষে নতুন সূর্য উঠুক তা জায়েদ নিজেও চায়।সেই সূর্য কেবল নীতুর জন্যই উঠুক।নীতুকে রাঙিয়ে দিতে উঠুক!

চলবে,