#কাব্যের_আঁধার_২
#লেখনীতে: আঁধার চৌধুরী বর্ষা
#পর্ব-৪
আঁধার, তারমানে তোরা নিশ্চই পড়িস নি?? তোদের নিয়ে যে কি করি??তোদের দ্বারা কিছু হবে না।তাড়াতাড়ি আমার নোটস গুলো নে আর একটু চোখ বুলিয়ে নে। কোনরকমে একটু পর। যাতে টেনে টুনে পাশ করতে পারিস।
অর্পা, আচ্ছা দে।তারপর অর্পা আর রায়হান আঁধারের নোটস থেকে পড়তে থাকে। আঁধারের আগেই পড়া হয়েছিল তাই আর পড়তে হয়নি।
কিছুক্ষণ বাদে টিচার চলে আসে ওদের। আর টেস্টের প্রশ্নও দিয়ে দেয়। সকলে পরীক্ষা দিতে শুরু করে কিন্তু রায়হান আঁধার কে খুচায়,
রায়হান, এই পাঁচ নাম্বার টা বল না।
আঁধার, দাড়া…. এবার বলেছি বাকিগুলো তুই লিখ
আবার অর্পা খুঁচায়,
অর্পা, এই দুই নাম্বারটা???
আঁধার, দাড়া…. আর জিজ্ঞেশ করবি না।আমি পরীক্ষা দিচ্ছি।
কিন্তু ওরা কি আর শুনে। পুরো পরীক্ষা এটা ওটা জিজ্ঞেস করে কাটিয়েছে।এখন এটা তো তখন ওটা। একেক সময় একেকটা। অবশেষে পরীক্ষা শেষ করে ওরা একটু ব্রেক পায়।আজ আর ক্লাস হবে না।
অর্পা ফিহা রায়হান শাওন আর আঁধার মাঠ ক্রস করে ক্যান্টিনে দিকে যাচ্ছিল কিন্তু তখনই আধারের সামনে একটা ছেলে এসে ওকে ফুল দিয়ে বলে,
ছেলেটা,
Ek ajnabi hasina se
Yun mulaaqat ho gayi
Ek ajnabi hasina se
Yun mulaaqat ho gayi
Phir kya hua yeh na puchho
Kuch aisi baat ho gayi
Ek ajnabee haseena se
Yun mulakat ho gayi
Phir kya hua yeh na puchho
Kuch aisi baat ho gayi
Wo achanak aa gayi
Yun nazar ke saamne
Jaise nikal aaya
Ghata se chaand
যেদিন তোমায় প্রথমে কলেজে দেখেছিলাম সেদিন থেকেই তোমার প্রেমে পড়ে গেছিলাম কিন্তু এতদিন বলতে পারিনি তোমার এই দেবর কাম বেস্ট ফ্রেন্ডের ভয় কিন্তু আজ অনেক সাহস নিয়ে বলতেছি যে আমি তোমায় ভালোবাসি। আমি জানি তুমি বিবাহিত কিন্তু আমার কোন প্রবলেম নেই আমি তোমাকে বিয়ে করতে রাজি আছি । আর তুমি এটা মনে করো না যে আমি চরিত্রহীন কারণ আমি তোমার মত একটা বিবাহিত মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছি। আমার মনে হল যে তুমি তোমার হাজবেন্ডের সঙ্গে সুখী নও তাই দিয়েছি। আর আমি কেন এরকম সবারই মনে হচ্ছে তোমার হাজবেন্ডের সাথে সংসার করে সুখী না কারণ এই এত বছরে তোমার হাজব্যান্ড একবারো তোমাকে দেখতে আসেনি। একবারও তোমার খোঁজ অব্দি রাখেনি সেখানে তুমি যদি আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে করো তাহলে তার কোনো সমস্যাই হবে না।
এতক্ষণ ধরে সেটা কথা শুনলেও এখন আধারের মাথা ফিউজ উড়ে গেছে কারন সেটা এটা বুঝাতে চাচ্ছে যে কাব্য ওকে ভালবাসে না। সেটা ও জানলেও আরেকজনের মুখ থেকে শুনতে রাজি নয়। তাই আধার রেগে গিয়ে ছেলেটার কলার তুলে ওকে দাড় করিয়ে দেয় তারপর মুখের মধ্যে একটা পাঞ্চ মেরে বলে,
আঁধার, তোর সাহস কম না তুই আধার চৌধুরী বর্ষাকে বিয়ের প্রপোজাল দিচ্ছিস। কি বলছিলিস আমি আমার হাজবেন্ডের সঙ্গে সুখী নই তার মানে আমার হাজব্যান্ড আমাকে ভালোবাসে না তাইতো??? তাহলে শুনে রাখ আমার হাজব্যান্ড আমাকে অনেক ভালোবাসে। আর বলছিস জে আমার হাজব্যান্ড এত বছরে একবারও আসেনি ঠিক তেমনি এক বার আসেনি কারণ আছে এর পিছনে উনি নিজেও একজন ডাক্তার ধ্যান জ্ঞানী ডাক্তারি করা হয় তাইনা?? সে দিক দিয়ে উনি যদি ডাক্তারি করার জন্য দেশে পাঁচটা বছর না আসেন তাতে কি আসে যায়। আমার হাজব্যান্ড আমাকে যতটা ভালবাসতাম ততটাই আমার জন্য যথেষ্ট আমায় এর চেয়ে বেশি কিছু চাইনা।
আর তোর সাহস কম না তুই আমাকে আধার চৌধুরী বর্ষাকে বিয়ের প্রস্তাব দিস। তোর তো এই সেই অধিকারই নেই দেওয়ার বিয়ের প্রস্তাব। সে আমি বিবাহিত হয় আর না হয় কারণ কোন অধিকার নেই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার। আজ তোর একদিন কি আমার একদিন। ব্রাজিলের গন্ডার, লেজকাটা বান্দর, কালো হনুমান, গিরগিটি, নাইজেরিয়ান গন্ডার, উগান্ডায় লাত্থি মেরে উষ্টা দিয়ে পাঠিয়ে দিবো।
কোনদিনও আধারের লাথি খেয়েছিস তাহলে আজ খেয়ে নেয় কারণ আমার লাত্থি খেলে তুই পরপারে বসতি গরবি। আমার শরীরে যথেষ্ট শক্তি আছে তোকে লাথি মারার জন্য। আয় মারি তোকে লাথি।
শাওন, থাক থাক আঁধার ওকে ছেড়ে দে। তুই তো বলিস এসব লোকেদের কাজে এসব করা। ( ছেলেটা কে উদ্দেশ্য করে ) আরে যে নেক্সটাইম কোনদিনও ওকে প্রপোজ করতে আসবে না তাহলে কিন্তু সেদিন সত্যি সত্যি লাথি খাবে সেটা আমার না ওর হাতেরই। বুঝতে পেরেছো তো??
ছেলেটা, আমার কোন শখ নেই যেচে মেন্টালি সিক একটা পার্সেন্ট কে প্রপোজ করার। আগে যদি জানতাম ও মানসিক ভারসাম্যহীন তাহলে কোন দিনই ওকে প্রপোজ করতে আসতাম না।
আঁধার, এই নাইজেরিয়ান গন্ডার যা না এখান থেকে।
আজ তো সময় পুরো অবাক কারণ কেউ কোনদিন কখনো আঁধারকে এভাবে চেঁচামেচি করতে আর গালাগালি দিতে শুনে নি। সময়ও কেমন তাই না। যে মেয়ে আজ অব্দি এত ছেলেটির করার পরও টু সত্য করে নি জাস্ট তারা মুখে উত্তর দিয়েই কাটিয়ে দিয়েছে আজ সে নিজে থেকে এতগুলো গালি দিবে তাও যত সব উদ্ভট গালি।
আঁধারকে ওরা সবাই ধরে নিয়ে ক্যান্টিনে চলে যায়। শাওন বলে,
শাওন, এই আঁধার শান্ত হয়তো রাগারাগি করে কিছু হয়নি। ওটা জাস্ট একটা প্রপোস ছিল। আর এমন হাজার প্রপোজ কত পেয়েছিস তুই তো এত এত রেগে যাওয়ার কি আছে। নিজের উপর কন্ট্রোলার নেতা রেগে গেলে হবে না।
আঁধার, এই তুই বুঝতে পারছিস ঐ ছেলেটা কি বলতে চাচ্ছিল?? ওই ছেলেটা বলতে যাচ্ছিল যে মিস্টার খান আমাকে ভালবাসেননা।
শাওন, ভুল কি বলেছে?? ভালোবাসে নাই তো এজন্যই তো এত বছরের পর বছর বিদেশে পড়ে আছে।
আঁধার, আমি জানি তো সেটা কিন্তু আমার হাজব্যান্ড আমাকে ভালবাসে কিনা বাসো সেটা আমি অন্যজনের মুখ থেকে কেন শুনবো?? রায়হান তুই বল তুই যদি অর্পাকে ভালো না বাসিস তাহলে সেটা কি ওর অন্য কারো মুখ থেকে শোনার কোন রাইট আছে??
রায়হান, আমি অর্পা কে ভালো কেন বাসবোনা?? আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
আঁধার, আরে সাপোজ ধর ভালবাসিস না তাহলে??
রায়হান, সেই ক্ষেত্রে বলা যায় সত্যিই কোন রাইট নেই অন্য কারো মুখ থেকে শোনার যে আমি ওকে ভালোবসি না। কারণ ভালোবাসাটা দুটো মানুষের মধ্যে হয় সেখানে যদি দুজনের একজনও না বলে যে আমি তোমাকে ভালোবাসি না অথচ তৃতীয় ব্যক্তি এসে বলে যে ও তোমাকে ভালোবাসে না তাহলে ব্যাপারটা যথেষ্ট আনফেয়ার হয়। তাই আমি বলবো যে তুই যা কইছিস একদম ঠিক বলেছিস। আমি তোর সাথে আছি।
অর্পা ফিহা,আমিও তোদের সাথে আছি। ও যা করেছে একদম ঠিক করেছে।
শাওন, এই তোরা যদি ওর দিকে যাচ্ছে আর আমার দিকে কে থাকবে?? আমি তো একা পড়ে গেলাম।
আঁধার, বড় ভাবির সাথে মজা করার ফল। থাক তুই একা আমাদের কি তাইতো ফিহা,অর্পা, রায়হান??
সবাই, অবশ্যই।
আঁধার, এখন সবাই যে যার মত অর্ডারটা দিয়ে দাও। টিফিন খেয়ে আবার ফিরতে হবে ক্লাসে।
তারপর ওরা যে যার মতো অর্ডার দিয়ে খেয়ে নে।
অন্যদিকে কাব্য বসে আছে সোফায়। মাত্র ফ্রেশ হয়ে খেয়ে বসলো।নাদিরা এখনো ঝাড়ু হাতে দাড়িয়ে আছে আর সেটা দেখে কাব্য রাগ করে বিরক্ত হয়ে বলে,
কাব্য, মা আমি বাইরে থেকে একটু ঘুরে আসছি। আশপাশটা ঘুরে নি একটু।
শমসের, যাও তাহলে ঘুরে এসো।
কাব্য, সেটা না হয়ে যাচ্ছি কিন্তু আধার কোথায়?? ওর তো থাকার কথা।
শমসের, ওকে দিয়ে তোমার কি?? তুমি তো ওর কথা এক ফোটাও চিন্তা করো না তাহলে ওকে খুজছো কেন??
To be continued….