কাশফুলের মেলা পর্ব-০১

0
724

#কাশফুলের_মেলা
#পর্ব_১
#Writer_Nusrat_Jahan_Sara

ইশান ভাই আজতো আমাদের ফুলসজ্জা প্লিজ আজ অন্তত তোমার রুমটাতে থাকতে দাও।আমি কাল থেকে বারান্দায় শুবো।

—তোর প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই ভালো হবে তুই যদি এই রুম থেকে চলে যাস।

—-প্লিজ ভাইয়া এমন করোনা।আমি তো বললাম আমি কাল থেকে আর তোমার রুমে শুবোনা।বাসায় অনেক অথিতিরা আছে বড় একটা সিন ক্রিয়েট হয়ে যাবে।

—সিন ক্রিয়েটের কথা তুই বলছিস আরশি।তুই এসব বুঝিস৷ যাইহোক আমি এতকিছু জানিনা তুই এইরুম ছেড়ে চলে যাবি মানে চলে যাবি ব্যস৷

ইশান আরশির হাত ধরে টেনে ওকে বাইরে ছুড়ে মেরে দরজা বন্ধ করে নিলো।আর কোনো দিশা না পেয়ে আরশি দরজার ওপারে থেকেই কান্না করে যাচ্ছে৷

আরশির কান্নার আওয়াজ ইশানের কানে এসে বাজছে।কিন্তু ইশানের কোনো হেলদুল নেই।সে একদৃষ্টিতে বিছনাার দিকে তাকিয়ে আছে।কতো সুন্দর করে ফুলসজ্জার খাট সাজানো কিন্তু সাজানো নেই এই জীবনটা। একসময় সাজানো থাকলেও এখন অগোছালো৷ আরশি সব কিছু শেষ করে দিয়েছে। ইশান দু চোখ বন্ধ করে ভাবতে লাগল তিন বছর আগের ঘটনা।

ফ্ল্যাশব্যাক

—-সে কী ইশান ভাই তুমি এতো রাত্রে আমার রুমে? আর আমার দিকেই বা এগোচ্ছ কেনো? দেখতে পাচ্ছোনা আমার কাপড়চোপড়ের ঠিক নেই।

ইশানের তাতে কোনো হেলদুল নেই। সে যেমন ছিলো তেমনটাই আছে।আরশি খাট থেকে ওরনাটা নিয়ে আবারো জিজ্ঞেস করলো!’কী হলো বলছো না কেনো?

ইশান খপ করেই আরশির হাত ধরে ওর দিকে এমন দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো যে আরশির আর বুঝার বাকি রইলো না।

—-দেখো ইশান ভাই তুমি আমার হাত ছেড়ে দাও আর এই রুম থেকে চলে যাও।তোমাকে অনেকবার ওয়ার্ন দিয়েছিলাম আমি কিন্তু তারপরও তুমি শুননি।

—-আচ্ছা তাই!কে তোর ওয়ার্ন মানছে।এখানে তোর মা বাপ কেউ নেই শুধু আমি আছি।তাই আমার কথাই শেষ কথা।

—-শেষ কথা যদি এটাই হয়ে থাকে তাহলে তুমিও একটি কথা জেনে রাখো তোমার অসৎ উদ্দেশ্য কখনো সত্যি হবেনা।

—-রিয়েলি শুন আরশি আমি যার দিকে একবার নজর দেই তাকে আমি আমার করেই ছাড়ি।আর তুই তো কোন ছাঁ।এই নিয়ে কতোটা মেয়ের সাথে,,,,,

—-স্টপ ইশান ভাই।নটি আমেরিকায় থাকতে থাকতে এই দেশের কালচার তোমার রক্তে মিশে গেছে।বাঙালীদের মতো আর ভাবোনা তুমি।আর তাছাড়াও আমি তোমার চাচাতো বোন। এসব কী করে ভাবো তুমি?এখান থেকে এক্ষুনি চলে যাও অন্যতায় আমি চাচাকে ডাকতে বাধ্য হবো।উনি কিন্তু আজ বাসায় আছেন।

ইশান আরশির হাত ছেড়ে দিলো।তবে তার চোখ বলছে সে যা চাইছে সেটা সে নিয়েই ছাড়বে।
ইশান রুম ছেড়ে যাওয়ার সাথে সাথেই আরশি কান্নায় ভেঙে পরলো দুচোখ বেয়ে পড়ছে নোনাজল। চোখের জল কিছুতেই আজ বাঁধ মানতে চাইছেনা। আরশি ভেবে নিলো সে আর আমেরিকায় থাকবে না বাংলাদেশে চলে যাবে। স্টাডিও কমপ্লিট হয়ে গেছে। এতদিন শুধু স্টাডির জন্য অপেক্ষা করছিলো। এখান থেকে না গেলে নিজের সম্মানটাও রক্ষা করতে পারবেনা। এতদিন নানা তালবাহানায় ইশানকে দূরে রেখেছে কিন্তু এখন ইশানের হাবভাব আরও খারাপ লাগছে।

ডাইনিং টেবিলে বসে অনবরত প্লেটে স্পোন নেড়ে যাচ্ছে আরশি কিন্তু মুখে কিচ্ছু দিচ্ছেনা। আরশির চাচা ব্যাপারটা কিছুক্ষন লক্ষ্য করে বললেন,,,,

—-আরশি তুমি খাচ্ছোনা যে কোনো সমস্যা?

—-আসলে চাচ্চু আমি দেশে ফিরতে চাইছি।আমার স্টাডিও কমপ্লিট।এখানে থেকে কী আর কোনো লাভ আছে,?

—-সে কী তুমি চলে যাবে মানে?এখানে কী এতো অভাব পরেছে যে তুমি দেশে চলে যেতে চাচ্ছো?।

—-আমার মনে হলো আপনাদের থেকে একবার পারমিশন নেওয়া দরকার যদিও জানতাম যে আপনারা কখনো রাজী হবেননা।কিন্তু এইবার আর আপনাদের কোনো কথা আমি শুনতে চাইছিনা। আপনাদের হয়তো নিজের দেশের প্রতি কোনো টান নেই কিন্তু আমার তো টান আছে।প্রতিনিয়ত আমার জন্মভুমি আমায় ডাকে তার কাছে ছুটে যাওয়ার জন্য।আপনাদের বলার প্রয়োজন মনে করেছিলাম তাই বললাম এবার পারমিশন দেওয়া না দেওয়া আপনাদের ব্যাপার তবে দেশে তো আমি যাবই।

—-এইসব কী ধরনের কথা আরশি? উনি তোমার চাচা আর এই কথাটা তুমি ভুলে যেওনা। তোমাকে এতদিন খাইয়ে দাইয়ে, পড়াশোনাও করিয়েছেন উনি?আর তুমি উনাকে ব্লেম করছো?

—-আচ্ছা তাই এটা তো উনার কর্তব্য আমার বাবাও কিন্তু উনাকে খাইয়ে দাইয়ে লেখাপড়া করিয়ে এতো বড় করেছেন আর আপনারাও সেটা ভুলে যাবেননা।আর আমি উনাকে ব্লেম করিনি।

আরশি প্লেটের উপর স্পোনটা টন করে ফেলে সেখান থেকে প্রস্থান করলো।আরশির চলে যাওয়া আর এমন কথাবার্তা দেখে ইশানের শরীর রাগে থরথর করে কাঁপছে। সেও আরশির পিছন পিছন চলে গেলো৷ আরশি ওর রুমে গিয়ে ততক্ষণে লাগেজে কাপড় ভরতে শুরু করে দিয়েছে।

—-আরশি তুই কাপড় গোছাচ্ছিস কেনো?।

—-তুমি এখনও বুঝতে পারছোনা ইশান ভাই আমি কেন কাপড় গোছাচ্ছি। প্লিজ এখান থেকে চলে যাও।আর আমার কাজ আমাকে করতে দাও।

—আরশি তুই চলে যাবি।কিন্তু তুই চলে গেলে আমি কী নিয়ে বাঁচব?

—-নটি আমেরিকায় আছো একটা গেলে দশটা পেয়ে যাবে। ইশান ভাই আমি তোমার দুই পায়ে পরি তুমি আমাকে ছেড়ে দাও প্লিজ।আমি আর এমন নরক যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছিনা।

—-আমি তোকে নরক যন্ত্রণা দিচ্ছি???

—-তা নয়তো কী হে???

—-আচ্ছা আরশি তুই কী আমার খারাপ দিকগুলোই দেখিস। আমার ভালো কিছু কী তোর চোখে পরেনা।

—-না পরেনা।কারণ ভালো কোনো দিক তোমার মধ্যেই নেই।

—- এই দেখ আরশি আমি কান ধরেছি তোকে আমি আর জ্বালাবো না।তবুও তুই আমাকে ছেড়ে যাস না।প্লিজ।তুই চলে গেলে পাগল হয়ে যাব আমি।আমি যে তোকে ভালোবাসি।

—-ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি, এই কথাটা তোমার মুখ থেকে শুনতে শুনতে আমার এখন বিরক্ত লেগে গেছে জাস্ট অসহ্য।আমি চলে যাচ্ছি আর কোনো কথা শুনছিনা তোমার

ইশান একটা বিদ্রুপের হাসি দিয়ে বলল,,,

দেশে ফিরা কী হাতের মোয়া।এতো তারাতাড়ি কী দেশে ফিরা যায়।এটা কী তোর নিজের দেশ যে যখন ইচ্ছে তখন গাড়ি করে এক জেলা হতে আরেক জেলায় চলে যাবি।

ইশানের কথা শুনে থম মেরে গেলো আরশি।সত্যিই তো এটাতো সে ভেবে দেখেনি।দেশে ফিরতে হলে তো আগে প্লেনের টিকিট কেটে রাখতে হয়।কমপক্ষে হলেও পনেরো দিন আগে।[ভুল হতে পারে এসব নিয়ে আমার তেমন জানা নেই]
ইশান আরশির মুখের দিকে তাকিয়ে চলে গেলো। ভেবে ভাবনার কূল কিনারা পাচ্ছেনা আরশি।এখান থেকে তো তাকে চলে যেতেই হবে। আরশির হঠাৎ মনে পরলো তার বান্ধবী জয়ার কথা সেও আমেরিকায় থাকে।আরশি তাকেই ফোন করলো।বেশ কয়েকবার রিং হওয়ার পর জয়া ফোনটা রিসিভ করলো।

—-শুন জয়া আমার কিন্তু তোর হেল্প চাই

—-কী ধরনের হেল্প???

—-আমায় তোর বাড়িতে পনেরো সতেরো দিনের মতো থাকতে দিতে হবে

—-এটা তো বেশ ভালো কথা তো চলে আয়।কিন্তু হঠাৎ তুই তোর চাচার বাসা ছেড়ে আমাদের বাসায় আসতে চাইছিস কেনো। কোনো সমস্যা হয়েছে কী।

—-দেখ জয়া সমস্যা নাহলে তোকে বলতাম না। তুই তো জানিস ইশান কতোটা খারাপ ছেলে।ও যে কোনো সময় আমার উপরে জানোয়ারের মতো ঝাপিয়ে পরতে পারে।নিজের সতিত্ব রক্ষা করতে আমাকে যা করার তাই করতে হবে

—-আমাকে কী করতে বলছিস????

—-শুন তুই আমাদের বাসায় আয় আর চাচ্চু জিজ্ঞেস করলে বলবি তোদের বাসায় দুইদিনের জন্য বেড়াতে যাচ্ছি।

—-কিন্তু কীভাবে কী করবো কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা

—- তুই আয় পরিস্থিতি বুঝে কথা বলা যাবে।ইশান ভাই দারোয়ানকেও বলে রেখেছে আমাকে যেন বাইরে না বেরোতে দেয়।এখন তুই আমার একমাত্র অবলম্বন।

—-আচ্ছা আমি দেখছি কী করা যায়।বিকেলে আসছি তোদের বাসায়।

বিকেলে জয়া আরশিদের বাসায় এলো। সে চুপচাপ বসে আছে আরশির চাচা চাচীর সামনে। ইশান বাসায় নেই।

—-চাচ্চু জয়া আপনাদের কিছু বলতে চায়।

—-কী বলতে চাও।

—-আসলে আংকেল হয়েছে কী আরশিকে আমি আমাদের বাসায় দুইদিনের জন্য নিতে চাইছি।কতবছর ধরে তো সে এক বাসায় পরে আছে অন্য কোথাও যায় ও না।সবসময় একা থাকতে থাকতে তো বোরিং হয়ে যায় তাই না?আর আমার মনে হয় আরশি যদি দুইতিন দিনের জন্য আমার সাথে থাকে তাহলে সে দেশে ফিরতে চাইবেনা।আমেরিকার নানান প্যালেসে ওকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসব দেখবেন ওর মন ভালো হয়ে গেছে।আমি আরশিকে অনেকবার বলেছি যেন সে দেশে না যায় কিন্তু কে শুনে কার কথা।তাই আমি আপনাদের বললাম।এবার আপনারাই ভেবে দেখুন যে আপনারা কী করবেন

—-আইডিয়াটা মন্দ না।আরশি তুমি জয়ার সাথে যেতে পারো।

চাচার কাছ থেকে পারমিশন পেয়ে আরশির মুখে হাসি ফুটে উঠলো।তবে সেটা প্রকাশ করলো না। জয়ার হাত ধরে চাচার রুমে থেকে চলে গেলো।নিজের রুমে গিয়ে লাগেজে কয়েকটা কাপড় ভরে নিলো। রুমের বাইরে পা রাখতেই আরশির চাচী বলে উঠলেন,,,

—-আরশি তুমি কোনো রকমে পালিয়ে যেতে চাইছো না তো?

চাচীর এমন সন্দিহান কথা শুনে আরশি থতমত খেয়ে গেলো।এক মুহুর্তের জন্য মনে হচ্ছে সে ধরা পরে গেলো।জয়া আরশির অবস্থাটা বুঝতে পেরে নিজেই বলল,,,,,,

—-আপনি কী বলছেন আন্টি।ও যাতে দেশে না ফিরতে পারে সেইজন্যই তো ওকে আমি আমার বাসায় নিয়ে যাচ্ছি

—-আচ্ছা একটা কথা বলোতো জয়া আরশির যাওয়ায় না যাওয়ায় তোমার কী?

—–ও আমার ফ্রেন্ড মনের কথা ওর কাছে শেয়ার করি।ও চলে গেলে একা হয়ে যাবো তাই না।।

—-আচ্ছা তোমাদের বাসা কোথায়

—-বেশি দূরে না আন্টি মাত্র পাঁচমিনিটের রাস্তা

—-ওহ আচ্ছা।আরশি তোমার পার্স আর লাগেজটা একটু খুলতো।

—-কেনো চাচী

—-যা বলেছি তাই করো।

আরশি ওর পার্স আর লাগেজটা খুলে ওর চাচীকে দেখালো। ওর চাচী সবকিছু ভালোভাবে দেখে সেখান থেকে চলে গেলেন।

—-ভালো হয়েছিলো তোর ব্যাগে পাসপোর্টটা রেখে ছিলাম তা নাহলে তো আজ ধরাই পড়ে যেতাম।এবার তারাতাড়ি চল ইশাান ভাই চলে আাসার সময় হয়ে গেছে।

জয়া আর আরশি চলে যাওয়া মাত্রই ইশান বাসায় ঢুকলো।রুমের কাবার্ডটা খুলা দেখে তার মনে খটকা লাগল।ভালো করে খুজে দেখলো সবকিছুই ঠিক আছে কিন্তু আরশির পাসপোর্ট নেই।

—-একি আরশির পাসপোর্ট কোথায়? আমি তো এটা এখানেই রেখেছিলাম।আরশি আরশি

—-কী হয়েছে ইশান তুমি আরশিকে ডাকছো কেন?? কিছুক্ষণ আগে তো আরশি ওর বান্ধবীর বাসায় চলে গেলো।

কী?????কে ওকে যাওয়ার পারমিশন দিয়েছে কে??

ইশান রেগে টেবিলের উপর থেকে ফ্লাওয়ার ভ্যাসটা নিয়ে ফ্লোরে ছুঁড়ে মারলো।চোখ থেকে ঝরঝর করে পানি পড়ছে।ইশানের চোখে পানি দেখে ইশানের মা হতবাক।নিজের ছেলেকে বড় হওয়ার পর কোনোদিন কাঁদতে দেখেননি তিনি। কিন্তু আজ দেখছেন।

—-ইশান তো,,,,,

মা চলে যাও আমার রুম থেকে এক্ষুনি।আমি আর কাউকে আমার সামনে দেখতে চাইনা।

ইশানের মা চলে গেলেন।ইশান দরজাটা বন্ধ করে হুহু করে কেঁদে দিলো।ছেলেরা সচারচর বেশি কষ্ট না পেলে কাঁদে না। কিন্তু ভালোবাসার মানুষটা আাঘাত করলে তখন চোখ বেয়ে না চাইতেও জল পড়ে।আরশিকে সে ভালোবাসে বলেই নানান তালবাহানায় আমেরিকায় নিয়ো আসে।প্রতিদিন রাত্রে আরশিকে দেখতে যেত ভালোবাসার টানে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে নয়।মাঝেমধ্যে আরশির কাছে ধরা পরে গেলো নানান অজুহাত দেখিয়ে দিতো। কাল রাতে আরশিকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য ওর মাথার কাছে একটা বক্স রাখতে গিয়েছিলো আর তখনই কারও উপস্থিতি টের পেয়ে আরশি চোখ খুলে তাকায় আর ইশানকে দেখে। সারপ্রাইজের কথাটা হাইড করে রাখার জন্য তখন ইশান মিথ্যা কথাটা বলে ছিলো।আরশির হাত ছাড়া আর কোথাও স্পর্শ পর্যন্ত করেনি ইশান তবুও তো আরশি তাকে চরিত্রহীনের ট্যাগও লাগিয়ে দিয়েছিলো।টাল বাহানা খুঁজে এতদিন আরশিকে বেঁধে রেখেছিলো নিজের কাছে কিন্তু আরশি তো চলে গেলো। ইশান চোখের জল মুছে আরশিকে কল করলো কিন্তু কল ঢুকছেনা ব্লক করে দিয়েছে।একরাশ রাগ আর অভিমানে ইশানও আরশিকে ব্লক করে দিলো

—-আমি হেরে গেলাম আরশি হেরে গেলাম৷

#চলবে,,,,,,