গোধূলির রাঙা আলোয় পর্ব – ০৭

0
337

#গোধূলির রাঙা আলোয়
লেখনীতেঃ তাহমিনা তমা
পর্ব-০৭

একটু দূরে দাঁড়িয়ে কেউ ক্যামেরা বন্দী করলো তিয়াসার গান আর প্রত্যেকটা কথা। সাইড থেকে করায় চেহারা স্পষ্ট নয়, তবে প্রতিটা শব্দ সুস্পষ্ট।

আশপাশটা অন্ধকারে ছেয়ে যেতেই তোরা বললো, চল কটেজে ফিরতে হবে। কালকের দিনটাই তো আছি আমরা, তারপর চলে যাবো। এখানে সে তোর মন ভালো হওয়ার বদলে আরো খারাপ হয়ে গেছে দেখছি।

তিয়াসা কিছু বললো না আর, তোরা ভুল কিছু বলেনি। এখানে এসে সত্যি তার মন আরো বিষিয়ে উঠেছে। তিয়াসার স্বপ্ন ছিলো ভালোবাসার মানুষের সাথে সাজেক ভ্রমণ করার। সাজেক সে এসেছে ঠিকই কিন্তু পাশে ভালোবাসার মানুষটা নেই।

তোরা কারো সাথে বেড শেয়ার করতে পছন্দ করে না। তাই দুজনের জন্য আলাদা রুম নেওয়া হয়েছে।

তোরা তিয়াসাকে তার রুমে এগিয়ে দিয়ে বললো, তুই ফ্রেশ হয়ে আয়। আমরা ডিনার করতে যাবো পাশের একটা রেস্টুরেন্টে।

তিয়াসা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলে তোরা চলে যায়। তিয়াসা ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে চেঞ্জ করে নেয়। কালো রঙের থ্রিপিস পরে নিলো, ফর্সা গায়ে যেটা বেশ মানিয়েছে। রুমে বসে নিজের ফোনে মুগ্ধর ছবি দেখতে লাগলো। ফোনটা রেখে এলেও মেমোরি কার্ডটা নিয়ে এসেছিলো, যেটাতে মুগ্ধর অসংখ্য ছবি আছে। তবে সবই মুগ্ধর অগোচরে তোলা, কেবল বিয়ের ছবি ছাড়া। তিয়াসার বাড়িতেই মুগ্ধ আর তিয়াসা ঘরোয়া বিয়ে দিয়েছিলেন আনোয়ারা বেগম। ছবিতে বাবা-মাকে দেখে চোখ ভড়ে উঠলো তিয়াসার। বিদায়ের সময় তিয়াসার বাবা বলেছিলেন আজ থেকে এবাড়ির দরজা তোমার জন্য বন্ধ। তারপর আর সে বাড়িতে পা রাখার সাহস হয়নি তার। বাবাকে সে বড্ড ভালোবাসে তাই সে ভুল বুঝায় তিয়াসার মনেও অভিমানের পাহাড় জমে আছে। সেও ঠিক করেছে যাবে না তার বাবার সামনে। তাকে না দেখে যদি বাবা-মা থাকতে পারে তাহলে সেও তাদের না দেখে থাকতে পারবে। রুমের দরজায় নক পড়তেই তিয়াসা ফোন রেখে চোখ মুছে নিলো। উঠে দরজা খুলতেই তোরার হাসিমাখা মুখটা দেখতে পেলো। তিয়াসা ভেবে পায় না এতো কষ্ট বুকে চেপে মেয়েটা কীভাবে হাসিখুশি থাকে সবসময়। তার বুকেও তো কম কষ্ট জমে নেই।

তিয়াসা ভাবনার মাঝেই তোরা বলে উঠলো, তোকে দেখে তো আমার হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতো এখনই। আরে ইয়ার তোকে একদম পরীর মতো লাগছে।

তিয়াসা জানে তোরা তার মন ভালো করার জন্য কথাটা বলেছে, তাই উত্তরে মুচকি হাসলো তিয়াসা।

তোরা বললো, চল চল এখন গিয়ে আশেপাশে একটু ঘুরাঘুরি করবো, কেনাকাটা করবো, তারপর ডিনার করে ফিরে আসবো। গ্রুপের সবাই এখন নিজে নিজেই ঘুরছে।

তিয়াসা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালে তোরা তার হাত ধরে সামনে আগাতে লাগলো। বাইরে এসে জমকালো কৃত্রিম আলো চোখে পড়লো। বিভিন্ন জিনিসপত্রের দোকান চারপাশে। একটা বাঁশের টুপির দোকানে গিয়ে একটা টুপি নিয়ে তিয়াসার মাথায় পড়িয়ে দিলো।

সেই লাগছে তো তোকে।

তিয়াসা মলিন হেসে বললো, তুই নে আমার লাগবে না।

বেশি কথা বলিস না দুজনে দুটো নিবো।

তিয়াসার কথায় পাত্তা না দিয়ে দুটো বাঁশের তৈরি টুপি কিনে দু’জন মাথায় পরে নিলো। আরো টুকিটাকি কিছু কিনতে কিনতে অনেক লেট হয়ে গেলো। দুজন গিয়ে ডিনার করে নিলো।

তোরা বললো, এখনই রুমে যাবি ?

তাহলে আর কী করবো ?

তোরা সামনের দিকে দেখিয়ে বললো, চল এইদিকে একটু হাঁটি।

তিয়াসা তাকিয়ে দেখলো ঐদিকটা অন্ধকার আর বেশ নির্জন।

তিয়াসা বললো, নির্জন মনে হচ্ছে। কোনো বিপদ হতে পারে।

তোরা নিজের শার্টের কলার উঁচিয়ে বললো, এই তোরা থাকতে তোর ভয় কিসের ? চল তো, অন্ধকারে চাঁদের আলোয় হাঁটার মজাই আলাদা। যদিও এখন কুয়াশায় ঢেকে গেছে সব তবু ভালো লাগবে হাঁটতে। একটু হাটাহাটি করে রুমে চলে গেলো দু’জনেই।

৮.
কোথায় যাচ্ছি আমরা ?

মুগ্ধর কথা শুনে শুদ্ধ রহস্যময় হাসলো। তা দেখে মুগ্ধ ভ্রু কুঁচকে তাকালো শুদ্ধর দিকে।

হাসছিস কেনো ?

শুদ্ধ মুচকি হেসে বললো, জানিস তো মুগ্ধ ছোটবেলা থেকে আমার অনেক ইচ্ছে ছিলো দু’ভাই একসাথে অনেক ঘুরাঘুরি করবো, একরকম পোশাক পড়বো। এমন অনেক ইচ্ছে ছিলো কিন্তু পূরণ করতে পারিনি কারণ তুই সবসময় আমাকে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করতি। সময়ের সাথে আমাদের মাঝের দুরত্ব কেবল বেড়েছে। আমি চেয়েও দুরত্বটা কমাতে পারিনি কারণ আমি পারতামই না নিজের খোলস থেকে বের হতে।
মুগ্ধ অপরাধবোধ নিয়ে তাকালো শুদ্ধর দিকে৷ সত্যি তাদের মাঝের দুরত্ব সেই তৈরি করেছে। শুদ্ধ যত চাইতো দুরত্ব কমাতে, সে ততই বাড়িয়ে দিতো।

শুদ্ধ মুচকি হেসে বললো, ছোটবেলায় ইচ্ছে পূরণ হয়নি তো কী হয়েছে, এখন করবো। তোর জন্য সারপ্রাইজ আছে আর চিন্তা করিস না কথা যেহেতু দিয়েছি কথা রাখবো ইনশাআল্লাহ।

মুগ্ধ মুচকি হেসে সীটে মাথা এলিয়ে দিলো। মুগ্ধ জানে না সে কোথায় যাচ্ছে আর এই মুহূর্তে জানতে ইচ্ছেও করছে না। রুম বন্দী থেকে থেকে দম বন্ধ হয়ে আসছিলো। মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিয়ে ভালোই লাগছে। শুদ্ধ ড্রাইভ করতে করতে মুগ্ধর দিকে তাকালো। বাইরে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে গেছে। উৎসার কথা ভেবে মুচকি হাসলো শুদ্ধ, আজ মেয়েটার জন্য সব সম্ভব হয়েছে। শুদ্ধর মাথায় হঠাৎ দুষ্টু বুদ্ধি খেলে গেলো। ফোন বের করে তিয়াসার গানের শেষে বলা সেই কথাগুলো ছেড়ে দিলো। তিয়াসার আওয়াজ কানে যেতেই ঘুম ভেঙে গেলো মুগ্ধর। আশেপাশে তাকিয়ে খুঁজতে লাগলো।

শুদ্ধ কিছু না বুঝার ভান করে বললো, কী হয়েছে এমন করছিস কেনো ?

মুগ্ধ অস্থির গলায় বললো, মনে হলো তিয়াসার গলা শুনতে পেলাম।

শুদ্ধ মজা করে বললো, তুই এতো বউ পাগল হবি আমি কোনোদিন ভাবিনি।

মুগ্ধ কটমট করে তাকালো শুদ্ধর দিকে আর তাতে শুদ্ধ আবারও রহস্যময় মুচকি হাসলো।

অনেকটা রাস্তা, তুই ঘুমিয়ে গেলে আমার বোরিং লাগবে। মাঝে মাঝে তুই ড্রাইভ করবি আবার আমি করবো।

কোথায় যাচ্ছি সেটাই তো জানি না, ড্রাইভ করবো কী করে ?

আমি রাস্তা বলে দিবো, নো প্রবেলম।

সারারাত দু’জনে চেঞ্জ করে করে ড্রাইভ করলো আর গল্প করে কাটিয়ে দিলো। দু-ভাইয়ের মাঝে যে এতবছরের দুরত্ব, এক রাতেই অনেকটা কমে গেলো। শুদ্ধ মনে মনে কৃতজ্ঞতা জানালো উৎসাকে। গন্তব্যে পৌঁছল তখন সকাল সাতটা বাজে। শুদ্ধ তাকিয়ে দেখলো মুগ্ধ ঘুমিয়ে আছে, ডেকে তুলল তাকে।

মুগ্ধ চোখ মুখ কুঁচকে আশেপাশে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করলো কোথায় আছে তারা। সেনাবাহিনী রিসোর্ট দেখে মুগ্ধর বুঝতে অসুবিধা হলো না তারা সাজেক এসেছে।

শুদ্ধর দিকে তাকিয়ে বললো, সাজেক ?

শুদ্ধ মুচকি হেসে বললো, হুম। এখন চল ফ্রেশ হয়ে একটু রেস্ট নিবো আর বিকেলে বের হবো ঘুরতে।

মুগ্ধ কিছু না বলে গাড়ি থেকে নেমে পড়লো আর বললো, এভাবে নিয়ে এলি আমি তো কিছুই আনিনি সাথে।

শুদ্ধ গাড়ির ডিকি থেকে মুগ্ধর লাগেজ বের করে দিয়ে বললো, মিশু সব গুছিয়ে দিয়েছে এটাতে। তুই এগুলো নিয়ে ভেতরে যা আমি গাড়ি পার্ক করে আসছি। রিসিপশনে নাম বললেই রুমের চাবি দিয়ে দিবে।

মুগ্ধ লাগেজ নিয়ে ভেতরে চলে গেলে শুদ্ধ গাড়ি পার্ক করে এলো৷ দুজনেই নিজেদের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হলো ব্রেকফাস্ট করতে। ব্রেকফাস্ট করে আবার রুমে চলে গেলো। সারাদিন ঘুমিয়ে বিকেলে বের হবে ঘুরতে। সাজেক ঘুরার আসল মজাই হলো বিকেলের পর থেকে আর সকালে।

৯.
তিয়াসা তোরাকে বললো, আজ আমাদের যাওয়া ক্যানসেল হয়ে গেছে।

তিয়াসা অবাক হয়ে বললো, কেনো ?

এখানে আদিবাসীদের কী যেনো একটা উৎসব আছে আজ, সবাই দেখে যাবে ঠিক করেছে। আগামীকাল সকালে ব্রেকফাস্ট করে যাওয়ার জন্য রওনা হবে। এখন চল ব্রেকফাস্ট করতে যাবো। বিকেল থেকেই উৎসব শুরু হবে।

তিয়াসা কিছু বললো না আর। দুজনেই ব্রেকফাস্ট করে নিলো একসাথে। মোট বিশজন এসেছে গ্রুপে। দশজন মেয়ে আর দশজন ছেলে। প্রথম তিনদিন একসাথে ঘুরেছে আর পরের দুদিন আলাদা। এখানকার দর্শনীয় স্থান মোটামুটি সবগুলোই দেখা হয়ে গেছে। আজ শুধু উৎসব দেখবে সকলে আর সাজবেও আদিবাসীদের সাজে।

বিকেলের দিকে ঘুম ভাঙে শুদ্ধর। উঠে ফ্রেশ হয়ে নেয় ওয়াশরুম থেকে। টাওয়েল হাতে মাথা মুছতে মুছতে রুমে এসে ফোন হাতে নিয়ে চোখ কপালে। অনেকবার কল এসেছে মা আর মিশুর নাম্বার থেকে।

শুদ্ধ টাওয়েল বেডে রেখে মায়ের নাম্বারে কল দিলো কিন্তু সেটা রিসিভ হলো না। পরে মিশুর নাম্বারে কল দিলে কয়েকবার রিং হতেই ওপাশ থেকে রিসিভ করলো।

হ্যালো।

গলাটা মিশুর মনে না হওয়ায় শুদ্ধ বললো, উৎসা ?

উৎসা নিচু গলায় বললো, জি আমি। আসলে মিশু একটু ওয়াশরুমে গেছে আর আপনার কল দেখে আমিই রিসিভ করলাম। আন্টি আর মিশু অনেক টেনশনে ছিলো আপনাদের খবর না পাওয়ায়।

শুদ্ধ হুট করে বলে উঠলো, আর তুমি ?

শুদ্ধর কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলো উৎসা। কথাটা বলে শুদ্ধ নিজেও হতবিহ্বল হয়ে গেলো। এমন একটা কথা হঠাৎ সে কেনো বললো সে নিজেও বুঝতে পারছে না। উৎসা মিস করছিলো শুদ্ধকে কিন্তু সেটা আর মুখে বলা হলো না।

কিছুটা সময় চুপ থেকে বললো, আসলে মুগ্ধ ভাইয়ার ফোন বন্ধ বলছে আর আপনি কল রিসিভ করছিলেন না দেখে সবাই টেনশনে পরে গিয়েছিল।

শুদ্ধ বললো, আসলে এখানে নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। তাই হয়তো মুগ্ধর ফোন বন্ধ বলছে আর আমি সারারাত ড্রাইভ করে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। ব্রেকফাস্ট করে এসে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম কেবল উঠলাম।

উৎসা ছোট করে বললো, ওহ্।

মাকে চিন্তা করতে মানা করে দিও, আমরা ঠিক আছি।

ভাবির সাথে মুগ্ধ ভাইয়ার দেখা হয়েছে ?

হয়নি তবে বিকেলে হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

এরপর কিছুটা সময় দুজনেই চুপ রইলো।

শুদ্ধ হঠাৎ বললো, ধন্যবাদ।

উৎসা বললো, কেনো ?

শুদ্ধ বললো, কিছু কেনোর উত্তর বড্ড কঠিন।

আবার কিছুটা সময় কোনো সাড়াশব্দ হলো না। নিরবতা ভেঙে উৎসা বললো, ঠিক আছে সাবধানে থাকবেন।

শুদ্ধ মুচকি হেসে বললো, হুম আর তুমি আমার মায়ের একটু খেয়াল রেখো।

উৎসা ছোট করে বললো, হুম আল্লাহ হাফেজ।

আল্লাহ হাফেজ।

শুদ্ধ ফোন কেটে স্কিনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো আর মনে মনে বললো, তোমার জন্য আমি আমার ভাইকে ফিরে পেয়েছি। ভাইকে দেওয়া কথা রাখতে পেরেছি। এতো বছর যে ভাইয়ের সাথে এত দুরত্ব ছিলো সেটা মিটিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি আমি। হাজারবার তোমাকে ধন্যবাদ দিলেও কম হবে।

এদিকে উৎসা ফোনটা বুকে আঁকড়ে ধরে মুচকি হাসছে আর মিশু ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে উৎসাকে হাসতে দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকালো।

হাসছো কেনো আপু ?

উৎসা থতমত খেয়ে বললো, কই নাতো।

মিশু উৎসার হাতে ফোন খেয়াল করে বললো, কেউ ফোন করেছিলো ?

উৎসা শুদ্ধর ফোনের কথা জানালো আর চিন্তা করতে মানা করলো। মিশুকে আনোয়ারা বেগম নিচে ডাকছে সেটা জানিয়ে রুম থেকে চলে গেলো ফোনটা মিশুর হাতে দিয়ে। তবে ঠোঁটের কোণে রয়ে গেলো মুচকি হাসি।

বিকেলে রেডি হয়ে দু’ভাই বের হলো আশপাশটা ঘুরে দেখতে। কেউ কিছু বলছে না শুধু চুপচাপ হাটছে।

হঠাৎ শুদ্ধ বলে উঠলো, তোর জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।

মুগ্ধ প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকালো শুদ্ধর দিকে, কী সারপ্রাইজ ?

শুদ্ধ মুচকি হেসে বললো, সোজা সামনে তাকা।

মুগ্ধ ভ্রু কুঁচকে সামনে তাকিয়ে থমকে গেলো। স্তব্ধ হয়ে কিছুটা সময় সামনে তাকিয়ে থেকে শুদ্ধর দিকে তাকালো।

অবিশ্বাস্য গলায় বললো, তিয়াসা ?

শুদ্ধ মুচকি হেসে কেবল মাথা নাড়লো যার অর্থ হ্যাঁ আর মুখে বললো, আমি আমার কথা রেখেছি।

চলবে,,,,,