২৯+৩০
গোধূলির শেষ আলো?
পর্ব ২৯
Writer Tanishq Sheikh Tani
তানি আঁচল বুকে উঠিয়ে ঘুমন্ত তাজের পাশ থেকে উঠে বারান্দায় হেলান দিয়ে বসে।রাতের অন্ধকার কেটে আলো ছড়িয়ে পড়েছে জগতময়।তানির কাছে অসহ্য লাগছে এই আলো।অন্ধকার চাই! ঘোর অন্ধকার।যে অন্ধকারে নিজের হাত পা কিছুই দেখা যায় না তেমন অন্ধকার।বিধি অন্ধকার নামাও বিধি! অন্ধকার নামাও।তানি শূন্য আসমানে তাকিয়ে আকুতি জানায় বিরবির করে।কিছুক্ষণ পর বারান্দার দেয়াল ধরে উঠে দাঁড়ায়। শাড়ির আঁচল বুকের উপর এলোমেলো হয়ে ধুলোময়লার মাটিতে লুটোপুটি খাচ্ছে।
তানি শাড়ি আঁচল মাটিতে হেচড়ে পাগলীবেশেই জোয়ার্দার বাড়ির শান বাঁধানো ঘাটে এসে ধীরে ধীরে জলে নামে।এক পা! দু’পা করে করে সিড়ি মাড়িয়ে সমস্ত শরীর জলে ভিজিয়ে ফেলে।পানির দিকে তাকাতেই নিজেকে দেখে চমকে ওঠে। নিজের কাছেই নিজে আজ ভয়ংকর পিশাচিনী।রক্তপিপাসায় জ্বল জ্বল করছে যার চোখ দুটো। তানি উ!উ!উ! করে গোঙাতে লাগলো জলের উপর নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে।একসময় বহুদিনের জংধরা গলাটা শব্দ করে উঠলো,
“- মর!তুই! মর পিশাচী মর! প্রতিচ্ছবির গলা টিপে ধরতে গেলেই পানিতে হাত লাগায় এলোমেলো অস্পষ্ট হয়ে গেলো মূর্তিটা।তা দেখে কেমন অস্বাভাবিক হাসি হাসলো তানি,
“- ভয় পাইয়েছিস লো! ভয় পাইস নে।এতো তাড়াতাড়ি তোরে মারবান না।তোর রক্ত খুব মজা লো! স্বাদমতো খাই তার পর মারবানে।যা! এহন ঘুরে বেড়া গে। যা!যা!
সামনের পানিটা এলোমেলো করে দিলো হাত দিয়ে।তারপর টুপ করে চুল আঁচল ভাসিয়ে দিল এক ডুব।এ দৃশ্য দূর দেখে দেখলে যে কেউ ভাববে কোনো নারীর মৃতদেহ ভাসছে এই পুষ্কনির জলে।
তাজ ঘুম জড়ানো চোখে বিছানা হাতরায়।গতকালের নেশার ঘোর এখনও কিছুটা বিদ্যমান। অস্ফুটস্বরে বলে,
“- এ সালমা! মাথা ডা টিপে দে তো! মাথায় জ্বালা করতেছে।
নিয়মের ব্যাঘাত ঘটিয়ে সালমা এলো না তাজের কপালে ভালোবাসার হাত রাখতে।তাজ অপেক্ষা করছে সালমার ভালোবাসাময় শীতল হাতের পরশের।অনেকটা সময় পেরুনোর পরও যখন এলো না তখন তাজ গলা খেঁকিয়ে উঠলো,
“- এই সালমা! কই তুই?আমার সন্তান তোর পেটে নয়তো তোরে আজ বুঝাতাম মজা।তাজ বিছানা ছেড়ে চিৎকার করে উঠে বসলো। ঘরের খোলা দরজা দিয়ে দূরের উঠান দেখা যাচ্ছে।তার অদূরেই পুকুর ঘাট।তাজ দেখলো ভেজা শরীরে এবড়োথেবড়ো কাপড় পেঁচিয়ে কাদা মাটিতে আঁচল মাখিয়ে হেঁটে আসছে ঘরের দিকে কেউ একজন।ঘুমজড়ানো চোখ দুটো ভালো করে মুছে তাকাতেই দেখলো হ্যাঁ এই তো সেই যাকে কাল রাতে ঘরের বউ করে নিয়ে এসেছে তাজ।সালমা নয় আজ রাতের সঙ্গী ছিল এই বউই তাজের।সালমার কথা মনে পড়তেই তাড়াতাড়ি বিছানা ছেড়ে নামলো।তানিকে বিয়ে করেছে বলে সালমাকে ছেড়ে দেবে না তাজ।সালমার গর্ভে যে তাজের সন্তান।তাছাড়া সালমার প্রতি মায়া পড়ে গেছে তাজের। সালমার সাথে আজ তাজের বিয়ের কাজটা সম্পন্ন করতেই হবে।তাজ গায়ে কাপড় জড়িয়ে দরজার কাছে যেতেই তানি দরজার আটকে পথ রুদ্ধ করে দাঁড়ালো।
“- কই যাও গো নাগর!
তানির মুখে ভালোবাসা জড়ানো নাগর উক্তি শুনে হেসে দেয় তাজ।বিদঘুটে হাসি।তানির কোমরের পাশের শুভ্র তুষার ভেজা শরীর দেখা যাচ্ছে ভেজা শাড়ি জড়োসড়ো হয়ে যাওয়ার কারনে।তাজের লোলুপ দৃষ্টি সেদিকে পড়তেই আবার জেগে ওঠে যৌন ক্ষুধা। খপ করে কোমর জড়িয়ে তানির ভেজা শরীর নিজের দেহের সাথে জড়িয়ে ধরে।
“- তোর সতীন আনতি যাচ্ছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে দেরি করেই যাই।
তানি শুধু হাসলো।তাজ ভ্রুকুচকে এ হাসির রহস্য উন্মোচনের বৃথা চেষ্টা করে।রহস্য উন্মোচনে ব্যর্থ হয়ে তানিকে সমস্ত জোর দিয়ে বিছানায় চেপে ধরলো।তানি তবুও হাসে।তাজের মাথায় জেদ চেপে গেলো তানির হাসি মুছে ফেলার।এ হাসি তাজের গা জ্বালিয়ে দিচ্ছে। তাজ চাই তানি কাদুক।একদিন তাজ যেভাবে কেঁদেছে সেভাবেই কাদুক।হাসি মুছে যাক ওর ঠোঁট থেকে।সর্বশক্তি দিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালিয়েও যখন কোনো ব্যথা,কষ্ট ফুটে উঠতে দেখলো না বরং হাসির প্রশস্তি বেড়েই চললো।তাজ ঠোঁট কামরে ধরলো।ঠোঁটের মাংস ছিঁড়ে রক্ত বের হলো তবুও কামড়ে ধরে রাখলো।
|
|
গায়ের হলুদের রং এখনও চকচক করছে সালমার।মেহেদি রাঙা হাতটা বার বার দেখছে।বাড়িতে যে আসছে সেই মেয়েটার আনন্দিত মুখটা দেখে খুশি হচ্ছে।বিয়ের জন্য শাড়ি গহনা সব পড়ে তৈরি সালমা।নিজেই সেজেছে একদম তাজের পছন্দের মতো।এসময় স্বামীর সাথে মিলন ঠিক না তবুও সালমা চাই আজ রাতে তাজের সাথে নতুন করে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকতে।কতশত স্বপ্ন চোখের মেয়েটা বিকাল গড়াতেই নিস্তব্ধ হয়ে গেলো।বিয়ে বাড়ির রমরমা অবস্থা মুহুর্তেই শোকের মাতমে ভারি হয়ে উঠলো। নজু মিয়া মেয়েকে বুঝিয়েও বোঝাতে পারলো না।চলে গেলো সালমা।চলে গেলো পরপারে কপালে পাপের দাগ সহ অনাগত সন্তানকে নিয়ে। সুখ কি হয়তো দেখা হলো না আর।ছুঁই ছুই করেও পদতলে আসা সুখ বানের জলে ভেসে গেলো।সাথে নিয়ে গেলো এই জনমদুঃখী মেয়েটাকে।তাজ বিয়ে করেছে এখবর দুপুর গড়াতেই পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে।নজু মিয়ে সকালেই জানতো তবুও বাড়ির কাওকে বলে নি।তাজকে মোবাইলে জিজ্ঞেস করলে সে বলেছে সালমা তাজেরই বউ হবে।আজই বিয়ে করবে।দুপুরের আগেই তাজ দেখা করে সবটা খুলে বলবে।কিন্তু দুপুর গড়িয়ে গেলেও তাজ আসে নি উল্টো সারা গ্রাম সহ নজুমিয়ার বাড়ির সবাই জেনে গেছে তাজ তানিকে কাল রাতে বিয়ে করেছে।নজু মিয়ার বউ মেয়েকে কিছু বোঝাবে তার আগেই সালমা ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে থাকে।নজু মিয়ার বউ প্রথমে ভয় পেলেও দরজার ফাক দিয়ে মেয়েকে বউ সাজে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে কিছুটা চিন্তা মুক্ত হয়।সালমা হয়তো সয়ে যাবে ভেবেছিল বাড়ির সবাই।কিন্তু বার বার দুঃখের বোঝা কে সইতে পারে? সালমাও পারে না। মনের সাথে বোঝাপড়া করে একসময় হেরে যায়।ঝুলে পড়ে গলায় রশি দিয়ে।বিকেলের দিকে বোনকে খাওয়ার জন্য ডাকতে যাই সালমার ছোট বোন নাজমা।অনেকক্ষণ দরজা ধাক্কিয়েও যখন সাড়া পায় না।তখন দরজার ফাঁক দিয়ে বোনকে উপরে গলায় শাড়ি পেচিয়ে ঝুলতে দেখে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। সারাবাড়িতে নেমে আসে কান্নার রোল।যে বিষয় চাপা ছিল তাও বেড়িয়ে পড়ে। সালমা বিয়ের আগেই অন্তঃসত্ত্বা ছিল গ্রামে বিষয়টা প্রকাশ পেতেই ছি!ছি!পড়ে যায়।
ফজিলার মাথায় তেলপানি দিচ্ছে লিজা।তানির বিয়ের খবর শুনে তাড়াতাড়ি চলে আসে লিজা।শ্বাশুড়ির মাথায় তেল পানি দিয়ে হাত পাখা দিয়ে বাতাস করতে থাকে।আশেপাশের সবাই এসে দেখে যাওয়ার ছলে নানা কথা শুনিয়ে গেছে তানির মা’কে।মেম্বারের বউ তো সরাসরিই বলেছে তানি আর তাজ মিলেই কায়েনাত কে মেরেছে।ফজিলা এসব শুনে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে।তমিজ মিয়া দাওয়ায় বসে আছে মুখটা শুকনো করে।এই মেয়েকে এতো ভালোবাসলো আর তার প্রতিদান এমন করে দিল মেয়েটা।এরচেয়ে ঐ ঘটনায় তানি মরে গেলেও ভালো ছিল তমিজ মিয়ার জন্য।গ্রামের লোক থু!থু! করছে।তাজ তো প্রভাবশালী। লোকে সামনাসামনি তাজকে কিছুই বলবে না কিন্তু তমিজ মিয়াকে তো ছেড়ে দেবে না।ঐদিকে নজু মিয়ারও মেয়ে গলায় ফাঁস দিলো নাকি এজন্য? এখন তো নজু মিয়াও ছাড়বে না তমিজ মিয়াকে।অপরাধ করুক আর না করুক।মেয়ের পাপের শাস্তি তমিজ মিয়া জমিজিরাত, মানসম্মান খুইয়ে পাবে।চিন্তায় মাথার ভেতর টনটন করছে।একবার ভাবছে জোয়ার্দার বাড়ি গিয়ে টেনেহিচড়ে মেয়েকে নিয়ে এসে রাতে গলায় কলসি দিয়ে নদীতে ডুবিয়ে মারতে।কিন্তু না! সে শক্তিও এখন শরীরে পাচ্ছে না তমিজ মিয়া।
|
|
তাজ পুকুর থেকে ডুব দিয়ে এসে শার্ট গায়ে চেপে সালমাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হয়।এতোক্ষন তানির সাথে এক বিছানায় ঘরে আটকে থাকায় বাকি দুনিয়ার খবর সে পায় নি।তাই তো বাড়ি থেকে কিছুদূর এসে লোকমুখে যখন সালমার ফাঁসি দেওয়ার কথা শোনে কিছুক্ষণ নিস্প্রভ হয়ে হাঁটতে থাকে।এলোমেলো পায়ে কিছুদূর হেটে দৌড়ে নজু মিয়ার বাড়ির উঠানে যায়।খাটিয়ায় বধূ সাজে শুইয়ে আছে সালমা।শেষ! তাজের বাঁচার শেষ সম্বল টুকুও শেষ।তাজের মনে একটু একটু করে ভালোবাসার বীজ বুনেছিল সালমা।অঙ্কুরিত হওয়ার আগেই আমার শেষ হয়ে গেলো তা।তাজের নিষ্ঠুর পাষান বক্ষদ্বয় আজ বহুদিন পর আপনজন হারানোর ব্যথায় কেঁদে উঠলো।অনাগত সন্তান হারিয়ে সবার অলক্ষ্যে দুএক ফোটা জল গড়িয়ে কাদলো।নজু মিয়া তাজকে দেখেও চুপ রইল।মেয়ে হারিয়েও সে ছেলে পেয়েছে এতে তার বিন্দুমাত্র সংশয় নেই।তাইতো মেয়ের হারানোর দোষে তাজকে দোষী না করে উল্টো তাজকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছে।নজু মিয়ার বউয়ের এদৃশ্য মোটেও পছন্দ হয় নি।কিন্তু স্বামীকে এই মুহুর্তে কিছু বলার সাহস তার নেই।তাই চুপচাপ সব রাগ ভেতরেই ছাই চাপা আগুনের মতো পুষে রাখে।
তানি ব্যথার ভারে শরীর নাড়াতে পারছে না।দরজা ভিড়ানো হালকা করে।জোয়ার্দার বাড়ির কুকুর কালু লেজ নাড়িয়ে তানির দিকে চেয়ে আছে সেই ফাঁকা দরজার বাইরে থেকে তাকিয়ে।তানি বহুকষ্টে খাটের কোনা ধরে উঠে নগ্ন গায়ে কাপড় পড়ে নেয়।খুড়িয়ে খুড়িয়ে হেটে আবার পুকুর পাড়ে গিয়ে ডুব দেয়।কালু তানির পিছে পিছে পুকুর পাড়ে এসে দাড়িয়ে লেজ নাড়াতে লাগলো। কালু অপেক্ষা করতে লাগলো তানির ডুব থেকে উঠার।অপেক্ষায় প্রহর বেশি হতেই কালু ঘেউ!ঘেউ! করে পুকুরের দিকে মুখ বাড়িয়ে চিৎকার করতে লাগলো।
চলবে,,,,গোধূলির শেষ আলো?
পর্ব ৩০
Writer Tanishq Sheikh Tani
তাজ সালমার জানাজা পড়িয়ে শোকের ছায়া চোখে মুখে নিয়ে বাড়ি ফেরে।সালমার নিষ্প্রাণ মুখটা দেখে বুক ভেঙে কান্না আসছিল তাজের।তাজের এতোটা দখল করে নিয়েছে সালমা তাজ বুঝতেও পারে নি।আজ চলে গিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে গেল।কতো অবহেলা করেছে এই সালমাকে? আজ সব কষ্ট একসাথে ভেসে উঠছে চোখের সামনে।নজু মিয়ার হোটেলে চোখ বন্ধ করে বসে আছে।কিছুই ভালো লাগছে না কিছুই না।আরেকটু আগে কেন এলো না সালমার কাছে? কেন অভিমান করে যেতে দিল? এই কেন! প্রশ্ন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে তাজকে।
“- এটা কি করলি তুই তাজ?
“- ও সোহাগ! আয় বয়।
“- কি বয়! আগে বল ঐ ছেরি রে বিয়ে করলি কেন সালমারে না করে?
“- এসব কথা বাদ দে সোহাগ এহন।আমার ভালো লাগছে না এ নিয়ে কথা বলতে।
“- বাদ দে! বাদ দে কলিই কি বাদ দেওয়া যায়? তোর মনে কি চলছে জানতি হবি নে? তুই খাল কেটে কুমির কেন তুলছিস তাই ক?তোর আলগা পিরিতের জন্য আমরা তো ফেঁসে যাবো।
“- আরে ধুর! বেশি বুঝিস ক্যা! যা জানিস না তা নিয়ে কথা বাড়াস না।
“- না জানলে জানা? আমিও তো জানতে চাচ্ছি।
“- আচ্ছা ঠিক আছে বলছি! কাল রাতে এখান থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় স্কুলের কাছের নদীর পাশে তানিকে দাঁড়ানো দেখে ভয় পেয়ে যায়।কেমন ভূতের মতো শাড়ির এলোমেলো করে দাড়িয়ে ছিল নদীর দিকে মুখ করে।আমি ভাবছিলাম নদীতে ঝাঁপ দেবে।ওর মরার আশা ঠাই দাড়িয়ে ছিলাম।কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে কিছুক্ষণ পর আমারই সামনে দাড়িয়ে রইল।যেন এতোক্ষন আমার জন্যই প্রতিক্ষা করছিল?
“- তারপর!
“- আমি ওকে পাশ কাটিয়ে চলেই আসছিলাম কি পেছন থেকে আমার শার্ট খামচে ধরে বললো”- এ তাজ! আমারে বিয়ে করবি?
“- আর তুই ওর কথা শুনে বিয়ে করে নিলি?
“- চুপ শালা! পুরোটা শোন!
“- বল! বল!
“-আমি ঘুরে ওরে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিতেই ফুঁপিয়ে কাদলো।তারপর আবার হুট করে হা হা হা শব্দ করে হেসে দিল।
“- কি বলছিস আজগুবি কথা? একবার হাসলো! একবার কাদলো? সিনেমার গল্প তাই না?
“- সোহাগ! চুপ কর কইলাম।আগে পুরোটা শোন।ওর হাসি দেখে আমি ভ্রুকুটি করে তাকাতেই বড় বড় চোখে আমার দিকে তাকিয়ে হেসে সোজা হয়ে বসে তানি।আমি আবার চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই ওর কথা শুনে থেমে যায়।
“- করবি না তো বিয়ে? করিস নে? যা! কাল আমিও থানায় যাবো।তুই কি ভেবেছিস? তোরে আমি এমনি এমনি ছাড়ে দেবো?
“- শালি তোরে তো! কি করবি তুই? বল কি করবি? আমার একটা চুল ছিড়ারও ক্ষমতাও তোর নাই।যা!মর গিয়ে নদীতে ডুবে।রাগে ওরে কষিয়ে দেই দু’চড়।ব্যথা পেয়েও এসে পা জড়িয়ে ধরে।
“- এ তাজ! তোর পায়ে পড়ি। আমার এতোবড় সর্বনাশ করে ফেলে যাস না।তোর ঘরের বাদী করে রাখিস তাও আমারে বিয়ে কর তাজ।তোর পায়ে পড়ি রে!
“- ছাড়! ছাড় পা।তোর উপর এখন কোনো টান নাই আমার।সব শেষ ঐদিন রাতেই। বিয়ে তোরে না ঐ সালমারে করবো বুঝলি।তুই শুধু জ্বলে পুড়ে মরবি।তোরে এভাবে জ্বলতে দেখেই শান্তি আমার।
“- সালমারে বিয়ে কর তবুও লোকদেখানোর জন্য হলিও আমারে বিয়ে করে ঘরে তোল।আমার সব শেষ করে দিছিস তুই। আমি বাঁচবো কি নিয়ে ক? আমি মুখ দেখাতি পারছি নে রে!আমি তোর ঘরের বাদী হয়ে থাকবো।তোর সব স্বাদ আহ্লাদ মেটাবো তুই ফেলে যাস নে তাজ।
“- তোর কিছুই আমার লাগবি নে! সর।ওকে একা ফেলে আমি কিছুদূর হেঁটে আসতেই ও দৌড়ে সামনে এসে দাঁড়ালো। বললো”- তুই ভেবে দেখ আরেকবার তাজ! আমারে ফিরিয়ে দিলে তোরই লস! আমি তো সব হারিয়ে নিঃস্ব।আমার আর হারানোর ভয় নেই।হয় আমাকে মানে নে নয় তো যেমন করেই হোক তোরে আমি জেল খাটাবোই।
ওর ধামকি শুনে মেজাজ চরম খারাপ হয়ে গেলে গলা টিপে ধরি আমি।
“- আজই শেষ করে দেবো সব ঝামেলা।তারপর তো আর কিছুই করতি পারবি না।মর!
“- হি! হি! হি! ঐ মেয়ে পুলিশকে জিনিস তো? কি যেন নাম? ওর মুখে ঐ মহিলা পুলিশের নাম শুনে আমি ওর গলা ছেড়ে দেই।
“- তুই তো জানিস সোহাগ ঐ বেডি কি পরিমান ঝামেলা করছে? এখনও আমার পেছন ছাড়ছে না।শুধু একটা মোটিভ খুজছে আমাকে এনকাউন্টার করার।
“- ঐ মেয়ে পুলিশের ভয় তানি তোকে কেন দেখালো?
“- সেটাই তো বুঝিনাই।ইচ্ছা হলে মেরেই আসতাম ঐদিন কিন্তু ধৈর্য হারা না হয়ে ভেবেচিন্তে রাতেই জেলা শহর যাইয়ে বিয়ে করে নিলাম।কারন ওরে এভাবে খোলা ছাড়া আমাগের জন্য মোটেও নিরাপদ নয়।খালিদ নাকি দেশে আসতেছে। কখন কি করে কে জানে? আবার এই মুহুর্তে ওকে মেরে ফেলাও রিস্ক। তাই বাধ্য হয়ে বিয়ে টা করতে হলো।
“-বুঝলাম! কিন্তু বন্ধু পরে ছিটারি কইরো না কইলাম আমাগের সাথে।তুমি ওরে নিয়া যা খুশি করো আমাগের কোনো আপত্তি নাই।শুধু যেন আমরা না ফাসি বুঝছো?
“- আরে ও নিয়ে তুই একদম চিন্তা করিস নে।ওরে সময় হলিই মারে দেবো।মানুষ জানবে পাগল হয়ে পুকুরে ডুবে মরছে।এমনিতেও তো পাগল হয়েও আছে।
“- পাগল হয়ে আছে মানে?
“- আরে হ্যাঁ! খালি কেমন কেমন হাসে? চোখে মুখে কেমন পাগল পাগল ভাব।এরে মারলি কোনো সমস্যা হবি না।আর ওর বাড়ির লোকও এহন ওরে দেকতি পারে না।তুই নিশ্চিন্তে থাক!ওরে নিয়ে।ও মরলে বাচলে এহন আর কারও কিছু আসে যাই না।সময় সুযোগ বুঝে পথ থেকে সরাই দিবানে।
“- হুম! আচ্ছা আমি তালি যাই।আর শোন! মন খারাপ করিস নে।যা তুই বাড়ি যা।
“- আর বাড়ি যাওয়া।তুই যা।আমি একটু পর যাবো।
সোহাগ চলে গেলে তাজ আরও কিছুক্ষণ বসে বাড়ির পথে হাঁটে।সোহাগ কে বলা কথাটা সম্পূর্ণ তাজের বানানো। ঐদিন রাতে তানি ঠিকই নদীর ধারে গিয়েছিল। কেন গিয়েছিল তাজ জানে না।তবে তানিকে দেখে নিজের করে পাওয়ার লোভ সামলাতে পারে নাই।তানির কাছে গিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেয়।তানি যে এ সামজে, পরিবারে মূল্যহীন তাজ চোখে আঙুল দিয়ে বুঝায়। তানি শুধু ফ্যালফ্যাল করে চেয়েছিল কোন জবাব না দিয়ে।তাজ বুঝেছিল একে মেরে ফেললেও উহু! শব্দ করবে না। তাজ ঐ অবস্থায় তানিকে টেনে নিয়ে জেলা শহরে ছোটে।কাজী অফিস গিয়ে বিয়ে করে নেয় দুজন।তানি পুরোটা সময় একটা হু! হা কিছুই বলে নি।নির্বাক চেয়ে ছিল অপ্রকৃতিস্থ মানুষের মতো।কবুল বলাতেও তাজের অনেক কাঠ খড় পোড়াতে হয়।অবশেষে বলে কবুল।তাজের কলিজায় শান্তি লাগে তানিকে খালিদের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারায়।এখন তানি তাজের।যা খুশি যখন খুশি তানিকে দিয়ে করবে? কেউ বাঁধা দেবে না এমনকি এই তানিও না।কথাটা ভাবতেই নিষিদ্ধ তৃপ্তির ঢেঁকুর ওঠে মন থেকে।
তানি তাজের মায়ের আলমারি থেকে একটা সুতি টাঙ্গাইল শাড়ি বের করে পড়ে।আধা ভেজা চুলগুলো পিঠের উপর ছড়িয়ে রান্না ঘরে বসে যত্ন সহকারে রান্না করে।ঘরের ফ্রিজে মাংস ছিল আর মাছ তাই দিয়েই দুপদের রান্না করে শ্বশুরের ঘরে খাবার নিয়ে যায়।প্যারালাইসিস আব্বাস জোয়ার্দার পায়খানা প্রসাব করে বিছানায় মাখামাখি করে শুয়ে আছে।আব্বাস জোয়ার্দার নুরির মৃত্যুর শোক সামলাতে পারে না।যখন জানতে পারে তাজই নুরিকে মেরেছে তাজকে মারা জন্য দা নিয়ে ছুটলে তাজ আত্মরক্ষার খাতিরে বাপের মাথায় ও মেরুদণ্ড বরাবর দা যের কোপ বসায়।বাইরের কেউ এসব জানে না কারন তাজ আব্বাস জোয়ার্দার কে ঘরে বন্দী করে রেখেছে।কেউ দেখা করতে আসলেও তাজ বাপের সাথে দেখা করতে দেয় নাই।তবে এখন দেয় কারন আঘাত এখন শুকিয়ে গেছে।কেউ বুঝবে না আব্বাস জোয়ার্দারের প্যারালাইসিস হওয়ার আসল কাহিনি।তানি খাবার প্লেট টা ঢেকে আব্বাস জোয়ার্দারের বিছানা পরিষ্কার করে আব্বাস জোয়ার্দারকে ধুয়ে মুছে নিজে হাতে খাবার খাইয়ে দেয়।আব্বাস জোয়ার্দার চোখ দুটো বড় বড় করে তানির আঘাত পাওয়া ঠোঁটে ঈষৎ হাসির রেখা দেখে।অনেক কিছুই বোঝে কিন্তু এই নিস্তেজ শরীরের কারনে কিছুই করতে পারে না। তাজ বাড়ি ফিরে এসে তানিকে বাপের ঘরে বাপকে খাওয়াতে দেখে কিছু ভাবে তারপর আবার নিজের ঘরে চলে আসে।তানি শ্বশুরকে খাইয়ে স্বামীর জন্য খাবার নিয়ে টেবিলে রাখে।তাজ প্লেট গ্লাস রাখার শব্দ পেয়ে বারান্দায় এসে দেখে তানি তাজের মায়ের মতো কুঁচি ছাড়া দুপাট্টা আঁচল পেঁচিনো শাড়ি পড়ে খাবার বাড়ছে।তাজের কিছুক্ষণের জন্য ভ্রম হলো।মনে হলো ওর মা ই আবার ফিরে এসেছে।পরক্ষনেই গ্লাসে পানি ঢালার শব্দে ভ্রম ভঙ্গ হয়।হাত মুখ ধুয়ে এসে খাবার নিয়ে খেতে থাকে।তানি পাশেই চুপচাপ দাড়িয়ে থাকে।তাজের মনে হয় তানি শুধু দেখতেই সুন্দর না ওর হাতের রান্নাও সুন্দর। তাজ আজ বহুদিন পর আয়েশ করে পেটপুড়ে খেলো।তানির চোখে মুখে জড় পদার্থের ছাপ ছাড়া আর কোনো অনুভূতিই তাজ পাই না।তানি বউয়ের সব দায়িত্বই পালন করে। ঘর দোর গুছানো।রান্না, রাতে স্বামীর রতিক্রিয়ার সঙ্গী হওয়া।এসব কারনে ক্রমশ তানির প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়ে তাজ।মদ,সন্ত্রাসী করা কোনোটা বাদ না পড়লেও কিছুটা সভ্য হতে থাকে।এর মধ্যে খালিদও ফিরে আসে।যেদিন রাতে ফিরে আসে ঐদিনই শোনে খালিদের অবশিষ্ট সুদ আসল কিছুই নেই যা রেখে চলে গিয়েছিল একদিন।মেয়ে মানুষের মতো শব্দ করে কেঁদেছিল।ছুটে গিয়েছিল জোয়ার্দার বাড়ি।কিন্তু তাজ থাকতে খালিদ তানির দেখা পাবে এটা অসম্ভব। খালিদের আর্তচিৎকার আর কান্নার আওয়াজে আশেপাশের সবাই এসে ভীর করে।সবার চোখেই কৌতূহল কি হয়? কি হয়? কিন্তু কিছুই হলো না কারন তানি ঘর থেকে এক পা বের হয়ে আসে নি।খালিদ সারারাত ঐদিন জোয়ার্দার বাড়ির উঠানে দাড়িয়ে কেঁদেও তানির দেখা পায় নি।সকালের দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে আদিল, তমিজ মোল্লা মিলে হাসপাতালে ভর্তি করে।ডাক্তার জানিয়েছে খালিদের একপাশ প্যারালাইসিস হয়ে গেছে হঠাৎ স্ট্রোক করায়।আজ তিনদিন খালিদ বিছানায় পড়ে ঠিক মতো না খেয়ে না শুয়ে শুধু চোখের জল ফেলে।একসাইড সম্পূর্ণ অকেজো এখন খালিদের।ইচ্ছা থাকলেও তানিকে নিজের করে নিতে পারছে না।নিজেই পরাশ্রয়ী আধা জড় বস্তু মতো পড়ে আছে। কি থেকে কি হয়ে গেলো? খালিদ শুধু ভাবে আর কাঁদে।
মুনিয়া আজ আদিল কে কি একটা প্রয়োজনে ডেকেছে।তানির কেস টা নিয়ে নাকি দারুন একটা ক্লু পেয়েছে। এখনই আদিলকে দেখা করতে বলেছে।আদিলের কলেজে এখনও দুটো ক্লাস ছিল কিন্তু মুনিয়ার ডাকে সাড়া না দিয়ে থাকার সার্মথ্য আদিলের নেই।মন প্রাণ সব সপে বসে আছে মুনিয়াকে আদিল।মুনিয়াকে হয়তো মনের কথাটা কোনোদিন বলা হবে না।সামনের মাসেই ঢাকা পোষ্টিং হবে মুনিয়ার।আদিল সংকোচ আর সংশয় নিয়ে নিজের ভালোবাসা চেপে গেলো।কি তীব্র কষ্ট হয় মুনিয়ার চলে যাওয়ার কথা শুনলে তা কি করে যে বোঝাবে ? এতো বিদ্যান হয়েও ভালোবাসা প্রকাশ করার ভাষা বা প্রকাশ ভঙ্গি জানা নেই আদিলের।শুধু গুমড়ে গুমড়ে কষ্ট পাওয়া ছাড়া।আদিল দুটো ক্লাস না করিয়েই ছুটি নিয়ে চলে যায় মুনিয়ার বাসায়।আজ মুনিয়া আদিলকে বাসায় ডেকেছে।সারারাস্তায় কতোকিছুই ভাবে মুনিয়াকে বলবে বলে।কিন্তু আদিল জানে এসবের একটা কথাও ও বলতে পারবে না।
একসপ্তাহ কেটে যায় এভাবে।তাজ রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারছে না ইদানিং।কি ভয়ংকর স্বপ্ন দেখছে কিছুদিন ধরে।মনে হয় একবালতি কেচো সামনে কিলবিল করছে আর তাজ খপ করে মুঠো মুঠো ভরে তা মুখে দিচ্ছে। আবার দেখে নগ্ন হয়ে ধুলোমাটি মাখিয়ে সারাগ্রাম ঘুরে বেড়াচ্ছে। পেছনে একপাল শিশুরদল ইট লাটি সব নিয়ে ছুটছে।দিনের বেলায় এসব স্বপ্নের কথা মনে আসলেও গা ঘিনঘিন করে ওঠে তাজের। দিনের আলোও সহ্য হয় না।কখন কি করে বসে সেটাই খেয়াল থাকছে না।এই তো কালকে সোহাগের সাথে সামান্য কথা নিয়ে কথাকাটাকাটি হতেই তাজ সোহাগের গলা চেপে ধরে অন্যান্য রা এসে না থামালে সোহাগ হয়তো মারায় পড়তো তাজের হাতে।তাজ জানে না এসব কেন হচ্ছে? ডাক্তারের কাছে গিয়েছিল ডাক্তার বলেছে অতিরিক্ত মদ্যপানের কারনে এমনটা হতে পারে।তাছাড়াও কিছুই টেস্ট নিয়েছে যা তিনদিন পর দেবে বলেছে।এসব ভাবতে ভাবতে দু বোতল শেষ করে।তাজ রাতে মদের আড্ডা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে ফিরছিল।মাঠের মধ্যিখান দিয়ে আসতেই খালিদকে একপাশে ঝুঁকে ঝুলে যাওয়া হাত সহ হেচড়ে হেচড়ে এগোতে দেখে।তাজ বাকা হেসে সদর্পে পাশে যেতেই খালিদ বেকে যাওয়া মুখটায় অস্পষ্ট ভাষায় বকতে বকতে তাজের কলার চেপে ধরে ভালো হাতটার সাহায্যে।
“- কিরে ন্যাংড়া! মারবি আমারে? মার! মার!
“-ততুই! ফিইইরিয়ে দে তাআআনিররএএ
“- কি জন্যি? তোর তো কিছুই নাই।ও কেন আসবি তোর কাছে? আর কি দিয়েছিস ই বা যখন ও ছিল তোর কাছে? তোর মা দিনের পর পর না খাইয়ে না পড়িয়ে অনাদরে কথা শুনিয়ে শুনিয়ে রাখছিলো।আর তুই তো অন্য মেয়ে নিয়ে ফুর্তি করছিলি?তার চেয়ে এখনই ভালো আছে।আমি কতো বুঝিয়েছিলাম আমার কাছে চলে আয় আমার কাছে চলে আয়।আসলোই না। শেষে আমিও উপায় না পেয়ে রাতে একা পেয়ে বুঝেছিস তো কি করেছি?হা! হা! হা!
“- কুতততা! তোওওরে
“- ওওও।কি করবি ন্যাংড়া? কিছুই করতি পারবি না এহন তুই।সর! তাজ ধাক্কা দিয়ে খালিদকে মাঠের মধ্যে ফেলে দেয়।ব্যথায় কঁকিয়ে ওঠে খালিদ।তাজ তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে ঝুকে বলে,
“- ইশশ রে! ব্যথা পেয়েছিস? আহা! ওঠ ওঠ!
“- ছাআআড়! খালিদ হাতটা ঝটকা মেয়ে সরিয়ে নিয়ে রাগে ফোঁপাতে থাকে অসহায় দূর্বল মানুষের মতো।
“- তেজ দ্যাখ কতো শালার! তোর মেয়েটারে মারার ইচ্ছা ছিল না আমার কিন্তু কি করবো ভুলে নাক চেপে ধরায় মরে গেলো।আহা! আহা! সত্যি খারাপ লাগে ঐ বাচ্চা মেয়েটার জন্য।না খেয়েই মরে গেলো।আমি কিন্তু খেয়েছিলাম তোর মেয়ের জন্য রাখা ইলিশ মাছের ডিম,দুধ,ভাজা মাছ।আহ! এখনও মুখে লেগে আছে রে।আচ্ছা যা বাড়ি যা! নয়তো শেয়াল কুকুর তোরে একা পেয়ে টেনে ছিড়ে খেয়ে ফেলবি।তুইতো দৌড়াতিও পারবি নে।কথাটা বলে আবার একটা অট্টহাসি দেয় তাজ খালিদের অসহায়ত্ব দেখে।তাজের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হাওমাও করে আহাজারি করে কাঁদে খালিদ।মেয়ে না খেয়ে এতো নির্মমভাবে মরেছে আর খালিদ কিছুই করতে পারে নি কিছুই না।মাঠের উপরই সিজদাহই পড়ে কাঁদে আর বির বির করে বলে,
“- ঠিকই করেছ আমার সাথে আল্লাহ! ঠিকই করেছ।আমার মতো পাপীর এমন শাস্তিই হওয়া উচিত।মৃত্যু দাও আমার! মৃত্যু!
চলবে,,,,