গ্যাংস্টার লাভ পর্ব-০২

0
1210

#গ্যাংস্টার_লাভ
#নুসরাত_জাহান_অংকুর
#পার্ট_২

রেহান তাকিয়ে দেখে রিহা ওর টিশার্ট পড়ে আছে। রেহান তো চোখ সরাতে পারছে না ।রিহা আয়নায় রেহানকে দেখে ভেংচি কাটে।

রেহান রিহার কাছে এসে ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।

রেহান : তুমি তো আমাকে পাগল করে দেবে এতো সুন্দর হয়ে আমার সামনে আসলে আমি কি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি জান

রিহার গা জ্বলে যাচ্ছে। রিহা নিজের সব শক্তি দিয়ে রেহান কে ধাক্কা মারে। রেহান কিছুটা পিছিয়ে যায়।

রিহা : কি ভেবেছেন কি যা খুশি তাই করবেন জোর করে বিয়ে করেছেন আমাকে আর আমি সব মেনে নেবো নেভার। আপনার মত লোকের সাথে আমি থাকতে চাই না কিছুতেই না এটা কোনো বিয়ে না যে বিয়েতে আমার কোনো মত নেই সেই বিয়ে কোনো বিয়ে না। আমি মানিনা এই বিয়ে আপনার মত #গ্যাংস্টার এর সাথে আমি এক মুহুর্ত থাকতে পারবো না আমার মুক্তি চাই

রিহার কথায় রেহান অবাক হলে শেষের কথা শুনে ওর মাথায় আগুন জ্বলে উঠে রিহাকে দেঁয়াল এর সাথে চেপে ধরে বলে।

রেহান : হা আমি গ্যাংস্টার কিন্ত এটার পিছনে তুমি দায়ী আর আমি তোমাকে জোরে করে বিয়ে করিনি তুমি আমাকে বিয়ে করতে রাজি না হলে এত দূর আসতাম না
রিহা : জী না আমি আপনাকে বিয়ে করতে রাজি হইনি আমি তো অন্য কেউ ভেবে রাজি হয়েছিলাম । আচ্ছা ভুল যখন হয়েছে এখন আমার মুক্তি চাই
রেহান : মুক্তি তাই না সেটা তুমি এই জিবনে পাবে না আমি বেচে থাকাকালীন তোমার আমার থেকে মুক্তি নেই এমনকি মরার পর ও না বুঝেছ তুমি ।

রেহান খেয়াল করে রিহার চোখে পানি। রেহান রিহাকে ছেরে দূরে সরে দাড়ায়।

রিহা রাগে পাশে থাকা ফুলদানি ভেঙ্গে ফেলে।
রেহান কোনো কথা না বলে রিহার দিকে একটা ব্যাগ এগিয়ে দেয়।

রেহান : এখানে তোমার সব ড্রেস আছে পরে নাও । ভেবো না যে তুমি আমার থেকে মুক্তি পাবে আমি কখনো তোমাকে মুক্তি দেবো না তুমি চাইলে ও কি আর না চাইলেও কি আমার সাথে তোমাকে থাকতে হবে

রিহা রাগে চিৎকার করে বলে
রিহা: জোর করে কখনো না আমি আপনার মত লোকের সাথে কখনো থাকবো না। কালকে আমি আমার বাসায় চলে যাবো
রেহান : তুমি ভালো করে তোমার বাবাকে যানো সো ওই আসা ছেরে দাও আর যদি অন্য কোথাও যাওয়ার চেষ্টা করো তাহলে ফল তোমার জন্য ভালো হবে না তুমি পৃথিবীর যেখানে থাকো না কেনো আমার কাছ থেকে তোমার রেহায় নেই এটা যত তাড়াতাড়ি বুঝে যাবে তত ভালো

কথাটা বলে রেহান বেরিয়ে যায়।রিহা ওখানে বসে পড়ে।

রিহা : হ্ন আইচে উনার কথা মত চলতে হবে আমি রিহা কারোর কথা মত চলি না নিজের যা ভালো লাগে তাই করি।

এসব বলছে আর একটা একটা করে সব ভেংগে ফেলছে।

রিহা : ওই দিন আমার কাছে অভিশাপ যেদিন এই রেহান নামের কালো ছায়ার সাথে দেখা হয়।

বলতে বলতে অতীতে ডুব দিলো।

রিহা ভার্সিটিতে ওর কিছু ফ্রেন্ড এর সাথে ফুসকা খেতে যায় তখনই একটা ছেলে এসে রিহা কে প্রোপজ করে। রিহা এমনিতেই ছেলেদের সহ্য করতে পারে না কিন্ত সবার বোয় ফ্রেন্ড আছে ওর নেই সেই জন্য ছেলেটার হাত থেকে ফুল নিতে গেলে তখনই কিছু কাল পোশাক পড়া লোক এসে রিহার সামনে ছেলেটাকে ইচ্ছা মত মারে। রিহা তো ভয়ে চুপসে যায় সাথে ওর ফ্রেন্ডরা

রুশা: রিহা কারা এই লোক ?
রিহা: আমি কেমনে বলবো তুই যেখানে আমি ও সেখানে ।
রুহি : এখান থেকে চল তাড়াতাড়ি
:রুমা : হা সেটাই ভালো হবে

রিহা আর ওর ফ্রেন্ডরা চলে যেতে গেলে রিহা উষ্টা খেয়ে পড়ে যেতে নিলে কেউ ওকে ধরে

রিহা: আল্লাহ বাঁচিয়েছে ব্যাথা লাগেনি কেনো(চোখ বন্ধ করে)

রিহা চোখ খুলে দেখে ওকে একটা ছেলে ধরে আছে । মুখে চাপ দাড়ি ঠোঁট যেনো গোলাপী লিপিস্টিক দেওয়া।প্রথম দেখাতে রিহা ফিদা হয়ে যায়

রিহা : ক্রাশ খাইলাম কি হ্যান্ডসাম (মনে মনে)

রিহা হা করে তাকিয়ে আছে সাথে ছেলেটাও তখনই কালো পোশাক পড়া লোকগুলো আসে।

একজন : স্যার আমরা ওকে মেরেছি এখন আপনি কি কিছু বলবেন ?

ছেলেটা রিহাকে ঠিক করে দাড়িয়ে নিজের চশমা ঠিক করে হিরো স্টাইল নিয়ে লোকগুলোর দিকে তাকিয়ে বলে

রেহান : দাও

একটা লোক রেহান এর হাতে হকিস্টিক দেয়।
রেহান গিয়ে সেই ছেলেটার হাতে বারি মারে যেই হাত রিহাকে ফুল দিয়েছিল।

রিহা : কি অসভ্য লোক ক্রাশ ক্যানসেল (বির বির করে)
রুসা: কি বির বির করছিস ?
রিহা : চুপ থাক
রুমা : ছেলেটা কে রে
রিহা : জামাই লাগে আমার জনোস না সবাইকে মনে হয় আমি চিনে রাখছি (রেগে)
রুমা : চেতস কেনো আমি ভাবলাম
রুহি: তোদের ভাবাভাবি বাদ দে আমার ছেলেটাকে হেব্বি লাগছে এখন থেকে ও তোদের দুলাভাই😍
সবাই😱
রুহি : ওমন ভাবে তাকাস না নজর লাগবে

ওদের কথার মাঝে রেহান চেচিয়ে বলে

রেহান : তুই জানিস ও কে next টাইম থেকে কোনো মেয়েকে ফুল দেওয়ার আগে তার ব্যাপারে খোঁজ নিবি বুঝেছিস

বলে আরো কইটা বারি দিয়ে হকিস্টিক ফেলিয়ে রিহার সামনে আসে। রিহা তো ভাবছে না জানি কি বলবে রেহান সবাইকে অবাক করে দিয়ে রিহাকে চর মারে। রিহা গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে সবাই তো অবাক

রেহান : সাহস কি করে হয় অন্যের কাছ থেকে ফুল নেওয়ার খুব সখ তাই না তোমার সখ আমি বের করবো (চোখ লাল করে)
রিহা : কে আপনি আর আমি কি করবো আর না করবো সেটা আপনি বলার কে (গালে হাত দিয়ে)
রেহান : আমি কে আমি তোমার সব আর তোমার উপর আমার সব থেকে বেশি অধিকার বুঝেছ next টাইম যেনো এমন কোনো কিছু না দেখি নাহলে তোমার কপালে অনেক দুঃখ আছে।

কথাটা বলে রেহান একটু সামনে এগিয়ে যায় কিছু একটা ভেবে আবার পিছনে ফিরে এসে রিহার গালে হাত দেয়।

রেহান : i am sorry আমার মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল তাই নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি

রিহার এখন মাথা গরম হয়ে যায় রেহান এর হাত সরিয়ে চিল্লিয়ে বলে।
রিহা : আপনার মাথা গরম হইছে কি ফেটে গেছে তাতে আমার কি আমি কি ice pack যে ঠান্ডা করবেন চেনা নেই জানা নেই হটাৎ করে এসে চর মারলেন আবার ঢং করতে আসছেন। আমাকে কি জোকার মনে হয় যে যখন যা খুশি করবেন আপনি তো

আর কিছু বলতে পারলো না তার আগে রেহান রিহার কপালে ভালোবাসা দেয় রিহা তো পুরাই স্তব্ধ ।

রেহান: এতো রাগ স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না my love একটু রাগ কমাও। আর তুমি ice pack কেনো হবে তুমি তো আমার ভালো থাকার ওষুধ যে মুখের দিকে তাকিয়ে আমি সব দুঃখ ভুলে থাকতে পারি। আজকের জন্য সরি এই দেখো কান ধরছি আর হবে না এবার তো খুশি

রুহি: ও মুজে ছর কার জো তুম জায়োগে বরা পাস্টাউগ্র (মনে মনে)
রিহা কিছু না বলে চলে যায় । রেহান কিছুক্ষণ রিহার দিকে তাকিয়ে থেকে সেও চলে যায় ।

রিহা বাসায় এসে সব কিছু ভাংচুর করে তখনই ওর ফোন একটা কল আসে রিহা রিসিভ করে
রিহা :হুম বল
রুমা : হা শুন ছেলেটার নাম রেহান চৌধুরী। টপ বিজনেসম্যান দের মধ্যে একজন । ফ্যামিলির ব্যাপারে কিছু জানতে পারিনি তবে ছেলেটা কিছুদিন হলো দেশে আছে এর আগে বাইরে থাকতো। অল্প সময়ের মধ্যে সবার
রিহা : থাক ওর প্রশংসা শুনতে চাইনি

বলে ফোনটা আছার মারে।

রিহা : উফফ এই ছেলে কে আমাকে চর মারলো একে ত আমি ধুর কি করবো মাথা ঠাণ্ডা করতে হবে।

রিহা গোসল করতে গেলো। পরের দিন ভার্সিটিতে গিয়ে ছেলেটাকে দেখেনি আর না রেহানকে দেখছে এভাবে আরো কিছু দিন গেলো হটাৎ একদিন রিহার সামনে রেহান এসে দাড়ায়।

রিহা: উফফ এই আপদ আবার কোথা থেকে আসলো (মনে মনে)
রেহান : কেমন আছো সরি এই কইদিন আসতে পারিনি দেশের বাইরে ছিলাম
রিহা : আমি কি জানতে চাইছি?
রেহান : না তবে আমার মনে হলো বলে দেওয়া ভালো
রিহা : আমার সামনে থেকে শরুন বাসায় যাবো
রেহান : চলো আমি পৌঁছে দি

রিহা কিছু বলতে যাবে তার আগে কেউ ওদের উপর গুলি করে একটুর জন্য রেহান বেচে গেছে। রেহান সাথে সাথে পকেট থেকে গান বের করে সুট করে।

রিহা তো স্তব্ধ হয়ে গেছে নিজের চোখে এমন কিছু দেখবে ভাবতে পারে নি। সেদিন রিহা অনেক কষ্ট ওখানে থেকে পালিয়ে আসে । তারপর আর ভার্সিটিতে যায়নি ।

একদিন ওর আম্মু ওকে বলে একটা বিয়ের সম্মন্ধ আসছে। রিহা কিছু না ভেবেই রাজি হয়ে যায় কারণ রেহান এর হাত থেকে ওকে বাঁচতে হবে। সব ঠিক চলছিল বিয়ের দিন হটাৎ রিহা জানতে পারে।

চলবে