ছায়া সঙ্গিনী পর্ব-২২ এবং শেষ পর্ব

0
761

#ছায়া_সঙ্গিনী
#পর্ব-(অন্তিম পর্ব)
#Israt_Bintey_Ishaque(লেখিকা)

সামনে থাকা ব্যক্তিটা আগের তুলনায় অনেক রোগা হয়ে গেছে। ফর্সা মুখশ্রী শ্যাম বর্ণ ধারণ করেছে। চুল গুলোতে আর আগের মতো গ্লেস নেই। আমি কিছু বলবো তখন তুলি পাশে এসে দাঁড়ালো! আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তুলি বললো,
– কি হলো ভেতরে যেতে দিবি না? ও হ্যাঁ পরিচয় করিয়ে দেই, আমার হাসবেন্ড ইমরান তালুকদার!

– হোয়াট?
মজা করছিস আমার সাথে?

তুলি ইমরান ভাইয়ার হাত ধরে বললো, এখানে তোর সাথে রসিকতা করতে আসিনি আমরা। আমাদের গ্রহণ না করলে বলে দে চলে যাই।
আমি দ্রুত তুলির হাত ধরে বললাম,
– প্লিজ ভিতরে আয়। তোরা বিয়ে করেছিস একবার বলতে পারতি আমাকে? না বললে বুঝবো কিভাবে?

ওদের দুজনকে নিয়ে বসলাম। ভাবী শরবত এনে দিল শুধু। দুপুরের খাবার খাবে বলে নাস্তা দেয়নি।
কথায় কথায় তুলি বললো,
– তোর মেয়ে হয়েছে জানালি না তো?

আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম,
– যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিস জানাবো কিভাবে?
তারপর ঝুমুর কে ডেকে ওদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম। ইমরান ভাইয়া ঝুমুর কে কাছে নিয়ে নাম জিজ্ঞাসা করলো, তখন ঝুমুর আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। আমি আমার মেয়ের চাহনি বুঝতে পেরে বললাম, “রাফা”।
ইমরান ভাইয়া তখন বললেন, খুব সুন্দর নাম তোমার।
তুলি বললো, আচ্ছা তোমরা কথা বলো আমরা একটু আসতেছি। তারপর আমাকে আমার রুমে নিয়ে আসে তুলি। এসে দরজা লাগিয়ে দিয়ে সাথে সাথে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– দোস্ত আমাকে মাফ করে দিস, তোর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার কারণে।জানিস সেদিনের পর থেকে ইমরান নিজেকে সব কিছু থেকে গুটিয়ে নেয়। ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করে না। কলেজে আসা বন্ধ করে দেয়, এবং নে*শাগ্রস হয়ে পড়ে।স্যারের ছেলে বলে কলেজে পুরো ছড়িয়ে পড়ে এ খবর কিন্তু জানিস এই পর্যন্ত কলেজে কেউ জানে না যে সেই মেয়েটি তুই যার কারণে ইমরান নিজেকে এভাবে শাস্তি শুরু করে। এমনকি স্যার ও জানে না। আমার শ্বাশুড়ি মাকে ইমরান কড়া ভাষায় বলে দেয় তোর কথা যেন কাউকে না বলে। একদিন আমি দেখা করি ইমরানের সাথে,জানিস সেদিন খুব কান্না শুরু করে আর বলে তোমার বান্ধবী এতো নিষ্ঠুর কিভাবে হলো বলতে পারো? আমি কি খুব খারাপ ছেলে যার কারণে ওর মনে একটু স্থান হলো না আমার?

আমি অনেক বুঝাই কিন্তু কোন কাজ হয় না। তারপর একদিন আমার শ্বাশুড়ি মা মানে ইমরান এর আম্মু আমার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠালো! মায়ের মনে হয়েছে আমি তার ছেলেকে সামলে নিতে পারবো তাই।
আর আমার মধ্যবিত্ত পরিবারের কথা তো জানিস তুই, এতো ভালো ঘর থেকে বিয়ের ঘর আসায় তারা অকপটে রাজি হয়ে যায়। অবশ্য ইমরান যে নে*শা করে সেসব জানতো না। তারপর বিয়ে হয়ে গেল আমাদের। প্রথম প্রথম খুব ইগনোর করে সে, অবশ্য প্রথম কি বলছি জবে থেকে জানতে পেরেছে আমি প্রেগন্যান্ট তবে থেকে ভালো ব্যাবহার শুরু হয়েছে তার!

আমি চমকে উঠে বললাম,
– দোস্ত তুই প্রেগন্যান্ট? আলহামদুলিল্লাহ। আজকে একটা খুশির দিনে আল্লাহ তা’আলা আরেকটা খুশির খবর দিলেন।
কিন্তু তোকে দেখে বোঝার উপায় নেই। এখন কতো মাস চলছে?

– সামনের সপ্তাহে পাঁচ মাস হবে।

– যাক আলহামদুলিল্লাহ।
আচ্ছা চল এবার খাবার খাবি অনেক টাইম ওয়েস্ট হয়ে গেছে।

অতঃপর, সবাই কে খাবার সার্ভ করে দিচ্ছি, আমি আর রাহাত। আর বাকি সবাই কে খাবার দিয়েছি। তুলি রাফা কে পাশে বসিয়ে খাইয়ে দিচ্ছে সাথে নিজেও খাচ্ছে। আমি কিচেন থেকে এটা ওটা এনে দিচ্ছি আর রাহাত কার কি লাগবে তা তদারকি করছে।
কিচেনে পানি নিতে এসেছি হঠাৎ মাথাটা কেমন করে উঠলো। সাথে সাথে নিচে বসে পড়লাম আমি। আসলে সেই ফজর নামায আদায় করে কাজ শুরু করেছি সেই জন্যই হয়তো এরকম হচ্ছে। আম্মুর কথা খুব মনে পড়ছে, বাসায় কোন আয়োজন করা হলে আম্মু খাবার দাবার না খেয়ে কাজ শুরু করে দিত। তারপর ঠিক অসুস্থ হয়ে যেত। আমি অবশ্য খাবার খেয়েছি, রাহাত নিজ হাতে আমাকে রাফা কে খাইয়ে দিয়েছে।
এখন একটু সুস্থ বোধ করছি তাই পানি নিয়ে ডাইনিং এ গেলাম। তুলি বললো,রাফা আর খেতে চাইছে না।ঘুমে ঢুলে পড়েছে। তাই আমি বললাম, আচ্ছা থাক তুলি তুই এবার ঠিক মতো খাবার খেয়ে নে।রাফা ঘুম থেকে উঠলে আমি আবার খাইয়ে দেব। সেই সকাল থেকে ফুফাতো ভাই বোনদের পেয়ে খুব আনন্দ দুষ্টুমি করেছে।তাই এখন ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পরবে।
রাফা কে কোলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলাম তারপর পাশে আমিও শুয়ে পড়লাম। আমার ও খুব ক্লান্ত লাগছে। কিছুতেই শরীর চলছে না আর।
______
চোখের পাতা গুলো টিপ টিপ করে খুললাম। ভালো করে তাকিয়ে দেখি রাহাত নিজের সাথে মিশিয়ে রেখেছে আমায়। এবং আমার উপর দিয়ে ডান হাতটা নিয়ে রাফা কেও ধরে রেখেছে। এরকম মুহূর্তটা উপভোগ করছি আমি। এখন আমাদের ছোট্ট পরিবার টা পূর্নতা পেয়েছে। “আলহামদুলিল্লাহ”।
পাশে থাকা ফোনটা অন করে দেখি পাঁচটা বেজে আট মিনিট। মানে অনেক সময় যাবত ঘুমিয়েছি। এতোক্ষণে সবাই হয়তো চলে গিয়েছে। রাহাত আমাকে একটু ডেকে দিতে পারতো।ওরা কি মনে করবে?আল্লাহ তা’আলা জানেন।

আযান হয়ে গেছে তাই উঠে নামায পড়ে নিলাম। তারপর রাহাত কে ডাক দিতেই রাফা ও ওঠে বসে রইল। রাহাত রাফা কে আদর করে ফ্রেশ হতে গেল নামায পড়বে বলে। এদিকে আমি রাফা কে ফ্রেশ করে খাবার খাইয়ে দিচ্ছি। মাঝে মাঝে খাবে না বলে বায়না ধরে বসে, তখন আমি এটা ওটা বলে খাইয়ে দেই।
এরপর রাহাত নামায পড়ে এসে বললো,
– খুব খিদে পেয়েছে খাবার দাও তাড়াতাড়ি।

আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম তুমি দুপুরে খাবার খাওনি?সে মাথা নাড়িয়ে না বুঝালো। আমি রেগে বললাম খাওনি কেন? শুধু শুধু এতো সময় যাবত না খেয়ে থাকে মানুষ?
তখন তার উত্তর,
– আমার একমাত্র ব‌উ না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে, আমি কি করে খাই বলো?

আমি আর কোন জবাব দিলাম না,রাফা কে খাইয়ে দিয়ে ওভেন থেকে খাবার গরম করে দুজনে মিলে খেয়ে নিলাম।

সন্ধ্যা বেলা,
রাফা আর আব্বু মিলে দৌড়া দৌড়ি করে অনেক দুষ্টুমি করে। আমি শুধু বসে বসে নানা নাতনির কার্যকলাপ দেখে চলেছি। তখন আপু কল করেছে বিদেশ থেকে। কল রিসিভ করতেই সাফা আর মার‌ওয়া চিৎকার করে বলে, আম্মু মণি তুমি কেমন আছো? আমি হাসতে হাসতে বললাম আলহামদুলিল্লাহ ভালো তোমরা সবাই কেমন আছো আম্মু?
তারা বললো ভালো, আমাদের বোনু কে দেখাও তাড়াতাড়ি।
রাফা কে ডেকে নিয়ে এলাম। সাফা আর মার‌ওয়া খুব সুন্দর করে কথা বলতে শুরু করল রাফা’র সাথে। আমি আর রাহাত বসে বসে দেখছি।এর মাঝখানে রাহাত আমার গালে তার অধর ছুঁয়ে দিল। আমি চোখ রাঙিয়ে বললাম,
– কি করছোটা কি? রাফা আছে এখানে।

সে আরো কয়েকটা দিয়ে বললো,
– আমার মেয়ে অনেক লক্ষী মা শা আল্লাহ। বাবাই কে ডিস্টার্ব করবে না বুঝলে? তাছাড়া এখন কথা বলতে ব্যাস্ত।

এসব আবল তাবল বকে আবার আমাকে জড়িয়ে ধরতে নিবে তখন ভাবী নাস্তা নিয়ে আসে। এতে করে রাহাত লজ্জা পেয়ে একটু সরে বসে। আমার যে কি পরিমান খুশি লাগছে কি বলবো? এদিকে ভাবী মুচকি হেসে বললো,
– ভাই নেন গরম গরম চিকেন নাগেট খেয়ে নিন। খেয়ে বলেন কেমন হয়েছে।এই প্রথম বার রেসিপি দেখে তৈরি করলাম।

রাহাত একটু খেয়েই বললো সুপার হয়েছি ভাবী। আপনার ননদিনী একটু শিখিয়ে দিয়েন তো, জানেন ও বাসায় কিছুই তৈরি করতে চায় না।এক নাম্বারের অলস হা হা হা,,,

আমি ভেংচি কেটে চলে গেলাম আমার শ্বাশুড়ি মাকে ডেকে আনতে। এরপর মাকে ডেকে আব্বুর জন্য রুমে দিয়ে আসলাম।আর আরিয়ান কে ড্রয়িং রুমে আমাদের সাথে খেতে বললাম। অতঃপর সবাই গল্প করতে করতে ভাবীর হাতের স্পেশাশ চিকেন নাগেট খাচ্ছি।মাঝ খানে রাহাত এক পিস নিয়ে আমার মুখের সামনে ধরল, তো আমিও খুশি মনে হাঁ করতেই ও নিয়ে খেয়ে ফেললো। আমি রাগে ফুঁসছি,আর রাফা তার বাবার কোলে বসে থেকে হাসতে হাসতে কুটি কুটি হয়ে যাচ্ছে।যেমন বাপ তেমনি তার বেটি।
______
কোয়ার্টারে ফিরে এসেছি আমরা, গতকাল বিকালে। আজকে রাফা কে স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য এসেছি আমি রাহাত।তো রাহাত প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলছে আর আমি রাফা কে নিয়ে বাহিরে। রাফা দৌড়ে এখান থেকে এখানে এরকম করে বেড়াচ্ছে।ওর সাথে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ আমার মাথা কেমন চক্কর দিয়ে উঠলো। আমি কোন রকম একটা বেঞ্চে গিয়ে বসলাম। রাফা দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে বললো,
– মামনি কি হয়েছে তোমার? তোমার কি কষ্ট হচচে? কথা বলো মামনি?

আমি ধীর কন্ঠে বললাম না মামনি আমি ঠিক আছি, আমার কিছু হয়নি আলহামদুলিল্লাহ।
তারপর ভর্তি করানো শেষ করে বাসায় এসে শুয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। এরপর উঠে রান্না বান্না শেষ করি। আমার শ্বাশুড়ি মা এখন অনেকটাই ফ্রি হয়েছেন রাফার সাথে।রাফা ও তার দাদু কে ছাড়া কিছু বোঝে না। রাতের বেলা চলে যায় দাদুর কাছে ঘুমাবে বলে।

রাহাত আবার তার কাজে জয়েন হলে,ব্যাস্ত থাকে সারাদিন।আর আমি রাফা কে স্কুলে দিয়ে এসে ঘরের কাজ গুলো শেষ করি। তারপর আবার সময় মতো রাফা কে স্কুল থেকে নিয়ে আসি। রাতের বেলা বাবা আর মেয়ের দুষ্টুমি গুলো খুব শান্তি দেয় আমাকে। তারপর রাফা ঘুমিয়ে পড়লে রাহাতের দুষ্টুমি শুরু হয় আমার সাথে।এরকম ভাবেই আনন্দে কেটে যাচ্ছে দিন গুলো।

আজকে শরীর টা খুব খারাপ লাগছে, তবুও রাফা কে নিতে এসেছি স্কুলে। হাঁটতে ভিশন দুর্বল লাগছে তাই রাফা কে নিয়ে স্কুলের একটা বেঞ্চে বসে আছি। শরীর টা একটু ভালো লাগলে তবে বাসায় যাবো।
এরপর করে প্রায় পঁচিশ মিনিট বসে রইলাম কিন্তু শরীরের দূর্বলতা কাটছেই না। তাই ধীর পায়ে হাঁটা শুরু করলাম, পাশেই একটা হসপিটালে যাবো বলে।
অতঃপর,
ডাক্তার চেক‌আব করে টেষ্ট দিলেন। এরপর টেষ্ট গুলো করে রিপোর্ট এর জন্য বসে আছি। কিছু সময় লাগবে তাও বসে আছি, রিপোর্ট দেখে তবেই বাসায় যাব।
তারপর সেই কাঙ্খিত রিপোর্ট দেখে ডাক্তার যা বললো নিজেকে সামলাতে খুব কষ্ট হয়ে গেল। ছোট্ট রাফা কে বুকের সাথে চেপে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলাম! মেয়েটা আমার ভয়ে কান্না করে দিল।
রাহাত কে কল করে বললাম তাড়াতাড়ি এই ঠিকানায় চলে আসো‌। রাহাত বার বার জিজ্ঞাসা করছে কেন কান্না করছি আমি! কিন্তু আমি কিছুই বলতে পারলাম না। জানি ওর অফিস থেকে বের হতে অনেক ঝামেলা হবে তবুও এই মুহূর্তে একা বাসায় যাওয়ার শক্তি নেই আমার। একজন নার্স আমাকে শান্তনা দিয়ে চলেছেন কিন্তু আমার রাহাত কে চাই যাকে পেলে আমি নিমিষেই শান্ত হয়ে যাবো।

ঘন্টা খানেক পর রাহাত এলো।দেখেই বুঝা যাচ্ছে কতটা দুশ্চিন্তা নিয়ে দৌড়ে এসেছে। গায়ের ইউনিফর্ম টা ঘামে ভিজে একাকার। আমি তাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে দিলাম।ও বার জানতে চাইছে কি হয়েছে আমি এখানে কেন এসেছি? এদিকে রাফা ও কান্না করছে। তখন নার্স বললো,
– স্যার আপনি বাবা হতে চলেছেন! সেই খুশিতে আপনার স্ত্রী এভাবে কান্না করছে।আর হ্যা উনি খুবই দুর্বল এই সময়ে বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়াবেন।আর বেশি পরিশ্রম করতে দিবেন না।

রাহাত হাঁটু গেড়ে বসে আমার হাত গুলো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে চুমুতে ভরিয়ে তোলে। আমি তার চোখে স্পষ্ট আনন্দের বন্যা দেখতে পাচ্ছি।এক হাতে রাফা জরিয়ে ধরে কান্না থামায়।অন্য দিকে আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো,
– পাগলি এভাবে কান্না করতে হয়? আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমি ভাঙ্গা কন্ঠে বললাম,
– আমার রাফা’র যেন কোন অবহেলা না হয় রাহাত। না হয় আমি নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবোনা।

রাহাত আমাদের দুজনকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– আমি বেঁচে থাকতে কখনোই এমনটা হবে না ইনশা আল্লাহ। তারপর আমার কোমর জড়িয়ে ধরে পেটে মুখ গুজে রাখে।

🍀 সমাপ্ত 🍀

(আসসালামু আলাইকুম।)